মানলী মর্গবাণী €সভ্িজ্ মানিন্চ পতি ১ ৮৮৮ ম্বম্র--৯ম্ শব ( ফাল্গুন ১৩২২- শ্রাবণ ৯৩২৩) সম্পাদক__ মহারাজ শ্রীজগদিক্রনাথু রায় জীপ্রভাতকৃমার মুখোপাধ্যায় বি-এ, বার-এট-ল কলিকাতা ১৪ এ রাতন্জরু বহৃর লেন, *মানসী” প্রেসে শ্রীশীতল্চজ্জর ভট্টাচার্য্য কর্তৃক ফুদ্রিত ও প্রকাশিত ১৩:২৩ যাশ্মাষিক সূচীপত্র (ফাল্গুন ১৩২২- শ্রাবণ ১৩২৩ ) হিবস্তস্থৃলী অপমানিত ( কবিতা )-- স্তর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডি-লিট্‌ ** অভ্র্থনা ও উদ্বোধন ( সচিত্র) মাননীয় রাঁজা শ্রীমহেন্ত্ররঞ্জন রায় অলোকগন্থা ও কথাসাহিতোর ধারা__ অধাপক শ্রীস্থরপ্জন রায় এম-এ আওরাংজীবের পরিবারবর্গ (সচিত্র )-_ অধ্যাপক' শ্রীষছুনাথ সরকার, এম-এ, পি-আর-এস আধুনিক বঙ্গসাহিত্যে “মা” শ্রীজিতেন্্রলাল বস্তু এম-এ, বি-এল আমার সেতার শিক্ষা অধ্যাপক শ্রীখগেন্দ্রনাথ মি এমএ *-, আলোচনা-_শ্রীরাখালরাজ রায় বি-এ, শ্রীনির্মলচন্দ্র মল্লিক, শ্রীশশিতৃষণ বিশ্বাস ৩২৫, ৪২৩ আশাহত ( কবিতা )-. মহারাজ শ্রীজগদিজ্জরনাথ রায় উকীল সাহিত্যিক (গল্প )-_ শ্রীঅতুলচন্দ্র চৌধুরী এম-এ কবিভৃষণ ও শিবাজী ( সচিত্র )__ শ্রীরসিকলাল রায় বি-এ কলিকাতা অবরোধ (সচিত্র )-_ শ্ীঅক্ষয়কুমার মৈত্রেয় বি-এল *** কলেজ ফেরৎ (গল্প )_শস্থরেন্্রনাথ মজুমদার বি-এ, রায় বাহাছর কবি ও সমালোচকু-্সচিত্র )__ অধ্যাপক প্রীবটুকনাথ ভট্টাচার্য এম-এ ১৬১ কালাটাদ (কবিতা)-_-শ্রীসতীশচন্তর চক্রবর্তী বি-এল্‌ ৫৬৮ কৃত্তিবাস- মাননীয় বিচারপতি স্তর আশুতোষ মুখোপাধ্যাক় সরন্যতী, শাস্তর- , বাচম্পতি, এম-এ, ডি-এল, সি-এস-আই ২৪৯ ৫৮৭ ২৫১৯ ২৯৩ 8৪ন ৩৫৩ ৪৯৩ ২০৫ ৩০২, ৩৯৯ ২৬৫ ৫১৩ ৩৭১ কৃত্তিবাস প্রশস্তি ( কবিতা )-- জ্রীতীন্দ্রমোহন বাগচী বি-এ ৩৯৪ কেয়া ফুল (কবিতা) এর ১২৯ খোলা চিঠি (গল্প ১__ প্ীম্ঘবোধচন্্র বন্দ্যোপাধ্যায় বি-এ ৮৩ গান (কবিতা) মহারাজ জ্জগদিজ্রনাথ বায় ২১৯ গুপ্তবল্লতী সংবৎ-_অধ্যাপক শ্রীরমেশচন্দ্র মন্জুমদার এম-এ, পি-আর-এস ২১৯ গৃহহীন (গল্প )-শ্রীদীনেন্ত্রকুমার রায় **. ১৭ গ্রন্সমালোচনা--অধ্যাপক শ্রীকোকিলেশ্বর শাস্ত্রী বিদ্যারত্ব এম-এ, শ্রীশরচ্চন্্র ঘোমাল, এম-এ, বি-এল, “দেব”, পঠ্যামচাদ” “ব্রজরাজ”, “রায় বাহার”, “খতুরাজ” “অঘাস্থর” ১২৭,৩৪৯১৪৯৩,৬০ ৬১৭ চাতক ( কবিতা )__শ্রীসতীশচন্তর চক্রবর্তী বি-এল ৫ চিত্র দশনে ( ক্বিতা 15 শ্রীআশুতোষ মুখোপাধ্যাক্স বি-এ ৪৬ * চির-বস্ত (কঁবিতা)-_শ্রীরমণীমোহন ঘোষ বি-এল ১৫ চুরি বিগ্বা-_-শ্রীমনোজমোহন বস্থ এম-এ, বি-এল ১৪. “চোখ গেল? (কবিতা )--শ্ঁকালিদাস রায় বি-এ ছুটি ( কবিতা )__জ্রীধতীন্্রমোহন বাগচী বি-এ " ২৭ জন্মভূমি- মহারাজ শ্রীজগদিক্্রনাথ রায় জাতীয় সাহিত্য ( সচিত্র )-_মাননীয় বিচারপতি স্তর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় সরম্বতী, শান্ত্রবাচম্পতি, এম-এ, ডি-এল, সি-এস-আই ইত্যাদি জীবন তরী (কবিতা )-_ শ্রীমতী অমিয়াময়ী দেবী জীবনের মূল্য ( উপন্যাস )-- স্ীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বি-এ, বার-এট্-ল ১০৫,২৩৬,৪৬৬,৫৬২১৭০৮ জৈনধর্শ্ম ও দর্শন-__জীঅঘজাক্ষ সরকার *. এজ কোনগিলা ৩৫৫ ৪৭২ পথ» তরী ২ ৭4) তাজ স্বপ্ন (কবিতা )- শ্রীপরিমলকুমার ঘোষ এম-এ তীর্ঘভ্রম এ সচিত্র )__ শ্রীঅরুণকুমার মুখোপাধ্যায় ৫৪৭ ৭৫৯৯২,৪০৯,৫২৯ ছুধন্মার পত্র__শ্রীদুঘন্্মা নষ্টীচার্য্য ২৩৩ দেশ-বিদেশের কথা (সচিত্র )-_শ্রীকিন্নরেশ রায় ২২৬ নগরপথে ( কবিতা )_ শ্রীুর্দামোহন কুশারী ৬৪০ নব প্রত্রতত্ব ( রহস্ত )-_জ্রীবেচারাম বিস্াবাগীশ ৫৪৮ নব-বধু ( কবিতা )__জধ্যাপক স্রীস্থরেশচন্দ্র ঘোষ | বি-এস-সি ৫৯৩ নব-বধু (গল্প) শ্রীদীনেন্দ্রকুমার রায় ৩৪১ নব-বসন্ত ( কবিতা )__জ্ীরমণীমোহন ঘোষ বি-এল নব-বর্ষ__শ্রীচারুচন্দ্র মিত্র এম-এ, বি-এল **: ্ নব-বর্ধ ( কবিতা )-__শ্রীরমণীমোহন ঘোষ বি-এল ৩১২ নর-নারায়ণ ( কবিতা )_জ্রীকালিদাস রায় বি-এ ৪৪৮ নারী-সম্মান-_শ্রীযতীন্রমোহন বাগচী বি-এ, ৫০৯ নিক্ষল (কবিতা )__মহারাজ শ্রীজগদিন্ত্রনাথ রায় ৩৬৫ নিষিদ্ধ ফল (গল্প )-_জ্ীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বি-এ, বার-এট্‌-ল *** ৫৮ নিয়তি (গল্প ) -শ্রীসরোজনাথ ঘোষ ৪২৬ নূরজাহান ( সচিত্র ১ মহারাজ শ্রীজগদিজ্্রনাথ রায় *** ৯ 1গ্মাতীরে (কবিতা )__ শ্রীযতীন্্রমোহন বাগচী বি-এ ২৭৩ 'লৌকগত উমেশচন্দ্র দত্ত ( সচিত্র) অধ্যাপক শ্রীকষ্চবিহারী গুপ্ত এমএ ৬৫২ [লসাআাজোর অধঃপতন ( সচিত্র )- অধ্যাপক শ্ীরমেশচন্ত্র মজুমদার এম-এ, পি-আর-এস ৭৭, ১৯৯, ২৮৯, ৪৩৭ পুরাতন প্রসঙ্গ (সচিত্র )- অধ্যাপক শ্রীবিপিনবিহারী গুপ্ত এম-এ ৩২৭, ৪৫৫) ৫৬৯, ৬৬৫ পৃথিবীর পুরাবৃত্তড (সচিত্র )-_শ্রীধতীন্রমোহন গুপ্ত বি-এল ১১৯,১৮৯১২৬১,৪১৮,৫৯২,৬৩৭, প্রাচীন ভারত-_শ্রীপুরণটাদ সামন্থ। প্রার্থনা ( কবিতা )--শ্রীমতী অমিয়াময়ী দেবা ১৫৮,৪৭২ ৫০৫ ফলিত জ্যোতিষ (সচিত্র )__জ্রীপ্রিয়নাথ সেন ২৮ ফাল্গুনে (কবিতা )__শ্রীকালিদাস রায় বি-এ ১৯১ ফিরে যাও ( কবিতা )__ মহারাজ শ্রীজগদিন্দ্রনাথ রায় ১২৭ ফুল-_ শ্রীসতীশচন্ত্র ঘটক এম-এ, বি-এল ৫২৫ ফুলের তোড়া ( গল্প )-:শ্রীমতী ইন্দিরা দেবী বন্ধার ব্যথা ( কবিতা )-_ ভ্রীবসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় বসন্তে (কবিতা )__মহারাজ শ্রীজগদিন্তরনাথ রায়. ১ বসম্ত-আগমনী ( কবিতা )__ ্ শ্রীমোহিতলাল মজুমদার বি-এ .* বয়ঃসন্ধি ( কবিতা )__শ্রীকালিদাস বাঁয় বি-এ বহ্নিশিখ! (কবিতা )_- জীযতীন্্রমোহন বাগচী বি-এ বাঙ্গালীর উৎপত্তি-_অধ্যাপকশ্রীরমা প্রসাদ চন্দ বি-এ ৪ঈ বারাঙ্গন! ( কবিতা )-_ শ্রীমতী মাঁনকুমারী বাশীওয়াল! ( কবিতা )-_ শ্রীতীন্দ্রমোহন বাগচী বি-এ ৪১ ২৩ ৯৪৭ ১৮৭ ৫৭ ৪০ ৪৯২ বিদায় ( কবিতা )__শ্রীরমণীমোহন ঘোষ বিএল ৪৩৬ বিরহ-বাণী (কবিতা )-- মহারাজ শ্রীজগদিন্দ্রনাথ রায় ৬০৯ বেহার চিত্র--মান্তবর ( নক্সা )-- শ্রীবতীন্ত্রমোহন গুপ্ত বি-এল ৪১৮ বৈদেশিকী-_ শ্রীগৌরহরি সেন ১৪,২১৩,২৮৫) ৪০৫১৫৪৮১৭০৫ “ভ”কারের ভ্রকুটি__শ্রীললিতকৃষ্ণ ঘোষ '.. ৬৩৩ ভক্ত-কবি রসিকলাঁল-_শ্রীননীগোপাল মজুমদার ২৪ ভারতী-_মহারাক্ত শ্রীজগদিন্্রনাথ রায় ৩৭০ মধুমাসে কেবিতা)__মহারাজ শ্রীজগদি্্রনাথ রায় ২৩৫ মনীষী কৈলাসচন্্র বস্থ (সচিত্র) . শ্রীমন্মথনাথ ঘোষ এম্-এ, এফ ২এস্‌-এস্‌, এফ আর. ই-এস্‌ মাসিক-সাহিত্য সমালোচনা ১২৪, ২৪৫, ৩৮০ মুক্তার মাধুরী (কবিতা) শ্রীসাবিত্রীপ্রসন্ন চট্টোপাধ্যায় ৬২৫ মেঘের প্রেম (কবিতা)-*শ্রীহেমেন্্লাল রায় ৫৮৭ ৬৯৬ 1/৩ মুশিদাবাদের কয়েকটি স্মতিচিহ্ন (সচিত্র )__ শীবজেন্ত্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৩৫ মহারাজ শ্ীজগদিন্দরনাথ রায় ১১১,১৭০১,৩১৩, যযাঁতি-শ্দিষ্ঠ। (সচিত্র কবিতা )_- ৪৭৪,৫৯৩,৬৮৪ জীমতী গিরীন্রমোহিনী দাসী ০১৮৮ শ্ঠাম-সপ্তক (কবিতা )-- যাত্রারন্তে-_মহারাজ প্রীজগদিন্দ্রনাথ রায় *. ৩ শ্রীপরিমলকুমার ঘোষ এম-এ ৬৬৪ যাছুকরী (কবিতা )-__ সখের ডিটো কভ ( গল্প )__- শ্রীদেবেন্্রনাথ সেন এম্‌-এ, ৰি-এল্‌ ১২৪ শ্রীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বি-এ, রোগশয্যার প্রলাপ--৬ব্যোমকেশ মুস্তফী ৩৯৫,৫ ০৬ বার-এট্‌-ল ৬৭১ লর্ড কিচনার-_-অধাপক ঞ্ীবিপিনবিহারী গুপ্ত সতীদাহ (সচিত্র) রী ১,৩৫৩ এম.এ ৬০৪ সতীনাথ (উপক্তাস)_-তীমতী ইন্দিরা দেবী ৫৪০,৬২৬ লুকোচুরী কেবিতা)__শ্রীকালিদাস রায় বিএ ১০৪ সলিমা সুলতান বেগম-_ লাফে (গল্প)__শ্রীমতী শৈলবালা ঘোষজায় ১৪৮ শ্ীব্রজেন্ত্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৫৫৯ শিবের গাজন (কবিতা )_- স্বর্গীয় বোমকেশ মুস্তফী (সচিত্র )__ শ্রীযতীন্্রনাথ সেন গুপ্ত ৩৪০ অধ্যাপক শ্ীরামেজ্ন্ন্দর তরিবেদী এমএ, শিরোমণির তীর্ঘযাত্রা (নক্সা )-_ পি-আর-এস্‌ ৩৬৫ জীঅমুতলাল বনু ৫৭৬,৬৬০ সাহিতা-সমাচার ১২৮, ২৪৮,৩৮৩, ৪৯৬, ৬০৮,৭১৬ শুভলগ্ন (কবিতা)__শ্রীপরমেশ নাগ চৌধুরী ৪৭৪ সাহিতো সমালোচনা-_ শুয়োপোক (করিতা )-_ শ্রীমহীতোষকুমার রায়চৌধুরী এমএ ৫৫২ শ্রীদেবেন্্রনাথ সেন এম্-এ, বিএল্‌ ২৯২ সিন্ধতীরে (কবিতা )- শেষ মিনতি (গান )- শ্ীপরিমলকুমার ঘোষ এম্-এ ৫২১ মহারাজ শ্রীজগদিন্দ্রনাথ রায় ৩৫২ ঠত্যাকাণ্ডের পর (গক্প)_. শাবণে (কবিতা )--শ্রীগিরিজাকুমার বন্ধু, ৬৬০ শীজ্যোতিরিজ্নাথ ঠাকুর ২৭৪ লেখক জ্কুচ্টী “অথাস্থর” শ্রীঅরুপকুমার মুখোপাধ্যায় গ্রন্থ সমালোচনা! ৭১৫৪ তীর্থ ভ্রমণ (সচিত্র) ৭০, ১৯২, ৪০৯, ৫২৯ আঅতুলচন্ত্র চৌধুরী এম-এ ০৪৭১১%৯ পার ৃ 5 ধ(সাচত্র ২৬৫ 1517 রি? রি , মাননীয় বিচারপতি স্তর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ্ৈ সরম্বতী, শান্ত্বাচস্পতি, সি-এস-আই ইত্যাদি জীবন তরী*( কবিতা) ৪৭২ *জাতীয় সাহিত্য (সচিত্র) ১০, ৩৫৫ প্রার্থনা (ই) , ৫০৫ কৃত্তিবাস ৩৭১ প্রীঅমৃতলাল বন্ধু বি ও বি-এ শিরোম ৪৬ রিলে কারা) ৪৬৫ শ্রীঅুজাক্ষ ইন নি ৫ ব্্ভী ইন্দিরা মী " রি + ফুলের তোড়া (গুল্প ) ৪১ জৈনধন্ম ও দর্শন. * ১৯৭, ৬১৮. সতীনাথ ( উপঞ্থাস ) 42৫ 28 শ্ুতিস্থৃতি (সচিত্র )- “খধতুরাজ”, গ্রস্থ-সমালোচনা -, ১৫ শ্রীকালিদাস রায় বি-এ র্‌ লুকোচুরী (কবিতা) নু ১০৪ বয়ঃসন্ধি (ক) ** ১৮৭ ফাল্গুনে (প্র) দর ১৯১ নর-নারায়ণ (শ্) তত, ৪৪৮ “চোখ গেল চো তত ৫৬১ জ্রীকিন্নরেশ রায় দেশ-বিদেশের কথ! ( সচিত্র) ৮০. ২২৬ অধ্যাপক শ্রুষ্ণবিহারী গুপ্ত এম্-এ পরলোকগত উমেশচন্দ্র দত্ত (সচিত্র) *.. ৬৫২ অধ্যাপক শ্রীকোকিলেশ্বর শাস্ত্রী বিদ্যারত্র, এম-এ গ্রন্থ-সমালোচনা তত? ৩৪৯ অধ্যাপক ভ্রীথগেক্দ্রনাথ মিত্র এম-এ আমার সেতার শিক্ষা ঠঠ ৬৫৫ শ্রীগিরিজানাথ বন্ধ শ্রাবণে (কবিতা ) ৫ ১৬৪ শ্রীমতী গিরীন্রমোহিনী দাসী যযাতি-শশ্ষিষ্ঠা (সচিত্রকবিতা ) **" ১৮৮ শ্রীগৌরহরি সেন বৈদেশিকী ১৪৪ ২১৩, ২৮৫ ৪০৫১ ৫৪৮১ ৭০৫ শ্ীচারুন্্র মিত্র এম্‌-এ, বি-এল্‌ নব-বর্ষ_ *** ৫ মহারাজ শ্রীজগদিক্্রনাথ রায় বসস্তে (কবিতা) ই ১ যাত্রারস্ভে ৬ ৩ নূরজাহান ( সচিত্র) তঃ ৯ শ্রতি-স্থৃতি (সচিত্র ) ১১১, ১৭০, ৩১৩, ৪৭৪, ৫৯৩, | ৬৮৪ ফিরে যাও (কবিতা) ০০, ১২৭ গাঁন (৯) ৮** ২১৯ মুধুমাসে (8 ) ৪2 ২৩৫ শেষ মিনতি (গান) তত ৩৫২ নিক্ষল (কবিতা) . রি ৩৬৫ “ভারতী” ৩৭০ জন্মভূমি ৩৮৫ আশাহত (কবিতা) ৪৯৯ বিন্হ-দূত (কবিতা) ৬০৯ শ্রীজিতেন্দ্রলাল বন্থ এমএ, বি-এল্‌ আধুনিক বঙ্গদাহিত্যে “মা” ৪৪৯ শ্ীজ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর হত্যাকাণ্ডের পর (গল) ২৭৪ শ্রীদীনেন্দ্রকুমার রায় গ্হ-হথীন (গলপ) 2 ৯ ০৪ নববধূ (৯) ৩৪১ শ্রীহর্গামোহন কুশারী নগরপথে (কবিতা) ৬৪০ শ্রীদ্ফম্মী নষ্টাচার্ধা হফন্মার পত্র ২৩৩ “দেবদত” 'গ্স্ সমালোচনা দিত শ্রীদেবেন্রনাথ সেন এম্-এ, বি-এল, যাছকরী (কবিতা) ১২৪ শুয়োপোকা (ত্র) ২৯২ শ্রীননীগোপাল মজুমদার ভক্তকবি রসিকলাল ৯৪ শ্রীনিম্মলচন্দ্র মল্লিক আলোচন! ৯২৩ শ্রীপরমেশ নাগ চৌধুরী শুভলগ্ন (কবিতা) 85 *জ্রপরিমলকুমার ঘোষ এমএ সিন্ধুতীরে (কবিতা) ৫২১ তাজ শ্বপ্পা () ৫৪৭ শ্তামসপ্তক (এ) ৬৬৪ শ্রীপুলিনবিহারী দত্ত ব্রজকাহিনী ৬১১ শ্রীপূরণটাদ সামসুখা '_ প্রাচীন ভারত ... ১৫৮, ৪৭২ শ্ীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বি-এ, বার-ম্যাটংল নিষিদ্ধ ফল ( গল্প) ২0৫৮ সতীদাহ ( সচিত্র) ৩৫৩ জীবনের মূল্য (উপন্যাস ) ১০৫, ২৩৬, ৪৬৬, ৫৬২, ৭০৮ সথের ডিকেন্টিভ (গল্প ) ৬৭১ ্রীপ্রিয়নাথ সেন ফলিত জ্োতিষ ( সচিত্র) ১৮ শ্রীবসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় বন্ধযার ব্যথা ( কবিতা) অধ্যাপক গ্রীবটর কনাথ ভট্টাচার্য্য এম-এ কবি ও সমালোচক ( সচিত্র) অধ্যাপক শ্রীবিপিনবিহারী গুপ্ু এম্‌ এ পুরাতন প্রস*গ 1 সচিত্র ) ৩১৭, ৪৫৫) ৫৬৯, ৬৬৫ লর্ড কিচনার ' শ্রীবেচারাম বিদ্যাবাগীশ ১৩ ১৬৯ ৩০9 নবপ্রত্ত তন্গ (রহস্য, ৫৮৪ “বজরাজ” গ্রন্থ সমালোচনা ৪৯৩ শীরজেন্জনাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মর্শিদাবাদের কয়েকটি স্মৃতিচিঙ্গ (সচিত্র) ৩৫ সলিমা স্মন্তান বেগম ৫৫৯ ৩বামকেশ মুস্তফী রোগশধ্যার প্রলাপ ৩২৫) ৫০ শ্রীমনোজমোভন বস্তু এম-এ, ৰি এল চরি বিদ্যা ূ ১৪২ শরীন্মথনাথ ঘোষ এমএ, এফ২এস্‌-এস্‌, এফ আর-ই-এস্‌ মনীষী কৈপাপচন্দ্র বন্থ (সচিত্র) ৬৯৬ বীমহীতোষকুমার রায় চৌধুরী এমএ সাহিত্যে সমালোচনা! ৫৫২ গননীয় রাজা শ্রীমহেন্জ্রঞ্জন রায় অভ্যর্থনা ও উদ্বোধন (সচিত্র) ৫৮৭ বীমতী মানকুমারীয * বারাঙ্গনা (কবিতা ) ৪৫ )মোহিতলাল মজুমদার বি-এ, বসস্ত আগমনী ( কবিতা) ১৪৭ ।যতীন্ত্রনাথ সেন গুপ্ত শিব্রে গাজন (কবিতা ) . ৩৪০ শ্রীবতীন্্রমোহন গুপ্ত বি-এল পৃথিবীর পুরাবৃত্ত ( সচিত্র )১১৯, ১৮৯, ২৬১১ ৪১৮, ৫২২, ৬৩৭ বেহার-চিত্, “মান্তবর” (নক্সা! ) ৪৪১ শ্রীযতীক্জমোহন বাগচী বি, এ ছটা ( কবিতা ) ২৭ বহ্ছিশিখা (শর) ৫৭ কেয়া ফুল (এ) ১২৯ পল্মাতীরে ( &) ২৭৩ কৃত্তিবাস গ্রশস্তি (এ) ৩৯৪ বাশীওয়াল! « এঁ) ৪৯১ নারী সম্মান ৫০৯ অধাপক শ্রীযনাথ সরকার এমএ, পি-আর-এস আওরাংজীবের পরিবারবর্গ ( সচিত্র ) ২৯৩ স্তর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডি-লিট, অপমানিত ( কবিতা ) ২৪৯ জ্বীরমণীমোহন ঘোষ বি-এল নব-বসন্তু ( কবিতা) ১২৮ চির-বসস্ত (ও) ১৫৭ নব-বর্ষ (পর) ৩১২ বিদায় (ই) ৩৩ অধাপক ভ্রীরদিকলাল রায় বি-এ কবিভৃষণ 'ও শিবাজী (সচিত্র) ৩০২১ ৩৯৯ অধ্যাপক শ্রীরমা প্রসাদ চন্দ বি-এ বাঙ্গালীর উৎপত্তি ৫ ৪৯ অধাপক শ্রীরমেশচন্দ্র মজুমদার এম-এ, পি-আর-এস পাল সামাজোর অধঃপতন (সচিত্র) ৭৭, ১৯৯, ২৮৯, ৪৩৭ গুপ্তবল্পভী সংবৎ ২১১৯ প্রীরাথালরাঁজ রাঁয় বি-এ ”. আলোচনা তত ৩২৫, ৪২৩ অধ্যাপক শ্রীরামেন্ত্র্ন্দর ত্রিবেদী এম-এ, পি-আ'র-এস স্বর্গীয় ব্যোমকেশ মুস্তফী (সচিত্র) ৩৬৫ পরায় বাহার” গ্রন্থ সমালোচনা ৭১৫ ভ্ীাললিতকৃষ্ণ ঘোষ “ত'*কারের ত্রকুটি ৬৩৩ শ্রীশরচ্ন্ত্র ঘোষাল এম্-এ, বি-এল সম্পাদকীয় গ্রন্থ সমালোচনা হি, গ্ন্থ-সমালোচনা ১২৭, ৩৪৯, ৪৯৩, ৬০৬, ৭১৫ টিবিহার বহি ১৪১... মাসিক সাহিত্য.সমালোচনা ১২৪, ২৪৫, ৩৮০ ৪ 8 ষ্ রঃ সাহিত্য-সমাচার ১২৮, ২৪৮, ৩৮৩, ৪৯৬, ৬০৮, ৭১৬ শশিতৃষণ ভট্টাচার্য সিদ্ধান্ত শ্রীসাবিত্রীপ্রসরন চট্টোপাধ্যায় অনুযোগ ( কবিতানুবাদ ) ৬৫৪ হুর মাধুরী ( কবিতা ) রি শ্রীমতী শৈলবালা ঘোষজায়া অধ্যাপক ীখরঞজন রা এম-এ লাফে (গল্প) বং অলোক পন্থা ও কথা সাহিতোর ধারা ২৫১ প্ত্যামচাদ” শ্রীমতী সুনীতি দেবী বি-এ গ্রস্থ-সমালোচনা ৩৪৯, ৪৯৩, ৬০৪ ইংলগ্ডে পলায়ন ( কবিতা) ১ ৬১৮ ীতীশচন্ত্র চক্রবর্তী বি-এল্‌ শ্ীন্গরেন্্রনাথ মজুমদার বি-এ, রায় বাহাদুর টা টা ) রর কলেজ ফেরৎ (গন্প) ডু শ্রীসতীশচন্্র ঘটক এম-এ, বি-এল অধ্যাপক জীরেশচন্্ ঘোম বি-এস-দি ফুল পু যী নব বধ (কবিতা) ৫৯৩ প্রীদতীশচন্দ্র দাস গুপ্ত শ্রীন্ববোধচন্ত্র বন্দোপাধায় ৰি-এ ভারতবর্ষে প্রচলিত ওজন ও মাপ প্রণালী ১৩১ খোলা চিঠি (গল্প) ডি ৮৩ ভ্রীসরোজনাথ ঘোষ শ্রীহেমেন্দ্রলাল রায় নিয়তি (গল্প) ৪২৬ মেঘের প্রেম (কবিতা ) ৫৮৭ স্পূর্ণপ্রু্টী চিত্রের জ্রুচ্ভী ( বণানুক্রমিক ) শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.. ২.৮ বোগ্কাই-বন্দরে বর্দাগম । রতন) ৬৯ অর্থমনর্থম ১৫২ স্বগীয় ব্যোমকেশ মুস্তফী ক ৪ অহ্থর-প্রাসাদের অভ্যান্তর তত তত ৭২ মথুরা বিশ্রাম ঘাট হি মাননীয় এ স্যর এ রা রর দৌরনাযারের রতীিভারনা রন রি পরলোকগত উমেশচন্ত্র দত্ত 2 অধ্যাপক শ্রীযদুনাথ সরকার ++. ৮... ২৯৩ স্বর্গীয় রাজ! চন্দ্রনাথ রায় বাহাঁচর ৫৭৫ যযাতি-শশ্িষঠা ( রডীন ) ১৮৮ জীবন সন্ধ্যায় ( রডীন) ১৪৯ ৮রাজেন্ত্রলাল মিত্র ৬৯৭ চিত্রা! (রডীন ) ১. রোমিও ও জুলিয়েটের বিবাহ (রঙান) ৫৪৪ পারস্ত দেশের ফল ও স্জীর দোকান (রভীন) ৩৮৫ লেডি-্ঠালট ৪৭৩ প্রিয-পরিতাক্ত1! ( রঙীন ) ৯১৯ সভীদাহের অয়োজন (রডীন) ৩৫৩ পুনরাগমন রঃ ২০৮ সমুদ্র বক্ষে প্রহলাদ এ ৪৪১ ফিজি:দ্রীপে কদলীবন (রীন ) ৬৬৪ সাহারা সমাধিভবন এর ৮. ১, ৪০ পল অন্গানলালী জাঁনিভ্লী ৮ 7 আসি পরি পতি পরিনতি পরী পতি পটে এটা পরত রী ৃ । ৃ ৃ ৃ । ৃ । ৃ ৃ ৃ চ, শিপ লী পরী পিসী পিপি ও সপ পরি নপ্ী পা পি সী তাপ পিসি তা সপর্ি শপ পরস্পর পনি পীলপর্ণি পপ পরলা্পি পি পর পরি পাপা পার্টি হু অস্পর্তী এসপি এরি পরী পরি এ সরি ১ পিপি পাঁলর্ণি পারি + পপি ী পা সপ পরস্পর পরী পরি পরী পার্টি ও পর্ণি পার্টি পরি পপ পিসি লি তানিন রঃ টি উহ ভি টি ড জজ শ ১ হি, টি নি দিত 2৮৮ জি. ই, দা চি অর 4৯ শি তা নটি দহ যেত সা ত্য তি 12. 8 রি ভি এল ৬১ 8৭ 8২ -০ চা চি চে ৬১ ভি ২২১ শী সি কিঃ -স্পরণী পাস্পিি পিপি অসি ও শরির ১. ০পস্প পরস্পর সী পরিসর অসি পি পপি পা পপ পনি পল পাস পরস্পর পনর পরিসর পরটসপ পরি সপি পরিসর পরিসর ১০ ং ং ( ; ৭1 €791 5 ৯১৯৩১] 1110) ৯১, "৩৩ মর্মবাণী রর ও ফাল্গুন হার ॥ ৯ম৭গড ( ১ম সংখ্যা বসন্তে কবে কোন্‌ অমরার কল্পলোকমাঝে অভিনব সাজে, কোন্‌ এক মাহেন্দ্র লগনে মহেন্দ্রের নিকুপ্তভবনে-_ লভেছিলে আপন জনম হে বসন্ত, হে বিশ্বের নয়নরগ্রন ! কে বক্ষে প্রকোষ্টে তোমার শতফেরে বেঁধেছিলে নন্দনের পারিজাতহার ; সঙ্গে লয়ে এসেছিলে দক্ষিণ বাতাস নিখিলের সর্বব অঙ্গে বুলাইতে আনন্দ আশ্বাস ! অগ্নি-গর্ভ-গিরি-তস্ম-প্রক্ষেপে মলিন পু পর্বব-বিধু ছিল রসহীন ; তুমি দিলে স্থধার প্রলেপ্চ ঘুচিল অন্তরদাহ জন্মভরা দারুণ আক্ষেপ । মানসী ও মর্্বাণী [৮ম বর্ষ-_১ম খও-_১ম সংখ্যা সে দিনের স্বধাভরা পূর্ণিমানিশায় বেদনার অশ্রুহীন দেব অমরায় উচ্ছাঁসে না চিয়স্কছল আনন্দবাহিনী, অপ্দরীর কণ্টে-কণে উঠেছিল অপূর্বব রাগিণী ! সে দিনের পরে বমে বষে একবার আমাদের ঘরে দেখা দাও অমর পথিক ; সারা বর্ম আখি অনিমিখ একাস্ত আগ্রহে যাচি তব দরশন -_ বর্ম ভরে' রাখি মনে দুদিনের আনন্দ স্বপন । তব আগমনে স্ুনীলিম গগন অঙ্গনে কার প্রেমাকুল আখি দেখ! দেয় মানস নয়নে ; কার সুধা সঙ্গীত আলাপ অন্তরে জাগায়ে তুলে নিকুপ্রের পুপ্পিত প্রলাপ ? গুপ্তনমুখর মন্ত মধুপের রব কার স্বণনুপুরের শিঞ্জন উৎসব ? জ্যোতস্লাভর। ফান্ন-নিশায় হিরণ্য অঞ্চল কার ভেসে আসে আকাশের গায়? সে ষেকামনার ধন, সে যে প্রাণপ্রিয়__ ব্যথাভরা বক্ষমাঝে অপূর্বব অমিয় ; তব সনে সেও যে গো আসে জল স্থল শূন্য সব ভরে? যায় তাহারি আভাসে ! তাই ডাকি এস খতুরাজ ! এস আজ অঙ্গে-অঙ্গে জড়াইয়া কাননের পুষ্পিত বল্পরী ; মাধবীর বিশুক্ক বিতান তোমার মোহন মন্ত্রে জাঞ্চক পাইয়া নৰ প্রাণ; ফান্তন, ১৩২২ | যাঞ্রারস্তে রা ... মল্লিকার মধুময় বাস প্রিয়পরিরস্তসম রচে' দিক সশ্মোহনপাশ ; ৃ সরসীর দ্রবীভূত স্ফষটিকের বুকে নিদ্রিত নলিন-অশীখি উন্মীলিত হোক আজি স্থুখে ; বর্ষপরে ভূখারী ভ্রমর মধুমদিরায় মাতি' হোক আজি আনন্দমুখর'; পঞ্চমে করুক গান তব আগমনী চুতনিকুঞ্জের মাঝে কোকিলের কলকণ্টধ্বনি । পূর্ণ হয়ে আসে দিন আজি ; ডাকেছে সঘনে ওই খেয়া পার করিবার মাঝি ; ঘনাইয়! আসিছে আধার, তরঙ্গ-উদ্দেল সিন্ধু একাকী হইতে হবে পার ! নাহি শক্তি নাহিক সম্বল, শুধু আছে ভাঙা বুক-_-আছে অশ্রজল ! ংসার-তরুর শাখে কাধিতে পারিনি স্থখনীড়, জীর্ণ পপ্তরের তলে দুরাশা করেছে শুধু ভিড় ; সন্ধ্যা হয়-হয়, ক্ষোত ক্ষতি শোক সুখ গণিবার নহে এ.সময় ! আসিয়াছে বিদায়ের বেলা, ভাঙভিতে হইবে আজি লাভহীন বাণিজ্যের মেল! ; তার আগে হে বসন্ত, এস লয়ে বর্ণ বাস রব -_ বিদীর্ণ এ বক্ষমাঝে কর' আজি শেষের উৎসব । শ্রীজগদিক্্রনাথ রায়। যাত্রারস্তভে যেদিন মানসী পত্রিবশর সম্পাদনভার লইম্বা সকলের নিকট সভয়ে উপস্থিত হইয়াছিলাম, তাহার পরে অনেক সময় অতিবাহিত হইয়াছে । জার্গতিক বৃহৎ ব্যাপারের কথা দূরে থাকুক্‌, আমাদের শ্তুখ ছুঃখময় দিনপাতের সীমাবন্ধ গণ্ডীর মধোও অনেক পরিবর্তন হইয়া গিয়াছে জগতের যে কোন ব্যাপারেই হউক, যে স্থান হইতে ধে শক্তি ফে সম্বল যে সহায় সংগ্রহ করিয়া থে উদ্মে আমরা যেখান হইতে আর্ত করি, কিছুদিন পরে দেখিতে পাই শক্তির হাস হইয়াছে, সম্বল প্রায় ফুরাইয়৷ আসিয়াছে, সহায় যাহা ছিল, তাহাকে আর সহায় বলা যায় না মানসী ও মণ্বাণী নিরন্তর আশ্বাসের অভয় এবং আনন্দের মধো যাহার আরম্ভ হইয়াছিল, দেখিতে পাই, নয়নজলে তাহার অবসান ঘটিবার উপক্রম হইয়াছে । নবোত্তিননমঞ্জরী চতনিকুঞ্জবিহারী পরভূতের কলকুজনের মধো, নব- বসস্তের অঞ্স্র আলোকসম্পাতোজ্জবল দিনে যাহার সম্ভব হইঙ্গাছে, প্রাবুটের কুহ্নিশীখিনীর ঘনান্ককারে বাতবিধরবস্ত বনভূমির আর্ত চীৎকারে পত্রান্তগলিত বন্থধার অবিরল অশ্রুধারার মধ্যে আর কি তাহা সম্ভব হয়! বসন্তের সে নবারুণপ্রফুল্প প্রভাতের আনন্দ শিহরণ যে বিলুপ্ত হইয়া যায়, বনবৈতালিকের মধুমন্ত্রয় আবাহনগীতি যেস্তব্ধ হইয়া পড়ে! বিমানবিদারিণী উন্মার্দিনী তড়িল্লতার বিকট বিশ্ফুরণের মধো অন্তর যে সেদিন কীাপিয়া উঠে; শ্রাবণের অবারিত প্লাবনের অবিরল ধারায় বসন্তের কুস্ুমাস্তীর্ণ কুঞ্জবাথিকা যে সেদিন কর্দমান্ত হইয়া যায়! ইহাই জগতের নিয়ম এবং আমাদের বাক্তিগত ক্ষুদ্রজীবনের মধ্যে সে নিয়মের ব্যতিক্রম হইয়াছে একথ। বলিবার সোভাগ্য আমাদের ছুরদৃষ্টবশে না হইলেও পত্রিকার পত্রাপ্তরালে ষে মানসবিহারিণীর পুজার পুষ্পপাত্র অন্ুক্ষণ ভরিয়া উঠিয়াছে-_নানা ক্ষোভ ক্ষতি শোক ও সম্তাপের মধ্যেও মানসপুজা তাহার চরণোপাস্তে পনুগাইবার চেষ্টায় ত্রুটি হয় নাই এবং আজও হইতেছে 'না__ ইহাই মাত্র গর্ব এবং তাহার মূলেও সেই অস্তরদেবতারই অহৈতুকী অজ্ত্র করুণা দেখিতে পাই বলিয়াই গর্বব করিবার ম্পদ্ধা হৃদয়ে জন্মিবার অবসর পাইয়াছে; নতুবা ধুলার ধরণীর যাত্রাশেষের অপরাহ্বেলায় অপৃষ্টদেবতা গর্ব করিবার মত আজ আর কি রাখিয়াছেন ? যাহা দিব বলিয়া কুশবারিসংযুক্ত হইয়া বসিয়া আছি, গ্রহীতা বিপুল আশ্বাসে নিভর করিয়া আশার আনন্দে দুইকর বিস্তার করিয়া উদ্বেগের সহিত অপেক্ষা করিতেছে, হঠাৎ দেখিতে পাহ অবৃষ্টের ফেরে সে মহাদানষজ্ঞের মহা- ৮ম বধ--১ম খও--১ম সংখ্যা ০০৯ আরবোজ্নসন্ভার বিরাট বার্থতার মধ্যে হাহাকার করিয়া মরে! যাহাকে যাহা দিব বলিয়া বারশ্বার প্রতিশ্রুতি দিয়াছিলাম, যে যাহা! পাইবে বণিয়! বারম্বার আশ্বাসের উদ্নর বিপুল আশা স্থাপন করিয়া নিশ্চিন্ত মনে প্রতীক্ষা করিতেছিল, সে সমস্তই কুটাল কালের লৌহনিয়মের ক্ুকুটিভঙ্গীতে ক্ষণভঙ্কুরত্বের পরিচয় দিয়া পলায়ন করিয়াছে,। আমাদের স্থিরা ধরিত্রীর এই অস্থিরতার মধ্যে নিরুপায় মানবশিশুর দিনযাত্রা কেমন করিয়া অতি- বাহিত *য, তাহা অন্তর্ধযামীই জানেন। বিপুল ব্যর্থতার বক্ষভরা গু শ'র লইয়া মানসতামরসবিহারিপী আনন্দ- ময়ী মানসীর চর“ -*নের আনন্দযয় পুস্পোপচার স্থজন কঠিন অপেক্ষাও স্থকঠিন; যতটুকু সম্তব হয় বা হইয়াছে তাহা স্েহশাল বন্ধুম্বজনের রুপাকণার প্রসাদে। যাহাদের অক্ষুপ্ন করুণা ও অপার স্নেহের উপর একাগ্ত নির্ভর করিয়! দেবাচ্চনার মন্দিরদ্ধারে দাড়াইয়াছিলাম, যে চিরন্তন বদ্ধুজনের ন্নেহসঞ্জাত আশ্বাসভরা অভয়বাণী দেবতার বরাভয়ের মত শিরোধাধ্য করিয়া চিরস্তনা দেবীর পাদপীঠতলে ৰসিতে সাহস পাইয়াছি) প্রত্যক্ষে হউক পরোক্ষে হউক, সে স্নেহের আশ্বাস আজ ও আমাকে ছুভেছ্চ কবচাবরণে আবৃত রাখিয়াছে এ বিশ্বাস ও আশাকে হৃদয়ের মধ্যে দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত করিয়া আজ ধুক্তপত্রিকার সম্পাদনভার স্বন্ধে নিয়া আবার পথে বাহির হইলাম-_যাত্রাপথ ছায়াস্থশীতল সরঃশীক রন্গিগ্ধ ও কুমুমগন্ধামোদিত হইবে কি না, তাহা সেই চিরপ্রিয়া চিরারাধ্যা অস্তরদ্ধেবতা মানসীই জানেন, যাহার পাদপন্মে পত্রিকার পত্রান্তরাল দিয়া পূজোপচার পনহুছাইবার জন্য জীবনভর! এই প্রাণপণ আকিঞ্চন। প্রীজগদিক্দ্রনাথ রায়। ফাল্গুন, ১৩২২ ] মবব্ষ ৫. নববধ মঙ্গলময় পরমেশ্বরের অশেষ করুণায় “মানসী” আজ তাহার জীবনের সাতটা বৎসর অতিক্রম কণ্পিয়৷ অষ্টম বর্ষে পদার্পণ করিল। মানসীর শুভান্ধ্যায়ী ও পৃষ্ঠ- পোষকবর্গ আজ ইহার জন্মতিথি উপলক্ষে আন্তরিক আহ্লাদিত সন্দেহ নাই। রর রবীন্দ্রনাথের আশীলিপি ললাটে ধারণ করিয়া মানসী লোক-লোচনের গোচরীভূত হয়। তাহার পর দিনে দিনে শুক্লপক্ষ শশিকলার ন্যায় বৃদ্ধি পাইয়া আমিতেছিল। গাছ যেমন প্রঁথমাবস্থায় অঙ্কুর হইতে ক্রমশঃ বাড়িয়া উঠে, ছোট ছোট সুকুমার শিশু গুলি যেমন বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ ও সবল হইতে থাকে, মানসীও সেইরূপ বৎসরের পর বৎসর শুধু আয়তনে ও অঙ্গ-সৌষ্টবে নহে,আভ্যন্তরিক সৌন্দধ্যেও শোভনতর হইতে লাগিল। কর্ৃপক্ষগণের আধম্য উৎসাহে মানসী সাধারণের গ্রীতি- ভাঙন হইয়া নিজের জীবনের উপযোগিতার যোগ্য প্রমাণ দিতে সমর্থ হইল। ছুই বৎসর পুকব্রে সেই ক্ষুদ্র বালিকা যখন মহারাজ জগদিন্ত্রনাথের পালিত কন্তা বলিয়া পরিগণিত হইল,তখন ইহার শুভাকাজ্ষীর৷ তাহার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে নব নব আশা! পোষণ করিতে লাগিলেন। মানসীর বহিঃসৌন্দর্যযও যেরূপ বদ্ধিত হইয়াছে, তাহার অন্তঃ-সৌন্দর্যযবৃদ্ধিকল্পে এই প্রবীণ-সাহিত্যিক ও নবীন-সম্পাদকের চেষ্টাও তন্রপ ফলবতী 'হইয়াছে-_ এ কথা অস্বীকার করিলে সত্যের অপলাপ করা হয়। রম-পিপান্গণ জগদিজ্্নাথের রচনায় ভাব ও ভাষার অপূর্ব-সশ্মিলনে_তাহার রচনার কলা-কৌশলে-_- তাহার মানব চরিত্র বিশ্লেষণ শক্তির প্রকৃষ্ট পরিচয়ে যে আনন্দলাভ করিয়াছেন, তাহার জন্ত সকলেই তাহাকে ধন্ঘবাদ দিবেনঞ। গুরুতর সম্পাদন কাধ্য করিয়া যশোলাভ করা অনেকের ভাগ্যেই ঘটিয়া উঠে না) কিন্ধ স্থখের বিষয় বাণী ও কমলার 'বরপুত্র নাটো- রাধিপের ভাগ্যে তাহাও ঘটিয়াছে। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আকার বৃদি। প্রকৃতির রীতি। সেই স্বাভাবিক নিয়মবশে “মানসী*কে আজ নূতন ও বন্ধিত আকারে দেখিয়া ইহার শুভাকাজ্ষীরা আনন্দিতই হইবেন। মানমীর বর্ধিতায়তন ও সহজ সরল গতিঃ ইহার প্রাণ শক্তির পরিচয় দিতেছে । “মানসী” এতদিন একা ছিল; আজ সে “মন্মবাণী”কে সখীরূপে পাইয়াছে। ছুইসথী যেন পরস্পরের বাহু ধরিয়া সাহিতোর নন্দন-কাসনে আসিয়া দীড়াইয়াছে। ফাল্গুনের প্রথম মলয়-সমীরণ তাহাদের চূর্ণ এলায়িত অলকদামে মৃছু হিল্লোল তুলিয়া বহিতেছে। শীতের শেষ শিহরণ ও প্রথম বসন্তের মৃদু বেণুগুঞ্জন আজ তাহা দের মনে প্রাণে এক নুতন আকুলতা। আনিয়া! দিতেছে । পিকগণ কুঞ্ভবনে বৈতালিক গীত আরম্ভ করিয়াছে,নব মুকুলিত কিশলয় পল্লব, গ্তামলে-হরিতে, উজ্জবলে-মধুরে আজ অপূর্ব সজীবতার আভাদ আনিরা দিতেছে। আজ বিশ্বভুবন তাহাদের চোখে আশা আনন্দ উৎসাহে পরিপূর্ণ । প্রভাত বাবুকে সহযোগীরূপে পাইয়া সম্পাদক জগদিন্দ্রনাথও যেমন নব বলে বলীয়ান হইলেন, তেমনি পাঠকবর্গও, তাহাকে এই ষুগ্মপত্রিকার অন্যতম সম্পা- দকের আসন অলঙ্কৃত করিতে দেখিয়া মনে নব নৰ আশা পোষণ করিতেছেন। মাসিকপত্র পরিচালন বাঙ্গালাদেশে একটা আশঙ্কা- সঙ্কুল অনুষ্ঠান। কতৃপক্ষ ও গ্রাহকবর্গের মধ্যে সহান্ু- ভৃতি না থাকিলে ও পরস্পর পরস্পরের সহায়তা না করিলে এই অনুষ্ঠানটি সুষ্টুরূপে চলিতে পারে না । আমার মনে হয়, দেশের বর্তমান অবস্থার প্রাতি সম্যক্‌ লক্ষ্য রাখিয়া মাসিকপত্র পরিচালন করা৷ উচিত। যতদিন না দেশে শিক্ষার প্রসার বদ্ধিত হয় ততগ্দিন ,সাধারণের মুখ চাহিয়া সাধারণকে আনন্দ ও তৃপ্ডি দিবার জগ্, তাহাদের কন্ম-ক্রিন্ন অবসাদগ্রস্ত প্রাণে সাহিত্যের সজীব সরসতা ঢালিয়! দিবার জন্য, সহজ বোধ্য ভাষায় কাঁজের কথা লিখিতে হইবে__যাহাতে ৬ মানসী ও মন্্মবাণী [ ৮ম বর্ষ_-১ম খণ্ড__-১ম সংখ্যা তাহারা শিক্ষার সহিত আনন্দ উপভোগ করিতে সমর্থ হয়। দেশবাসীর শিক্ষা, স্বাস্থা, চরিত্রোন্নতি, অবস্থার উৎ- কর্ষ সাধন, দারিদ্রানিবারণ, অভাব মোচন ও আব্ন্দ বিধানের জন্য লিখিতে হইবে; পত্রিকা-সম্পাদক ও লেখকগণের মে কথা ম্মরণ না রাখিলে চলিবে না। শিক্ষাারা প্ররুত মনুষ্যত্ব লাভ করা যায়, মানব- পদ্বাচ্য হইতে পারা যায়। সেই শিক্ষার বিস্তারকলে সহায়তা কর! সকলেরই কর্তব্য। এ সম্বন্ধে মাসিক পত্রিকায় আলোচন! হওয়া আবশ্তক | চট্টগ্রাম সাহিত্য-সম্মেলনের সভাপাতি আচাধ্য অক্ষচন্ত্র সরকার মহাশয় তাহার অভিভাষণে দেখাইয়া- ছেন যে স্বাস্থ্যের কথাও সাহিতোর একান প্রয়োজনীয় ংশ। শরীর সবল না হইলে মনের স্কু্ডি থাকে না-_ সাহিত্যালোচনা করিবার,রস গ্রহণ করিবার প্রবৃত্তি থাকে না। জীবন্ত নর-কঙ্কালে সাহিত্যের কি সেবা করিবে । ডাক্তার চুণীলাল বন্গু-প্রমুখ কৃতবিগ্থ মনীষিগণ পুব্বে “ভারতী” প্রভৃতি মাসিক পত্রিকায় শারীর-তত্ববিষয়ক অনেকগুলি প্রবন্ধ লিখিয়া আলোচনা করিয়াছিলেন) কিন্তু হূর্ভাগ্যক্রমে গতবৎসর সেরূপ প্রবন্ধ আমাদের চক্ষে পড়ে নাই। দেশের কৃতবিদ্ত ডাক্তার ও কাব- রাজ মহাশয়ের এ বিষজ্ে অবহিত হ্হয়া মাসিক পত্রিকার সাহায্যে সাধারণকে উপদেশ দান” করিলে আমাদের অনেক উপকার হইতে পারে। আর একটা কথা, দারিদ্র আমাদের এখন চির- সহচর। নিত্য অভাবের তাড়নায় ঘরে ঘরে ক্রুন্দনের সুর উঠিপ়াছে। ভবিষ্যৎ যেরূপ অন্ধকারমক্ দেখিতে ছি, তাহাতে মনে হয় এই ক্রন্দন শীস্র ভারত-আকাশ বিদীর্ করিবে । ইহার প্রতীকার না করিতে পারিলে ভারত- বাসার অস্তিত্ব থাকিবে না-'সুজলা-সফলা-মলয়জা-শাতলা, বঙ্গভূমি মরুভূমিতে পরিণত হইবে । অন্নচিন্ত। চমৎকার হহয় ধাড়াইক়াছে। অর্থাগমের সুবিধা বিষয়ক ব্যব- হারিক প্রবন্ধাদি মামিক পত্রিকায় আলোচিত হওয়া বাঞ্ছনীয় । পরছূঃখকাতর সমবেদনাতুর অধ্যাপক রাধা- কমল মুখোপাধ্যায় মহাশয় দরিদ্রের ক্রন্দন দেখিয়া যে ক্রন্দন, করিয়াছেন তাহা আস্তরিকতাপুর্ণ, পবিভ্র। বৈষয়িক উন্নতির কতকগুলি পন্থা প্রদর্শন করাইয়া তিনি আমাদেরু ধন্টবাদের ভাজন হইয়াছেন । এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলিয়া রাখি। ভারত ভাবুকতার দেশ সত্য, কিন্তু বাস্তবকে অবহেলা করিলে ত চলিবে না। দারিদ্র্য-রাক্ষপী আমা- দিগকে নিম্পেষণ করিবার জন্ত আপনার সবল হস্ত উত্তোলন করিয়া রহিয়াছে, ইহা বাস্তব সতা-_ইহাকে উপেক্ষা করিলে চলিবে না । “অর্থমনর্থম্‌ ভাবয় নিত্যম্/ বলিয়া উপদেশ দিতে আমিলে উপহাসাম্পদ হইতে হইবে না কি? তাই বলিয়া! একথা বলিতেছি না যে ভারতের চিরস্তন ভাবুকতাকে সমুদ্রপারে দুর করিয়া দিতে হইবে । ভাবুকতা চাই বাস্তবের কারণ নির্দেশ করি- বার জন্ত__ভাধুকতা চাই কম্মে প্রেরণা আনয়ন করিবার জন্ট-__ভাবুকতা চাই কম্ম করিবার জন্ঠ। শুধু বাস্তবতা বা শুধু ভাবুকতাকে ধারয়া থাঁকলে চলিবে না। বাস্তবের পুজা করিয়া “অতিমান্ুষে'র দেশ পাশ্চাত্য জগতে কি ভয়ঙ্কর প্রলয় কাণ্ডের সুচনা করিয়াছে তাহা কে নাজানে। আবার প্রাচ্জগতে চীন ও ভারতবর্ষ ভাবুকতার মাদকতায় বিভোর থাকিয়া উন্নতির কতদুর নিয়ে আসিয়া পড়িয়াছে তাহা আর কাহাকেও কি বলিয়৷ দিতে হইবে? ভাবুকতা ও বাস্তবতার অপুর্ব সম্মেলনে বঙ্গ সাহিত্যে নবপ্রয়াগের স্থষ্টি হউক । আমাদের আধুনিক সাহিত্যে চিস্তাণ্বীলতার অভাব পরিলক্ষিত হইতেছে। নুতন ভাবের সৃষ্টি হইতেছে না -যে ভারত এককালে জগৎকে ভাবের বন্তায় প্লাবিত করিয়াছিল সে ভারত আজ ভাবের কাঙ্গাল। আমাদের সেই পৈত্রিক পুরাতন চিস্তাথাত আজিও বর্তমান, কিন্তু ভাবের প্রবাহ তাহাতে অতি মৃদু, অতি ক্ষীণ। স্থমহান্‌ পর্বতের জল-ম্তরোতের স্টায় চিস্তা-শ্রোত আসিয়া মরা- গাঙে বান না ডাকাইলে আমংদের চিত্ব-ছুকুল ভামিবে কিসে! নূতন ভাব-গঙ্গা আনয়ন করিতে হুইবে, পুরা- তনের স্বতির দোহাই দিয়া নিশ্চেষ্ট হইয়া বসিয়া ফাল্গুন, ১৩২২1 থাকিলে ত চলিবে না। বর্তমান ' জগৎ হইতে ভাব- পসরা আনিতে হইবে । মধু-মক্ষিকার স্তায় ভাব-সঞ্চয় করিয়া মধুচক্র রচনা করিতে হইবে। যেখানে নৃতন ভাবের দর্শন পাইব সেইথান হইতেই উহা! গ্রহঞ্ধ করিব, কারণ ভারতবাঁসী ত বর্জন জানে না_-জানে কেবল গ্রহণ । এ গ্রহণ চৌর্যা-বুত্তি নহে । ভাব সকলকে আপ- নার করিয়া,দেশকাল পাত্রোপষোগী করিয়া লইতে হইবে। মধু-মক্ষিকা নানা পুষ্প হইতে মধু আহরণ করে, কিন্ত যখন মধুচক্র হইতে মধু ক্ষরিত হয় তখন কতটুকু মধু কোন পুম্পের তাহার কি হিসাব থাকে? সেই রূপ গৃহীত ভাবগুলি মনীষার অপূর্ব কৌশলে নবজীবন লাভ করিবে। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক বিনয়কুমার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ না দিয়া থাকিতে পারিতেছি না। তিনি “বর্তমান জগতে” বৈদেশিক বহুতর ভাবের সহিত আমাদিগকে পরিচিত করিয়া দিয়াছেন। ভ্রমণকারীর দেশ-্রমণের প্রকৃত অভিজ্ঞতা এইরূপ ধরণেই লিখিত হওয়া উচিত। অন্ত দেশের প্রাণের ধারাকে বুঝিতে হইলে দেশবাসীর প্রকৃতিগত পরিচয় জানা আবশ্তক । ন্তাভাদের ভাবরাশি সমাকৃ উপলব্ধি করিতে হইলে ভাহাদের সঠিত ভাবের আদান প্রদান করিতে হইবে জানিতে হইবে তাহাদের বিশেষত্ব কিসে- বুঝিতে হইবে কোন অবস্থায় পড়িয়া কোন ভাব-কুুম ফুটিয়া স্বগন্ধে সকলকে আমোদিত করিতেছে । আর সেই সকল ভাবরুক্ষের চারা ভারতে আনিয়া “কলম? করিয়া, ভারতীয় ভাবের সহিত যিলন করিয়া ভারতভূমিতে রোপণ করিতে হইবে । যাহা কিছু ম₹ৎ-যাহা কিছু সৎ, তাহাকেই বরণ করিয়া লইতে হইবে । যেখানেই উচ্চ আদর্শের পরিচয় পাওয়া যায়, সেইখানেই মস্তক আপনা হইতে নত হইয়া পড়ে। সেই উচ্চ আদশ- গুলিকে আপনার ক্রিয়া লইতে হইবে। " এখানে একটা! কথা বলিলে বোধ হয় অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। নূতন চিন্তা 'আনিতে হইবে সতা, কিন্ত পাশ্চাতা-সমাজের শুধু অন্ধ অনুকরণ করিলে চলিবে না, বা আপাত-মনোহর নয়নাভিরাম গন্ধহীন “পরগাছা। নববর্ষ ৭ আনিলে চলিবে না। পত্রবসল ফলপুষ্পদায়ী বৃক্ষ আনিতে হইবে_ যাহার তলদেশে বসিয়া সংসারক্লি পথিক স্ুশীতল ছায়া! পাইবে-_্বগন্ধে তাহার প্রাণ মাতোয়ারা হইবে-_ফলাস্বাদে তাহার জীবন ধন্ত হইবে। অশ্লীল নগ্ন-সৌন্দর্যের উপাসক জনকতক লেখক অশ্লীল চিত্র অস্কিত করিয়া আর্টের ও বাস্তবতার দোহাই দিয়া মাসিক পত্রিকার পৃ কলঙ্কিত করিতেছেন। কি বলিয়া তাহাদিগকে বুঝাইব আট উদ্দেশ্ত্ীন নহে; আর,সকল বাস্তব ব্িনিস সকলের সমক্ষে বলা উচিত নয়। আমাদের গুহের স্রন্দর চিত্রগুলি কি বাস্তব নয়? প্রতিভার তুলিকার সাহাযো তাহাদিগকে ফুটাইয়া তুল না কেন? ভারত্বীয় আদর্শকে ক্ষুণ্ন করিও না। কেহ কেহ বলিয়া থাকেন পাপের চিত্র অঙ্কিত না করিলে পাপের প্রতি ঘ্ণা আসিবে না । 'এ কথাটা কি সতা? পাপের পরিণাম দেখিয়াও কোন্‌ বাক্তি কবে পাপকর্ম্নে বিরত হইয়াছে? পাশ্চাত্য ওুপন্তাসিক ও গল্প-লেখকদিগের মধ্যে কেহ কেহ এই পণ্থাই প্রকৃই বলিয়া বিবেচন! করেন সত্য, কিন্ত দেখিতে হইবে তাহাদের সামাজিক বাধিগুলি কতদিনের পুরাতন ও সেগুলির গ্রসার ও গভীরত্বই বা কতদূর । তাহাদের দেশে স্থচিকাভরণ মহৌষধ হঠতে পারে_কিন্ত সৌভাগ্যবশতঃ আমাদের দেশের ও সমাজের অবস্থা এখনও তাদৃশ নহে। এখন দেশে একটা নূতন হাওয়া উঠ্ঠিয়াছে সেটা হইতেছে ব্যক্তিত্ববাদ (118115101850187) )--আপনার প্রতি প্লীতি। আপনার শক্তির প্রতি ঞ্কটা বিশ্বাস থাক! মন্দ নতে ; কিন্তু তাই বলিয়া আমি যাহা বলিব তাহাই বেদবাকা, আমি যাহা করিব তাহা! সকলেরই করণীয়, এরূপ চিন্তা কর! উচিত নম্ন। আপনাকে মানবের উপরে “অতি মান্ুষণরূপে স্থাপন করা কোন মতেই কর্তব্য নয়। পাশ্চাত্য-জগতে ব্যক্িত্ববান্দের স্বান একটু আছে, কারণ সে দেশে “সবাই শ্বাধীন, সিবাই প্রধান-আর আমাদের দেশে আমরা যে তৃণাদপি সুনীচ*, আমরা যে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ছাড়! থাকিতে জানি না__ আমাদের চরিত্র যে ত্বাহাদের ৮ মানসী ও মর্ন্মবাদী মধ্য দিয়া স্যৃর্তি লাভ করিয়াছে, তাহাদের নিকট হইতে রস গ্রহণ করিয়া আমর! যে পুষ্ট হইয়াছি। আমাদের ত নিজেদের স্বাতন্ত্রা নাই। পাশ্চাতা দেশে এই স্বাতন্থা ও বাক্তিত্ববাদের আধুনিক খষি হইতোঁছিন ইবসেন। আজকাল কেহ কেহ ইব্‌সেনের নাম শুনিলেই নাসিক কুঞ্চিত করিয়া থাকেন । ইব্‌সেনে- জিম্‌ যেন অশ্লীলতা ও কুরুচির একার্ণ হইয়া ঠাড়াইয়াছে; কিন্তু বাস্তবিকই কি তাহাই ? এ বিষয়ে চিন্তা করা উচিত। ইবসেনকে বুঝিতে হইলে কয়েকটি কথা স্রণ রাখিতে হইবে । দেশে সামাজিক দুর্দশা, নর- নারীর ব্যভিচার, সমাজ ও ধর্দ্দের ভগ্তামীর প্রবল স্রোত বহিতেছে দেখিয়া মোহ্নিদ্রায় অভিভূত সমাজ- হস্কারকগণের চক্ষু উন্দীলন করাইবার জন্য ইবসেন, লেখনী ধারণ করিয়াছিলেন । নরওয়ের সমাজে তখন তামস-ধুগ। এই সকল দুশ্চিকিত্ত রোগে সচিকা- ভরণই প্রকৃত ওঁষধ) তথাপি তিনি কোথাও এই মহৌষধির প্রয়োগ করেন নাই, তিনি ড্রষ্টার স্তায় রোগ নির্ণয় করিয়াছেন। আর এক কথা, ইবসেন হইতেছেন একজন অতীন্দিয়বাদী (78৮0)। তিনি কোগাও মশ্লীল নগ্রচিত্র (8079) অঙ্কিত করেন নাই। তার বাক্তিত্ববাদে আত্মন্তরিতা নাই । তাহার কথায় বলিতে গেলে ৮0 চ0206 9561 2০ 10 0791800 ৪ 0018 2180৮ মানবকে প্রকৃত ভদ্র করাই ব্ক্তিত্ববাদের আদর্শ । এই আদর্শ কি সর্বত্র গ্রযুজা হইতে পারে. না? ইহার মধ্যে দোষের কি আছে? কিছু তাই বলিয়া তাহার স্বাধীনতা-প্রয়াসী নারী- জাতির ব্যক্তিত্ববাদ আমাদের দেশে চালাইতে গেলে চলিবে না । 1)0158 110989এর নোরার চরিত্র অদ্ভুত । অবাবস্থিত চিত্ত “নোরা” সংসারের ঘাত প্রতিঘাতে যখন সুপ্ত মনুষ্যত্ব ফিরিয়া গাইল, তখন সেই মনুষ্যত্বের সম্যক বিকাশের জন্য-_-তাহারই সাধনার জন্য-_ পুত্র, কন্তা ও স্বামীকে ফেলিয়া অন্তত্র চলিয়া গেল। পাশ্চাত্যরমণী আপনার ন্যাযা দাবী আদায় করিতে জানে, কিন্তু কর্তবা কি তাহা তাহাদের মধ্যে অনেকেই [৮ম বর্ব--১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা জানেনা জানেনা স্থার্থত্যাগ করিতে-_-জানে না ত্যাগের বিমল আনন্দ অন্ুভব করিতে । তিনটি শিশ্ত পালন কর! কি নোরার কর্তবা ছিল না? স্বামীর প্রতি কি তাহার কোন কর্তবা নাই। তবে ইব্সেন নোরার 'প্রতাবর্তনের একটা আশা রাখিয়া দিয়াছেন। এ চিত্র আমাদের দেশে কখনই শোভন হইবে না। আবার, এই বাক্তিত্ববাদের অতুাক্তিকে পরিহাস করিয়া ইব্‌সেন ঘা] 1900 লিখিয়াছেন। নারীর বাক্তিত্ব- বাদ ও স্বাধীনতার পৃষ্ঠপোষক হইলেও তিনি বুঝিয়া- ছিলেন, নারীর স্বাধীনতা তাহার মাতৃত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। গত কয়বৎসর “মানসী”, বঙ্গ-সাহিতো কি উপহার দিয়াছে তাহার একটু সংক্ষিপু আলোচনা করিলে বোধ হয় অপ্রাসঙ্গিক হইবে না) কারণ নূতন কিছু করিবার চেষ্টা করিতে হইলে পুরাতন যাহা কিছু ছিল তাহার দোষগুণ বিচার কবিতে হইবে। দেখিতে হইবে অভাব ও অভিযোগগুলি প্রক্কত কি না, সেগুলি সহজে কিরূপে পুর্ণ করা যায়। এই কয়বৎসরে “মানসী” জলধর:বাবুর “বিশুদাদা, রাখাল বাবুর 'শশাস্ক”, প্রভাতবাবুর “রত্বদীপ” প্রকাশ করিয়া উপন্তাস পাঠক- গণের মনোরঞ্জন করিতে সমর্থ হইয়াছে । বিগতবর্ষে লব্ধপ্রতিষ্ঠা লেখিকা অনুরূপা দেবীর “উন্কা” উপন্তাস প্রকাশিত হইয়াছে । প্রভাতবাঝুর "জীবনের মূলা” ধারাবাহিক ভাবে বাহির হইতেছে । ছুঃখের বিষয় গতবর্ষে “মানসী”তে প্রভাতবাবুর “বালাবন্ধ”, “মাতৃহীন” খোকার কাণ্ড প্রড়ৃতির মত স্ন্দর গল্প একটিও প্রকাশিত হয় নাই। ডাক্তার পপ্রফুন্তচন্ত্র রায় বিগত কয়েক বর্ষে শিক্ষিত ছাত্র সম্প্রদায়ের জীবিকাঁ- সমন্তা লইয়া আলোচনা করিয়াছিলেন । গতবর্ষে এ বিষয়ে “মানসী?তে কিছুই আলোচিত “য় নাই। “অভয়ের কথা+, “বিচিত্র প্রসঙ্গ প্রভৃতির মত সারবান প্রবন্ধনিচয় আমরা আর পাইতেছি' না কেন? বৈদিশিক- সাহিতোর পরিচয় মানসীতে প্রকাশিত হইলে তাল হয়। “মানসী” গতবর্ধে কবিতা সম্পদে সমুজ্জল। নহারাজ ফাল্গুন, ১৩২২ ] নূরজাহান ৯ জগদিন্্রনাথ, ফতীন্দ্রমোহন, বসস্তকুমাঁর, করুণানিধান, কালিদাস রায় প্রভৃতি কৰিগণের কতক গুলি উৎকৃষ্ট কবিতা প্রকাশিত হইয়াছে । জশদিন্্রনাথের কবিতা- গুলি মাসিক পত্রিকার পুষ্ঠদেশে আর কতদিন পড়িয়া থাকিবে? ছোট গল্পের জন্ত এককালে নানসীর বিশেষ খাতি ছিল, কিন্ত দুঃখের বিষয় গত বৎসর সে গৌরব কথঞ্চিৎ ম্লান ১ইয়াছে। আশা করি “মানসী ও মন্মবাণী” নববর্ষে নষ্ট গৌরব পুনরুদ্ধার করিতে সমর্থ হইবে। রোগাতুর শন্মার“রোগশয্যার প্রলাপ”-এর মত চিত্তাকর্ষক প্রবন্ধ পাঠে দেশের কথা, সমাজের কথা প্রড়তি অনেক চিন্তিতবা বিষয়ের উপাদান পাওয়া যায়। ভগবান রোগাত্ুর শন্মাকে'নিরাময় ক্লরুন। কার্য জন কয়েকের চেষ্টায় হইবে না, সাধারণের সহান্ু- ভূতি ও সমবেত চেষ্টায় হইতে পারে । পরিশেষে মঙ্গলময়ের নিকট প্রার্থনা “মানসী ও মন্মবাণী' যেন জ্ঞানের বর্তিকা লইয়া অন্ধকারকে দূর করিতে পারে,শিক্ষার বিস্তার করিতে পারে, ধন্মার্থকাম- মোক্ষের সঙ্ধান বলিয়া দিতে পারে, বিমল সাহিতোর রস দান করিয়া শুক্ষ তৃষ্ণান্ত পিপাসু কণ্ঠকে সরস করিতে পারে, মানবের চিন্তবুস্তির প্ফুরণ করিবার সহায় হইতে পারে, মানবকে প্রত মানবত্ধে উন্নীত করিবার সহায়ক হইতে পারে, বাঙ্গালার লিখন 5ঙ্গীতে সবল সুস্থ নৈতিক স্থুর দিতে পারে। দয়া ফের কৃপায় নুতন “মানসা ও মন্মবাণী” অজর ও অমর হ-র়া নৃতন ভাবের বন্তায় বাঙ্গাল! দেশকে প্লাবিত করিয়া দিউক । আীচারুচন্দ্র মিত্র । মানসীর স্বাতন্থা ও বিশেষত্বের জন্ত সম্পাদক ও লেখকবর্ণ যথেষ্টই করিয়াছেন ও করিতেছেন, কিন্তু এই নূরজাহান । ( পূর্ব্ব-প্রকাশিতের পর ) জীবনারস্তের একমাত্র অভিলধিত, জীবনশেষের এক মাত্র স্নেভাবলহ্বন, প্রম-পিঞ্জরের একমাত্র শুক বিভ্গ,হাদয়- পঞ্জর ভাঙ্রিয়া যে দিন অনিদ্দি্ট লোকান্তরের উদ্দেশে অনন্তকালের জন্য পলায়ন করে, চিরবিরহাতুর বিধবার পক্ষে সে দিন যেকি দিন তাহা! কেমন করিয়া বলি? সারা বুক ভরিয়া যেবাস করে, সারা দিনের কর্মের মধ্যে যে বিরাজিত, সমপ্ত দিন রাত্রির চিন্তার, মধ্যে যাহার অটল আদন স্থাপিত, সে আসন শৃন্ত হইলে, সে বুক খালি হইয়া গেলে কেমন হয় তাহা যাহার না হইয়াছে সে বলিতে পারে না এবং যাহার হইয়াছে সেও এক নিমেষে পাষাণ হইয়া যায়। সমস্ত বলার অতীত যে দুঃসহ ছুঃখ, সে কথার বর্ণন কেমন করিয়া! কে করিবে? পরমাধুর যে কয়টা দিন ছুঃখের ধরণীতে থাকিতে হইবে, তাহা থাকিতেই হয়, তবে কেমন করিয়া যে থাকে, তাহা * , সেই চিরদুঃখীর ছঃখময় দিনযাত্রার মধ্যে কথঞ্চিৎ প্রকাশ পায়। মেহেরও সেইরূপ তাহার দারুণ ছুঃখ-দিনের শ্নেহশালিনী রমণীর প্রেম এই দুঃখ দৈন্য জরামরণ - গ্রস্ত ধরণীর 'অসহায় মানবের হণন্মবণের সুণীতল স্থধালেপ, ভাগাবান জাহাঙ্গীর সে সুধার আন্বাদ প্রচুর পরিমাণে পাইয়া ধন্য ভইয়াছেন। মানবজীবনের চিরা- কাজ্কফিত সার্থকতা, যাহা রাজজীবনে স্ুগুলভি, সে সার্থকতা জাহাপনা জাহাঙ্গীর তাহার চিরাভিলফিত আদর্শ রমণী মেহেরেরই হস্তে লাভ করিয়া তাহার জন্ম ও জীবন সফল করিয়া গিয়াছেন। বনু-বল্লভ নৃপতির ক্ষণিক প্রণয়ের সৌভাগাস্থৃতি লইয়া মেহেরকে অনাবপ্তক জীবন অনাদরের অন্ধকারে যাপন করিতে হয় নাই, তাহার প্রাণাধিক বল্লভতম রাঞজকান্তকে যে * অজস্্ স্নেহ গ্রীন্ডি তিনি দান করিয়া তাহার রাজজীবন ও মানবজীবন ধন্ত করিয়া দিয়াছিলেন, প্লাজাধিরাজ জাহাঙ্গীরও স্বামীরূপে প্রণরীরূপে সে প্রেমের প্রচুর প্রতিদান দিয়া গিয়াছেন। কিন্তু সে চিন্তায় বৈধব্যের, বিপুল বিরহের দিনে শাস্তি সাস্বনা কি পাওয়া সয়? চর ১৩ মানসী ও মন্মবাণী কিছু পরিচয় দিয়া গিয়াছে। আজ আর সেদিন নাই, রাজদণ্ড হস্ত হইতে স্মলিত হইয়া পড়িয়াছে, মহার্ঘ্য মণিমণ্ডিত মুকুট আজ শিরশ্চত, একান্ত প্রিয়জনের স্বেচ্ছাদন্ত প্রেমমন্দারমালা আজ কণবিচাত, ভার্কতপতি জাহাঙ্গীরের হৃদয়াশ্রিতা প্রেম-লতিকার মূর্তিমতী আনন্দা- মঞ্জরী আজ ধুলায় লুণ্ঠিত হইয়া পড়িয়াছে। আমরা জানি ও বিশ্বাস করি যে অনন্ত আকাশ- তলের রবি সোম শনি মঙ্গল বুধ শুক্র প্রভৃতি জ্যোতিষ্ক এই ধরাধামের অসহায় নরনারীর অনৃষ্টের উপর আধি গতা করিয়া, কখনও সুখ সম্পদ, কখনও বা ডুঃখ দৈত্য দিয়া, আমাদের জীবন-যাত্রার কোন মতে শেষ করিরা দেয় এবং নির্দিষ্ট দিনে অজ্ঞাত লোক-লোকান্তরের যাত্রী করিয়া আমাদিগকে অন্ধকার পথে 'বদায় করে-__সে কথা সত্য নহে; কোন্‌ অজ্ঞাত দেবতার আজ্ঞায় জানি না, এই ধরণীর একটি মানুষ আর একটি মানুষের অনৃষ্টের উপর একাধিপতা করে। যতদিন সেই দৈব- প্রেরিত, অন্তরের অন্তরতম, একমাত্র শুভগ্রভের স্লেত- হস্তের করুণ ছায়া ও প্রেম সমত আনন্দ দৃষ্টি আমাদের উপর অক্ষয় হইয়া থাকে, আকাশের জোতিষের খর তাপ বা গহের বক্রৃষ্ট আমাদিগকে কোন দুঃগহ দিত পারে না। থে দিন প্রাপ্ুকালে বা অকালে, সকারণে বা অকারণে, আমরা সেই শুভ গ্রহের শুভদুষ্টি হতে বঞ্চিত হই সে দিনের ছুঃখ বেদনার নিকট শনি বা অশনির বাথা কিছুই নহে। কিশোরী মেহেরুন্রসার অনুত্তরঙগ স্তব্ধ প্রেম- সাগরে ভারতাকাশের পরিপূর্ণ চন্ত্রমা কুমার সেলিম যে জোয়ারের বান ডাকাইয়াছিল, সে তরঙ্গ মেভেরের হৃদয়তটে আজীবন কেমন করিয়া কত আঘাত করিয়াছে তাহা কেবল মেহেরই জানিত। জীবনসায়ান্ধে সে চাদের পরম হ্গিগ্ধ প্রেমচন্দ্রিকা মেহেরের অতৃপ্ত হৃদয়ের ক্ষত . বেদনার উপর কেমন করিয়া সুধালেপ দিয়া শাস্ত করিয়াছিল তাহা মেহেরই জানিত। আজ পে জদয়- চন্ত্রমা অন্তশিখরীর পরপারে চিরদিনের জন্য লুকাইয়া মেহেরকে কি অপার ছুঃখের মধ্যে নিক্ষেপ করিয়াছে তাহা মেহেরই জানে । [৮ম বর্ষ--১ম খণ্ড-১ম সংখ্যা এ জীবনের একান্ত আবশ্তকীয় অন্তরের প্রিয় মানুষটির ম্নেহলাভ সকলের ভাগে ঘটেনা। নৈরাশ্তের মধো জীবন আরম্ত করিয়া নৈরাশ্তেই তাহার অবসান হইকে ভাবিয়া আছি, তখন যদি চিরারাধা চিরাভিলফিত নয়নাভিরাম মনের মানুষটি জীবনভর! নিরাশীর ছুংখ মিটাইয়া দেয়, সে যে কত বড় সুখ তাহা কি বলিয়া শেষ করা যায়? তাহার পরেও যাহার দগ্ধভাগা প্রতিকূল হইয়া স্থচিরলন্ধ একান্তবাপ্ছিত চিন্তামণিহার ক হইতে খুলিয়া লয়, সে ছ্ঃখ রাখিবার স্থান ত্রিভুবনে মেলে কি? সে দিনে এই আকাশভরা আলোক এক নিমেষে কেমন" করিয়া নিবিয় যায়, দক্ষিণাপথের মন্দ মলয়মারুত কেমন করিয়া বিষদিপ্ধ ভইয়! উঠে, নিকুপ্ঠের পুষ্পমঞ্জরী এক পলে কেমন করিয়া বিফল হয়, বন্ুধার বন-বৈতালিকের কলগীতি কেমন করিয়া নিঃশেষে তাভার মাধুর্ধা হারায়, বসন্তের নবোত্তিন-তৃণস্তীর্ণ কুঞ্জবীথিকা কেমন করিয়া আরব সাগরের বালুবেলায় পরিণত হয়, সমগ্র জীবন কেমন করিয়া দুর্বহ হইগা পড়ে, পলে পলে কেমন করিয়া যে মরণ যাঁচংঞা করিতে হয় তাভা কেমন করিয়া বলি? প্রাণ-প্রিয় ধনকে কেমন করিয়া স্তগী করিব, কি করিলে তাভার মুখে আনন্দের হাগ্তমাধুকী বিকশিত হইয়া উঠিবে, আমার সব ধিয়া তাঠার সব দৈন্ট কেমন করিয়া মিটাইব এই চিন্তায় যাহার দিনরজনী ভরিয়া ছিল, হটাৎ একদিন এক নিমেষে সে হথচিন্তার নিকট হইতে বিদায় পাইলে, সে বিদায়ের নিদারুণ আদৃশ্ত শেলাঘাত যে শত শক্তিশেলের মত গর্বের উপর লক্ষ ছিদ্র করিয়া অমহ.বেদনায় সমস্ত অন্তরকে কেমন করিয়া মুচ্ছিত করে, তাহা যাহার করে সেই জানে, কিন্তু সে বাথা বলিবার ভাষ। কি আছে? এ যে দিনের কথা-সে দিনে মোগল সাআাজা ধন, সম্পদ, বল, বীর্য, গৌরব গারিমায় জগতের মধ্যে সর্বপ্রধান ছিল। সমুদ্রমেখলা ধরিত্রীর যেখানে যে লুক্কায়িত এ্শর্যা ছিল. দিল্লী সিংহাসনের অধিষ্ঠাতা সমাটের পাদপীঠতলে সমস্তই আসিয়া লুষ্ঠিত হইত। চিরধৈরধাময়ী ধরিত্রী বুক চিরিয়া তাহার গোপন খনির ফান্তন, ১৩২২ ] নূরজাহান ১১ রক্তমাণিক রাজচরণে উপহার দিত। অতলম্পর্শ জলনিধি রসাতলচারিণী রূপকথার রাণীর ক হইতে মুক্তামালা খুলিয়া আনিয়া সম্রাজ্জীর কম্বুক্ঠের চারু ভূষণ গড়িয়া দিত, অলকার ন্যায় গোলকুণ্ডার অক্ক্রত্ত ভাগডার সে দিন রাজকোষ পুর্ণ করিয়া আজও শৃন্ হইয়া বসিয়া আছে। দেশ দেশান্তর হইতে সমাহৃত “কোহিনূর+, দিরিয়ানূর” প্রভৃতি অমূল্য, মণি দেশ দেশান্তরের কত “নাদির', কত “আবদ্রালীর, কত আবদারই যে কত ছুঃখে পূর্ণ করিয়াছে ! কত দিকৃপিগন্তরের দিগ্বিজয়ী রাজার রাজদূত দিল্লী সিংহাসনের পীদপীঠতলে কত বৎসর বৎসর যাপন করিয়াও অভিলধিত *বরলাভ করিতে পারে নাই। এ হেন ইন্দ্রতুলয চক্রেশ্বরের প্রিয়তমার সুখ সমুদ্ধি উন্মাদ কল্পনারও অতাত, সেই স্বপ্লাতীত স্ুথ- স্বর্গ হইতে এক নিমেষে বিছযৃতা হইয়া যে নারী ধরণীর ধুলিতলে মিশাইর়া যায়, সে দ্রঃখ-বেদনার নিকট বজ- বেনাও কি লঘু নয়? যাহার অফুরন্ত শশ্বর্যয এবং অপার প্রেমের উপরে প্রতিষ্ঠিত আছি তাহার ক্ষণ- বিরহেই পাগল হইতে হয়। পরলোকপ্রবাসী সেই প্রিয়জনের চিরবিরহ “অসহ্য* একথা বলিলে কিছুই বলা হইল না। জাহাঙ্গীরের অবসানের পর কি বেদনায় মেহেরের দীর্ঘ অষ্টাদশ বর্ষ কাটিয়াছে তাহা সমছুঃখীর কল্পনার সামগ্রী-কোন লেখকের বর্ণনার জিনিষ নহে। জাহাঙ্গীরের বিয়োগ মেহেরের পক্ষে কেবল পতি- বিষ্বোগ্র নহে--পিতামাতার প্রতিকূলতায়, রাজ্যেশখ্বর সম্রাটের অনুজ্ঞায়, পরম প্রেমে যাহাকে জীবন প্রভাতে হৃদয়ে স্থান দিয়াও বুকের কাছে পাই নাই, জীবন- সন্ধ্যায় তাহাকে দিনরাত্রির সহচ্রম্বরূপ পাইয়াও হারাইলাম, এ বেদনার সঙ্গে কোনও বেদনার তুলনা হয় কি? সমগ্র জীর্বনকাল যাহাকে পাইবার জন্য আকাশের সকলগুলি দেবতার কাছে কায়মনে প্রার্থনা জানাইয়াছি, তীর্থমন্দিরের দ্বারে দ্বারে বাঞ্তিত লাভের জন্য মনে মনে কত মানতই করিয়াছি, জীবনশেষে তাহাকে পাইয়াও রাখিতে পারিলাম না, তাহার স্বেহকোমল, বক্ষে মাথা রাখিয়া নয়নের শেষ নিমেষপাত করিবার অবসর আমার হইল না, অন্তিম দিনে যখন পথের উপর আমার শেষ শ্বাস রুদ্ধ হইয়া যাইবে, তখন আমার একান্ত প্রিয়, প্রাণাধিক, নয়নমণি, জীবিতাবলম্বন, যে আমার সকল বাড়া, অন্তরতলে চরম দেবতার আসনে যাহাকে পরম প্রেমভরে বসাইয়াছিলাম, আকুল নয়নে গু'জিয়া তাহার সাক্ষাৎ আর জীবনে পাইব না,__ এ ছুঃখ যাহার ঘটিয়াছে, সে ভিন্ন অপরে কি বুঝিবে? চক্ষু তারকার সহিত যে মিশিয়া ছিল সে চলিয়া গেলে. চক্ষু অন্ধ হয়, দেহমনে যাহার প্রেমম্পশ বাসস্তিলতিকার মত অন্তরে বাহিরে আমাকে মঞ্জরিত করিয়া তুলিয়া- ছিল তাহার অভাবে এক মুহূর্তে পাষাণ ভইতে হয়-_ মেভের ইন্দ্িয়ভীনা অন্ধ পাষানী হইয়াই অষ্টাদশ বর্ষ যাপন করিয়াছে । মেহেরের প্রতি জাহাঙ্গীরের জীবনভর প্রেম কেবল সোহাগ আদরেই পর্যাবসিত তয় নাই, বাদশাতের কৃপায় মেহের হিন্দুস্থানের যথাথ সমাজ্জা হইয়াছিল একথা আমরা জানি-_বাদশাহের জীবনান্ত হইবার পর যাহাতে সম্রাজ্জীর অশন বসনের কোন ক্লেশ না হয়, তাহার অভাবের পর যে বিপ্লব উপস্থিত হইবে তাহা তিনি অনুমান করিয়াই বিধবা সমাজ্জীর পদমবধ্যাদার অনুরূপ বৃত্তির ব্যবস্থা করিয়া- ছিলেন-শুধু তাহাই নহে, স্বর্ণপ্রস্থ গুর্জর প্রদেশের মধামণিস্বরূপ আহমেদাবাদের সমস্ত রাজস্বও যাহাতে মেহেরের করায়ত্ত থাকে, সে ব্যবস্থাও তিনি করিয়! গিয়াছিলেন। হায়রে, যাহার সব ফুরাইয়৷ গিয়াছে, জীবন যাহার নিকট ছূর্বহ, অশন বসনের সৌকর্ষ্য তাহাকে কি সাত্বনা দিবে ? বৈধব্যের নিদারুণ ছুঃখাভি- ঘুতে মেহেরের মন দীনবন্ধুর চরণে শরণাপন্ন হইয়া- ছিল, ধাহার দত্ত জীবন তাহাকেই উৎসর্গ করিয়া দিয়! মেহের প্রতিদিন শেষ দিনের প্রতীক্ষায় বসিয়৷ ছিল, তাহার এশ্বর্ষ্যের প্রয়োজন কি কিছু ছিল? বাদ- শাহদত্ত বৃত্তির অতি নগণ্য অংশে তাহার এক সন্ধ্যার হ্বিষ্যান্নের বায় কুলান হইত, বাকি সমস্ত অর্থ ১০ সরাই মসজিদ কুপ কবর প্রভৃতি নিশ্মাণে বায় করিয়া, নিরন্নের মুখে অন্ন তুলিয়া দিয়া, গৃহ-হীনের শেষ শয়ন বিছাইবার উপায় করিয়া দিয়া, বিধবার নিপুল ছুঃখের দিন অতিবাহিত হইত। শুভ্র বসর্ন ধারণী, শুভ্রায়িতকেশ!, বাসী বিধবা নূরজাহানকে দেখিয়া সে দিনে কে বলিবে এই সেই কিশোরা মেঠের, জীবন বসন্তের এক শুভ-সঙ্ধায় দীপালোটিত সুসজ্জিত কক্ষে ধাহার বিলোলাপাঙ্গ-নিঞ্জিত হইয়া জগজ্জঘ্নী জাভাঙগীর এক.দন ইহারই রক্তকোকনদ পদে আত্ম'বক্রয় করিয়া- ছিলেন এবং ইহাকে একদিনের জন্তগও লাভ করিতে পারিলে জীবনের বাকী পরমাযুর সব কয়টা [দিন অকাতরে দিতে কুষ্ঠিত হইতেন না। কে বলিবে এই সেই নূরজাহান, স্বামীর রক্ষাপ্লে অসীম বিক্রম- শালী সেনাপতি মহাবতের সহিত প্রতিদ্ন্দিতার মানসে বর্াক্ষীতা পার্বত্য তরঙ্গিণীর মৃত্যু-তরঙ্গ মধো ঝাঁপ দিতে যাহার কেশাগ্রও কম্পিত হয় নাই; কে বলিবে এই সেই নূরজাহান, যাহার রাজকাধ্য-কুশলতায় মোগল সাম্াজোর অর্থ বশ্বর্যা গৌরব গরিমা বল বীধ্য সমস্তই একদিন বহু পাঁরমাণে বুদ্ধি পাহয়াছিল) কে বলিৰে এই সেই নুরজা ন, ধাহার সহিত তুলনা পৃথিবীর কোন দেশের "গন সম্রাঞ্জীই কোন গুণেহ সমকক্ষ হইতে পারেন "ই, ভবিষ্যতে হইবার সন্তাবনাও অতি বিরল। হায় ৫ আমার প্রাণাধিক প্রিয়জনের নয়নের সন্মুথে তাহার প্নেহম্পশে, তাহার সোহাগ আদরের মধো, তাহার দিনান্ত-ক্ষণদর্শনের আনন্দে আমি যাহা, তাহার নয়নান্তরালে তাহার স্নেহ বিচ্াত হইয়া তাহার সান্নিধ্য সাহচর্য্য সঙ্গ হারাইয়া আমি কি তাই? প্রেমের সঙ্গে, প্রেমাম্পদের সঙ্গে, ছুরাগ্যক্রমে প্রাণ যায় না, তাই ছায়ামাত্রাবশিষ্ট কঙ্কালসার দেহভার বহিয়া পথে প্রান্তরে অনাবশ্তক উদ্দেগ্তহীন বন্ধন- বিহীন জীণণ জীবন কোন মতে যাপন করিতে করিতে অন্তিম নিষ্কতির দিনে? অপেক্ষা করিতে হয়, নতুবা আজ মরিতে পাইলে পরদিবসের জন্ত অপেক্ষা কি কেহ করে, না করিত? | মানসী ও মন্মবাণী জাহাঙ্গীর দিল্লী বা আগরায় অধিক সময় থাকিতেন না, লাহোর আজমীর এবং কাশ্শীরে তাহার বেশী সময় কাটিত। বাদশাহের দিন-যামিনীর অবিচ্ছেদ- সঙ্গিনী মেহেরুন্লিসা স্বামী-সান্লিধোর আনন্দলোভে তাহার সঞ্গে সঙ্গেই ফিরিতেন। বৈধবোর বিপুল বেদনার দিনেও বাদশাহের প্রিয় রাজধানী লাহোরেই মেহের তাহার পরম ছুঃখের দিনযাত্রার স্থান নির্দেশ করিয়াছিলেন। ইহার আরও একটি কারণ ছিল। জাহাঙ্গীরশাহের পা1থব ধেহাবশিঞ্চ লাহোরে সাহদারায় সমাহত করা হইয়াছিল। মম্মর-নিম্মিত অনিন্দা সুন্দর এই মৃত্যুমন্দিরের প্রাতি অনিমেষ দৃষ্টি রাখিয়া মুর্তিমতী বেদনা মেহেরুন্সিসা তাহার প্রিয়-বিরহের দারুণ দিনগুলি কোন মতে যাপন করিতেন এবং তদানীন্তন সম্রাট সাঞজাহানের নিকট করযোড়ে প্রার্থনা করিয়া রাখিয়াছিলেন, যেন তাহারও জীবনাবসানে সমগ্র জীবনের একান্ত কামনার প্রয়তম ধন, ব্যর্থ- প্রায় জীবনাপরাহের সব্ধসাথকতার নিদান ও সুখ- শান্তবধাতা বাদশাহের পাশ্থেহ তাহাকেও সমাহিত করা হয়। একান্ত স্নেহমুগ্ধ জনের মনের এ হচ্ছ বড়হ স্বাভাবিক হচ্ছা, অশরারা প্েবতার মোহন মন্ত্র বলে প্রথম দধশনের ধিনেহ যাহাকে অন্তপের নিভৃত আসনে প্রতিষ্ঠিত কারয়াছ, তাহার পরে স্ুধাথকাল ধরিয়া সংসারের কণ্টকময় ছুঃখপথে |বচরণ করিবার সময়ে যে অভাষ্টের প্রতি হুধ্যমুখা পুষ্পের গায় উন্মুখী হহয়াই দিন কাটিয়াছে, বিগতপ্রায় বাসরে ছ'ধিনের সঙ্গ সাহচধ্য পাহয়াও প্রতিক্ষণে উপচীয়মান প্রেমামৃতের অজভ্রধারায় যাহার মনোভিমত তৃপ্তি সম্পাদন করিয়া দিবার অবসর এবং অদৃষ্ঠ আমার হহল না, লোক- লোকান্তরে তাহাকে পাহবার তপন্তা না করিয়৷, তাহার সমাধিভবনের গ্রাত সাশ্রনয়ন ,বারম্থার না ফিরাইয়া, তাহারই দেহাবশিষ্টের নিকট সমাঁহত হইবার বাঞ্ছ৷ হৃদয়ে পোষণ ন৷ কারয়৷ থাক৷ কি যায়? মেহেরুল্লিসা বিছুষী ছিলেন, বুদ্ধিমতী ছিলেন, কবি ছিলেন-যাহাই কেন থাকুন না, সর্বোপরি তিনি মানুষ _স্মাঁলচ্না এ সম্মলালী মইন শালীনতা তত হাত ১) শা 7 477 1 পা রা বা রশ 15 5 রি 5 ন রি 1 রি তি রা । 7 1 [ টা ] া তা 2) 15 পা 17) শা ট ৪ রা খ রে ৪ শর ঘি সু তা ন রি 41) ।5 টি রি 7. রঃ পি 35৭ ৫ 35৮ ॥ 1 ধা 1) হ ৎ/ 12 বা ৮ । সাশপারা স্মাধি-ভিবন 9 4 ঞা শধ্য চর এ রঃ 5 রি টা পি ক 8584254422 ২২52 25155055 2৮০৭-25827 “অনেক ুহোরসক কিক িকিনিনিকাাকাট্মিতিকা কা িসতিকিাকা কাত ১১১৯১৯17118 181-1 1118 ফাস্তন, ] ১৩২২ ছিলেন । তাহার অনবদ্যন্ন্বর দেহের" অভ্যন্তরে অপরি- মেয় স্নেহভরা মানবীর মন ছিল, যে মন প্রথমজীবনে, মনচোরের সহিত প্রথমদর্শন দিনে,এই জীবনের প্রথমান্ধ- ভূতির দিনে অপহৃত হইয়াছিল এবং সে মন'চার ভারতের ভাবী সম্রাট তুবনৈকম্ুন্দর কুমার সেলিম। সবাসাচী অজ্জুন- নিক্ষিপ্ত বসার লৌহশায়ক যেমন বস্ধার বক্ষ বিদারণ করিয়া রণক্রিষ্ঠ যোদ্ধার তৃষ্ণার তৃপ্তিরপিণা ভোগবতী ধারার স্থজন করে, অনঙ্গ-ধেবতার করক্ষিপ্ত প্রথম পুষ্পশায়ক তেমনি মেহেরের হ্ৃদয়পন্মের মধুকোষ ভেদ করিয়া তাহার রাজকান্তের সর্ববিধ তৃষ্ণানিবারণ- ক্ষম অপুর্ব মাধুর্যযময় সুধাশাতল প্রেমরসের স্বজন করিয়াছিল। কিন্তু রাজরাজের ছুভাগা যে যথাসময়ে সে স্থধার আম্বাদ পাইয়া তাহার মানব জীবনের সব আশা আকাঙ্ষা মিটিতে পারে নাই, মেহেরেরও দুভাগ্য যে জীবনসন্ধ্যায় যতটুকু তৃপ্রিদান করা সম্ভব তাহার আশা আকাজ্ষা আশ্বাস শতবার করিয়া দিয়া নিয়াও সে সাধ মিটাইবার যথেষ্ঠ সময় হহল না। যে দিনে সেবা সাহ্চধধ্য সান্নিধ্য সঙ্গের বড় প্রয়োজন, সে দিনে তাহার মানদবিহারী রাহ্রাধিরাজ, তাহার [প্রয় দিত, তাহার একাপ্ত বা।ঞ্ছততম-রাজকান্ত, তাহার জীবন বান্ধব, পথের ধুলার উপরে চক্ষু মুপ্রিত কারিয়া অকুরান পথের পথিক হইয়া বাহির হহলেন। অতৃপ্ত তৃষা ক্ষাধ্ হায় লইয়া যে নারীকে আরও কিছুকাল এ সংসারে ছঃখের দিন যাপন করিতে হইয়াছিল, সে দিন যে কেমন করিসা গিয়াছে তাহা সেই জানিত এবং তাহারই মত ছুঃখীজনে জানে__ অন্তধ্যামী জানেন কি না সে কথা কে বলিয়া দিবে? এই প্রিয়্বিচ্ছেদ-কাতরা চিরবিরাহণী বিধবার বিপুল ছঃখের দিনে তাহার বিগ্ঠা-বুদ্ধি কবিত্ব কিছুই তাহাকে কোন শাস্তি বা সাস্তবনা দিতে পারে নাই ;* সমস্ত আশা-আকাজ্মা কামনা-খাসনা বিসজ্জন দিয়া তিনি তাহার শেষ নিষ্কতির দিনের দিকে তাকাইয়া বসিক্প! ছিলেন এবং ছুব্বার মনঃক্লেশের তপ্ত দীর্ঘশ্বাসের অক্ষরে যে সকল কৰিত। সময়ে সময়ে তিনি রচনা করিয়া নূরজাহান : ১৩ গিয়াছেন তাহারহই একতম আজও আমরা তাহার সমাধির উপরে দেখিতে পাহয়৷ অশ্রজল সম্বরণ করিতে পারি না। “বর্মজারে মা গরীবা না চিরাগে না গুলে, না পরে পর্ওয়ানে আয়েদ্‌ না সদায়ে বুল্বুলে ” হায়রে, সাগরাগ্ঠা ধরিত্রীর 'একাধীশখর জাহাপনা জাহাঙ্গীরের বাঞ্চিততমা, প্রিয়তমা, প্রাণতমা, অপূর্বব লাবণাময়ী প্রেমাশ্রিতা দয়িতার সুখগুঃখময় সুদীর্ঘ জীবনের পরিণাম কি এই দীর্ঘনঃশ্বাস! জীবনের প্রথম প্রভাত অরুণোদয়ে, যৌবনবসন্তের প্রথম দক্ষিণানিলস্পশে তোমার ঈষদুত্িন্র-মঞ্জরী- হৃদয়বল্পরী তাহার আকাজ্ক্ষিত আশ্রয়কে নিকটে পাইয়া ও তাহাতে ভর করিয়া! শোভা সৌন্দর্যে সুখে ও স্ষমায় সার্থক হইতে পারে নাই - নানা বাধাবিপ্রময় সংসারের কণ্টকপথে রুধিরাক্ত পদে চলিয়া ধিনান্তের ঘনায়দান অন্ধকারের পূর্বব-মুহ্র্তে ছ'দণ্ডের ঈপ্সিত মিলনে তোমার কোন তাপুহই হয় নাত-__পরলোক-প্রবাসা প্রিয় তমের মুঠামশ্দিরে স্বীয় দেহাবশিষ্টের সমাধি পাই- বার প্রার্থনাও তোমার যথাকালে পূর্ণ হয় নাই! জীবন থাকিতে জীবিশনাথের সহিত তোমার মিলন যেমন আয়াসলব্ধ ও সুচিরাগত, জীবনান্তে উদ্ধদৈভিক ক্রিয়া নিষ্পন্নের স্্নটুকু লইয়াও সংসার তোমায় ছ্ুঃখ দিতে ছাড়ে নাই, নিজে মরিয়া ও মুতের পাশে স্থানটুকু পাইতে তোমার শতাব্দী কাটিয়া গিয়াছে ! হে প্রেম ও সৌন্দধোর আদি-স্মষ্টি-স্বরূপিনী চির ্ুঃখিনী মেভের, এ সংসারে যাহা পাও নাই, এ জীবনে যাহা হয় নাই, লোক লোকান্তরে তাহা প্রাণ ভরিয়া পাই, জন্ম জন্ম'স্তরের আনন্দের দিনে যেন বপিতে পার__ “লক্ষেচ *ম্ন্নে শম্সন্নে ্ধ ক ঈ চর তস্সি আব তন্ন মাঞ্জে কেহ লাই ক্চোন বাহবা লাই ডবল ।০5 সমাপ্ত। শ্রীজগদিন্দ্রনাথ রায়। ১৪ মানসী ও মন্বাণী [৮ম বর্ষ--১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা বৈদেশিকী ডেনমার্কের সম্কট। (“ফট্নাইটলি রিভিউ”, জানুয়ারি* ১৯১৪ সালের আগষ্ট মাসে যুরোপে লঙ্কাকাণ্ড আরন্ত হইলে, অনেকেই ভাবিয়াছিলেন যে অর্ধশতাব্দী পুর্বে জর্মনি ডেনমাের দক্ষিণাংণ কাড়িয়! লইয়াছে বলিয়া, আজও তাহার বৈরশুদ্ধি লবতী আছে । কিন্থ রুসো- জাপান যুদ্ধের পরে যেমন ঢ্ুই শক্রতে গলাগলি হইয়াছে, সেই রূপ জর্মান-সমাট ও ডেনমার্ক-রাজে কোলাকুলি হইবে, এরূপ আশঙ্কা অমূলক নহে। উত্তর সমুদ্র হইতে বল্টিক সাগরে যাইতে হইলে, সাউণ্ড, গ্রেট বেল্ট ও লিট্‌ল্‌ বেপ্ট নামক তিনটি প্রণাণী অতিক্রম করিতে হয়। সাউও দিয় যাওয়াই সন্বাপেক্ষা অল্প সময় সাধা । এল্সিনোরের নিকট এই প্রণালীর বিস্তুতি দেড় মাইল মাত্র। এই সাউণ্ডের তীরেই ডেনমাকের রাজধানী কোপেনহেগেন নগরের ছর্গ। যুরোপীয় যুদ্ধের সময় দক্ষিণে ডাভেনেল্জ এবং উত্তরে কোপেনহেগেন করাযত্ত থাকিলে, কুসিয়াকে তালা-চাবির মধো রাখা যায়। যে দিবস ইংলগু ও জর্মনিতে যুদ্ধ বাধিল, তাহার পরদিন প্রাতঃকালে জরমন গত/মণ্টি ডেনমাকের উপর হুকুম জারি করে যে, উত্তর ও বণ্টিক' সমুদ্রের মধাস্থ প্রণালীাগুলিতে বোমা ফেলিয়া, ব্রিটিশ রণতরীর বণ্টিক অভিযানের পথ বন্ধ করিতে হইবে । বেল্জিয়। ও পোলাগ্ডের রণক্ষেত্রে যখন টিউটন ও সাভ বাহিনীর তাণ্ডব আরন্ত হইল, তখন ডেনমার্ক, নরোয়ে ও সুইডেনের নরপতিত্রয়, যুরোগীয় আহবানল হইতে আজ্মরক্ষার্থ বাস্ত হইয়া উঠিলেন। সালের ডিসেম্বর মাসে, তাহারা কয়েকজন অমাত্য পমভিবা|হারে, সাউণ্ডের নিকটবর্তী মালমু নগরে সমবেত হন। সুইডেনের রাজা (38507৮5 13617)2,01) 66 গতিতে ফরাসী_ তিনি নেপোলিয়ান বোনাপার্টের এক সেনাধাক্ষের প্রপৌত্র। ডেনমার্কের রাজস্ব- সচিব ' 150/810 7381)008 জাতিতে ইছ্দী। অনেক ১৯১৪ বৎসর ধরিয়া নরোয়ে ও সুইডেন এক রাজা- ভুক্ত ছিল। কিছুকাল কলহের পর, ১৯০৫ সালে, ডেনমার্কের এক রাজকুমার নরোয়ের রাজ-সিংহাসন লাভ করেন। সুইডেনের সহিত নরোয়ে ও ডেনমার্কের মনোমালিন্ত প্রায় স্থায়ী রকমের হইয়া উঠিতেছিল। রুসিয়! ফিন্লাগু:গ্রাস করিয়াছে বলিয়া, সুইডেন রসের সর্বনাশ কামনা করে। আবার শ্রেজভিক্‌ হাতছাড়া হওয়ায়, জর্মনি ডেনমার্কের চক্ষুশূল। সুইডেন রুসিয়াকে , ভয় করে, নরোয়েকে দ্বণা করে এবং জর্মনিকে শ্রদ্ধা করে। ডেনমার্ক জর্মনির নামে কাঁপে, নরোয়েকে স্নেহ করে এবং :কুসিয়ার' নিকট অনিষ্টের আশঙ্কা করে না। স্বাপ্ডিনেভিয় প্রতিনিধিগণের মধ্যে সংঘর্ষণের অনেকগুলি কারণ সন্বেও, পাছে ক্ষুদ্ধ বেল্জিয়ামের মত, প্রবল 'গ্রতিবেণার কুক্গিগত ভইতে ভয় এই ভয়ে, তাহারা কাজ চালান গোছের সম্ভাৰব করিয়া লষ্ঈটলেন। স্থির হইল যে, বিপদের সময় তাহারা পরস্পর পরম্পরের সাহাধা করিবেন এবং যুদ্ধনিরত জাতিগণের কোনও পক্ষ অবলম্বন করিবেন না। ইংলগেডের প্রতি ডেনমাক বিশেষ অন্ুরক্ত নভে । ১৮৬৪ খুষ্টাব্দে জর্মনি যখন ডেনমার্কের সব্বনাশ করে, তখন ইংলগু টু শব্দ করে নাই। ১৮০১ খুষ্টাব্দে ব্রিটিশ সেনাধাক্ষ পার্কার, কোপেনহেগেনের উপর গোলা বর্ষণ করে, এবং ১৮০৭ খৃষ্টাব্দে, ব্রিটিশরাজ, ডেনমার্কের সমস্ত রণতরি ও বাণিজ্যপোত অধিকার করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। ডেনমার্ক এ সকল কথা একেবারে ভুূলিয়াছে বলিয়া! মনে হয় না। গত দেড় বৎসরের মধো, জর্মনি বা ইংলগ 'কোপেনহেগেন দখল করিবার চেষ্টা করেন নাই বলিয়াই যে, উহার মন্তকের উপর খা ঝুলিতেছে না, ইহা মনে করা ভূল। এখন ডেনমার্কের দক্ষিণে কীল খালে, জর্মনির অধিকাংশ রগতরি আবদ্ধ রহিয়াছে । যদি ইংলগ্ ও রুসিয়ার যুদ্ধজাহাজ একত্র হইয়া, জর্মনির কোনও ফাস্তুন, ১৩২২ | বৈদেশিধী [7...১৫ অংশ আক্রমণ করিতে চেষ্টা করে, তাহ! হইলে কি কীল খালের রণপোতগুলি চুপ করিয়া বসিয়া থাকিবে? জর্মনি তখন ইংলগ্ ও কুসিয়ার একযোগে আক্রমণের পথে বিপুল বাঁধা দিবে। এই বাধা দিতে চ্ছইলে কোপেনহেগেন অধিকার করা একান্ত আবশ্যক । তখন এক দিকে পরাক্রান্ত ইংরাজ ও রুসিয়া, অপর দিকে ছ্রধর্ধ জর্মনি-ছু'ধারের এই চাপে ডেনমার্ক ছাতু ভইয়া যাইবে । ডেনমার্কের জনসংখা! ত্রিশ লক্ষ অর্থাৎ কলিকাতা নগরের প্রায় তিনগুণ । ইহার স্থায়ী সৈম্ত সংখ্যা মাত্র চৌদ্দ সহত্র। রাজাজ্ঞান্ুদারে সুস্থকায় যুবকদিগকে যুদ্ধবিগ্ভা শিথিতে ঝ্ধ্য করা হয় বলিয়া, অতি সহজে দেড় লক্ষ ফৌজ সংগ্রহ করাযায়। জর্মন অক্ষৌহিণী দক্ষিণ দিক হইতে'আঁসিয়া, €”এক দিনেই, ডেনমার্কের [2৯17৮727917 রেলওয়ে দখল করিতে পারে । তখন ইংলগ্ড বা ফান্ন হইতে কোপেনহেগেনের জন্ত সাভাষা প্রেরণের পথে অনেক বিদ্ব ও বিলম্ব ঘটিবে। এই সকল হিসাব করিয়াই ডেনমার্ক হয় ত' জর্মনির পক্ষ অবলম্বন করিতে পারে । জন্সনের কথার কামড় । (“ফট্নাইটলি রিভিউ”, জানুয়ারি ) হক কথা ঠক করিরা বলিলে, অনেক সময়, ডাক্তার জন্সনের শ্টায় মানবদেষীর (0১70) পর্ধায়- ভুক্ত ভইতে হগ। একটি উদাহরণ দেওয়া যাঁক। জন্পন বলিম়্াছেন, “07)07) 17) ।ঘ , ৮ 1)9111607 1] 91) ৮ ০01 0117 ৮10৭ 5 110)0ড £৭1988 51010780000 আলি 706 [00110 01008090070 139025198 খ৪ 7 80106100018) ১০০০০ $৮০07041) 59৮ 2)0 ৮8109 00) 09 11)010] 01)2501 101 0677 10070511500 5077689986০ 11000) 21176 £1256686 070118 509 ছা]] ০০:2৪ এ০]] 2০061৮0৪৪0১ 1080 1)£ 0090 95996 11608, 800 08 1) & €০1 50০0 ৯01১৯)), 100 8759 18170727678 1008 11015 ৪ ৫2.” অর্থাৎ পুরুষে ষড়রিপু চন্নিতার্থ করিয়া যে মজা লোটে, স্ত্রীলৌকে তাহা দেখিয়া হিংসা করে ও ভাবে, হায় আমর! “সাগরের তীরে তৃষ্ণায় ছটফট করিতেছি । স্ত্রীলোক যে পুরুষের চেয়ে কতব্ব বিষয়ে ভাল, তাহ] প্রবুত্তির গুণে নহে, পুরুষের শাসনের ফলে। রমণীর, এমন কি শুদ্ধাচারিণনী রমণীর, দাড়ি পাল্সায়, কামজিৎ ও পাঁঠা-প্রক্কৃতি পুরুষের সমান ওজন । সত্রীজাতির দায়ে পড়ে সতী হওয়া সম্বন্ধে এই উক্তি সার রবীন্দ্রনাথের “দায়ে পড়ে মোভিনী ভওয়া” স্মরণ করাইয়া দেয়। কবিবর লিখিয়াছেন £--“মেয়েরা জানে পুরুষ জাঁতটা স্বভাবতঃ ফাকি ভালবাঁসে, সেই জন্তে তারা পুরুষের কাছ থেকেই কথা ধার করে ফাকি সেজে পুরুষকে ভোপাবার চেষ্টা করে। তারা জানে খাগ্ের চেয়ে মদের দিকেই স্বভাব-মাতাল পুরুষ জাতটার ঝৌক বেনী, এই জন্যেই নানা কৌশলে নান! ভাবে ভঙ্গীতে তারা নিজেকে মদ বলেই চালাতে চাঁয়, আসলে তাশ। যে খাগ্য সেটা যথাসাধা গোপন করে বাখে। মেয়েরা বস্থতন্ব, তাদের কোন মোহের উপকরণের দরকার করে না__পুরুষের জন্যেই ত যত রকম বেরকম মৌভের আয়োজন | মেয়ের! মোহিনী হয়েচে নেহাত দায়ে পড়ে ।” (সবুজ পত্র”, ২য় বর্ষ, ২১৫ পৃষ্ঠা )। ডাক্তার জন্সন তাঁতার বন্ধবর্গাক বলিতেন যে, সমাজে প্রতিপন্তি অঞ্জনের সর্বপ্রধান পন্তা অনেক লোককে অল্প স্থদে টাকা ধার দেওয়া। একটু নাকি সুরে আবেদন শুনিলেই যিনি চেক সহি করেন অর্থাৎ যাহার মাথায় সহজেই পাকা কাঠাল ভাঙ্গিতে পারা যায়, মানুষ তীহার জন্য একটুও চক্ষুলজ্জা (৮17 ানা900 000 70৯8৮ ) বোধ করে না, কিন্ত যাহার কাছে টাকা ধার করে, তাহার কাছে টিকি বাধা বলিয়া, লোকে শিষ্টাচার করিতে শৈথিলা করে না। খণ করিয়া আরাম ভোগ করা জন্সন ধুষ্টতা মনে করিতেন। বাখ্িবর এডমগড বাক, অনেক টাকা দেনা*করিয়া, যে প্রকাণ্ড অট্রালিক নির্মাণ করাইয়া ছিলেন, তাহা জন্সনকে দেখাইলে, তিনি শ্রেষ করিন। বলেন, “৯/1)% 81110077136 10109 না) 77 0+8879 10 1” (আহা চমতকার! ইহ নিশ্চয়ই হুজুরের উপযুক্ত !)। রজতচক্রকে যাহারা মনে মনে স্তুদর্শন চক্রের অপেক্ষা অধিকতর শক্তিশালী মনে করে, কমলার কপালাভে অসমর্থ হইলে, তাহারাই কাঞ্চন-কৌলিন্তের বিপক্ষে অতিরিক্ত মাত্রায় চিৎকার করে। তাহার! ধনাঢোর অপদার্থ সন্তানকে, চিনির বলদ মনে করিয়া দয়া করে না, ভাগাবান মনে করিয়া হিংসা করে। জন্সনের মতে প্রতি দশজনের মধো নয় জনের মনের ভাব এইরূপ । বিলাতের সর্বপ্রধান ডিউক ও সর্বশ্রেষ্ঠ মনীষী এই দুই জনের নিকট হইতে শ্কই সময়ে নিমন্ত্রণ আসিলে কোথায় যাওয়া উচিড়, এই কথা জন্সনকে জিজ্ঞাসা করিলে, তিনি উত্তর ফাস্তন, ১৩২২ ] গৃহহীন ১৭ গৃহ-হীন (১) মাতব্বর চাষী গৃহস্থ গোবিন্দ দাসের পুত্র মহেশ দাসকে দেখিয়া কেহ বলিতে পারিত না যে, সে কলি- কালের মান্গষ; কিন্তু তাহাকে সত্য যুগের মনুষ্য বলিয়া! ভ্রম হইবারও কোন কারণ ছিল না। ক্ষুদ্র ফতাই- পুর গ্রামে তাহার বাস।--তাহার পিতা একজন সম্পন্ন চাষী গৃহস্থ ছিল, এবুং তাহার আঙ্গিনাস্থিত ধানের গোলা দু'টি ধানে পুর্ণ থাকিত; ছু'খানি লাঙ্গল, চারি- জোড়া লাঙ্গলা বলদ, ছুইটি গাই গরু; 'থাদা”থানেক ধানের জমী, ছ'খানি চৌরী ও একখানি গোয়ালঘর ;-- এবং 'একখাঁনি পাকশালা-_পল্লীগ্রামে চাষী গৃহস্থের যাঁহা যাহা থাকা আবগ্তক,--সমস্তই রাখিয়া মহেশ দাসের পিতা গোবিন্দ দাস তীর্থপর্যাটন উপলক্ষো বুন্দাবনধামে গিয়া ভবের খেলা সাঙ্গ করে। তাহার দই বৎসর পূর্বে মহেশ দাঁসের কন্যা গৌরীর জন্ম হয়। পিতার মৃত্যুর পর মহেশ দাস চতুর্দিক অন্ধকার দেখিল।-__বয়স বত্তিশ বৎসর হইলেও এ পর্য্যন্ত সে লাঙ্গল বহা ও গোরুর রাখাণী করা ভিন্ন আর কিছুই শিখিতে পারে নাই; তবে সে তামাক সাঁজিতে ও তাহাদের ঘরামীপাড়ার বেহুলার দলে লখিনর সাজিয়া ভাঙ্গা গলায় বক্তৃতা করিতে খুব ওস্তাদ হইয়ািল। পিতার মৃত্যুর পর সে কাছা গলায় দিয়া তাহার গ্রাধান মুরুবিব ও “মেণ্টর, জগবন্ধু দাসকে জিজ্ঞাসা করিল, “এখন করি কি?*--অগবন্ধু বলিল, খুব ধুমধামে বাপের ছেরাদ্দ কর।”-কিস্তু আর্থটা যে কতদূর গড়াইবে-_জগবন্ধু তাহা,ঠাহর করিতে পারিল না, কিংবা সে সম্বন্ধে ঠিস্তাও করিল না । এক শ্রেণীর লোক আছে ভাহানের “মটো+--পমৌর বুদ্ধি তোর কড়ি, ফলার করি আয়!” এই ফলারে বুদ্ধিতে জগ- বু দাস তাহাদের গ্রামেন্ন ফৈবর্ত সমাজে অদ্ধিতীয় ছজ। | গৌরীর মা কাদি কৈবর্তিনী সিক্ত বন্ত্রে সিক্ত কেশে উঠানে বসিয়া তিনটা জিউলি কচার ডালের উপর একটা মালসা রাখিয়া অরহর কাষ্ের অগ্নিতে হব্বিষ্তি' পাঁকাইতেছিল।--মহেশ দস দীঘিতে ম্লান করিয়া আসিয়া ত'হার গলার কাছাথানি পরিধান করিল, এবং পরিহিত কাছাখানি প্রসারিত উদ্ভয় বাছুর উপর ছড়াইয়া দিয়া পাখীর ডানা বাড়ার মত করিয়া, তাহা সবেগে আন্দোলিত করিতে করিতে গৌরীর মাকে বলিল, “দেখ, দেখতে দেখতে দশদিন ত কেটে গেল। আঃ শীতকালে মা! বাপ মরা কি ” ফ্যাসাদ ; জাড়ের (শীতের) ঠ্যালায় বুকের ওপর যানো ঢে'কিতে পাড় পড়চে! জলের য্যানো দাত বেরিয়েছে, কি জাড় রে বাবা !-_তা দেখ গৌরীর মা, বেঁচে থাকলে আওলাৎ পত্তর টের হবে ।-_বাবা কিছু ফিরে আম্বে না। জগো দা বল্ছিল, পাচরায়ের দশ ঠাকুরকে ফলারটা ভাল করে দিতে হবে ।--গোলার ধানগুলো বের করে কতক চি'ড়ে কুটুতে দে, কতক মুড়ির জন্যে সেদ্*“কর। আমাদের কূলে এঁড়েটা দেগে 'বিষোচ্ছুগ্ড €বুযোতসগ ) করবো । আর রাঢ় থেকে, কি বলে ওর নাম, নটোবর দীসের কেন্তনের দলটা আন্বো মনে করেছি ।--চব্বিশ পর করার ইচ্ছেটা আমার বডঙ বেশী।-_তা আমাকে কিছু ভাবতে হবে না, জগদা সব ভার নিতে চেয়েছে ।-_দশ ট্যাকা খরচ হবে, তা বলে আর কি কর্চি? বাপের ছেরাদ্দ ত একবার বই পাঁচবার হবে না।” * গৌরীর মা মাল্সাঁর নীচে খানছুই খড়ি ঠেলিয়া দিয়া বলিল, “কেত্তনের দল আন্তে চাইচ, কত ট্যাকা খরচ হবে ?” মহেশ দাস শুক্ষপ্রায় কাছাথানি পরিধান করিতে করিতে বৃলগিল, “তা স গ্ভাড়েক টাকাত লাগবিই, তাতে * গার পেলে হয়।” গোলা ছুট ধানে পর খাফিত) ছানি লাগল, চাতরি- জোড়া লালা বলব): ছুই গাই রক) পাহাানেক ধানের জমী, ছ'খানি চৌরী ও একখানি গোয়ালখর ;-: .ত. করিল) এবং পিক কাহাথাি রিও রি বাছুর উপর, ছড়াইযা দিয়া পাখীক্ক ভাঁদা বাডার হত করিয়া, তাহা সবেগে আন্দোলিত ফর্জিতে করিতে গৌরী ফাকে বলিলা, “দেখ, দেখতে ছেগতে ধশফিন এবং একখানি পাকখালা-_পল্ীগামে চাষী শৃহস্থের ফ্যাধাদ) যাহা যাহা থাকা আবন্ঠক,--সমত্যই রাখিয়া মহেশ দাগের পিতা গোবিন্দ দাস তীর্থপর্ধ্যটন উপরক্ষ্যে বৃন্নীবনধাঁমে গিয়া ভবের খেলা লাজ করে। তাহার হই বৎসর পূর্বে মহেশ দাসের কন্তা গৌয়ীর জনম হয়। পিতার সস পর. মহেশ দাস চতুর্দিক অন্ধকার দেখিল।- বয়স বজিশ যৎসয় হইলে .এ পর্যন্ত সে নাল বহা ও. গোরুর রাখানী করা তি আর কিছুই শিখিতে পারে: নাই; তবে লে. তাষাক, সামি ও ঙগা গলার বন্ধু করিত বব ওতাদ হই লা). পিতার মুহা পর টৈ বাছা গলা দি তাষার এখান রা ও. পট গর মানত কাবু ধন, পুর ছাদে বেরিয়েছে, কি জাড় রে বাবা 1--ত। দেখ, €খরীর মা, বেঁচে থাকলে আগলাৎ পত্র ঢের হবে ।--ধাবা কিছ ফিরে ক্মাস্বে না। অগো দা বল্ছিল, শাচগারের দশ ঠাকুরকে ফলারটা ভাল করে দিতে হবে ।--গোরবা় ধানগুরো বের করে কতক চি'ড়ে কুটুতে দ্ধ, ক্ষত মুড়ির জনে পন্ঘ*্কর। আমাদের কুলে এড়েটা দেগে | 'িষোজ্ুগ (বৃযোধনর্গ) করবো । আর রাড খেকে, কি বলে ওর নাম, নটোবন দালের কেনের দর্ঠা আনবো দনে. করেছি ।--টব্িখ প্র করার ইচ্ছেটা আমান, বড বেদী ।--তা। আমাকে কিছু ভাবতৈ হবে শন জগদা সব তার নিতে দেখেছে ।--বশ ক্ষ! খরচ হবে, তা হলে আর কি কি] বালের ইরা ত একবার খই পাবার হবে রা 4, চা এ নব ১৮ মানসী ও মন্মবাণী গৌরীর মা চক্ষু কপালে তুলিয়া বলিল, “সে ক কুড়ি ট্যাকা ?* মহেশ দাস বলিল, “ফেল্লি নিকেশের তলায় !_জগদা বলেছে-_স গ্যাড়েক টাকাতেই হতি পারে। গ্যাড়শো টাকা যে ক কুড়ি, তাকি তাকে জিজ্ঞেস করেছি? তা দশ-বারে! কুড়ি হতি পারে ।৮ গৌরীর ম1 টাকার পরিমাণ শুনিয়া! বিস্ময়ে অভি- ভূত হইয়া বলিল, “দশ বাঁরো কুড়ি ট্যাকা! আমরা গরীব মানুষ, ছু'বিগে চাষ আবাদ করে গেরস্তালি চালাই, এত ট্যাক1 কুতায় পাবো ?” মহেশ দাদ রাগ করিয়া বলিল, “রাজারা হাতী ঘোড়া কোথায় পায়? আমার একখাদা জমি, আট দশটা গরু। ট্যাকার ভাবনা কি?1--গুপি পোদ্দার বলেছে ট্যাকায় চার পয়সা! সুদ দিলে এ সব বন্ধক রেখে যত ট্যাক1 লাগে-সে দেবে। জগদাই ট্যাকা নিয়ে দেবে ।» গৌরীরমা ললাটে করাঘাঁত করিয়া বলিল, “তবেই হয়েছে ! এই ছরাদেই তুমি ফতুর হবা ৮” সে অশখোট কলাপাতে মালসার হবিষ্যান্ন ঢালিয়া একতাল মটরের ডাল-বাটা সিদ্ধ ও আধখানা কাচাকলা সিদ্ধ ছানিতে আরম্ত করিল। একে এত বেলা পর্যান্ত অন্হার,-তাহার উপর পত্ঠীর মর্ভেদী বাক্যবাণ !-_মহেশ দাস একেবারে তেলে বেগুনে জবলিয়া৷ উঠিল। সে সক্রোধে বলিল, “তোর বাপের ছেরাদ্দ হলে আর একথ! বল্তি নে। আমার বাপের ছেরাদ্দ কি না, তাই, টাক! খরচের নাম শুনে আতকে উঠছিদ। আমি আমার বাপের ট্যাকা খরচ করব।--তোর বাপের ঘরে ত আর সি'দ দিতে যাচ্ছি নে।” গৌরীর মা চটিয়া বলিল, “আমোলো শগুন, যত বড় মুখ নয়--তত বড় কথা! আমার বাপ তুলছিস? খামার বাপের ছেরাদ্দ করতে চাস্‌! মুখে না নুড়ো জেলে দেব। অলপেয়ে ড্যাক্রা মিন্সে !” ' মহেশ দাস চাবি বাঁধা উত্তরীয়খানি তাড়াতাড়ি [৮ম বর্ষ-_১ম থণ্ড--১ম সংখ্যা কোমরে জড়াইগ্া সক্রোধে বলিল, “তবে ক্লে হারাম- জাদি!__আমার খাবি পরবি--আবার আমাকেই গাল? আয়, আগে তোরই ছেরাদ্দ করি।”-_সে তাহার সহ- ধর্দিনীর কক্ষ চুলের গোছা ধরিয়া একটানে তাহাকে চিৎ করিয়া মাঁটীতে ফেলিয়া দিল। তাভার পর হুবিযোর মুখে বাদার বাড়ি, বলিয়া! অদূরবর্তটী মালসাটা তুলিয়া লইয়া তাহা সবেগে সেই কদলিপত্রস্থিত হবিষ্যান্নের উপর নিক্ষেপ করিল। গৌরীর মা উঠানে পড়িয়া “বাবারে, মেরে ফেল্লেরে, এমন হাভাতের হাতেও পড়েছিলাম !”_-ইত্যাঝার আর্তনাদে পাড়ার লোক জড় করিতে লাগিল ।--কান- কাটা একটা কালো বেড়ে কুকুর কিছু দূরে বসিয়া এক একবার লুন্ধনেত্রে কদলীপত্রস্থিতি স্থুলোহিত আতপান্নের দিকে দৃষ্টিপাত করিতেছিল,__- এইবার স্থযোগ বুঝিয়া সে একলম্ফে আসিয়া “হবিষ্যি, আরম্ত করিয়া দিল। শ্রাদ্ধ উপস্থিত না হইতেই শ্রাদ্ধ এইরূপে অনেক দুর গড়াইল।-_-গৌরীর মা সেইদিন অপরাহ্ণে গৌরীকে কোলে লইয়া মবারকপুরে বাপের বাড়ী চলিল । (২) কিন্ত শ্রাদ্ধ আটক রহিল না। মহেশ দাসের পরমাত্মীয় ও পরামর্শদাতা জগদা বলিল, “মরদ কি ব, আর হাতী কি দাত!-হাতী কি না, তা দাত দেখলেই বুঝতে পারা যায়, আর মরদ কি ন| তা কথাতেই মালুম হয়।__পরিবার গোসা করে বাপের বাড়ী গিয়েছে, যাক) যত টাকা লাগে খরচ করে বাড়ীতে দশ ঠাকুরের পাতা পাড়াও।_আর কেত্বন; বৈষ্টৰ সেবা, দশটা কাঙ্গালী বিদেয় এ করা চাই-ই। গোবিন্দ খুড়ো স্বর্গে থেকে দেখবে, হা, ছেবে বটে, ছরাদের মত ছরাদ করেচে !” মহেশ দাস সোৎসাহে পিতৃ-শ্রান্ধের আয়োজন করিতে লাগিল। গৌরীর মা রাগ করিয়া বাপের, বাড়ী গিয়াছিল, কিন্তু লোকের গঞ্জনায় সেখানে দু'দিনের ফাস্তন, ৯৩২২ ] বেশী থাকিতে পারিল ন1; স্বামীগৃহে ফিরিবার সময় তাহার মা, মাপী এবং ছোট ভগিনীটিকে সঙ্গে লইয়া আসিল। দিবারাত্রি ঢেঁকি পড়ার শবে পাড়ার লোকের মাথা নড়িতে লাগিল । ৩ কিন্তু হঠাৎ একটা গোল বাধিয়া গেল। তাহার হিতৈষী মুরুব্বি জগদাকে সঙ্গে লইয়া সে গ্রামের সর্বব- প্রধান উত্তমর্ণ গোপী পোদ্দারের নিকট, দলিল দিয়া টাকা ধার পাইল না !-গোপী পোদ্দার বড় হিসাবী লোক; টাকায় চারি পয়স! হিসাবে সুদ খাইয়া! তাহার উদর অসম্ভব রকম স্থুল হইয়াছিল। গোপীনাথ পোদ্দার পরম বৈষ্ণব) দাড়ি গৌফ কামান) হাড়ীর মত গোল মুখখাঁনিতে বয়ুন্তের ধ্বজবজাস্কুশ চিত; নাকের উপরে স্ুধীর্ঘ তিলক; কগে তিনকণ্ঠি স্থল তুলপীর মালা । পরিধানে আটহেতে একখানি নরুণ- পেড়ে ধুতী) ম্যাঞ্চেষ্টারের তাতশালা হইতে বাহির হইয়া এ পর্যান্ত তাহার রজকালয় দশনের সুযোগ হই- য়াছে কি না সন্দেহ; স্থতরাং যৎপরোনাস্তি ময়লা,__ তদ্বারা তাহার বিশাল উদরের বঞ্তল-পরিধি কোনরূপে পরিবেষ্টিত হইয়াছে; কাছা পর্য্যন্ত অগ্রসর হইতে পারে নাই, অগত্যা পোদ্দার মশায় মুক্ত কাছ !_অপরাহ্থ কালে গোপীনাথ তাহার “কীচা+ চণ্ডীমণ্ডপের দাওয়ায় বসিয়া পরকালের জন্ত কিঞ্চিৎ পুণ্য সঞ্চয়ের চেষ্টায় ভাগবত গ্রস্থখানির পাতা উপ্টাইতে উল্টাইতে ইহকালের সঞ্চয়ের কথাই চিন্তা করিতেছিল ; এবং কাহার নিকট কত সুদ বাকি আছে, কে কোন্‌ কিন্তী খেলাপ করি- যাছে, ও পরদিন প্রভাতে উকীলবাড়ী গিয়া কোন্‌ কোন্‌ খাতকের নামে নালিশ রুজু করিবে, তাহাই ভাবিতেছিল ; এমন সময় রুক্ষকেশ্খ, মলিন বদন মহেশ দাঁস কাছা গলায় তাহার সম্মুখে আসিয়া দণ্ডায়মান * হইল। অশৌচ*্বশতঃ সে তাহাকে নমস্কার না করি- লেও জগবন্ধু দাস তাহার পায়ের কাছে মাথ। নোয়াইয়া একপাশে খুঁটির মত দাঁড়াইয়া রহিল। পোদ্দার পুঁথি হইতে মুখ তুলিয়া ভালভাঙ্গা হুতাবাধা চস্মাথানির * ভিত্তর দিয়া জগবন্ধুর মুখের দিকে একবার তৃষ্টিগরাত গৃহ-হীন ১৯ করিল, তাহার পর হাই তুলিয়া! তুঁড়ি দিয়া বলিল, “হরি হে দীনবন্ধু! পার কর ভবসিন্ধু;-তারপর জগ- বন্ধু,কি মনে করে এমন অবেলায় ?” জগবন্ধু বিনীতভাবে ঘাড় চুলকাইতে ঢুলকাইতে বলিল, “এজ্ঞে কর্তা, আপনার ছিচরণ দর্শন করতে আস্বো, তার আর সকাল সন্ধে কি?-_-আপনি ত জানেন আমাদের মহেশ দাসের বাপ ছিবিন্দাবনধামে গিয়ে ক্ুষ্টপ্রাপ্তি হয়েছেন; তা, তার ছেরাদ্দর আর দিন নেই। আপনার ভরসাতেই ময়শা দশ ঠাকুরকে নেমন্তন্নো-” গোপীনাথ বাধা দিয়া বলিল, “এ অতি উত্তম কাজ । বাড়ীতে দশজন কুটুম্বের পায়ের ধুলো পড়ে, একি কম ভাগোর কথা ?--কিছু টাকা ধার নেবে ঝুনি 1 মহেশের বাপের “বস্তা বেশ ভালই ছিল ।--সোণা- দানা কিছু এনেছে? আমি কিন্ট টাকায় চার পয়সার কম সুদে টাকা ধার দিইনে। মহাজনী কারব।র-_ ঝক- মারি কত? নালিশ ছাড়া আজকাল টাকা আদায় করা মুষ্কিল !--আর নালিশ করতে গেলেই, বুঝ ছে! কি না, উকীল বেটারা রাঘব বোয়ালের মত ইহা করে আছে! উকীলের মুহুরী বলে তহরি দাও, হাকিমের পেস্কার বলে 'দাখিলী; দাও) সুদ তো চুলোয় যাক্‌, আসল নিয়ে টানাটানি [,যেন টাকার জলছত্র খুলে বসেছি!_মহাজনী কারবারে আর সুখ নেই 1” ”” জগবন্ধু বলিল, “ওর বাপের, সোণা রূপো যে দশ তোলা ছিল, তা সেতিথ্যি করতে যাবাবু সময় বেচে কিনে চলে গিয়েছিল। থাকবার মধ্যে আছে গোটা আষ্টেক দশেক গরু, খান দুই লাঙ্গল, আর থাদা খানেক ভূ'ই |” পোদ্দার বলিল, আরে ভূঁই ত জমিদারের ) চাষ করে, উঠবন্দি জমীর খাজন1 দেয়, আজ আছে কাল নেই; সে জমী আবার বন্দক কি দেবে 1--পাকা মাল ছাড়। আমি বন্দক রেখে টাকা ধার দিইনে ।--আর যে* গরুটা বাছুরটার কথা বল্ছো ও ত মুচির চামড়া ! বিশেষ হালের গরু বন্দক রেখে আজ কাল কি মালিশ করে ৪ মানসী ও মন্মবাণী টাকা আধায় করবার যো আছে ?- আমার কাছে হবে টবে না; দেখ যদি আর কোথু পাও ।” গোপী পোদ্দারের মন কিছুতেই নব্য হইল না। অগত্যা জগবদ্ধকে বেকুব হইয়া বাড়ী ফিরিতে হইল। মহেশদাস বাড়ী আসিয়া! মাথায় হাত দিয়া বসিল । চিড়া কুটিবার 'ধপাধপ" শব শুনিয়া তাহার মনে হইল, ঢে'কির “চুরুণ” ভাহার মাথায় পড়িতেছে। সে দশদিক অন্ধকার দেখিল।-- এখন উপায় ?-জগবদ্ধু তাহাকে পূর্বে আশা দিয়াছিল, গুপি পোদ্দার টাকা হাতে লইয়া বসিয়া আছে, চাঁহতে যে কু বিলম্ব! জগবদ্ধুর উপর সে বিষম “বাজার? হইয়া উঠিল । (৩) পৃথবীতে কিছুহ আটক থাকে না । মহেশ দাসের পিতৃশ্রাদ্ধও বন্ধ হইল না । মহা সমারোহে শ্রাদ্ধ শেষ হইল। শ্রাদ্ধাস্তে তাহার আঙ্গিনায় নৌকার পাল টাঙ্গাইয়া৷ তাহার নীচে রাট়ের কীর্তনওয়ালা নটবর দাস দুইদিন কীর্তন করিয়া গেল। কীর্তন শুনিতে শুনিতে সুদখোর গুপি পোদ্দারের মুহুম্মুঙ্ছ ভাব লাগিতে লাগিল, এবং সে ভাবাবেশে বিভোর হইয়া কয়েকবার 'খুলী'কে আলিঙ্গন করিতে গেল! ভক্তি বিহ্বল গুপি পোদ্দারের বিশাল ভুড়ির সংঘর্ষণ হইতে নৃদঙ্গধানি রক্ষা করিবার জন্ত, ভীতি ব্যাকুল খুলী যতই সরিয়া যায়, 'গুপি পোদ্দার ততই উৎসাহের সাহত 'অহঃ, “অহ বলিয়া ভাবাতি- শয্যে তাহার দিকে অগ্রসর হয়। চোখের জলে তাহার গোলগাল ক্লালো গাল দুখানি ভাসিয়া গেল। মুহুম্মুছ হরিধ্বনিতে ক্ষুদ্র ফতাইপুর গ্রাম সঘন প্রতিধ্বনিত হইতে লাগিল। কীর্তন শেষ হইলে গুপি পোদ্দার সতরঞ্চির ধুলা তুলিয়া কণ্ঠে ওষ্টে মস্তকে ধারণ করিল। মহেশ দাসকে বলিল, “ধন্তি ভাই, বাপের ছেরাদ্দট৷ , তুমিই কল্পে! আমরা মিথ্যে মনিষ্যি হয়ে জন্মেছি।” কিন্তু শ্রাদ্ধ শেষ করিতে মহেশদাসকে সর্বস্বান্ত হইতে হইল। তাহার ধান, গোলা, গরু, বাছুর যাহা কিছু ছিল, সমস্ত বিক্রয় করিয়া শ্রাদ্ধের খরচ যোগাইতে হইল" জুইথানি কুটার ভিন্ন তাহার আর কিছু সম্বল | ৮ম বধ--১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা রহিল না। অবশেষে পৌষমাসের একদিন রাক্রিকাঁলে মহেশ দাসের প্রতিবেশী অঘোর দাসের গোয়াল ঘরে সাজালের, আগুন লাগিয়া তাহার সেঈ ঘর ছুইথানিও এঙ্গার কুক্ষিগত হইল । মহেশ.দাদ পথে বসিল। বিপন্ন মহেশ দাস তাহার মুরুব্বি জগবন্ধু দাসকে জিজ্ঞাসা করিণ, “জগদা, এখন করি কি ?_-তোমার বুদ্ধিতেহ ত আম মারা গেলাম ।” জগবন্ধু দাস তখন তাহার থজ্জুর পঞাচ্ছাদিত 'বাহনে' বসিয়া প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড ছুইখানি খোলায় থেভ্ুরের রস জাল দিয়া গু প্রস্তত করিতেছিল ; এবং শতধাছ্ন মলিন চাদর গলায় জড়াইয়া ও তারা কোনরূপে পিঠ ঢাকিয়া, ছুজ্জয় শীত-কম্পিত পল্লীবালক দল “খোলার চারিদিকে বসিয়া বহ্নি সেবন করিতেছিল। কেহ.কেহ বা শু আশ্তাওড়া ও ভাটবাকসের স্তপ হহতে খা টানিয়া প্রকাণ্ড চুলির মুখে নিক্ষেপ করিতেছিল ; আর খোলার লোহিতাভ খজ্জুররস টগবগ করিয়া দুটিতে ছিল। অদুরবর্তী ছাই গাদায় একটা খেঁকিকুকুর কুগুলী পাকাইয়া নিমীলিতনেত্রে শয়ন করিয়াছিল, এবং তাহার শাবক চতুষ্টয় জগবন্ধুর আস্তাকুড়ে ছুই একটি উচ্ছিষ্ট অন্নের আশাক্স ব্যাকুলভাবে ঘুরিয়া বেড়াই- তেছিল। - জগবন্ধু সবেমাত্র তাহার গেঁটে কল্কেটাতে একটু দাঁকাটা তামাক দিয়া ধূমপানের আয়োজন করিয়া লইয়াছে,__এমন সময় মহেশ দ!সের উত্তট প্রশ্নে তাহার সর্বাঙ্গ জলিয় গেল।__সে একখানি জলস্ত খড়ি উনান হইতে টানিয়া তুলিয়া তাহার ছুই এক টুক্রা কলিকাঁয় তুলিতে তুলিতে মহেশ দাসকে বলিল, "আমার দোষ ত তুমি এখন দিবাই ! এ কলিকালে কি লোকের ভাল করতে আছে ? আমি কি তোমাকে বলেছিলাম-- সব্বস্থি ঘুচিয়ে তোমার বাপের ছরাদ্দ কর ?__না, আমি তোমার ঘরে আগুন দিতে গিয়েছি? বাপের ছরাদ্দ করলে, বাড়ীতে দশঠাকুরের পায়ের ধুলো পড়লো, কেত্তন দিলে,এ তল্লাটের লোক তোমার সুখ্যাতি কর্‌তে , লাগলো! ; আর এখন অখ্যাতি করে বেড়াচ্ছ আমার? আগুনে ত তোমার সবই যেত, তা আগুনে ন! পুড়ে. ফান্তন, ১৩২২ গুহ-হীন ১ তোমার বাপের ছরাদে গিয়েছে, সেত তোমার বাপের ভাগ্য !_আমাঁর দোষ দেও কেন 1” মহেশ দাস সবিনয়ে বলিল, “না, তোনার দোষ দিচ্ছিনে ; তবে এখন কুতায় মাথা রাখি তাই পুছচি।-_ এ গাঁয়ে ত আমার মাথা রাখবার ঠাই নেই ।” জগবন্ধু তামাকে একটা উৎকট দম্‌ কষিয়! নাক মুখ দিয়া আগ্নেয়গিরির ধুমোগ্দারের স্তায় ধোঁয়া ছাড়িয়া বলিল, “তুমি কি উপায় করবে, তা আমি কি বলবো ? তোমার মত আহাম্মুখকে শলা পরামর্শ দেওয়াও ঝকৃ- মারি !_গাছতলা ত আর কেউ নেয়নি। তোমার ভিটেয় যে ভেঁডুল গাছটা আছে, তার ওতে থেজুর পাতার খানছুই টাটি বেঁধে এখনকার মত থাক গে। তারপর তোমার পরিবারের হাতের খাড়, ছুগাছা বেচে গাড়ীখানেক খড় কিনে একথান কুড়ে তুলো ।-_কেন, পরাণ মণল কি তোমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছে ?” পরাণ মণ্ডল মহেশ দাসের সম্বন্ধে মামা শ্বর্তর ; গৃহ- হীন হইয়া মহেশ দাস তাহার বাড়ীতেই আশ্রয় লইয়া- ছিল। পরাণ মণ্ডল ঘরামীর কাজ করিয়া কষ্টে স্ৃষ্টে সংসারযাত্রা নির্বাহ করিত। বাড়ীতে তাহার ছুই- খানি মাত্র ঘর, তাহার সংসারে অনেকগুলি পরিবার, স্ত্রী, চারি পাঁচটি ছেলে মেয়ে, একটি ছোট ভাই, একটা বিধবা ভগিনী এবং বাতবাধিগ্রস্তা স্থাবর শ্বাশুড়ী। এতগুলি পরিবারের ছুইথানি ঘরে স্থান সঙ্কুলান হওয়া কঠিন, তাহার উপর টক্ষুলজ্জার খাতিরে এই বিপন্ পরিবারটিকে আশ্রয় দান করিয়া, সে বিষম বিপদে, 'পড়িয়াছিল; সে মহেশকে সঙ্গে লইয়া কয়েকদিন জোগালে-গিরিতে লাগাইয়াছিল। কিন্তু মহেশ দাস এমন অকর্শণা যে, খড়ের আটিটি পর্যশস্ত বাঁধিতে পারিত না, তাহাকে দিয়া কোন কাজ পাওয়া যায় না দেখিয়া গৃহস্থেরা ঘরামীবেঁ তিরস্কার করিত, কেহ কেহ বলিত, “এমন একেজো জোগালে নিয়ে বাপু কাজে এসৌ না ।__ ছপোর গড়াতে না গড়াতে চারগণ্ডা পয়সা নিয়ে বাড়ী ঘাবে, চারটি পয়সার কাজ করতে পারবে ন1 !”__প্রমাদ গণিয়া পরাণ মণ্ডল মহেশ দাসকে বলিয়াছিল, তুমি বাপু তোমার পথ দেখ, আমি আর কতদিন তোমাকে পুষবো ?” 4 কিন্তু কোনদিকে পথ দেখিতে না পাইয়া মহেশ দাস নিরুপায় হইয়া আজ তাহার মুরুব্বি জগবন্ধু দাসের নিকট সৎপরামশ জিজ্ঞাসা করিতে আসিয়াছে । জগবন্ধু তাহাকে গাছের তলা দেখাইয় দিল। মহেশ দাসের এ পরামর্শটা ভাল লাগিল না । সে বলিল, “পৌষম'সের এই হাড়ভাঙ্গা শীতে কুকুরটা মেকুরটা (বিড়াল) গাছতলায় থাকৃতে পারে না, আর তুমি আমাকে গাছতলায় আশ্রা নিতে বলছে । আমরা নয় ছুটোতে ক্যাথা মুড়ি দিয়ে থাকৃলাম। গৌরী আমার ছ'বছরের মেয়ে সে যে হিমে মরে যাবে ।” জগবন্ধু বিরক্তি ভরে বলিল, “তা এখন রাজ অস্টা- লিকে কুতায় পাবে? আমার বলে, “আপনি শুতে ঠাই পাঁয় না, শঙ্করকে ডাকে আমি নিজের ভাবনায় পথ দেখতে পাঈনে, তোমাকে কি পথ দেখাব বল ?” (৪) মহেশ দাস নিরুপায় হইয়া দীর্ঘনিংস্বাস ত্যাগ পৃর্বক সেখান হইতে উঠিল। আজ পৃথিবী তাহার নিকট অন্ধকার । হছূর্ভাগ্যের ফুৎকারে যেন জীবনের সকল আলোক নিন্ডিয়া গিয়াছে । একদিন যাহারা তাহার নর্বপ্রধান স্ৃহদ ও পরামর্শদাতা ছিল, তাহারা আঁজ তাহাকে দেখিয়া! অবজ্ঞাভরে সরিয়া যাইতেছে, কেহ বা তাহার নির্ব,দ্বিতার নিন্দা করিতেছে, তাহার পিভৃ- ্রান্ধের সময় যাহারা পরমাত্মীয় হইয়া তাহাকে িরিয়া বসিয়াছিল, ছু্দিনের ঝটিকাঁর ফুৎকারে শু বৃক্ষপত্রের মত তাহারা কোথায় অদৃষ্ত হইল। একথানি ছোঁড়া স্তাকড়ায় গৌরীর সর্বাঙ্গ জড়াইয়া তাহাকে কোলে লইয়া গৌরীর মা পরাণ মণ্ডলের পাচিলের ধারে বসিয়া আকাশ পাতাল ভাবিতেছিল, কিন্তু ভাবনার কুল কিনারা পাইতেছিল না। অব- শেষে সে ময়লা অঞ্চলে চোঁথের জল মুছিয়া মেয়েটাকে "কোলের মধ্যে জড়াইয়া ধরিল। তখন বেলা! হইঠ্রা- ছিল) গ্রামের মন্জুরেরা, নিজের নিজের কাঁজে গিয়া- ২২ মানসী ও মন্্মবাণী ছিল, গোরুর পাল লইয়া রাখালের দল অনেকক্ষণ মাঠে চলিয়া গিয়াছে। হু'ড়োরা মূলো, বেগুন, সাদা- আলু প্রভৃতি বড় বড় ঝোড়ায় ৰোঝাইস্কফ্রিয়া গ্রাম হইতে লক্ষ্মীপুরের হাটের দিকে দৌড়াইতেছিল, এবং অদূরবর্তী দীঘির জলে জেলেরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খ্যাপলা জাল দিয়! চিংড়ি পু'টি প্রভৃতি মাছ ধরিতেছিল। মহেশ দাস মুখ ভার করিয়া স্ত্রীর নিকট আসিয়া দাড়াইল। গৌরীর মা তাহাকে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কি করে এলে ? মামী ত আজ জবাব দিয়েছে, বলেছে, “তুমি পথ দেখ বাছা! আমি আর কদিন তোমাকে পুষবো £--চল আমরা এ গাঁ থেকে চলে যাই ।* মহেশ দাস হতাশভাবে বলিল, “কোথায় যাব? আমাদের যে মাথা রাখবার ঠাই নেই ।” গৌরীর মা বলিল, “আমাদের যে দুখানা পেতল কাসার বাসন আছে, নিয়ে মায়ের কাছে যাই, তার কুড়েখানা ত আছে ।” মহেশ দান অগতা সেই যুক্তিই সঙ্গত মনে করিল। সেইদিনই দে সপরিবারে চিরজীবনের মত গ্রাম ত্যাগ করিয়া চলিল। ফতাইপুরের তিনক্রোশ দূরবর্তী মবারকপুরে যাত্রা করিল। গৃহদাহের পর তাহার যে কিছু তৈজসপত্র বাচিয়াছিল, তাহা ও ই একখানি কাপড় চোপড় লইয়া একটা বৌচকা বাঁধিয়া মহেশ দাস তাহা মাথায় তুলিয়া লইল, এবং গৌরীর মা গৌরীকে কোলে লইয়া তাহার অনুসরণ করিল। তখন বেলা প্রায় দশটা, গ্রামের ভিতর দিয়া কিছুদূর যাইয়া তাহারা মাঠে পড়িবে, এমন সময় গ্রামপ্রান্তবর্তী [৮ম বর্-_-১ম খণ্ড--১ম সংখা। কলুপাড়ার পথে আসিয়া! মহেশ দাস শুনিতে পাইল__ কলুবাড়ীতে তখনও 'বেহুলা”র গান চলিতেছে । . কলু- বাড়ীর প্রাঙ্গণে একখানি জীর্ণ সামিয়ানার নীচে গ্রামের অনেক চাষা দলবদ্ধ হইয়া নিবিষ্টচিত্তে গান শুনিতেছে। পূর্বদিন সন্ধ্যার পর বেছলার পালা আরম্ত হইয়াছে, এত বেলা পর্যান্ত সে সঙ্গীতের বিরাম বিশ্রাম নাই) ঢোলক ও খঞ্জনী বাজিতেছে, গান গায়িতে গায়িতে গায়কদের গলা! ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, পৌষের দারুণ হিমে সমস্ত রাত্রি জাগিয়া তাহাদের চোখ বসিয়া গিয়াছে, মুখ শুকাইয়া গিয়াছে, তখনও স্ত্রী বেশে সঙ্জিত এক চাষা হাত নাড়িয়া মুখভঙ্গী করিয়া যে গান গায়িতেছে, দশ বারজন গায়ক তাহ।রই আবৃত্তি করিয়া গলার শিরা ফুলাইয়! মাথা নাড়িয়া, মুখব্যাদীন পূর্বক সমস্বরে বলিতেছে-- “ও হাটে যেওনা বেউলো, বেউলো আমার মা চাদের বাটা গস্মন নখা দেখলে ছাড়বে না |” এই চিরপরিচিত সঙ্গীত শ্রবণ করিয়া মহেশ দাস চলিতে চলিতে পথপ্রান্তে দণ্ডায়মান হইল, তাহার পা আর চলিতে চাহিল না। গৌরীর মা পশ্চাৎ হইতে বলিল, “হাঁ করে ও কি শুন্চ! তিন তিন কোস পথ যেতে হবে, তা মনে আছে ? এই কাল বেউলোর গানেই তোমাকে খেয়েছে 1৮ মহেশ দাস বলিল, “তা কি করে বুঝবি তুই মাগী! চল, এমন গায়ের মায়া কাটাতে আমার বুক ফেটে যাচ্ছে।” ছুই বিন্দু অশ্রতাগ পূর্বক মহেশ দাস দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া গন্তব্য পথে অগ্রসর হইল । শ্রীদীনেন্দ্রকুমার রায় । ফাল্গুন, ১৩২২ ] বন্ধ্যার ব্যথা ২৩ বন্ধ্যার ব্যথা তোমাদের ও কেমনধারা কথ ! ওগো! পুরুষ, বারেক বোঝ” নারীর মনবাগা। বল্বে তুমি, “খরচ বাড়ে তাতে, কিন্বা এখন কাজ কি মে কথাতে; মিথ্যা কেন ভাবনা ডেকে আনা”__ তফাৎ যে সেইখানে ) মায়ের মনটি পেতে যদি, বুঝতে তাহার মানে । তবুণ্মদি ধরতে হত পেটে পাঁচটি বছর মায়ের ব্যথায় করতে মানুষ থেটে ৃ ছেড়ে আপন ছুঃখ লজ্জা রোগ তুচ্ছ করে? সকল স্থখ ভোগ; দাসীর সেবা, রক্ষা দেবীর মত করতে যদি হ'ত-_ তবেই তৃমি বুঝ আমার সখের ঃখ কত। বত্রিশপাক নাড়ীর বাধন ছিড়ে, মাগছি ঘারে বাত্রিদিনে আসবে না সে কিরে? যারে পেতে মরণ সাথে যুঝে? বুকের রক্ত মুখে যাহার গু'জে-_ তাইত মায়ে ছেলের দরদ বুঝে সে তার প্রাণাধিক, 9গো স্বামি, বারেক তুমি দেখ না সে দিক! সবাই দেখ, সুখে কাটায় দিন-_ ছেলেয় খাওয়ায় নাওয়ায় ধোয়ায় আন্তি আলসহ্ীন ! খোকার ছুধটি শিকায় শোবার ঘরে, খোকার শয্যা শুকায় দাওয়ার পরে; কাদলে ছেলে হাজারো কাজ ফেলে বক্ষেতে লয় তুলে? লক্ষ লোকের মধ্যে বসেও থাকে যে সব তুলে? ! তোমায় আমায় এতই ভালবাসা__ সেও যেন হায়, কেমনতর ঠেকছে ভাসা-ভাসা ! ঢুকৃলে ঘরে চক্ষে আসে বান__ কোথায় আমার ছোট্র শ্যাথান ? ঘরে তোমার এত জিনিষ, ওগো, এত টাকার ধন-_ নাই যে কেবল শিশুর কাথা, হায়রে আকিঞ্চন! যতই বয়ম হোকনা আমার কেন-__ গিন্নী হওয়া জোর করে? সে-_মানায় নাক” যেন! একটি ছেলে থাকৃত যদি শুধু-_ “মায়ের মাঝে লুপ্ত হ'ত বধূ! বালাকালের পুতুল-খেলা থেকে হয়গো যারা মা সত্যিকারের মা-না-হওয়া কি তার যাতনা ! ভিক্ষুকও যে নেয়না আমার ভিথ২ ূ গলীব ছুঃদী- লুকিয়ে তারাও দেয়গে! আমায় ধিক্‌ ! শিশু কোথাও দেখতে পেলে, হায়, অমৃনি বুকে তড়িং থেলে” যায় 1 ঘরে মোদের নাইক ছেলে, ওরে ** ডাকৃবে কে ম! বলে_ একটা কিছু-হে ভগবান, দাও এ পোড়া কোলে। শ্রীবসস্তকূমার চট্টোপাধ্যায় | , ২৪ মানসী ও মর্ম্মবাণী [৮ম বর্ষ--১ম খণ্ড_-১ম সংখ্যা ভক্তকবি রসিকলাল বাঙ্গালা দেশ কবিত্বের লীলাভৃর্মি্খ কবিরা এদেশে হৃদয় দিয়া, প্রাণ দিয়া, জীবনের সকল শক্তি উজাড় করিয়া ভগবানের মহিমা বুঝাইতে চেষ্টা করিয়াছেন। উপাস্ত দেবতার উদ্দেশে ভক্তকবির হৃদয়মন্দিরে যে গভীর প্রার্থনা সমুখিত হয়, তাহারই অনুভূতি কবিতাঁকারে, সঙ্গীতাকারে ফুটিয়া উঠে; তাই এদেশে বহুকাবোর মূলেই প্রকৃত আধাত্মিকতা দেদীপামান। চত্ডীদাস, বিগ্ভাপতি, জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস, রাম- প্রসাদ, কমলাকান্ত, বিশ্বেশ্বর, রামকুষ্ণ-উারা সেই একই শোতে ভাসিয়াছেন এবং বর্তমান যুগের শ্রেষ্ট- কাবা “গীতাঞ্জলি” সেই সুচির অধাত্মবাদেরই 'অভি- বাক্তি মাত্র । আজ আমরা যে কবির কথা পাঠকসমক্ষে উপ- স্থাপিত করিব, তিনিও অধাম্মপথের পথিক হইয়া- ছিলেন, তিনিও প্রেমের আদর্শ, তিন্নজীবনের আদর্শ “কানুর সঙ্গীত” গাহিয়াছিলেন। ৬রসিকলাল চক্রবন্তী বর্তমান সময়ের লোক হইলেও লকলে তাহার জীবনের সহিত পরিচিত নহে । বাঙ্গালা ১২৬৩ সালের পৌষমাসে যশোহর জেলার অন্তর্গত রায়- গ্রামে ইনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম রামরতন চক্রবর্তী। রদিকলাল ছাড়া রামরতনের আর তিনাট পুত্র ছিল-__হরলাল, কুষ্ণলাল ও রামলাল। রসিক সর্বকনিষ্ঠ । কৃষ্ণলাল একজন ন্ুবিখ্যাত বাদক ছিলেন, রসিকও কালে একজন ভাল বাদক হইয়াছিলেন। দশ বার বৎসর বয়স পধ্যস্ত রসিকলালের লেখাপড়া কিছুই হয় নাই। চতুর্দশ বতসর বয়ঃক্রমকালে তিনি স্বগ্রামের বিস্তালয়ে ছাত্রবৃত্তি শ্রেণীতে অধ্যয়ন করেন বলিয়া শুন! যায়) কিন্তু পরীক্ষা দেন নাই। বিষ্ভালয় পরিত্যাগ “করিবার ছুইচারি বৎসর পরেই তিনি রায়গ্রামে স্থানীয় বালকগণের শিক্ষাদানের নিমিত্ত একটা বিস্তালয় স্থাপন করেন । যৌবনে রসিকলালের চরিত্র ভাল ছিল না) এ সময় কিছুকাল উচ্ছ্‌ঙ্খলভাবেই তিনি অতিবাহিত করেন। ১২৮৮ সালে রসিকের তৃতীয় অগ্রজ ৬রামলাল চক্রবর্তী একটি যাত্রার দল খুলিলেন। রসিক এই সময় অগ্রজের যাত্রারদলে যোগদান করেন । এই সময় হইতেই তাহার জদয়ে কবিত্বকোরক মুকুলিত হইতে, আরন্ত করে এবং তিনি সঙ্গীত-রচনায় প্রবৃত্ত হন। ১২৯৩ সালে রামলাল চক্রবর্তী খণজালগ্রস্ত ভইয়া দেশত্যাগ করেন। রসিক পল ছাড়িয়া দিয়া যশোর গিলাপোলের সুবিখযাত হরেন্সরূপ গোস্বামী মভাশয়ের যাত্রার দলে প্রবেশ করেন। গোস্বামী মভাশয় রসিকের গ্রাতিভার পরিচয় পাইয়া তাহারই হস্তে দলের যাবতীয় ভার অর্পণ করিলেন। এই সময়ে রসিকলাল সঙ্গীত- রচনায় সমধিক মনোনিবেশ করিয়াছিলেন । গোস্বামীর দলে রসিক বেণী দিন থাকিতে পারেন নাই, ১২৯৪ সালে পীড়িত হইয়া রায়গ্রামে ফিরিয়া আসিলেন। উক্ত বর্ষের শেষভাগে তিনি “জীবোদ্ধার” নামে একটি পাল! রচনা করেন এবং উহা গাহিবার জন্ত গ্রামের কতিপয় বালক লইয়া “বালকসঙ্গীত” দল গঠন করেন। কিন্তু আরস্তেই বাধা পাইলেন। এ বৎসর চৈত্র মাসে রসিকের মাতৃদেবী ্বর্গারোহণ করিলেন। ই'হাদের সাংসারিক অবস্থা অত্যন্ত শোচ- নীয় ছিল; কায়ক্রেশে একপ্রকার গ্রাসাচ্ছাদন , চলিয়া যাইত। বহুকষ্টে শ্রাদ্ধাদি উপরতক্রিয়া শেষ হইল। পুনরায় বালক সঙ্গীতের মহলা চলিতে থাকিল। « ১২৯৫ সালের জ্যেষ্ঠ মাসে সর্বপ্রথম প্রকাশ্যভাবে বালকসঙ্গীতের অভিনয় হয়। রসিকের' পুর্বে বালক- সঙ্গীত কথনু৪ ছিল না, তিনিই ইহার প্রবর্তন! করেন। | দেখিতে দেখিতে বালকসঙ্গীত দলের সুনাম প্রচা- রিত, হইক্া গেল। নবীন ভাবের একটা মধুরপ্লাবনে ফাস্তুন, ১৩২২ সন্নিহিত গ্রামগুলি মাতিয়া উঠিল । তিন. চারিখানি খঞ্জনী এবং ছুই তিনটি খোলের বাগ, তৎসহ সথললিত হরিনাম-গানে পলী সকল মুখর হইয়া উঠিল। বালক- কণ্ঠে মধুর হরিনাম সন্কীর্তন বড়ই মধুর শুলাইল, যশোহরের বহুস্থান হইতে রসিকের নিমন্ত্রণ আসিতে লাগিল। রসিকের দলের গান শুনিবার নিমিত্ত শত শত লোকের প্রাণ আকুল হইয়া উঠিল। বালকসঙ্গীত প্রথমে কতিপয় সঙ্গীতের সমষ্টিমাত্র ছিল, অবশেষে তাহার সহিত রসিকলাল ্গৌরাঙ্গের মধুর জীবনকথা কবিতাকারে সংশ্লিষ্ট করিয়া দেন। উদ্দাহরণন্বরূপ নিম্নে একটা স্থান উদ্ধৃত হইল ₹-_ ;. শ্বীতশ ম্টাম-হ্ুন্দর রূপ-মনোহর, মরি মুরহর কি মুরতি রে। কিবা -অঙ্গ রিভঙ্গ অনঙ্গ-যোহন, নীলকাস্ত জিনি জ্যোতি রে ॥ কিবা শুচার চার চিক্ুরপরে শোভিছে মোহন চুড়া, তায় ললাট-ফলকে, বিজলি ঝলকে, ঝালরে মুক্তাপাতি রে ॥ কিবা শ্রবণঘুগ্লে মকর-কুগুল, অলকা-তিলকণ ভালে, তা খঞ্জন জিনি নয়নধুগলে, অঞ্জনে শোন অতি রে॥ কিবা তিলফুল জিনি, অতুল নাসিকায় কটি পুলকে নলক দোলে, তায় বিশ্বাধরে সুমধুর হাসি, দশনে হীরক ভাতি রে ॥ শ্টামের গণ্স্থল ঝলমল কিবা, গলে দোজ্ল বনমালা, তায় ঘুগল বাছুতে, মোহন মুরলী *. *.. মোহিতে গোপীর মতি রে। ক ফু ফু কিবা অকলঙ্ক পূর্ণ কোটি ইন্দু ঘেন উদিত পদ-নগর়ে, তায় চকোর চকোরী দিবা বিভাবয়ী, ভ্রমে ভেবে নিশাপতি রে॥ * তক্তকবি রসিকলাল ২৫ কিবা গোস্পদাদি ধ্নজ-বজান্কুশ রেখা শোভিছে জ্ীপদতলে, তায় ও পদ-দরোজ ভূলন। রে দ্বিজ রসিকের মুঢ়মতি রে ॥ ইহার পরেই শ্রীগৌরাঙ্গের জীবন কথা যথাক্রমে আরব হইয়াছে । ত্রিপদী। গয়াক্ষের পরিহরি, নদীযায় গৌরহরি, পুনরায় করি আগমন । তাজা করি গৃহবাঁস, সদা বাসনা সন্ন্যাস উপায় ভাবেন অন্ক্ষণ ॥ ্ চি ক পাইলে মানবজন্ম, পালিতে সংসারধর্থয, সর্ব কর হবে সাপিবারে। করিষা ত্যাগ স্বীকার, পুরুষাথ শে আমার পরে আমি দেখাব সবারে ॥ অন্ন না থাকলে ঘরে, যদি উপবাস করে, তারে অনতাগী কেবা বলে? আছে অন্ন রাশিরাশি, কিন্ত থাকে উপবাসী, অনত্যাগী হয় হেন হ'লে ॥ এইরূপ মনে মনে, ভাবেন বসি ভবনে, হেনকালে এলেন নিতাই । গৌরাঙেওল'য়ে সঙ্গে, বাহির হলেন রঙ্গে, ». নগরে বেড়াতে ছুটি ভাত ॥ চে রং সং একটা গান থামিল, অমনি কথকতা আরস্ত হইল; পরে আবার কথা শেষ হইলে বালকের দল গীতবঙ্কার তুলিল। | ১২৯৫ সালের ৬বিজয়াদশমীর দিনে রসিকের বালকসঙ্গীতের দল গ্রামের ৬জরগোপাল চট্টো- *পাধ্যায়ের বাটাতে “জীবোদ্ধার” অভিনয় করিল। দল হইতে একটু দূরে ভক্ত রসিক বলিয়া আছেন; দেবতার বিদায়-অশ্র" যেন ভক্তের নয়নযুগল দিয়া দরবিগলিত ধারায় প্রবাহিত হইতেছে, শত শত লোক উৎস্থকচিন্তে “সঙ্গীত শ্রবণ করিতেছে ;- সে এক অপূর্ব দৃশ্য..! বালকগণ গাহিয়াছিল $-- ২৬ মানসী ও মর্দ্মবাণী [৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা কপ্পনা-কুহ্বমে গাথিবারে হার, সতত বাসনা! করে মন আমার, নাহি বিদ্যা-বুদ্ধি, ভরসা তোমার ও মা শ্বেতবরণী। এই সময় হইতে রসিকের জীবনে একট পরি- বর্তনের স্চনা হইল, জীবনের গতি সম্পূর্ণ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করিল। তিনি সাধনায় মনোনিবেশ করি- লেন। এই সময় বরিশালে গাহিবার জন্তা তীহার দলের নিমন্ত্রণ হয়। ১২৯৫ সালের পুজাবসানে তিনি সদলবলে বরিশালে গমন করেন। বরিশাল-বাসিগণ তাহার দলের সঙ্গীত শ্রবণে মুগ্ধ হইয়া গিয়াছিল। রসিক সেখানে প্রভূত অর্থ ও যশোলাভ করেন। পুর্বে তাহার অনেক খণ হইয়াছিল, ক্রমে রসিক সে সকল পরিশোধ করিতে লাগিলেন । ইহার কিছু পরে রসিকলাল পুণাধাম নবদ্বীপে গমন করেন এবং স্বরচিত সঙ্গীতে সমগ্র সুধীমণ্ডলীকে আপ্যায়িত করিয়া “গুণাকর” উপাধি লাভ করেন। কবিকুলশিরোমণি ভারতচন্দ্রের পর রসিকলালই নবন্বীপের পগুভগণ কর্তক এই ছুলভি উপাধি দ্বাণ গোৌরবাখিত অতঃপর রতনপুরর বারোয়ারাতে রসিকের যাত্রার অভিনয় হয়। তথায় বনুসংখাক পণ্ডিত সম্মিলিত হইয়! রসিরকে “গীত- রত্বাকর” উপাধি প্রদান করেন। ১২৯৬ সালে তাহার দল কলিকাতায় আগমন করিয়া যথে্ই যশঃ লাভ করে.। এই বৎসর রসিকলাল গুরুর নিকট হইতে দীক্ষামন্ত্র গ্রহণ করিলেন । রসিক পূর্বে বিষ্ণুমন্ত্রের উপাসনা করিতেন ; কিন্তু গুরুর নিকট হইতে মন্ত্র গ্রহণ করিয়া জানিলেন,তাহারা ংশানুক্রমে শক্তিমন্ত্রের উপাসক । হরিসঙ্গীত, শ্তামাসঙ্গীত উভয়ই রচনা করিতে লাগিলেন, ভক্তের মানসপটে বিষণ্ণ ও কালী যুগপৎ প্রতিভাত হইল। ১২৯৮ সালে নাটোরের নিকটবর্তী হিলি নামক ষ্টেশনে তাহার সহিত শ্রীমৎ সদানন্দ স্বামীর সাক্ষাৎ হয়। হইলেন। গ্রামের এখন হইতে তিনি, এই মহাত্মার নিকট হইতে তিনি অনেক সছুপদেশ লাভ করেন। “সীতার পাতালপ্রবেশ,» “চণ্ডে পাগল», “মাধবের নধুর-লীলা” প্রভৃতি গীতাভিনয় এই সময়ে রচিত হইয়াছিল। ১৩০৭ সালের ফাল্গুন মাসে রসিকলাল ৮রাধা- রাণীর মন্দির ও দীর্ধিক প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্টাকার্ধা যেরূপ ধুমধামের সহিত সম্পন্ন হইয়াছিল, সেরূপ বর্তমান সময়ে বড় একটা কোথাও দেখা যায় না। প্রতিষ্ঠার পূর্বদিবন হইতে পঞ্চদশ দিন পধরিয়! ক্রমাগত উৎসব হয়; নৃত্য গীত ভোজন প্রভৃতিতে শত শত লৌক যোগদান করিয়াছিল। রাধারাণীর মন্দির-গ্রতিষ্ঠা রসিকের জীবনের একটা প্রধান কার্য ; কিন্ত ইহাতে তিনি খণজালে আবদ্ধ ইয়া পড়েন) জীবনে তাহ! আর পরিশোধ হয় নাই | মন্দির-প্রতিষ্ঠার পর নাটোরের স্বনামধন্ত মহারাজ উহার চতুষ্পার্খবন্তী পঞ্চাশ বিঘা জমী নিফর করিয়া দেন। ১৩১১ সালের আশ্বিন মাসে রসিক সাধন-সঙ্গীতের দ্ল গঠন করেন । এই সক্গল সঙ্গীতে তাহার ভগবৎ প্রেম উচ্ছসিত হইয়া উঠিয়াছে। পাঠকগণের তৃপ্তির জন্ত আমরা তদ্রচিত অসংখা সঙ্গীতের মধা হইতে কেবল ছুইটি মাত্র উদ্ধৃত করিলাম £-_ টি ভবে তার কি ভাবনা আছে রে, যেজন ভব-ভা্টিজাহরাকে ডাকে, সে যে ভেবে ব্রহ্মময়ী, হয়ে সর্বজরী, সদানন্দে সদ] থাকে রে ফাকে ॥ ধরেছে যে ভার অভয়চরণ, ভয় করে সে কি ভাবিয়! মরণ, হয়ে সর্বত্যাগী লইয়া শরণ, আত্মসমর্পণ করেছে মাকে ॥ অমুত গরল স্বরগ নরকে, সমতুল তাঁর আপন পরকে, ভাবে কি প্রভেদ- সে হরি-হরকে, দয়াময়ী শ দয়া করেছে যাকে ॥ ভবারাধ্য তার ভবহাদি পরে, রেখে ও জ্ীপদ সর্্বাপদে তরে, ভয় কি রসিক ভেবন! অন্তরে, মনে প্রাণে সদা ডাকরে তাকে ॥ ফাস্তন, ১৩২২ ] (০ সেই দিন আমার কবে মা হবে। কবে বাঁসনাকে ছাই, অঙ্গে মেখে অ+ঈ পাগল হব আমি দেখবে সবে ॥ পরে অঙ্গে ছোড়া ধটী, কশরব ছুটাছুটি, রটিবে নাম মম ক্ষেপা ভৈরবে। মুখে আবোল-তাবোল বোল, কিন্তু অন্তরে নির্গোল, ভজিব যুগলপদ-পল্লবে ॥ যাবে জাতি-কুল-মান, লজ্জা ভয়ে ত্রাণ বল, হর্গে, আমি পাব মা কবে। হয়ে সবার স্বৃণিতঁ আনন্দে পৃর্ণিত হবে চিত. নাচিব শৌরবে। যাবে সুখে ছুঃখে রুটি, ৯. শুচি কি অশুচি, পাপ-পুণ।-জ্ঞান কিছু না গবে, হবে মাটি সোন। তুলা, ভূলে নাঁব মূল্য, অভেদ স্বরগে আর রৌরবে ॥ কবে ভাড়াষে অনঙ্গ, হব মা উলঙ্গ এসেছিন্ব আমি বেভাবে ভবে । সেই বালক-স্বভাৰ পেয়ে মা অভাব ঘুচাব কীদিয়ে মা-মা রবে ॥ করে বালক আখুটী কর্ব কীদাকাটি, খাবনা যতক্ষণ কোলে না৷ লবে। কেঁদে খাও রে বাছা বলে, কর্বি এসে কোলে, পাবে এখন রসিক ভবার্ণবে ॥ সব দেবতায় ম্মরিব আজিকে, গণেশে নয়__ সিদ্ধির ঝুলি সন্ত ধীকুক-_তাহারি জয় ! আপনার বোঝা__সেই গুরুভার, * সে ভার বাড়া”তে চাহিনাক আর; নিস্ব রিক্ত ভাগাহীনের কিসের ভয়? গণেশের মত লক্মীও মোরে বড় সদয় ! ছুটি ২৭ পসরা রসিকলালের কতকগুলি গানে সামাজিক ব্যঙ্গ- চিত্রও দেখা যাঁয়। তিনি একসময় লিখিয়াছিলেন টি গেল বাঙ্গালা রসাতলে। মেয়েমান্ষে হায়, মাই-ডিয়ার বলে ॥ আধ্য স্ত্রীশিক্ষাকে এখন রং নোসান সবাই বলে, (শুনি )- দেখি ইংরাজিতে সবাই পাজি, বাঙ্গালা চেলে কেউ না চলে ॥ নাই সাবেক শাড়ীপরা, সিন্দুরের বিন্দু ভালে, (এখন )--প্রায় বডি গায়ে গাউন পরা. বুট পায়ে ছট্র, বলে চলে ॥ ১৩১১ সালে বরিশাল হইতে রসিকলালের নিমন্ত্রণ আসে। তাহার দল সেখানে গান করিতে গেল। রসিকও সঙ্গে ছিলেন। কিন্ত মৃত্যুর করাল-ছায়া অচিরে সাহার উপর ঘনীভূত হইয়া আমিল। দারুণ বক্ত।মাশর ও জরে কবিবর আক্রান্ত হলেন | অগ্রজ রামলাল রাপিককে লইয়া রায়গ্রামে আদিলেন। ১৩১১ সালের অবশিষ্ট কয়েকমাস কাটিয়া গেণ, ১৬১. সালও অতিবাহিত হইল। ১৩১৩ সালের ১২ই বৈশাখ তারিখে রসিকের প্রাণবাঘু বহিগত হইয়া গেল। রামপ্রসাদ, কমলাকান্ত, রামকৃষ্ণের বৈরাগ্য-সঙ্গীত রসিকলালের কঠে আসিয়া নীরব হইল। রা শ্রীননীগোপাল মজুমদার ছুটি অসিদ্ধি-দেবী অক্কৃতকার্যে ডেকেছে আজ-- ঘর ছেড়ে তাই করেছে বাহির ছাঁড়ায়ে কাজ । সব আশা হতে সকলের কাছে চিত্ত আমার ছুটি পাইয়াছে ছাড়ি ভয় লাজ তাই সে যে আজ রাঁজাধিরাঁজ-- গৃহ ছাঁড়ি' তাই দিশ্বিজয়ের যাত্রা আজ! * ২৮ মানসী ও মর্ম্মবাণী [ ৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড-_-১ম সংখ্যা পর-পর-পর বহু বৎসর গেল ত চলি'__ স্থখ বলে? কিছু পেয়েছি সে কথা কেমনে বলি? আজি দিনশেষে সন্ধ্যার বায় মনে হয় যেন লাগিয়াছে গায়, আজ আর কু মিছ! ছলনায় নিজেরে ছলি; আশার আলোক দিনশেষ সাথে গিয়াছে চলি? । দূর করি” যত জাল-জঞ্জাল ভাক্কা আজি; যেমন করেই ঘা-কিছু আস্গক-- তাতেই রাজি; হাওয়ায়-হাওয়ায় টেউয়ে-ঢ ছয়ে ভাসা, যথন যেখানে সেইথানে বাসা; দৈন্ত-মায়ের শুন্ঠ নায়ের মুক্তি-মাঝি__ আস্মক না বান, জাগুক তুফান _তা'তেই রাজি । জোর করে” হাসি, হান্কা ভাবিবে কে আছে ভাই? প্রাণ ভরে? কাদি, 'আহা+অভিনয়ে মানুষ নাই; চুপ করে; থাকি, নাই কোন গোল-__ কেহ কোথা নাই ভাবে যে পাগল) তার বেশী আর শাস্তি হেথায় কিছু না চাই; কানা বা হাসি বাধা দেয় আপি" মানুষ নাই। একি আনন্দ'! চারিদিক ফাঁকা__একিরে স্ুথ ! কোথা এর কাছে মায়ের বক্ষ প্রিয়ার মুখ ! খাতির মদ্য বিত্তের রাশি-_ ॥. শত নাগপাশে বাধা পড়ে হাসি-- বন্দী দেখায় পায়ের শিকল-_-কি কৌতুক ! দূর হতে দেখি স্বাধীন মুক্ত-_কি মহাস্ত্থ ! মরুক্গে ছাই-_তুচ্ছ কথায় আর যাবনা_ সকল ভাবনা এড়ায়ে এ ফের কোন্‌ ভাবনা ! পরপারে পাড়ি ধরেছে যে আজ, পরচচ্চায় তার কিবা কাজ-_ সাজে কি তাহার স্ৃতির পত্র সমালোচনা ! দূর ভোক ছাই-তুচ্ছ কথায় আর যাব না। ছুটি মোর ছুট_.প্রাণে মনে আজ পেয়েছি ছুটি ভুল যত দব ফুল হয়ে তাই উঠেছে কুটি?! আকাশের সাথে হব সে আকাশ, বাতাসের সাথে মিশাব বাতাস ; ধরণীর ধার শুধিব ধূলার বাধন টুটি__ ছুটি সেই ছুটি দেহে মনে যবে মিলিবে ছুটি। ্ীধতীন্দ্রমোহন বাগচী ফলিত জ্যোতিষ আজকাল ইউরোপ "ও আমেরিকাথণ্ডে ফলিত জ্যোতিষের চচ্চা পূর্বেকার হইতে কিয়ৎপরিমাণে অধিকতর হইতেছে । উভয় মহাদেশেই ফলিত জ্যোতিষ সম্বন্ধে একাধক সাময়িক-পত্র সুচারুরূপে চলিত । এবং সম্প্রতি যে সর্বনাশকর যুদ্ধ বাধিয়াছে, তাহাতে জন- সাধারণের দৃষ্টি অধিক পরিমাণে ফলিত জ্যোতিষের দিকে আকৃষ্ট হইয়াছে । শিক্ষিত সম্প্রদায়--এমন কি এই জ্ঞানগর্কিত বিংশ শতাব্দীর একাধিক দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক, আগেকার মত ইহাকে অবজ্ঞার ভাবে দেখিতেছেন না। পুরাকালেও যে বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিকমাত্রই ইহার বিরুদ্ধ ছিলেন, তাহা বলা যায় না। ইহাতে বিশ্বাস-পরতন্ত্রতা সম্বন্ধে বিজ্ঞান জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদিগের নামের উল্লেখ করা যাইতে পারে । 735০01৮7911 এবং ৪৮০) ফলিত জ্যোতিষ বিশ্বাস করিতেন। আমাদের দেশ, প্রায় সকল বিদ্যারই যেমন, তেমনই ফলিত জ্যোতিষের ও জন্মস্থান । অতি প্রাচীনতম কাল হইতেই ইহার চচ্চা ছিল। বেদে ইহার উল্লেখ দেখা যায়। আমাদের দেশে ইহা ফ্রুববিস্তা ( ৮০8101৪ ১.19০০9) বলিয়া পরিগণিত। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় ফলিত জ্যোতিষ আমাদের আধুনিক শিক্ষাভিমানী-সম্প্রদায় ইহাকে অব- জ্ঞার চক্ষে দেখেন এবং যাহারা ইহাতে বিশ্বাস-পরায়ণ বা আস্থাবান তাহাদের লইয়া রহদ্য করিতে ছাড়েন না। পুর্বে বলিয়াছি আমাদের দেশে ফলিত জ্যোতিষ ঞ্রববিদ্ভা এবং প্রত্যক্ষপ্রমাণ বলিয়া আদৃত। আমাদর পণ্ডিতেরা বলেন £-- “চিকিৎসিত জ্যোতিষ তন্ত্রবাদাঃ . পর্দে পদে প্রতায়মাবহপ্তি |” যখন ফলিত জ্যোতিষ সঙ্গন্ধে এই উচ্চ দাবী স্পষ্টতঃ পরিষ্কার ভাষায় করা হইয়াছে, তখন বিবাদীর পক্ষে ইহা বড়ই সুবিধার বিষয় । তাহারা এক কথায় দ্বন্দ শেষ করিয়া, দিতে পারেন। তাহার। পারেন তোমাদের দলিল দপ্তাবেজ প্রদাণাদ উপস্থিত কর-_পরীক্ষা করিয়া দেখি। তাহা হহণেহ তক যুদ্ধ মামাসিত হইবে । আমরা বৰ্তমান গ্রবদ্ধে সেহ প্রমাণা- দির আলোচনা করিব। কিন্ত্, ৩ৎপুব্ে দেঁখিব ফলিত জ্যোতিৰ যম্বন্ধে কেবলমাত্র যুক্তি কি বলে। হহার 21707 কোন 1ভত্তি আছে কি না। ফলিত জ্যোতিষ বলে, মানুষের জীবনের উপর দুইটি প্রভাব লক্ষিত হয়। (১) তাহার [নিজের কতৃত্ব_পুরুষ- কার, (২) অনৃষ্ট। এই ছুই প্রভাবের অস্তিত্ব কেবল বিজ্ঞান-সম্মত নহে-_সর্ববাধিসম্মত। নাস্তিক বা অক্ঞ- লোকেরা যাহাকে 1998 বা কপাল বলে, এহ অদৃষ্ট সব্বতোভাবে না হউক, আংশিকরূপে অজ্ঞ বিজ্ঞ সকল লোকের দারাই স্বীক্কৃত। তাহার ভিতর কম্মফল, পরি- বেষ্টনী (৩০510700086), 180]. প্রভৃতি আনিয়া পড়ে । সকলেই স্বীকার করিবেন যে, মানুষের কাধ্যকলাপ এবং চ'রত্রগঠন সম্বন্ধে তাহার আত্মপ্রভাবকে অতি- ক্রম করিয়া বা তাহার সহিত সংশ্লিষ্ট অথবা মিলিত বলিতে হইয়া দেশ, কাল,*সমাজ, বংশ প্রভৃতি কাধ্য করে। তুমি দেশবিশেষে'যেমন ভারতবর্ষে, কালবিশেষে যেমন আধুনিক কালে এবং বংশবিশেষে, যেমন চ:গালবংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছ বলিয়! তুমি পরাধীন, স্থায়ত্ত-শাসন বঞ্চিত, নিরক্ষর, সমাজে উপেক্ষিত। তুমি কুস্ঠী পিতার এ ২৯ রসে জন্মগ্রহণ করিয়া আজীবন স্বাস্থ্য সুখ পাও নাই এবং তজ্জনিত নানা অভাব এবং ছুঃখে পীড়িত। অদৃগ্ত কারণসঞ্জাত তোমার সেই সকল অবস্থার দরুণ তোমার জীবন বিশেষ বিশেষ ঘটনাসঞ্কুল, তোমার বিশেষ বিশেষ সুখ দুঃগ, তোনার চরিত্রে বিশেষ বিশেষ দৌষ গুণ। বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন কালে এবং বিভিন্ন জাতির মধ্যে জন্মিলে তোমার জীবনের ঘটনা! সকল, স্থখ দুঃখ, চরিত্রের বিকাশ বিভিন্ন প্রকারের হইত । কম্ক দেশ কাল প্রভৃতি |নর্ধাচনে মানুষের কোন কর্তৃত্ব বাক্ষমতা লক্ষিত হয় না। আমি কোন দেশ, কাল বা বংশে জন্মিব, তাহাতে আমার দৃশাতঃ কোন হাত নাই। স্তিরাং জীবনে বহুল অংশই অদৃশা- প্রভাব বা অনৃষ্টের দ্বারা শ।সিতি 'এবং অন্ধকারে আবৃত। ফলিত জ্যোতিষ জাবনের সেই অন্ধকারের কিয়দংশে আলোক প্রদান করে। জ্যোতিষীরা বলেন, গ্রহ- “নক্ষত্রাদি তোমার দেহ এবং মনের উপর শক্তি সঞ্চালন করে এবং দেখাইয়া দেয় তোনার জীবনে কিকি ঘটনা ঘটিবে বা ঘটিতে পারে । জীবনের উপর বাহা প্রভাবের মধ্য সৌরজগতের গ্রহনক্ষ্রা'দ অন্ঠতম। তাহারা মানধ-জীবনের ঘটনাদি কতক অংশে পরিচালিত করে এবং পৃব্ব হইতে নির্দেশ বা জ্ঞাপন করে । জ্যোতিষী- দের এই সকী কথার মধ্যে একটিও প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধ বা বহির্ভূত নহে । আমরা দেখিতে পাই, ভিন্ন ভিন্ন খতু দেহ এবং মনের উপর ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব বিস্তার করে ; বসন্ত খতু শুধু “তপঃ সমাধে প্রতিকুল- বর্তী” নহে । 5 চি 11) 606 41)001)85 & 101101111754670 00100 ])9)) 0030 790)08003 0019886 11) 016 91011088009 ৮5009) 180)17)8 ৪০৮৪ 101005011 810061007 07986 [7 8১০ 8000৫ ৮ 01৮9150 015 00811655 ০ ্ 074 795117181৮0 90৮০, [0 006 ৪0005 ৯ 5000)6 20875 890৫0 ্ 10809) 65008 ৮০ 9১০৪৪০৪৪ ০৫ 1০৮৩ ৩9 মানসী ও মণ্বাণী [ ৮ম বধ--১ম থণ্ড--১ম সংখ্যা উনি বিভিন্ন খতুতে বিভিপ্ন রোগ উৎপাদিত হয়। কক্ুর্ঘযা- বর্ত” (3৪:৪০০$৪) প্রভৃতি রোগ সুর্যের সহিত সংশ্লিষ্ট, গও্রোগাদি চন্ত্র হইতে সঞ্জাত, ইহা অস্বী্রার কারবার পথ নাই। তবে জ্যোতিষীর! যখন বলেন হাম রৌগ মঙ্গল গ্রহ হইতে উৎপন্ন তখন তাহা হাসিয়৷ উড়াইয়! দিবে কেন? চন্দ্রের হ্ৰাসবৃদ্ধির সঙ্গে অনেক রোগই জড়িত; 'তাহা পাশ্চাতা-আযুর্ষেদে ৪ স্বীকৃত। ফলতঃ ধত্তই আলোচনা করা যায় ততই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, চরাচর সৌরজগৎ একটি বৃহৎ পরিবার এবং সেই পরি- বারভুক্ত পদার্থসমূহের মধো পরম্পরের সম্বন্ধ আছে-- ঘাত প্রতিঘাত আছে। 491871080০৮ 101৯ 181৮ “তারায় তারায় * * * বাগা গিয়া লাগে” 50 819 1) 811) 0113 011105 2170 ৬৮1৪ 10076 0১, সুতরাং মানবজীবনের উপর গ্রহনক্গতের যে প্রভা- বের কথা জ্যোতিষীরা বলেন, তাহা নৈসগিক- নিয়মের বহিভূতি বা বিরোধী নহে। ইহাতে বলা যাইতে পারে বে, ফলিত জ্যোতিষের পক্ষে পূর্বমুক্তি অন্থকুল। এ স্থলে আমি রামেন্্রনথন্দব ভিবেদী মহাশয় কনক বন্থপুর্বে লিখিত একটি প্রবন্ধের (প্রবানী ইতর ১৩০৫) উল্লেখ করিব। এ প্রবন্ধে ত্রিবেদী মহাশয় সঙক, সন্দিহান, বিজ্ঞ বৈজ্ঞানিকের হাসি হাসিয়া প্রচুর এবং স্থলভ বালের সহিত বলিয়াছেন অবিশ্বাসীরা যে প্রমাণ চান, বিশ্বাসীরা তাহা দেন না, তাহার বদলে বিস্তর যুক্তি দেন। কিন্ত প্রমাণের আসনে বসাইবার জন্য আমি যুক্তির কথা উত্থাপন করি নাই। পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা! ঘটে, প্রকৃতির নিয়ম সকলের মধ্যে, এমন অনেক নিয্ম আছে, যাহাদের সম্বন্ধে অনুকুল যুক্তি পাওয়া যায় না) কিন্তু তাহাদের অস্তিত্ব অস্বীকার ' করিলে ফলিত জ্যোতিষীরা রামেন্্স্থন্দর করিবেদী মহা- শয়ের এজেহার মতে অবিশ্বাসীদের যে দগপ্রয়োগ করেন, তাহাতেই শাস্তির অবসান হয় না তোমার পৃষ্ঠ এবং উদরদেশ উভয়ই পীড়িত হ%। যুক্তির কথার উল্লেখের হেতু এই যে অবিশ্বাসীদের বিজ্ঞ অবজ্ঞা এবং উপেক্ষার অন্ততঃ কোন বৈজ্ঞানিক কারণ নাই তাহা বিনীত ভাবে দেখাইবার জন্ত | পরন্ধ রামেজ্রন্ুন্দর বাবু যুক্তকে যতই হাসিয়৷ উড়াইয়৷ দিন, ফলিত জ্যোতিষ" পদে পদে ষে প্রত্যয় উৎপাদন করিবার দাবী করে, তিনি তাহার যথেষ্ট প্রমাণ চান। অতএব আমরা সেই প্রমাণের বথাসাধ্য আলোচনা করিব। (১) জন্মকালে গ্রহসংস্থান দেখিয়া জ্যোতিষীরা জাতকের সাধারণ জীবন এবং প্রকৃতি নির্দেশ করেন; অর্থাং জাতক কি প্রকার লোক, তাহার বুদ্ধি, ধশ্ম- ভাগা প্রভৃতি কিরূপ, বলিয়া দেন। 'তাহার পিতা মাতা ভ্রাতা ভগিনী স্ত্রী ও সন্তানাদির নির্দেশ করেন । জীব- নের বিপদ আপদ, শখ ছু £খ বাঁলয়া দেন। (২) গ্র- গণের রাশিচক্র পরিভ্রমণকাণে এবং ভিন্ন ভিন্ন দশায় এাঙকের জীবনে কোন্‌ কোন্‌ সময়ে কি কি ঘটনা ঘটিবে, তাহা নিরূপণ করেন। বলা আবগ্তক এহ ফলাফল-গণনা গণিত-জ্যোতিষের উপর সম্পুর্ণ নিভর করে। গণিত জ্যোতিষ যে মুহৃত্ত, জাতকের জন্ম-মুহুত্ত বলিয়া নিদ্ধারিত করে, তাহা নিভূল তওয়া চাই-__এবং সেই মুহৃত্তে গ্রহগণের আকাশের কোন্‌ অংশে স্থিতি-_ তাহার দ্রাঘিমা লঘিমা, ইত্যাদি অন্রান্তরূপে নিদ্ধারিত করিতে হইবে । গণিতে ভূল--গোড়ায় গলদ । তাহাতে ফলের তারতম্য হইবেই ! এখন আর সাধারণ কথা না কহিয়া__ব্যক্তি- বিশেষের কোঠী আলোচনা করিব। এক ছুই জনের কোঠ্ী মিলিলে যে ফলিত-জ্যোতিষ ক্রব-বিজ্ঞান প্রাণ হয় নাতাহা আমরা জানি। বৈজ্ঞানি কগ্রবর- দিগকে তাহা বলিয়া ছুখ পাইতে হইবে না। কিন্ত এই প্রবন্ধে বুলোকের কোর্ঠী পরীক্ষা অসম্ভব। আমরা ফি কোন একখানি কোঠী পরীক্ষা করিয়া দেখাইতে পারি যে, তাহ! জাতকের প্রকৃতি এবং জীব- নের ঘটনাদির সঙ্গে পুঙ্ঘানুপুঙ্খরূপে মিলিতেছে, তাহা হইলে অনুসন্ধানের পথ খুলিয়া দিয়া সত্য এবং প্রক্কত ফাল্গুন, ১৩২২] তথ্য নির্ধারণে সাহায্য করিব। তাঁহাই আমাদের উদ্দেশ্য । ৃ নিম্নে একটি জদন্মকুগলী অর্থাৎ কোন জাতকের জনুমূহূর্তে গ্রহসংস্থানের চিত্র প্রদর্শিত হইল। * তি 4 | লং ৮২৭ শু | র২ | কে? ন্‌ র্‌ তের ্ ডি নস রঃ ] বন ূ | ] ৮ তি ০৭8৮ শ ১০০ 1১২ বা২১ ূ ূ রর ৪ | ইহা! পরীক্ষা করিবার পুর্ব্বে পাঠকের বুঝিবার সৌকর্ষার্থ ফলিত-জোতিষের কতকগুলি মূল-কথা ক্ষেপে বলা আবশ্যক। আমরা ধরিয়া লইতেছি, জ্োতিষশাস্থ্রে পাঠকের বর্ণপরিচয় পর্যান্ত নাই। এই সকল কথা সামান্ত ফলিত-জ্যোতিষের গ্রন্ে, এমন কি পাজিতেও আরও বিস্ৃতরূপে পাঠক দেখিতে পাইবেন । উপরে যে চিত্র দশিত হইল, তাহা নভোমগুলের চিত্র_আকাশের যে অর্ধাংশ পু'থবীর উপরে দরষ্ট হয় এবং যে অপরাদ্ধ পৃথিবীর নিয়ে। চক্রটি ১২ অংশে বিভক্ত, এক একটি অংশকে মেষ বুষ, ইত্যাদি দ্বাদশ- রাশি কতে। শী ১২ রাশি ১২টি মাসের অন্নরূপ। অর্থাৎ মেষরাশি বলিলে বৈশাখ মাস বুঝায়__হুষ্য এ মাসে মেষরাশিতে অবস্থান করে। জোঠ্ঠ মাসে বৃষ রাশিতে ? এবং এইবপ ক্রমান্বয়ে। রৰি প্রভৃতি নবগ্রহ এ রাশিচক্রে পরিভ্রমণ করে। এ একুএকটি রাশি আবার কোন গ্রহের গৃহ-_অর্থাং সেই অংশে অবস্থান করিলে গ্রহের স্বকীয় বা ত্বার্তীবিক তেজ অক্ষুপ্রভাবে প্রকাশ পায়__সেই গ্রহকে সেই রাশির স্বামী বা ,অধিপতি বলে। কোন গ্রহের তৃঙ্গস্থান সেই রাশিতে থাকিলে গ্রহের তেজ পরাকাষ্টা প্রাপ্ত হয়;কোন গ্রহের নীচাংশ, সেই রাশিতে থাকিলে সেই গ্রহ একেবারে - ফলিত জ্যোতিষ | ৩১ নিষ্ষেজ হইয়া পড়ে; এবং কোন গ্রহের মিত্র বা শত্র-গৃহ-_সেই সেই গৃহে থাকিলে গ্রহের তেজের বৃদ্ধি বা হাস হয়। ইহা ফলিত জোতিষের কল্পিত কথা নহে-নৈসর্গিক পর্যবেক্ষণের ফল। দুষ্টাস্থের দ্বারা ইহা সতজে বুঝা যাইবে । মেষরাশি স্থর্য্ের তুঙ্গস্থান- অর্থাৎ মেষে অবস্থানকালে হৃর্যোর তেজ সর্বোচ্চ সীমা প্রাপ্ত হয়; তাতা আমরা দেখিতে পাই। বৈশাখ মাসে ক্র্য মেষরাশিত থাকে এবং বৈশাখ মাসেই সর্যোর প্রচণ্ডতম তেজ । তুঙ্গরাশি হইতে ৭ম রাশি গ্রহের নীচস্থান। মেষ হইতে ৭ম রাশি তুলা তুল! স্র্যোর নীচ স্থান, অর্থাৎ তুলায় অবস্থানকালে__ কার্তিক মাসে, সুর্ধা একেবারে নিন্তেজ নি্ঞাভ। সিংহ- রাশি স্র্ধোর নিজ গৃহ-_তাহাতে স্থিতি হইলে সুর্যের তেজ অক্ষণ্ন এবং খুব প্রবল থাকে । সিংহরাশির অন্ু- রূপ মাস ভাদ্র মাস। ভাদ্র মাসে স্থর্যোর উত্তাপ অসস্া। রবির শত্রু শনি_-শনির গুহ মকর এবং কুস্ত--এই ই রাশিতে স্র্যা পৌষ ও মাঘ মাসে থাকে । এই দুই মাসে হ্র্যোর তেজ অপেক্ষাকৃত কম। সেইরূপ অগাগ্ত গ্রতের দীপ্ি,'ও তেজ নৈসাক নিয়মের ভিত্তির উপর প্রতাক্ষ- সংস্থিত। আবার কৃতকগুলি গ্রহ শুভ-যথা বৃহস্পতি এবং শুর্ূু। কতৃকগুলি অশুভ- যথা মঙ্গল, শনি, রাহু। কতকগুলি শুভাশুভ অর্থাৎ বিশেষস্থলে বা শুভাশুভ- গ্রহের সংযোগে অথব! অন্তান্ত কারণে কথন শুভ, কখন অশুভ হয়। এ দ্বাদশ রাশিতে ফলিত জ্যোতিষের দ্বাদশ ভাব স্থিত, অর্থাৎ এ ১২ ঘরে জাতকের দেহ-মন, অর্থ, ভ্রাতা, ভগিনী, মাতা, বন্ধু, প্রতি নিরাক্কৃত হয়। জাতক যে মুহূর্তে জন্মগ্রঃঠণ করে, সে সময়ে যে রাশি পূর্বদিকে উদর হয়, তাহাকে লগ্প এবং যে রাশিতে চন্্র থাকে তাহাকে জাতকের রাশি বলে। ভাববিচার অতি ছুরহু ব্যাপার। ইহাতে নানাদিক দেখিতে হয়_- অসংখ্য অনুকূল ও প্রতিকূল অবস্থা পুঙ্থান্ুপুঙ্খরূপে বিশ্লেষণ করিয়া যাহা বিচারে নিরবশেষ থাকে, তাহা , নিরাকরণ করিতে হয়। গুরুশিক্ষা, বিস্তৃত ও গুীর ৩২ শাস্জ্ঞান ভৃয়োদর্শন ত চাই-_তাহার উপর বিচার শক্তির প্রার্ধা আবশ্ঠক। বিচার কার্ষ্যে পরীক্ষকের নিজ শক্তির যোগ্যতা বা প্রচুরতার ষ্ঈীভাব ( ম%1) ০ 0০:8009] ৭০1 0) ভ্রাস্তির প্রধান কারণ। তবে ভাববিচার সম্বন্ধে মোটামুটি এই সহজ এবং সংক্ষিপ্ত নিয়ম অবলম্বন করিলে যদিও সম্পূর্ণ তথা স্থিণীকুৃত না হয়, তবুও অনেকটা সতা জানা যাইতে পারে। সেই নিয়ম এই ১--ঘে ভাঁব “সৌমাস্বামী যুতেক্ষিত” সেই ভাবের পুষ্টি এবং তদ্বিপরীতে হানি । অর্গাৎ যে ভাব, তদাশ্রিত রাশির অধিপতিগ্রহ কিন্বা শুভগ্রহ কর্তৃক যুক্ত বা দুষ্ট হয়, তাহার ফল শুভ-_অন্যথা বা তদ্দি- পরীতে অশুভ। এখন উপরের কোঠ্ঠীবিচার করা যাক্‌। এই জাতক যখন জন্দবিয়াছিল, তখন পূর্বাকাশে মীনরাশি উদীয়মান; সুতরাং ইভাঁর লগ্ মীন। লগ্গে জাতকের আকৃতি, রূপ, স্বাস্থা, বল ও বংশ প্রভৃতি নিরাক্কৃত হয়। এই প্রবন্ধে পৃঙ্ঘান্থপুঙ্ঘরূপে কোঠীবিচার - হইতে পারে না এবং তাহাও 'মামাদের ইচ্ছা বা 1 উদ্দেশা নয়। তবে জাতকজীবনে যাহা উল্লেখযোগা তাহাই বলিব। এবং যে যে ভাব তাহাকে অপর সকল লোক হইতে বিশেষত্ব দিয়াছে তাহা দেখাইব। এক কথায় উদ্ধৃত কোঠী জাতক সম্বন্ধে কি বিশেষ ভাগা নির্দেশ করে, তাহা বাস্তবের সঙ্গে মিলাইয়া ফলিত জ্যোতিষ যে ঞববিষ্ভা__-উপন্যাস বা গালগল্প নহে, তাহা! বুঝাইব।: জাতকের লগ্র মীন, সর্বশ্রেষ্ঠ শুভগ্রহ বৃহম্পতির গৃহ | মীনরাশি স্বচ্ছবর্ণ। সুতরাং জাতকের বর্ণ গৌর । সেখানে আবার গ্রহদিগের মধ্যে যে ছুটি গ্রহ গৌরবর্ণ,চজ্জ এবং বৃহস্পতি, তাহাদের পূর্ণপ্রভাব লক্ষিত হয়। চক্র, মীনরাশিতেই অবস্থিত এবং ্নামীগ্রহ বৃহস্পতি লগ্কে পূর্ণৃষ্টি করিতেছে । তাহাতে বর্ণকে আরও উজ্জ্বল তুর করিয়াছে । রূপ এবং আরুতি কান্ত, মনোহর এবং শোভন। শ্বাস্থা এবং বলসম্বন্ধে এ কথাই খাটে। তিনি স্বস্থদেছ এবং বলশালী। তাহার বংশ সমাজের মানসী ও মর্মাবাণী [৮ম বর্ষ - ১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা শীষস্থানীয় এবং উজ্জ্বল আভিজাত্য-গৌরবে অলঙ্কৃত। নৈসর্মিকতেজে সর্বাপেক্ষা তেঞোময় গ্রহরাজ কুরধ্য, এবং সর্বাপেক্ষা শুভগ্রহ বৃহস্পতি, উভয়েই তুঙ্গী হইয়া জাতক্ককে অপরদিক হইতে, উচ্চবংশ-গৌরব এবং সন্থ স্থন্দর দেহ, উন্নত মানসিক বৃত্তিসকল দিয়াছে । লগ্ন সম্বন্ধে জাতকের এই বিশেষত্ব। ২য় স্থান বা ধনসম্বন্ধে জাতের এই অসামান্ত সৌভাগ্য দৃষ্ট হয় না। তবে জাতক ধনহীন নহে । তিনি ধনী । তুঙ্গগ্রহ রবি দ্বিতীয়স্থ বলিয়া তাহাকে ধন দিয়াছে, কিন্তু রবি শত্রু ভাবের অধিপতি বলিয়া মাঝে মাঝে ধনের হানি হইয়া থাকে । ধনভাবস্থ বুধ ও শুক্র ুইটি সৌমাগ্রভও তাভাকে ধন, দিয়াছে, শুক্রগ্রহ উত্তরাঁধি- কারীন্যত্রে । কিন্তু তাারা অন্তগত বলিয়া ধনের হানি করিয়াছে । পরস্ক ধনসম্বন্ধে জাতকের বিশেষত্ব এই যে, বুধ 9 শুক্র দ্বিত'্যস্থ থাকায় তীহার স্বীয় বিদ্ভাবলে ধন উপার্জন হইবে । ৩য় ব' ভ্রাত্স্থান অগ্তভগ্রহ মঙ্গলযৃক্ত এবং শনি কর্তৃক পূর্ণ বীক্ষিত; তজ্জন্য অনুজ না হইবার সম্ভাবনা, হইলেও ঠাভার মৃত্যু সম্তাবিত ; অন্ততঃ জাতকের অবাবহিত অগ্রজ এবং কনিষ্ঠের অমঙ্গল স্প্টতঃ স্থচিত। | ৪র্ঘ অর্থাৎ মাতৃস্থান কেতুযুক্ত। রাহু কর্তৃক প্ণদৃষ্ট । স্বামীগ্রহ বুধ অস্তগত এবং ষষ্ঠাধিপতি রবি এবং মরণাধিপতি শুক্রপৃক্ক সুতরাং জাতক অল্প বয়সেই মাতৃন্সেহ সৌভাগা হইতে বঞ্চিত। তাহার বন্ধুত্ব সৌভাগাও স্থায়ী নয়। একাধিক বন্ধুর সহিত মৃত্যুজনিত বিচ্ছেদ বা অগ্লীতি ঘটিতে পারে। ৫ম স্থানে বিদ্যাবুদ্ধির পরিচয় । “বুদ্ধি প্রবন্ধাত্বজ মন্- বিগ্বা”। মুনিখখষিগণ মানসপুন্র এবং গুরসজা * পুত্রের কল্পনা একই স্থানে করিয়াছেন এইভাবে জাতকের অগামান্ত, সৌভাগ্য । ৫মস্থান কর্কটরাশি, সৌমাগ্রহ চন্দের গৃহ এবং চন্দ্র কর্তৃক দৃষ্ট ও সর্বশ্রেষ্ঠ শুভগ্রহ বৃহস্পতিযুক্ত । সুতরাং ৫ম স্থান “সৌম্য শ্বামী যুতেক্ষিত” বলিয়া জাতকের বিস্তাবৃদ্ধি শ্রেষ্ঠ । তাহাতে ফাল্গুন, ১৩২২ ] ফলিত জ্যোতিষ ৩৩ কর্কটরাশি বৃহস্পতির তুঙ্গ ব! সর্বোচ্চস্ীন। সে কারণে তাহার বিদ্যাবুদ্ধি গরীয়সী। সেই বৃহস্পতি আবার লগ্লার্িপতি হইয়া পঞ্চমে অবস্থিত; ম্থতরাং আজন্ম বিগ্যান্রশীলনে ও জ্ঞানচচ্চায় রত এবং তাহাতে সসীম এবং অপামান্ত সৌভাগাশালী! এখন শুভ প্রভাবের শেষ ভয় নাই । পঞ্চমাধিপতি চন্দ লগ্রগত | “লগ টাদা বেদ বাখানে”, তাহাতে এস্বানে লগ্গ এবং পঞ্চম ভাবে বিনিময় । ইহা একটি অতান্ত ঢুল্লভ এব, অমৃততুলা যোগ । পঞ্চমভাবে এতগুলি শুভযোগ ভাঁজার, দশহাজার বা লক্ষেও ঘটে না। জাতকের বিগ্ঠাবৃদ্ধির পরিচয় এক্ষটি কথায় এবং কেবলমাত্র একটি- মাত। কথায় দেওয়ঃ যাইতে পারে; তাহা প্রতিভা অসাপারণ প্রতিভ! | এব” লগ্রস্ত চন্দ তাহাকে সন্দর এব" অননা সাধারণ কৰনাশক্তি দিয়াছে । ৭ম অর্থাৎ জায়াভাবে তাদৃক্‌ সৌভাগা দুষ্ট হয় না। জায়াভাব গ্রহশন্ঠ_স্ামীদুষ্টি বচ্জিতভ | এব" সৌম্য গ্রহ- দিগের মধো কেনলমান্র নুহস্পতি কন্ঠক পাদ দষ্ট। যেমন জায়াভাৰ জারাপিপতির দৃষ্টিরভিত - জায়াকারক এবং জায়াধিপতি এবং অধিকন্তু মঙ্গলের ক্ষেত্রে হারের অবস্থানভেড় জায়া-ভানি কচিত। এব, ক্রু মরণাধিপতি ভইয়া জায়াপতি বুধের সঠিত যক্তু। এই সকল "প্রবল কারণে জাতক দাম্পভান্ুখ বনুদিন ভোগ করিতে পারেন নাই । ৯ম বা ভাগাস্তান উৎকৃষ্ট । স্বামীগ্রভ মঙ্গল এবং সৌমাগ্রহ বৃতম্পতি কর্তৃক পূর্ণনৃষ্ট । স্ৃতরা" জাতক ভাগাবান। অধিকন্থ ভাগাস্তান সর্ধগ্রহ বীক্ষিত বলিয়। জাতকের ভাগোর পরম উতকর্ষলাধন করিয়াছে । ১ম, কর্ম এবং যশের স্থান । ইভার পরীক্ষা করি- য়াই এই কোঠীর সাধারণ বিচার শেষ করিব। ১ম স্থান বৃহস্পতির ক্ষেত্র ধন্থরাশি এবং যদিও উহ ্বামীগ্রহের দৃষ্টি বঞ্চিত__কিস্তু অপর সমস্ত গ্রহ কর্তৃক দৃষ্ট হইবার কারণ শুভ-ফল-সচক। পরন্ত ১*ম তবন- নাথ বৃহম্পতি তুঙ্গী এবং ত্রিকোণস্থিত বলিয়া জাতক একেত' তের শুক্লের9 দৃষ্টি রহিত। জায়াকারক গ্রা£, উভয়েই অস্তগত। প্রসিদ্ধ “ক্ষেএ্সিণভাসন”* যোগ প্রাপ্প হইয়াছে ভাহার ফলে জাতকের বিশ্ববিখাত কীত্তিলাভ করিবার কথা। তির দষ্টি নাই 'এবদ অথাতি তবে সেস্তানে রান অবস্থিত এব" বুশস্প বলিয়া! সময়ে-সময়ে জাতকের অপমশ ঘটে । 'এ্ট ১*ম স্থানে পিঠ-প্রক্কতি নিকূপিত হয়| জাত- [কর পিঠ পরম পাম্মিক উন্নত এব” সাধূ্চরিন | এব বেয়ে কারুণ মর্দো মাপা জাতকের ঘশের ভানি তয়, সেই সেহ কারণে ভাহার পিতার সময়ে সময়ে স্বাস্থা ভগ্ঘ হর এব” শারীরিক এব মানসিক কষ্ট ও পান। এখন উপরে দশিভ কোষ্ঠাবিচারে জাতকের যে জীবন স্টিরীরুত, চিত্রিত, হাহা বাস্তবের সঙ্গে মিলে কি নাঃ আমি বলি অভাশ্চসা পে মিলে এব ফলিত জ্যোতি আমার বিশ্বাস-স্তাপন করিবার নানা প্রমাণের মধো ই কো্গী তাভাদের অন্থতম | এক্সণে পাঠকের স্বভাবতই কৌতুহল হইতেছে যে, ই কোটা কমিত পুর কে? কে সেই সৌমামূর্তি, সন্দর, উচ্চব্শজাত, অভিজাতা-গৌরবে অলঙ্কত, শ্মোর নায় উচ্জল প্রতিভার কিরীট মণ্ডিত, বরেণ্য পিতার পুল এব বিশ্ববিকত বান্তি ?_তিনি রবীন্দু- নাথ ঠাকর। হর পিত়দন্ত অন্তপম গন্দর নামের পুর্ব রাজদন্ধ গোরবের কুংসিত উপসগ-অভ্াচার "81 1)০০০,” বসাইতে লেখনী সরে না। পরিশেষে ঘথন বাক্তি বাক্ত ভইল, তখন পাঠক সহজেই কোষ্টীলিখিত নিদ্বেশসকল জাতকের জীবনের সঙ্গে মিলাইয়া দেখিতে পারেন । ঠিনি যে উজ্জল গৌরবর্ণ, সুন্দর প্ররুষ, উচ্চবংশ- সম্ভৃত, আভিজাতা গৌরবে সমনিত, সমাজমানা, ধর্মানিষ্ঠ "পিতার পুল, ক্টাহার যে অসাধারণ প্রতিভা এবং বিশ্ব- বাপী মশ 9 গৌরব, ইনা সকলেই জানেন এবং সে- সকল কোঠীনিদ্দিষ্ট মারা এবং পরিমাণ হইতে তিলমাত্র কম নহে । অর্থ সম্বন্ধে ইহা সকলে অবগত আছেন যে, তিনি স্বীয় বিগ্ভাবলে অর্থ উপার্জন করিয়াছেন, ও ৩৪ মানসী ও মর্ম্মবাণী [ ৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা করিতেছেন । কিন্ধ এ কথা সকলে নাও জানিতে পারেন যে, সময়ে সময়ে তাহার অর্থনাশ ভইয়াছে । ঠাভার অন নৈশবেই মার।গিয়া্ছে এব? ফাভাব আসবাব- ভিত অগ্রজেল শারীরিক 'এবং মানসিক নিরাময় নঙে | তিনি বলিককাঁলেউ মাতি- ভারা হইয়াছেন | 'এবং তাভার বন্ধুদের মাপা একাধিক পর- লোকগত ভইয়াছন এবং 'এক1- ধিকের সহিত গীতির অসদ্ভাব হইবার কণ।। অসমায়ে তাহার ভ্ত্রীবিয়োগ ঘটিয়াছে। অনেক সময়ে তাহার পিত বিংশধূপে পীড়িত হঈয়াছিলেন, 'এদন কি স্তারী রোগে ক পাইরািলন । তাহা ভীবনে কি কি শুভাশ্তভ কখন, কোন্‌ সময়ে ঘটিয়াছিল, তাহা দশা, গোচর, বর্ষপ্রবেশ ইভ্াদি বিচারে নির্দেশ করা যাইতে পারে। তাহার জন্য স্ক্ম গণনা ও বিচার আবশাক এবং ভাহা পববর আবুঞ্ত রণীন্দ্রনাথ ঠাকুর সময় সাপেক্ষ । পাঠকদিগের কৌতুহল হইলে হাহা পাঠকগণ বিচার করিবেন, ফলিত জ্যোতিঘকে হাসয়া প্রবন্ধান্তরে লিপিবদ্ধ করা মাইবে। কিন্তু উপরে কোটার উড়াইয়া দেওয়া কতদূর সঙ্গত। যে সাধারণফল্গ লাখত হইল, তাহা হইতে নিরপেক্গ জ্রীপ্রিয়নাথ সেন । ফাল্গন, ১৩২২] মুর্শিদাবাদের কয়েকটি স্মাতিচিন্ন ৩৫ মুশিদাবাদের করেকটা স্মৃতিচিহ্ন ধক্জাবসানে সুবিস্তীর্ণ হামকুণ্ডের বিপুল ভক্মান্ত রালে আহু'তর বিরাট অনুষ্ঠান যেমন আপনাকে স্তাচ্ছনন করিয়া রাখে. সেইরূপ্‌ মুসলমান-রাজধানী দিল্লী আগ্রার স্ববিপুল বৈভবসমৃহ নিশ্মম কালের প্রভাবে স্মৃতিমাত্রা- বশেষ হইলে ও 'এখনও যাহা অবশি্ আছে, তাভা হাতে তাহাদের প্রাচীন সমৃদ্ধির বিষয় বিলক্ষণ মবগত হওয়া যায়- এখনও য সকল স্মৃতিচিষ্ত আছে, তাভা মোগল-গে।রবের মুশদকুলি খার বড় সাধের, বড় সোহাগের মুশিদাবাদের কয়েকটা স্বৃতিচিঙ্তের খিবরণ লিপিবদ্ধ করিব । কবি সতাই বলিয়াছেন “দির্লী মুশিদাবাদ হইবে এখন, মুলমান-গে!রবের সমাধি-ভবন ৮ দিল্লী ও আগ্রার বাহা অবশিষ্ট আছে, তাহা তাহাকে বিশাল সামাজোর রাজধানী বলিয়া এথন 2 ও. তত্কালীন ভাঙ্গর ৪ 57 প্রত পারচারক। এখনও শাচজহানের মনয়ধন্ষন _আগ্রার তাজমহল জগতে অভ্ুলশীয়। দিল্লী ও াগ্রা এখন ৪ যে সকল স্মুতিচি্জ বক্ষে পারণ করনা আছে, ত।তা তাহাদের পুর্ব গরমার ভত্সস্তপ। ভারতবাসা আত প্রাচান জাত। প্রানের স্মৃতি বক্ষে ধারণ কপি _প্রাটানের প্রত অক্কএম চাল:ত ভারতবাসী জাুন। ভলবাসা দেখাইয়? পাণ্চ'তা-জগত ভাল বাসার এ প191ন প্রী ঠ অবসগতার লক্ষণ বপরা থাুকন) কি আমরা জান, এ গ্রীতি অসাড় প্রাণে আশার অরণাঃলাক দেখাইয়া দেয় - এষ প্রান প্রীত কষ্টবা,ক সঙ্জাগ কারয়। রাখে খুঝাহর? দেয়, জগতের অ'নতা দ্রবাসস্থারের মনো এমন কিছু স্থায়ী জিনিম দিয়া যাইবে, যাতা দে বিশবত্রদ্ধাও্ড স্তষ্তিত ইইবে। এই প্রাটান. গ্রাতি হেত আজ আমরা বাঙ্গালার শেষ মোগল-রাজধানী * । ,০না খায় ও কিগ্ক অঙগাণশ শতান্দার বঙ্গ, বিভার ও ড.ডধ)র শেখ মুসলমান রাজধংনী মুশপাবাদের পল আর বলা চলে না। বে মুশিদাবাদ প্রসঙ্গে একপিন বল্য়াছিলেন_- এ কথা ক্লাহভ 21170610৮91 8101510111954 লি দন 00150 191) বঙ্গের সবাদারখণের পুরাতন সিংহাসন ৩৬ মানসী ও মর্ন্মবাণী [ ৮ম ব্ষ--১ম খণ্ড--১ম সংখ্য 1০৪৯ 00১0 0101) ৪৪ 00010 ০£150070) আস 0018 পু) 178৮07001 015001080 00106 00156০07০01 91109167000 077 01019 281001170105 1810৮ 0158039100৭] 10110121519 0শ710172 79০ 3০১910)410011016010 পাতন৮৮7 10775170115 ঢল 1) 006 16 016৮” মোতিঝল-লঙ ঞ্লাইবের দেওয়ানখান]। _ আলিবদ্দী থার সমাধি_। এই মুর্শিদাবাদেই আবার বাঙ্গালার মুসলমান রাজত্বের অবসান এবং এই মুর্শিদাবাদেই ব্রিটাশ রাজত্বের তাহার আর সে শ্রীসম্পদ নাই-_সেই মুখিদাবাদের গৌরবচিহ্ন প্রায় সমস্তই অন্তহিত হইয়াছে_-আছে কেবল. ছুএকটা সমাধি-মন্দির। শ্মশান মুধিদাবাদ এখন তাহাই বক্ষে ধারণ করিয়া আপনার অতীত-গৌরবের পরিচয় প্রতিষ্টা হয়। প্রদান করিতেছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর বাঙ্গালার সমস্ত খোসবাগ আলিবদ্পী খা এই খোসবাগের নিম্মাণকল্পে বন্ অর্থ ব্যয় করেন। প্রথমেই তাহার জননী এই স্থানে সমাহিতা হ'ন। এই সমাধি-ভবনে বাঙ্গালার প্রজাপ্রিয়, আদর্শ নবাব আলিবদ্দী থা ও তাহার দৌহিত্র সিরাজু- দ্দোলা চিরশান্তিতে শয়ান আছেন। আলিবদর্ণর পদতলে তাহার" মহিষী সমাহিতা,--এবং ইহার সন্নিকটেই সিরাজের পদতলে তাহার প্রিয়তম৷ মভ্ষী _ম্থখছুঃখের সহচরী-__লুৎফুনিসা চিরনিদ্রিতা। সিরাজের সমাধি বোধ হয় অল্পদিন পরেই মৃত্তিকার খোসবাগ। সহিত মিশিয়া যাইবে ইহার উপরে কোন রাজনীতিক ব্যাপারের সহিত মুর্শিদাবাদের সম্বন্ধ ঘনিষ্ট প্রস্তরথণ্ড নাই; কেবল বিলাতী মাটী দ্বারা উহা ভাবে বিজড়িত ; এই জন্তই কথিত হইয়া থাকে-_ আবৃত। জন, ১৩২২ ] খাব 1781 ন ণখ।খ। সিরাজের মৃত্যুর পর লুংফুন্নিসা ঢাঁকায় নির্ববাদিতা হ'ন। পরে ইংরেজদের যন্তরচেষ্টায় খুশিদাবাদে আনীত হইয়া খোসবাগে আলিবদ্দী ও স্বামীর সমাধির তন্বাব- ধানে নিযুক্তা হ'ন। মন্থরগতি কলনাদিনী ভাগীরঘীর পশ্চিম তীরবর্তী কুস্থুমিত-তরুলভা-সমাকীর্ণ ছায়ান্ষিঞ্ধ শোকমৌন এই খোসবাগে লুষ্ঠিত হইয়া স্বামীর সমাধিবক্ষে লুৎকুন্নিসা৷ অশ্ব বিসর্জন করিতেন। প্রতিদিবস প্রভাতে স্বহস্তে পতির মুর্শিদাবাদের কয়েকটা স্মৃতিচিচ্ন ৩৭ বিপর্য্যয় ঘটিত--সেই সিরাজের সমাধিগৃহে দীপ জালি- বার জন্ত এক্ষণে মাসিক চারি আনা মাত্র তৈলের বাবস্থা হইয়াছে ! চকু মসজিদ ইহা অগ্ভাপি মুশিদাবাদ সহরে বিগ্ভমান থাকিয়া মীক্জাফরের প্রিয্নতমা মহিষী মণিবেগমের কীর্তি ঘোষণা করিতেছে । ১৭৬৭ খুষ্টাঝে মণিবেগমের অর্থ সাহাযো ইহা নির্মিত হইয়াছিল। দানশীলতার জন্ত লোকে মণিবেগমকে কোম্পানীর মাতা বা '4,0)6: 0" ০০য- 1:৯7) বলিয়া অভিহিত করিত । ইমামবার। বর্তমান ইমাম্বারা সিরাজ-কর্তৃক নির্মিত পুরাতন ইনাম্বারার সন্গিকটেই অবাস্থিত। ১৮৪৭ খুষ্টান্দে নবাবনা্জিম ফেরাঁছুন জা ছয় লক্ষ টাকা বায়ে ইহা নিন্মাণ করান। মুসলমানগণের পবিত্র তীর্থ মক্কা হইতে মৃত্তিকা আনিয়া এই স্ুুবুহৎ অট্রালিকার মধ্যস্থলে প্রোথিত করা হয়। শুনা যায়, কেবল মুসলমানদিগের দ্বারাই ইহার নিন্মীণকাধ্য সম্পন্ন হইয়াছিল। এই সৌধের একস্থলে পারস্ততাষায় যাহা! খোদিত আছে, তাহার নর্থ এই--ভারতে অপর একটী কারবালা! স্থাপিত হইল ।, সমাধিভবন সম প্রস্ফুটিত কমদামে সুসজ্জিত 72222 23 প্রতি সন্ধ্যায় গুরভি দীপমালায় বিভূষিত করিতেন__ ইহাই তাহার নিত্যকাধ্য ছিল। লুৎফুক্নিপার জীবদ্দশাতেই তাহার কন্তা উন্মৎ জহুরার মৃত্যু হয়। সেইজন্য লুংফুল্লিসার মৃত্তার পর উন্মংজহুরার চারি কন্তাই খোঁসবাগের তন্বা- বধানের জন্ত ওয়ারেঞ্ হেষ্টিংসের নিকট আবেদন করিয়াছিলেন। লর্ড কর্ণওয়ালিশ তীহাদের প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। ৰা গভীর পরিতাপের বিষয়, যিনন এ সময়ে বঙ্গ, বিহার, উড়্িষ্ঞার দওমুণ্ডের কর্তা ছিলেন-_ধাহার সামান্ত তর্জনী হেলনে কত বড় বড় লোকের ভাগা-* চক মসজিদ । ৩৮ মানসী ও মন্থাবাণী ঢাক। কামান কাটরার এক মাইল দক্ষিণ পুব্ এই কামানটা কাষ্টথণ্ডের উপর স্থাপিত রতিয়াছে। বহুদিন হইতৈই এই কামানটা জমিতে পড়িয়া ছিল। আশ্চর্যের বিষয়, এই কামানের নিয়স্থ জমি হইতে উখ্িত একটা পিপুল বৃক্ষের শিকড় সাহাযো কামানটা পাচ ফুট উচ্চে স্থাপিত ভয়। [৮ম বর্ষ_-১ম খণ্ড--১ম্‌ সংখা. রি ্ কি বিজা জরা উদ্ীলর শাক কাশাশ। পা সাভেব 'জাহান-কোষা+ তোপকে টাকা কামান জমে পতিত ভভয়াছেন । জাফরা গঞ্ভ এইখানেই পিপাজ্জের হতাকাগ্ু সাধিত হয়। একজন বতিচাদিক বলিয়াছেন,--ইহা বঙ্গ বিহার উড়িষার মোগল স্বাধীনতার সমাধি । যে গুহে নিম্মম নিষ্টর মভল্মদী বেগ অস্াধাতে সিরাজকে হতা। করে, মুশিদাবাদবাসিগণ অগ্ঠাপি তাহাকে পনেমকভারামী দেঁউরী” বলিয়া থাকে । ালিবদ্দীব প্রির দৌহিত্র বাঙ্গালার শেষ হতভাগ্য নরাবের শোচনীয় পরিণাম অবলোকন করিয়া, ধনজন- দৌবন-গর্স-গব্বিত সিরাজের দোষের তুলনায় শান্তির নিষ্টরতা ও কঠোরতা দর্শনে স্তম্তিত ও বিস্মিত হয় নাহ কে? ফাল্গুন, ১৩২২] মুর্শিদাবাদের কয়েকটা স্মৃতিচিহ্ন ৩৯ প্রভৃতি অনুমান করেন ষে, পুর্বে ইহা ভাগীরঘীর গর ছিল। উভয় পার্খের প্রবাহ রুদ্ধ হইয়া এই- রূপ ঝিলে পরিণত হইয়াছে | ইহার গঞ্ডে বন্ধ শুক্তি পাওয়া যাইত বিয়া ইঙার নামকরণ মোতিঝিল ভইয়াছে। নগওয়াজিস মহগ্সপের সহিত তাহার ভ্রাতস্পুতর সিবাজের সদভাব ছিল না। আলিবদ্দী দিরাজকে ৮ এাকাগহাবে উত্তরাধিকারী বলিয়া ঘোষণা করিলে, রী নওয়াছিস্‌ মতণ্মদ রাজধানী ভইতে দরে একটা 8 স্বরক্ষিত স্থানে বাস করিতে সঙ্কল্প করেন এবং খোতিঝিলে থপিটা বেগবের প্রাসাদের প্রবেশছার | যোতিঝিলের অবস্থান কাভার ইচ্ছান্ুরূপ হওয়ায়, এই জাফবরাগর্ধ আবার, বঙের শেম নবাব-নাদ্রিম ইভারই তীরে প্রাসাদ নিক্মাণ করেন। গণের সমাধিভবন । এই স্থানে নবাব মীরজাফর হইচ5 মোতিঝিলের স্ুরম্য প্রাসাদের সন্নিকটেই একটা তদৎশায় নবাব-নাজিমগণ সমাহিত আছেন । মীক্া কর-বশিতা মণিধেগম ও বন্দবেগণও এই সমাপি- ভবনে চিরনিপ্রিত1। সিরাজের বদাভুখি € নণাব নাজমগণের সমাপি- হল বণিা জাকপ্রাগঞ্জ ইতিভাদিকের নিকট বড় মাদরের সামী । মোতিঝিল ইভা বর্তমান দুর্শিদাবাদের দক্ষিণ-পুর্বাৎশে টি সিন অন্ধীক্রোশ দূরে অবস্থিত। রেনেল, হামিলটন খেো]তাঝলের নিকট পুরাতন নস্জিদ। মন্জিদ ও অতিথিশালা আছে। ১১৬৩ হিজিরা ১৭৫০1৫১ খুঃ) ইভা নিশ্মিত হয়। মস্জিদটা অগ্তাপি বিগ্ণমান রহিয়াছে । নওয়াজিম এই মস্জিদ ও অতিথিশালার জন্ত বহু অর্থ বায় করিতেন। মুশিদকূলি খাঁর সমাধি মুশিদাবাদের অনতিদূরে যে বিরাট ভগ্রপ্রায় মসজিদ আজিও সগৌরবে মস্তকোত্তলন করিস রহিয়াছে -তাহাই মুশিদাবাদের প্রতিষ্ঠাতা মুগ্রিদ- চক্‌ মসজিদ । কুলির সমাধি। কাটরা নামক স্থানে এই মর্সাজিদ ৪০ ও মানসী ও মন্মবাণী নির্মিত ইয় বলিয়া লোকে ইহাকে কারার মসজিদ'ও বলিয়া থাকে । পা মুশিদকুলি, নিজের স্বাস্থ্যের অবস্থা সুবিধাজনক নয় বুঝিয়া জীবদ্দশাতেই মন্দির নিন্মাণের আদেশ দেন। ১১৩৭ হিজিরায় মক্কার প্রসিদ্ধ মন্দিরের অন্থুকল্পে এই মসজিদ নিন্মিতি হয়। নিশ্মীণ-কার্যা শেষ হইবার অল্পদিন পরেই ১১৩৯ হিজিরায় মুশিদ- কুলির মৃত্যু হয়। মৃত্তার পর তিনি এই মসজিদে সমাহিত হন। কিন্ত হায়! কাটরা মসজিদের বর্তমান ভগ্মাবস্তা দেখিয়া মনে হয়, বুঝি বা নিম্মন কাল মল্পদিন পরেই [ ৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড-_১ম সংখ্যা! মুশিদকলিখার সযাধি। মুশিদাবাদ হইতে মুশিদকলির সম্বন্ধ লোপ করিয়া দিবে! * শ্ীবজেন্দ্নাথ বন্দ্যোপাধ্যায় । বারাঙ্গনা । কালামুখী হতভাগি ! “মুগ শিকারের” লাগি এ মহ ছলনা-- করি নিত্য নান! ছণদ পাতিয়া রূপের ফাঁদ পুলকে মগনা ! কে অবোধ ভাগাহীন পড়ি যাবে জালে, সকলি বিকায়ে পদে মরিবে অকালে! হু, পাঁষাণী রাক্ষসী সমা, হাসিমর্জে মনে, রক্ত মাংস শুধি নিয়ে, রে দিলি অভাজনে ! . “বিজয় নিশান” সেই পরশে অন্থর-_ * নারী আর রাক্ষসীতে এতই অন্তর ! ওরে নারি নিরমমা, দীন হীন সাজাইয়ে ভাবে নাকি “তারপর ?” বুঝিয়া বোঝেনা দীপ্ধু কালানলে ধায়, ফিরিতে পারে না ?-_ “অনৃষ্ট” কাহারে বল এ যে কর্ম্ম ফল, বিধি তো সংযম দেছে চিত্তে দেছে বল? এত ত্রান্ত চিত্ত নর উন্মত্ত পতঙ্গ প্রায়, ৪ মাতৃ চক্ষে অশ্রুধারা, পতিপ্রাণা পতিহারা, পুত্র কন্তা কাদে, তবু এ মোহের ঘোর, ভাঙেনা নির্বোধ তোর, পড়ে আছ: ফাঁদে 1 শিহরিয়। উঠে দেহ--এত ভুল মনে, স্থধা ভাবি কালকুটে মজিলি কেমনে ? ফান্ধন, ১৩২২] ৪১ হায় অন্ধ | দেখ. চেয়ে, যার গা*র গন্ধ পেয়ে, ক্কমি কীট ছুটে, যাহার বাতাস পাঁপ, মুর্তিমতী অভিষ্পপ, চতুর্ধর্গ লুটে! তুই তার ক্রোতদাস, খেলিৰার তুটি, জীবন মরণ-_ছি ছি, তারি পায়ে লুট! ঙ ওর ও চাহনি হাসি, নির্দয় নিরশম, £লালসা লোলুপ চক্ষে, কাঁল তুজঙগম ! ও যে মরণের ফাসি, অভাগা ! লইছ বক্ষে ফুলের পূজার ছুটি উপলক্ষে কোর্ট বন্ধ হইল। চোগ! চাপকাঁন ফেলিয়া বাঁচিলাম। এইবার একবার ম্যালে- রিয়া-জীর্ণ শরীরটাকে মেরামত করিয়া লইতে হইবে । অনেক পরামর্শের পর স্থির হুইল বীকীপুরে চিঠি লিখিয়া জানিতে হুইবে সেখানে যাওয়া চলিবে কি না। প্লেগের জন্তই কাকা মহাশয়ের ভয়। যামিনী আমার বন্ধু, মে এখন বাঁকীপুরে ডেপুটা। প্রায় আট বৎসর সে এখানেই অচল হইয়া বসিয়া আছে। তাহাকেই চিঠ লিখিলাম-_জল বামুর কথাও জিজ্ঞাস! করিলাম--সেটা যদি নিরাঁপদ হয়, তবে আমার জন্ত সুবিধামত একটি বাঁসা সে খু'জিয়া দিতে পাঁরে কি না তাহাও জানাইতে কহিলাম পত্রের উত্তর আসিল। যামিনী আমার বাস! খু'জিয়া দিবার অনুরোধে অতি- মান করিয়াছে। লিখিকাছে, শীতের আরস্তে প্লেগের প্রকোপ সেখানে কমই থাফে, এখন শরীর স্লারিবার পক্ষে উৎকৃষ্ট সমর । তাহার বাটাতে যতদিন ইচ্ছা আতিথা। ছি ছি ছি পুরুষ তুমি, পশু বৃত্ত অত, মরিবে ?-মরিয়া যাও মানুষের মত। ৭ আর তো সহেনা দুঃখ, ফিরে যা-_ঘরে যা! মূর্খ, সে যে স্বর্গধাম, মা'র আখিজল মুছি, ' লরভিবি আরাম ; পণ্ড় গে সতীর পায়, তারি পুথ্য-শু্রতায়, মুছি যাবে ঘুচি যাবে কলঙ্কের কালি, সম্তানের চাদ মুখ, ভরিবে আনন্দ, ন্ুখ, দেবতা দিবেন শিরে ন্নেহাশীষ ঢালি। শ্রীবীরকুমার বধ-রচয়িত্রী । আবার হইবি শুচি, তোড়া হয়না। টিকিটের কন্সেদ্নও আরম্ভ হুইয়াছিল। জিনিষপত্র গুছাইয়! লইয়! দুইদিন পরেই যাত্রা করি- লাম। রি বাকীপুর ষ্টেশনে যামিনীর পুক্রত্বয় শ্রীমান মৌলিভৃষণ ও মমুখভৃষণ আমায় অভ্যর্থনা করিক্ণ লইবার জন্ু পিতার আর্দীলীর সহিত প্লাটফরমে াড়াইরা ছিল। ডেপুটা যামিনী বাবুর বাড়ী আমি যাইব শুনিয়া ছেলে ছুটি আমায় প্রণাম করিয়া “কাকা বাবু” বলিয়া ছুইদ্িক হইতে. ছইথান! হাত দখল করিয়া ফেলিল। আর্দালী, কুলী ডাকাইয়া জিনিষ পত্র নামাইয়া লইল । প্রণাম ও সম্বোধন সন্বন্ধে বোধকরি পুর্বান্নেই ছেলেদের শিক্ষা দেওয়া ছিল, কারণ তাহার! আমায় আর কখনও দেখে নাই। প্রায় ছয় বৎসর পুর্কে আমি আর একবার এখানে যামিনীর বাসায় আসিয়াছিলাম, তখন ময়খ ওয়ফে মপ্ট, জন্মগ্রহণ করে নাই) সুলী তখন মাস কতকের : শিশু! গ্রহণের জন্ত সাদর নিমন্ত্রণে পত্রের উপসংহার করিয়াছে। | ছেলেছটিকে আদর করিয়া চুষ্ন করিলাম__যেন' দেবীপক্ষে বাতার দিনক্ষণ দেখিবার প্রয়োজন | ছডি ননীর, পুতুল! যামিনীর অস্তান-ভাগ্য ভাল। ৪২ একটা! উচ্ছ(সিত বেদনার নিঃ্বান রোধ করিতে, পারিলাম না। সেইটি-_যামিনীর সেই প্রথমকারটি__ সে আন্ধ কোথায়? সে আমায় ভাল কঙ্গিগগীই চিনিত; যদি বাচিয়া থাকিত, সেও কি ষ্টেশনে আসিত না? তেমন রং, তেমন গঠন হাজারে একটা চোখে পড়ে না। মুখখানিও ছিল নিখু'ত সুন্দর! কি মিষ্টই ছিল তার হাসিটুকু আর কথাগুলি! মনে হয় যেন সেদিনের কথা-কিন্ত তাহা পীচ বৎসর হইয়া গিয়াছে । গাড়ী ষ্টেশনের পথ ছাড়াইয়া বাড়ী পৌছিবার পূর্বেই গ্রীমান্‌ মুলী ও ঘণ্টংর সহিত আমার সখ্য গা হইয়া উঠিল। তাহাদের কয়টি পায়রা, কতগুলি বিড়াল ছানা, খাচাঁয় বদ্ধ মন্ুুয়। নীলকঞ পাখীর অদ্ভুত ইতিহাস--কিছুই আর আমার অগ্তাত রহিল না। মণ্ট, যখন আধ-আধ বাধ-বাঁধ ভাষায় তাহার নাম বলিল--অপ্রতিভের হাসি হাসিয়া মুলী তাহার ভ্রম সংশোধন করিয়া বলিল, “ভাইটি ছেলেমান্ুছ কি না তাই মুখ বল্তে পারে না মযছ বলে!” মৌলির বয়স" এখন ছয়, গুতরাং তাহার নাম বলিতে বাধিল না-_ছিধুক্ত বাবু মৌলিভূষণ । আমি যখন বাড়ী আসিয়া ্রা্ট খুলিয়া তাহাদের জন্ত আনীত টিনের মোটর- কার, রবারের বল, কাঠের ঘোড়া বাষ্টির করিয়! দিলাম, তখন কাঁকাবাবুর প্রতি তাহাদের শ্রদ্ধার আর অন্ত রহিল না। 50২) যামিনীর বাসাটি হাল ফ্যাসানের বাংল! । দেয়াল- গুলি পাকা ইটের গাঁথনি, সাদা চুণকাষ করা, ছাদ রাঙ্গাটালীর ছাওয়া। বাড়ীর চারিধারে বাগান, মাঝে মাঝে চলন পথ, কোথাও চাকরদের ঘর । পশ্চাঙ্দেশে, আস্তাবল। বাগানের ' বাঁছিরৈ সরকারী রাস্তা । রাস্তার অপর পারে ছইচারিখানা খোলার ঘর। তাহার পশ্চাতে প্রকাণ্ড: আম-বাগীস। গ্রীন্সকালে বানর তাড়াইয়া ফল রক্ষা করিবার জপ্ত ঝুঁপড়ি বাধিয়৷ মালী বাগানে আফিয়া বান করে, এখন মাটীর দেওয়াল ফুসের মানসী ও মর্ম্াধানী [৮ম বর্ধ--১ম খণ্ড--১ন সংখ্যা চাউনি ছোট ছোট ঝুপড়িগুলা খালি পড়ি! আছে। 'খোলার ঘর করথানার মধো একখান! মুদ্বীক দোকান, একখান! পাণওয়ালার দোকান, বাকী ছুইখানা লইয়া যামিদীর বাগানের মালীর বাড়ী। মালী বুড়া মানুষ, তাহার উপর বাতে গঞ্গু--কাজ কর্ণ কিছুই করিতে পারে না। বাগানে “ঘাস গজাইয়া জঙ্গল হইয়া উঠিলে একবার নগদ্রা মজুর লাগাইয়া বাগান সাফ করাইয়া! লওয়া হয়। ফুলগাছগুলা! জলাভাবে অনেক সময় শুকাইয়া যায়_ধরিত্রীর স্নেহে তাহারা যতটুকু জীবন- রস সঞ্চয় করিতে পারে, সেইটুকুই মাত্র তাহাদের খোরাক। সেবার যখন আসিয়াছিলাঁম, যামিনীর তখন বাগানের ভারি সথ ছিল। তেমন গোলাপ আর কাহারও বাগানে ফুটিত না, ততবড় মল্লিকা বেহারে আর কোথাও ছিল না।-_-এখন তাল পুকুরের নামের মত প্ডেব্‌টি সাহেবের” বাগানের নামই আছে--সে সব অতীতের চিহ্ন আর কিছুই নাই। এবার আসিয়া অবধি যামিনীর একটু পরিবর্তন আমি লক্ষা করিতেছিলাঁম। পূর্বের সে হাসিখুসী তাহার আর নাই--যেন কিছু গম্ভীর হইয়া পড়িয়াছে। আমি মখন মুলী মণ্টর সঠিত সমবয়সী সাজিয়া পুরা উৎসাহে খেলায় যোগ দিতাম--যাঁমিনী গম্ভীরমূখে উদ্দাসীনের মত বসিয়া দেখিত, উৎসাহ দেখাইত না যোগও দিত না । মণ্ট, আধ আধ স্বরে-_প্লাম লহিম না জুদা কলো দিল্‌্কো সাচ্চা লাখো জী--দেছেল কথা ভাব ভাইলে দেছ আমাদেল মাতা জী গাহিয়া গুনাইত. মুলী তাহার উচ্চারণ ভ্রম সংশোগন চেষ্টায় বিপন্ন হইয়া পড়িত। আমি হাঁসি খেলার যোগ দিয়া আত্মবিস্বত, হইয়া যাইতাম। শেষে চাহিয়া দেখিতাম যামিনী তাহার ছুই উদ্াসনেত্র রাস্তার ধারের তেতুল গাছটার উপর স্থাপিত করিয়া চাহিয়া আছে এসব “আনদ্দের কল্লোল কোলাহল তাহার অন্তরে কোন উচ্ছাস জাগাইতে পাঁয়েমাই। হয়ত: তখন . আর একখানি মধুর মুখের করণস্থৃতি তাহার মনের “মাঝে কুটির থাকিত। চারুর কথা লে একদিনও ফান্তন্) ৮০২২]: তুলে নাই, ভাহার লন্ধে কোন 'আলোচনাই নে , করিত না! দে বখন ছুপুর বেলা কাছারীতে আবদ্ধ থাকিত, তখন কোন কোন দিন অস্তঃপুর হুইতে চারুর মার করুণ ক্রদদনের মৃদুধ্বনি আসিয়া আমার বুকেও একটা অস্ফুট ব্যথা জাগাইয়া তুলিত। কিন্ত যামিনীর বাক্যালাপে তাহার এতটুকুও আভাস কোন দিন শুনিলাম না। তাহার হৃদয়ের ক্ষত যে কত- খানি গভীর-_তাহার অন্তরলীন উচ্ছাসহীন শোকই তাহার পরিচায়ক । কিছুদিন হইতে আর একটা বিষয় লক্ষ্য করিয়! আসিতেছিলাম। প্রতি সন্ধ্যায় যখন দিকচক্রবালে সু্ধ্যের শেষ রশ্সিরেখাটুকুও মিলাইয়া গিয়া, ধরণীর বক্ষে ছায়! ফেলিয়া অন্ধকার নামিয়া আসিত, “ভীখণ-. দাসের” ঠাকুরবাড়ীতে সন্ধ্যারতির কাসর ঘণ্ট। বাজিয়া উঠিত, ঘরে ঘরে দীপ জবালিয়া দিত, তখন সহত্র কার্যা ফেলিয়া ও, যামিনী তাহার রাস্তার ধারের বারান্দাটিতে আসিয়া দীড়াইয়া থাকিত। তাহার দৃষ্টির অনুসরণে আমিও কত দিন সেই দিকে চাহিয়! দেখিয়াছি । মালীর ঘরের ঠিক সম্মুখে রেলিংঘেরা একটুখানি জমির ভিতর গীগগাফুলের কেয়ারি করা গাছের মধ্যে ছোট একটি পাথরের চিবি। কতদিন সেটির দিকে চাহিয়া দেখিক্জাছি, হিন্দিতে কোন মৃতের নামও সে ম্মারক- স্তপ্তে লেখা আছে। গাঁদাফুলের প্রাচ্্য বশতঃ সহজেই সেছিকে লোকের চক্ষু আকৃষ্ট হয়। প্রতি সন্ধ্যায় হলুদ রঙের কাপড় পরা, ফাদি নথ নাকে একটি ছোট মেয়ে তার ভূষণবিহীন হাতখানিতে একটি মৃ্-প্র্দীপ জআালিয়া টিবির উপর আলো রাখিয়া প্রপাম করিয়া চল্জিয়া যাইত। কোথায় যাইত তাহাও দেখিতে পাইতাম । দৃশ্যাট করুণ। হয়ত স্ততস্তটি উহারই কোন প্রিয়জনের পুণাস্থতির তীর্থতূমি। কিন্ যামিনী ইহাতে এমন কি রস পার বুঝিতে পারিতাম . দা প্রতিদিন, নদ তাহার আশা মেটে পু মা! রর শ্রকদিন: ঘামিনীকে ধরি বনিলাম, প্্যাপার কি ৪৩ বন্ধ দেখি? মেয়েটি রোজ ওখানে আলো দেয় কেন? ও মালীর নাতী না ?” ষামিনী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া কহিল, ?ওর বাপের স্ততি ওরই ভিতর ঘুমিয়ে আছে, হমুনা তাই রোজ আলো দিয়ে যায়।” ”. আমি কহিলাম, “আহা । বড় ছুঃখের বিষয় ত! যমুনা বললে বুঝি মেয়েটির নাম? তা যমুনা ছাড়া বুড়োর আর কেউ নেই ?” ঘটির গলায় দড়ি বীধিয়া ত্র ছোট মেম্নেটিকেই কুপ হইতে জল তুলিতে দেখি, পথের ধারে পোড়া বগনো৷ লইয়া মাজিতে দেখি, আর কাহাকেও কখনও দেখি নাই--তাই একটুখানি বিশ্ময় বোধও করিয়াছিলাম। যামিনী মুখ ফিরাইয়া কহিল, “না ওদের আনু কেউ নেই। ওরাই দুজনে পরম্পরের অবলম্বন” মনে হইল আমার প্রশ্নে বামিনী যেন বাথা পাইয়াছে, কিছ্বু কারণ বুঝিলাম না। জিজ্ঞাসা করিলাম, “ওদের কি হয়েছিল ?” যামিনী বলিল “সে শুনে কি কর্বে? সে বড় ছুঃখের কাহিনী ।” মনের কৌতুহল আমি দমন করিতে পারিলাম না। সে কাহিনী গুনিবার জন্ত আগ্রহ জানাইলাম। যামিনী” উঠিয়া লম্বা দালানটা বার 'ছুই এ প্রান্ত হইতে ও প্রান্ত পর্যন্ত পরিক্রমণ করিয়া আতিয়া পুনরায় আসন গ্রহণ করিল। কহিল, "শোন তবে”__ (৩) ষামিনী বলিতে লাগিল-_ পু আট বৎসর পূর্বে বক্দার হইতে বদলী হইয়া আমি খন এখানে, আসিলাম, তখন সঙ্গে ছিল আমার স্ত্রী আর আমার মেয়ে চারু। এই বাড়ীতেই * আমি প্রথম আসিয়া উঠি) আর তখন হইতেই .্ বুড়া গোকুল আমার বাগানের মালী। তখন সে একা নয়__তাহার স্ত্রী ও পুত্র সীতারাম তাহার সঙ্গে, ছিল। সীতারামেরও বিবাহ হইয়াছিল কিন্ত তাহার তরী * তখন শিত্রালয়ে--আসন্রপ্রসবা | 88 মানসী ও মর্দ্মবাণী [৮ম বর্-_১ম থণ্ড--১ম সংখ্যা গোকুল তখন পূর্ণ উৎসাহে যুবকের স্তায় কাজ করিত। সীতারাম বাপের সাহায্য করিত। তাহাদের কাজের পরিচয় আমার বাগান দেখিয়াইখুলোকে বুঝিতে পারিত। ছেলেটি যেমন কন্মদক্ষ তেমনি বুদ্ধিমান ও বিনয়ী। আমরা সকলেই তাহাকে ন্নেহ করিতাম। আমার চারুকে সে একেবারে বশ করিয়া লইয়াছিল। সীতারাম নহিলে তাহার ছুধ থাওয়া হইত না, পোষাক পরা চলিত না, বেড়াইতে, যাইবার সময়ও তাহাকে প্রয়োজন হইত। রাত্রে গল্প বলিবার জন্ত, ঘুমাইবার সময্নও “সীতারাম ভাইয়া”র তলব পড়িত। ক্রমে চারুকে লেখাপড়া শিথাইবার জন্ত আমরা খুব মনোযোগী হুইয়া উঠিলাম। বালিকা বিগ্ভালয়ে তাহাকে ভর্তি করিয়া দিলাম। সন্ধ্যায় মাষ্টার আসিয়া তাহাকে আবদ্ধ করিয়া রাখিতে লাগল । “সীতারাম ভাইয়া* তাহাকে স্কুলে পৌছিয়া দিয়া আমিত, সঙ্গে করিয়া বাড়ী আনিত। এইবূপ কিছুদিন যায়। একদিন সীতারামের মার কান্না শুনিয়া খবর লইয়া! জানিলাম, সীতারামের “নকৃরী” হইয়াছে, সে মুঙ্গের যাইবে । ভারী নাকি মান্তের কাজ, সে জমাদারের পদ পাইয়াছে। খবর গুনিয়া খুসী হইলাম । ছেলেটি ভাল, ভবিষাতে উন্নতির আশা আছে। চারুর জন্ত ভাবনাও হইল। বুঝি মনে মনে একটুখানি আনন্দও হুইয়াছিল---খেলা গল্পের লোভ কমিলে লেখাপড়ায় তাহার চাড় হইবে । একদিন সকাল বেলা, নূতন জাম টুপী ও ময়লা কাপড়ে সাজিয়া আমার পায়ের কাছে দীর্ঘচ্ছন্দে এক প্রণাম করিয়া, “খোকীদিদির” কাছে বিদায় লহয়া মীতারাম মুঙ্গের চলিয়া গেল। যতক্ষণ দেখা গেল, চারু জানালার উপর উবুড় হুইন্সা পড়িয়া তাহাকে দেখিতেছিল। যখন গাছের ঝোপে, মোড়ের বাকে আড়াল পড়িয়৷ আর “ভাইয়া”কে দেখা গেল না, তখন' সে ছল ছল নেত্রে ছুটিয়া ঘর হইতে বাহির হইল। তার পর কিছুদিন ধরিয়া চারুর অকারণ বিদ্রোহ খামাইতে দাসী চাকরদের কষ্টের শেষ রহিল না। দিনরাত নানা ছুতায় কানন! বাহানায় বিরক্ত হইয়া চারুর মা আমার কাছে নালিশ করিতেন, "মেয়েকে কিছু বল্বে না-এর পর লামলাবে কেমন করে?” আমি জানিতাম কেন সে কাদে । স্ত্রীকে গ্রবোধ দিতাম, “ভু নেই বড় হলে আপর্থনই দেরে যাবে-_এক আধ- বার কাদতে না পেলে ছেলেমান্ুুষ পারবে কেন ?” সময়ে সীতারামের অভাব ছুঃখ চারুর মন হুহতে কমিয়া,আসিল। লেখাপড়ার নুতন উৎসাহে মাতিয়! মালীর বাড়ী যাতায়াতও সে প্রায় বন্ধ কারল। আমঝাও হাফ, ছাড়িয়া বাচিলাম। সেহ সমস্হ বোধ হয় তুমি তোমার কাকার মেয়ের জগ্ত পাত্রের সন্ধানে এথানে আসিয়াছিলে। আ।ম ৩খন অন্তরে বাইরে পুরাধস্তর “সাহেব” | সাহেৰা ধরণে পা ফাঁক, কারয়া চুরুঢ খাওয়া হইতে হাচি কাসিটিৰ. অঞ্করণেও খুপ কার না। তাই চারুর উজ্জ্লবণ ও বিশেষ তাহ।র কট।ঠুল আনার গঞ্জের বিষয় ছিল। চারুর মা অনেক |বখ্যাত ও অখ্যাত কেশ তেলে তার কটা চুলের দেষ ভ্রুট সংশোধন করিবার জন্ত ব্যস্ত হহণে তাহাকে [মনত করিয়। বল- তাম, “চাক্ষকে তোমার শিক্ষ। থেকে রেহাহ দাও। তোমার |নজের উপর যঙ হচ্ছে অভ্যাার কর কেউ বাধা দেবে না, ওকে আমার পছন্দ মত কৰে মানুষ করে তুলতে দাও ।” স্ত্রী সাগ কারয়া বলিতেন, “এর পর যখন কটাচুলো বলে কেউ পছন্দ কর্বে না তখন মেয়েকে বিবি করবার মজা টেপ পাবে ।”» আমি তাহার শাসনে ভয় ন৷ পাহয়া হাসিতাম। স্ত্রীকে নিভৃতে একদিন কহিলাম, “চারুকে আমি সাহেব সবার কাছে বার্‌ করবার মত কণ্সে গড়ে তুল্ব, -দোহাই তোমার, তুমি ওর উপর শত্রুতা সাধতে এস না।” স্ত্রা শুনিয়া প্রথমে অবাক হইয়া গেলেন। প্রথম প্রথম কিছুদিন রাগ করিতেন-_-অবশেষে হাল ছাড়িয়া নিশ্চিন্ত হইলেন। ফল্লে আমার ইচ্ছাই জয়ী হইল। .. 'চারুকে আমি আমা'র আদর্শের মত করিয়াই গরিদা তুলিতেছিলাম। ছয় বৎসরের মেয়ে তেমন ইংরাজী স্থরে কথা বলিতে বাঙ্গালীর ঘরে খুব কমই পারে। ফার্ডন, ১৩২২ ] তবু আমি জানিতাম, সে তাহার মাঠের নীতি পদ্ধতিই পছন্দ করে। মে পা ঢাকিয়া শাড়ী পরিতেই ভাল বাসিত, কিন্তু আমায় খুনী করিবার জন্ত খাটো ফ্রক, জুতা মোজা পরিয়া থাকিত। অই পর্য্যন্ত বলিয়া যামিনী হঠাৎ চুপ করিল। তাহার মুখ পানে চাহিয়া দেখিলাম_চক্ষু দুটিতে জল ভরিয়া আসিয়াছে । তাহা দেখিয়া আমারও চক্ষু সজল হুহয়া৷ উঠিল। এই সময় এক চাপরাসী কি কতকগুলা কাগজপত্র আনিয়া সেলাম করিখা দ্াড়াইল। যামনী সেগুলা পড়িয়া, হুকুম লিখিয়া দিল। এই কার্যে পাচ সাত মিনিট আতবাহিতঞ্হইল। (৪) চাপরাসিটা চলিয়া গেলে দোখলাম, যামিনী অনেকটা এ্রক্কৃতিস্থ হইয়াছে । আবার সে বাঁণতে আরম্ভ করিল-_ একদিন খবরের কাগজে পড়িলাম, মুগদেরে এক ইংরাজ ম্যাজিষ্রেটের ছেলে নৌকায় জল 1বহারকালে ঘূর্ণি জলে পাড়য়া যায় । সেখানটায় নাকি গ্রকাও এক দহ ছিল, আর সে দহের সম্বন্ধে অনেক ভৌতিক প্রবাদও প্রচগিত ।ছল, তাই মাঝ মাল্লা কেহ তাহাকে তুলতে জলে নামে নাহ! জমাদার সীতারাম নদী তরে সেই সময় সরকারী কাজে নৌক। ডাকিতে আসিয়া, সেই অবস্থা দেখিয়া তৎক্ষণাঁং সাহসে ঘূর্ণি জলে ঝাপা- ইয়া পড়িয়া বালককে উদ্ধার করে। সেই সাহসী পরোপ- কারী যুবাকে গবর্ণমেপ্ট “সম্মানের মেডেল” পুরস্কার দিয়াছেন। সংবাদটা আমি তৎক্ষণাৎ চারুকে ডাকিয়া শুনাইলাম ।-__তাহার চক্ষু ছুইটি আনন্দে উজ্জ্বল হইয়া উঠিল। তখন বড়লাট সাহেবের বাকীপুরে আসিবার দিন সন্গিকট। সারা, সঙ্করটা সরগরম হইয়া উঠিয়াছে। মিউনিসিপালিটি দীর্ঘকালের নিদ্রা ভঙ্গের পর. বহুদিনের কর্ডীব্ের ক্রু ছই/-দিনে সারিয়া ফেলিবার তন বন্ধ পরিকত্। রান্তাঘাট পরিফার পরিচ্ছন্ন ও মেরামত করার ধুম পড়িয়া! গিয়াছে। চিরদিনের সঞ্চিত ধুলা, *আগে দেখি।» ফুলের তোড়া ৪৫ চন্দনের ছড়ার পরিবর্তে তৈল জলে সিঞ্চিত হইয়া গেল। বড় বড় বাড়ী চুণকামের নূতন পেযাক পরিয়া লইল। ষ্টেশন হইতে পথের উভম্ন পার্থে প্রত্যেক বাড়ী ও দরজার মাথায় দেবদারু পাতার মাল৷ টাঙ্গান হইল। কেহ কেহ দরজার দুই ধারে কলাগাছ দিয়া মঙ্গলাচরণ করিলেন । “লাহনের মাঠে” আলো দিবার ও বাজী পোড়াহবার বন্দোবস্ত হইয়াছে । দেশের ছেলে- মেয়েদের বাজা দেখবার আনন্দে আনদ্রা রোগ জন্মাইবার উপক্রম হহয়া ডাঠল। লাট সান্কছেবর গমন পথের ছুহ ধারে পুলিশ আঁফসাররা কোথাও ছদ্মবেশে কোথাও স্ব-মুত্তিতে সতক হইয়া রহিলেন। এহ উপণক্ষে পোষাকের দোকানের দর্জি মিঞা সাহেবধের কদর অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিল। বাবু সাহেবদের ফরমানী পোষাক তেয়ার কারয়া, তাহার! আর আহার নি্রার অবসর পায় না। কাঁলকাতা হইতে আঁমও চারুর জন্ত এক প্রস্থ পোষাক আনাহঙাম। চারুর মা সঞ্চয়-নীতির চিরন্তন নিমমান- সারে পোষাক দোঁখয়াই অপছন্দ করিলেন। “এত খাটো--এ ত ছুমাসও পর্তে পাবে না! মেয়ে ত্দিন দিন তালগাছহ ২ঠ--আর কি এ ঠ্যাং বেরকরা ফুকে মানায়? কি যে তোনার পছন্দের ভর! নীলারী শাড়ীথানি পরে জ্যাকেট গায়ে দিলে খাসা মানাত। থামথা কতকগুলো পয়সা জলে ফেলা--যেন খোলাম- কুচি 1” অবুঝকে বুঝাহবার বৃথা পরিশ্রম না করিয়া কহিলাম, “হোক, একটা মেয়ে বইত নয় ! কতই আর ওর জন্টে খরচ কর ? না হয় এবারট] কিছু লোক্সানই কর্লে ।”- স্ত্রী অবস্ত বুঝিলেন না । চারকে কহিলাম, “ফুলঝরিয়ার কাছে গিয়ে পোষাকটা পরে আয় ত চারু, কেমন দেখায় আমি মেয়ে তার সার্জ সজ্জা! লইয়া চলিয়। গেল। ফিরিতে তাহার বিলম্ব দেখিয়া নিজেই খোজে গেলাম । সেখানে গিয়া শুনিলাম, মুদি তামাসা করিযী মীতারামের মাকে বলিয়াছে, “তোমার সীতারাম ৪৬ মানসী ও মর্ধ্ববানী [৮ম বর্ষ--১ম খ্--১ নখ্যা আম্চে যে। তাই এসব হচ্চে। কোম্পানী বাহাদুর তাকে বিলেত থেকে নিজের, হাতে তক্তি পাঠিনে দিয়েচে--আর দেশের লোকে আলোগদেবে না--ধুম ধাম কর্‌বে না ? কত বড় বীর তোমার ছেলে 1”-_বুড়ী সেই কথা সতা মনে করিয়া সকলকে ডাকিয়া ডাকিয়া তাহা শুনাইতেছে। সীতারাম যে কাল দেশে আসিবে, এ খবর আমিও চারুর কাছে খুব কম পর্চাশ বার শুনিয়াছি। সীতারামের মা তাহার' জন্ত কত রকম পিঠা, কত প্রকার বাঞ্জন আর কি যে সব তৈয়ারী করিতেছে_-সে কথাও আমার আর অজ্ঞাত নাই। কিন্তু আমার তখন সীতারামের ভাবনার চেয়ে অনেক বেশী ভাবনা রহিয়াছে, চারু কেমন করিয়া তাহার নিদিষ্ট অভিনয়টুকু সম্পন্ন করিবে। হাজার বার পরীক্ষা দিয়া দিয়া চারুও ক্রমে যেন ক্লান্ত হইয়া পড়িতেছিল। (৫) পরদিন সন্ত্রীক লাটসাহেব বিহারবাসীর অতিথির বেশে আসিয়া দেখ! দিলেন। দ্বারভাঙ্গার মহারাজের প্রকাণ্ড বাগান-বাড়ীথান! তাহার বাসের জন্য সাজান হইয়াছিল। দেশে উৎসব উৎসাহের অন্ত ছিপনা। হুজ্ুগপ্রিয়ের! হুজুগ খুঁজিয়া, আর আমরা সরকারী কর্মচারীরা সেলাম দিবার শুভ মুহূর্ত খুঁজি বেড়াইতেছিলাম। পাটনার নবাব সম্প্রদায় লাটসাহেবকে সেখান কার খোদাবকৃস লাইব্রেরী দেখিতে যাইবার নিমন্ত্রণ করেলন। আমাদের কমিটিতে স্থির হইল, সেই- দিন চারু লাটপত্বীর হাতে ফুলের তোড়া দিয়া স্বাগত বন্দনা গুনাইবে। সেদিন প্রানে বাগানের রাছাবাছা ফুলপাতায়, একটা প্রকাণ্ড তোড়া তৈয়ারি করিয়া গোকুল' যখন আমায় .দ্বিয়া গেল, তখন জানাইয়া গেল, সেইদিনই তাহার এসীতারাম বাড়ী আদিবে। চারু আমার কাছেই ছিল, আনন্দে তাহার কালো চোখে যেন, আলে! চমকিয়া উঠিলা। অস্তরে বাহিরে সে যেন ছাড়া পাইধার জন্ত ব্যকুলতা অনুভব করিতে" ছিল। কিন্তু আমার তখন তাহার উপর সহানুভূতি ছিলনা । সেযে কেমন করিয়া নির্ভুল ভাবে নি ভূমিকাটুকু অভিনয় করিবে, সেই চিস্তাতেই আমি বিমনা ছিলাম । তাহার চুলে সাবান পাউডার ' দিয়া মাজিয়৷ ঘষিয়া, তাহার স্বাভাবিক শ্্রীকে আরও উজ্জ্বল করিয়া পোষাক পরাইয়া গাড়ীতে তুলিয়া লইলাম। সে একবার কেবল বলিল, “আজ সীতারাম ভাই আস্বে বাবা ।” আমি বলিলাম “জানি। ততক্ষণে তুমিও ফিরে আম্বে ?” ্ চারু প্রকাণ্ড ফুলের তোড়াটির 'দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। গাড়ী খোদাবক্স লাইব্রেরিতে গিয়া পৌছিল। পত্র-পুষ্প-ভূষিত তোরণদ্বারে ফুলের তোড়া হাতে লইয়া চার দাড়াইয়া রহিল। যথাসময়ে পত্বীপহ লাটসাহেব আসিয়া পৌছিলেন। তাহারা গাড়ী হইতে নামিবামাত্র, চারু অভিবাদন করিয়া লাটপত্বীর হস্তে ফুলের তোড়াটি দিয়া বন্দন! আবৃত্তি করিল। কথাগুলি সুস্পই ও যথাষথ ভাবে উচ্চারণ করিতে পারায় সুধু আমার নয়--সমাগত সকল সন্ত্রান্ত লোকের চোখেই সাফল্যের গর্ব ফুটিয়া উঠিল। লাটপত্ী মধুর হাসি হাসিয়া, চারুকে ধন্যবাদ দিয়া ফুলের তোড়াটি লইলেন। ছুইতিনবার হাসিমুখে চারুর দিকে চাহিয়া দেখিলেন। লাটপত্বী লাইব্রেরি দেখিতে গিয়াছেন, লাটসাহেব নবাব রাজ! মহারাজাদের সঙ্গে আলাপ করিতেছেন, আমরা বাগানে চারুর কৃতকার্ধাতার সম্বন্ধেই আলোচন! করিতেছিলাম। হঠাৎ হু'স হইল চারু নাই! গোল- মালে সে কখন যে নিকট হইতে রিয়া গিয়াছে, তাহা! জানিতেও পারি নাই। ভয় ডরের সে বড় ধার ধারে না-_হরত লাটপর্থীর সমক্ষ গিয়া সে হাজির হই! না জানি কি বিভ্রাটই বাধাইয়া বসে ! বাস্ততাবে খেজ করিতেছি, এমন সময় মৌলবী- কান্তুস, টিং 1 টং ফুলের তোড়া ৪৭ 'সাছেব আপিয়া খবর দিলেন যে লাইব্রেরী-ধরে লাট- পর্ীরই সহিভ চার কথ! কহিতেছে, তিনি দূর হইতে বেখিয়াছেন। ক্রুতপদে লাইব্রেরী-গৃহের দিকে আমি অগ্রসর হইলাম। কিয়দুর গিয়া দেখি, চারু ফিরিয়া আললিতেছে। সর্বনাশ! সেই ফুলের তোড়া, তাহার হাতে ! দেখিয়া আমার আপাদ মন্তক রাগে জুলিয়া গেল। সবলে তাহার কোমল হাতথান! চাপিয়া ধরিয়া, টানিয়া তাহাকে বাহিরে আনিলাম। সে প্রথমে কিছুই বুঝিতে পারে নাই। “উঃ, বাবা ধে জোরে ধরেছ, এখন লাগছে!” বলিয়া হঠাৎ আমার মুখের দিকে চাহিয়াই সে নীরব হইল । আমার মনের দানবটা মুখেও বোধ হয় নিজ প্রতিবিশ্ব বিস্তারু করিয়া- ছিল, তাইসে ভয় পাইল। পরের সাহায্ো গাড়ীতে উঠিতে নামিতে সে বরাবরই নারাজ ছিল। আমি গাড়ীর কাছে আসিয্লাই সহিসকে হুকুম দিলাম, “উঠা দেও 1” চারু কোনও আপত্তি জানাইল না। গাড়ী চলিতে আরম্ভ করিলে কঠোরম্বরে তাহাকে. বলিলাম, “তোড়া কোথা পেলি ?” সে ভয়ে ভয়ে কহিল, “মেম্‌ সাহেব দিলেন ?” আমি চীৎকার করিয়া উঠিলাম, “মিখোবাদী ! তোকে ডেকে দিলেন ?” সে বলিল, “না বাবা আমি চেয়েছিলুম 1৮ "কেন চাইলি ?ভিকিরি! ছোট লোক! বুড়ো মেয়ে !” --বলিয়া সবলে তাহার গালে একটা প্রকাও চড় বসাইয়! দিলাম। সেই কচি গালটিতে আমার :অঙ্কুলির দাগ রক্বর্ণ হইস্না দেখা দিল। ভয়ে সে কীপিতে লাগিল, কিন্ত কাদিল না। তাহার জীবনে আমার কাছে সে আর কখনও প্রহার খার নাই। সেই প্রথম এবং সেই বামিনী কিছুক্ষণ চুপ করিয়! অন্ধকার পথের পাঁনে চাহির়া রহিল। আকাশ ভুড়িদা অন্ধকার, লক্ষ ফুটিয়াছে, টাদ তখনও উঠে নাই। মণ্ট, মুলী বেড়াইয়া ফিরিয়া আসিয়াছে, বাড়ীর ভিতর হইতে তাহাদের উদ্দাম হাসির লহর””বাহির হইয়া আদিতেছিল। বাগানের গেটের ধারে শিউলী গাছটায় গোটাকতক কড়ি সবে মাত্র প্রস্ফুটিত দল মেলিয়া মৃদুগন্ধ ছড়াইবার উপক্রম করিয়াছে । চানাচুর-ওয়ালা প্রকাণ্ড ছড়! কাটিয়া প্চানা ' জোর গরম” হাকিয়া গেল।-_বামিনী নিঃশ্বাস ফেলিয়া পুনরায় তাহার অসমাণু কাহিনী বলিতে লাগিল।__ সারাপথটা তাহাকে তাড়না তিরস্কারে এমনই অভিভূত করিয়া তুলিলাম যে সে কোন কথাই ভাল করিয়া :আমায় বুঝাইতে পারিল না। ন্ুুধু এইটুকুই বুঝিলাম যে, ফুলের তোড়াটি সে সীতারামের জন্য চাহিয়া আনিয়াছে। ইচ্ছা! হইতেছিল, তোঁড়াটা ছি'ড়িয়া শত খণ্ড করিয়া পথের ধুলায় ছড়াইয় দিই; কেবল তাহার মাকে মেয়ের কীর্তি দেখাইবার জন্যই সে প্রলোভন সম্বরণ করিলাম । স্ত্রী আমাদের পথ চাহিয়াই পথের ধারে পর্দার পাশে দাড়াইগ্লা ছিলেন । আমার মূর্তি আর মেয়ের অবস্থা দেখিয়া অবাক্‌ তইয়া রহিলেন। আমি *্চারুকে ধাক্কা দিয়া তাহার মার দিকে ঠেলিয়া দিয় বলিলাম, “যেমন নিজে, তেমনি ত মেয়ে হবে! ওকে আবার আমি মানুষ কর্তে চাই !” সহিস তোড়াটা আমার ঘরে টেবিলের উপর রাখিয়া গেল। আমি সেটা স্ত্রীর গায়ে ছুড়িয়া দিয়! বলিলাম, “মেয়ে ভিক্ষে করে এনেচে, যত্ব করে তুলে রাখ ।” রর এতক্ষণের পর বোধ হয় চারুর মা ব্যাপারট! কতক বুঝিতে পারিলেন। মেয়েকে কাছে টানিয়! জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হয়েচে সব বল্ত চারু। _তোড়াট। চাইলি কেন? বড্ড নিতে ইচ্ছে কচ্ছিল 1” চাক্ক তাহার মার বুকে মাথা রাখিয়া ছাফাইতেছিল 4 কহিল, “আমি ধু রাঙ্গা গোলাপটা লীতারামের জন্যে দিতে বলেছিলুম, আর কিচ্ছু না ?” ৪৮ মানসী ও মর্্মবাণী [৮ম বর্ষ--১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা চারুর মা একটি একটি করিয়া সব কথা জানিয়া লইলেন। তখন প্রকাশ হইল, চারু লাইব্রেরী ঘরের দরজার কাছে ঘুরিতেছিল, লাঁটপত্ী স্তীহাকে কাছে ডাকিয়া আদর করিয়া জিজ্ঞাসা করেন সে কিছু চাহে কিনা । চারু বলে, সীতারামের জন্য এ লাল গোলাপ- ফুলটি পাইলে সে খুপী হয়। তাহাতে লাটপত্থী ভ্বিজ্ঞাসা করেন, সীতারাম কে? সীতারাম যে কে, কত বড় মহৎ কাজই যে সে করিয়াছে, বিলাত হইতে রাজা যে তাহাকে মেডেল পাঠাইয়াছেন, সে যে অগ্যই মুঙ্গের হইতে বাড়ী আসিতেছে, মা তার জন্ত কত রকম পিঠা ও বাঞ্জন রাধিয়া রাখিয়ান্ে, বাপ, কি রকম তুলার কুর্তা কিনিরাছে-_লাটপত্রীর অবশ্ঠ-জ্ঞাতবা এই সমস্ত তন্বই সে তাহার গোচর করিয়াছে । তিনি সীতারামের বীরত্বের কাহিনী নাকি পূর্কোই তিনি শুনিয়াছিলেন। সুধু একটি ফুল নয়, খুসী হইয়া সমস্ত তোড়াটাই তিনি সীতারামের জন্য দিলেন এবং বলিরাছেন কলা প্রভাতে সীতারাম যেন তাহার বাড়ীতে লাট সাহেবকে সেলাম করিবার জন্য যায়। মেয়ের কথা শুনিয়া তাহার মা হাসিয়া লুটাইতে লাগিলেন । আমিও রাগ ভুলিয়া তাহাকে কোলে তুলিয়া লইলাম। এতক্ষণের পর সে আমার বুকে মুখ লুকাইয়া নিঃশব্দে কাদিতে লাগিল । সারাদিন কোনও গাড়ীতে সীতারাম আসিয়া পৌঁছিল ন|। রাত্রে শয়ন করিতে যাইবার পূর্বে চারু বলিল-- প্বাবা, রাত একটার সময় মুঙ্ষের থেকে আবার গাড়ী আস্বে, সীতারাম ভাইয়া নিশ্চয়ই সে গাড়ীতে আসছে।” সে রাত্রে সে ঘুমাইয়াছিল কি না জানি না। আমি কিন্তু ঘুমাইতে পারি নাই। ভোরের দিকে একটু তন্দা আপিলে সে আমায় ভাক্ষিয়! বলিল, “বাবা সীতারাম ভাইয়া বোধ হন্স রারে এসেছে । লাট-সাহেবের বাড়ী তাকে যেতে বলে আস্ব কি?” , আমি উঠিরা বসিয়া কহিলাম, প্চল্‌ আমিও যাই, এসেছে কিনা দেখি। আমারও ত তাঁকে কিছু দেওয়া হয়নি। কি দেওয়া যায়?” স্ত্রী লেপের ভিতর হইতেই কহিলেন, প্টাকা দাও। গরীব মানুষের টাকায় উপকার হবে।” | চারু বলিল, “বাবা, সীতারাম ভাইয়ার ঘড়ি নেই।» আমি খুসী হইয়া কহিলাম, “চারু, টেবিলের উপর থেকে আমার ঘড়িটা নিয়ে আয়, ত্টেই তাকে দেব ।” কন্ঠার সহিত বাহিরে আসিলাম। ইত তাদের বাড়ী। বুড়া বুড়ী ছইজনেই উৎকণ্ঠিত দৃষ্টিতে পথের ধারে দীড়াইয়া ছিল। সীতারাম রাত্রেও আসিয়া পৌছে নাই। কি অসহা উদ্বেগে তাহাদের রাত কাঁটি- যানে, বুড়ী সালঙ্কারে চার্ুকে তাহাই বলিতে লাগিল। আমি রাস্তাটা বার কতক এপার ওপার পায়চারি করিলাম। দুরের যাহা কিছু, বুয়াশার ধোঁয়ায় অদৃষ্ঠ হইয়া গিয়াছিল। রাস্তার ধারের গাছগুলা বাতাসের নাড়া পইক্না টপ টপ্‌ করিয়া বুষ্টির জলের মত হিম জল ফেলিতেছিল। | লাটপত্বী সীতারামের জন্ত ফুলের তোড়া দিয়াছেন, তাহাকে যাইতে বলিয়াছেন, একথা বুড়া গোকুল গত- কলাই চারুর নিকট শুনিয়াছিল। আমাকে দেখিয়া! কহিল, প্বুড়ী বলে তার লেড়কার জন্টেই সরে এত ধুমধাম হচ্চে, আমি তাকে ধমকে থামাতে পাচ্ছিলাম না। কোম্পানী বাহাদুরের যে গরীবের উপর এত দয়া তা ত জান্হুম না ন্বজুর !” এমন সময় ভোরের কুয়াসা ভেদ করিয়া টেলিগ্রাফ পিয়ন তাহার সাইকেল হইতে নামিয়া আমায় সেলাম করিয়া, গোকুলের হাতে একখানি টেলিগ্রাম দিল। নিশ্চয় সীতারামের খবর । আমি সহি দিয়া, টেলিগ্রামখানি গোকুলের হাত হইতে লইলাম। তিনটি দর্শকই আমার মুখের দিকে উৎকষ্ঠিত দৃষ্টিতে চাহিয়! রহিল। টেলিগ্রাম পড়িবামাত্র আমার মাথা দুরিয়া উঠিল, হাত কীপিতে লাগিল ।-__্হা ঈশ্বর !”__বলিয়া আমি মাথাটি নত করিযা,. টেলিগ্রামখানা মাটাতে ফেলিয়া, লাঠিতে ভর দিয়া দীড়াইলাম! বোধ রূরি আমার চ্ষু দিয়া তখন জলও পড়িতেছিল। আমার অবস্থা ফাস্তন, ১৩২২] বাঙ্গালীর উৎপত্তি ৪৯ দেখিয়া, পক সু দুলে শ্বশুরের সেবা করিবার জন্য আসিল। তখন মুলী «ওরে আমার বাপরে”--বলিয়া সীতারামের মা, হইয়াছে। চারুর মা ছেলে লইয়া ব্যস্ত থাকিতেন। চীৎকার ক্রিয়া মাটিতে আছাড় খাইয়া! পড়িল। চারু সীতারামের মেয়ে যমুনার তদ্বিরেই দিন কাটরাইত, গোকুল স্থিরস্বরে জিজ্ঞাসা করিল, “হুজুর-_বুছা তাহারই ইচ্ছান্থসারে সীতারামের জন্ম-মৃত্যুর তারিখ আমার কি করে গেল? সে যে আমার জুয়ান ছেলে!” দিয়া এ প্রস্তর বেদী নির্মাণ করাইয়াছিলাম। উহার আমি কহিলাম, *প্লেগে |” ভিতর কি আছে জান? সেই রাজসম্মান ফুলের চাকর বাকর পথের লোক অনেকে সেখানে তোড়া । রোজ সন্ধাবেল! চাঁরু নিজ হস্তে একটি করিয়! জড় হইয়া গেল। আমি আমার লোকেদের উপর লাল বাতী এ সমাধির উপর জালিয়া দিত। আমার বুড়া বুড়ীর ভার দিয়! তাড়াতাড়ি মেয়ে কোলে করিয়া যাছু যখন চলিয়া! গেল, তাহার নিত্য কাজের ভার দিয়া বাড়ী ফিরিলীম । চারু যেন নেতাইয়া পড়িয়াছিল। তাহার গেল সীতারামের কন্তা যমুনাকে। যমুনা! তাহার পিতার মা তখন তরকারী-ওয়ালীর সঙ্গে দরদস্তর করিয়া সওদা স্থৃতির আলোটি তেমনি করিয়াই জালিয়া রাখিয়াছে। করিতেছিলেন। আমাদের অবস্থা দেখিয়া ছুটিয়া চাহিয়া দেখিলাম যামিনীর চোক দিয়া জল পড়িতেছে। আসিয়া মেয়ে কোলে লইলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন, এ শোকের সান্তনা দিবার ভাষা নাই। সংসারের “কি হল, মেয়ে আমার এমন হয়ে গেল কেন ?» অনিত্যতা অথবা বিশ্ববাগী দৃষ্টান্তের নিরর্থক প্রসঙ্গ না সংক্ষেপে জানাইয়া দিলাম, "সীতারাম নেই!” তুলিয়া, নীরবে ছুইটি অস্রবিনদ মুছিয়া ফেলিলাম। সীতারামের মা পুত্রশৌক সহিতে না পারিয়া এক- মাসের ভিতর মরিয়া গেল। সীতারামের স্ত্রী, বুড়া- শ্রীনন্দিরা দেবী । বাঙ্গালীর উৎপত্তি বিগত মাঘ সংখ্যা “ভারতবধ” পত্রে "বাঙ্গালীর আদিম অবলম্বন । এই প্রকার আলোচনার ফলে সমাজে সভ্যতা” নামক প্রবন্ধে (৩১০-৩১৮ পৃঃ) স্রীযুক্ত ননী- যথেষ্ঠ অন্ুখ অশাস্তিও উপস্থিত হইয়াছে। এই সময়ে ধিনি গোপাল মজুমদার মহাশয় বাঙ্গালীর উৎপত্তির প্রসঙ্গ জাতিগত অনুরাগ বা বিরাগশ্ন্ত চিত্তে জাতিতত্ব আলো- বিস্তৃতভাবে আলোচন৷ করিয়াছেন। এই প্রবন্ধে, এই চনা় প্রবৃত্ত. হয়েন, তিনি যে সুধু সাহিত্যিকের নিকট , প্রস্সে বিগত নয় বৎসরে এই ক্ষুদ্র লেখক যেখানে যাহা সাধুবাদ পাইবার যোগ্য তাহা নহে, সমস্ত বাঙ্গালীর কিছু লিখিয়াছে, ম্ুমদীর মহাশয় তাহার উল্লেখ করিয়া নিকটই সাধুবাদ পাইবার যোগ্য। ভরসা করি লেখকের প্রতি বিশেষ সমাদর: প্রদর্শন করিয়াছেন। মজুমদার মহাশয় জাতিতন্ব চর্চা ছাড়িবেন না। এ মজুমদার মহাশয় আর একটি কারণেও বিশেষ ধন্যবাদার্। ক্ষেত্রে কর্মী বড়ই কম। এদেশে এখন সমাজ-সংস্কারকগণ কর্তৃক জোরের সহিত " বাঙ্গালীর উৎপত্তি এবং বাঙ্গালীর সভ্যতার প্রাচী জাতিতন্ব আলোচিত হইতেছে। কিন্তু এই আলোচনা নতা সম্বন্ধে এই লেখক যে যে মত প্রকাশ করিয়াছে, অন্তায় অবৈজ্ঞানিক পথে চলিয়াছে। অজ্ঞাত অশ্রত মজুমদার মহাশয় তাহার আমূল প্রতিবাদ করিয়াছেন! অপ্রকাশিত শাস্ত্রের এবং -কুলশাস্ত্রের অসংলগ্ন বচন এই প্রতিবাদের আগাগোড়া আলোচনা, এ প্রবন্ধে গ্রমাণ এই প্রকার জাতিতত্ব .আলোচনার প্রধান সম্ভব নহে এবং গ্রয়োজনীয়ও নহে। মূল কথা, বাঙানীর ৫৪ মানসী- ও মর্দ্মবাণী [৮ম বর্ষ-_১ম খও--১ম সংখ্যা. ১১১১১ উৎপত্তি সম্বন্ধে রিসলি সাহেবের মত কতটা বিচারসহ, তাহা আলোচনা করিলেই যথেষ্ট হইবে। কিন্তু স্চনায় ছুই একটি অবান্তর কথা বলিয়া! লইবক্ষ বৌদ্ধ পালি ও সংস্কৃত গ্রন্থে কথিত মধাদেশের সম্বন্ধে মনীগোপাল বাবু লিখিয়াছেন-_ “যে বৌদ্ধ গ্রস্দ্বয়ের [বিনয়পিউক ও দিব্যাবদাঁন ] ষে স্থল বিশেষের উপর নির্ভর করিয়া শ্রদ্ধেয় চন্দ মহাঁশয় উক্ত তথোর প্রচারে সমৃতস্থক, সেই কেন গ্রন্দ্বয়ের . সেই স্থলের উপর টিগ্ননী করিয়া পণ্ডিতবর রীস ডেভিড স [শা আআ. বাত 0851081 ধা লিখিয়াছেন, তাঁত প্রসঙ্গক্রমে এখানে উদ্ধৃত হইতে পারে । বিনয় পিটক সম্বন্ধে [এবং প্রসঙ্গত সমগ্র পালি সাহিতা সম্বন্ধে] তিনি বলেন, পাণঃ০ 019 ০01 109 [১811 17095105 17001001708 19 আ০ক 816 ৪1007 17”091168 001)000180 20 08510055575 অতএব বিনয়পিটক ও দিবাবদানের উপর রমাপ্রসাদ বাবু যতটা নির্ভর করিয়াছেন, ততটা নির্ভর করা সমূচিত হয় নাই (৩১৪ পৃঃ)1” বডই দ্বঃখের সহিত বলিতে হইতেছে, রীস ডেভিড স বিনয়পিটক সম্বন্ধে এবং প্রসঙ্গতঃ সমগ্র পালি সাঁতিতা সম্বন্ধে এরূপ কথা কখনও বলেন নাই, ইহার ঠিক উপ্টা কথাই বলিয়াছেন। রীস ডেভিডসের উক্তি আগ্োপাস্ত উদ্ধৃত করিতেছি-_- ॥ রো 4501000780৮ [ (28065 তে বত], ড108)% 16915 ] [0 10 চা) ৪6০69709206 ০00০8 আ৪৪ ০0078189180 ৮7 1১069580 01950106712) 10 676 10004801020 113 ওনাঢ০ছ 0175 6৮ (87557 চ্। 1879), 8308 ৮০০৭৮ 400 8.0. পান ০ ১৪০ & 11609 68711621075 0017 8191086৮6 1০০ায 1৪ 0005৮ 0১৪ 1001৭ 0110)9 £511 116675৮0, 00া10াথি &)1৪ আ০চ8, 9 80071510818 60109666010 0০]- 100. 816 00 %069006 1058 0862) 27808 60 890" 120৬ (013 1৭৮৮০10৩০৮0 ৩৭0 0 00819 60 80087 ভ10) 0১৪ 15018 71618 5৮ 20 ৮ সন ০1 1078000 দ৮া ১৪ ৪৩ & 897008 800 000380070. 01017100 ; ৪00. 0010 ২06 00১ 1 111701716০6 01389 আ]চা। গাচাা০ছ]€ ৩০710810109 ইগাগ £১815010 990196)। 8804. 7৮8৮)” রীস.ডের্ডভিডল্‌ যে মতের প্রতিবাদ করিবার 'জন্ এই অংশের অবতারণা করিয়াছেন, ননীগোপাল বাবু সেই মতকে রীস ডেভিড.সের মত বলিয়া উল্লেখ করিয়া- ছেক্স, কিন্তু রীস ডেভিডসের নিজের মত যে অংশে নিবদ্ধ হইয়াছে, তাহা প্রকাশ করাই কর্তব্য বৌধ করেন নাই। এমন কি উদ্ধৃত বাকোর গোড়ার” [গা ০]ায ৪16০105৮৮5 (0০০যয 919৮] বাদ দিয়া- ছেন। এ বিষয়ে অধিক কিছু বলা অনাবস্ক | তরে আরণ্যকে আছে (২১১) “ইমা প্রজা জ্ভিন্লো আভ্যাম্রমাস্বৎ জ্ভানলীমানি" লম্সীথসি বঙ্গাবগন্বাশ্েলশ্পীচগীঃ 1৮ এই বচন সম্বন্ধে ননীগোঁপাল বাবু 'লিখিয়াছেন _ শান্সী মহাশক্ ধতরেয় আরণাকের উক্ত অংশ যে ভাবে বুঝিয়াছেন, মোক্ষমুলর ও কীথপ্রমুখ পণ্ডিতগণও উহার অর্থ প্রায় সেই ভাবেই গ্রহণ করিয়াছেন-__-ইহাদের অনুসরণ করিয়া উহার এইরূপ অর্থ করা যাইতে পারে _-বঙ্গমগধ-চের এই তিনটি জনপদ 'বৈদিকমার্গ হইতো] অতায় প্রাপ্ হইয়াছিল, ইহারা পক্ষী বলিয়! [“কাঁক গুধাদি” ] বিশেষিত হইবার যোগ্য (৩১২ পৃঃ)।৮ মোক্ষমুূলরের অনুবাদ আমার হাতে নাই। কীথের (1590) ) অনুবাদ এইরূপ-_ গা) 079 6796 ০007650600015 1251192798850%, 909 0779 70901158 ভ1101) (508 8980. 818 :11)9 ভা চ্যি৪৪০৪ 09 5৮008588801) ৪907 19 0007৮ 5088 (0. 800)” কীথের এই অনুবাদ মূল সংস্কৃতের অনুগত, ননী- গোপালবাবুর অনুবাদ মূলান্ুগত নহে । মূলে (বৈদিক * মার্গ) লঙ্ঘনকারী তিন প্রকার প্রজার নাম আছে ; যথা -_বয়াংসি, বঙ্গা বগধাঃ,চেরপাদাঃ। বঙ্গাবগধাঃ” অর্থ বঙ্গ- মগধাঃ এবং “চেরপাদাঃ অর্থ চের বা কেরলগণ হইতে পারে। কিন্তু বয়াংসি - বঙ্গাবগধাঃ অর্মাৎ বাঙ্গালী এগ্রানে পক্ষী বলিয়া কথিত হইয়াছে একথা শাস্ত্রী মহাশর এবং ননীগোপাণ বাবু কি করিক্না বুষিলেন -তাঁহা বুঝিতে পারিলাম না । তিন প্রকার প্রজার মধ্যে একপ্রকার ব্য়াংসি, এক এফার বঙ্গারগধাঃ, এবং জার এক প্রকার ফাল্গুন, ১৩২২]. | চেরপাদাঃ। কুতরাং বঙ্গাবগধাকে বয়াংসি বলা হইল কেমন করিয়া? “মনুষ্য পণুপক্ষী” বলিলে যেমন মনুষ্যাকে পক্ষী বলা হয় 'সা, মনুত্য নামক স্বতন্ত্র জীব বুঝায়, তেমনি পুর্বোদ্ধত আরণ্যকের বচনে “বয়ঃসি বঙ্গাবগধাশ্চেরপাদাঃ* বলায় বঙ্গাবগধাকে বয়াংসি বলা হয় নাই, “বয়াংসি” হুইতে প্ৰঙ্গাবগধা”্র শ্াতন্্যই সথচিত হইয়াছে । পঞ্জাব এবং হিন্দুস্থানের আর্ধ্যভাষী অধিবামিগণের এবং মধ্যভারতের ও দক্ষিণ ভারতের মুণ্ডা ও দ্রবিড় ভাষাভাষী অধিবাসিগণের মধ্যে অধিকাংশই দীর্ঘ করোটি (401199091,1)%11), পক্ষান্তরে উত্তর পশ্চিম সীমান্তের পাঠান ও বেলুচগণের*মধ্যে এব১ গুজরাতী মরাঠী উড়িয়া ও বাঙ্গালিগণের মধ্যে অধিকাংশই প্রশস্ত (780756]0)8- 1০) বা মধাম করোটি (0০৪,007 17,10)1 শেষোক্ত জাতি নিচয়ের মধ্যে যাহারা দীর্ঘ করোটি বা তাহাদের মধ্যে দীর্ঘ করোটির যে ভেজাল আছে তাহারা যে দ্রবিড়। মুগণ্ডা, বা হিন্দুস্থানীর শোণিত পরি- পুষ্ট একথা এককপ ম্বতঃসিদ্ধ। কিন্তু এই সকল জাতিতে প্রশস্ত করোটিয় যে ভেজাল আছে তাহ! কোথা হইতে আসিল ইহাই তর্কের বিষয়। রিসংলি সাহেব সিদ্ধান্ত করিয়া গিয়াছেন, পাঠান এবং বেলুচগণ তুরষ্ষ- ইরাণীর সঙ্কর অর্থাৎ পাঠান এবং বেলুচগণের মধ্যে গ্রশস্তকরোটির যে ভেজাল আছে তাহা তুরূঞ্ষ জাতীয় ) গুজরাতী :এবং মরাঠাগণ শক-দ্রবিড় সঙ্কর, অর্থাৎ গুজরাতী এবং মরাঠাগণের মধ্যে যে প্রশস্তকরোটির ভেজাল আছে তাহা শক জাতীয় ; উড়িয়া! এবং বাঙ্গালী মোঙ্গল-দ্রবিড় স্কর, অর্থাৎ উড়িয়াদিগের এবং বাঙ্গালীর মধ্ো যে প্রশস্ত করোটির ভেন্গাল আছে তাহা মোঙ্গলীয় জাতীয়। ননীগোপাল বাবু লিখিয়াছেন, প্রমা প্রসাদ বাবু বাঙ্গালীর দ্রবিদ্ভ সম্পর্ক সম্বন্ধে নীরব কেন, বুঝিতে পান্ধি না ৩১৮ পৃঃ)1” সওতাল ওড়ও প্রভৃতি স্াহাদের প্রতিরেশী, এবং সমাজের নিয়ত স্তরে দীর্ঘ, করোটির সংখ্যা যাহাঁদের মধ্যে বেশী, ভাহাদের ধমনীতে যে তথ কথিত ভ্রবিড় শোণিত যথেষ্ট আছে একথা রিস্লি সা বাঙ্গালীর উৎপত্তি ৫১ বের মতের প্রতিবাদ উপলক্ষে এতদিন বলা বাহুল্য মনে করিয়াছি। আমার বিরোধ বাঙ্গালী, মরাঠা, গুজরাতী প্রভৃতির মধো যে প্রশস্ত করোটির ভেজাল আছে তাহার উৎপত্তি সম্বন্ধে রিম্লি সাহেব যে সকল মত প্রকাশ করিয়াছেন তাহার সহিত। গুজরাতী এবং মরাঠাগণের অর্ধশোণিত শকশোণিত একথা যে ইতিহাস বিরুদ্ধ তাহ! বিদেশীয়গণ এখন স্বীকার করেন। এই বিষয়ে পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিকগণের মত হেডন (89108) এই প্রকারে ব্যক্ত করিয়াছেন-_ ৮1300 955091107 9013 10 0 18081720186 9৪ ১০০০)15109 [1)07978660, 18710601079 10500818200 00 210৮ 000) 10780070911)8]5 662৩ ত11606 ৮০ 88500151901) 5৪: 10607198 ৬111) 8076)01918, 1 88608 0010 1 0851110 10) 11063815017 60075185009 108171101৮1) 011)17 00740907118 81010 01 807) 10907 10801 1106 4১1 10047500007) 1005 10101717801 3)001-০৯৮ জিনা 00) 200086)100170075 (100)6 18068 ০1 11810, 170) 40791) অর্থা, শকগণ ষে দাক্ষিণাত্যে অধিকদুর অগ্রসর হইতে পারিয়াছিল, তাহার প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে না, এবং প্রশস্ত করোটি ভিন্ন নকল (মাঁরাঠা প্রভৃতি) জাতির শকগণের সহিত সম্বন্ধ-স্চক আর কোনও লক্ষণও নাইন প্রাগৈতিহাসিক যুগে দক্ষিণ-পশ্চিম এসিয়ার মালভ্ুমি হইতে আগত আল্লাইন জাতীয় আগস্তক- গণের মিশ্রণের ফলে (দাক্ষিণাত্যে ) এই প্রশস্ত করোটি জনগণের ত্যুদয় হইয়াছে এইরূপই খুব সন্তক্ঠ বলিয়া মনে হয়। দাক্ষিণাত্যের সুধু মারাঠাগণের মধ্যে বহুসংখ্যক প্রশস্ত করোটি দৃষ্ট হয় না, ক্ড় (04051589 ) ভাষা- ভাষী এবং তেলুগ্ড ভাষাভাষী জনগণও যে এইরূপ ঝুক্ষণাক্রান্ত থাষ্টন ('1১5756০)) তাহা প্রতিপাদন করিয়াছেন। দ্রাবিড় ভাষাভাষী স্থমত্য জনগণের মধ্যে তামিল এবং মলয়ালম ভাষাভাষীরা দীর্ঘকরোটি, অবশিষ্ট সকলেই প্রশন্ত বা মধ্যম করোটি। ন্ুতরাং দাক্ষি-» ণাত্যের এই” বৃহৎ প্রশস্ত করোটি জনসজ্ঘের উৎ- পত্তি সম্বন্ধে আমরা রিসলির মত পরিত্যাগ করিতে ৫২ মানসী ও মর্শবাণী [৮ম বর্ষ_-১ম খ্ড-_-১ম সংখ্যা এবং প্রাগৈতিহাসিক যুগে একটি প্রশস্ত করোটি জনসজ্ঘের আগমন কল্পনা করিতে বাধ্য। এপিয়ার পশ্চিমভাগ হুইতে এইরূপ জননজো্লা আগমন কল্পনা করিতে হইলে, তাহাদিগকে আল্লাইন জাতীয় মনে করিতে হয়। যুরোপের আংধধ্য ভাষাভাষী স্ণাভ (১৪২), কেল্ট (০০1), এবং ফরাসী দেশের এবং যুরোপের মধ্য- ভাগের অন্টান্ত দেশের অধিবানিগণ আল্লাইন সংজ্ঞায় সংজ্ভিত। হেডনের গ্রন্থ প্রকাশেরও পূর্বে ১৯৭ সালে বাঙ্গালার প্রশস্ত করোটি জনগণকে এই লেখক ও মারাঠাগণের সঙ্গে সঙ্গে এই আল্লাইন শ্রেণীভুক্ত করিয়া- ছিল। নেচার (35979) পত্রের একজন লেখক বাঙ্গালী সম্বন্ধে এরূপ দাবী স্বীকৃত হইবে না বলিয়া মত প্রকাশ করিয়াছিলেন । কিন্তু মরাঠাগণের উৎপত্তি সম্বন্ধে হেডন প্রভৃতি এ্ররূপ মত স্বীকার করিতে বাধ্য হুইয়াছেন। যুরোগীয় আন্লাইনগণের সহিত ভারতীয় আল্লাইন- গণের যে বন্ধন সুত্র, অর্থাৎ মধ্যএসিয়ার অধিবাসি- গণের জাতিতত্ব কয়েক বৎসর পূর্বে ভাল করিয়া জানা ছিল না। ষ্টিন (517 ১০:০] 597১) মধ্য এসিয়া হইতে যে সকল প্রমাণ সংগ্রহ করিয়া আনিয়াছেন তাহা দ্বারা এই অভাব পূর্ণ হইয়াছে। জয়েস (1" 4. ০১০০) এই সকল প্রমাণ আলোচনা করিয়া সিদ্ধান্ত করিয়াছেন-- “0, পরা 015 689 005580701016069 9100৬ 0186 619 099টি 01 | 90019 80210111017)6 9৩ ]8101508- 551) 01887015705 চঙ্যাট 1৯18৩ 0০90)70)0)0 81010097)6, 10100670018 91900901019 8৩60 10. 18 00768000100 2 1196 ৮7881 159 0০৮ 100৮ 05৫ 78৫00151185 ৪০. 01089 & 76151008111) 101) (6116 (91018, 19069 01১8. (09 105818 01 11181810812 710000181500 15 1001705 40005 ০0116869089 ০ 00৪ 06৪6৮ ৪0 1৭ 0198178 6190390 ১1710. 090 8 ৪1১01117 0197901015690 90) 005 17801907 0580669 108 8009218009, 00৩ 1 91920606, 7381088. 11015 11676 860708 0 7১9 80106 হ0201000 0000 18$৮860 01১9 7'901198 01 1119 0689: 800 [109৮] 978 ৮১৮1015 18 £862168 01 ৮0১8) আ1১০ ১988 01525 01 1180180 80০98) 06800090101 81181) 178965 01 17000-4161057 01003, 17 2৮ 165৮ 0109 171)9, 006 10827, 00০89178018 819 00081061:9017 00079 0080 81186 106 077091) 8180 8690 00 8180৫ 10 0108৮1 £919610081)11) 00 ৪ 1)10-818082 769119 (10: ৪ 2700767180901,11593 [1030-402150 19৮18) 0১1) 1009 01119] 28001110093, 90008 880016019 17881010600 11009 086৮901) 617৩1102061 8100. 1)9301% 101. ১০০০০ 40701581080 91) 8818. 60 1)9 8 10717601601 81) 11010877010] সি):1১80)11) 101:105 500. [09676 8100 0718 19 ৮1081, 10010116 ০ €189650) 0106 79০৮ ৪6০০৮. ০01 11১9 101)015608 ০০] 10009 0৩ 1771718017 0)00018 11788 1১০6) 600089৫ 1010101 10000010068 317)06 11) 10-80 11711 11085 &1)1 1085 00008 1)5001206 801561) 1৮ 10090129, [0 089:10886, (1010656 17007007505 19603 10 3819 1186]10910, 1006 020) 056৮ & ৮0551170160 89৯,০০০ 10) 195 01091098500 01 87901770659 826. 08100 ৫7001)9 19 10697056706) 81069 1১001) ৮0 7৮৮10৮ 5538195801180, 16 05951191006 0086 005 ৮91০7 ০ 11517 010670)6 0757001585 91 0009 01008901108 1869, 82016071086 009 ০00610060. 0780 11771057205 816 80016 60108 ১০০11)67) 01 97080111)0 ০৮৮০০ ৭১111101505 50,870 10081107071 0690108 0০১ 177 1900 60100810 & 19700 8001057011920601180 91010926 10910 50900091088 0৩৮7) 857 190198580, 20 0009 00018901 005৮ - 92005107088) 100 090080810701205 ৮10) 1780018)) চ69910109 ,১,১০*০০০0108])), 01191107001 ৮10101)90001605 1008৮ 01৩গা7 1790100010৩ ০16৫7 01 01698090000 8700 09801])1$0 0865 09710517089 10 01719 108] 92 15 1001821005৮ 185 গন্্রম)০] 10180169015 01 7৩ 1১807178200. 18018109850 0886201001091706 80 ০11198 00 00/1৫0. 1980880) 1106 88100, 18 0786 (51)9 958071990 ৮ 178] 0089 ৪৪ 1708০ 47,৮]ম ৪ ৮1110) 11) 1159 8৪, 18068. 01 01১6 1000 4181)817 ৪50 075৮ 0১9 01010801187) 1788 1080. ঘণা' 11615 10209009 01900 1108 19090181190 (০০ ৪মঞ], ০% পু &২73280- 2007310215 বুমজহতার। 1912) 107 467-468).5 এই উদ্ধৃত্ত অংশের সার “কথা এই,_মধ্য এসিয়ার অন্তর্গত পামির প্রদেশের তর্লমকান মরু- দেশের এবং এই মকুতৃমির বালুকার নীচে প্রোথিত প্রাচীন নগর সমূহের অধিবামিগণ “হোমো আল্লানাইস” লুক্ষণাক্রান্ত এবং কার্যত মোঙ্গলীয় প্রভাব বর্জিত। " ফান্তন, ১৩২২] ইহারা ভাষায় আর্ট এবং আকারে প্রশস্ত করোটি। জয়েস ইহাদিগের সম্বন্ধে ইরানীয় আর্ধ্য বংশ (178012 ৪৫০০)” সংজ্ঞাও ব্যবহার করিতে সন্কোচ বোধ করেন. নাই। মরুভূমির উত্তর পশ্চিম প্রান্তে -তুরূ্ গণের রাস। তুরূফ্ষগণ মোগ্গলীয় এবং ইরুনীগ আর্য গণেয় মিশ্রণে উৎপন্ন । পামির প্রদেশের অধিকাংশ জাতি ইয়ানীয় আর্যা হইলেও, তাহাদের মধ্যে হিন্দু- আফগান লক্ষণ দৃষ্ট হয়। জয়েস প্রশস্ত করোটি মরুভূমির ইরানীয় আর্যের প্রধান লক্ষণ বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন এবং মধা করোটি (1199871060078)0 17650) “হিন্দু আফগান” জাতির বিশিষ্ট লক্ষণ ধরিয়া লইয়াছেন। আমি এই মত মীনিয়া লঙ্টুয়া ভারতবর্ষের প্রশস্ত বা মধাম করোটি অধিবাসিগণের সম্বন্ধ নিরপণের চেষ্টা করিয়াছি । এই জন্য ননীগোপাল.বাবু লিখিয়াছেন-_ “মধ্য এসিয়ার ্টানের অনুসন্ধান ফলে যে প্রশস্ত করোটি আর্ধা ইরাণীভাষী মোঞ্গল সম্পক বর্জিত জন সজ্বের আবিষ্ষি,য়া হইয়াছে, তাহারা যে চিরকাল আর্ধ্য ইরাণী ভাষা ব্যবহার করিতেছে, প্রমাণাভাব সত্বেও রামপ্রসাদ বাবু তাঁহা অনুমান করিয়া লইয়াছেন। তিনি ইহাদিগকে আর্ধা বলিয়াছেন, তাহাও বিনা প্রমাণে (৩১৮ পৃঃ)1৮ যে প্রবন্ধ উপলক্ষ করিয়! (সাচিত্য ১৩২১,৬২০- ৬২১ পৃঃ) ননীগোপাল বাবু মধ্য এসিয়ার মকভুমর অধিবাসিগণকে ইরাণী আর্য জাতীয় বলার দায়িত্ব আমার ঘাড়ে চাপাইয়াছেন, সেই প্রবন্ধে আমি জয়েসের প্রবন্ধের উল্লেখও করিয়াছি, এবং তাহা হইতে, কিয়দংশ উদ্ধৃত করিয়াছি। সুতরাং জয়েসের প্রবন্ধটি একবার না দেখিয়া, এবুং তৎসম্পর্বায় গ্রমাণ অন্গসন্ধান না করিয়া, আমার ন্যায় নগণা বাক্তির স্কন্ধে অতবড় ঞ&কটা মতের দায়িত্ব চাপাইয়া, তারপর মতটাকে .এক তুড়িতে উড়াইয়া দিবার এই উগ্ভমের জন্ত আমি ননীগোপাল বাবুকে সাধুবাদ দিতে পারি ল্। এক সময়ে মধ্য এসিক়া আদিম আর্ধ্য জাতির আদিনিবাস ক্ষেত্র বলিয়া গণ হইত। তৎপর মান্লব- বাঙ্গালীর উৎপত্তি ৫৩ তত্ববিদ্গণ মুরোপের কোনও স্থানকে আদিম আর্ধ্য নিবাস বলিয়া স্থির করেন। উজফেল্ভি € ঢ]ঞিঘ্য ) নামক মানবতত্ববিৎ পামির প্রদেশের আর্ধাভাষী গালচা- গণকে আবিষ্কার করেন এবং প্রতিপাদদন করেন যে গালচাগণ বরাবরই আর্ধ্যভাষা বলিয়া আসিতেছে রোমের প্রসিদ্ধ মানবতবববিৎ সাজি (১০1 ) ইহা! হইতে সিদ্ধান্ত করেন যে, গাল্চাগণের বাসস্থান, পামির প্রদেশেই, আর্ধ্যগণের আদিনিবাসভূমি, এবং আর্্য- গণ আদৌ প্রশস্ত করোটি ছিলেন। এই কথা অবশ্যই সকলে শ্বাকার করেন না। কিন্তু গালচার ভাষা যে ধার করা ভাষা একথাও কেহ বলিতে চায় না। অবশ্যই ননীগোপাল বাবু বলেন, “এমনও হইতে পারে যে, গালডা প্রভৃতি জাতির সহিত আধ্য জাতির আদৌ কোনও সম্পর্ক ছিল না, পরে পরাজিত হইয়া তাহার আধ্য জাতির ভাষা গ্রহণ করে (৩১৮)।৮ কিন্তু ধাহারা গাল্চা ভাষা আলোচিনা করিয়াছেন, তাহারা কেহ এতটা বলিতে সাহদ করেন নাই। ননীগোপাল বাবু গালা! ভাষাতত্ব বিচার করিয়৷ যদি এইরূপ একটা দিদ্ধান্ত স্থাপন করিতে পারেন, তবে সকল জাতিতন্ববিৎ এবং ভাষাতত্ববিৎ ক্লুতজ্ঞতার সহিত তাহা গ্রহণকরিবেন। তরুমকান মরুভূমির আঁধবাসি- গণের ব্যবছত আধ্্যভাষা আবিষ্কৃত হওয়ার পরও মধ্য এসিয়ায় যে আর্ধাগণের আদি নিবাসভূমি, এই মত পুনরুজ্জীবিত হইয়াছে। অধ্যাপক মোল্টন (1:০০- 1০))0018 01 41861810) 8180. 10110165) ৮০]. ঘা]]. 1 418) ইরাণীয় নামক প্রবন্ধের টাকায় লিখিয়াছেন-_ 2] স০]7 09 09183 1507950), 0100) 9. 079156 (1:01691% 405070৮708 500 দখা 0৪৮ 0019089207৮ 701), 13810110। 1918, 19) 518 £) 15802508515 10011060) 22 ৯1১87 00 900৮1960009 01 0) £60973615 01১090৮9290 1:001)8710 18700089, &9 79৬৫7 6০ 00০ 0109৮ ৮16 880 স৪০ 059 017081 0090109 ০৫ 009 88093048519 00019 30018115 ঘ) 385518)0 [58650, 0018 9080010100 1০০ 80829880811 90৪ আনে সি) 1010059 5 8191) 75 0017 0058] 823 2019 81107000019 অধ্যাপক মোল্টনের মতে আধ্ধ্যগণের অর্থাৎ যাহারা আধ্যভাষার আদি গুরু, তাহাদের আদি পলিবাস- ৫৪8 ক্ষেত্র যুরোপ। তথাপি টীকায় লিখিয়াছেন, মধা এসিয়ার অন্তর্গত তুকিস্থানে যে তুথারীয় ভাষা! আবিষ্কৃত হইয়াছে, কতক পরিমাণে তাহার উজীর নির্ভর করিয়া জর্দানদেশীয় পণ্ডিত ফিট (৮5) সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে, তুকিস্থান আর্ধ্যগণের আদি নিবাসক্ষেত্র এই পুরাতন মতই সমীচিন। মোল্টন এই মত স্বীকার করিতে প্রস্তুত নহেন, তথাপি সত্যের অনুরোধে ইহার উল্লেখ করিয়াছেন । যাহার! আর্ধ।ভাষার এবং আধ্য সভ্যতার আদি গুরু, তাহাদের আদি বাসস্থান এসিয়ায় কি যুরোপে ছিল) তাহারা দীর্ঘকরোটি কি প্রশস্ত; করোটি ছিল, এ সকল প্রশ্নের আলোচনা এই প্রবন্ধের বিষয়ীভূত নহে। এই প্রবন্ধের আলোচ্য কথা-_ম্মরণাতীত কাল হইতে তক্ুমকান মরুদেশে আর্ধ্যতাষা প্রচলিত ছিল বা আছে কিনা। এইবিষয়ে এই ভাষাই আমাদের প্রধান সাক্ষী । এই ভাষার সহিত ভারতীয় আর্যা- ভাষানিচয়ের, ইরাঁণীয় ভাষার বা অন্ত কোন নিকট- বর্তী জনপদে কথিত আর্ধ্যভাষার তুলনায় আলোচনা করিয়া যদি দেখা যায় যে, মধ্য এসিয়ায় কথিত আর্ধ্য ভাষার সহিত এই সঞ্ল আধ্যভাষার: কোনটির ঘনিষ্ট সম্বন্ধ রহিয়াছে-_ইহা! পার্শ্ববর্তী জনপদ্দে কথিত কোনও একটি আধ্য ভাষার শাখা মাত্র-_-তবে অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে ষে, মধ্য এসিয়ার আর্ধ্যতাষা ধার করা ভাষা--বিজিত কর্তৃক পরিগৃহীত বিজেতার ভাষা । আর যদ্দি মধ্য এসিয়ার আধ্যভাষায় এরূপ সন্বন্ধের কোন চিহ্ন না পাওয়া যায়, তাহা হইলে এই ভাষাভাষি- গণকে ভাষায় আধ্য বলিতে বাধা কি? আর্ধ্য বলিলে স্মরণাতীত কাল হইতে বাহারা ভাষায় আর্ধ্য তাহা- দিগকে বুঝায়, দেহের আকারে আধ্য বা শোণিতে. আধ্য বলি কোন পদার্থের অস্তিত্ব বিজ্ঞান স্বীকার করে না। ঘণহারা তুলনামূলক ভাষাতত্ব ব৷ ধর্মতত্ব শলোচন! করেন তাহারাও এখন একবচনাস্ত 'আর্ধ্য- জাতি? (41580 25০০) শব ত্যাগ্ব করিয়া আর্ধ্য অর্থে বহুব্টনাস্ত “আর্্যজাতিনিচয়' (41৪0 1509৪) বলিতে মানসী ও মর্ধ্মবাণী [৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা আরম্ভ করিয়াছেন। দৃষ্টান্ত শ্বরূপি স্ুগ্রসিন্ধ অর্মীণ পণ্ডিত শ্রেডারের (1) 08৮০ 807809:) লেখার ' উল্লেখ করা যাইতে পারে (170০7919089018, 0? 9118101, 100 এপি) £১ ৯ 8918০৮01066, ) সুতরাং ররস্লি সাহেব যে আকারের মানুষকে আর্য ত্ঞা প্রদান করিয়াছেন তদ্যতীত অন্ত আকারের' আর্্যভাষী জনগণকে যদি আধ্য বল। যায় তবে দৌষ হইতে পারে না। মধ্য এসিয়ার অস্তগত থোটান এবং কুচার নামক জনপদদ্বয়ের নিকটে, বালুকাস্তুপ হইতে অপরিচিত ভাষায় ব্রাহ্মী অক্ষরে লিখিত অনেক কাগজপত্র এবং বৌদ্ধ গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে। * খোটান প্রদেশে আবিষ্কৃত কাগজপত্র ও গ্রন্থের ভাষা, এবং কুচার প্রদেশে আবিষ্কৃত কাগজপত্র ও গ্রন্থের ভাষা, ঠিক একরূপ নহে। জন্মীন-পগ্ডিতেরা খোটানের কাগজপত্রের ভাষাকে “তুখারায় -১৮ সংজ্ঞা এবং কুচার প্রদেশে প্রাপ্ত কাগজপত্রের ভাষাকে “তুখারীয় 7” সংজ্ঞা প্রদান করিয়াছেন। ফরাসী এবং জন্মীণ পণ্ডিতগণ এই ভাষা সম্বন্ধে যাহা লিখিয়াছেন, তাহা আমার ছুরধি- গম্য। ১৯৯৪ সালের রয়েল এসিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকান্ন ষ্টেন কনো! (1109৮) 90348 1) ১69 15000) এই ভাষা সম্বন্ধে যাহা লিখিয়াছেন, তাহ! উদ্ধৃত করিব-_ 416 1]] 000 500) 07৮৯ 809 ৮৯০11010108) 0000- 10010080170 00200115815515 510ম 078৮ 6006 18105989 10 জন1)10]) 009 87৪ /106077 আ%5 006 59178081811 ০1 009 100১7 0888. ]ু 0016 0096 16 0৮0 7১6 25209 01১ 00086 08768100858 009 88209 690809 0)8809610 8190651) ' 10015070687) 81008 1005 10880008 01০৮ ৮08) (05848) ষ্টেন কনো এখানে খোটানের এই ভাষাকে ইরা- ণীয় সংজ্ঞা প্রদান করিযাছেন এবং বলিয়াছেন যে, এই ভাষ! খৃষ্টান্বেয় হুত্রপাত হইতে খোটানে প্রচলিত ছিল। কিন্তু পারস্তের বিভিন্ন স্তরের ইরাণীয় ভাষার সহিত খোনী ভাষার ফি সম, সে বিষে ডিন বোধ কিছু বলেন নাই। ফাস্কন, ১৩২২) উদ্জ পত্রিকার একই থণ্ডে, আর একটি প্রবন্ধে, ফুচার প্রদেশে আবিষ্কৃত ভাষা সম্বন্ধে ফরাসী পণ্ডিত সিলভেন লেভি কয়েকটি মূল্যবান তথ্য প্রকাশ করিয়!- ছেন। লেভি বলেন, “কুচার রাজ্যে খৃষ্টায় সপ্তম শতাঁবে তথাকথিত “তূথারীয় 7” ভাষা প্রচলিত ছিল। তিনি এই ভাষাকে পকুচীয় (র5০১৩০১)৮ সংজ্ঞা প্রদান করিয়া ছেন) এবং নিখিয়াছেন_- গ্গুখ)9 001701091 018605 01 খে 15 00019 01 ০ টি ঢা 10001 000079558006]8 7006 000 মিমি 911৮7 13, 0.. 806 150 00810 17559 87781700690 110৮ [60৮9 10 ৮0০ 10০ 01700017582 17000156090) 979 91 1১070 07 00012855000 াসাখতালা) 29010া0ানি। আছে 870 75208016588 চিতল 2500 91103105660 009 10 8০৪৪ 7 70879 0১০07 07006 আঞত। টা 00 47900590 ৫ঞশাতিটে 0021 811002508 হঞাসেন। (00 1400 আঞাত9)১ 00 2150782 00থ (14027 8010. ঠ16010 0009), টি 109 9 ভি (00 এল ):969০ 009 অ০0 030)70% ৮7০ 10507781000 09 17000108061 00)80160 ৬10 0 41808 181102980৫6 [০ 8100 1001% মিচ্ চা, 91১2018] 09561799 দ10৬ 165 2102৮ 76121107171 09 ৮19 ৮788601515067020৭ 0? [0013১ 187৮001716০ [6৮1০- 09100 70070 800. তে 02] 0889110 16৯00-09166 উততঃ 1] 00 1009010-17581%9 গাও আটা) ৮ টিন 2 শো পল লি 00৮ হন [4৮৮0 অিঞডিগণণতা। (0029) এখানে লেভি স্পষ্টাক্ষরে বলিয়াছেন, ইরাশে বা ভারত-বর্ষে প্রচলিত আর্ধাভাষা সমূহের সহিত কুচীয় ভাষার কোন সম্বন্ধ নাই; কুচীয় ভাষার সহিত ঘনিষ্ঠ সন্বন্ধ আছে যুরোপের পশ্চিমভাগে প্রচলিত আর্ধা ভাষা- নিচয়ের, বিশেষতঃ ইটালীয় ও কেণ্ট ভাষার। এমত অবস্থায় কুচ প্রদেশের অধিবাসিগণ যে তাহাদের কোনও আর্ধ্য প্রতিবেশীর নিকট হইতে আর্ধ্যভাষ! শিখিয়া- ছিল, এরূপ মনে হয় না, পক্ষান্তরে স্মরণা্তীত কাল হইতে কুচবাসিরা আর্ধাভাষাভাষী, বা আর্ধা এইরূপ অন্ুমানই সমীচিন। ভাষাতব্ববিদগণের মতানুসরণ করিয়াই অয়েস সাহেব মধ্য এসিয়ার প্রশস্ত :কারোটি অধিবালিগণকে : [77080 86০০. বা আর্ম্জাতির সামিল করিয়াছিলেন, এবং এই লেখক তীহার ও টনের অঙন্থসরখ করিয়া মধ্যএসিয়ার অ-তুন্ধক্ক: এবং অ-মোঙগল জনসঙ্ঘকে আর্য বলিয়াছিল, “বিনা প্রমাঁণে* বলে নাইটু। বাঙ্গালীর উৎপত্তি ৫৫ মধ্য এসিয়ার অধিবাসিগণকে যে আর্ধ্য বলা যায়, একথা যেমন আমার নিজস্ব নয়, ইহাদিগকে যে, ভাষার এবং আকৃতির হিসাবে যুরোপীয় আল্লাইন জাতির (11০9 41178) তুলা মনে করা যায়, ইহাও আমার একার কথা নয়। দাক্ষিণাতোর প্রশস্ত করোটি জনগণকে যে, এসিয়া খণ্ডের এই আল্লাইন জনসজ্ঘের সহিত সম্পফিত মনে করা যাইতে পারে, এই মত হেডন কর্তৃক পপ্রচা- রিত হওয়ার, বাঙ্গালী সম্পর্ক দোষ হইতে মুক্ত, এবং ননীগোপালবাবু এবং তাহার বন্ধুগণের বিবেচনার যোগা, হইয়াছে । তারপর উড়িয়ার এবং বাঙ্গালীর কথা । বাঙ্গালীর দ্রবিড় সম্পর্ক অন্পীকার করা যায় না। রিসংলি সাহেব মনে করিয়াছিলেন, বাঙ্গালীর মধ্যে যে অনেক প্রশস্ত করোটি বা মধাম করোটি লোক আছে তাহারা মোঙ্গলীয় আগন্থকগণের বংশজীত বা মিশ্রণ- জাত। এইরূপ মনে করিবার একটা কারণ করোটির আঁকার, আর একটা কারণ উত্তর বঙ্গের কোৌচগণকে বিশুদ্ধ শোঁণিত বাঙ্গালী বলিয়া গণনা । কোঁচগণ যে বিশুদ্ধ শোণিত বাঙ্গালী নহে তাহা! তাহাদের ইতিহাস, আকার 'এবং আচার সপ্রমাণ করিতেছে । তারপর রিল বাঙ্গালীর প্রশস্ত বা মধাম. ক্যরাটি। প্রশন্ত করোটি যে মোগ্গলীয় জাতির একচেটিয়া সম্পত্তি নহে, আর্ধাভাষী বিরাট আল্লাইন জাতিই তাহার জলস্ত প্রমাণ। পক্ষান্তরে ভারতবর্ষের সীমান্তে এখন মোঙ্গ- লীয় ঢঙ্গের জাতি আছে-_যাহারা! প্রশস্ত করোটি নয়। কগিন বাউন 'এবং কেম্প (০. খে টিটিমাত)।& পি আআ. 1₹০")৮৪ জন আবর (4০:) জাতীয় পুরুষ মাপিয়াছেন, যাহাদের মধো শতকরা ৩২ জনই দীর্ঘ করোটি এবং ৭ জন মাত্র প্রশস্ত করোটি ।* সুতরাং আকারের হিসাবে বাঙ্গালীকে অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, কায়্থ প্রভৃতি যে শ্রেণীর বাক্গালীর মধ্যে প্রশস্ত করোটি এবং মধাম করোটি সংখ্যায় বেণী, তাহাদিগকে করোটির হিসাবে মোঙ্গলীয় বলিবাঁর কোনও বাঁধাবাধকতা নাই ক তিতওন ০68, 5, 1. ০], %,, ৮ ২০, ঢু. 91. | ৫৬ | মানসী ও মর্্বাণী [৮ম বর্ষ-+১ম খও--১ম সংখ্যা । জ্ীযুক্ত হর প্রদাদ শাস্ত্রী মহাশয় কুল শান্ত্রের দোহাই দিয় ' বাঙ্গালার ব্রাঙ্মণজাতিকে সরাইয়া রাখিয়া বাঙ্গালী সাধারণকে মোগল দ্রবিড় সঙ্কর বলি চাহেন। তাই বলিয়াছি, শাস্ত্ী মহাশয়ের জাতিতত উত্তট বস্তব.। যদি প্রশস্ত করোটিকে মোঙ্গল সম্পকে চিঙ্ত বলিয়া শ্বীকার করিতে হয়, তবে তাহা £রাহ্গণের পক্ষেও স্বীক।র করিতে হইবে, চণ্ডালের পক্ষেও শ্ীকার করিতে হইবে। কিন্তু বর্তমান লেখকের মতে রিস.লির কথা যদি আপুবাকা বলিয়া না ধরা যায়, তবে প্রশস্ত করোটি বাঙ্গালী ব্রাহ্মণ কায়স্থ 'প্রল্রতিকে মোঙ্গলীয় বলিয়া স্বীকার করিবার কিছুমাত্র আবশ্যকতা দেখা যায় না। নেপালের স্বয়ন্তৃপুরাণে কথিত হইয়াছে, আদৌ মঞ্জুদেব প্টীনদেশজ মানুষ” আনিগ্না নেপালে স্থাপন করিয়াছিলেন । কালিকা পুরাণে (৩৯/১০৪) কামক্ূপ সম্বন্ধে কথিত হইয়াছে__ “কিরাতৈর্বলিভিঃ ক্রুরৈ রাক্তৈরপি চ বাসিতঃ1” বাঙ্গালায় চীন বা কিরাত জাতির অন্াদয় সম্বন্ধে এইরূপ কোন পৌরাণিক কথাও প্রচলিত নাই। তবে কেন শ্বীকার করিব, বাঙ্গালা প্রশস্ত করোটি ' ব্রাহ্মণ কায়স্থ মেং্গলীয় আগন্তকগণের বংশধর । পক্ষান্তরে মারাঠাগণের মধো যাঁভারা প্রশস্ত করোটি এবং বাঙ্গালীর মধ্যে যাঁভাঁরা প্রশস্ত করোটি, ইভাঁদের সকলকে এক বংশোদ্তব মনে করিবার যথেষ্ট কারণ আছে। প্রথম কারণ, বাঙ্গালীর এবং মাঁরাঠার মধো 'আকারের সাদৃশা। একদল প্রশস্ত করোটি ভূটিয়া, একদল প্রশস্ত করোটি বাঙ্গালী ব্রাহ্মণ বাঁ কায়স্থ, এবং একদল প্রশস্ত করোটি মারাঠা পাশাপাশি রাখিয়া দেখিলে, বাঙ্গালী-মারাঁঠীর ঘনিষ্ঠতর সম্বন্ধ প্রতিভাত হইবে, না বাঙ্গালী-ভূটিয়ার 'ক্বনিষ্ঠতর সম্বন্ধ রহিয়াছে মনে হইবে, এই প্রশ্ন দ্মামব্বা ননীগোপাল বাবুকে জিজ্ঞাসা করি । ». তারপর ভাষার কখা। মারাঠী, হিনুস্থানী এবং বাঙ্গালা এই তিষ্টা আধ্য ভাষার সম্বন্ধ বিচার ক্ষরা বাউক। এই" বিষয়ের চূড়ান্ত বিচার একজন সাহেব, স্তার জর্থ্ ত্রিয়াস'ন, করিয়াছেন। শ্রিয়ার্সন আধুনিক কালে কথিত ভারতীয় আর্ধ্যভাষা গুলিকে ছুই শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়াছেন । এক শ্রেণীর নাম দিয়াছেন মধ্- দেশীয় ভাষা__ প্রধান নিদর্শন, হিন্দুস্থানী। অপর শ্রেণীর নাম দিয়াছেন বাহাভাষাচক্র | কাশ্পীরী, লণ্ড৷ (পঞ্জাবের পশ্চিমভাগে কথিত), সিম্বী, মারাচী, উড়িয়া, বি্বারী, বাঙ্গালী 'ও আসামী ভাষা “ই বাহাভাষাচক্রের অন্তর্গত উভয় শ্রেণীর ভাষার মধো মিশ্রভাষার চক্র । মধাদেশীয় হিন্দস্থানীর এবং বাহা দেশীয় ভাষাঁডক্রের মাধো এতটা গ্রভেদ যে হোর্ণলি এবং গ্রিয়ার্সনের ্তায় ুইজন প্রবীণ সাহেব পণ্ডিত মনে করেন যে, উভয় গ্রকার ভাষার আদিম বাহকগণ পৃথক সণুয়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করি- য়াছে__এক সঙ্গে আসে নাই। * স্মুতরাঁং মধাদেশ হইতে আবর্তে আবর্ভে যে সকল আর্ধা বাঞ্গালায় আসিয়াছে ভাহাঁদের নিকট হইতে যে, বাকঙ্গালার দ্রবিড় বা মোঙ্গল বাসেন্দাগণ বাঙ্গালা শিখিয়াছে, একথা কেহ বলিতে পারিবে না । পক্ষান্তরে বলিতে হইবে, যাহার] বাঙ্গালায় বাঙ্গাল! ভাষা আনিয়াছে তাহারা ভাষাঁর হিসাবে কাশ্মীরী বা মারাঠাগণের জ্ঞাতি । মারাঠাগণের এবং বাঙ্গালীর মধো যাহারা দীর্ঘকরোটি, তাহাদের অধি- কাংশই যখন তথাকথিত দ্রবিড়বংশীয়, মধাদেশ হইতে যাহারা আসিয়া মারাঠা বা বাঙ্গালীর সহিত মিশিয়াছে, তাহারা ও যখন দ্বীর্ঘকরোটি এবং মধাদেশীয় ভাষাভাষী, তখন মহারাষ্রে এবং বাঙ্গালায় বাহা আর্ধযভাষা বহনার্থ বাকী থাকে প্রশস্ত করোটি আগস্তকগণ। অর্থাৎ মহারাষ্ট্রের এবং বাঙ্গালার যে সকল প্রশস্ত :করোটি আগন্তক আসিয়া, মধাদেশীয় আরধ্যগণের এবং দ্রবিড়- গণের সহিত মিশিয়! ব্রাহ্মণ কায়স্থাদি জাতিগঠন করি- য়াছে, তাহারা ভাষায় আর্য ছিলেন। সে আর্যযভাষা তাহারা মধ্যদেশীয়দিগের নিকট, হইতে শিখেন নাই সুতরাং তাহারা নিজেরাই আর্ধ্যভাষী অর্থাৎ এক প্রকারের আর্ধ্য ছিলেন। ভারতের এই প্রশস্ত কারোটি ক্ষ 1700190 100000019) ০1, 000০ 257-950, চা ফান্তীন, ১৩২২ ] ৬ বহ্ছিশিখা! ৫৭ আর্ধ্য আগন্ধরগণের সহিত খোটানের" এবং কুচারের প্রশস্ত করোটি আর্ধ্য অধিবাসিগণের সম্বন্ধ অনুমান অসঙ্গত নহে,-সঙ্গত। রিস্‌লি সাহেবের অনুসরণ করিয়া বাঙ্গালীর আর এক শ্রেণীর পূর্বপুকুষপগণকেও ঠিক দ্রবিড় বলা চলে না। রিস.লি সাহেব দাক্ষিগাত্যের এবং মধ্য ভারতের সকল এনার্ধ্যভাষী অধিবাসিগণকেই পদ্রবিড়” সংজ্ঞা দিয়াছেন। কিন্তু ভাষাতত্ববিদ্গণ এখন একবাক্যে বলিতেছেন, সাওতাল, মুণ্ড প্রভৃতির কথিত ভাষায় এবং ভ্রবিড় ভাষায় কিছুমাত্র সম্বন্ধ নাই। দাক্ষিণাত্যে যাহারা দ্রবিড়ভাষা কযবহার করে, আকৃতির হিসাবে তাহাদের :সকলকে ন্রিসলি ভিন্ন আর কোন সাহেবই (হথ। 1)018101), ৪%81], 7৪ রঃ 0790৪) এক জাতীয় বলিয়া স্বীকার করিতে প্রস্তত নহেন। ১৩২০ সালের “সাহিত্য” পত্রে প্রকাশিত “নিষাদ” নামক প্রবন্ধে এই বিষয়ে কিছু কিছু প্রমাণ দিয়াছি, দরকার হইলে, আরও প্রমাণ দিতে পারি । সাহেবেরা দ্রবিড় ভাষাভাষী ইরুল1, পানিষ্কান প্রভৃতি কৃষ্ণকার স্থুলনাসি কাষুক্ত,র্বাক্কতি জাতি নিচযকে প্রাক্‌ দ্রবিড় (27-1)75510180) বলিতে চাহেন, আমি ইহাদের নামকরণ করিয়াছি *নিষাদ*। বাঙ্গালার আসেপাশে, ছোটনাগপুরে এবং উড়িষ্ায়, এই প্রি- দ্রবিড় (নিষাদ) লক্ষণাক্রান্ত বর্ধর জাতিনিচয়ই বিস্তর দেখা যায়। ইহাদিগকে বাদ দিয় বহুদূরে অবস্থিত,সুসভ্য দ্রবিড়গণের সহিত বাঙ্গালীর সম্বন্ধ কল্পন! এবং বাঙ্গালাকে দ্রবিড় সভ্যতার একটা প্রাচীন কেন্দ্র বলিয়া ঘোষণা যুক্তিযুক্ত কি? তেলুণগ্ড বা তামিল দেশে পুরাতন কবরের মধ্যে প্রাচীন দ্রবিড় সভ্যতার যেরূপ নিদর্শন পাওয়া গিয়াছে, বাঙ্গালায় তেমন কোন নিদর্শন আজও পাওয়! যায় নাই। সুতরাং প্রমাণাভাবে শাস্ত্রী মহাশয়ের সহিত সায় দিয়া কেমন করিয়া বলিব, বাঙ্গালা এক সময় প্রাচীন দ্রবিড় সভাতার একটা কেন্দ্র ছিল। শাস্ত্রী মহাশয়ের রচিত বাঙ্গালার প্রাচীন অনার্য সভ্যতার বিবরণ যদৃচ্ছা' কল্পিত নয় তকি? শ্রীরমাপ্রসাদ চম্দ। বহ্িশিখা দীপ্তিবূপিনী হে বহ্কি-শিখা, ছে মোর অমৃত আলো, আলো ভাবে তারে আখি-- আমারে তোমার দীপটি করিলে, ওগো ভালো সেই ভালো) অস্তর মাঝে ত্য দাহ বিরাজে অন্যে বুঝিবে তা কি? আলাও বন্ধু জালাও-_- এমনি করিয়া জীবন-বাত্রে যাত্রীরে তব চালাও। আমার বলিয়া যাহা-কিছু, কোন? অর্থ কি তার আছে-_ তোমারি পরশ শুধু তারে প্রিয় সার্থক করিয়াছে! ওগো সুনারী শিখা, চিরদহনের এ কোন্‌ মিলন দগ্ধ'ললাট-লিখা কবে কোন্দিন গ্রথম সে দেখা, জবলত্ত:'মনে আছে-_ প্রাণপতঙ্গ পলকে যেদিন আপনারে সঁপিয়াছে ! গিয়াছে তাহার সব-_ তবু নিবিল না হে খ্রি, তব অনস্ত খাণুব! হার একি প্রেম, মিলন যাহার বিচ্ছেদ পলে-পলে ) বেঘনা-অস্রু শিখারূপে যার জালামুখী হরে জলে! অঙ্গে-অঙ্গে রন্ধে-রন্ধে, হানি বিছ্যাৎ-জালা অবলুষ্টিত-কণ্ে পরালে কণ্টকে গাঁথা মাল! ) ওগো! সেই মণিহার মর্শের সাথে গাথ! হয়ে গেছে-_সাধ্য কি ভুলিবার ! তবে তাই হোক্‌__দহন তোমার, হে সর্বভৃক্‌ শিখা, পরাক্‌ তাহার ললাটের *পরে বেদনার রাজটাকা ) তোমার সে মহাদান হানুক তাহার বক্ষের মাঝে মরণ-বজ্বাণ ! হে মোর মরণ ! শেষ নিবেদন- নির্ববাণে শুধু তায়. ধূম-অঙ্কিত লাঞ্ছনা-কালী লিখোনা ললাটে আর ) .. দীপ্তি-_সে পাক্‌ পরে, দাহ থাক্‌ তার গোপন গর্ব আপনার অন্তরে ! শ্রীযতীন্দ্রমোহন বাগটী ॥ ৫৮ মানসী ও ম্বাধী [৮ম বর্ষ--১ম খও্--১ম সংখ্যা নিষিদ্ধ ফল পি প্রথম পরিচ্ছেদ । বাগবাজারের ছূর্গীচরণ বাবু তাহার দ্বাদশ বর্ষীয়া _সুুসজ্জিতা সালঙ্কারা কন্ঠাটির হস্তধারণ করিয়া! বৈঠক- খানায় প্রবেশ করিয়া বলিলেন-__“এইটি আমার মেঝ মেয়ে, রায় বাহাদুর ।৮__কন্তাকে বলিলেন_-“মা, একে ' প্রণাম কর |” ভবানীপুর নিবাসীক্রায় প্রফুল্লকুমার মিত্র বাহাছুর পারিষদগণ পরিবুত হইয়! দরিদ্র দুর্গীচরণের তক্তপোষে বসিয়া বীধা হাঁকায় ধূমপান করিতেছিলেন। মেয়েটি প্ললজ্জভাবে তাহার পায়ের কাছে মাথা ঠেকাইয়! নত নেনে গীড়াইয়া রহিল। রায় বাহাছরের বয়স পঞ্চশৎ বর্ষ হইবে । দিব্য গৌরবর্থ, পুরুষ, মোটা মোটা, হান্ঠোজ্জল বড় বড় চক্ষু, এশ্বোফ ও দাঁড়ি দুই-ই কামানো । খুব চওড়া হাপিয়া- যুক্ত বছমূলা শালের যোড়া গায়ে দিয়া বসিয়া ছিলেন । প্রসন্দৃষ্টিতে কয়েক মুহূর্ত কন্াঁটির পানে চাহিয়া থাকিয়া, বলিলেন--”বাঃ, বেশ মেয়ে, খাস! মেয়ে, বেঁচে থাক মা, সুখে থাক। দিব্যি মেয়েটি, নয় হে স্থুরেশ ?” সুরেশ-নামা পারিষদ বলিল-_"আঙ্চে তার আর সন্দেহ কি?” রায় বাহাহুর বলিলেন__পমা, তোমার নামটি কি বল ত।» মেয়েটির ওষ্ঠুগল ঈষৎ কম্পিত হইল, কিন্তু কোনও শব উচ্চারিত হইল না। ছুর্গাচরণ বাবু উৎসাহ দিয়া তাহাকে বলিলেন-_-প্বল মা, বল।” মেয়েটি তখন অর্ধস্ছুট স্বরে বলিল-_প্ভ্রীমর্তী ননয়ানী দাসী ।” রায় বাহাছুর বলিলেন-__পনন্দরাণী ? বেশ বেশ। নামটিও বেশ। : কেমন হে যতীন দাদা 1” বতীন্্র নামধারী পারিষদ বলিল--“থাসা নাম।” ছুর্গাচরণ বাবু বলিলেন-_-প্নন্দরাণী নাম-_বাড়ীতে সবাই রাণী বলেই ডাকে ।” প্রাণী? তা আপনার মেয়ে রাজরাণী হওয়ারই উপযুক্ত বটে । মুখখানি নিখু'ৎ। চোখ ছুটিও চমৎকার | ঘোষাল মশায় কি বলেন ?” ঘোষাল মহাশয় বলিলেন__“এ মেয়ে আপনারই পুত্রবধূ হবার উপযুক্ত 1৮ রায় বাহাছুর বলিলেন-__“তা, মা, ঠাড়িয়ে রইলে কেন? বদ, এইখানে বস। ছুর্গাচরণ বাবু, আপনিই বা দাড়িয়ে রইলেন কেন? বন্থুন।৮ মেয়েটি ইতস্ততঃ করিতেছিল। তাহার পিতা বলিলেন-_-“বস মা, বস ।”-_বলিয়া নিজেও উপবেশন করিলেন। মেয়েটিও মাথা নীচু করিয়া! পিতার কাছ ঘে'সিয়া বসিল। রায় বাহার জিজ্ঞাস! হি রি কি পড় মা ?” “আখ্যানমঞ্জরী দ্বিতীয় ভাগ, পছাপাঠ প্রথম ভাগ আর সরল শুভস্করী ।৮ “পাণ সাজতে জান ?” “জানি |» , ছুর্গীচরণ বাবু বলিলেন-__-“আমার বড় মেয়ে শ্বশুর- বাড়ী গিয়ে অবধি বাড়ীর সব পাণ &ঁ ত সাজে। যা খোলেন, ওরই সাজা পাণ।” রায় বাাছুর রূপার ডিবা হইতে একটা পাণ লইয়া কপ, করিয়া মুখে দিয়া চিবাইতে চিবাইতে বলিলেন-__ "বেশ পাণ। রামা-বাপা কিছু শিখেছ মা ?* রাণী বলিল--“শিখেছি ।” পতাও শিখেছ ? বেশ বেশ।' আলুভাজা, পটল ভাজা, মাছের ঝোল--এ সব রা'ধতে পায় ?* মেয়েটি ঈষৎ হাসিয়া বলিল-_পারি।” রায় বাছাছর তাহার স্ন্ধদেশে সঙ্গেছে মৃছু মৃদু ফান্তন, ১৩২২] নিষিদ্ধ কল ৫ আধাত করিতে করিতে বলিলেন_প্এরই মধ্যে শিখেছ ? লক্ষ্মী মেয়ে!” দুর্াচরণ বাবু বলিলেন-__“আমি আর বাপ হয়ে কি বলব রায় বাহাছুর-__যদি আমার মেয়েটিকে গ্রহণ করেন তবে দেখতেই পাবেন। গত মাসে আমার স্ত্রী যখন আঁীতুড়ে, বড় মেয়েটি শিবপুরে, অনেক কাকুতি মিনতি করাতেও বেয়াই মশাই. তাকে পাঠালেন না, রাণীই আমাদের সংসার চালিয়ে দিয়েছে । ওকে যদি নেন, সবই জানতে পারবেন” মাথাটি ছুলাইতে ছুলাইতে সহান্তে রায় বাহাদুর বলিলেন-_প্নেব না? নেব না? লুফে নেব। এমন মেয়ে পেলে কেউ ছাড়ে ? কি, বল হে সতীশ ?” সতীশ বলিল-_“আজ্ঞে তার আর সন্দেহ কি ?” রায় বাহাদুর বলিলেন__“আচ্ছা, আর একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, তার পর মাকে ছুটি দিই ।”__বলিয়া ননরাণীর স্বন্ধে হস্তার্পণ করিয়! তাহার দিকে ঝুঁকিয়া বলিলেন__“হ্যা মা, আমার মাথার পাকাচুল তুলে দিতে পারবে ? দুপুরবেলা, খেয়ে যখন আমি শোব, বিছানায় তোমার এই বুড়ো নতুন বাবাটির কাছে বসে বসে, একটি একটি করে পাকাচুল তুলে দিতে পারবে কি?--এটি বোধ হয় শেখনি, কি বল মা ?-_তোমার বাবার মাথায় ত পাকাচুল নেই !”__বলিয়া তিনি উচ্চ- হাস্ত করিয়া উঠিলেন। নন্দমরাণীর মুখেও ঈষৎ হাস্ত সঞ্চার হইল। সে মুখটি তুলিয়া রার বাহাছুরের মন্তকখানির দিকে চাহিল। দেখিল, সেখানে “কলৌ ইব সজ্জনা” চুলের সংখ্যা খুবই কম এবং দুর দুরাস্তে অবস্থিত । তাহার মৌনকেই সম্মতিজ্ঞান ত্ুরিয়া রায় বাহাদুর বলিলেন-_“আচ্ছা মা, সে পরীক্ষাও হবে। যাও এখন বাড়ীর ভিতর যাও ।” বাহিরে ঝি দড়াইয়া ছিল। ননারাণী তক্তপোষ হইতে নামিবামাত্র, সে আসিয়া! ভাহার হস্তধারণ করিয়া অস্তঃপুরে লইয়া গেল। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ । বৈঠক হইতে হ'কাটি তুলিয়া! লইয়া প্রায় এক মিনিট কাল রায় বাহাছ্বর নীরবে ধূমপান করিলেন। পরে হু'ক' দুর্গাচরণ বাবুর হাতে দিয়া বলিলেন_-“তার পর ভায়া, কবে বিয়ে দেওয়া তোমার মত বল। ধীঁযাঞ্ একবারে আপনি থেকে তুমি বলে ফেব্লাম ।” দুর্াচরণ বাবু বলিলেন-_-তুমিই বলুন। আপনি বল্লেই বরং আমাকে লজ্জা দেওয়া হয়। আমি আপনার, চেয়ে সব বিষয়েই ছোট । বয়সে-_-ধনে__মানে-_-” রায় বাহাদুর বলিলেন_“্যা হে-স্থ্যা। তুমি বয়সে আমার চেয়ে ছোট তা ত স্বীকারই করছি। তা৷ বলে, চুল পেকেছে বলেই আমি যে খুব বুড়ো হয়ে গেছি | তা তেব নাহা ভা হা।”_বলিয়া তিনি রণ বাবুর পৃষ্ঠ চাপড়াইয়া দিলেন । পারিষদগণও খুব হালিতে লাগিল । দুর্গাচরণ বাবু হাসিতে হাসিতে বন্িপেন-_“ববে. অনুমতি করেন তবেই বিবাহ হতে পারে।.. এই. ফাল্গুন মাসেই হোক । তবে আমি অতি সীান্'লোক -_গরীব-_” ও রায় বুহাছ্ুর বলিতে লাগিলেন--“গরীব:ত কি হয়েছে? গরীব তকি হয়েছে? গরীবই বা কিসের ? তুমি কি কারু কাছে ভিক্ষে চাইতে গিয়েছ ? আর, হলেই বা গরীব? গরীবের মেয়ের বিয়ে হবে না? লে আইবুড়ো থাকবে? হিন্দুশান্ত্রের এমন বিধান নয়। তুমি বোধ হয় আজকালের বরপণ প্রথা ভেবে এ কথা বলছ ?:সে প্রথার আমি বিরোধী-_ভয়ঙ্কর বিরোধী ।” চর্গাচরণ বাবু বলিলেন-_”আজ্ে হ্যা, তা শুনেই ভীত এ “শুনেই ত কি? পড়নি? আমার 'সামাদ্দিক- সমস্তা-সমাধান কেতাব পড়নি? তাতে বরপণ বলে একটা চ্যাপ্টারই যে. বয়েছে। বরপণ গ্রথাকে আমি, যাচ্ছেতাই করে গালাগাল দিয়েছি__একেবারে যাচ্ছে- তাই করে। পড়নি ?* সির ৬৪ ছুর্গাচরণ বাবু বলিলেন-__প্পড়েছি বৈ কি। আপনার বই কে না পড়েছে? আপনি একজন বিখাত ্রস্থকার |” রি রায় বাহাছুর বলিলেন--পকোথা বিখ্যাত ? বঙ্কিম- চন্ত্র একজন বিখ্যাত গ্রন্থকার বটে। মে আমার ' ছেলেবেলাকার বন্ধু কি না। প্রেসিডেম্সি কলেজে একসঙ্গে আইন পড়তাম। আজকের কথা? বস্কিমের খুব নাম হয়েছে বটে। তার একখানি নহুন বই বেরিয়েছে, রাজসিংহ। পড়েছ? হু হু করে বিক্রী হচ্ছে। অথচ আমার বই পোকায় কাটছে, কেউ কিনছে না। তাই বঙ্কিমকে বলছিলাম সেদিন” একজন ওঁৎস্ুক্যের সহিত জিজ্ঞাসা করিল-_“কি কথা হল?” রায় বাহাদুর বলিতে লাগিলেন__“বহ্কিমকে বল্লাম ওহে, তোমার যে রকম নাম হয়েছে, তুমি এখন এ সব লভ, আর লড়াই ছেড়ে, এমন খানকতক উপন্তাস লেখ ..স্বাতে দেশের উপকার হয়। আমার কথা ত কেউ শোনে না, তোমার কথা শুন্বে। এই যে বরপণ প্রথাট সমাজের মধ্যে প্রবেশ করেছে, ক্রমে যে সর্বনাশ হয়ে বাবে! বরপণ প্রথার দোষ দেখিয়ে চুটিয়ে একখানা নভেল লেখ। আর একখান! লেখ, যা পড়ে বাঙ্গালীর বিলাসিতাঁ_বিশেষ চা খাওয়াটা-_একটু 'কমে। এক- খানা লেখ যৌথ কারবার সন্বন্ধে। কেন বাঙ্গালীর যৌথ কারবার ফেল হয়ে যাস, কি কি উপায় অবলম্বন করলে তা সফল হতে পারে, তার বৈজ্ঞানিক তন্বটি বেশ করে বুঝিয়ে দাও। তাতে দেখাও যে জনকতক বাঙ্গালী যুবক কলেঞ্জ থেকে বেরিয়ে এক সঙ্গে মিলে যৌথ কারবার আরম্ভ করলে, আর দিন দিন তাদের খুব উন্নতি হতে লাগল। ক্রমে তারা এক একটি লক্ষপত্তি হুয়ে দাড়াল, গভর্ণমেপ্ট থেকে খেতাব পেলে ইত্যাদি। তা নয়, খালি লভ. আতর লড়াই-_লভ, আদ্প লড়াই 1--" ও সব লিখে কি হবে বল দেখি?” খোষাল মহা্গয় জিজ্ঞাসা, করিলেন-_“কি বল্লেন ব্ষিমবাবু ?” | মানসী ও'মন্মরবাণী [৮ বর্ব-১ম খণ্ড--+১ম সংখ্যা : কাটি হাতে লইয়! বায় বাহাছর বলিলেন-_ “হাস্তে লাগল। বিদ্রপ করে বল্লে--“আচ্ছা! তা হলে হলে যৌথ কারবারের নভেলটাই আরম্ভ করি। কীচ' মালের কি দর আর কোথায় কোন্‌ জিনিষ পাওয়া! যায়, রেলভাড়াই বা কত, সে গুলোও পরিশিষ্ট করে ছেপে দেব কি?--তোমার ষা খুসী তাই কর+--বলে রাগ করে আমি চলে এলাম 1” রায় বাহাদুরের মুখখানি অত্যন্ত অপ্রসন্ন দেখাইতে লাগিল। প্রায় পাচ মিনিট কাল তামাক খাইয়া তবে তিনি কতকটা' প্রর্কৃতিস্থ হইলেন। ছুর্গীচরণ বাবু বলিলেন-_-*টাঁকা কড়ি সম্বন্ধে আমার প্রতি অনুগ্রহ যদি করেন, তা হর্ধে ত আর কোন বাধাই নেই। ষে দিন অনুমতি করবেন, সেই দিনই বিবাহ হতে পারে । সামনে ফাল্গুন মাসে” রায় বাহাদুর বলিলেন_-“রও-রও। আরও কথা, আছে। আসল কথাটাই ভুলে যাচ্ছিলাম । বিবাহ সপ্তন্ধে আমার আর একটি মত আছে। সেটি যদি তুমি স্বীকার হও, তবেই আমি ছেলের বিবাহ দিতে পারি ।” ছুর্গাচরণ বাবু একটু শঙ্কিত হইয়া! বলিলেন-_“কি মত, আজ্ঞা করুন |” রায় বাহাছুর একটু নড়িয়া চড়িয়া ভাল করিয়া বসিয়া বলিলেন-_“সামাজিক-সমস্তা-সমাঁধান কেতাবে বাল্যবিবাহ বলে একটি পরিচ্ছেদ আছে। পড়েছ ?” ছর্াচরণ বাবু বিপন্নভাবে বলিলেন-_“আজ্ঞে- বোধ হয়--কি জানি-_ঠিক মনে পড়ছে না” “সে প্রবন্ধে আমি দেখিয়েছি, বাল্যবিবাহ খুব ভাল জিনিষ। আমাদের সমাজে এই একান্সবর্তী পরিবার প্রথা যতদিন প্রচলিত থকৃবে, ততদিন বাল্যবিবাহ ভিন্ন উপায় নেই। কেবরমাত্র শ্বামীটিই ভ্রীলোকের পরিজন নয়, তার শ্বশুর,” তার শ্বাশুড়ী, ভান্র, দেওর, ননদ, ভাজ এ সব নিয়ে তাকে ঘরকন্পা করতে হবে । সুতরাং ছোটবেলা থেকেই ৰউকে দেই পারব হতে হবে। কেমন কি-না?” ৮. ছুর্গাচরণ বাবু বলিলেন---আজে হ্যা-_ঠিক কথা, | ফান্ভুন, ১৬২২] "আচ্ছা, প্রদাঁণ হল, বালাবিবাহ আমাদের সমাজের পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী । এটা অনেকেই স্বীকার করেন। কিন্তু-_-এর মধ্যে একটু কিন্তু আছে ভায়া। সেটি আমার আবিষ্কার । কি বল দেখি? কিস্ত--কি ?” ছর্গাচরণ বাবু মাথা চুলকাইতে লাগ্সিলেন। কিছুই বলিতে পারিলেন না । রায় বাীতুর বলিতে .লাগিলেন- “বাল্যবিবাহ হবে বটে, কিন্ত একটু বয়স না হলে স্থামী স্ত্রীর দেখা সাক্ষাৎ হবে না । আমার কেতাবে, মেয়ের বয়স ষোল আর ছেলের বয়স চবিবশ-_এই নির্দিষ্ট করে দিয়েছি । এর পুর্ব তাদের একত্র হতে দেওয়া উচিত নয় ' ডাক্তারি শাস্ত্র খুলে দেখ, "আমার মৃত যথার্থ কি না বুঝতে পারবে ।”__বলিয়৷ রায় বাহাদুর একটু গর্বের হাসি হাসিয়া, মুখটি উন্নত করিয়া রহিলেন। ছুর্মাচরণ বাবু অধোমুখে কিয়ৎক্ষণ ভাবিয়া বলিলেন-_ “কথা তঠিকই। কিন্তু বড় মুক্ষিল যে! আমার রাণীর বয়স, এখন ধরুন বারো, শ্রাবণ মাসে বারো বেরিয়ে তেরোয় পড়বে । তবে কি তিন চার বছর 'এখন জামাই আনতে পাব ন!? বাড়ীর মেয়েরা তা হলে যে--” রায় বাহাদুর বাধা দিয়া বলিলেন__“কেন জামাই আন্তে পাবে না? অবশ্তই পাবে। যেদিন বলবে, তোমার জামাইকে পাঠিয়ে দেব। তাকে খাওয়াও দাওয়াও, আদর কর, যত্ব কর--বাড়ীর মেয়েরা আমোদ আহ্লাদ করুক-_কিন্ত এ নিয়মটি প্রতিপালন করতে হবে।” | ছুর্গাচরণ বাবু বপিলেন--”্বড় সমস্তার কথা |” বাঁধ বাহাদুর উৎসাহে উচ্চ হইয়া বসিয়া বলিলেন__ “সমস্তাই ত! সমন্তাই ত!--এই, রকম সব সমস্তার সমাধান করেছি বলেই ত আমার কেতাবের নাম * “সামাজিক-সমন্ত৮সমাধান।” এর সুন্দর উপায় আমি বের করেছি। যদিও হঠাৎ সেটা কারু মনেন্মাসে না, আসলে উপায়টি কিন্তু খুবই সোজা 1” শ্কি উপায় ?” .প্ৰউ অন্দরে থাকৃবে, ছেলে বাইরের ঘরে শোবে। নিষিদ্ধ কল ৬১ বদ্‌, হয়ে গেল।--কেমন, সহক্ত উপায় নয় ?*--বলিয়া রায় বাহাছুর হা হা করিয়া হাসিতে লাগিলেন । ছুর্গীচরণ বাবু কিয়ৎক্ষণ নিস্তব্ধ হুইয়া বসিয়া রহি- লেন। শেষে বলিলেন_-“লোকত্তঃ ধন্দ্রতঃ সেটা কি ভাল হয়?” কেহ কথার প্রতিবাদ করিলে রায় বাহাদুর অতান্ত রাগিয়া যান। 'বলিলেন-__“আমি ভাল বুঝেছি-- তাই লিখেছি । তোমার ভাল বোধ ন! হয়, অন্যত্র তোমার মেয়ের বিয়ের চেষ্টা দেখতে পার। আমার এক কথা। পাহাড় নড়ে ত নড়বে, প্রফুল্ল মিত্তিরের কথা নড়বে না।৮__বলিয়া তিনি গম্ভীর ভাবে বসিয়া রহিলেন। রায় বাহাদ্ররের এই ভাবাস্তর দেখিয়া ছুর্াচরণ বাবু ভীত হইয়া পড়িলেন। পা্রটি হাতছাড়া হইলে, বড়ই দুঃখের বিষয় হইবে। বৎসরে চল্লিশ হাজার টাকা! জমিদারী আয়, কলিকাতায় ছুই তিনখানি বাড়ী আছে, রায় বাহাদুরের ত্র একমাত্র পুত্র, বি-এ পড়িতেছে, স্বণীল, সঙ্চরিত্র, স্পুরুষ--এক পয়সা পণ দিতে হইবে না-_এমন সুযোগটি আর কোথায় পাওয়া যাইবে ? তাই সবিনয়ে, নান! মিষ্ট কথায় ছুর্গাচরণ বাবু তাহার ভাবী বৈবাহিকের মনস্তষ্টি সম্পাদনে যত্ববান হইলেন। “বাড়ীতে” পরামর্শ করিয়া যেমন হয়, আগামী কল্য প্রাতে খ্রিয়া রায় বাহাছুরকে জানাইয়া আসবেন বলিলেন। রায় বাহাদুর তখন, হাসিতে হাসিতে, স-পারিষদ বিদায় গ্রহণ করিলেন। তাহার বৃহৎ ল্যাণ্ডে৷ গাড়ী, যুগল ওয়েলারের পদতরে ছুর্গাচরণ বাবুর ক্ষুদ্র গলি কাপাইয়া সদর রাস্তায় বাহির হইয়া গেল। তৃতীয় পরিচ্ছেদ । ফাস্তুন মাসেই শুভবিবাহ ক্রিয়া সম্পন্ন হইল। রায় বাহাদুরের পুত্রের নাম, শ্ীমান হেমস্তকুমার । ফুলশধ্যা হয় নাই ? হইয়াছিল বৈকি । কিন্তু তাহ!ুর . পর যে কয়টি দিন বধূ সেখানে রহিল, বরের সহিত আর তাহার দেখ! সাক্ষাৎ হুইল না। রা বাহাদুর গুর্ব্বেই ৬২ মানসী ও মন্মবাণী [৮ম বর্ষ--১ম খগ্ড--ম১ সংখা! তাহার স্ত্রী ও পরিবারস্থা অন্ত সকলের প্রতি তাহার ভীষণ আজ্ঞা প্রচার করিয়া রাখিয়াছিলেন। গৃহিণী, নিজের স্বামীকে বেশ চিনিষ্টেস, সুতরাং হুকুম রদ্‌ করাইবার জন্য আর বৃথা চেষ্টা করিলেন না । সপ্তাহকাল থাকিয়া রাণী পিত্রালয়ে চলিয়া গেল। দুর্ণীচরণ বাবু জামাতাকে নিমন্ত্রণ করিয়া আন! স্ববুদ্ধির কাঁধ্য বলিয়া! বিবেচনা করিলেন না। গৃহিণী কর্তৃক এ বিষয়ে বার বার অন্ুরুদ্ধ হইয়া কহিলেন__ .”দেখ, জামাইকে সাল বেল নিয়ে 'এসে বেলাবেলি ফিরে পাঠাতে পারি । কিন্তু তার ছেলের সঙ্গে বউয়ের দেখা হয় নি, এ কথা বেয়াই যদি বিশ্বাস না করেন, আমি তখন সাফাই সাক্ষী পাব কেথা? বেয়াইয়ের মেজাজ জান ত?” জ্যেষ্ঠমাসে জামাষ্ট ষষ্ঠী হইল। দুগ্গীচরণ বাবু রাণীকে শিবপুরে তীহার বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ীতে ঝাখিয়া, মাতব্বর এলিবাই সাক্ষী স্থষ্টি করিয়া, তাহার গর হেমস্তকুমারকে গুহে আনিয় জামাতার্চন করিলেন। আষাঢ় মাসে রায় বাহাদুর বধুকে নিজ বাটাতে আনয়ন করিলেন। হেমস্ত এতদিন অন্তঃপুরেই শয়ন করিত, এইবার বহির্বাটীতে নির্ধাসিত হইল । এ বৎসর তাহার এগজজামিনের পুড়া, কিন্তু মেঘদূত মুখস্থ করিয়া ও পয়ারাদি বিবিধ ছন্দে বিরহমূলক নানা কবিতা লিখিয়! সে বর্ধাধাপন করিতে লাগিল। হইবার জলযোগ ও ছুইবার আহার করিবার জন্ত মাত্র হেমস্তকুমার অন্তঃপুরে প্রবেশ করিত। বধু আমিবার দিন পনেরো পরে একদিন হটাৎ উভয়ের চোখোচোথী হইয়া গেল। মাঝে মাঝে এইরূপ চোখোচোখী হইতে লাগিল। নির্দিষ্ট চারিবার ভিন্ন, আরও ছুই তিনবার অন্তঃপুকে প্রবেশ করিবার অছিল! হেমস্ত আবিষ্কার করিয়া লইল। সন্ধার পুর্বে একদিন জল থাইয়! ফিরিবার পথে হেমন্ত দেখিল, বধু একস্থানে জড়সড় হইয়া ঘোমটা দিয়! দাড়াইয়া আছে । আশে পাশে কেহই নাই। যাইবার সময় 'সৈ বধূর শাড়ীটি স্পর্শ করিয়া গেল। ইহার পর হইতে প্রায় প্রতিদিনই এরূপ ঘটনা ঘটিত। ক্রমে পত্র বিনিময়, তাদ্ুল বিনিময় এবং আরও কি কি বিনিময় ঠিক জানি না-_সেই মুহূর্তের মিলনেই সম্পন্ন হইতে লাগিল। বর্ধা কাটিল, শরতকাল আসিল। ভাদ্রের শেষ সপ্তাহে, (মাসের পয়লা তারিখে কাগজ বাহির হওয়া তখন রেওয়াজ হয় নাই) “বঙ্গবাণী* মালিক পত্রিকাঁয় ণ্চকোরের বাথা” শীর্ষক হেমস্তের এক কবিতা ছাপা হইল। নিয়ে তাহার নামও স্বাক্ষরিত ছিল। কবিতাটি কেমন করিয়া রায় বাহাছুরের চক্ষে পড়িয়া যায়--পর- দিন তিনি বৈবাহিককে পত্র লিখিলেন__প্বধূমাতা অনেকদিন আসিয়াছেন মার জন্য বোধ হয় তাহার অতান্ত মন-কেমন করে । অতএব আশ্বিন মাস পড়িলেই তাহাকে তুমি কিছুদিনের জন্ত লইয়া যাইবে ।”__ দুর্গাচরণ বাবু আসিয়! কন্টাকে গৃহে লইয়া গেলেন। চতুর্থ পরিচ্ছেদ | কান্তিকমাসে প্রেমিডেন্দি কলেজ খুলিবার ছই তিন দিন পরে ক্লাসে বপিয়া৷ হেমন্ত একথানি পত্র পাইল। শিরোনামার হস্তাক্ষর অপরিচিত-_বাঞ্চালায় লেখা এবং স্ত্রীলোকের লেখা বলিয়া বোধ হইল। দেখিয়া হেমন্ত একটু আশ্চর্য্য হইল, কারণ কলেজের ঠিকানায় কখনও তাহার পত্রাদি আসে না। টিকিটের উপর মোহর দেখিল-__শিবপুর ৷ পার্থোপবিষ্ট জনৈক ছাত্র বলিল-_“গিরীর চিঠি নাকি ?”__“না”- বলিয়া পত্রথানি হেমস্ত কোটের বুক পকেটে লুকাঁইয়! রাখিল এবং অধাপকের বক্তুতার গ্রতি বিশেষ মন£সংযোগের ভাণ করিয়া রহিল « আসলে তাহার মনের মধো নিয়লিখিত প্রশ্নগুলি উদ্দিত হইতেছিল-_ ট (১" শিবপুরে আমার বড় শ্যালীর স্বগুরবা ড়ী, সেখান হইতেই কি পত্র আসিল? (২) কখনও ত আসে না, আজ আদিল তাহার কারণ কি? ফান্তুন, ১৩২২ ] (৩) ক্বাণী কি তাহার দিদির মাফ আমাকে এ চিঠি পাঠাইয়াছে ? (৪) তাহাই হদি হয়, তবে দিদির মারফত তাহাকে চিঠি লেখা আমার উচিত হইবে কি না? (৫) যদি লিখি তবে বাবার তাহ! ধরিয়া ফেলিবার সম্ভাবনা আছে কি না? (৬) সকলের বাবা যেরূপ, আমার বাব! সেরূপ নহেন কেন? এমন কঠিন এমন নিষ্ঠুর কেন? এই সকল ছুরূহ বিষয় চিন্তা করিতে করিতে হঠাৎ হেমস্ত পিপাসা অনুভব করিল। ক্লাসের শেষ দিকে এবং দরজার অতি*নিকটেই সে বসিয়া ছিল__সুরুৎ করিয়। বাহির হইুয়া গেল। জলের জন্ত দ্বারবানের নিকট তাহাকে যাইতে হইল না--কারণ পকেটের ভিতর লেফাফার মধ্যেই তাহা ছিল । বাগানে নামিয়া গিয়া পত্রখানি খুলিয়া সে পাঠ করিল । তাহাতে লেখা ছিল-_ ১৭নং বিনোদ বোসের গলি, শিবপুর । ২৫শে কার্তিক । কলাবরেষু ভাই হেমন্ত, তুমি আমাকে চিনিতে পারিবে কি না বলিতে পারি না, কারণ একদিন মাত্র বাসরঘরে আমায় ভুমি দেখিয়াছিলে, তাহা ও ৮৯ মাস পুর্বে । আমি তোমার, দিদি হই, তোমার শ্বশুর মহাশয়ের জোষ্ঠা কন্া । উপরে লিখিত ঠিকানায় আমার শ্বগুরালয়। আমার দিদিশ্বাশুড়ী তোমায় দেখেন নাই-_ একবার দেখিতে ইচ্ছা করেন। তোমার কলেজ হইতে শিবপুর এমন ত কিছু দূর ন্েঁ_-বড় জোর এক ঘণ্টার পথ। শিবপুর ঘাটে নামিয়! যাভাকে আমাদের ঠিকানা বলিবে, “সেই পথ দেখাইয়া দিতে পারিবে। তোমার সঙ্গে আমারও অনেক অত্যাবস্কীয় কথা আছে--মতএব যত শীঘ্র পার, অবশ্ত অবশ্ত এক- দিন আসিবে। বেলা বারোটা হইতে ছুইটা'র মধ্যে নিষিদ্ধ ফল ৬৩ আসিলেই ভাল হয়। আমার শ্বশ্রঠাকুরাণীর অনুমতি অনুসারে এ পত্র তোমায় লিখিতেছি। আশীর্বাদিকা তোমার দিদি যামিনী। পুঃ রাণী গতকল্য হইতে এখানে । আগামী রবিবার বাবা তাহাকে লইয়া যাইবেন। পত্রথানি, বিশেষতঃ শেষ ছুই লাইন ছুই তিনবার পাঠ করিয়া হেমন্ত ক্লাসে ফিরিয়া গেল। অধ্যাপক মহাশয় তখন সনেটের স্বরূপ বুঝাইয়া বলিতেছিলেন-_ শেষ ছুই লাইনেই সনেটের সমন্ত মিষ্ট রসটুকু জম! হইয়া থাকে। সেদিন কলেজে বাকী কয় ঘণ্টা কিযেবক্তৃতা হইল হেমন্ত তাহা কিছু বলিতে পারে না। . বরাতে শয়ন করিয়া সে ভাবিতে লাগিল, রাণী আসি- য়াছে বলিয়া কি দিদি ডাকিয়া পাঠাইলেন ? না কাহার দিদিশ্বাশ্ুড়ী সতাসতাই আমাকে দেখিবার জন্ত ব্যাকুল? সেখানে গেলে, রাণীর সঙ্গে আমার দেখা হইবে কি? যেরকম কপাল, ভরসা ভয় না। প্পিতৃনতা রক্ষা করিবার জন্য রামচন্দ্র বনে গিয়াছিলেন_-আমি কন্তা ভইয়া বাবার সতাভঙ্গ. করাই কেন”-__-এইরূপই যদি দিদির মনের ভাব হয় ?_-হয়, হউক | তাহার যদি আমায় জল থাওয়াইবার জন্ত পীড়াগীড়ি করে, কখনই থাইৰ না। একটা পাণ পর্যাস্ত থাইৰ না ।_-আবার তাহার মনে হয়--না, দেখা হবে বৈকি, অবশ্াই হইবে। সকল কথা জানিতে পারিয়াই বোধ হয় দিদি তাহাকে সেখানে লইয়া গিয়াছেন। দিদির বাবাই সতাবদ্ধ__দিদি ত আর সতাবদ্ধ হন নাই। বোধ হয় আমাদের দুঃখে প্রাণ কাদিয়াছে_-তাই এ কৌশল 'অবলম্বন করিয়াছেন । নহিলে, বাড়ীর ঠিকানায় চিঠি না লিখিয়া কলেজের ঠিকানায় চিঠি লিখিলেন কেন? রাণী সেখানে রবিবার অবধি আছে, 'এ কথাই বা বিশেষ করিয়া! লিখিবার কারণ কি?-_দেখা বোধ করি হইতে পারে। | ৬৪ _ মানসী ও মপ্রবাণী [ ৮ম বর্ধ---১ম 81 সংখ্যা ২5 ১5 নানু পল হেমস্ত আজ ন্নানাহার একটু তাড়াতাড়ি সারিয়া লইল-_অন্য- দিন অপেক্ষা একঘণ্টা পৃর্কেই আজ কলেজ যাত্রা করিল। আজ নাকি এগারোটা হইতেই লেকচার আরম্ত। পৌনে এগারোটার সময় কলেজের সম্মুখে গাড়ী হইতে নামিয়া কোচম্যানকে হেমন্ত রলিল আঙ্ বাড়ী ফিরিতে তাহার দেরী হইবে, চারিটার পূর্বে গাড়ী আনিবার প্রয়োজন নাই । গাড়ী চলিয়া .গেল। দ্বারবানের নিকট পুস্তকাদি রাখিয়া হেমস্ত একথানি ঠিকা গাড়ী লইল। তখনও ফলিকাতাপ্প বৈদ্যুতিক ট্রাম হয় নাই-_-ঘোড়ার ট্রাম-_ মাঝে মাঝে অচল হইয়া পড়িত। ট্রামকে হেমন্ত বিশ্বাস করিতে পারিল না। ঠিকা গাভীতে প্রিন্দেপস্‌ ঘাট-সেখান হইতে নৌকা! যোগে শিবপুর ৷ গঙ্গাবক্ষ হইতে শিবপুর দেখা াইতে লাগিল। হেমন্ত সেইদিকে বাকুল ভাবে চাহিয়া রহিল । নৌকা চলিতেছে-_-একবারে গজেক্জ্র গমনে 1-্াড়ি বেটার কুড়ের বাদশাহ ! শিবপুর ঘাটে নামিয়া, বাড়ী অগ্রসন্ধান করিয়া লইতেও কিছু সময় নষ্ট হইল। শুনিল, গৃহকর্তা হাওড়ার উকীল। তাহার পুত্র-_বাগবাক্কারে যাহার বিবাহ হইয়াছে-_সে কলিকাতায় কোন হউসের নায়েব খাঁজাঞ্চি। পথের লোঁকের নিকটেই এ সকল সংবাদ হেমস্ত সংগ্রহ করিল। ১৭ নম্বরের সন্ুথীন হইবামাত্র হেমস্ত ঘড়ি খুলিয়া দেখিল--কলেজ হইতে আসিতে এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিট লাগিয়াছে। ডাকাডাকিতে একজন তৃত্য আরিা দ্বার খুলিয়া, দিল। পরিচয় লইয়! অস্তঃপুরে সে সংবাদ দিতে গেল। ক্রমে একজন ঝি আসিয়া বলিল-_“জামাই বাবু ভাঁল »ক্াছেন ত1? আনুন, বাড়ীর ভিতর আন্গুন।*-_ তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ হেযস্ত ক্রমে দ্বিতকের একটি কক্ষে উপনীত হইল। . অ্লক্ষণ রন শক ভাই চিন্তে পার 1"_-বজিরা উনিশ কিনব! কুড়ি বৎসর বয়সের গৌরবর্ণা হান্তময়ী এক যুবতী আসিয়া প্রবেশ করিলেন। তীহার কোলে এক বৎসরের একটি শিশু । ! হেমন্তের মনে পড়িল, বাঁসরধরে ইহাকে দেখিয়া- ছিল বটে।-_প্যামিনী দিদি ?”__বলিয়া তাহাকে প্রণাম করিতে উদ্ভত হইল । যামিনী বলিল--“হয়েছে ভাই, আমি অমনিই তোমায় আশীর্বাদ করছি । আর, আশীর্ববাদের দরকারই বাকি? রাণীর সঙ্গে যেদিন তোমার বিয়ে হয়েছে__- সেইদিনই ত রাজা হয়েছ ।”-__বলিয়া যামিনী সুমিষ্ট হাসির লহরী তুলিল। সঙ্গে সঙ্গে, রুদ্ধজানালার বাহিরে বারান্দা হইতে একাধিক তরুণীকঞ্ঠে চাপা হাসির একটা! গুপ্তনধবনিও শুনা গেল।-_-“কে লা ছু'ডি গুলো-_পালা এখান থেকে বলছি”__বলিয়া যামিনী বাতির হইবামাত্র ঝম্‌ ঝম্‌ শর্ধ করিতে করিতে কয়েক যোড়া পদ সিঁড়ি দিয়া নামিয়া গেল। যামিনী ফিরিয়া আসিলে হেমন্ত জিজ্ঞাসা করিল --“দিদি, আমায় ডেকেছেন কেন ?” “কেন বল দেখি? যদি বলতে পার ত-_ সন্দেশ খাওয়াব*-_বলিয়া ষামিনী হাসিতে লাগিল। প্বল্তে পারলাম না দিদি-_সন্দেশ আমার ভাগো নেই”-_বলিয়া হেমস্ত খোকাকে কোলে লইবার জন্ হাত বাড়াইল। থোকা এই অপরিচিত বাক্তির কোলে যাইট্ত রাজি হইল না। তাহার মা তাহাকে কত করিঝ্রা বুঝাইল-_ প্যাও বাবা কোলে যাও) তোমার মেছো! মছাই হন, তোমায় কত ভালবাসবেন, কত আদর কর্বেন, নক্ষি বাবা-_বাও বাবা-_পাঁজি হতভাগা ছেলে, কোলে না গেলি ত তার বয়েই গেল।* বাড়ীর কুশলাদি জিজ্ঞাসার পর যামিনী বলিল, -গ্হ্যা ভাই, কটা অবধি তি এখানে থাকৃতে পারবে 1” হেমন্ত এ অনি পূর্যেই মনে মনে কথিরা বাখিক্কা- ফান্তব, ১৩২২] ধু | রি রি ফল 08১১00000১১ ৬৫. ছিল। বলিল-_প্বেলা আড়াইটের়। সময় আমাকে বড়ই ব্যাঘাত হচ্ছে। কল্কাতায় মেসে গিয়ে এ কটা বেরুতে হবে দিদি ।” ঘরে ক্লক ছিল, যামিনী দেখিল সাড়ে বারো প্রার বাজে। বলিল--“আচ্ছ! দিদিমাকে তবে ডেকে আনি।” ্ ছুইমিনিট পরে হেমন্ত গুনিল, ঝুম্‌ ঝুম্‌ করিয়া মলের শব্খ নিকটে আদিতেছে। হেমস্ত ভাবিল, দিদির পায়ে ত একগাছি করিয়৷ ডার়মন-কাঁটা মল দেখিয়াছি-_ ঝুম্‌ ঝুম্‌ করিয়া কে আসে ? দিদিমার আওয়াজ কি এ রকমটা হইবে ? সে শব্দটা কিন্তু ঘর অবধি আসিল না, বাহিরেই থামিয়া গেল। যুমিনী একাকিনী প্রবেশ করিয়! হাসিয়া বলিল-_“দিদিমার এখন অবসর হল না ভাই-_ এখন তর আহ্বিক সারা হয় নি। অন্ত কাউকে তোমার যদি দরকার হয় তবল। আর কাউকে চাই ?” হেমন্তের মুখ রাঙা হইয়া উঠিল। আশায় ও আনন্দে তাহার বুকটি টিব্‌ টিব্‌ করিতে লাগিল। যামিনী হাসিয়া বাহির হইতে যাহাকে টানিয়া আনিল, কুস্থম রঙের শাড়ীতে তাহার আপাদমস্তক আবৃত। তাহাকে ভিতরের দিকে ঠেলিয়া দিয়া সে বলিল-_-“এই নাও-_তোমার রাণী নাও ভাই রাজা। রাজা ও রাণীর অভিনয় আমরা কেউ আড়ি পেতে দেখব না-সে আমরা থিয়েটারেই দেখে নিয়েছি। আমি এখন চল্লাম, নিশ্চিন্ত হয়ে দুটো অবধি তুমি রাজত্ব কর। আমি ততক্ষণ তোমার জন্তে জল খাবার তৈরি করিগে ।”_ বলিয়া কোন উত্তরের অপেক্ষা মাত্র না করিয়া সশষ্ষে সি'ড়ি দিয়া নামিয়া গেল। পঞ্চম পরিচ্ছেদ । কার্তিক মাস"কাটিল, অগ্রহায়ণ আসিল। এখন আর হ্মেন্তের কলেজ নাই, বক্তৃতা সাঙ্গ হইয়া গিয়াছে, ফাল্গুন মাসে পরীক্ষা। কর়েকদিন বাড়ীতে থাকিয়া হমস্ত. বলিল--“এখানে গোলমালে আমার পড়াগুনোর ৯ খু মাস আমি থাকি |” পুত্রের এই অধ্যয়নম্পৃহায় পিতা কোনও বাধা দিলেন না। | হেমন্ত মেসে গিয়া রহিল। ইতিমধ্যে তাহার শ্তালীপতি কুগ্জলালের সহিতও আলাপ হইয়াছিল। মাঝে মাঝে আপিসের পর কুপ্জ আগিয়া তাহাকে শিব- পুরে ধরিয়া লইয়া যাইত। যামিনীর ভগ্মীস্সেহও এ সময় অতান্ত বাড়িসজ। উঠিয়াছিল-_প্রায়ই সে রালীকে পিতৃগৃহ হইতে আনাইয়া নিজের কাছে রাখিত। ফাল্গুন মাসে হেমস্তের পরীক্ষা হইলে, রার বাহাদুরও বণূকে নিজ বাটাতে পুনরানয়ন করিলেন। বৈশাখের শেষে বি এ পরীক্ষার ফল বাহির হইল। হেমন্তের নাম গেজেটে কোথাও খুঁজিয়া পাওয়া গেল না। গ্রীষ্মের ছুটির .পর কলেজ খুলিলে রায় বাহাছুর পুত্রকে বলিলেন,_বাড়ীত্বে গোলেমালে পড়াগুনে! ভাল হবে না। তুমি বধ্ধং কলকাতায়" মেসে গিয়ে থাক 1৮ পিতাকে হেমন্ত কিছু বলিতে সাহস করিল না। মার কাছে গিয়া মেসে থাকা ঘে কি কষ্ট, আহারাদির বন্দোবস্ত সৈথানে যে কিরূপ শোচনীয় ও স্বাস্থ্যহানিকর, সমস্তই সবিস্তারে বর্ণনা করিল। গৃহিণী সভয়ে শ্বাফীর নিকট এ কথ! উতাপন করিয়া তর্জিত হইয়া ফিরিয়া আসিলেন। মেসেই হেমস্তকে বাইতে হইল। পিতৃ আজ্ঞা অনুসারে প্রতি রবিবার প্রাতে হেমস্ত বাড়ী আসে, জলযোগার্দির পর বৈকালে আবার বাসায় ফিরিয়া যায়। অন্তঃপুরে যাতায়াতের পথে রাধীর শাড়ীর রঙটি *পর্য্স্ত আর সে দেখিতে পায় না । ছুইতিন রবিবার এইরূপে কাটিলে, বাড়ীর একজন ঝিকে ঘুষ দিয়া, স্ত্রীর নিকট হেমস্ত পত্র পাঠাইল। রবিবারে রবিবারে ঝির মারফৎ উভয়ের পত্র ব্যবহাক্স চলিতে লাগিল। ৬৬ মানসী ও মর্দরধাণী [৮দবর্ধ--১ম খও--১ম সংখ্যা ক্রমে পুজা আসিল। ছুটিতে হেমস্ত বাস! ছাড়িয়া বাড়ী আসিল। বড় আশ! করিয়াছিল, অন্ততঃ বিজয়ার প্রণাম করিবার উপলক্ষ্যেঞ্জ রাণী একবার তাহার কাছে আসিতে পাইবে কিন্তু তাহার. মে আশাও বিফল হইল। হেমন্ত এখন হইতে বড়ই হতাশ্বাস হইয়া পড়িল। বথন বাড়ী আসে, চুপ করিয়া উদাসনেত্রে বসিয়া থাকে । কখনও কখনও মাথায় .হাত দিয়া বসিয়া ভাবে। এক রবিবারে বি নিরিবিলি পাইয়া হেমস্তকে বলিল-_“দাদা বাবু, বউদ্দিদিমণি রোজ রাত্রে কীদেন।” হেমন্ত বলিল-_"“কেন ঝি? কাদে কেন?” ঝি বলিল--প্হাঁজার হোক দাঁদাবাবু, সোয়ামি ত। বউদ্দিদিমণি বলেন, এমন কপাল করে ভারতেও এসেছিলাম যে সোয়ামিকে চোখেও করা দেখতে পাইনে।” “তুই কি করে জান্লি ঝি?” “যে ঘরে বউদ্দিদিমণি শোন, আমিও সেই ঘরেই নীচে বিছান! করে শুই কি না।” পর রবিবারে ঝি বলিল--“দাদাবাব্‌, 'একটিবার আপনি বউদিদিমণির সঙ্গে দেখা করুন|” -_পউপায় কি ?* “আপনি যদি এক কায করেন ত হয়” শকি কাধ বি ?” “আপুনি যেমন রবিবারে আসেন, একদিন যদি বলেন আমার শরীর খারাপ হয়েছে কি কিছু হয়েছে, এই বলে যদি রাত্রে এখানে থেকে যান, তাহলে অনেক . রাতে সবাই ঘুমুলে আমি আস্তে আস্তে উঠে এসে আপ- নাকে দোর খুলে দিতে পারি ।” হেমন্ত বসিয়া ভাবিতে লাগিল। রাণী যে ঘরে শয়ন করে, সি'ড়ি দিয়া দুতালায় উঠিয়া সেই প্রথম ঘর ভাহার পিতার শন ঘর, সেখান হইতে কিছু দুরে। খুব সাবধানে ধাঁইতে পারিগে, বোধ হয় সফল হওয়া শবিচি্ব নহে । কিন্তু বড় তর করে। বদি ধরা পড়িয়া যায়--ছি ছি-_সে বড় কেলেঙ্কারি। হেমন্ত ঝি বলিল--কি বলেন দাদাবাবু 1" *তোর বউদ্দিদিমণি কি বলেন ?” “তিনি বলেন, না ঝি ওসব কায নেই, আমার ' বড় ভয় করে।” “আচ্ছা আমি ভেবে দেখ ব”্--বলিয়! ঝিকে হেমস্ত আপাততঃ বিদায় দিল। বাসায় ফিরিয়া গিয়া রোমিও ও.ভুলিয়েট পড়িতে পড়িতে হুঠাৎ তাহার মনে হইল, যদি দড়ির মই পাই, তবে বাগান দিয়া, পশ্চাতের জানালা পথে রাণীর শয়ন ঘরে প্রবেশ করিতে পারি। অনেক সন্ধানে জানিতে. পারিল, সাহেৰ বাড়ীতে ১৫২ মূলো দড়ির মই কিনিতে পাওয়া যায়। কাঁলবিলম্ব না করিয়! সেই মই একটি হেমন্ত কিনিয়া আনিল। পরবর্তী রবিবারে ছোট একটি ব্যাগের মধ্যে সেই মইটি লুকাইয়া হেমস্ত বাড়ী গেল। যথাসময়ে বির দ্বারায় সেই মই এবং একখানি পত্র স্ত্রীর নিকট চালান করিয়া দিল। পত্রে এই প্রকার লেখা ছিল :-_ আমার হৃদয়ের রাণী, একবৎসর কাল বিচ্ছেদ সহ্িলাম, আর পারি না। তোমায় একটিবার দেখিতে না পাইলে এইবার আমি পাগল হইয়া যাইব। ঝিষে উপায় বলিয়াছিল, তুমি তাহাতে অমত করিয়াছিলে। আমিও অনেক ভাবিয়া! চিন্তিয়া দেখিলাম, উহ! নিরাপদ নহে । এবার কিন্তু একটি সুন্দর উপায় আমি আবিফার করিয়াছি। তুমি যদি সাহস কর, তবেই আমাদের মিলন হইতে পারে । ঝির হাতে ষে জিনিষটি পাঠাইলাম, তাহা একটি দড়ির মই। উহার একটা প্রান্ত, তোমার ঘরে বাগানের দিকে যে জানালা 'আছে, সেই জানালায় বাধিয়া যদি নিম্নে ঝুলাইয়া! দাও, তবে আমি বাগান হইতে এ মই দিয়া অনায্নামে তোমার ঘরে উঠিয়া যাইতে পারি। দড়ি খুব শক্ত--ছি'ড়িবার কোনও ভয় নাই। এখন তুমি সাহস করিলেই হয। কল্য রাত্রি এগায়োটার সময় মইটি জানালাক্গ বেশ শক ফাল্তুদ, ১৩২২] করিয়া বাধিক্া উহা নীচে ফেলিয়া দিবে। এগারোটা হইতে সাড়ে এগারোটার মধ্যে আমি প্রাচীর ডিঙাইয়া বাগানের ভিতর দিয়! :তোমার জানালার নিকট গিয়া পৌছিব। এ প্রস্তাবে তুমি যদি সম্মত না হও তাহা হইলে আমার মর্্ান্তিক কষ্ট হইবে জানিও। লক্ীটি আমার, ইহাতে অত করিও না । .কোনও ভয় নাই, বিপদের কিছুমাত্র আশঙ্কা নাই। আবার ভোর বেলায় এ মই দিয়া নামিয়া আমি কলিকাতায় চলিয়া আসিব। পাণ গোটাকতক বেশী করিয়া আনিয়া রাখিও। ইতি। তোমার স্বামী । ঘণ্টা ছুই পরে বি ফিরিয়া আদিলে হেমস্ত জিজ্ঞাসা করিল--“কি ঝি, মত হয়েছে ?” ঝি বলিল,__“হয়েছে, কিন্ত অনেক কষ্টে ।” পতবে, কাল রাত্রে এগারোটার পর আমি আসব ?” "“আস্বেন।” “আচ্ছা, তবে কথা রইল। তোমরা ঠিক থেক” “ঠিক থাকব দাদা বাবু 1” ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ । কলিকাতায় শীতটা এবার বড় শীগ্ই পড়িয়া গিয়াছে। যদিও এখনও অগ্রহায়ণ শেষ হয় নাই তথাপি জলের পাত বেশ তীক্ষ হইয়াছে, সন্ধ্যারাত্েও গায়ে লেপ সহ হুয়, দিবসেও লোকে গরম মোজ! ব্যযহার করিতে আরম্ভ করিয়াছে। সংবাদপত্রে প্রকাশ কোহাট গিরিবর্ত্বে তুষারপাত, হইয়! গিয়াছে। অন্ধকার বাক্রি। বির্জিতলার ঘড়িতে $ং ঠং করিয়া এগারোটা বাজিলৎ। ভবানীপুরের যে অংশে রায় বাহাছুয় প্রফুল্ল মিত্রের বাস, ভাহা। রষা কোড, "হইতে কিছুদূর পশ্চিমে। সদর ফটকটি বড় রাস্তার উপর, বাড়ীর গশ্চাত্তের বাগানের দুইদিক দিয়া অপেক্ষাকৃত জনহীন পথ। বাগানের পশ্চিম দিকের পথটি ত আরও, নিষিদ্ধ কল ৬৭ জনহীন, কারণ তাহার অপর পারে কয়েকটা সুর্কির কল, রাত্রে সেখানে কেহ বড় থাকে না। এগারোটা বাজিবার অক্লক্ষণ পরেই কীসারিপাড়া রাস্তার মোড়ে একথানি ঠিকা গাড়ী আসিরা। দীড়াইল। কালো আলোয়ানে আবৃত দেহ একব্যক্তি গাড়ী হইতে নামিয়া কোচম্যানকে ভাড়ার টাকা দিল। গাড়ী তখন ধীরে ধীরে সেখান হইতে সরিয়া গেল। বল! বাছুলা যুবক আর কেহ নহে, বিরহজরাক্রাস্ত আমাদেরই হেমস্ত। হেমস্ত তখন দ্রুতপদক্ষেপে তাহাদের বাগানের পশ্চাতের রাস্তাটির দিকে চলিল। কাছাকাছি আসিয়া সে নিজ গতিবেগ কিঞ্িৎ হাস করিয়া দিল। রাস্তাটি যেখানে বাঁকিয়া বাগানের দিকে গিয়াছে, সেখানে হেমন্ত দেখিল একজন কন্ষ্টেবল কম্বলের ওভারকোট গায়ে দিয়া একজনের বাড়ীর দেউড়িতে বসিয়া দিগারেট খাইতেছে। চোরের মন-_হেমস্ত আড়চোখে তাহার পানে চাহিতে চাহিতে গেল। সেই মোড়ের উপর যে লন ছিল, কিছুদূর অবধি বাগানের প্রাচীর তন্দবার আলোকিত। তাহার পর অন্ধকার। হেমন্ত ভাবিল, এ অন্ধকার অংশের কোনও একটা সুবিধঃমত স্থানেই প্রাচীর লঙ্ঘন করিতে হইবে। অনেক বয়স অবধি সে জিম্ন্াষ্টিক করিয়াছিল, এখনও রীতিমত ফুট্বল থেলে-__তাহার হাতে পায়ে . বিলক্ষণ বল। লঙ্ঘনের উপযোগী প্রাচীরের একটা! স্থান সে অন্বেষণ করিতে লাগিল। এমন সময় দূরে কাহার পদশব গুনিল। দ্ৃতরাং অপেক্ষা করিতে হইল। অথচ এক স্থানে দীড়াইয়া থাকাও চলে না। যে দিক হইতে পদশব্ব আদিতে- ছিল, সেই দিকেই হেমন্ত যাইতে লাগিল। ক্রমে দেখিল দোকানী অথবা! মিন্ত্রী শ্রেণীর একজন লোক ' তাহাকে অতিক্রম করিয়া! গেল। হ্মস্ত আবার ফিরিল। যে স্থানটা সে লঙ্ঘনের ». অন্ত নির্বাচিত করিক্নাছিল, তাহার অপর দিকে একটা বৃহৎ জামরুল গাছ আছে। প্রাচীর হইতে লাফ দিয়া ৬৮ সেই গাছের একট! ডাল ধরিয়া ঝুলিয়া পড়াই তাহার অভিপ্রায় । ৃ্‌ অনেক কষ্টে হেমন্ত প্রীচীরে উঠিল। উঠিতে তাহার হাটু ॥ছড়িয়া গেল, কুহ্ুইয়ে আঘাত লাগিল। আহা, কবি সত্যই বলিয়াছেন, প্রেমের পথ মন্যণ নহে। প্রাচীক্ষে বসিয়া, ডাল ধরিবার চেষ্টায় হেমস্ত হাত বাড়াইল। কিন্তু কোনও ডাল নাগাল পাইল না । একে অন্ধকার, তাতে ডালগুলাও কালো কালো । এবার হেমন্ত কষ্টেস্থষ্টে প্রাচীরের উপর দণ্ডায়মান হইল। হাত বাড়াইল, তথাপি ডাল ধরিতে পারে না । এমন সময় আর এক ব্যক্তির পদধ্বনি সে শুনতে পাইল। তাবিল, প্রাচীরে দাড়াইয়৷ থাকিলে ও নিশ্চয় দেখিতে পাইবে, অন্ধকারে এইখানে ঘুপটি মারিয়া বসিয়া থাকি ।__বদিবার সময় প্রাচারের সিমেপ্ট কিছু খসিয়। নিয়ে.পড়িয়া৷ গেল। যে আসিতেছিল, সে এই শবে, দীড়াইল, ভাবিল বোধ হয় জামরুল পড়িয়াছে। সে এই পাড়ারহই লোক, পূর্বেও এখান হইতে জামরুল কুড়াইয়া খাইয়াছে। জামরুল খু'জিতে খু'জিতে উর্ধে দৃষ্টি করিয়া, "বাবা গো, চোর !”- বলিয়া সে দৌড় দিল। তাহার কীর্তি দেখিয়া .হেমস্তের হাসি পাইল। কিন্তু পরক্ষণেই ভয়েরও কারণ উপস্থিত হইল,। শুনিল, মোড়ের উপর হইতে একটা গম্ভীর স্বর--“মারে কৌন্‌ হায়? ক্যাহায়রে?” কম্পিত স্বর--“একঠো চোর হায় কনে্টবলজি |” “কাহা কাহা ?” “এ ছায়া। মিত্তির বাবুদের পাচিলমে একঠো চোর বৈঠা হায়। বৈঠকে বৈঠকে জামরুল খাতা হায়।” পু এই কথ! শুনিবামাত্র “জোড়িদার হো” বলিয়! কনেষ্টবল এক ভীষণ চীৎকার ছাড়িল। হে্মপ্ত প্রাচীরে বসিয়া প্রমাদ গণিল। পরক্ষণেই গুনিল, নাগরা জুতার আওয়াজ ছুটিয়া আসিতেছে । বুল্দআই লঠনের তীব্র আলোকও পথে পড়িল। মানসী ও মর্ধবাণী [৮ম বর্ষ--১ন খও--১ম সংখ্যা হ্মস্ত তখন নিরুপায় হইয়া! বাগানের ভিতর লাফ,.দিল। সেখানে কতকগুল৷ ভাঙ্গ৷ ইট পড়িয়া- ছিল, তাহাতে হেমন্তের শরীরের স্থানে স্থানে আঘাত লাগিল। কন্ষ্টেবলটা ছুটিতে ছুটিতে সেইথান বরাবর আসিয়া দাড়াইল। প্রাচীরের উপর গাছের উপর তীব্র আলোকপাত করিয়া, আবার ছুটিতে ছুটিতে ফিরিয়া! ৯ গেল। হেমস্ত তখন আস্তে আস্তে উঠিয়া দাড়াইল। বাড়ীর দিকে চাহিয়া দেখিল, দ্বিতলের একটি জানালা হইতে ' সামান্ত আলোক আসিতেছে--অপর সমস্ত জানালাগুলি একবারে অন্ধকার । | ৃ ধাড়াইয়া, ধুতিখানি হেমন্ত খুলিয়া ফেলিল। নিয়ে ফুটবল থেলিবার হাটু অবধি পা-জাম! পরিয়া আদিয়া- ছিল, কারণ ধুতি লটর-পটর করিয়া দড়ির মইয়ে চড়া অস্গবিধা হইবে । ধুতিখানি সে জামরুল গাছের ডালে টাঙাইয়া রাখিল, ভোরে ফিরিবার সময় আবার পরিয্না যাইবে । কোমরে আলোয়ানথানি যেমন বাধা ছিল, তেমনি বাধা রহিল। এই অবস্থায় হেমস্ত জানালার দিকে অগ্রসর হইল। কোনও ফুলগাছ পাছে মাড়াইয়া নষ্ট করিয়া ফেলে, এই ভয়ে অত্যন্ত সাবধানে, আলপথ খু'জিয়! খু'ঁজিয়া যাইতে লাগিল। বখন অর্ধপথ অতিক্রম করিয়াছে, তখন হঠাৎ বাগানের দরজা খুলিয়া গেল। তিন চারিজন লোক লঠন হস্তে প্রবেশ করিয়া বলিতে 'পাগিল-_“কাহা-_. কাহা কনেষ্টবলজী 1”-_কনেষ্টবল বলিল-_“জামরুলকে পেড়োয়৷ ভিরে 1”-7তখন তাহারা ধীরে ধীরে জামরুল গাছের দিকে অগ্রসর হইল । হেমস্ত একটা গাছের আড়ালে:দীড়াইল। কঠগ্বরে চিনিল তাহাদের জমাদার মহাবীর সিং এবং ছুইজন দ্বারবানের সঙ্গে কনেষ্টবলটা আসিয়াছে। কিছুর গিয়া মহাবীর লিং বলিল--“ফেছ ত না বুঝায়ছে।” | ফাস্তুদ, ১৩২২] কনেষ্টবল বলিল-ণ্তাগ গেলই "কা ?__আপন আঁবিয়াসে হাম কুদ্‌তে দেখলি হো, তোহর্‌ কির্‌।” এক মুহূর্ত পরে-_প্উ কা হায়__উ কা হায়” বলিতে বলিতে সকলে জামরুল গাছের দিকে চলিল। কয়েক মুহু্ পরে হেমস্ত দেখিল, বুক্ষশাখা হইতে লশ্বিত তাহার সেই শ্বেত বন্ত্রধানার উপরে লঞনের আলোক পড়িয়াছে। সেই বিপদের সময়েও তাহার হাসি পাইল। “ধৌগ হো--পাকড়লি চোর”-_বলিয়া তাহার! হাল্লা করিয়া সেই বস্ত্রাভিমুখে ছুটিল। নিকটে গিয়া তাহারা বলিল--“ধন্তেরিকে--ই ত খালি লুগা বুঝাহে।” __বস্ত্রধানা তাহারা নামাইয়া লইয়া ল্নের আলোকে পরীক্ষা করিতে লাগিল । , এমন সময় দ্বিতলের আর একটা জানাল! খুলিয়!] আলোক-রশ্মি বাহির হইল। রায় বাহাদুরের কস্বর শুনা গেল-_ক্যা হায় ? ক্যা হায় মহাবীর সিং 6” কনষ্টেবল প্রভৃতি সেখান হইতে চীৎকার করিয়া বলিল-_“হুজুর বাগিচা মে চোর ঘুষা হায়।” রায় বাহাছুর হাকিলেন-_“খোজ, খোজ পাকড়ো।৮ তথন তাহার! লগ্ন লইয়া বাগানের ভিতর খু'জিতে আরম্ভ করিল। হেমস্ত দেখিল, বিপদ-_-এখনি উত্তারা আসিয়া পড়িবে। এখন উপায় কি? প্রাচীর লঙ্ঘন করিয়া পলায়ন ভিন্ন উপায় নাই। হেমস্ত জুতা খুলিয়া ফেলিল। ইহারাও যেমন বাগানের ভিতর প্রবেশ করিতেছে, সেও গাছের আড়ালে আড়ালে প্রাচীয্টের'দকে অগ্রসর হইতে লাগিল । কিয়ৎক্ষণ পরে একজন চীৎকার করিয়! উঠিল__উ কা শারোরা ভাগে হে।”__সেখানে একটা কৃত্রিম পাহাড় ছিল।* হেমন্ত একট! পাথর তুলিয়া সজোরে তাহাদের দিকে ছুড়িয়া৷ দিল। * “আরে বাপরে বাপ২জান গইল রে বাপ বলিব! একজন আর্নাদ কন্িয়া উঠিল । রায় বাহাদুর ঠাকিলেন-_ক্যা হুয়া 9, এই সময় আরও ছুই তিনখানা প্রস্তর সবেগে আসিয়া সেখানে পড়িল। লোকগুলা হটিয়া গেল। বলিল-_“ছস্কুর-_পাখলসে মহাবীর সিংকা কপার ফোড় .দিহিস ছে।” নিষিদ্ধ ফল ৬ “আচ্ছা রহো, হাম বন্দুক নিকালতেহে”--বলিয়া রায় বাহাছুর সশব্ধে জানালা বন্ধ করিয়া দিলেন। হেমস্ত দেখিল, প্রাচীরের নিকট যাওয়া এখন নিরাপদ নহে, রাণীর শয়ন-কক্ষের জানাল বরং কাছে। কোনও গতিকে যদি সে জানালার কাছে পৌছিতে পারে, তবে মই দিয়! উঠিয়া যায়,_-তাহার পর বাগানে যত ইচ্ছ৷ উহ্ারা. খুঁজুক--বাবা আসিয়া যত পারেন বন্দুক আওয়াজ কঞ্ষন। এই ভাবিয়া সে গাছের আড়ালে আড়াপে গুটি গুটি জানালার দিকে অগ্রসর হইল। ক্রমে মই পাইয়। উঠিতে আরম্ভ করিল। সে যখন অদ্ধপথে উঠিয়াছে, তখন খিড়কী দরজা হইতে গুড়ুম করিয়া বন্দুকের আওয়াজ হইল। লঠনবাহী ভৃত্য সহ্‌ রাক্ম বাহাছুর বাগানে প্রবেশ করিলেন। বধূর জানালার দিকে তাহার দৃষ্টি পতিত হইবামাঞ্জ তিনি হাকিলেন_“কে রে? কে রে?” বলিতে বলিতে হেমন্ত জানালায় পৌছিয়া গেল। ভিতরে প্রবেশ করিয়া তৎক্ষণাৎ মই টানিয়া তুলিয়া, জানালা বন্ধ করিয়া দিল। রায় বাহাদুর হাকিলেন_-“চোর ঘরমে ঘুষা_চোর ঘরমে ঘুষ । দৌড়ে-সব আদমি ভিতর, চলো পাকড়ো”__বলিয়া তিনি সদলবলে বাড়ীর মধ্যে ছুটিয়া আসিলেন।” লোৌকগুলা উঠানে ঘাটি দিয়া দীড়াইয়া রহিল, তিনি বন্দুক হস্তে ছুটিয়া উপরে গিয়া বধূর শয়ন- কক্ষের দ্বার ঠেলিলেন। বি কাপিতে কাপিতে দ্বার খুলিয়া! দিল। রায় বাহাদুর প্রবেশ করিয়া দেখিলেন, মেঝের উপর তাহার পুত্রবধূ মুচ্ছিত অবস্থায় পড়িয়া, চোর পালক্কের উপর লেপ মুড়ি দিয়া শুইয়া আছে। ৮ ও ক ক্ষ পরদিন রায় বাহাছুর “সামাজিক-সমস্তা-সমাধান* পুস্তকের একস্থান খুলিয়া “ষোড়শ” কথাটি কাটিয়া “চতুঙ্দিশ*এবং “চতুর্ব্বিংশতি” কথাটি রাটিয়! "্বাবিংশতি* করিয়! দিলেন। দ্বিতীয় সংস্করণে এইরূপ সংশোধিক্ত. আকারেই বহিখাঁনি ছাপা হইবে। শ্রপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় । স্ষ মানসী ও মর্শবাণী [৮ম বর্ব _-১ম খও--১ম সংখ্যা তীর্থ-ভ্রমণ জয়পুর | পূজার ছুটিতে হঠাৎ একদিন কবি করুণানিধান, প্মানসী” কার্্যাধাক্ষ শ্রীযুক্ত ুবোধচন্ত্র দত্ত মছা- শয়ের পরিচয়-পত্র লইয়া গয়া,ত আমাদের বাড়ী আসিয়া উপস্থিত। তিনি পশ্চিম বেড়াইতে যাইতেছেন, ফাইবার পথে আমার পিতৃদেবের সহিত সাক্ষাৎ করি- বার জন্য গয়াতে নামিয়াছেন। . ইহার পুর্বে আমি একবার এলাহাবাদ গিয়াছিলাম সময়াভাবে আগ্রা পধ্যস্ত যাইতে পারি নাই। তাজ- মহল দর্শন করিবার সৌভাগ্য ঘটিয়া উঠে নাই। ভাবিলাম এইবার এক সুযোগ উপস্থিত। করুণা বাবু বলিলেন, তিনি আজমীর পর্যান্ত ত যাইবেনই, আর যদি সময় পান তাহ! হইলে উদয়পুর চিতোর পধ্যস্তও যাইবেন। ভাবিলাম আমরাও তাহার সঙ্গে বেড়াইয়া আসিব। বাবাকে বলিলাম, তিনি সম্মত হইলেন। স্থির হুইল প্রথমে জয়পুর যাওয়া হইবে। তাহার পর আজমীর প্রভৃতি হইয়া, ফিরিবার পথে আমরা জাগ্রা, বৃন্দাবন ও মখুরা দেখিয়া আমিব। তখনও পুজার কনসেসন্‌ টিকিট পাওয়া যাইতে- ছিল। আমি, আমীর কনিষ্ঠ প্রশান্তকুমার এবং আমার পিতামহী ঠাকুরাণী, করুণা বাবুর সহিত নবমীর দিন রাত্রি ৮।* টার টেণে গল্প ছাড়িলাম। টেণে মোটেই ভীড়. ছিল না-_স্ুতরাং আমরা এক- একখানি লম্বা বেঞ্চি অধিকার করিয়া শুইয়। পড়িলাম। পরামর্শ ছিল,এলাহাবাদে করুণাবাবুর তন্মীর বাড়ীতে নামিয়া আহারাদি করিয় পুনরায় আমরা রওনা হইব। সেই অনুসারে ভোর পাঁচটার সময় আমরা এলাহা-. বাদে নামিয়! পড়িলাম। করুপাধাবু অনেক দিন এলাহাঁবাদে আসেন নাই। পুর্বে তাহার ভগিনী ও ভাগিনেয়রা যে বাড়ীতে থাকিতেন এখন তীছারা সে বাড়ী পরিবর্তন করিয়া- ছেন,, ইহা করুণাবাবু গুনিয়াছিলেন। মা (আমার পিতামহী ঠাকুরাণীকে আমি মাতৃ সঙ্বোধন করিয়া থাকি) ও প্রশাস্তকুমারকে জিনিষপত্র সহ ষ্টেশনের নিকবর্তী ধর্শশালায় রাখিয়া করুণাবাবুর সহিত আমি তাহার ভগ্ীর বাড়ীর সন্ধানে বাহির হইলাম। প্রায় ছুইঘণ্টা কাল অনুসন্ধান ও ঘোরাথুরি করিয়া বাড়ীর সন্ধান পাওয়া গেল। তখন পুনরায় ষ্টেশনে ফিরিয়া আনিয়া জিনিষপত্র লইয়া সকলে করুণাবাবুর ভম্মীর বাড়ীতে আতিথ্য গ্রহণ করিলাম । তখন বেলা প্রায় আটটা-_আবার ত্বিপ্রহর বারোটায় পঞ্জাব মেল ছাড়িবে-_মাত্র চারিঘণ্টা ব্যবধান--সময় অতি অল্প। সে কারণেও বটে ও করুণাবাবুর ভগ্মীর নির্ধন্ধাতিশয্যে আমরা সেই দিন ও সেই রাত্রি এলাহাবাদে কাটাইয়া তৎ্পরধিবন বেলা দ্বিপ্রহরের সময় পঞ্জাব মেলে আরোহণ করিলাম । গাড়ী ছাড়িবার পরই করুণবাবু তাহার ব্যাগ হইতে একথানি খাতা ও একটি পেম্িল বাহির করি- _লেন। মনে করিলাম বুঝি কবিতা লেখা আরম্ভ করিবেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার খাতা-পেন্সিল যথাস্থানে রাখিয়া আমাদের সহিত গল্পগুজব আরম্ভ করিলেন। রাত্রি আট ঘটিকার সময় টুগুলা ষ্টেশনে গাড়ী বদল করিতে হইল। টুগুলা হইতে একটি ব্র্যাঞ্চ লাইন আগ্রা ফোর্ট ষ্টেশন পর্যন্ত গিয়াছে। এঁই রাস্তাতেই যমুনানদীর উপর নির্মিত প্র্যাচি ব্রিজ”-_-এই সেতু পার হইন্লা আমরা আগ্রা ফোর্টে আসিলাম। করুণাবাবু বলিয়াছিলেন যে ষ্ট্রাচি সেতুর উপর হইতে তাজ- মহল দেখিতে পাওয়া যায়। একাদশী রজনীর জ্যোৎ্গা- তাজমহল দেখিবার জন্ত গাড়ীর জানাল্লা হইতে সতৃষ্ঃ - নয়নে আমরা চাহিয়ী রহিলাম, কিন্তু কিছুই দেখিতে পাইলাম না। যাহা হউক আগ্রা ফোর্টে পুনরায় গাড়ী বদল করিয়া ছোট লাইনের (রাজপুতানা-মালব! রেল- ওয়ে) গ্রাড়ীতে চড়িলাম। এ গাড়ীখানিও আবার তন, ১৩২২), বরাবর জয়পুর যাইবে না। রাত্রি তিনটার সময় বাদ্দি- কুই ষ্টেশনে নামিন্না পুনরায় অন্ত গাড়ীতে চড়িতে হইবে। শুইনা পড়িলে যদি ঘুমাইস্থা পড়ি, তাহ! হইলে বান্দিকুই ষ্টেশন পার হইয়া যাইবার বিশেষ সম্ভাবনা-_ সুতরাং নিদ্রার আয়োজন করিতে পারা গেল না-_ বসিয়া ৰসিয়াই আমর! গল্পগুজব করিতে লাগিলাম | যথাসময়ে বান্দিকুই ষ্টেশনে নামিয়! পড়িলাম । এখানে প্রায় একঘণ্টা স্টেশনের প্লাটফর্ম্বের উপর অপেক্ষা করিতে হইল। যে গাড়ীতে এবার আমরা চড়িলাম__ইহা মেল- ট্রেখ; ইহাতে আবার ইপ্টার ক্লাস নাই। অন্য রেলোয়ের ইণ্টার ক্লাস টিকিটধারী লোকদের এ ট্রেণে থার্ড ক্লাসে বসিতে হয়। রি এই ট্রেণে চড়িয়া আমরা ভোর পাঁচটার সময় জন্পুর ষ্টেশনে পৌছিলাম। জয়পুর মহারাজার দেওয়ান স্বনামধন্য ৬সংসারচন্তর সেন মহাশয়ের” সুযোগ্য পুত্র, বর্তমান মহারাজার প্রাই- ভেট সেক্রেটারী শ্রীযুক্ত অবিনাশচন্দ্র সেন মহাশয়ের নামে করুণাবাবু পরিচয়-পত্র আনিয়াছিলেন। একখানি ঘোড়ার গাড়ী ভাড়া করিয়া তাহাদের বাড়ী গিয়া উঠিলাম। জয়পুর সহরে ই'হারাই একমাত্র বাঙ্গালী । সুতরাং বাঙ্গালী তীর্ঘন্রমণকারিগণ জয়পুরে আসিলেই ই'হা- দের আতিথ্য স্বীকার করেন-__কারণ “নান্ত্েব গতির- স্তথা ।* পরিচয়-পত্র ভিতরে পাঠাইয়। দিতেই অবিনাশবাবুর ভগ্রপীতি, “পঞ্চপ্রনীপ,” “লিখন” প্রভৃতি গরগ্রন্থ প্রণেতা শীযুক সুবোধচন্ত্র ম্ুমদার মহাশয় দ্বয়ং আসিয়া আমাদের সাদরে অভ্যর্থনা করিলেন। মাকে ভিতরে পাঠাইয়। দিলেন। করুণাবাবুকে ধলিলেন__“পরিচয় পত্র নিশ্রয়োঞ্জন-_আপনার কবিতাই বহুকাল হইতে আপনাকে আমার্দের আত্মীয় করিয়! রাখিয়াছে।” তখন জয়পুরে অত্যন্ত প্লেগ হইতেছে, তাই ইহারা সহরের বাড়ী ছাড়িয়! দিয়া সহয়ের বাহিরে তাহাদেরই একথানি সুন্দর বাগানবাড়ীতে অবস্থিতি করিতেছিলেন। তীর্থভ্রমণ | ৭১ কিছুক্ষণ পরে শ্রীযুক্ত অবিনাশবাবু বাহিরে আসি- লেন। তিনি আমাদের দেখিয়া অত্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করিতে লাগিলেন । বলিলেন-_“তোমরা «_” বাবুর ছেলে? কাল রাত্রেও আহারের পর বিছানায় শুইয়া “7 পড়িতেছিলাম ”-_-আমাঁর পিতৃদেবপ্রণীত এক- খানি গ্রস্থের তিনি উল্লেখ করিলেন। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর চা পান করিগ্না আমরা স্থুবোধ বাবুর নিকট জর- পুরের দ্রষ্টব্য স্থান গুলির কথা শুনিতে লাগিলাম। রিটার্ণ টিকিট আমরা ক্রয় করিয়াছিলাম-_ নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ফিরিতে হইবে। সময় অল্প-_-অথচ অনেক- গুলি তীর্থস্থান দর্শন করিবার বাসন! আছে-_স্ৃতরাং আমরা সুবোধ বাবুকে বলিলাম যে অল্প সময়ে যাহাতে জয়পুরের সমস্ত দেখা হয় তাহার বন্দোবস্ত করিয়া! দিন। তাহাতে তিনি একখানি কাগজে আমাদের প্রোগ্রাম হি করিয়া দিলেন। | সমন্ত রাত্রি উঠানামা করিবার দরুণ রাত্রে নিদ্রা না হওয়াতে আমার শরীরটা বিশেষ খারাপ বোধ হইতে- ছিল-_-তথাপি স্নান করিলাম। ন্নানের পর আহারের ডাক পড়িল। ইহাদের বাড়ীতে সকলেই নিরামিষভোজী --এদেশে মতস্তের অভাবই বোধ করি ইহার কারণ। সিদ্ধ চাউল এখানে পাওয়া যায় না--সকলেই আতপ চাউল বাঁবহার করিয়া থাকেন। তরীতরকারীও ছুশ্রাপ্য। ইহারা দিনের বেলা! ভাতের সহিত রুটিও থান, _রাত্বে রুটি। স্বত ও ছুগ্ধ এখানে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। আহারের পর আমর! পাঁণ মুখে দিয়া কিঞ্চিৎ বিশ্রাম করিলাম । পরে শুনিয়াছিলাম যে ইহারা অতিথি- দের জন্ত কলিকাতা হইতে পাণ আনাইয়া থাকেন। বেলা প্রায় একটার সময় আমরা চারিজন সহর দৈথিতে বাহির হইলাম। সুবোধ বাবু আমাদের জন্ত একখানি ঘোড়ার গাড়ী আনাইয়া দিয়াছিলেন। জয়পুর সহরটি অতি জুন্বর। ১৭২৮ ত্রীষ্াবে মহারাজ জয়সিংহ শিক্পশান্ত্রের নিয়মানুসারে এই সহ নিশ্বীশ কযাইয়াছিলেন ! সহরের তিনদিকে দূরে অত্যুচ্চ ৭২ এ | মানসী-ও মর্দরবাণী পর্বতশ্রেণী__তাহার চূড়ায় ছূর্শ্রেণী। একট ছর্গের নাম গুনিলাম “নাহার গড়*__নাহার অর্থে ব্যান্্। এই নাহারগড়ে সরকারীপ্ঠহবিলখানা রক্ষিত। পূর্বে ইহা কারাগার রূপেও ব্যবহ্ত হইত । - সমস্ত সহরটি প্রাচীর বেষ্টিত। প্রাচীরটি উচ্চতায় অনুমান বিশফুট ও গ্রন্থে প্রায় নয়ফুট। দ্থানে স্থানে সাতটি প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড সিংহদ্বার আছে । পূর্ববদ্ধার হইতে পশ্চিমন্বার পর্যাস্ত যে রাঁজপথটি, সেইটিই সর্বাপেক্ষা দীর্ঘ-_গ্রায় ছুই মাইল। প্রস্তেঠিক একশত এগার ফুট। এই দীর্ঘ রাজপথের ঠিক মাবখানটি কাটিয়া উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত আর একটি রাজপথ | “ইহা দৈধো এক মাইলের কিছু উপর | আশ্চর্যের বিষয় এই যে রাস্তার তইদিকে বাড়ী- গুলি সবই দেখিতে এক রকম। তিনতলা হইতে পাঁচ'ছয় তলা পর্যান্ত বাড়ী দেখিলাম । কেবল রাজ- প্রাসাদটি সাত-তলা। যে পথেই যাওয়া যাক্‌ না কেন, সর্বত্রই এক প্রকাঁর বাড়ী-_আর সমস্ত বাড়ীর বহির্ভাগ গোলা'গী রঙের । এইবার জয়পুরের দ্রষ্টবা স্বানের কথা কিছু কিছু বলিব। ন্মুবোধবাবু শিল্প-বিগ্ভালয় ও রাজ প্রাসাদের কর্তৃপক্ষদের নিকট আমাদের নামে পরিচয়-পত্র দিয়া ছিলেন-_-মুতরাং যেখানেই গিয়াছিলাম. সেখানেই অতি ধত্বের সহিত আমাদের দেখান হুইয়াছিল। শিল্প বিদ্যালয় (80700, 07 /১দগৃ্ মান্্রাজ শিল্প বিস্তালয় হইতে একদল শিক্ষক আনা- ইয়! মহারাল্গা ১৮৬৯ গ্রীষ্টাবে এই বিদ্ধালয় প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন ॥ ১৮৬৯ হইতে ইহা 1). 70৪ 72960 ও 87788 8৫0ঃ8৩কস তত্বাবধানে ছিল। এখানে ছারদিগকে ছবি আঁকা, সুত্রধরের কার্য, বই বীধাষই, ৫৪৮৩-7448, ইমারৎ তৈয়ারী, কাষ্ঠখোদাই, ভাস্কর্ধা, হচীপিল্প প্রভৃতি কার্য শিক্ষা দেওয়া হয়। প্জয়পুর “এনামেল” নামক বিখ্যাত বাঁসনও এখানে প্রস্তত হয়। শুনা যার বে লগ্ন, প্যারিস, ভিয়েনা, রোম, প্রভৃতি [৮ম বর্ধ-_১ন খণ্ড--১ম সংখ্য। স্থানের প্রসিদ্ধ প্রসিদ্ধ কারিগরগণও স্বীকার করে যে তাহারা জয়পুর এনামেলের মত এনামেল এ পর্য্যস্ত তৈয়ারী করিতে পারে নাই। এই বিস্তালয়ে একটি কক্ষে নানাপ্রকার প্রাচীন অস্তশস্ব রক্ষিত রহিয়াছে । এধান হইতে বাহির হইয়া আমরা ক্লাহ- নিবাস ব্রাগান শু পশুস্শাজ1 দেখিতে গেলাম | অতি বুহৎ বাগান, তাহার মধাস্থলে পণ্তশালা। বড় বড় বাঘ, চিতা, নানাবিধ পক্ষী--এ সকল জীব- জন্তদের পালন বায় রাজকোষ হইতে সরবরাহ হইয়! থাকে । রাজকীয় আন্তাবলও এথানে-_সেখানে তিন- শত দোড়া ও পঞ্চাশটি হস্তী থাকে.। জয়পুর মিউজিয়ম-_-আলবার্ট হল । এই সুন্দর মিউজিয়মটি বাম-নিবাস বাগানের পাশেই অবস্থিত। ১৮৭৬ গ্রীষ্টাবে স্বর্গগচ্চ সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ড (তখন প্রিন্স অব্‌ ওয়েল্স্‌ ছিলেন ) কর্তৃক এই মিউজিয়মের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়। সেই জন্য ইহার নাম আলবার্ট হল। এখানে ভারতীয় কারিগর গণের প্রস্তুত নানাবিধ উৎরুষ্ট শিল্পদ্রবোর নমুনা রক্ষিত রহিয়াছে । কাষ্ঠের ও ভন্তিদস্ত নির্িত বিবিধ দ্রব্য, প্রস্তর মুর্তি, 15000 ০-_ইহছা? ছাড়া এখানে একটি ছোট খাট সুন্দর 7310196198] [00860 ও রহিয়াছে । এক কথায় ইহা কলিকাতা মিউজিমেরই সংক্ষিপ্ত সংস্করণ। এখান হইতে বাহির হইয়া আমর! সহরের প্রধান র্টব্য স্থান রাজপ্রাসাদ (85৪০০) দেখিতে গেলাঁম। এই অট্রালিকার উত্তরে তালকটোর দীঘি_তাহার চারিদিক প্রাচীর-বেষ্টিত। তাহার উত্তরে আবার রাজা- মল-কা-তলাও। এখানে অনেক কুস্তীর আছে। সিংহত্বার পার হুইয়া রাজবাটার সীমানায় প্রবেশ করিতে হইল । তাহার. পর,আর একটি দ্বার পার হইয়া আমরা এক প্রশন্ত অঙ্গনে উপস্থিত হইলাম। এইখান হইতে অস্তংপুর, রন্ধনবাড়ী ও ত্বান্তাবলে ফাল্তুন, ১৩২২] তীর্থ-ভ্রমণ ৭৩ ৬ ম“নারচন্দ সেন। যাইবার বিভিন্ন রাস্তা । তীয় দরজ| পার ভইয়া সরকারী ছ্াপাগানা ও ম্রনাগুতের প্রবেশ দাব। তাভার পর বিশ্টার্ণ বাগনের দিকে পন্মগ করিয়া সপুহপ রাজ অদ্রালিকা জ্া্গমভাল। একতলায় পা”, এই গ্ুতভের দেএয়াল 1৮ দ্বারা আচ্হাদিত। দ্বিতীয় তল পুষ্পচিত্র-সমগিত সুন্দর “ শ্পোভাীনিলাক্ন ৮ তভীরতণ “ক্ুহখ নিলা” _ইভার দেগয়াল ও ছাদ কাচ- দ্বারা আনুৃত। ভাশার উপর ০ চ্ছহিলিন্নিলাঙস্ি ৮০পরে “শীশমভাল” ও সকলের উপর “মুনি |” রাঁজপ্রাপাদে মঙ্গারাছার নিজস্ব পুস্তকাগার রহিয়া-গ | টাদমহালের দক্ষিণের বাড: এই পুস্তকাগার ও অস্ত্রাগার স্থাপিত। রাজপ্রাসাদের পাশেই সু বৃহৎ সমাননমন্দিল । ইহা পু দ্বিতীয় মহারাজ জয়সিংহ কর্তৃক নিন্মিত। তিনি একজন বিখ্যাত জ্যোতির্বদি ছিলেন। শুধু এখানে নয়, দিল্লী, কাশী, মথুরা, উজ্জয়িনীতেও তিনি মানমন্দির নিম্নাণ করাইয়াছিলেন। এখানে বুহৎ বৃহৎ ন্ত্রাদি রহিয়াছে, তশ্থার! গ্রহনক্ষত্রাদি অবলোকন করা যায়। প্রাসাদের ঠিক সম্মুখেই জয়পুরের "ক্মহালাতা- কলেজ |” এখান হইতে ফিরিবার পথে আমরা হাঁওুক্কা- স্মভভন দেখিলাম। বড় রাস্তার ধারে এই সুন্দর অট্টালিকা । ইহা নয়তালা গোলাপী রঙের পর্বত বিশেষ । সূ্মান্তের সময় আমরা এই হাওয়ামহল দেখিলাম-_ সোণালি রৌদ্র সেই গোলাপীরঙের উপর পড়িয়া সমস্তট। ঝকৃমক্‌ করিতে লাগিল । [701% 00০ 01১৩ চ১০7%1 15৭৪৮ নামক পুস্তকে এই অট্রালিকার নিন্দাবাদ পাঠ করিয়াছিলাম। গ্রস্থকার লিখিয়াছিলেন, ইহা! দেখিতে একখানি এর মত-_খাইয়া ফেলিলেই হয়। লেখক মভাশয়ের রাগসী ক্ষপা ! 8৮ আছ 8৮৮7 তাহার ৭1101 1২০১1২0৮71৮ নানক পুস্তকে বলিয়াছেন_হাওয়া- মহল দেখিলে মনে হয়, আলাধিনের আজ্ঞাবহ প্রদীপ- ধারী দৈত্য কর্তৃকই এরূপ অট্রালিকার স্থষ্টি সম্ভব । জয়পুর-_রজপথের দৃশ্ঠ)। ৭৪ মানসী ও মর্্মবাণী [৮ম বর্ব-_১ম খণ্ড-১ম সংখ্যা ৯ ২, করিলাম । মার জন্য এক- | খানি কাপড় ঘের! এক্কা ও আমাদের জন্য একখানি ফীটন্‌ ভাড়া করা হইল। অআশ্ল ক । জয়পুর সহর হইতে অন্বর পীচ মাইল। এই ব্লাস্তার দুইধারে সুন্দর জন্দর মন্দির ও বাগান। পথটি সমতল নভে, পার্বতা- পথ যেরূপ উচ্চনীচ হইয়া থাকে এ পথটও সেইরূপ । পর্বতের নীচে যেখান হইতে প্রথম চড়াই আরস্ত হইয়াছে, সেই পর্ষান্ত ঘোড়ার গাড়ী জপুব কপ পল বেশ দ্বাথ। চলে। আমাদের সেইখানেই এইবার আমর। বাড়ী কিলাম। শরীরট। জরভাব নামিতে ভইল। এক্কাথানি উপরে উঠিতে পারিল। বোঁধ ভইতেছিল -বাচী সিরিয়া দেখিলাম বেশ দর আমার শরীর ছুব্ধল বলিয়া আগিও একার উপর হইয়াছে । তখন আবাল জরপুরে পেগ হইতেছে 7 বসিলাম | করণাবাকু ও. প্রশান্ত উভয়ে পদএজে ভাবিণাম অপশনে জয়পুর পাপ কপালে না ঘট! আিতে লংগিলেন। অনেক রা জ্বর ছাডল_- 8 হিলি ইউ উ 2 ইউনি তখন আ1১" করর' বুনিন সেবন কররিলাম। তাহার পর আর জর আসে নাই। তৎপরিন খুব সকাল সকাল অধ্রর'দর্খত যাইবার কথা ছিল। আমার জর দেখিয়া সকলে ভাবিলেন_- বুঝিব' প্রোগ্রাম সব ওলট পাঁলট হইয়া যায়! যাহ?» হউক, যগন বাডাবাড়ি আব হইল না_তখন য়কালে [নে . উঠিয়া পুনরায় কুইনিন ও চা মেবন করিরা আমরা ট টি টি চারিজন অশ্বরাভিমুখে যাত্রা জয়পুর--মানমন্দির ফাল্গুন, ১৩২২ তীর্থ-জমণ ৭৫ পর্ধত মালার সাগ্ুধেশে । বিস্তীর্ণ উপত্যকা_-তাহার এক- পার্ে একটি বুহৎ ত্দ__-এই হৃদ ও পর্বতের মধা দিয়া অন্বর - এ যাইবার পথ । চারিদিকে পাহাড় ৫ থাকাতে ও পাহাড়ের উপর দ্র্গ থাকাতে স্থানটি অতি স্ুরক্ষিত। অন্থর পূর্বে জয়পুর রাজোর রাজধানী ছিল। অঞ্ধর নামটি “অস্থিকেশ্বর” হইতে উৎপন্ন । কেহ কেহ বলেন যে অযোধ্যা রাঙ্তা মান্ধাতার পুন্র*“অ্বরীষ”, হইতে অন্বরের নামকরণ। এখানে অতি প্রাচীন শিলালিপি পাওয়া গিয়াছে। পগ্ডিতেরা জহপুর-_ মহারাজ! কলেজ । অনুমান করেন সে ৯৫৪ খু্টান্দে এই শিলালিপি দে দতি হই ছল | দশ শতান্দীর মপধাভাগে কুশাবহ রাজ- পুতগণ, তএঠা আদম অধিবাসী মানগর্ণের 'নকট হইতে এই স্থান অপকার করেন। তাঙ্শর পর ছয় শতাব্দী অপর রাজপুতদের রাজ- ধানী ছিল। রাজা মানিংহ ১০০০ খুষ্টাঝে এখানে রাঁজ- প্রাসাদ শিশ্মাণ আরম্থ করেন, তাহার পর প্রথম মহারাজ জয়'সংহের সময় আরও কিছু কিছু নিন্মাণ কার্ধা হয়। অবশেষে অষ্টাদশ শতাব্দীতে দ্বিত'য় মহারাজ জয়সিংহ কর্তৃক প্রাসাদ নিশ্মাণ সমাপ্ত হয়। এখান হইতে রাজধানী জয়পুরের নৃতন সহরে আনয়ন করিবার পূর্বে জয়সিংহ অগ্থরের প্রাসাদে একটি স্থুন্দর সিংহদ্বার প্রস্তুত করাইয়া দেন। এই দ্বার অগ্তাবধি তাহার নামধারণ করিয়া রহিয়াছে। প্রাসাদের মধ্যে দর্শনীয় স্থান, দেওয়ানী জয়পুর-_হাওয়া মহল। ৯ খাস, যশোরেশ্বরীর মন্দির, ও সোয়ারী ফটক। ঞঙ্ো তি বি খ্খ ৭৬ জগৎ-শিরোমণির মন্দির ও অধ্বিকেশ্বর মন্দিরও এখানে। | অশ্বর গ্রাসাদের কষ্গুণি অতি স্থন্দর। মন্খর নিশ্মিত দেওয়ালগুলি অতি স্ুশ্ম নয়নবিমোহন রডীন প্রস্তরে কাকুকার্ধা খথচিত। সেগুলি এরূপ সুন্দর কায করা যে দেখিলে হঠাঁৎ মনে ভয় বুঝি আসল মণি মাণিক্য জহরৎ প্রড়তি দেওয়ালে বসান রহিয়াছে । ছাদগুলিতে ছোট ছোট আর্শীর টুকরা বসান। কোনও কোনও কক্ষে চিত্রিত কাচের জানালা এবং সব জানালা খুলিলেই হদবক্ষে অন্থর রাজপ্রাসাদের পপ্রতিচ্ছায়া দেখা যায়। রষ্ভীন কাঁচ দেওয়া একখানি শ্নানকক্ষ দেখিণাম ! শুনিলাম সেই কাচগুলি নাকি বহু শতাব্দী পূর্বে ভেনিস নগর হষ্টতে আনীত হইয়াছিল। আর একখানি কক্ষের দেওয়ালে বারাণসী, মথুরা প্রভৃতি প্রধান প্রধান তীর্থ- স্থানের চিত্র অঙ্কিত রহিয়াছে। যশোবেশবরীর মন্দির । ইতিহাস পাঠকেরা জানেন যে রাজা মানসিংহ ভবানন্দের চক্রান্তে বঙ্গের শেষবীর প্রতাপ-আদিতাকে পরাজিত করিবার পর যশোরেশ্বরীর প্রতিমা (মুস্তি) : যশোর হইতে লইয়া যান। তিনি সেই মুস্তি এই অন্বরের রাজপ্রাদাদের মধো প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন । এখানে প্রত্যহ ছাগ বলি দেওয়া হইয়া থাকে । বহ্ুপুর্ধে এখানে প্রতাহ নাকি নরবলি দেওয়া হইত। সেদিন আমরা প্রায় ১২ টার সময় বাড়ী ফিরিলাম। ফিরিয়া! আসিয়া দেখিলাম, অধ্যাপক শ্রীযুক্ত রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় ও বিনয়কুমার সরকার উভয়ে জয়পুর ভ্রমণে আসিগ্লাছেন। ইহাদের.উভয্বেরই সহিত পূন্র্ব হইতেই আলাপ ছিল__করুণাবাবুর সহিত এখন আলাপ হইল।, সেই দিন সন্ধার পর আমরা মাকে লইয়া গোবিন্দ- জীর আরতি দেখিতে গেলাম। রাজ প্রাসাদের উত্তরে এই মন্দির। এই বিগ্রহ সঙ্থন্ধে একটি সুন্দর গল্প আছে। বহুপূর্ধে এখানকার মহাঁরাজার এক কন্তা অত্তি শৈশবে বিবাহিত হইয়া শৈশবেই বিধবা হন। মানসী ও মন্বাণী [ ৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা জদপু:নর বদল মত বজ।। যখন তিনি বড় হইলেন, তথন মাকে পরই জিজ্ঞাস! 2০৯07 করিতেন, “মা, আদার স্বমী কেখায়? তান আদেন না কেন?” মা বণততন, পবাছা, ওই গো:বন্দজী তোমার স্বামী,_-তাঁকেই স্বামীঞ্ঞানে তুমি সেবা কর ।” একদিন রাত্রে মা দেখিলেন, কন্তা কাছে নাই। খুঁজিতে খু'ঁজিতে দেখিলেন, যে ঘরে গোবিন্দীজীর বিগ্রহ, সেই ঘরে দ্বার বন্ধ। দুয়ারে ধাককা দিতেই কন্তা দুয়ার খুলিয়া দিলেন। মা জিন্ঞাসা করিলেন--“এত রাত্রে এখানে কি কূরিতেছ ?” কন্টা বলিল__“কেন, গোবিন্দজী আমাকে ডাকিয়াছিলেন, তাই আসিয়াছি। আমি পাণ সাজিয়া আনিয়াছিলাম, কিনি তাহা খাইতে ছিলেন ও আরম তাঁহার পদসেবা করিতেছিলাম। তুমি চয়ারে ধাক্কা দিতেই তিনি কোথায় যে লুকাইলেন, দেখিতে পাইতেছি না” মা এ কথা শুনিয়া অত্যন্ত আশ্চধ্য হইলেন। প্রথমটা তাঁহার বিশ্বাস হইল না। ফান্তন, ১৩২২ ] কন্া একমনে স্বামীজ্ঞানে গোবিন্দজীকে ডাকিয়াছেন, তাহার প্রার্থনা যে সফল হইয়াছে, মা একথা বিশ্বাস করিলেন না। বলিলেন, “আচ্ছা, গোবিন্দজী যখন আসবেন, তথন আমাকে দেখাতে পার ?” কন্ঠা। হা, কাল তুমি রাত্রে এসে দরজা একটু ফাক করে দেখো, তাহলেই দেখতে পাবে গোবিন্দজী এসেছেন। পরদিন রাত্রে গোবিন্দজী আপিয়া রাজকন্তার হস্ত হইতে তাম্ুলগ্রহণ করিতেছেন, এমন সময়ে মা কপাটের ফাক দিয়া উঁকি মারিলেন। মা, কন্ঠা, ও গোবিন্দজী তৎক্ষণাৎ পাষাণ মদ্তি হইয়া গেলেন । এখানে মন্দিরে বিগ্রহ স্বন্ধে এই গল্পটি শুন যায়। এখানে বাঙ্গালা পুরোহিত দেখিয়া মনে বড় আনন্দ হইল | পালসাম্্রীজ্যের অধঃপতন ৭৭ আমাদের জয়পুর দেখা শেষ হইল। স্থির হইল পরদিন প্রাতের গাড়ীতে আমরা আজমীর রওনা হইব। সুবোধ বাবু বলিলেন, যদি আমরা যোধপুর যাইতে চাহি, তাহা হইলে তিনি যোধপুরের কলেজের একজন বাঙ্গাণী অধ্যাপকের নামে পরিচয় পত্র দিতে পারেন। আজমীরে স্টেশনের নিকটবত্তী “হিন্দু হোটেলে” ঘর ভাড়া লইয়া থাকিলে বিশেষ সুবিধা হইবে এই কথা বণিয্জা প্িলেন । আর যোধপুরে একখানি পরিচয় পত্রও দিলেন। যথাসময়ে ইহাদের নিকট হইতে বিদায় গ্রহণ করিয়া আমরা আজমীর রওনা হইলাম । ক্রমশঃ শ্লীঅকণকুমার মুখোপাধ্ায় । পাল সাআ্াজ্যের অধঃপতন [ কলিকাত। বিশ্বনগ্ঠ।লর সেনেট হাউসে শীনুক্ত অক্ষয়কুমার মৈপ্রের মহাশয়ের বক্তুতার সারাংশ] খৃষ্টীয় অষ্টম শতান্দীতে বাঙ্গালায় ঘোর 'মাত্ন্ চ্গায়” (অরাজকতা) উপস্থিত হইয়্াছিল। তাহাতে পুনঃ পুনঃ উত্পী'ডত হইয়া, বঙ্গীয় প্রগাবুন্দ অবশেষে গোপাল নামক এক বাক্তিকে রাজপদে বরণ করিয়াছিল। সর্ব- কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট হাউস্‌। ৭৮ মানসী ও মন্বাণী [৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড_১ম সংখ্যা বিগ্ভাবিৎ দয়িতবিষ্ণর পৌত্র, যুদ্ধবিঘাবিশারদ বপ্যটের পুত্র, সমরকুশল গোপালদেব যে রাজবংশের প্রথম রাজা, তাহাই ইতিহাস-বিখ্যাত* পাল-রাজবংশ। প্রজাপুঞ্জের শক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত এই রাজবংশ অচিরে সংগ্র আর্ধ্যাবর্তে সাম্রাঙ্জা বিস্তার করিয়াছিল। গোপালের পুত্র ধর্মপাল ভোজ, মত্য, মদ্র কুরু, য়, যবন, অবস্তী, গান্ধার, কীর এবং পঞ্চাল দেশের উপর' আধিপত্য লাভ করিয়াছিলেন। (১) তৎপুল্র দেবপাল হিমালয় হইতে বিদ্ধা, এবং পূর্ব ও পশ্চিম সমুদ্রের মধাবন্তী সমুদয় ভূভাগ করপ্রদ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। (২) এই দেবপালদেব উৎকুল-কুল উতৎকিলিত করিয়া, হণগর্ব খবর্বাকৃত করিয়া, এবং দ্রবিড়-গুক্জরনাথ দর্প চু্ণীকৃত করিয়া, দীর্ঘকাল পর্য্যন্ত *মুদ্র মেখলাভরণা বসুন্ধরা উপভোগ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন (৩)। পালরাজবংশের এই বিস্তৃত প্রভাব অধিককাল স্থায়ী না হইলেও, তাহারা দীর্ঘকাল আধ্যাবর্তের পূর্বভাগের অধীশ্বর ছিলেন। গোপালের অধস্তন দশম পুরুষে রাজা বিগ্রহপাল ( ৩য় ) যখন মহীপাল (২য়), শৃরপাল (২য়)ও রামপাল নামক তিন পুত্র রাখিয়া মৃত্যুমুখে পতিত হন, তখন গৌড় বঙ্গ ও মগধ পাল রাজগণের অধীন ছিল? কিন্তু মহীপাল রাজালাভ করিবার অনতি- কাল পরেই অনীতিক আচরণ আরম্ভ'করেন এবং তাহার ছুই ভ্রাতাকে কারাগারে আবদ্ধ করেন। ইহার ফলে বরেন্দ্রভূমির প্রজাগণ বিদ্রোহী হইয়া, মহীপাঁলকে সিংহাসনচ্যুত ও নিহত করে। এই বিদ্রোহের নায়ক কৈবর্তজাতীয় দিব্বোক তাঁহার ভ্রাতা রুদোক ও ভ্রাতুপ্পুত্র ভীম যথাক্রমে বরেন্ত্রতুমির শাসনভার গ্রহণ করিয়া- ছিলেন। সন্ধাকর নন্দী বিরচিত রামচরিত কাব এই বিদ্রোহের বিবরণ পাওয়া! যায়। এই বিদ্রোহের কারণ 0১) গৌড়লেখালা--পৃঃ ১৪-_পালিষপুর লিপি। * ছে) গৌড়লেখমালা-_পৃঃ ৭৮ গরুড়্সলিপি | (৩) গকুড়ন্তস্তলিপি _গৌড়লেখমালা পৃঃ ৮১। ও প্রকৃতি সম্বন্ধে সন্ধ্যাকর নন্দী স্পষ্টতঃ কিছুই লেখেন নাই; কিন্তু তাহার কাব্য হইতে এ বিষয়ে কতকটা আভাষ পাওয়া যাইতে পারে। রামচরিতের টাকায় দেখিতে পাওয়া যায় যে,__কনিষ্ঠ ভ্রাতা রামপাল পসর্ক সম্মত,” এবং সম্ভবতঃ গৌড় রাজ্য অধিকার করিবে, এই আশঙ্কায় মহীপাল তাহাকে কারারুদ্ধ করিয়া- ছিলেন | (৪)এই “সর্বসম্মত” কথায় মনে হয় যেন রাজার নির্বাচন সম্বন্ধে তখনও গৌড়ীয় প্রজাবুনদের কিছু কিছু অধিকার ছিল। মহীপাল তাহাদের এই অধিকার অস্বীকার করিয়া কেবল মাত্র উত্তরাধিকারের দাবীতে সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। পুর্কেই বলা হইয়াছে গোপালদেব প্রজ্জাগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইয়া রাজত্ব পদ লাভ করিয়াখিলেন; তারানাথের উক্তি অনুসারে ধন্মপাল দেবও এইরূপ প্রজাপুঞ্জের দ্বারা নির্বাচিত হইয়া ছিলেন। কালে এই নির্বাচন-প্রথ! ক্রমশঃ বিলুপ্ত হইয়া আসিলেও, রাজার সিংহাসনারোহণ সম্ভবতঃ কতক পরিমাণে প্রজাগণের সম্মতির উপর নির্ভর করিত। মহীপাল এই চিরাচরিত প্রথা পদ- দলিত করিয়া প্রজাগণের বিরাগভাজন হইয়াছিলেন এবং ইহাই বোধ হয় বিদ্রোহের মূল কারণ। কৈর্র্ত নায়ক দিব্বোকের অধীনে সংঘটিত হইয়া থাকিলেও, ইহ! কৈবর্ত বিদ্রোহ নহে; বরেন্ত্রের সমস্ত গ্রজাপুঞ্জের বিদ্রোহ, সমস্ত সামন্ত-চক্রের বিদ্রোহ । যে প্রজাশক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হইয়া পাল সাম্রাজ্য উন্নতির চরমশীর্ষে আরোহণ করিয়াছিল, সেই প্রজাশক্তির বিরাগই পাল সাম্রাজ্যের অধঃপতনের মূল কারণ। সুতরাং অতঃপর আমর! এই বিদ্রোহের বিস্তৃত বিবরণ ও পরিণাম অনু- সন্ধান করিতে প্রবৃক্ধ হইব । পূর্বেই বলিয়াছি যে এই বিদ্রোহের সময়ে রামপাল ও শূরপাল কারাগারে আবন্ধ ছিলেন ? কিরূপে তাহারা -. এই কারাগার হইতে পলায়ন করেন, সন্ধ্যাকর নন্দী সে বিষয়ে কিছুই বলেন নাই। কারাগার হইতে পলায়ন (8) রামচরিত__১/৩। টাকা । ফাস্ন, ১৩২২ ] পালসায্াজ্যের অধঃপতন ৭৯ করিয়া, রামপাল পিতৃভূমি বরেন্দ্রীর উদ্ধারের জন্য যাহা যাহা করিয়াছিলেন, রামচরিতে তাহার বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায়। কিন্তু তাহার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা শূরপাল এবিষয়ে কোন চেষ্টা করিয়াছিলেন কিনা, সে বিষয়ে রামচরিতে কোনও আভাস পাওয়া যায় না। মদ্দন- পালের মন্হলি-লিপিতে দেখিতে পাওয়া যায় যে, শূরপাল মহীপালের পরে রাজা হইয়াছিলে ১-“মনেন্দ্তুল্য মহিমান্বিত, স্কন্দতুলা প্রতাপশ্রীসমন্থিত, সাহস-সারথী নীতিগুণমম্পন্ন শ্রীশুরপাল নামক নরপাল তাহার [ মহী- পালের ] এক অনুজ ছিলেন। তিনি সর্ববিধ অস্শসম্্ের প্রাগল্ভ্যে শক্রবর্গের স্বচ্ছন্দ স্বাভাবিক বিভ্রমাতিশযা- ধারী মনে শীঘ্বই, বিশ্ময়-ভয় বিস্তৃত করিয়া দিয়া- ছিলেন।” (৫) ্ বৈগ্ভদেবের : কমৌলি-তামশাসনে বিগ্রহপালের পরেই রামপালের নাম উল্লিখিত হইয়াছে। ইহাতে মহীপাল বা শূরপালের নামোল্লেখ নাই। বৈগ্যদেবের তামশাঁদনে প্রধানতঃ পালরাজগণের মন্ত্রীবংশই বরিত হইয়াছে । মহীপাল এবং শুরপালের অল্পকাল স্থায়ী রাজোর সভিত বৈদ্ভদেবের বংশের ইতিহাস তেমন ঘন ভাবে জড়িত নহে। এই কারণেই তীহার তাশ্্র- শাসনে এ দুইটি নাম পরিতাক্ত হইয়াছে। এইরূপ কারণেই সন্ধাকর নন্দীর কাব্যের সকল অংশে শুর- পালের নাম দেখিতে পাওয়া যায় না। শুরপাল পিতৃ- ভূমি উদ্ধারের জন্য কোন চেষ্টা করিয়া থাকিলে ও, অনতিকাল মধোই তাহার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে চেষ্টার পরিসমাপ্তি হইয়াছিল । এই পিতৃতূমির উদ্ধার-ূপ মহৎ কার্ধা প্রধানতঃ রামপাল কর্তৃকই সাধিত হইয়াছিল স্থৃতরাং শূরপালের অল্পকাঁল স্থায়ী রাজ্য ও মৃত্যুর বিষয় রামচরিত কাবোর পক্ষে প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত নাও হইতে পারে। রামচরিত কাব্য শুরপালের নামোল্লেখ না থাকায়, এরূপ অনুমান কর! সঙ্গত হইবে না যে রামপাল জোষ্ঠভ্রাতা শুরপালকে বধ করিয়াছিলেন (৫) গৌড় লেখমালা-_-১৫৬--১৫৭ পৃঃ এবং সন্ধ্যাকর নন্দী ইচ্ছাপুর্বক এই ঘটন! গোপন করিয়াছেন। শ্রীযুক্ত বাবু রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় তাহার 'বাক্গালার ইতিহাস+ নামক গ্রন্থে লিখিয়াছেন,_পরাম- চরিতে” শুরপালের সিংহাসন লাভের, তাহার রাজ্য কালীন ঘটনার এবং তাহার মৃত্যুর বিবরণের অভাব দেখিয়া অনুমান হয় যে, রামপাল কোন উপায়ে শুরপালকে সংহার করিয়া পৈতৃক রাজ্যাধিকার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন” ( ২৫১ পৃঃ)। এইরূপ অন্কমান যে কেবল অসঙ্গত তাহা নহে, ইহ] স্পষ্টতঃ:রামচরিতের বর্ণনার বিরোধী । রামচরিত কাব্যের নিয়্লিখিত শ্লোকে রামচন্ত্রের ও রামপালের সহিত ইন্দ্রের তুলনা করা হইয়াছে, যথা,__ “অভিভিরকরোক্ষতবলোপামরূত্বান প্রভৃত মন্থারপি। যোভূদগোত্রভিদ পাক শাস (নাশ) নোপি চ স্ুনাসীরঃ ॥৮ (৬) [ গ্রথম পরিচ্ছেদ পঞ্চদশ শ্লোক ] এই শ্লেকের টাকায় রামপাল-পক্ষের অর্থে টীকাঁ- কার “অগোত্রভিদ্‌, £ই পদের “ন গোত্রভিৎ কুলাঘাতী” এইরূপ ব্যাখ্যা করিয়াছেন। রামপাল তাহার ভ্রাতাকে হত্যা করিয়া থাকিলে, কদাপি তাহার সম্বন্ধে এইরূপ বিশেষণ প্রযুক্ত হইতে পারিত ন!। মদনপালের মনহলি লিপি হইতে প্রমাণিত হয় যে, বরেন্ত্রভূমি হইতে বিতাড়িত হইয়াও, শুরপাল রাজ- উপাধি গ্রহণ করিয়াছিলেন । তাহার মৃত্ার পরে তাহার (৬) মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সম্পাদিত এবং এশিয়া- টিক সোসাইটি হইতে প্রকাশিত “রামচরিত' গ্রন্থে *স্ুনাশীর:” এই পদ দেখিতে পাওয়া।যায়। মূল পু'থীতে “স্থনাসীর” আছে? তাহা “সুনাশীর" রূপে মুদ্রিত হইয়াছে কেন, তাহার কারণ উল্লিখিত হয় নাই। এই শব্দটি হ্ছিদন্ত), দ্বিতালবা, তালব্যাদি হইতে পারে, যথা-- স্ুনাসীর, শুনাশীর, শুনাসশর, কিন্ত “ভুনা শীর" এইরূপ বর্ণবিন্যাসযুক্ত শব্দ সংস্কৃতভাবায় দেখা যায় না। ৮৩ মানসী ও মন্ম্ববাণী [৮ম বর্ষ-_-১ম খ্--১ম সংখ্যা। কনিষ্ঠ সহোদর রামপাল রাঁজ উপাধি গ্রহণ করেন, এবং পিতৃভূমি বরেন্দ্রীর উদ্ধারের জন্য বদ্ধপরিকর হন। রামচরিতের 'প্রথমঞ্জরিচ্ছেদের ২৩শ শ্লোকের টাকায় পনন্দনৈ; পুতৈঃ বাঙ্গাপালাদভিঃ” এই বাক্য হইতে জান! যায় যে,_-বধেন্দী তাগ করিবার সময় রামপালের অন্ততঃ তিনটি পুত্র ছিল, এবং তাঁহার মধো জোষ্ঠের নাম ছিল, রাজাপাল। প্রত্রকলজাদি লইয়া প্রথমেই রামপালকে কোন স্থরক্গিত স্থানে আশয় এাহণ করিতে হইয়াছিল। এই আশ্রয় স্থান কোথায়, রামচরিতের নিয়- লিখিত শ্লোকে তাহার আভাস পাওয়া যায়। “নম বিনাশিত মারীচোপগতেহঈতমো ভুজৌদধদ্িফলৌ | ধাম নিজং পরিকলয়াৎ চকার শুন্তং সক্গন্ুরথরামঃ॥৮ (৭)। (প্রথম পরিচ্ছেদ--৪০শ শ্লোক) এই গ্লোকের টাকায় রামপালপক্ষের অর্গে “উপগতা ইষ্টতমা মিত্রাণি মাতৃবন্ধৰো যন্ত” এই পদসমষ্টি হইতে অন্থমিত হয় যে, রামপাল তাহার মাতুলালয়ে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন । সীতাহরণে রাম যেরূপ শোকে মুহামাঁন তইয়া পড়িয়াছিলেন, রাজা হইতে বিতাড়িত হইয়া রামপালও সেইরূপ শোকাভিভূত তইয়াছিলেন। কবি সন্ধাকর নন্দী অতি অল্প কথায় দ্বার্গবোপক শ্লোকের দ্বারা যগপৎ রাম ও রামপালের মনোভাব বর্ণনা করিয়াছেন । শোকের প্রথম মুহনে রামপাল পিতরাজা উদ্গারের বিষয়ে একেবারে হতাশ হইয়া! পড়িলেন (৮)। কিন্ত লক্ষণের সান্তনাবাকো কথঞ্চিৎ আশ্বস্ত হইয়া রাঁম যেমন সীতান্বেষণে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন, পুত্র ও সহচরগণের পরামর্শে রামপালও সেইরূপ ধৈর্ধ্যাবলগ্ধন করিয়া (৯) মুজিত পুথিতে এবিকলৌ? এপ্ঠরূপ পাঠ আছে। কিন্ত উহাতে অর্থপঙ্গতি হন না। মূলের টীকায় “বিকল' পাঠ আছে__ ইহাতে সুসঙ্গত অর্থ হয় বলিধা ইহাই গ্রহণ করা গেল। (৮) “অবনীপতিতাং তন্তমপি ন তদা সম্তাবয়ামাঁস |" (১1৪১) রামপাল পক্ষে অর্থ “অবনী পতিতাং পৃথনীপতিতাং »:১. তন্ং অগ্পমণি ন সম্তাবিতবান্”। রাম পক্ষে অর্থ “মুচ্ছিতঃ সন অবনীপতিতাং , তল্গং দেহং ন সম্ভাবিতবানৃ” 1 পিতৃরাজ্য উদ্ধারের উপায় অন্বেষণে প্রবৃত্ত হইলেন। বন্ছ অর্থ ও বিস্তৃত ভূভাগ দান করিয়া তিনি ক্রমে সামন্তরাজগণকে স্বীয় পক্ষে আনিতে সমর্থ হইলেন । প্ভূমেবিপুলম্ত ধনস্ত চ দাঁনতস্তাগাৎ অন্থকুলিত১__ (১৪৫) টাকাকারের এই উক্তি হইতে অনুমিত হয় মে অধীন সামন্তরাজগণ স্বেচ্চায় কর্তবা প্রণোদিত হইয়! রাজা! ও প্রন্থ রামপালের সাভাযা করেন নাই। বালী- বধের পর রাজালান্ডের বিনিময়ে যেমন সুগ্ীব রামের সাভাযা করিয়াছিলেন, তাভারাঁও সেইরূপ অর্থ ও তু সম্পত্তির বিনিময়ে রামপালের সাহাধা করিতে সম্মত হইয়াছিলেন। সুতরাং অনুমান করা যাঁটাতে পারে যে বরেক্ষের বিভাগে গৌড়বঙ্গমগধেও পালরাজ- গণের পুরাতন প্রত্ত্ব শিথিল তইয়া পড়িয়াছিল। রাম. পাল বরেন্ছের পুনরধিকারের যে চেষ্টা করিয়াছিলেন, তাহা সামাজোর এক অংশের বিরুদ্ধে অপর অংশের যুদ্ধ ( 151] *:০) নভে একদল ভাড়াটিয়া (0100) সৈম্ঠের সাহাযো প্রজাশক্তির বিরুদ্ধে অভিযান মাত্র । এই অর্থগ্ুপ্ন। কর্ভবযজ্ঞানহীন সামস্তচক্রের মধো কেবলমাত্র রামপালের মাতুল বীরাগ্রগণ্য মথন সেচ্ছায় . কর্তবা প্রণোদিত হইয়া সমগ্র শক্তি সহকারে ভাগিনেয়ের পক্ষ সমর্থন করিয়াছিলেন । রামচরিতের দ্বিতীয় পরি- চ্ছোদের অষ্টম শ্লে/কের টাকায় এই মগনের অনেক বিবরণ পাওয়া যায়। বরেন্দ্রের অন্নকরণে পীঠীপতি দেবরক্ষিত মগধে বিদ্রোহের ধৰবজা উডটীন করিয়া- ছিলেন কিন্ত বীরবধর মথন তাহাকে পরাভূত করিয়া বিদ্রোহবজ্ধি প্রশমিত করেন । বিঞুঃ যেমন বরাহাবতারে সিন্ধুর গভ হইতে বন্তন্ধরার উদ্ধার সাধন করিয়া- ছিলেন সবিখাত রণকুগ্গর “বিদ্কামাণিকো”র উপর আরূঢ় ভইয়া অদ্ভুত পরাক্রমের সঠিত যুদ্ধ করিয়' বীরবর মথনও /সইরূপ সিন্ধরাজপীঠিপুতি দেবরক্ষিতের তস্ত হইতে মগধের উদ্ধার সাধন করেন। সারনাথের ধ্ব'সমধো প্রাপ্ত কানাকুক্জের রাজা গাবিন্দচান্দ্রর পত্ধী কুমারদেব'র শিলালিপিতিও রাজ- মাতুল অঙ্গরাজ মথন কর্তৃক পীঠীপতি দেবরক্ষিতের হমান্নসী ও আম্প্রবান্পী-_ রর রঃ 233৩ এ€375257545535205552৩0 জীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় 02৩15৫25557 ৃ ৃ ৃ ৃ ৃ ০০০০০০০০০০০ মানসী প্রেস, কলিকাতা । ফাল্গুন, ১২২ ] হইতে আরও জান! যায় যে মখনের কন্তা শঙ্করদেবীর সহিত দেবরক্ষিতের বিবাহ হ্ইয়াছিল। এইবপে রামপালের মাতুল মখনের পরাক্রম ও বিচক্ষণতায় রামপালের একজন প্রধান শক্র, মিত্রন্ূপে পরিণত হইয়াছিল। মখন কর্তৃক মগধের বিদ্রোহ দমন না হইলে, রামপালের পক্ষে পিতৃরাজ্য লাভ করা হয়ত অসম্ভব হইত। রামপাল আমরণকাল পর্য্যস্ত মাতুলের এই মহৎ উপকার কৃতপ্ত হৃদয়ে স্থৃতিপটে অস্কিত করিয়া রাখিয়াছিলেন। সে সমুদয় প্রধান প্রধান সামস্ত রাজগণের সাহায্যে রামপাল বরেন্ত্রভৃমি *পুনরধিকাঁর করিয়াছিলেন, রাম-, চরিতে তাহাদের উল্লেখ করা হইয়াছে । রামচরিতের টাকায় তাহাদের সম্বন্ধে আরও অনেক তথ্য জ্ঞাত হওয়া যায়। রামচরিতের টাকার এই অংশ তৎকালীন বঙ্গদেশের ভূগোলের পক্ষে বিশেষ মূল্যবান । প্রথম সামস্তরাজ রামচরিত কাবো বন্দা নামে অভিহিত হইয়াছেন। টীকা হইতে জানিতে পারা যায় ষে তাহার নাম ভীমযশ, তিনি মগধ ও গীঠীর অধিপতি ছিলেন, এবং তিনি একসময়ে কান্যকুজের অশ্ববাহিনীকে পরাস্ত করিয়াছিলেন । দ্বিতীয় 'সামন্তরাজের নাম বীরগুণ। ইনি কোটার অধিপতি ছিলেন । মগধের পরেই কোটার নামোল্লেথ দেখিয়া মনে হয় কোটা সম্ভবতঃ মগধের দক্ষিণভাগে অবস্থিত ছিল--কাহারও কাহারও মতে আইন-ই- আকবরীতে উল্লিখিত সরকার কটক ও কোটা অভিন্ন। তৃতীয় সামস্তরাজ দণ্ডভৃক্তিপতি জয়সিংহ “উৎ- কলেশ-কর্ণকেশরী-সরিহল্লভ-কুস্তসম্তবঃ* (২1৫) রূপে বর্ণিত হইয়াছেন) অর্থাৎ অগন্ত্য যেমন সিদ্ধুকে গ্রাস করিয়াছিলেন, তিনিও তন্রপ' উতৎকলদেশের অধিপতি কর্ণকেশরীকে" পরািত করিয়াছিলেন। ইহা হইতে অনুমিত হয় যে, উৎকলের অধিপতি কর্ণকেশরী শ্বাধী- নতা অবল্ন করান, য়সিংহ কর্তৃক 55 ১ পরজেকাহিনী জে হইয়াছে। এই নিলালিল ৮১ চতুর্থ সামন্তরাজ বিক্রমরাঁজ, “দেবগ্রীমপ্রতিবন্ধ- বন্ধাচক্রবাল--বালবলভি-তরঙ্গ বহুল-গলহস্ত-প্রশস্ত-হস্ত- বিক্রমঃশ্রূপে বর্ণিত হইয়াছেন। এই বর্ণনা হইতে জান! যায় যে,_বিক্রমরাঁজ দেবগ্রামের রাজা ছিলেন, এবং এই দেবগ্রাম রাজা বালবলভীর অপর. পারে বর্ত- মান ছিল। দেবগ্রাম ও বালবলভী এ উভয়ের মধ্যে যে নদী প্রবাহিত ছিল, তাহাতে তাহার নৌকার বহর (বহল) সজ্জিত থাকিত ; এবং এই নৌটসগ্ের সাহায্োই তিনি বিপক্ষপক্ষকে গলহস্ত-গ্রদান (পরাজিত) করিতে বিশেষ দক্ষ ছিলেন। পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম সামস্তরাজের নাম বথা- ক্রমে লক্গমীশুর, শূরপাল, রুদ্রশিখর ও ময়গল সিংহ। রামচর্পিতের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ্দের পঞ্চম ল্লোকের টাকায় ইহাদের প্রত্যেকের সম্বন্ধে কিঞিৎৎ বিবরণ পাওয়া! যায়। নবম সামস্তরাজ প্রতাপসিংহ ঢেক্করীর অধিপতি ছিলেন। রামচরিতের ভূমিকায় এই স্থানকে বর্তমান কাটোগ্নার অন্তর্গত বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে । এতত্বাতীত কষঙ্গলীর মণ্ুলাধিপতি নরসিংহার্জ.ন, সন্কটগ্রামের চণ্ডার্জ,ন, নিপ্রাবলীর বিজয়রাজ, কৌশান্ী- পতি দ্বোরপবর্ধন, পছুবন্বা মণ্ডলের অধিপতি সোম এবং অন্যান্য সামস্তগণ রামপালের সাহাধ্যার্থে সমাগত হইয়া- ছিলেন (রীমচরিত--২।৬)। কোন কোন লেখক কৌশাম্বীর সহিত: রাজসাহার অন্তর্গত কুস্স্বার এবং পছুবন্থার সহিত পাবনার অভিন্নতা প্রতিপাদন করিতে প্রয়াস পাইয়াছেন। কিন্তু এই সমুদয় লেখকগণ একটি বিষয় লক্ষ্য করেন নাই। উল্লিখিত সামস্ত রাজগণ গঙ্গার অপর পার হইতে বরেন্ত্রভূমি আক্রমণ করিয়া- ছিলেন; ন্ুতরাং তাহাদের মধ্যে কেহুই বরেক্্তৃমির অন্তর্থত রাজসাহী বা পাবনার লোক হইতে পারেন না। * এই সমুদয় সামস্তগণের সাহায্যে হস্তী, অশ্ব, নৌ, পদাতি এই চতুরঙ্গ সেনার সমাবেশ হইল। এই সেনার পরিচালন কাধ্যে রামপালের প্রধান সহায় ছিলেন মথন, মথনের, পুজ মহামাগুলিক কাকু,রদেব, এবং মথনের' জ্রাত। সুবর্ণদেবের পুজ মহাগ্রতীহার শিবরাজদেব । ৮২ উল্লিখিত সামত্তরাঁজগণের মধ্যে মহামাগুলিক কাফরদেব এবং মঞ্জুলাধিপতি নরসিংহার্জ্,নের নাম বিশেষভাবে উল্লেখকোঁগ্য। -পুরাকালে "মণ্ডল শবে ঘবাদশজন রাজার রাঁজা-পরিমাঁণ বুঝাইত। মণ্ডলের অধিপতি এই সমুদয় রাজগণের উপর প্রত্ত্ব করিতেন । মহামাগুলিক স্শ্বর ঘোষের তাত্রশাসনে দেখা যায়, যে বাজাধিরাজগণের স্ভায় তিনিও বহুসংখাক সামন্ত রাজ- গণের উপর আধিপতা করিতেন। ধর্পালের তাত- শাসনে মহাসামস্তাধিপতি এই উপাধিভূষিত রাজ কর্শ- চারীর উল্লেখ দেখিয়া অনুমান হয় যে, সামস্ত রাজগণের মধ্যে একজন সমুদয় সামস্তরাজগণের প্রতিনিধি 'বলিয়া গণ্য হইতেন, এবং তদনুরূপ সম্মান পাইতেন। সুতরাং এই মহামাগুলিক বা মহাসামস্তাধিপতির স্থান মহারাজা- ধিরাজার ঠিক নিয়ে বলিয়াই গণা হইত। সামস্তরাজগণের বর্ণনা হইতে স্পষ্টই প্রমাণিত হয় যে, রামপাল পিতৃরাজ্য উদ্ধারের জন্য বিপুল আয়োজন করিতে বাঁধা হইয়াছিলেন। এই আয়োজনের বিপুলতা হইতেই বরেন্ত্রভৃ্ির বিদ্রোচ্চের গুরুত্ব অন্নভব করা যায়। এইক্ষপ প্রতৃত বলশালী হইয়াও রামপাল সহস! ববেন্্রভূমি আক্রমণ করিতে সাহসী ভন নাই। মদন- পালের মন্হলি লিপিতে বর্ণিত হইয়াছে যে, দৈতা- কর্তৃক ন্বরগচ্যুত ইন্দ্রের ন্যায় রামপাল অসীম ধৈর্য্য ও সাবধানতা সহকারে ধীরে ধীরে স্বীয় কার্ধা সিদ্ধির পথে অগ্রসর হইয়াছিলেন। বত্ষেন্ুভূমির বিদ্রোহ যদি কেবলমাত্র ব্যক্তি বা জাতিবিশেষের বিদ্রোহ হইত, তাহা হইলে এর প্রভৃত বল বা সতর্কতার আবশাক হইত না। কিন্তু পূর্বেই বলা হইয়াছে যে বরেজ্রের বিশ্রোহ সমগ্র প্রজাশক্তির বিদ্রোহ । রাজার নির্বাচনে প্রজাগণের যে অধিকার ছিল মহীপাল তাহা প্রত্যা- খ্যান করিয়া সিংকাঁসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। তীহার এই অনীতিক আচরপই বরেজ্রের বিদ্রোহের মূল কারণ রামপাল "এই. বিজ্রোহের প্রকৃতি ও গুরুত্ব 'বিশেষরূপে জাত ছিলেন বলিয়াই অপরি- মিত্‌ অর্থে বিপুল নৈক্ক সংগ্রহ করিয়া সাবধানে ৮ বর্ষ--১ম খও-১ষ লাখ এই বিপ্রোহ্ধ দমন করিতে অগ্রসর হইয়াছিলেন। তাহার ভাড়া করা সৈন্তের সাহায্যে তিনি প্রজাশক্কি উন্মুলিত করিয়া পুনরায় পিতৃ সিংহাসন অধিকার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন সতা) কিন্ত তিনি যাহা হারাইয়াছিলেন তাহা আর ফিরাইয়া পাইলেন না । ষে প্রজাশক্তির উপর পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হইক্কা- ছিল, ষে প্রজাশক্তি পাল-সাম্রাজ্যের সঞ্জীবনী শক্তির আধার ছিল, অর্থবলে জ্রীত বিপুল সৈগ্তের শাণিত তরবারির আঘাতে চিরদিনের নিমিত্ত তাহার মূলচ্ছেদ হইয়া গেল। যে প্রজাশক্তির সাহায্যে আসমুত্র হিমালয় পর্যাস্ত সাতাজা বিস্তৃত হইয়াছিল, তাহার প্রীণহীন রক্তাক্ত দেহের উপর দিয়া শকট চালাইয় রামপাল পিতৃ- রাজ্যে ফিরিয়া আসিলেন। কিন্তু সে রাজোর শ্রী তখন চিরকালের জন্ত অন্তহিত হইয়া গিয়াছে কেবল প্রাচীন গৌরবের স্থৃতি বন করিবার জন্যই তাহার কঙ্কালমৃত্তি বরেজ্র্রের বিরাট শ্মশানে তখনও দণ্ডায়মান ছিল। গৌড়রাজমালায় (৫২ পৃঃ) ইহা কাঁবোর স্টায় বর্ণিত হইয়াছে । ষথা,_. বরেন্দ্রভূমির বিদ্রোহানল নির্বাণ করিয়া, এবং কাম- .বূপ ও কলিঙ্গে আধিপত্য বিস্তার করিয়া রামপাল ষে গৌঁড়রাষ্ট্র পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন সেই অভিনব গৌড় রাষ্ট্রের সহিত রামপালের পূর্বপুরুষগণের শাসিত গৌড়রাষ্ট্রের অনেক প্রতেদ ছিল। গ্রজাসাধারণের নির্ব্া- চিত গোঁড়াধিপ গোপালের গৌঁড়রাষ্, এজার প্রীতির এবং প্রজাশক্তির সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। কিস্তু হতভাগা দ্বিতীয় মহীপালের “অনীতিকারন্তের” :ফলে এবং দিব্বোক নিয়ন্ত্রিত বিজ্রোহানলে, লেই ভিত্তি তঙ্বীভূত হইয়া গিয়াছিল। রামপালের পক্ষে, গোঁড়- 'রাজোর বিচ্ছিক্'অঙ্গ প্রতান্গ পুনরার একক্রিত করিয়া, উহার পুনর্গঠন সম্ভব হইলে9, সেই দেহে প্রাণগ্রতিষ্ঠা-- সেই ভগ্ন অট্রালিকার : বহিরঙগের সংগ্ষার লন্ভর হইলেও, উহ্থার' নষ্টভিত্বি পুনঃ হি হা হইয়া ছিল ।” হা , ক্ষেমশঃ পু রর ফা্তুম, ১৩২২] খোল। চিঠি খোল! চিঠি একদিন রধিবার এক বন্ধুর গৃহে নিমন্ত্রণ ছিল । বেলা এগারোটার সময় যখন তাহার বাহিরের ঘরে উপস্থিত হইলাম, তখন তিনি সবেমাত্র :নিদ্রাত্যাগ করিয়া! উঠিয়াছেন। জিজ্ঞাসা করিলাম, "এতক্ষণ ঘুসু- চ্ছিলেন নাকি ? ৃঁ বন্ধু বলিলেন, “কাল রাত্রে থিয়েটার দেখতে গিয়ে- ছিলুম ।* আমি বলিলাম, পবুড়ো $বয়সেও থিয়েটার দেখবার বাই যায় নি?” বন্ধু বলিলেন, "আজকাল সত্য সত্যই ছু একখানা ভাল নাটক বাজারে বেরিয়েছে ।” এইবার তিনি নাটকের গল্লাংশ বলিতে আরম্ত করিলেন। আমি বলিলাম, “থাক আপনার গল্প শুনতে চাই না, আপনি স্নান করুণ গিয়ে” এমন সময় হাতে একথানি তুঁজা-কি-জাহাঙ্গিরী ও কতকগুলা কাগজ থাতা৷ পত্র লইয়া এক এ্রতিহাসিক বন্ধ আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি বলিলেন, “থাক্‌ আপনার গল্পটন্ল শুন্তে আমরা মোটেই প্রস্তত নই ।” আমি বলিলাম, “আপনার ইতিহাস গুনতে কিন্ত বেশী অপ্রস্তত একথা! জেনে রাখবেন।” ধ্রতিহাষিক বন্ধু বই খাতা পত্র "সশব্ষে টেবিলের উপর নাখিয়! বসিয়া পড়িলেন। ডিবা ;হইতে ছুইটা পান মুখে ফেলিয়া দিয়! বলিলেন, “আঃ, এইবার বাচব বলে মনে হচ্ছে, আগে আগেকাগজ গুলো যখন পড় ভুম, তখন দেখ.তুম কেবলই ছোট গল্প আব কবিতা । এখন দেশের অবস্থাটা কিছু ফিরেছে বলে" মনে হচ্ছে-_ গল্পওয়ালার! এখন ডুবে যাচ্ছে, সাহিত্যক্ষেত্রে জনকতক ধরতিহাসিক মাথা তুলে াড়িরেছে।* প্রথম রনি “তোমায় কথাটা একেবারেই মিথ্যা 1? .. রি আসিবলিলা, শর নাহি আগে গছ নিত ভালবাস্তুম, ইতিহাস জানি না, তবুও--কালের গুণ কোথায় যাবে, ইতিহাসের দিকে কেমন একট। বেক অজ্ঞাতে এসে পড়েছে ।” ধরতিহাসিক বন্ধু'আমার দিকে চাহিয়। বলিলেন,”কি রকম ঝোঁক ?” “সেদিন এই বেঁকে পড়েই একটা ভয়ানক আবি- ফার করে ফেলেছি।” “আবিফারট। এঁতিহাসিক ?” দা “কি আবিষ্কার ?” «একটা লিপি.» “শিলা-লিপি ?” “না না হস্তলিপি। অমাদের গ্রামে একটা অতি পুরাতন চতুপ্পাঠীর ধ্বংসাবশেষ আছে, তারই ভেতর থেকে আমি এই হস্তলিপিটা বার করেছি, এটা মনো যোগ করে পড়লে সেকালের অনেক কথা জান্তে পারা যায়।” “আপনার কাছে লেটা আছে ?” “আপনি এখানে আসবেন জেনে সেটা সঙ্গেই এনেছি ।” “তবে পড়ুন। আমি গত পঞ্চাশ বৎমরের কলিকাতার ইতিহাস লিখতে ইচ্ছা করছি, দেখি আপনার লিপি থেকে কোন উপকরণ পাওয়! বায় কি না.।” আমি বলিলাম, "আহারের পরই পড়বে! 1” তিনি বণিলেন, "না৷ এখনই ; আহারের বিলম্ব আছে ।” আমি পকেট হইতে কতকগুল! কাগজ বাহির করিয়া বলিলাম, “তবে গুচুন, এক ছাত্র টোলের একটি পড়ুয়া বন্ধুকে ' প্র লিখছে ।” এই বলিয়া আমি পড়িতে আরজ করিলাম-. : ৮৪ পরম পৃজনীয় 7 ভ্রীরামকমন্ধ মুখোপাধ্যায় মহাশয় রি টিসি রামকমলদাদা, তুমি আমার কথা জানিতে চাহিয়াছ। এই টা সব কথাই বলিব। তোমরা জান আমার পাপের জন্ত অধ্যাপক মহাশয় আমাকে টোল হইতে তাড়াইয়া দিয়াছেন। তাহাই জানিয়া রাখিও; লোকের নিন্দায় আমার কিছুই যায় আসে না, কেন না আমি এখন . লোকসমাজের বাহিরে । আমি সত্বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছি। পিতা আমাকে ধথেষ্ট শাসন করিতেন । সত্য কথা বলিতেছি তাহার নিকট হইতে আমি কখন কোন স্নেহের কথা গুনি নাই। তাহার পুক্র-ন্সেহ হয়ত ছিল, কিন্ত আমি তাহার কোন প্রমাণ পাই নাই। আমার মা ছিলেন ন্নেহ্ময়ী, তাহার শ্নেহ আমাকে মুগ্ধ বিহ্বল করিয়া তুলিত, বিশেষতঃ পিতার শাসন্রে পর। | মা যেদিন ইহলোক ত্যাগ করিলেন, সেদিন সংসা- টা বড়ই শৃন্ত বলিয়া বোধ হইল, সেখানে যে কোন কালে কোন সুখ পাইতে পারি সে কল্পনাটিও করিতে পারিলাম না । পিতা দিনকতক পরে দ্বিতীয় বার বিবাহ করিলেন। লোকের কথায় ধারণা হইল বিমাতা৷ কোন-না-কোনদিন আমাকে অক্নের ভিতর বিষ পৃরিয়া অথবা চুরিকার সাহায্যে ত্য! করিবে। এত বিপদ, তথুও ছু্টামি ছাড়িতে পারিলাম না। সমস্ত দিন রৌদ্রে ঘুরিয়া বেড়াইতাম। প্রতিবেশীর ঘরে উপদ্রব করিতাম। একদিন পিতা ষখন আমাকে প্রহার করিবার জন্ত সদর রাস্তার উপর দিয়া নানা অকথ্য ভাবায় গালাগালি দিতে দিতে ছুটিতে লাগিলেন, রাস্তার 'জোঁকেরা হাসিতে লাগিল। সেদিন আমি আপনাকে দ্বিকার নিলাম ; নিজের দোষের অন্ত ন্_. পিভান্স অঙ্ুত আচরণের জন্ত। , ভামাদের টোলেন়্ অধ্যাপকের লহিভ আমার মানসী ও মন্রবাণী , [৮ম বর্ষ--১ম খণ্ডন সংখ্যা পিতার কোন: প্রকার একটা সম্পর্ক ছিল। এই কেলে-" স্কারের গর তাহার নিকট বিষ্তাশিক্ষার জন্ত পাঠাইবার ইচ্ছা যেদিন তিনি প্রকাশ করিলেন সেদিন আমি কোন প্রকার আপত্তিই উত্বাপন করিলাম না । গ্রাম ছাড়িয়া আসিতে প্রথম প্রথম বড়ই কষ্ট হইল। তবুও তোমাদের টোলে আসিয়া নীরবে পড়িতে আরম্ভ করিলাম। বোধ হইল-_-এবার হয়ত একটু আনন্দ পাইব কিন্তু দিন কতক পরে অধ্যাপক মহাশয়ও আমাকে তিরফার করিতে আরম্ত করিলেন। গঙ্গায় ঘণ্টাখানেক সাতার না কাটিলে আমার স্নান হইত না, ইহাতে হয়ত তাহার কাজের কিছু ক্ষতি হইত। আমার ছেলেবেলাকার « খানিকটা আনন্দের বিনিময়ে তিনি আপনার স্থার্থ কিনিতে চাহিতেন ) আমি প্রথমে নির্বোধ ছিলাম কিন্তু শীস্ই আপনার প্রাপ্য কড়ায় গণ্ডায় বুঝিয়া লইতে শিখিলাম। অধ্যাপক মহাশয়ের নিকট পড়িতেছিলাম মুগ্ধবোধ ব্যাকরণ হিতোপদেশের মিত্রলাভ আর প্রায়শ্চিত্ত তত্ব। সত্য কথা বলিতে কি একখানা বইও আমাকে ভাল লাগিত না। প্রতিদিন দুপুর বেলা এক ফিরি- ওয়ালা বটতলার কতকগুলা বই বিক্রয় করিবার জন্য হাকিয়৷ হাকিয়া সম্মুখের বড় রাস্তাটি ধরিয়া চলিয়া বাইত। গ্রামের বধূরা সংসারকর্্ের অবসর সময়টুকু কাটাইবার জন্ত ছু একথানা বই সেই ফিরি- ওয়ালার নিকট হইতে কিনিতেন। আমি একদিন তাহাকে ডাকিলাম, দে টোলের লাম্নেকার তেঁতুলগাছটির তলায় ঝুলি খুলিয়া আমাকে বই দেখা- ইতে আরম্ভ করিল। নানা প্রকার দৈত্যদানবের ছবি দেখিয়া একখানা বই আমি বাছিয়া লইলাম। বই খানার নাম 'আরব্য উপন্যাস | ছুপুর্লবেলা অধ্যাপক মহাশয় খন টোলে থাকিতেন না, তখন আমি বিছানায় শুইয়া নিবিষ্টমনে বইথানি পড়িয়া যাই: তাম, কোন্‌ একটা অল্সাত জগতের কত অশ্পষ্ স্বপ্নময় ছবি, কত-বিচি্র বন উপবন, নদ-নদী সমুদ্র পর্বত, কত পাখী ফত দৈত্য, কত রকমের সাহ্ষ দিবায়াজ ফান, সা: যেন কোন্‌ ইরানের শক্িতে আমার নয়ন রি ভাসিয়া বেড়াইত। আমার চক্ষের সম্গুধে আর. তই জিনিস তামরা বেড়াইত, তাহাকে শ্পষ্টর্ূপে কোনদিন অনুভব করিতে পারি নাই, তবুও আকাশে-বাতাসে, দক্ষিণে বামে, আমার বাহিরে ভিতরে তাহার সত্তা স্পষ্টই অনুভব করিতাম। তুমি হয়ত জিজ্ঞাসা করিবে;সেট! কি? বন্ধ, তোমার কাছে কোন কথা গোপন রাখিব নাঁ_ সে একটি সুন্দরী রমণী। কে সেস্ন্দরী রমণী তাহা জানি না। প্রভাতের আলোক-হিল্লোলে, ছ্িপ্রহরের নিস্তব্ধতায়, বিষঞ্জ সন্ধ্যার শ্তামায়মানা পুষ্করিনীর স্তিমিত পথে তাহাকে কভু অন্তরে কতু বাহিরে দেখিতে পাইতাম। সে আমার প্রাণমন আচ্ছন্ন করিল! রাখিয়াছিল। সেদিন বাসস্তী পুর্ণিমা, অনেক রাত্রি পর্যযস্ত গ্রামের লোকেরা কেন যে সেদিন বাহিরের জ্যোৎন্নাপ্লীবিত পথটির উপর বিচরণ করিতেছিল তাহাই ভাবিতে ভাবিতে কখন আমি তন্ত্রামগ্ণ হইয়াছিলাম বুঝিতে পারি নাই। হঠাৎ বোধ হইল যেন আমি কোন সমুদ্রের ফেনিল তরঙ্গে ভাদিয়া! ভাসিয়া একটা দ্বীপের উপর উঠিয়াছি। আমার শরীরে অবসাদ না , একটু নিদ্রার ঘোর যেন একট! অপূর্ব সুখবেদনার মত আমাকে অবশ করিয়া ব্াখিয়াছিল। চারিদিকে দেখিতেছি শ্তাম তরুপুঞ্জ জ্যোৎন্না মাখিয়া বাতাসে অসীম আনন্দে শিহরিয়! উঠিতেছে, নিকটেই একটা পাহাড় তাহা হইতে একটি ঝরণা অব্যক্ত মধুর ধ্বনিতে জননীর “ঘুমপাড়ানি গানের' ম্ত তাহার সুপ্তি আবেশ ধনাইয়! তুলিতেছিল। স্ুকোমল তৃণশয্যায় আমি পড়িগ্নাছিলাম সহসা মনে হইল--যেন কাহার কোলে মাথা রাখিয়া! গুইয়া আছি তাহার নিঃশ্বাস আমার গারে লাগিতেছে, তাহার অসংস্কত কেশ আদার : অঙ্গে_সর্বালে, সর্ধষ হৃদয়ে, সর্ব প্রাণে অনুভব. করিতেছি। চাহিয়া দেখিলাদ। বন্ধু, কি ' দেখিলাদ। বলিতে. পারিব দা। খোল! চিঠি তবে, ৮৫ যাহা দেখিলাম তাহাকেই বির ধরিয়া কামনা করিয়াছি । পরদিন সকালে অধ্যাপক মহাশয় আসিয়া যখন ব্যাকরণের পাঠ বুঝাইতে আরম্ভ করিলেন ) . তখন হঠাৎ আমার মনে হইল ব্যাকরণ পাঠ করিবার জন্ত আমার জীবন গঠিত হয় নাই। পথের জন কোলাহল অধ্যাপকের ব্যাখ্যা আর আগস্তকের ধূমপান আমার কাছে বড়ই বিরক্তিকর বলিয়া মনে হইল। আমরা ব্রাহ্গমুহূর্তে বিছানা হইতে উঠিতাম, তখনও আকাশের প্রান্তে শুকতারাটি উজ্জ্বল থাকিত। প্রাতে উঠিয়া দেবতার নাম স্মরণ করিতে গিয়া, তাহাকে মনে করিতাম, শুকতারাটির পানে চাহিয়া এক একদিন আমি তন্ময় হুইয়া পড়িতাম, মনে হইত তাহার সহিত আমার মানসী সুন্দরীর বিশেষ সাদৃশ্ত আছে, কিন্ত সাদৃশ্তটা ষে কোন্খানে তাহা কোন দিন ঠিক ্ষরিতে. পারি নাই। একদিন প্রভাতে বাহিরে বসিয়া আছি-_না, না ঠিক প্রভাত নয়, তখনও আকাশে ছুই চারিটা তারা অপেক্ষা করিতেছে, আমি শুকতারাটির পানে চাহিয়া আছি, এমন সময়ে দেখিলাম অনেক রমণী কথা কহিতে কহিতে গঙ্গান্নানে চলিয়াছে। পূর্বদিকে খওচাদ হেলিয়া পড়িয়াছিল, পথটি তখনও জ্যোৎনায় রডীন। | রমণীর! চলিয়া যাইতেছিল। আমি ভদ্রসস্তান, টোলের অধ্যাপকের ছাত্র। অপরিচিতা রমণীদের দিকে চাহিয়া থাকা একটা দোষ, আমার পক্ষে সে দোষ অমার্জনীয় | তবুও সে দোষ করিলাম । রমজীরা চলিয়! গেল, আমি বসিয়া বসিদ্বা যে আমার কামনার ধন, যে আমার স্বদয়ের আরাধ্যা, ষাহাকে মনে" মনে গড়িয়া *তুলিয়াছি, একদিন গুধু ষাহাকে স্বপ্রে মাত্র দেখিরা- ছিলাম সেই অনিন্দ্য সন্দরীর রমণীয় চিত্রথানি অস্তরের মধ্যে আকিতে লাগিলাম। সহসা দেখিলাম একটি বৃদ্ধার সঙ্গে সঙ্গে একটি রমণী কিছুক্ষণ পরে নীরবে পথ দিয়া যাইতেছে । রমণীর অনাবৃত মুখের উপর জ্যোতল্সা ৮৬ পড়িয়াছিল। হঠাৎ আমার দৃষ্টি সেদিকে আকৃষ্ট হইল। আমি দেখিলাম। রঃ কি দেখিলাম | আমি দেখিলাম স্বপ্ন সত্য হয়, বিশ্ব জুড়িয়া! যে মহাপুরুষ বিরাজ করিতেছেন তিনি জীবের ইচ্ছা অপূর্ণ রাখেন না, তাহার করুণ "অপার, অপরি- মেয়। তগবান্কে ঘি কোন দিন অন্ুতব করিয়া! থাকি তবে সেইদিনই করিয়াছি। আমি তাহার পানে চাহিতেই আমার সর্বাঙ্গ কণ্টফিত করিয়া সেও আমার দিকে চাহিল। সে আমাকে দেখিতে পাইল কিনা ঠিক বলিতে পারি না, হয়ত দেখিয়াছিল। মনে করিলাম--তাহার অনুসরণ করি, কিন্ত যদি কেহ জাগিয়া আমাকে অনুসরণ করে, সেই জন্ত বহু কষ্টে আত্মমংবরণ করিলাম। নিকটেই গঙ্গার ঘাট। একটু পরেই ছু একজন ছাত্র ষখন জাগিয়া উঠিল, তখন একজন সহপাঠীকে বলিলাম “আজ হতে প্রাতন্নান আরম্ভ কর্লুম'__এই বলিয়া গামচ। কাধে ফেলিয়া ঘাটের দিকে অগ্রসর হই- লাম। মনের ভিতর কি একটা আবেগ গুমরিয়৷ উঠিতে- ছিল। মনে করিতেছিলাম, জীবনের বিশ পঁচিশ বৎসর কাটাইয়া দিয়্াছি।--পিতার তাড়না! সহিয়া টোলের গ্রন্থ পড়িয়া, লোকের বাড়ীতে পূজা করিয়া) কতক- গুলি প্রাণহীন জড়বন্তর সেবার এত কাল উৎসর্গ করিয়া পৃথিবীর যেখানে রস, যেখানে আনন্দ, যেখানে সার! জীবনের সার্থকতা যাহার অভাবে বিশ্ব মরুভূমি হইয়া যায়, তাহার সন্ধান করিতে পারি নাই। আজ মনে হইল, তাহারই পথ ধরিয়াছি, গত রজনী আমার পুরাতন জীবনকে লইয়া অতিবাহিত হইয়াছে,আজিকার প্রভাত হইতে আমার মধ্যে একটা নুতন জীবনের সাড়া পাইয়াছি। | লোজা পথ ধরিয়া গেলে গঙ্গার ঘাটে পৌছানো যা, টোলের উপর দিককার পথটা ধরিয়া চলিলাম। মনে করিলাম হয়ত তাহাকে দেখিতে পাইব। - মানসী ও মন্্বাণী [৮ম বর্ষ--১ন খণ্ড--১ম সংখ্যা কিছু দূর আসিয়াছি, এমন সময়ে দেখিলাম-_ আমাদের অধ্যাপক 'মহাশয় সেই পথ দিয়া টোলের দিকেই আসিতেছেন, আমাকে দেখিয়াই তিনি বলিলেন, প্বিভূতি যাচ্ছ কোথা 1” আমি একটু থতমত খাইয়া বলিলাম, পান করতে।” তিনি বলিলেন প্এত সকালে ?” আমি বলিলাম, “আজ হতে প্রাতঃান করব ঠিক করেছি। তিনি বলিলেন, “আজ এস, কাজ আছে ।” অধ্যাপক মহাশয়ের উপর আমি বড়ই চটিয়া গেলাম। তাহার নামাবলী, মালা, তিলক আমার কাছে অপহ্‌ হইয়া উঠিল। মনে করিলাম তাহার কথা অবজ্ঞা করি, কিন্তু সাহস হইল না। . ফিরিলাম, অধ্যাপক মহাশয়ের কাজও করিলাম, কিন্তু সমস্ত দিন অন্তরটা পুড়িয়া ছাই হইতে লাগিল। কোন কাজ করিতে ইচ্ছা নাই, তবুও মবই করিতে হইল। মনে করিলাম-_-আমি একটা দাস-_অধ্যাপক মহাশয় যেন কোন্‌ মক্ুপ্রান্তের হাটে আমাকে কিনিয়! আনিয়াছেন। ছুই তিন দিন কাটিয়া গেল। তাহার স্বৃতি শাণিত ছুরিকার মত আমার অন্তর দিবানিশি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করিতে লাগিল। বুঝিলাম--একটি মুহূর্তের শুভ- দৃষ্টিতে আমি তাহাকে চিরদিনের জন্য আপনার করিয়া লইয়াছি। সে যেই হোক, সবর্ণা, অদবর্ণা, পতিতা, পরনারী বা নীচকুলোদ্তবাঁ যেই হোক না কেন আমি তাহাকে চাই, তাহাকে পাওয়া সম্ভব হোক, অসম্ভব হোক, আমি তাহাকে চাই, সেষদি আমার না হয়, তবুও আমি তাহাকে চাই, তাহাকে চাহিতে টর্িং যেন এ জীবন কাটিয়া যাঁয়। আর এক দিন 'বোধ হয় তাহাকে দেখিলাম। বোধ হয় কেন নিশ্চয়ই-_তখন প্রভাত হইয়াছে_ পূর্ব- দিকটা লাল হইন্গা উঠিনাছে, বুকভরা অনুয়াগের মত। আমি তাহার দিকে চাহিলাম, সেও আমার পানে চাহিল, আমার অন্তরাত্মবা আহত পক্ষিশিশুর মত কীপিয়া উঠিল। আজ আমি তাহাকে অনুসরণ করিলাম। . সন্থ, তুমি হয়ত আমার কথা 'শুনিরা আমাকে নিতান্ত পাপী বলিয়া স্থির করিবে তাহা করিও ভাই, কিন্তু গ্রথমে আমার কথা শেব করিতে দাও। আমি চলিলাম। পথে বোধ হয় অধ্যাপক মহা- শয় আমাকে দেখিয়াছিলেন1 হয়ত সেদিনও তিনি আমাকে ফিরিতে বলিয়াছিলেন, কিন্ত আমি তাঁহার কথায় কর্ণপাত করি নাই। রমনী শ্লানাস্তে সিক্তবস্ত্রে খন একটা গলির মধ্যে প্রবেশ করিল, তখন বেলা হইয়াছে । হঠাৎ মনে হইল অধ্যাপক মহাশয় ও অন্যান্ত ছাত্রেরা এতক্ষণ আমার জন্ত অপেক্ষা করিতেছে, এখনই যাইতে হুইবে | ভায়রে পৃথিবী শত বাধাবিস্বে পরিপূর্ণ, দবীহারা আত্মীয় বলিয়া পরিচয় দেন, রর মত. শত্র আর জগতে নাই। , এই সব কথা ভাবিতে ভাবিতে খন আমি আমার মনকে তাহার পথ হইতে সবলে টানিয়া আনিলাম, তখন অন্তরের মর্ধোে যে বেদনা গুমরিয়া উঠিল, তাহা আমিই বুঝিয়াছি। টোলে উপস্থিত হইয়া অধাপক মহাশয়ের তিরক্কার শুনিলাম, কোন কথা কহিলাম না। দ্বিগ্রহরের পর যখন পথ মাঠ, থাট নিস্তদ্ধ £হইয়া উঠিল, তখন ঘরটিতে একা একখানি মাদুর পাতিয়া শয়ন করিলাম, হু সু করিয়া বাহিরের বাতাস ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিতে লাগিল । সারাদিন ছুঃখের ভাবনায় কাটিয়া গেল। বৈকালে অধ্যাপক মহাশয় আসিরা বলিলেন, *বিভূতি আজ চক্রবর্তী মশায়ের বাড়ী জগ্মাষ্টমীর পৃজাটা শেষ করে এস |» আমি বলিলাম, "্মামিত উপবাস করিনি, কাল হতে ' শরীরটা বড়ই অনুস্থ বোধ করছি।” অধ্যাপক মহাশয় বলিলেন, “কি, আজ অন্মাষ্টমী, উপবাস করনি? তোমরা শ্লেচ্ছ, অনাচারী |” আমি বলিলাম, “আপনিই যদি ও কাজটা আজ শেষ কয়েন বড় ভাল হম 1 . অধ্যাপক মহাশয় বলিলেন, *তোমাদের হুবেল! খোলা চিট ৮৭ খাওয়াচ্ছি তবুও আমাকে খাটতে হবে? যাও তুমিই পুজা কর্বে, আমি যেতে পারব না।” অধ্যাপক মহাশয় ভাঘুল চর্ধণ করিতেছিলেন। কাজটা গোপনেই হইতেছিল, আমি কিন্তু তাহা বুঝিতে পারিয়াছিলাম । বলিলাম, “উপবাস না করে আমি কেমন করে পুজা কর্ব ?” তিনি বলিলেন,”আমি বল্ছি তোমায় করতে হবে ।” আমি বলিলাম, “অশাস্ত্রীর কাঁজ আমি করতে পারব নাঁ।” আমি প্রতিজ্ঞা করিলাম কখনই পুজা করিতে যাইব না। পুর্বে উপবাস না করিয়া অধ্যাপকের আদেশমত অনেকবার পুজা করিয়াছি। পৃথিবীতে কেবল কঠোরতার ছবি' দেখিয়া মনটাঁও কঠোর হইয়া উঠিয়াছিল, সেইজন্য মিথ্যা, প্রবঞ্চনা, নিষ্ঠুরতা প্রভৃতিকে এতদিন ঘ্বণা করিতে শিখি নাই। রী অধ্যাপক মহাঁশর খুবই চটিয়া গেলেন, কিন্তু কিছু বলিতে পারিলেন না। তিনি চুপ করিয়া ব্হছিলেন, আমিও চুপ করিয়া বসিয়া রহিলাম। ইহার পর গ্রু-শিষ্যের সাক্ষাৎ হইলে দুজনে পরস্পর কথা কহিতাম না। একদিন এক বন্ধুর অন্ু- রোধে তাহার নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করিলাম। পূর্বের মত সবই চলিতে লাগিল। তবে অধ্যাপক মহাশয় সেই দিন অবধি আমাকে অস্তার আদেশ করেন নাই। বেশ বুঝিতে পারিলাম- আমাকে মুখে ক্ষমা করিলেও তিনি অন্তরে আমার প্রতি খানিকটা ক্রোধ পোষণ করিতেছেন। যাক--তাহার জন্ত আমার বিশেষ ভাবন! হয় নাই। কেৰল একথানা ছবি দিবারাত্র শয়নে শ্বপনে, অবসরে অনবসরে আমার চক্ষের সম্মুখে ভাসিয়া 'বেড়াইত। অবসর পাইলেই সহপাঠীদের সঙ্গ ছাড়ি এদিকে সেদিকে ঘুৰিয়া বেড়াইতাম । কেন বেড়াইতাম, তখন বুঝি নাই, এখন বুঝিতেছি-_তাহাকে দেখিবার আশাই আমাকে পথের পথিক করিয়া ভুলিত। নি ৮৮ প্রায় একমান কাটিয়া গেল, এফরিধও তাহাকে দেখিতে পাইলাম ন!। গুচি্ীর হইয়া 'পড়িলাগ, ক্রমশঃ বাহিরে যাওয়া আঁা বন্ধ হর্ীল। নিয়াশান বেদনা ও ঘশচন্তা আমাকে আকুল করিয়া তুলিল। অধাপক :. মহাশয় হঠাৎ একদিন আমাকে বলিগেন, পবিভৃতি, : ভোমার পরিবর্তন দেখে বড়ই সুখী হলুষ |” ঠিক জানিনাহয়ত অধাপক মহাশয়ের উপর ঝগ কতিযাই সে দিন িপ্রহরের সময় টোলের বহির্ভাগে - আসক! দীড়াইলাম--অন্ঠের দোষারোপও সহ হয়, কিন্ত অধ্যাপকের সুখ্যাতিও অসহ__আমি বাহির হইলাম, মনে : ক্ষরিলাম--এমম কোন কাজ করিব যাহাতে হার নিকট হইতে হুখাতি আর না শুতে চহন্ব। র্‌ চতিন রর যে গলিতে সে ॥ প্রবেণ করিয়াছিল, দেখিলাম বন্ধদিন পরে আজ কিসের আশায় সেই গলিতেই প্রবেশ করিয়াছি। যেখানে আসিয়া খাঁমিলাম সেখানে একটা বটগাছ কতকগুলি সি'ুর . মাখানো শিলা-খণডকে আশ্রয় দিয়াছে টিতে একটি বাড়ী। | ' চারিদিকে চাহিয়া দেখিলাম । বাধাপ্রাপ্ত নদী"কল কল ছল ছল করিয়া সবেগে ধেমন আপনার পথ কাটির উদ্দাম হইয়া! ওঠে, সেই 'ভাবেই আমার পূর্ব কামনা আবার-আমাকে অভিভূত করিয়া ফেলিল। এস্ছাঁদের উপর একখানি কাপড় শুকাইতেছিল। তাহার দিকে আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হইল। মনে করি- লাম এই ডূয়ে কাপড় খানি পরিয়াই তাহাকে সে দিন আন করিরা ফিরিতে দেখিয়াছিলাম। হায়রে মনে (একটুগ সনেহ জাসিল লা) .. ষাঁড় খানির পিঠা হিয়া আমার সাধ মিটল বা। বলে হঈল-_ওই ক্কাপড় খানিও যদি পাই তাহা হইলে এটা বুকে পি ধরি। অনেকক্ষণ সেখানে দাহসী ও ধরছি (৮ খন খঝপ্িয গিগের সন্ধার পনর টৌলে জানিষা বুঝিলাম--তাইায় জ্ত উৎকঠা ছিন্ণ বাড়ির! উঠিরাছে। এই তাবে দিম কতক ফাটিজ | একদিম সফাল বেলা মীতের শেষে একটা নূতন ধরণের ধাভীল হঠাৎ মার সর্বাঙ্গ মোমাঞ্চিত করিয় তূলিল, আছি বুঝিলাম--'আর গ্লোপনে গোপনে তাহাকে দেখিবার অস্ত ঘুরিয়া বেড়ানো চলে না, তাহাকে নিকটে পাইতে চাই, আমার আধার হৃদয় তাহারি হাতে দীপান্বিত হইয়া উঠুক । টোলের ছাত্রেরা ক্নানের পর যেবাহার কাজে বাহির হইয়। গিয়াছে । তখনও আমি চুপ করিয়া বসিয়া আছি, নিকটের আমগাছটির মুকুলের গন্ধে বাতাস ভারাক্রান্ত হইয়! উঠিয়াছে। কে একটি অপরিচিত বৃদ্ধা আমাকে বলিল, প্াঁগা বাবা আমাদের বাড়ী পুজো! কর্তে পারবে ?” আমি বল্লাম, “আমার শরীর ভাল নয় বাছ! |” সে বলিল, “না বাবা, কর্তেই হবে, আমি কোন বামূুনকে এখানে খুঁজে গেলুম না” আমি ভাবিলাম, কি আপদ, বুড়ী কথা শোনে না কেন? জোর করিয়৷ বলিলাম, “আমি পারব না, তুমি ঘা হয় করগে বাড.” বুড়ী বলিল "বাবা, সর্তী ঠাকুরের পূজো তোমরা পোড়োরা কর্বে না ত কে কর্বে? তোমার পায়ে পড়ি বাবা, চল। লোঁক পাচ্ছিনি, পেলে বাবা তোমায় কষ্ট দিতাম না।» বুড়ী ছাড়িবার পাত্র নয়, তাহার আকুলতা। দেখি! কতকটা দয়ারও উদ্রেক.হইরা, বলিলাম, “অপেক্ষা কর, মান করে গালি” | গান করিয়া! প্রায় একঘপ্টা। গন্ধে টোল কিনা দেখিলাম বুক বস্তার উপক্ব পারতারি করিতেছে । বরিলাম, “ভুমি বন একটু বিশ করতে খাতে 1” $ বুবী কণা! খাছিল না, ল্যাধি গন পরিগা নানা , বল! পাবে ঘফাইিলাম, ভাগ বৃ্ধীকে খলিল, প্রা থাছপান1% ফাস্তন, ১৩২২] বুড়ী অগ্রসর হইল। আমি তাহার পিছনৈ পিছনে চলিতে লাগিলাম। পুজা করিতে হইবে বলিয়া কতকটা বিরক্ত হইয়া- ছিলাম, নানা চিন্তা মনটাকে আচ্ছন্ন করিয়াছিল__-সেই জন্ত কোন্‌ পথে যাইতেছি, তাহা ভাল করিয়া দেখি নাই। বুড়ী যখন বলিল, “এস বাবা ঘরে এস,” তখন চমকিয়া উঠিলাম-_সম্মুখে চাহিয়া দেখি একটা বিপুল বটগাছের নীচে সি'ছরমাথানো কতকগুলা শিলাখণ্ড। সর্বশরীর কাপিয়া উঠিল। দেখিলাম, সেই বাড়ীখান! যাহার কাছে অদম্য বাসনা লইয়া বহুদিন ঠাড়াইয়াছি, যাহার প্রতি জ্ঞানালা, প্রতি ইষ্টকথণও পর্যন্ত আমার প্রাণের মধো তাড়িত সঞ্চার করে, সেই বাড়ীটার দুয়ারে দীড়াইয়! বুড়ী বলিতেছে, "এস বাবা ঘরে এস, মেয়ে এখনও জল খায় নি” মেয়েটি কে-_তাহা নিমেষের মধ্যে বুঝিয়া লইলাম। গৃহে প্রবেশ করিলাম । তখন আমি আত্মহারা, কি করিতেছি জ্ঞান নাই। পুজার ঘরে স্ঝাসিয়া উপ- বেশন করিলাম । গন্ধপুষ্প, উপকরণ, দেবীপ্রতিমা! কিছুরই অভাব ছিল না। মগ্ন পাঠ করিলাম, মন্ত্র মাঝে মাঝে ভুলিয়া যাইতেছিলাম, কেননা যে তরুণী পুজার আয়োজন করিয়া দিতেছিল, তাহার প্রতিই আমার প্রাণ আকুষ্ট হুইতেছিল। ধ্যানে সরম্বতী মূর্তি ভাবিতে গিয়া মানস- পটে তাহারই ছবি আকিতেছিলাম। চক্ষু মুদ্রিত করিয়া দেখিতেছিলাম সে কি করিতেছে । হঠাৎ মনে হইল-__-সে যেন আমার মুখপানে চাহিয়া আছে। দেবীর ধ্যান আর হইল না! আমি চক্ষু চাহিলাম-_ হুই চক্ষু তাহারই ছুইটি চক্ষুর সহিত 'মিলিত হইল। সে মুখ অবনত করিল | পুজা ঠিক করিতে পারিলাম কি না জানি, না, তবে পুজা শেষ করিলাম। মধ্যাহ্ছ-ভোজন সেখানেই শেষ হইল, পরিবেষণ করিল সে নিজে । আহারান্তে তাম্ুল চর্বধণ করিতে করিতে বাহিরে ৯২ ক খোল! চিঠি ৮৯ যাইবার উদ্যোগ করিতেছি, এমন সময় সে আমার ছুটি পা জড়াইয়া ধরিল, বলিল, “ক্ষমা করুন, আমি অপ- রাধিণী।” আমি স্তম্ভিত হইয়া দাড়াইলাম, কোন কথা বলিতে পারিলাম না। মে বলল, “আমি অপরাধিণী, ক্ষম1 করুন|» বর্ধমান অবস্থা আমাকে উদ্ভ্রান্ত করিয়া তুলিল। বলিলাম, “কেন? কি অপরাধ ?% সে বলিল, “এ বাড়ীতে আপনাকে আনিয়াছি ।” আমি বলিলাম, “কেন? তাতে দোষ কি ?” বুড়ী দূরে দাঁড়াইয়া ছিল,সে হাসিতে হাসিতে বলিল, ”না গো বাবাঠাকুর, তুমি ঘরে যাও, কি করব, বামুন পাইনি, তাই তোমায় ডেকে এনেছি ।” ব্যাপারটা ভাল বুঝিতে পারিলাঁম না, কিন্ত যখন সে বুড়ীর দিকে সক্রোধে মুখ বিকৃত করিয়! চাহিল, তখন আমি ভাবিলাম এ কি পতিতার বাড়ী পূজা করিতে আসিলাম না ত? সব সন্দেহ মিটিয়া গেল। সে বিষগ্রভাবে অতি ধীরে ধীরে বলিল, "আমি পতিতা, আপনাকে দেখেছি, আপনি কে আমি জানি, এ বাড়ীতে আপনি পুজো করতে আসবেন, একথা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। একটু আগে জান্লে--” আমার মাথা খুরিতে লাগিল, তবুও তাহার কথ।য় বাধা দিয়া বলিলাম, “আপনার আমার দেবতা একই, আমার বাড়ীতে যি তাকে পুজো করতে পারি, আপ- নার বাড়ীতেই বা তা করব না কেন ?” স্পষ্ট দেখিলাম তাহার মুখ উজ্জল হইয়া উঠিয়াছে, উদ্বেগের চিহ্ন ক্রমশঃ মিলাইয়া যাইতেছে । সে আমার মুখপানে চাহিল। আহা! সে চাহনি আমি জীবনে ভুলিতে পারিব না। আমি বলিলাম, “আমার দেবতা! সর্বত্রই আছেন, তাঁর কাছে এ বাড়ীও যা পুরীর জগন্নাথক্ষেত্রও তাই ।” তাহার মুখে কেবল একটা বিষঞ্রতার ছায়া দেখিয়া আসিয়াছি, আজও তাহা দেখিতেছিলাম । এখনও, ৭২ মানসী ও মন্ম্ববাণী [৮ম বর্ধ_১ম খণ্ড-_-১ম সংখ্য। ইয়া বর্তমান জগতে টানিয়া আনিল। এখন বুঝিলাম -আমি অভিসষ্চির বাহির হই নাই। আমি যেখানে আসিয়াছি সেখানে আছে একজন গুরু আর একটি একান্ত অনুগত শিষ্যা ৷ সে বলিল, “আপনি আসিবেন বলিয়াছিলেন, কই আসেন নি ত।” আমি বড়ই সম্কুচিত হইলান.। তাহার একটি কথা আমাকে মিথ্যবাদী 'ও অপরাধী করিয়া তুলিল, আমি ভাবিলাম-_-এতদিন না আসিয়া নিতান্ত কাপুরুষ- তার পরিচয় দিয়াছি। আমি চুপ করিয়া রহিলাম। সে বলিল, “আপনিই আমাকে আশা দিয়েছেন তাই বীচ্‌তে চাই; বাচতে হলে আপনাকে না দেখে আমি থাকৃতে পার্ব না।৮ আমি বলিলাম, “আপনাকে বাঁচতেই হবে,আপনার জীবন বৃথ| একথা কেহ বলে নাকি ?” সে স্তম্ভিত হইয়া আমার মুখপানে চাহিয়া! রহিল। কিছুক্ষণ পরে সে আত্মকাহিনী প্রকাশ করিল। তাহার নাম মাধবী, সে পিতার একমাশ্র কন্তা ৷ কন্তাটিকে পিতা যথাসময়ে একটি ধনীর সহিত বিবাহ সুত্রে আবদ্ধ করেন। স্বামীকে লাভ করিয়া সুখী হইবে । কিন্তু বিবাহের কিছুকাল পরে কন্ঠা বুঝিল-_স্বামীর সহিত ঘর করা তাহার পক্ষে অসন্ভব। স্বামীর যে বিশেষ কোন দোষ আছে তাহা নয়, তবে দুজনের মত, ছজনের চাল চলন সম্পূর্ণ বিপরীত। একদিন কন্তা কাদিয়া কাটিয়া বাপের বাড়ী আসিল, আর শ্বশুরবাড়ী যাইতে চাহিল না। বাপের বাড়ীতেই তাহার সেই সময় আসিল যখন মানুষ কোনমতেই আপনাকে চাপিয়া রাখিতে পারে না, যখন প্রতিক্ষণে বাসন! উন্মত্ত হইয়া উঠে, ও তাহাকে চাপিতে গেলে অন্তর বেদনায় ভরিয়া! যায়। এই সময় সে ভানিল-_বাড়ীর সীম৷ অতিক্রম করিয়া যেদিন সে বাহিরে আসিয়া দাড়াইল, সেদিন ভবিষ্যতে কোথায় আশ্রয় পাইবে, কে তাহাকে আপনার পার্থে স্থান দিবে, তাহার ধারণা ছিল সে ধনী. তাহা সেভাবিয়া দেখিল না, বর্তমানের উন্মাদনায় বিহ্বল হইয়া আপনাকে ও আপনার জ্ঞান-বুদ্ধিকে ভুলিয়া গেল। একদিন সে দেখিল, যাহাকে বিশ্বাস করিয়া সে গৃহের সীমা ত্যাগ করিয়া আসিয়াছে, তাহারও নিকট সাবধানে থাকিতে হইবে,কেন না যখন তখন সে তাহার অলঙ্কারগুলি বিক্রয় করিয়া কিছু অর্থসংগ্রহের ব্যবস্থা করিতে চায়। প্রথম প্রথম সে কিছুতেই আপনার অলঙ্কার তাহার হাতে তুলিয়া দিত না কিন্তু তারপর তাহার মত পরিবন্তিত হইল । যে বর্তমানের একমাত্র সঙ্গী, পিতামাতা স্বামী ও আত্মীয় পরিত্যাগ করিয়া যাহাকে একমাত্র আশ্রয়রূপে মানিয়৷ লওয়া হইয়াছে,তাহার বিরুদ্ধাচরণ করা মাধবীর কাছে হঠাৎ নিতান্ত অন্তায় বলিয়া বোধ হইল। সে তাহার অলঙ্কারগুলি একে একে সঙ্গীর হাতে তুলিয়৷ দিল। সে একথাও মনে করিয়াছিল যথাসর্ধস্ব ত্যাগ করিয়া রিক্ত অবস্থায় যে দিন সে সঙ্গীর পাশে আসিয়! ধাড়াইবে, সেদিন হয়ত ধর্্ের খাতিরে সে একান্ত আশ্রিতাকে পরিত্যাগ করিতে পাৰিবে না। হায়রে ধর্ম, পৃথিবীতে ধন্ম যদি থাকিত তাহা হইলে এত অত্যাচার কেন? একটা অন্ধকার রাত্রে যখন সমগ্র পৃথিবী সুপ্ত, তখন মাধবী সঙ্গীর পা-ছুটি জড়াইয়া বলিল, “ওগো, আমাকে ছাড়িয়া যাইও ন1।” তবুও সেই নরপিশাচ তাহার পর্বম্ব অপহরণ করিয়া তাহাকে বিশাল বিশ্বে নিরাশ্রয় অবস্থায় একা ফেলিয়া চলিয়! গেল। ছুদিন উপবাসের পর এই বুড়ী তাহার সন্ধান পাইয়া আপনার গৃহে লইয়া আসে। প্রতিদিন সে তাহাকে পণান্ত্রীর ব্যবসায় আরম্ভ করিতে অন্থুরোধ করে, কিন্তু তাহার মনে আর পাপ নাই। সে অবলা, কি করিবে। বাহার! সবল, ত্াহারাও যে প্রবৃত্তিকে দমন করিতে পারেন না। সে অশিক্ষিত অজ্ঞান) বাহার! শিক্ষিত ও জ্ঞানী তীহারাও যে ভ্রমে পতিত হন। সমাজ তাহাদের শাসন করিতে পারে না, তাহার যত বীরত্ব দুর্বল রমণীর কাছে। ফাস্তুন, ১৩২২] খোল! চিঠি ৯৩ সমাজ, ধর্ম বা স্তায় শুধু দুর্বলকেই বীধিবার জন্য, বলীরা ্বার্থসিদ্ধির জন্যই ইহাদের প্রতিষ্ঠা করিয়াছে। জানি তুমি তর্ক করিবে, কথার ফাদে ফেলিয়া আমাকে মহাপাপী প্রমাণ করিবে। আমি যাহা শুনিয়াছি বা পড়িয়াছি তাহা লিখি নাই ) যাহা বুঝিয়াছি, প্রাণে প্রাণে অন্থভব করিয়াছি, তাহাই লিখিতেছি । তাহাকে বলিলাম,,“তুমি কি তোমার শ্বামীর কাছে যেতে ইচ্ছা কর ?” এই প্রথম তাহাকে “তুমি” বলিয়া সম্বোধন করিলাম। সে বলিল, “তিনি দেবতা,তীহাকে আমি পুজা করি, তবে তাঁর কাছে এ মুখ নিয়ে আর দীঁড়াতে পার্ব না।” দেখিলাম-_তাহার মুখ" পাংশুবর্ণ হইয়া গিয়াছে। যেন সে কলঙ্কের বোঝা লইয়া স্বামীর নিকটেই আসিয়া ধাড়াইয়াছে। আমি বলিলাম, “তুমি বলেছ___বুড়ী তোমাকে বড়ই অযত্ব করে-_-এখন তোমার উপায় কি?” সে বলিল,“উপায় কি জানি না, তবে আপনার কথা আমার প্রাণে আশ! এনে দিয়েছে-_তা না হলে হয়ত আমি বুড়ীর কথামত কাজ করতুম।” আমি বলিলাম, “তুমি যে খেতে পরতেও পাও না, তা তুমি না বল্লেও আমি বুঝতে পেরেছি” তাহার মুখচোখে সঙ্কোচের রক্তিম আভা কুটিয়া উঠিল। কিছুক্ষণ চুপ করিয়! সে বলিল, “আমি আমার অলঙ্কারগুলি সবই হারিয়েছি। আমার হাতে এখন একটি কড়িও নাই ।” হঠাৎ মনে হইল-সে কি আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করে? কিন্তু তাহার মুখে যে অন্ুতাপের কালিমা ও শরস্ত কোমলতা ফুটিয়া উঠিয়াছিল তাহা শুধু যে মন হইতে সে সংশয় দুরীভূত করিয়া দিল তাহা নহে, একটা নিতান্ত অসম্ভব কথা ভাবিয়া! তাহার প্রতি অন্তায় বিচার করিয়াছিলাম বলিয়া একটু লজ্জা দিতেও ছাড়িল না। আমি বলিলাম, "অলঙ্কারের মধ্যে ত দেখছি একটি আংটি মাত্র রয়েছে ।” সে অংটিটি আর এক হাতে চাপা দিল। যেন নিজের কাছেও সেটিকে লুকাইয়া রাখিতে চায়। অনেকক্ষণ চুপ করিয়া বলিলাম, "তুমি সুখী হও, সৎপথে থাক, কিন্তু এ আংটিতে তোমার ত বেশী দিন চলবে না-?৯ সে নিতান্ত সঙ্কোচের সহিত বলিল, “এ আংটি আমার স্বামীর দান।” আমি বুঝিলাম সে এটিকে কাছ- ছাড়া করিতে অনিচ্ছুক । অপরাহে টোলে ফিরিলাম। কেবল আংটির কথাঁট! আমার মনের ভিতর তোলাপাড়া করিতে লাগিল। এই ভাবে ছু-একদিন কাটিয়া গেল। হঠাৎ একদিন পিতা আমাকে বাড়ীতে ডাকিয়া পাঠাইলেন। সেই দিন দ্বিপ্রহরের সময় টোলের চাবি বন্ধ করিয়া মাধবীর নিকট উপস্থিত হইলাম, বলিলাম, প্বাড়ী যেতে হবে, হয়ত মাসখানেক দেরী হতে পারে, তোমার সঙ্গে আমার একটু কথা আছে ।” সে অনেকক্ষণ নিষ্পন্দভাবে দীড়াইয়া তারপর বলিল, “কি কথা ?” “যদি কিছু মনে না কর তাহলে বলি।” মাধবী বলিল, “বলুন |” বলিলাম, “তোমার হাতে কিছু টাক! দিয়ে যেতে চাই ।” সে বলিল, “আমি টাকা! চাই না, আমি পাপী, আপনার পরিশ্রমের জিনিস নিয়ে আরও পাপী হব, আমাকে রক্ষা করুন|» আমি বলিলাম, “আমি তোমার কাছে এ টাকা গচ্ছিত রাখলুম, আমাকে আবার ফেরত দিও ।” সে বলিল, “তবুও পারব না ।” তাহাকে বুঝাইলাম, বলিলাম তাহাকে নিকট- আত্মীয়ার মত দেখি, আমার দান গ্রহণ করিতে তাহার কোন প্রকার সঙ্কোচ হওয়া উচিত নয়। তাহার কম্পিত অবশ হাতটি হাতের উপর তুলিয়া লইলাম। ছুখানি দশ টাকার নোট তাহার উপর রাখিয়া সেই কোমল ্লিগ্ধ হাতখানি চাপিয়া ধরিলাম । সে নীরবে রহিল। ৭8 মানসী ও মর্ম্মবাণী [৮ম বর্--১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা অবনত মুখে নিম্পন্স্থীবে দীড়াইয়া রহিল। আমি বাহিরে আসিতে আসিতে বলিলাম-_ প্রয়োজন হইলে যেন সে আমার গচ্ছিত টাকা হইতে খরচ করে। কাজগুলা নিমেষের মধ্যে শেষ হইয়া গেল। র্ ক ক চা বাড়ীতে আসিলাম। মাধবী আমার অবর্তমানে অর্থাভাবে কষ্ট পাইবে না বলিয়৷ প্রধণটা নিশ্চিন্ত ছিল। পিতা! নানান্‌ কাজে ব্যস্ত থাকিতেন। আমি সারাদিন পথে পথে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরিয়া! বেড়াইতাম। পিতা যষেকাজের জন্তঠ আমায় ডাকিয়াছিলেন, তাহা শেষ হুইলেও আমাকে ছুমাস বাড়ীতে থাকিতে হইল। সময়ে সময়ে মনটা ছু হু করিয়া উঠিত, বোধ হইত কি যেন আমার নাই, অথচ তাহা না পাইলে আমার জীবন ছূর্ধবহ হইয়া! পড়ে। সন্ধ্যার সময় লোকেরা যে যাহার কাজ সারিয়া যখন সারাদিনের শ্রম ও দুঃখের ভার নাশ করিবার জন্ত আকুল ভাবে গৃহপানে ছুটিয়া আসিত, তখন ভাবিতাম_-কেন তাহারা গৃহকে এত ভালবাসে । সঙ্গে সঙ্গে এক একটি গৃহের ছবিও আমার চক্ষের সম্দুখে ফুটিয়া উঠিত-_-সে গৃহে পিতার তিরফ্ষার নাই, নিষ্ঠুরতা নাই, অশান্তি নাই? মাতার ন্নেহ, পিতার উদ্দারতা, ভ্রাতা ও ভগিনীর ভালবাস! তাহাকে রমণীয় শাস্তিকুঞ্জে পরিণত করিয়াছে; সেখানে আরও একজন আছে-_সে গৃহের সৌন্দর্য, গৃহের লক্মী__হায়রে, সে কে? তখন তাহাকে চিনিয়াছি__সে রমণী, গৃহিণী, নিরাশ হৃদয়ের আশা, হতশ্রীর সমৃদ্ধি, সর্বছুঃখের শাস্তি, পরিত্যক্তের আশ্রয় । একদিন শুনিলাম পিতা আমার বিবাহ দিতে চান্‌ _খুব সহজ কথা, সকলেই বিবাহ করে__তাহাতে . আবার ভাবন! কিসের? কিন্তু আমার অন্তরে কোথা হুইতে কি একটা ভাবনা ঘনাইয়া উঠিল। কি ভাবনা ঠিথ করিতে পারি না, তবে মাধবীর আংটির কথাটা প্রায়ই মনে পড়িত। আর একটা জিনিসের কথা মাঝে মাঝে বিদ্যুতের মত অন্তরে চমক দিয়া যাইত, সে জিনিসটি আর কিছু নয়-__সেটা মাধবীর সেদিনকার কোমল করম্পর্শ। বিবাহের কথা লইয়া আলোচনা যখন বেশী মাত্রায় হইতে লাগিল, তখন একদিন পিতাকে বলিয়! ফেলি- লাম, আমি বিবাহ করিব না। পিতা ভয়ানক রাগিয়া গেলেন, চীৎকার করিয়া বলিলেন, “তবে রে বেটা, আমার কথা শুনবি না? দূর হ, এখনই দূর হয়ে যা ।” পিতা হয়ত মনে করিয়াছিলেন তাহার কথাটা পুত্র পালন করিবে না। পুত্র কিন্ত পরদিন পিতা র কণা- মতই কাজ করিয়া বসিল। সকালে বাড়ী ছাড়িলাম। প্রথমে ভাবিলাম কোথায় যাইব? তারপর ভাবিতে হইল না। টোলে আসিয়াই উপস্থিত হইলাম । অধ্যাপক মহাশয়কে প্রণাম করিলাম । আমাকে আশীর্বাদ করিলেন । পরদিন মধ্যা্কে একবার ভাবিলাম-_মাধবীর নিকট যাইব। অমনই কোথা হইতে একটা সঙ্কোচ আসিয়া উপস্থিত হইল। কোন দিন একথা আমি ভাবি নাই--এতদিন তাহাকে শিষ্যার মত দেখিয়াছি। তাহার কাছে যখনই ধাড়াইয়াছি, তখনই গুরুর গান্তীর্য আমার অন্তর ভরিয়া দিয়াছে । আজ এ সঙ্কোচ কোথা হইতে আসিল? আমার পুরাতন সম্পর্ক কি শিথিল হইয়া গিয়াছে? তবুও চলিলাম। পথে লোকজন নাই-_চারিদিক নিস্তন্ব-_বহুদুর হইতে কেবল একটা চাতকের ক্ষীণ শব্দ বাতাসে ভাস্য়ি আসিতেছে । আমি অএসর হইলাম। সেই পরিচিত গৃহের নিকটে আঙগিলাম। প্রবেশ করিতে থুব স্কুচিত হইলাম, তবুও আপনাকে নিবৃত্ত করিতে পারিলাম না, কিসের একটা তীব্র আকর্ষণ অনুভব করিতে লাগিলাম। ভিতরে প্রবেশ করিয়াই দেখিলাম__সে সম্মথে তিনি ফাল্তন, ১৩২২ ] ঈাড়াইয়। আছে--তাহার পরিধানে' একখানি লাল তিন পেড়ে শাড়ী-_সুন্দর হাতটিতে ছুগাছি কাচের চুড়ি চিকমিক করিতেছে । মাথায় কাপড় আছে, তবে মুখখানি স্পষ্ট দেখিতে পাওয়া যায়। হায়রে, তাহাকে দেখিতে ঠিক কুলবধূর মত, তাহার মুখখানি, তাহার ঈাড়াইবার ভর্গী ঠিক লক্ষ্মীর মত। তাহার দিকে চাহিতেই আমার সর্বশরীর শ্রিহরিয়া উঠিল! সেও আমার পানে চাহিল। সে দৃষ্টিতে যে কি একট অপূর্ব ভাব অস্ফুট অথচ দীপ্ত হইয়া উঠিতেছিল তাহা ঠিক করিয়া বলিতে পারি না । আমি উপরে উঠিয়া একটি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিলাম । মাধবী ধীরে ধীরে আমার নিকট আসিয়া ধড়াইল, তারপর ভূমিষ্ঠ হইয়া আমাকে প্রণাম করিল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “ভাল আছ?” সে ঘাড় নাড়িয়া জানাইল সে ভাল আছে। ছুচারিটা কথা কহিজাম, কিন্তু বেশ বুঝিলাম প্রাণের কথা একটিও এখনও বল! হয় নাই। অন্ত দিন গুরুর মত তাহার নিকটে আসিয়া ঠাড়াইয়াছি। গুরুর গৌরবে মাতিয়া উঠিয়া তাহার সভিত বন্ধুর মত আলাপ করিতে উৎসুক হই নাই। আজ সেই গুরুর গৌরব আমার কাছে গুরুভার বলিয়া মনে হইল। আমি আজ বন্ধুর মত তাহার সভিত কথা কহিতে চাহিলাম। কিন্তু ভাষা মিলিল না। আমার শত চেষ্টা ব্যর্থ হইয়া! গেল। কোন কথা বলিবার অবকাশ না পাইয়া মানুষ প্রার্থিতের দশন লাভ করিয়াও যেমন ফিরিয়া আসে, সেই রূপ ফিরিবার উদ্োগ করিতেছি, এমন সময় ভঠাৎ সে বাহিরে চলিয়া গেল। আমি এদ্দিকে-সেদিকে পায়চারি করিতেছি ; ইচ্ছা একবার তাহাকে দেখিয়া যাইব, এমন সময় সে একটি টাকার থলি আমার হাতে দিয়া বলিল, “আপনার গচ্ছিত টাকাগুলি আমার কাছে ছিল।” বলিবার অনেক কথা ছিল, কিস্তু বলিতে পারিলাম না) থলিটা ভাতে দিবার সময় দেখিলাম তাহার খোল! চিঠি ৯৫ অনামিকায় সেই অঙ্গুরীটি ঝকৃমক্‌ করিতেছে । আমি থলিটি লইয়া নিঃশবে বাহিরে আসিলাম । মনে হইল আমার যাহা প্রাপ্য, তাহা সবই বুবিয়া পাইয়াছি। এ বাড়ীতে আসিবার প্রয়োজন সবই ফুরাইয় গিয়াছে । কেবলই আংটির কথাটা মনে পড়িতে লাগিল। থলি খুলিয়া দেখিলাম-_ মাধুরী একটি টাকাও খরচ করে নাই। -আর কি? সবই ত মিলিয়াছে। এই থলিটি তাহার আমার মধো এতদিন একটা বন্ধনের কাজ করিয়ছে, আজ তাহা ফিরাইয়া লইয়াছি; সকল বন্ধন আজ কাটিয়া গিয়াছে। টোলে ফিরিলাম, কেবলই সেই আংটিটা চোখের সম্মুখে ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিল। মনে করিলাম-_ গুরু তইতে চাই না, তাহার বন্ধু হইতে চাই) সে প্রন্ষুটিত কমলের মত. আমি মধুকরের মত সারাজীবন তাহার আশে পাশে শুধু ঘুরিয়া বেড়াইতে চাই, সে আংটিট! খুলিয়া! ফেলুক । সতা সতাই তাহার আংটিট! মন্ত্রপূত। আংটিটা দেখিলে আর তাহার কাছে একদপগ্ড তিষিতে পারি না। আহ:গ পারিতাম,তখন গুরু ছিলাম । হায়, গুরুত্ব আমার কাছে এখন বিষময় হইয়াছে দুইদিন মাধবীর সভিত দেখা করিতে পারিলাম না। তিন দিনের দিন দ্বিপ্রহরে পথে বাহির হইয়া পড়িলাম। ভাবিলাম সে ত আমাকে তাড়াইয়া দেয়:নাই, তবে যাইব না কেন? চলিলাম, কিন্ত প্রতিপদে আজ চমকিতে হইল। মনে হইতে লাগিল সকলেই যেন আমার মনের নিভৃত কথাটি ও বুঝিয়া লইয়াছে। ধীরে ধীরে মাধবীর গৃহে প্রবেশ করিলাম । সে নীচেই দীড়াইয়া ছিল, আমাকে দেখিয়াই সে গলবস্ত্ হইয়া প্রণাম করিল। দেখিলাম তাহার সুখে একটা অনন্দের দীপ্থি, তাহার চুলগুলি তখনো! এলানো। আমাকে প্রণাম করিয়া উঠিয়! দাড়াইবার সময় কতক- গুলি চুল মুখের উপর, কতকগুলি হ্ন্ধে বক্ষে ছড়াইয়া পড়িল। আমি তাহাও দেখিলাম । ন৬ মানসী ও মর্্মবাণী [৮ম বর্ষ-_১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা প্রণামের পর আজও মুখ ভার করিয়া উপরে উঠিলাম, কিন্ত অন্তরে একটা বেদনা অনুভূত হইল। গুরুর মত নিঃসঙ্কোচে তাহার প্রণামট1 গ্রহণ করিবার শক্তি আমার যে আর নাই তাহা বুঝিতে বাকী রহিল না। হঠাৎ মনে হইল তাহার মুখে একটা আনন্দের জ্যোতি দেখিলাম কেন? সে কি আমাকে দেখিতে ইচ্ছা করে? ঘরে বসিয়া আছি, ভাবিতেছি এখনও সে আসি- তেছে না কেন। সে কি আমাকে দেখিয়া লজ্জিত হয়? সামান্ত শবটিও আমি কান পাতিয়া শুনিতেছিলাম, কেবলই মনে হইতেছিল এইবার সে আসিতেছে । হঠাৎ বোধ হুইল কে যেন সোপান দিয়া উঠিতেছে, কে বোঝা যায় না__তবুও মনে হইল এইবার মাধবী আসিতেছে । একটু :পরেই দেখিলাম যাহা ভাবিয়াছি তাহাই ঠিক। মাধবী আমার নিকটেই আসিয়া ফাড়াইয়াছে। অন্তদিন কথা কহিতে দ্বিধ! বোধ করি নাই, আজ কিন্ত সম্কুচিত হইলাম । সে বলিল, “আপনি এত দিন আসেন নি কেন ?” আমি বলিলাম, “বাড়ীতে কতক গুলে! কাজ নিয়ে বড়ই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলুম 1” সে বলিল, “কি কাজে ?” তাহার বলিবার ভঙ্গীতে কথাটার গুরুত্ব অনুভব করিলাম। সে এমনভাবে কথা কহিল যেন সে কথাটা যতই গুরু হোরু না কেন তাহার শুনিবার অধিকার আছে এবং আমিও তাহার সম্মথে সে কথা প্রকাশ করিতে বাধ্য। বলিলাম, “বাবা অনেকগুলো কাজ করতে বলে- ছিলেন !” মাধবী আবার পূর্বের মতই বলিল “কি কাজ ?” ইচ্ছা হইল সব কথা প্রাণ খুলিয়৷ বলি, তাহার মুখে বে সরলতার আভা! ফুটিয়া উঠিয়াছিল, তাহা দেখিলে কে আত্মগোপন করিতে পারে? মনে হইল পৃথিবীর মধ্যে ইহারই কাছে সব কথা প্রকাশ করিয়া হৃদয়ের ভার লঘু করিতে পারি । অনেক কথা বলিলাম। শেষে ভাবিয়া দেখিলাম, যাহাতে আত্মগৌরব প্রকাশ পায়, এমন কথাই তাহাকে বলিয়াছি, যাহা দুর্বলতার পরিচায়ক, তাহার একটিও প্রকাশ করি নাই। এতদিন গুরু ছিলাম__সে আমাকে ছাড়াইয়৷ উঠিবে, এ আশঙ্কার লেশও ছিল না। আজ দেখিলাম সহসা সে মহামহিমায় মণ্ডিত হইয়া মনঃকল্লিতা স্ুর- সুন্দরীর উচ্ছল লাবপ্যে আপনাকে প্রচ্ছন্ন করিয়া জীবনের যে অভাব সুদূর অতীত হইতে আজ পর্য্স্ত জ্ঞানে- অজ্ঞানে, স্থখে-দ্রঃখে, মিলন-বিরহে নিশিদিন অন্তরে পোষণ করিয়া আদিতেছি, তাহাই মিটাইবার জন্য চিরপ্রার্থিতা বরদাত্রীর মত স্বেচ্ছায় আমার সম্মুখে আসিয়া দড়াইয়াছে। আমি তাহার নিকট দীন, অতি দীন, আত্মগৌরব প্রকাশ না করিলে আঁমার অস্তিত্ব যে লুপ্ু ভইয়া যায়। আমি ষে তাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পারি না, আমি যে আছি, সে কথাও যে ভুলিয়া যাই। সে বলিল, “এত কাজ ছেড়ে আপনি চলে এলেন কেন ?” সতা কথাটা আগেই প্রকাশ পাইতে চায় । বনু কষ্টে সেটাকে চাপিয়া রাখিলাম, কিন্তু কথাটার এগ্ডিটা উত্তর ভাবিয়া পাইলাম ন!। সে আবার সেই প্রশ্ন করিল। আমি চুপ করিয়া থাকিতে পারিলাম ন!। বলিয়া ফেলিলাম, “বাব! বিবাহ দিতে চান-_সেই ভয়ে তাড়াতাড়ি চলে এলুম 1” মাধবী চুপ করিল। হঠাৎ দেখিলাম__তাহার মুখের উপর একটা গার্ভীর্যের ছায়া অল্পে অল্পে ঘনাইয়া আসিতেছে । সে বল্লি, “আপনি কি বিবাহ করেন নি ?” বলিলাম, “না” অনেক প্রশ্ন করিতে পারিত, হয়ত ছু একটা তাহার মনেও আসিয়াছিল, কিন্তু কি জানি কেনসে ফান্তুন, ১৩২২] খোল। চি ৯৭ তাহা প্রকাশ করিল না। দেখিলাম সে ঈষৎ অবনত মুখে দীড়াইয়া আছে। উন্মক্ত জানাল! দিয়া একটা বাতাস মাধবীর অব- গঠন খুলিয়া বাহিরে চলিয়া গেল। সে তাড়াতাড়ি মন্তক আবার অবগুঠনে আবৃত করিল। আমি দেখিলাম। দেখিলাম তাহার সলঙজ্জ অনাবৃত মুখখানি, দেখি- লাম তাহার চঞ্চল মুণাল-বাহু, আর দেখিলাম তাহার" অনামিকায় সেই উজ্জ্বল জ্বালাময় আংটিটি। আমার সর্বশরীর শিহরিয়া উঠিল। মাধবী চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিল। কিছুক্ষণ পরে আমি বলিলাম, “এখন তোমার কোন কষ্ট নাই ?” সে বলিল, "না”। " সংক্ষিপূ উত্তরটা ভাল লাগিল না। তোমার অর্থের প্রয়োজন হয় বোলো 1” সে বলিল, “এখন আর প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না।” মামি বলিলাম, “তোমার আশ্টিটিই সম্বল, 9টি যদি বিক্রয় কর, আমাঁকে বোলো, বেণী দাম যাতে হয় তার চেষ্টা কর্ব 1” সে বলিল, “আমি ও আংটি বিক্রয় করব ন1।৮ আমি কক্ষের বাহিরে আসিয়া ভাবিলাম-_মাধবী কি আমার মনের ভাবট! বুঝিয্লাছে ? সেকি বুবিয়াছে -আমি তাহাকেই চাই, আমার প্রাণ তাহারই কাছে বাধা? যাই হোক্‌-আমি ধীরে ধীরে বাটির বাহিরে আদিলাম। আসিবার সময় মাধবী আমাকে অন্ত দিনের মত প্রণাম করিয়াছিল কি না সেকথা মনে নাই। টোলে ফিরিয়া আসিলাম। মাথায় একটার পর আর একট! ভাবনা, শ্রোতের মত আসিতে লাগিল। চোখের সাম্নে কেবলই দেখিতে লাগিলাম, সেই আংটিটি। মাধবীকে পাইলে আমার জীবন সার্থক হয়, কিন্ত সেই আংটিট! আমার শক্র, সেটাই ত তাহার ও আমার মধ্যে একটা দারুণ বাবধান শ্থজন করিয়াছে । ১৩ ৬ বলিলাম, “যদি মনে করিয়াছিলাম টোলে আশ্রয় পাইব, কিন্তু একদিন কাঁটিতে-না-কাটিতেই একট! প্রভাতে ভট্টাচার্য্য মহাশয় খুব গম্ভীর ভাবে আমাকে বলিলেন, “দেখ বিভূতি, তোমার বাবা পঞ্জ লিখেচেন, তাঁর ইচ্ছা তুমি এখানেও থাকতে পাবে না ।” পরদিন তাহাকে প্রণাম করিয়া বলিলাম, “আমি চল্লুম |” তিনি গম্ভীর ভাবে বনিলেন, “কি করি বাবা, আমার ইচ্ছা নয়, তোমার ব(পের ইচ্ছা |” যাহারই ইচ্ছ। হোক, আমি চলিলাম, কোথায় চলিলাম তাহা প্রথমে ঠিক করিতে পারি নাই । হরি- নাথ ঘটক একদিন আমাকে তাহার ছেলেটিকে পড়াইতে বলিয়াছিলেন, তাহারহই বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হইলাম, আমার মাসিক বেতন হইল কুড়ি টাক1। কিছু দিন কাটিল; কেবলই মাধবীর জন্য প্রাণটা আকুল হইক্া উঠিতে লাগিল। একদিন ভাবিলাম-- কেন আপনাকে বঞ্চিত করি-_-শুধু খানিকটা সঙ্কোচ ও চক্ষুলজ্জার খাতিরে জীবনটাকে বিষময় করিয়া তুলি কেন? দে দিন অপরাহ্টে এক পলা বৃষ্টি হইয়া গিয়াছিল, পথে কাদা জঙমিয়াছে । আকাশের দিকে চাহিলেই মনে হয় আরো ছএক পসলা বুষ্টি হইবার সম্ভাবনা । সে দিন মাহিনা*পাইয়াচি__হাতে কুড়ি টাকা জমিয়াছে__ এগুলা টাকা কখনও একসঙ্গে হাতে পাই নাই | সন্ধ্যার পর ছাত্রকে বলিলাম, “আমার বাইরে নিমন্ত্রণ আছে, ফিরতে হয়ত রাত হতে পারে ।” ছাত্রের নিকট কথাটা খুবই ভাল লাগিল। আমি কাপড় জাম! পরিয়া বাহিরে আসিলাম । গাড়ী ঘোড়া ও লোকজনের যাতায়াতে পথ তখন খুবই কর্দমাক্ত হইয়াছে । আকাশ ভার ভার, মেঘ ঘনাইয়া আপিয়াছে, বৃষ্টি আসিতে আর বিলম্ব নাই। লোক-বিরল পথটি নীরব--শুধু মাঝে মাঝে ছু একটা আর্দ্র বাতাসের ফিস্‌ ফাস্‌ শব শোন! যাইতেছে । স্তব্ধ অন্ধ রজনী আমার কাছে যেন একট! মৃক বিরাট” রহস্তের মত মনে হইতে লাগিল; মনে করিলাম যেন ৯৮ মানসী ও মর্ম্মবাণী সেই রহস্তের মধ্যে বিলীন হইয়া যাইতেছি, মৌনমুগ্ধ ধরণীর কত খ্রুগের কত বিরহের করুণ গান আম শুনিতে পাইতেছি, তাহার হৎস্পন্দনট্রকও আমার অগোচর নয়। রি র ধীরে ধীরে পরিচিত গলিটির মধ্যে প্রবেশ করি- লাম; অন্দিন দ্ুইদিকে অনেক পতিতা রমণীদের দেখিয়াছি। আজ কাহাকেও দেখিতে পাইলাম না। অগ্রসর হইলাম, সেই বটগাছটার নিকটে আসিয়া দেখিলাম, মাধবীর গৃহদ্বারে একটি বমণী দাঁড়াইয়া আছে। বুঝিলাম সেই মাধবী । তাহাকে কখনও বারাঙ্গনার মত বাহিরে দাড়াইতে দেখি নাই। যাই হোক, নিকটে আসিয়া বলিলাম, «কে ? মাধবী ? তুমি এখানে চড়িয়ে যে ?* সে আমার দিকে চাহিল। গ্যাসের আলোক মুখে পড়িতেই দেখিলাম তাহার নয়নে অস্রবিন্দু। জিজ্ঞাসা করিলাম, “তুমি কাদ্চ ? কেন ?” সে উত্তর দিল না, অবনত মথে দাঁড়াইয়া রভিল। আমি গৃহে 'প্রবেশ করিলাম । অনেকক্ষণ চপ করিয়া বাঁসয়! রতিলাম, তবু মাধবী আসিল না। বাস্ত হইয়া উঠিলাম, কঙ্গের বাতিরে, আসিয়৷ দেখিলাম--মাঁধবী জড়সড়ভাবে দাড়াইয়া আছে, যেন সে আমার সমক্ষে আসিতে নিতান্ত কুন্ঠিত। আমি স্তম্ভিত হইয়া কিছুক্ষণ দাঁড়াইয়া রহিলাম, তারপর বলি- লাম, “মাধবী ভিতরে এস।” মাধবী ধীরে ধীরে সেই ঈষৎ আলোকিত কক্ষটির মধ্যে প্রবেশ করিল। কিছুক্ষণ সে অঞ্চলে মুখ আবৃত করিয়া দীড়াইয়া রহিল, তারপর বসিল, আমি বলিলাম, “মাধবী, তুমি কীাদ্‌ছিলে কেন 1” সে বলিল “বুড়ী আজ বড় রেগেচে, আমাকে তাড়িয়ে দিতে চায়।” কথার সঙ্গে সঙ্গে তাহার ক্রন্দনের স্ুরও শুনিতে পাইলাম। আমি বলিলাম, তুমি কি তারই কথায় নীচে দাড়িয়েছিলে ?” মার্ধবীর বক্ষ স্পন্দিত হইতে লাগিল, অন্তর আলোঁ- [৮ম বর্ষ--১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা ডিত করিয়া একটা রুদ্ধ দীর্ঘশ্বাস বাহিরে প্রকাশ পাইল। আমি বুঝিলাম সে নিরাশ্রয় হইবার ভয়ে নিতান্ত অনিচ্ছায় বারাঙ্গনার মত দ্বারে দশাড়াইয়। ছিল৷ বলিলাম, “তুমি ভেব না, টাকা দিচ্ছি, বুড়ীকে দিও, তাহলে সে সন্তষ্ট হবে ।” ও মাধবী কোন কথা কহিল না । বাহিরে কড়, কড়, শবে বজাঘাত হইল । একটা ঈষৎ উম্মুক্ত জানালা দিয়া বিডাতের আলোক দেখিতে পাইলাম । ঝম্‌ ঝম্‌ করিয়া বৃষ্টি আরম্ভ হইল । আমি পকেট হুইতে কুড়িটা টাক বাহির করিয়া মাধবীর হাতে দিবার উপক্রম করিলাম। সে হাত পাতিল না, অঞ্চলে মুখ আবৃত করিয়া কাদিতে লাগিল। এবার তাহার রোদনধ্বনিও শুনিতে পাইলাম । আমি তাহাকে হাত ধরিয়া! তুলিলাম। বলিলাম, “তুমি কেঁদ না, ভাবনা কি? এই নাও টাকা ।৮ সে উঠিল; তখনও আমি তাঁভার হাত ধরিয়া 'আছি। এই অবস্থাতেই সে কাদিতে কাদিতে বলিল, “গো, তুমি আমাকে টাঁক1 দিও ন11» সর্মশরীর শিহরিয়া উঠিল, তাহার হাত ছাড়িয়া দিলাম । বলিলাম, “এ কি? এ কথা বল্চ কেন ?” সে অঞ্চলে চস্ষু মুছিয়া বলিল, “আজ বুড়ীর কথায় ভয়ে ভয়ে বাইরে দখড়িয়েছিলুম, আজ যদি আপনি টাকা দেন, আমার মনে হবে আজ বুড়ীর কথা শুন্তে বাধা হয়েছি ।” আমি বলিলাম, “আর "আপনি+ নয়, 'তুমি” বলেই সম্বোধন কর। আমার টাক তুমি নিবে না কেন? জান তুমি, তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভিন্ন রকমের 1” হায়, এখনও মিথাটাকে অশকড়িয়! ধরিতে চাই। মাধখর সহিত আমার সম্পকট। ভিন্ন রকমের হইয়াছিল বটে, কিন্তু এখন যে তাহা বদলাইয়া গিয়াছে। মাধবী দাড়াইয়া রিল, তাহার হাতের আংটিটি ম্লান আলোকে একটা ভয়াবহ উ্কার মত ঝক্মক্‌ ফান্তন, ১৩২২] করিতে লাগিল, দৃশ্তটা সহ করিতে ন! পারিয়া চক্ষু ফিরাইয়া লইলাম। বলিলাম, “মাধবী, বুড়ীকে টাকা দেওয়া দরকার, তুমি টাকা নাও, আগে নিয়েছ, এখন নেবে না কেন ?” মাধবী বলিল “এখন সময় বদলে গেছে ?” পকি রকম ?” “আগে তোমার কাছ হতে টাকা নিতে সস্কোচ হয় নি, আজ হচ্ছে ।” মাধবী চুপ করিয়া অন্কুলিতে অশচলের খু'ট জড়া- ইতে লাগিল । আমি বলিলাম, “বেশ, তোমার আংটিটা আমাকে দাও, মনে কর আংটিটা বিক্রয্ন করে তুমি টাকা পেয়েছ ।” * মাধবী বলিল, “ওগো চুপ কর, এ আংটি আর তুমি চেয়ো না|” সে চুপ করিয়া! বসিয়া রহিল। বুষ্টি তখন গামিয়া গিয়াছে । চারিদিকের স্তব্ধতা তখন নিবিড় ভহয়া আমার বুক চাপিয়া ধরিয়াছে। আমারও কঠরোধ হইয়াছিল, কথা কহিতে পারি নাই। অনেকক্ষণ পরে সহস! মাধবী মাথা তুলিয়া বলিল, “সতা করে বল-_আমার আংটিটা তুমি বার বার চাও কেন?” তাহার দীপ্ত মুখপানে চাহিতেই মনে হইল-_সে যেন আমার অন্তরের অন্তরতম কথাটিও বুঝিয়া লই- য়াছে। আমি কোন উত্তর দিতে পারিলাম না, কেবল তাহার মুখপানে চাহিয়া রহিলাম। আমার শিরায় শিরায় তাড়িত প্রবাহিত হইতে- ছিল। উত্তর দিতে চেষ্টা করিতেছিলাম, কিন্ত একটি কথাও বলিবার শক্তি তখন অন্তষ্িত 'হইয়াছে। অনেকক্ষণ পরে উঠিলাম। কক্ষের বাহিরে আসিয়া বলিলাম “মাধবী, আজ আসি।” মাধবী বলিল, প্রাত্রি অনেক হয়েছে, আজ নাহয় ভুমি এখানেই থাক |” থাকিবার ইচ্ছা! ছিল, কিন্তু থাকিতে সাহস করিলাম খোলা চিঠি ৯ না। পরের বাড়ীতে থাকি, একরাত্র না আসলে তাহার। কিছু মনে করিতে পারে। কিন্ত ভায়, মাধবী যদি আর একটিবার ও এ কথাটি বলিত, তাহা হইলে কোন মতেই সে আদেশ উপেক্ষা করিতে পারিতাম না । যখন দ্বারের নিকট আসিয়া দীড়াইলাম, তখন একটা! ঠাণ্ডা বাতাস আমার সর্বাঙ্গ রোমাঞ্চিত করিয়া তুলিল। স্তব্ধ অন্ধকার রাত্রি, গাসের আলোটা সে অন্ধকার ভেদ করিতে পারে না, কতক গুল! অম্পষ্ট প্রবল ভাবনা অন্তরে চাপিয়া পথে পা দিয়াছি, এমন সময় সহসা কাহার করম্পর্শ অন্থুভব করিলাম। চাহিয়া দেখিলাম মাধবী আমার হাত ধরিয়াছে। তাহার হাতের আণটটা ধারাল ছুরিকার মত বঝক্‌ মক করিয়া উঠিতেছে। আমি স্তস্তিত হইয়া তাহার পানে চাহিয়া রৃভিলাম | মাধবী কম্পিত কগে বলিল, “টাকা নিলুম না বলে তুমি কি ছঃখিত হলে ?”মুখ দিয়া বাহির হইল, “না”। মাধবী আবার বলিল, “কাল একবার আস্বে, আমার কতকগুলো! কথা আছে ।” বলিলাম, “আনবো ।” আকাশের মেঘপুঞ একদিক হইতে উড়িয়া আসিয়া আর একদিকে জমিতেছিল, আমি কাপিতে কাপিতে হরিনাথ বাবুর গৃহদ্বারে খন করাঘাত করিলাম, তখনও ভাতের উপর মাধবীর করম্পর্শ স্পষ্ট অনুভূত হইতে লাগিল। দরওয়ান উঠিল, মনে মনে নিশ্চয়ই সে আমাকে গালাগালি দিতে ছাড়িল না। আমি নিঃশব্দে আমার নির্জন কক্ষে প্রবেশ করিলাম । সমস্ত রাত্রি নিদ্রা হইল না। পরদিন আহারাঁদির পর বাহিরের ঘরে আসিয়া বসিলাম। মনে হইতেছিল হয় ত মাধবীর মন ফিয়ি- য়াছে, আমার কামনা বিফল হইবে না। কিন্তু মনটাকে কোন মতেই বিশ্বীস করিতে পারিলাম না। কেবলহ ৬১০০ মানসী ও মশ্মবাণী | ৮ম বর্--১ম খণ্ড--১ম সংখ্য ভাবিতে লাগিলাম মাধবী আমাকে কি কথা বলিতে চায়। কখনও আশা, কখনও নিরাশ! পর্য্যায়ক্রমে আমাকে আকুল করিয়া তুলিতে লাগিল। বৈকালে হরিনাথবাবু বলিলেন, “কাল আপনার ফিরতে খুব দেরী হয়েছিল, ছেলেটার পড়া হয় নি, এমন হলে কেমন করে চল্বে ?” আমি বলিলাম, “কাল একট! নিমপ্ণ ছিল।” আজ আর মিথা! কথা বলিতে একটুও দ্বিধা করিলাম না । হরিনাথ বাবু চলিয়া গেলেন। আজও যে মাধবীর নিকট যাইতে হইবে সেজন্য ছুটির কথাটা তাহাকে বলিতে সাহস হইল না । সন্ধ্যার পর ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তোমার বাবা বাড়ী আছেন ?” ছাত্র বলিল, “না ।৮ আমি বলিলাম “আজও আমি বাইরে যাখ, আজও একটা নিমন্ত্রণ আছে ।” ছাত্র নিশ্চয়ই আনন্দিত হইল। আমি বাহিরে আসিলাম_-ভাবিলাম-_মনিব যাই বলুন না কেন, মাধবীর নিকট আমাকে যাইতেই হইবে, তাহাতে যদি চাকুরী যায়, কি করিতে পারি? ও সেদিনও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ; তবে সমস্ত দিন বৃষ্টি হয় নাই। যখন মাধবীর গৃহের নিকট উপস্থিত হইলাম, তখন আকাশ ভাঙ্গিয়া বৃষ্টি নামিল। আজ গৃহদ্বারে কাহাকেও দেখিতে পাইলাম না। গৃছে প্রবেশ করিতেই একটা নীরবতার বিষগ্রতা আমার প্রাণমন আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিল। উপরে সেই পারচিত কক্ষের মধ্যে প্রবেশ করি- লাম। দেখিলাম সেই কেরাফিনের আলোটা অবিরল ধূম উদ্গীরণ করিতেছে । মেঝের উপর মাধবী চুপ করিয়া মাথায় হাত দিয়া বসিয়া আছে। গৃহের নীরবতা, অন্ুজ্জল আলোক, বাহিরের মেঘা- বৃত আকাশ ও এই চিন্তাকুল, অবসন্ন রমণী আমার চক্ষের সন্ভুথে কোন এক বিষঞ্জ রহস্তময় জগতের ছবি প্রসারিত করিয়া দিল। মাধবী একবার মাথা তুলিয়া আমার দিকে চাহিল-- দেখিলাম একটা দারুণ দুশ্চিন্তা তাহার মুখে চোশে কালি ঢালিয়! দিয়াছে। আমি সেই ঘরেই চেয়ারের উপর বসিলাম। দুজনেই নীরব, নিম্পন্ন। আমার মনে হইল যেন স্বপ্র দেখিতেছি। মাধবী: মাথায় কাপড় আছে, কিন্তু তাহার মুখটি সম্পূর্ণরূপে দেখিতে পাইতেছি। এমন করিয়া চাহিয়া দেখিবাঃ অবসর কখনও আমার ঘটিয়া উঠে নাই। আমার দৃষ্টি সার্থক, জীবন সার্ক । ৮নে করিলাম এমনই করিয়া চাহিয়া চাহিয়াই যেন « জীবন শেষ হইয়া যায়। মাধবী উঠিল, যন্ত্রটালিতে র মত ধীরে ধীরে আমা নিকটে অতি নিকটে, আসিয়! দাড়াইল, তারপর ধীরে ধীরে আমার হাতে তাহার আংটিটি পরাইয়া দিল। আমার বাকা্ত্তি হইল নাঁ। যে ঘটনাটা ঘটিয়া গেল, তাহা এতই বড়, এতই ইঈপ্সিত যে তাহা তাবিবার সাহসও আমার হইল না, মনে করিলাম__ভাবিতে গেলে কাদিয়া ফেলিব। আমি চুপ করিয়া রহিলাম, কিন্তু মাধবী আমার সম্মুখে খজুভাবে দণ্ডায়মান হইল, তাহার মুখ চোখের আকম্মিক দীণ্চি দেখিয়া বুঝলাম সে কথা কহিবে-_ তাহার অন্তরের অন্তরতম অগপ্রকান্ত কথাগুলি সব বাধা অগ্রাহ্‌ করিয়া নিঃসক্কোচে প্রকাশ করিবে। মাধবী বলিল, “আজ হতে এ আংটি তোমার” আমি তখন নিম্পন্দ, বুঝিয়া উত্তর দিবার সামর্থ্য নাই। তবুও মুখযস্ত্র হইতে আপনি বাহির হইল, “কেন এ কথা বল্চ ?” মাধবী বলিল, "আমি অনেকদিন মনের সঙ্গে ঝগড়া করিচি আর গারি না; একদিন ভোর বেল! গঙ্গ! নাইতে যাবার সময় তোমাকে দেখেছিলুম, আর একদিন স্নান করে উঠে আসবার সময় |” ' আমি চুপ করিয়া রহিলাম। সে বলিল, “তারপর তোমাকে দেখবার জন্তে এদিকে সেদিকে অনেকবার চেয়ে দেখেচি।” ফাল্তুন, ১৩২২ ] আনার অস্তুরর মুধা রুদ্ধ অংবেগ*কেবলই গুম! এয় উঠিতে লাগিল, কথা কহিতে প, রলান না। সবে বলিল “তারপর তু ম এলে- গুরুর মত আমাকে আশা দুল) আমার পাপপথের সঙ্গা সর্বস্ব গ্রহণ করলেও যা অপহরণ করতে পারে নি, সেই, আংট- টির দিকে চেয়ে আম বুক বীধলুন |” আনার মুন হইল--"গানি যেন বিচারালয়ে দাড়াই- য়াছি, একটা গুরুতর অপরাধের জন্তঠ আমার বিচার আরম্ত হইয়াছে । মাধবী বলিল, “তারপর তুমি বার বার অনুরোধ করে সে আংটি চেয়ে নিলে) শুধু আংটি কেন তুমি যে আমাকে ও চাইলে সে কথা আমি বেশ বুঝতে পেরেছি ।৮ আমি বলিলাম “আমি তোমাকে কোন কথা বলিনি |” মাধবী বলিল “তুমি বল নি, তোমার মুখ বলেচে, তোমার চোখ বলেচে।” আর আমি কথা কহিতে পারিলাম না। কিছুক্ষণ পরে মাধবী আবার বলিল “আমি বিচার শক্তি হারিয়েছি__বল এখন আমার পথ কোথায় ?” আমি কিছুক্ষণ স্তব্ধ হইয়া রহিলাম,তারপর বলিলাম, “তোমার য৷ ইচ্ছা তাই তুমি করতে পার ।” মাধবী দৃঢম্বরে বলিল, “এখন আমাকে এতদুর এনে এত সহাজে কথা কইলে বল্বে না। তোমার কথা অবজ্ঞা কর্বার শক্তি আমার নাই--অনেক ভেবে দেখেচি।” একটা ঝড় উঠিয্লাছিল। এই বার বৃষ্টি নামিল। মাধবী নিকটে আসিয়া আমার পাদুটি জড়াইয়া ধরিল, বলে, “ওগো আজ আমি রিক্ত, আমার পথ কোথায় বলিয়া দাও। তোমার একটি কথার ওপর আমার ভবিষৎ নিভর করছে” আমি বলিলীম, “মাধবী, তুমি ওঠ, একথার উত্তর কাল দিব, আমাকে ভাব্‌তে দাও ।” অনেকক্ষণ ছুজনে চুপ করিয়া বসিয়া রহিলাম। তারপর মাধবীকে বলিলাম, “মাধবী, আজ আসি।” খোলা চিঠি ১০১ মাধবী বল্ল, "নিশ্চয় এস, না এলে আমি হত্যাও কর্তে পারি ।” আমি ধীরে ধীরে কক্ষের বাহিরে আদিলাম, মাধবী আমার অগ্ুদরণ করিল না। আমি একা নির্জন অন্ধকার পথে বাহির হুইয়৷ পড়িলাম। রাত্র কাটিল। প্রভাতে হরিনাথবাবু আমার হাতে একখানা পত্রদিলেন। দেখিলাম পিতার হস্তলপি; এই সামান্ত চাকরী করিতেছি, তাহাও তাহার সহা হয় হয় নাই; তাই তিনি আমি দুশ্চরিত্র বলিয়! হরিনাথ বাবুকে সে চাকরীটিও ছাড়াইয়া দিতে অনুরোধ করি- য়াছেন। হরিনাথবাবুও আমাকে চলিয়া যাইতে বলেন, আমিও চাকপীটি ছাড়িয়া দিতে প্রস্তত। তবে আমার কি উপায় হইবে তাহাও একটা ভাবিবার জিনিস; কিন্ত সে কথ! ভাবিবার সময় নাই। আজ মাধবীব ভাবনাটা চারিদিক হইতে আমাকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিল। পৃথিবীর অনেক প্রাণীর মত সে বাসনার স্রোতে গা ঢালিয়া দিয়াছে । কেহ তাহাকে আশ্রয় দেয় নাই। অন্তে পাপকাজ করিয়াও ংসারও সমাজে আশ্রয় পায়, এই অবলা রমণী আশ্রক্প দুরে থাক কাহারও সমবেদনার সামান্ত আভাসটুকুও পায় নাই। সংসার ও সমাজ তাহার পাপটিকে নিম্মম- ভাবে বাহিরে প্রকাশ করিয়া লোক শিক্ষা দিতে চায়। জগতে কেহ তাহাকে সামান্ত আশার কথাটিও শুনাইতে সাহস করে নাই। আমি সেসাহস করিয়াছি, আমি তাহার মলিন মুখে হাসি ফুটাইয়াছি_-তাহার কুস্থমপেলব অন্তরে যে দারুণ বহ্ছি জলিয়া উঠিয়াছিল তাহ নিবাইয়া পিয়াছি। *সতা সতাই সে কুম্থমের মত মৃদু, ঠাদের মত ক্সিদ্ধ তাহাকে দেখিলে অন্তর স্ুধারসে ভরিয়া যায় । আমিই তাহাকে বল দিয়াছি-_ আমারই কথায় সে এখনও পৃথিবীর নিদারুণ মরুক্ষেত্রে জীবন ধারণ করিয়া আছোঁ। কিন্তু কেন তাহাকে আশা দিলাম কেন? আমার ১০২ মানসী ও মন্মমবানী | ৮ম বর্ষ--১ম খণ্ড--১ম সংখা! জন্ত। আমি স্কতাহাকে চাই, তাহাকে না পাইলে আমার জীবন বৃথ!। সে যাহাকে জীবনের সঙ্গী মনে করিয়া সংসার, কুল, ধন সম্পদ, পিতামাতার স্নেহ, কুটুপ্বের আত্মীক্নতা স্বামীর ভালবাসা সবই ত্যাগ করিয়া আসরাছিল, সে ছাড়িয়া গিয়াছে, যাইবার সময় তাহার যাহা কিছু ছিল সবই অপহরণ করিয়াছে । জানিনা কেমন করিয়া সে তাহার আংটিটি রক্ষা করিয়াছিল। তারপর যেদিন সে বুঝিল সেকি করিয়াছে সেদিন নিশ্চয়ই সে এ আংটিটি বুকে চাপিয়! অবিরল অশ্রু বিসর্জন করিয়াছে। একদিন সে বুঝিয়াছিল__-এই বিশাল বিশ্বের মাঝখানে তাহার এই আংটিটি ছাড়া আর কোন সঙ্গী নাই। সে এখন স্বামীতে একান্ত অনুরক্ত বপ্পিয়া এ আংটি কাছ ছাড়া করিতে চায় না তাহ। নয়। সেস্বামীকে কখনও ভালবাসে নাই, আজিও বাঁসবে না, তবে এই আংটিটি তাহার স্বামীর ভালবাসার নিদর্শন, ইনার সহিত তাহার অতীতবার্থ বিবাহজীবনেরর গৌরব জড়িত আছে, এ আংট তাহার ছুঃখরজনীর সখা, তাহার বিপদের সায়" তাহার হৃদয়ের শক্তি। সেই শক্তিরই উত্তেঞ্জনায় সে আজ এই পৃথিবীর বিশাল শুষ্ক নিশ্মম মরুভূমির উপর: আপনার জন্ত একটা স্ুপথ বাছিয়া লইতে চায়। এমন আটটি আজ্জ তাহার অপহৃত । কে অপহরণ করিয়াছে? আমি। কেন করিয়াছি? এই আংটই যে তাহার আমার মধ্যে দারুণ ব্যবধান সজল করিয়াছিল । আংটি পাইয়াছি, তাহাকে চাই বলিলেই হয়ত-_হয়ত কেন, নিশ্চয়ই__সে আমার হাতে হাত তুলিয়া দেয়। এখন তাহাকে কি করিতে বলিব! গুরুর মত তাহাকে আশ' দিয়াছি, এখন নিজে কেমন করিয়া তাহাকে আবার বাসনার শ্রোতে ভাসিয়া যাইতে বলি। সে আপনার পথ ধরিয়া চলুক, সে যাহা ইচ্ছা করে তাহাই করুক। কিন্তু আপনার পথ ধরিয়া চলিবার সামর্থা তাহার আছে কি? ॥ কত ভাবিলাম, কিন্তু একটা সিদ্ধান্তে আসিতে পারিলাম না। সন্ধ্যার পর বাহির হইলাহ। চাকুরী গিয়াছে; স্থতরাং ? আর কাহারও অনুমতি লইলাম না? আকাশে টাদ উঠিয়াছিল। একটা! নৃতন বাতাসের স্পর্শ অনুভব করিলাম। বুঝিলাম বসন্ত আসিয়াছে । জ্যোন্নালোকিত শ্িপ্ধ আকাশ আমার অন্তরে একটা বিমল শাস্তির সঞ্চার করিতে লাগিল । জানিনা কিসের ভাবনায় তন্ময় হইয়া ছিলাম। মনের মধ্যে নানা তর্কবিতক ক্রমশঃ থামিয়া গেল। কি করিব, মাধবীকে কি উত্তর দিব তাহা মনে মনে ঠিক হইয়া গেল, আমি কিন্তু তাহা স্পষ্ট করিয়া তখনও জানিতে পারি নাই । পৃথিবী একদিনে এতটা পরিবর্তিত কেমন করিয়া হইল, তাহা ঠিক করিতে পারিশাম না। চারিদিকে একটা স্দৃপ্তি একটা আনন্দের আভা দেখিয়া মুগ্ধ হইলাম। রূপ, স্পশ ও গন্ধ আমার কাছে কোন গুদুর স্বগলাকের বারতং বহন করিয়া আনিল। সেই বটগাছটার নিক*ুট খানিকট' অন্ধকার জমাট বাধিয়াছিল। সেই খাছন দেখিলাম শুত্রবনম্্ আচ্ছন্ন কে একজন রমণী দাড়াইয়া আছে। আমাকে দেখিয়া সে নড়িল। পত্রগুলার অন্থরাল হইত খানিকটা জ্োত্মী। একনস্থানে পড়িয়াছিল, রমণী সেইখানে দীড়াইতেই তাহাকে চিনিলাম। চমকিয়া বলিলাম, “মাধবী, তুমি এখানে কেন? মাধবী বলিল “আজ আর গৃহে থাকিবার অধিকার আমার নেই, বুড়ী আমাকে তাড়িয়ে দিয়াছে! আমি কিছুক্ষণ দ'ড়াইলাম, তার পর বলিলাম “ভালকথা, এখানে আর দখড়িয়ে লাভ কি? এস ।” চলিলাম, নিজ্জন আকা-বাকা গলির ভিতর দিয়া কোথায় চলিলাম কে জানে । আমারও চাকরী গিয়াছে, আশ্রয় (কোথায় জানি না; আর এই অবল1, এও আজ পৃথিবীর মধ্যে কোথায় আশ্রয় পাইবে, তাহাও আমার অগোচর। কিছু দূর আসিয়া একটা বড় রাস্তায় পড়িলাম। ফাস্তুন, ১৩২২] দেখিলাম তাহার পাশেই গঙ্গার ঘাট, নিঃশব, নির্জন । চাদের আলোক তরঙ্গে তরঙ্গে ঝকৃমক্‌ করিয়া উঠি- তেছে। উপরে বিশাল জ্যোৎক্নাপ্লাবিত আকাশ, নিয়ে স্তব্ধ পৃথিবী যেন কোন ভক্তিবিহ্বল আত্মহারা পুজা- রীর মত কোন্‌ অদৃশ্য দেবতার উদ্দেশে একটা 'প্রাণতরা চিরন্তণ প্রণামে আপনাকে লুটাইয়া দিয়াছে । এদিকে সেদিকে বিক্ষিপ্ত তরুগুলির স্নিগ্ধ চিকণ পত্রাঞ্চল দক্ষিণ বাতাসে কীপিয়া উঠিতেছে। আমরা নিরাশ্রয় ছুটি প্রাণী ঘাটে আলিয়া দশাড়াইপাম। ছু্তনে অনেকক্ষণ চুপ করিয়া বলিয়া রহিলাম। তার পর মাধবী বলিল, “আমার কথাটা একবার তেবে দেখেছ কি ?” আকাশ, পৃথিবী ও বায়র মধা দিয়া আমার অন্ত রাত্মা কোন্‌ সদূর কল্পনালোকে কিসের ভাবনায় তন্ময় হইয়াছিল বলিতে পার না। কথাটা শুনয়া স্থুপ্রোখি- তের মত জাগিয়া উঠিলাম, বলিলাম “কি কথা ?” মাধবী বলিল, “আমার সবই তোমাকে দিয়েছি ; এখন "আমার উপায় ?” আমি অঙ্গরীটি খুন্য়' ফেলিলাম, বলিলাম “এ আংটি কমি আমাকে দিয়েছ, এতে ভোমার অধিকার নেই; তোমাকে এটা ফিরিয়ে দেবারও প্র:রাভন নেই কেননা নিশ্চয়ই তৃমি তোমার স্বামীকে ভ।লবাস না 1» মাধবী নির্ধাক নিম্পন্দ হইয়া বসিয়া রহিল। আমি বলিলাম “এই আমি আংটটাকে গঙ্গায় বিসর্জন দিলুম ।”__বলিয়া আংটিটা সতাই আমি গঙ্গার জলে ফেলিয়া! দিলাম । মাধবী কিছুক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়া রহিল; তারপর ধীর অথচ দৃঢ়ম্বরে বলিল, প্যাক, এখন তবে বল-_ আমার পথ কোথায় ?* তাহার সর্বাঙ্গ ক্ষণে-ক্ষণে শিহরিয়া উঠিতে লুগিল। আমি সেই অস্তকুস্তলা, ক্রিষ্টা, রমণীর দিকে একবার চাহিলাম ; আর দেখিলাম--পরিশ্রান্তা গঙ্গা অলস-মন্থর গমনে গদ্গদ্‌ নাদে তাহার গিরিনিবাস ত্যাগ করিয়া প্রার্থিতের মধ্যে আপনাকে নিঃশেষে বিলীন করিবার জন্ত খোলা! চি ১০৩ অগ্রসর হইতেছে । আকাশের গায়ে উজ্জল শুক্তারাটি " তাহার ক্সিপ্ধকোমলজ্যোতির চক্ষু দিয়া এই গৃহহারা স্বজনত্যক্ত নিরুপায় মানবমানবীকে যেন ম্নেহসন্নত নিনিমেষ দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করিতেছে । আকাশ বাতাস জলম্থল যেন একবাকো একতানে আমাকে বলিতে লাগিল--“একাস্ত,পদাশ্রিত গতিহীনকে তাগ করিও না, তাগ করিও না।” আমি প্রকৃতির মধা দিয়া পরম দেবতার এই আঁদেশবাঁণী অশরীরী বাণীর মত শিরোধার্ধা করিয়া আমার প্রসারিত আলিঙ্গনের মধো মাধবীকে জড়াইয়! ধরিলাম, বলিলাম “তোমার আমার আজ এই পথ, এবং এই পগই ঠিক পথ ।» মাধবী কথা কহিল না, ভূমিষ্ট হইয়া দুই হাতে আমার পদদলি মন্তরকে তুলিয়া লইল। তারপর কি হইল, বন্ধু, সে কথা বলিতে চাই না। এখন তুমি আমাকে পাপী বল, আমি দুঃখিত হইব না) আজ বিদায়, ইতি। তোমার বিভৃতি এঁতিহাসিক বন্ধু বলিলেন “একট! গল্প শুনিয়ে দিলে দেখছি 1৮ * আমি বলিলাম “যাই হোক, আপনি গত পঞ্চাশ বৎসরের কলিকাতার ইতিহাস লিখছেন ত? এ গল্পে তার অনেক উপকরণ আছে ।” বন্ধু বলিলেন “রাম, রাম, ইতিহাসের উপকরণ কাকে বলে জানেন? ইতিহাস কখন পড়া হয়েছে ?” আমি বলিলাম পনা, সেই জন্তই ত আপনার সঙ্গে তক কর্তে যাচ্ছি।” একটা হাসির পর সংবাদ আসিল “আহার প্রস্তুত ।* শ্রীহববোধচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় । * ১০৪ মানসী ও মণ্মবাণী [ ৮ম বর্ষ_-১মখও্ড -১ম সংখ্যা লুকোচুরী তোর সনে ভাহ লুকোচুরি খেলা চলিতেছে মোর নিশিদিন ! ধরে” ফেলি তোরে যেমনি লু্ষাস্‌, বোধহীন! লুকাস্‌ যেথায় সে ঠাই হরষ সমাকল, গরবে গোপন করিতে সদাই করে ভূল, চরণ ফেলিলে ন্ধা ছুটে, ফুটে তাঁরা ফুল, অলিকুল জুটে, াদ লট, বাজে বেণুবীণ ! যুগ যুগ ধরি” একই খেলা ভাই চলিতেছে তাই নিশিদিন । গগনে যখন লুকাস তখন দেখিতে যে পাই মেঘে-মেঘে ) হয় ঘন শ্ঠাম তোর তন্টির রঙ লেগে! চিনি-চিনি বলে" যদি দেরি হয় তবে তায়, হাসিয়া ফেলিস্‌ রে চপল তই চপলায় ; মেঘ-আবরণে শিখীচুড়া ঢাকা নাহি যায়-_ ইন্্রধনুতে মাঝে মাঝে তাই উঠে জেগে! চপল, আপন তন্থুটি গোপন কেমনে কৰিবি মেঘে-মেঘে ! কাননে যখন লুকাস তখন ধরিয়া ফেলার বাধা নাই; বুন্দারণা স্মরিয়া সেথায় আগে যাই। বনমালী, তুই নৃপুর না খুলি? যাদ্‌ ছুটে, বিল্লীর তানে পক্ষীর গানে জেগে উঠে, চরণ অধর পরশে অশোক উঠে ফুটে কীচক-বনেও মাঝে মাঝে সাড়া দিস, ভাই-_ অসাবধানেরে কাননের মাঝে ধরিয়া ফেলার গোল নাই ! হ্দের সলিলে ডুবিয়া ভাবিলি, এইবার বুঝি যাব হারি' ! জলে ডুব দেওয়া নুতন তোর কি দহ্চারী? দেরি ভলে? তুই উঁকি দিস যে রে মীখি মেলি, নীল কুমুদের বিকাশের মাঝে ধরে” ফেলি, বান্টি তুলি” ডরবিষ্না' করিলে জলকেলি জাগে যেমূণালে কমল কলিকা সারি-সারি) লতর-লাস্য নটবর তোর গোপন নৃতা-অন্ুকারী ! শেষে ঘরে ঘরে জদয়ে-জদয়ে লুকাতে লাগিলি ননীচোরা- গৃভাকোণগুলি খুঁজিতে কি বাদ দিব মোরা ? প্রিয়ার প্রণয়ে প্রতিবিদ্িত তব গ্রীতি, সখার সধ্যে শুনি তব দূর বেণুগীতি, চিনি যে শিশুর চপলতা মাঝে নিতি-নিতি-_ নিষেধ নামানে গোপন কথাটি কহে ওর! ! ধরা যে সহজ, ছায়াটি লুকাতে পারিস না যে রে ননীচোরা । শ্রীকালিদাস রায়। ফাল্তুন, ১৩২২] জীবনের মূল্য ১০৫ ( উপন্যাস ) [ পুব্বগএকাশিভ দ্বাদশ পরিচ্ছেদের চুন্মক- মুখোপাধ্যায় এদিকে কলিকাতায় গিয়া নিজের জন্য নব- গল্লারস্তে রিবেণীবাসী ধনশালী গিরিশ মুখোপাধ্যায় প্রৌটিবয়স প্রাপ্ত হইয়াছেন_-পনেরো বৎসর পূর্বেবে তাহার প্রথমা পত্রী এবং একবৎসর পূর্বে দ্বিতীয়া পত্রী পরলোকগতা৷। প্রথমার গর্ভজাত পুরঘ্বয় নরেন্দ্র ও সুরেন্দ্র কলিকাতায় পড়ে, দ্বিতীয়া দুইটি কন্যা রাখিয়! গিয়াছেন | মুখোপাধ্যায়ের সংসারে তাহার পিসিযাতা আছেন, তাহার বনু অন্থরোধসত্বেও মুখোপাধ্যায় তৃতীয় সংসার করিতে সম্মত হন নাই। গঞ্পারস্তের পূর্ববদিন গঙ্গাস্ীন করিয়া ফিরিধার পথে, গ্রামুস্থ জগদীশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তেরো-চৌদ্দ বৎসরের মেয়ে প্রভাবত্তী ওরফে পটুলিকে দেখিতে পাইয়া হঠাৎ গিরিশের যনে হইল__-এই মেয়েটিকে যদি আমি বিবাহ করি, ভবে পিসিগার মনক্কামনা পূর্ণ হয়--অর্থাৎ তাহার সংসারটি “বজায়” থাকে । রাত্রে স্বপ্ন দেখিলেন যেন তাহার প্রথনা পর্রী আসিয়া বিছ্বানার পাশে বসিয়] বলিতেছেন, “তোমায় ভুলিতে না পারিয়া আমিই জগদীশ ধাড়য্যের মেয়ে প্রভাবতী হইয়া জন্মিয়াছি, তুমি আবার আমায় বিবাহ কর।” গল্পারভ্তের প্রাতে মুখোপাধ্যায় ক্ভাহার বন্ধু ও পুরোহিত ভট্টাচাধ্য-দাদাকে শিয়৷ স্বপ্ন-বৃত্তান্ত বলিলেন। ভট্টাচার্য্য শাস্ত্র দেখাইয়া! বলিলেন, “এরূপ স্বপ্ন যে দেখে, সে রাজা হয়-_ এ বিবাহ করিলে তোমার মৌভাগোর অন্ত থাকিবে না।” গিরিশের কাছে জগর্দীশের বাড়ী ও জমিজমা বন্ধক ছিল। ভট্টাচার্ধ্যই ঘটক হইয়া খণ মাপের ও সমস্ত ব্যয় বহনের লোভ দেখাইয়া বুড়া-বরে কন্া দিতে অনেক কষ্টে জগদীশকে সম্মত করিলেন। দেড়মাস পরে জোষ্ঠের প্রথমে বিধাহ স্থির হউল। অনেকেই বিদ্রপ করিত লাগিল. কেবল ইস্কুলের পঙ্ডিত সতীশ দত্ত আসিয়া মিথ্যা করিয়া বলে “প্রভাবতী আপনার সহিত বিবাহ না হইলে বিষ খাইয়া! মরিবে বলিয়াছে,” “আপনিই পূর্বব- জন্মে উহার ম্বাধী ছিলেন, এই প্রকার উহার ধারণা”--ইত্যাদি এবং টাকা ধার লয়। মেয়ের ভাই হরিপদ কলিকাতায় পড়ে, সে আসিয়া সকল শুনিয়া ঘোর আপত্তি জানাইল। শেষে গোপনে পবামর্শ হইল, হরিপদ যদি বৈশাখ মাসের মধ্যে অন্য কোনও ভাল পাত্র আনিতে পারে এবং টাকা না লাগে, তবে তাহার সঙ্গেই প্রভার বিবাহ দেওয়া হইবে, নচেৎ গিরিশ মুখুষ্যেকেই দেওয়া হইবে ।, - ৭১৪ জামাতা-উপঘে।গী পে।যাক পরিচ্ছ্ কিনিয্রা, বধূর জন্য আগা গোড়। শুতন গহনার £রদাস দিলেন। ডার্বিব লটা(রর কথা প্রথম শুনিয়া একখানি টিকিটও কিনিরা আশিলেন-_ভাহার মনে খুব তরস] হইল, স্বপ্লের ফলে প্রথম প্রাইজ ছয় লক্ষ টাকা ভাহারই কপালে নাচিভেছে। বৈশাখের প্রথমে বাঁড়ী ফিরিয়া সশন্ধ পাঁকা- গাকি করিবার অভিপ্রায়ে, আশীর্বাদট। শেষ করিবার জন্য পীড়।পীড়ি করিলেন । পাছে একুল ওকুল ছুকুল যায়, এই ভাবিয়া জগর্দীশ আমিয়া খিবিশকে আশীর্বাদ করিলেন । বরপক্ষ হইতে কন্যা! মাশীর্বাদ ও হয়া গেল। ] ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ । আশা ও নিরাশা । সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পূর্বে কুড়ি একুশ বৎসর বয়স্ক একটি যুবক বউবাজারের দিক হইতে পদত্রজে ধীরে ধীরে গোলদীঘির ফটকের নিকট আসিয়া! দাড়াইল। চারিদিকে চাহিয়া কাহাকে যেন অন্বেষণ করিতে লাগিল। তাহার পর হ্ারিসন রোডের দিকে একদুষ্টে চাহিয়া রন্ভিল। এই যুবকের নাম রাজকুমার চট্টোপাধ্যায় । গায়ে শাদা জিনের একটি কোট, তাহার পাঁচটি বোতামের তিনটি আছে ছুইটি নাই। হে তিনটি আছে, তাহার ছুইটি একরমের, তৃতীয়টি আর এক রকমের। আস্তিন উঠিয়া পড়িয়া হাতের কক্সীর অনেক খানি অংশ দেখা যাইতেছে, একটা পকেটের একধারের শেলাই খানিকটা খুলিয়া গিয়াছে। একটি পাকানো চাদর তাহার গলায় ঝুলিতেছে-_কিস্তু পাকানো থাকা সত্বেও ছুই এক স্থানে ছেড়া দেখা যাইতেছে । একজোড়া বাদামী রডের জুতা তাহার পায়ে রহিয়াছে-_-তাহারও ছুই স্থানে তালি দেওয়া । * রাজকুমার বড় গরীব। সংসারে কেবল তাহার এক বিধবা মাতা ছিলেন, প্রায় একবৎসর হুইল তাহার ১০৬ মানসী ও মর্্মবাণী ৮ম বধ--১ম খণ্--১ম সংখ্যা মৃত্যু হইয়াছে ভাই নাই, বোন নাই, খুড়া নাই, জেঠা নাই, মামা নাই, পিস! নাই-_তাহার আর কেহই নাই। তাহার মত একা, কোথাও কোনও আত্মীয় স্বজন নাই_-এরূপ বাঙ্কালী প্রায় দেখা দায় না। আত্মীয় নাই-_গৃহও নাই। দেশে তাহার পৈত্রিক বাঁড়ীথানি, যেখানে তাহার মার মৃত্যু হইয়াছিল, এখন পরহস্তগত। সামান্ত কয়েক বিঘা জমি ছিল, তাহা পরহস্তগত। মার মৃত্যুর পর একজন প্রতিবেশী বাড়ী- খানি জমিগুলি দখল করিয়া লইয়াঁছেন |, তিনি বলেন, রাজকুমারের মা নাকি তাহার নিকট ধ্য ধার লইয়া! বাড়ী ও জমিজমা তাহার নিকট বন্ধক দিয়াছিলেন-_ স্থদে আসলে তাহা এখন ৫০০২ টাকায় দীড়াইয়াছে। গ্রামের লোকের পরামর্শে রাজকুমার ঠীগার নিকট গিয়া বন্ধকী দলিলাদি দেখিতে চাঠিয়াছিল। ভদ্রলোকটি বলিল-_“বাপুহে, আমার কথা যদি তোমার বিশ্বাস ন! হয়, তবে দলিল দেখলেই কি বিশ্বাস হবে ? তুমি তখন যদি বলে বস দলিল জাল ? আমার কথায় বিশ্বাস না ভয়, নালিশ করগে--দলিল দেখাতে হয়, আদালা,ত দেখাব 1৮ রাজকুমার কিয়ৎক্ষণ সেখানে দাড়াইয়া, গোলদীির ফটক দিয়া ভিতরে প্রবেশ করিল। শিগ্ঠাসাণর মহাশয়ের প্রতিমূর্তি হইতে অনতিদুরে একটি বেঞ্চিতে বিয়া ফটকটির দিকে চাহিয়া রহিল। রাজকুমারকে বড় শ্রান্ত দেখাইতেছিল। সারাদিন আপিপ করিয়া এখন সে বাসায় ফিরিতেছে। সেই কোন সকালে মেসের বাসায় তাড়াতাড়ি চারিটি খাইয়া বাহির হইয়াছে--তাহার পর সারাদিন আপিসে হাড়- ভাঙ্গ খাটুনি-ছুই তিন গ্লান কলের জল ভিন্ন: আর কিছুই তাহার উদরস্ত হয় নাই। তাই মুখখনি শুকাইয়া গিয়াছে। রাজকুমার চাকরিতে প্রবেশ করিয়াছে এই করেক মাস মাত্র । যতদিন তাহার মাতা জীবিতা ছিলেন, ততদিন ছেলেকে মাসে মাসে তিনি কিছু কিছু করিয়া টাক। পাঠাইতেন রাজকুমার কলেজে পড়িত। তাহার পূর্ব সঞ্চিত কিছু :ছিল হয়ত__জমিতে যাহা ধন হইত তাহাও সমস্ত তাহার প্রয়োজন হইত না__-একটা! পেট বৈত নয়-_-ধান বেচিয়াও টাকা পাঠাইতেন। ভরত খণও কিছু করিয়াছিলেন। তাহার টাকায় রাজ- কুমারের পড়ার মমস্ত বায় অবশ্ঠ নির্ব্বাহ হইত না-__ছেলে পড়াইয়া বাকী টাক! তাহাকে উপার্জন করিতে হইত। এফ, এ পরীক্ষার পর তাহার মাতৃবিয়োগ হইল। তাহার পর কিছুদিন সে ত শোকেই অবসন্ন ভইয়া রভিল। পরে দেখিল, লেখাপড়া করিতে হইলে বায় নির্বাহের জন্য ছেলে পড়াইতে হয়। ছেলে পড়াতে হইলে নিজের পড়ার সময় আর পাওয়া যায় না।-_- আর কাহার জন্তই বা এখন পড়িবে? তখন পড়িত, একদিন মার দ্ুঃখ ঘুচাইবে বলিয়া । সেই মা-ই যখন চলিয়া গেলেন, তখন কাহার জন্ত আর উদ্যম ?-- জ্ঞানোপার্জন ? তজ্জন্ত কলেজে যাইবার বিশেষ আবশ্যকতা নাই । একটা যেমন তেমন কেরাণীগিরি করিলেই তাহার উদারন্নের সংস্থান তইয়া যাইবে। নিজের জ্ঞানার্জনের নিমিত্ত যে পড়া শুনা, প্রভাতে ও রাত্রিকালে বরং নিশ্চিন্ত মনেই সে তাহা করি ত পারিবে । তাই সে মআপিসে মাত্র কুড়িটি টাকা বেতন পায়। আপিস ভাল--শাবিষাতে বথেষ্ট উন্নতির আশা আছে । মেসের খরচ দিয়া যাহা কিছু থাকে, তাহা হইতে প্রতিমাসেই কিছু কিছু পুস্তক কেনে,_্থতরাং কাপড় জামা প্রভৃতি কেনার টাকা বড় জুটিয়া ওঠে না। সন্ধা হইতে আর বড় বিলম্ব নাই। বিস্তর ছাত্র গোল- দীঘির তীরে বায়ু সেবন করিতে আসিয়াছে । ভাভারা উচ্চহান্তে, কলরবে, তর্ক বিতর্কে সে স্থান সরগরম করিয়া তুলিয়াছে। রাজকুমার যাহাকে অন্বেষণ করিতেছে-_সে ত কৈ এখনও আসিল ন1) গুডফ্রাইডের ছুটির সময় ভিবেণী হইতে হঠাৎ কলিকাতায় ফিরিয়া, হরিপদ নিজ অন্তরঙ্গ বন্ধুবান্ধবকে সকল কথা খুলিয়া বলিল__রাজকুমারকেও বলিল, কারণ রাজকুমারের সহিত কয়েক বৎসর হইতেই তাহার সন্প্রীতি। রাজকুমার ছুই তিন বার হরিপদ"র .কিয়াছে। ষান্তন, ১৩২২] সহিত ত্রিবেণৌত তাহাদের বাড়ীতে গিয়বছিল-_ছয় মাস পূর্বেও প্রভাবতীকে সে দেখিয়াছে। প্রভাবতীর এই রূপ আসন্ন বিপদের কথা তাহার ভ্রাতার নিকট শুনিয়া রাঁজকুমারের মনটিও সমবেদনায় আতুর হইয়া উঠিয়া- ছিল। রাজকুমার হরিপদদের পাণ্টা ঘর-_তাহার সহিত প্রভাবতীর বিবাহ অনায়াসেই হইতে পারে, কিন্তু তাহার দারিদ্রা নিবন্ধন হরিপদ সে প্রস্তাব তাহার কাছে করে নাই। হরিপদ অপরাপর বন্ধুকিও যেমন বলিয়াছিল, সেই রূপ রাজকুমারকেও একটি স্থুবিধামত পাত্র খু'জিয়! দিতেই অনুরোধ করিয়াছিল । যেদিন হরিপদ পাত্র খুঁজিতে বলিল রাজকুমার সেই দিন সন্ধ্যাবেলাই বাসায় গিয়! তাহার ছিন্ন মাছুরের উপর উবু হইয়া শুইয়া! ভাবিতে ভাবিতি-পাত্রের সন্ধান পাইল। জাগির়া জাগিয়! স্বপ্ন দেখিতে লাগিপ যেন প্রভাবতীর সহিত তাহার বিবাহ ভইয়াছে__প্রভাবতীর বাপ, মা, ভাই তাহার বাপ, মা, ভাই হহইয়াছে--সে আর সহায়- হীন আত্মীকবজ্জিত লক্ষমীছাড়া নহে । মধ্য সে পীড়িত হইয়৷ পড়ে_চারি পাচ দিন আপিস যাইতে পারে নাই । রোগ শয্যায় পড়িয়া ছট্‌ ফটু করিতে করিতে সে স্বপ্ন দেখিত যেন প্রভাবতী তাহার কাছে বসিয়া আছে, তাভার গায়ে মাথায় হাত বুলাইয়া দিতেছে। পীড়ার ংবাদ পাইয়া হরিপদ তাহাকে দেখিতে আসিল-_ প্রভাবতী সম্বন্ধে মনে মনে রাজকুমার সে সুখ কর্ন! করিয়াছিল -হরিপদ বাস্তবেই তাহা করিল-_কাছে বসিয়া তাহার গায়ে মাথায় হাত বুলাইয়! দিল, তৃষ্ণার সময় তাহার মুখে জল তুলিয়া ধরিল, গ্েহতরে কত আশা ভরসার কথা বলিয়া তাহার সাত্বনা-বিধান করিল। উচ্ছসিত ক্ৃতজ্ঞতায় রাজকুমার যখন যখন “ভাই” বলিয়া! হরিপদ”র হাতটি স্প্* করিতে লাগিল-_ সেই “ভাই” কথাটির মধো যে কতখানি আকাজ্ষা ও মিনতি লুকাইত ছিল, হরিপদ তাহা! জানিতেও পারে নাই। " বিগত কয়েকদিন ছুই তিনবার ইরিপদ”র সহিত তাহার সাক্ষাৎ হুইয়াছে--প্রভাবতীর জন্য পাত্রের কথাও জীবনের মূল্য ১০৭ দুইজনে আলোচনা! করিয়াছে । হরিপদ কোথাও স্থবিধা করিতে পারে নাই-_আশাও বড় নাই । সেদিন সে স্পষ্ট করিয়া বলে নাই-_কিস্তব কথার ভাবে রাজকুমারের মনে হইয়াছে, হরিপদ এখন তাহাকেই যেন নিজ ভশ্লীর জন্য কামনা করে। অগ্ভও আপিস যাইবার সময় বউ- বাজারের মোড়ে হরিপদ”র সহিত দেখা হইয়াছিল, হরিপদ বলিয়াছিঠ,. বিশেষ কথা আছে, আজ সন্ধ্যার সময় কোথায় দেখা হইতে পারে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল। রাজকুমার, হত্রিপদ”র বাসায় যাইতে চাহিয়াছিল কিন্তু হরিপদ বলে-_কথাটা গোপন, অনেকক্ষণ লাগিবে-_ বাসার পাচজনের মধ্যে সুবিধা হইবে না, আঙ্গ বিকালে গোলদীঘির ধারে দেখা হইলেই ভাল হয়। রাজকুমার বলিয়াছিল--“মাচ্ছা বেশ, আপিসের ফেরৎ ছটার সময় আহ মামি গোলদীঘিতে আস্ব-তুমিও সেই সময় এস ।”--বিচ্ঞাসাগর প্রতিমুপ্তির নিকট উভয়ের সাঙ্গগতের স্থান নিদিষ্ট ভইয়াছিল--তাই রাজকুমার এখানে আসিয়া বসিয়া আছে। কিন্তু হরিপদ এখনও ত কৈ আসিল না। বউবাজারে যখন কথা হইয়াছিল, তখন রাজকুমার মনে করিয়াছিল, বোধ হয় ভম্মীর বিবাহের কথাই হরিপদ বলিবে এবং তাহাকেই বিবাহ করিতে অনুরোধ করিবে । হরিপদর বিলম্ব দেখিয়া রাজকুমারের মনে মনে আশঙ্কা হইতে লাগিল,তবে কি হরিপদ আজ দিনের মধ্যে অন্য কোনও পাত্র হাতে পাইয়াছে_-তাই আমায় পরিত্যাগ করিল? কিন্ত ইহা মনে ভাবিতেও রাজকুমারের ক্লেশ হইল । কয়দিন গোপনে মনে মনে যে আশাটি সে পোষণ করিয়াছিল, তাহা কি বিফল হইবে? মনকে সে বুঝাইবার চেষ্টা করিতে লাগিল-_-আমি ত সে মেয়েটির মঙ্গলের জন্তই তাহাকে বিবাহ করিতে পপ্রস্থত হইয়াছিলাম, যদি আমার সাহায্য ব্যতিরেকেও তাহার সে মঙ্গল হয়, তাহাতে আমার ক্ষতি কি ?__মন কিন্তু সে কথা শুনিতে চাহিল না-__সে যেন কাদিয়! উঠিয়া বলিল, হ' ক্ষতি আছে বৈকি! জীবনটা যে বিশ্ব হইয়া ষাইবে। ১০৮ এই প্রকারে আশা ও নিরাশীর দোলায় কখনও তাহার মনটি উচ্চে উঠিতেছে--কখনও নিম্নে নামিয়া যাইতেছে । এমন সময় চারিদিকে সরকারী আলোক গুলি জলিয়া উঠিল। সঙ্গে সঙ্গে হরিপদও আপিয়া দাড়াইল। বলিল-_-“আমার ভাই বড় দেরী হয়ে গেল, তুমি কতক্ষণ এসেছ ?” ঘণ্টা খানেক হবে ।” “বাসায় যাওনি ?” “না__আপিস থেকে সোজ! এসেছি । সেই ব্রকমই ত কথা ছিল।” “তোমাকে ভারি কষ্ট দিলাম ভাই। তোমার বোধ হয় খুব ক্ষিধে পেয়েছে ?” রাজকুমার হাসিয়া বলিল-_“আমি কি বালক ?” হরিপদ বলিল-_-"তুমি আপিসে কখনও কিছু খাওনা জানি। বাসার গিয়ে বিকেলে খাও। তাই জিজ্ঞাস! করছিলাম । চল, বরং একটা চায়ের দোকানে গিয়ে দুজনে কিছু খেয়ে আসি |” “আবার ও সব কেন ?” “তোমার সঙ্গে আমার যে কথা আছে তা ছ পাঁচ মিনিটে শেষ হবে না। দেরী হবে_হয়ত রাত্রি, নটা বাজবে। ততক্ষণ তুমি কিছু না থেয়ে থাকলে নিশ্চই তোমার কষ্ট হবে। চল-_-আমার পকেটে একটা সিকি আছে ।” রাজকুমার আপত্তি করিতে লাগিল কিন্তু হরিপদ শুনিল না, তাহাকে টানিয়া লইয়া গেল । পথে ধাইতে যাইতে রাজকুমার জিজ্ঞাসা করিল-_ “কি কথাটা বল ত।” “সে অনেক কথ! ভাই ।” “একটু আভাস দাও ।” “আমার বোনের বিয়ের কথা 1” “কিছু স্থবিধে কোথাও করতে পারলে ?” পন” রাজকুমার আর কিছু বলিল না। নীরবে হরিপদ”র সহিত একটা চায়ের দোকানে গিয়া উঠিল। সেখানে মানসী ও মন্মবাণী [৮ম ব্য_-১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা এক এক পেয়ালা চা এবং কিছু কেক্‌ বি্কুট প্রভৃতি খাইয়া উভয়ে আবার গোল দীঘির ধারে প্রবেশ করিল। চতুর্দশ পরিচ্ছেদ আশা ফলবতী । তখন রাত্রি প্রায় আটটা-_ছাত্রের দলের ভীড় অনেক কমিয়! গিয়াছে । উভয়ে একটা বেঞ্চির অন্থু- সন্ধান করিয়া কোথাও না পাইয়! অবশেষে একস্থানে একটু নিরিবিলি পাইয়া ঘাসের উপর বসিল। হরিপদ বলিল-_“প্রভাকে তুমি দেখেছ ত ?” পদেখেছি 1৮ “কেমন মনে কর ?5 রাজকুমার একটু হাসিয়া বলিল--“ভালই 1” হরিপদ কিয়ৎক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল-_- “তুমিই কেন তাকে বিয়ে করনা না ভাই 1” রাজকুমার বলিল__“মামি ?--আমি যোগ্য পাত্র ?” “কিসে নও ?” “আমার মা নেই, বাপ নেই, ঘর নেই, বাড়ী নেই। মাসে কুড়িটি টাকা মাইনে পাই--নিজের পেটে খেতেই কুলায় না। আমি বিষে করলে তোমার বোনের কি সুখ হবে ?” হরিপদ বলিল-_“রাজপুত্তর একটি পাই-ই বা কোথা ?” রাজকুমার বলিল-_-"আরও দিন কতক খুঁজে দেখ না-_পাঁওই যদি |” এউত্তর শুনিয়া, হরিপদ একটু বিস্মিত হইয়! রাজকুমারের মুখের দিকে চাহিল। অভিমান নাকি? তাহা যদি হয়, তবে ত কার্ধ্য হাসিল। বলিল--“ভাই, ও সব কথা ছেড়ে দাও। আমাদের মত অবস্থার লোক কিআশা করতে পারে ? বাজার কেমন দেখছ ত। কানা খোঁড়া মাতাল বধাট না হয়, কিছু লেখাপড়া জানে--এমন একটি পাত্র পেলেই পরম সৌভাগ্য । তুমি বল্ছ, তোমার সঙ্গে বিষে হয়ে প্রভার কি সুখ কি তার ফান্তন, ১৩২২] হবে? আমার উত্তর, সোণ! দানা, অট্রালিকা, চাকর £দাসীর সুখ না হক্‌, আর সব সুখই ত হবে। আমাদের গ্রামের সেই গিরিশ মুখুষ্যে বুড়ো__তার ছেলেরাই ত আমাদের বয়সী--তার সঙ্গে বিয়ে হলে প্রভার কি স্ুথ হবে বল ত? টাঁকা কড়ি গঞ্পনা গাঁটি যথেষ্টই হবে কিন্তু তাই কি স্ত্রীলোকের একমাত্র সুখ ? স্বামীর সঙ্গে দি মনের মিল না হয়” রাজকুমার বলিল-_“সে ত ঠিক কথা। কিন্তু ঘরে যদি অন্ন না থাকে তবে মনের মিলে কি পেট ভরবে ?” হরিপদ বলিল--“্ঘরে তোমার আজই অন্ন নেই, কিন্ত চিরদিনই কি এ অবস্থা থাকবে ?” “ভবিষ্যতে কি হবে কে বলতে পারে ?--এর চেয়ে অবস্থার উন্নতিও যেমন হতে পাঁরে, তেমনি অবনতি ত হতে পারে!” “তা ঠিক কথা? কিন্ত একটা সম্ভব অসম্ভব ত দেখতে হবে। তুমি লেখাপড়া শিখেছ__এঁফ, এ পাস করেছ-_তোমাঁর দাম অবিশ্তি মাসিক ২০২ নর । ভবিষ্যতে উন্নতির আশা আছে, ভাল আপিস, তাই তোমার ২০২ টাকায় ঢ.কৃতে হয়েছে । নৈলে যদি তুমি মাষ্টারি কর আর দুই একটি ছেলে পড়াও তা! হলে অনায়াসেই ত ওর তিন চারগুণ রোজগার করতে পার। তুমি যে রকম সচ্চরিত্র, বুদ্ধিমান, পরিশ্রমী, তোমার উন্নতি হবেই হবে । এ রকম অবস্থা কতদিন আর থাকৃবে ?” " রাজকুমার জিজ্ঞাসা করিল-__“আমার সম্বন্ধে এ উচ্চ ধারণা কতদিন থেকে হয়েছে তোমার ?” হরিপদ আবার বন্ধুয় মুখ পানে কৌতুহল দৃষ্টিতে চাহিল। বলিল-_“ভাই প্রথমেই তোমায় এ অন্থুরোধ করিনি, তাই কি তুমি রাগ করেছ ?”* রাজকুমার বলিল,_“রাগ করব কেন? রাগ আবার কিসের ?” * “তোমায় প্রথম যে বণিনি, তার কারণ'কি তা শোন। আমরা এ বিয়েতে একটি পয়সা দিতে পারব না। তুমি লেখাপড়া শিখেছ_-চাকরি করছ--ক্রমে জীবনের মূল্য ১০৭) উন্নতিও হবে। তখন তুমি বিয়ে করলে আমার বোনের চেয়ে ঢের ভাল মেয়ে পাবে । রূপে গুণে বলছিনে-_ কারণ রূপে গুণে আমার বোন বড় ফেলা যায় না। সহায় সম্পদ--এই সকল বিষয়ে বলছি। আমার বোনকে যে বিয়ে করবে, তাকে অনেকটা ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। যদি অপরের উপর দিয়ে যায়, তবে তোমার আর কে ক্ষতি করি ?__এই ভেবেই প্রথমে তোমায় বলিনি ।” খাটি ধতা কথাটি হরিপদ কিন্তু বলিল না। অন্ত বিষয় এবং অন্ত কেহ হইলে, রাজকুমার এ জাতীয় কৈফিয়ৎ বিশ্বাস করিত কি না সন্দেহ__কিস্ত প্রাণের টান যাহার প্রতি-_তাহার কথা মানুষ সহজেই বিশ্বাস করে এবং বিশ্বাস করিলেই সুখ পায়। সুতরাং রাজ- কুমার হরিপদর কৈফিয়ৎটি নির্বিচারে বিশ্বাস করিল। হরিপদ বলিল--“ভাই, তোমার সঙ্গে আমার অনেক দিনের বন্ধুত্ব_আমার অনেক দায়ে বিপদেই তুমি আমার সহায় হয়েছ। এ দীয়টি থেকেও তুমি আমায় উদ্ধার কর ভাই। আমার বাবা ম! যে সেই বুড়োর সঙ্গে প্রভার বিয়েতে সম্মত হয়েছেন__সে নিতান্ত নাচার হয়ে। সকল কথাই ত শুনেছ। এবার বাড়ী গিয়ে দেখি, সে বিয়ের নামেই প্রভা ভেবে ভেবে মনেপ্ দুঃখে আধখানি হয়ে গেছে, বিয়ে হলে কি আর সে বীচবে? দুটো নয় পাচটা নয়-_আমার এ একটিই বোন। সে যদি চির জীবনের তরে অন্ুখী হল, তা হলে আমি বুথা তার ভাই হয়ে জন্মেছি। তুমি অমশ কোরো না ভাই”-_বলিয়া হরিপদ, রাজ- কুমারেব হস্ত ছুইটি ধারণ করিল! রাঁজকুমারের যেন কান্না আসিতে লাগিল--কেন যে কান্না আসিতে লাগিল সে কথা কিন্তু বলা শক্ত । * রাজকুমার স্বীকার হইল। বলিল-__“অবিশ্তি তুমি ঘদি ভাল বোঝ, তোমার মা বাপের যদি মত হয়__ আমায় যা! বল্বে তাই কয়ব |” তাহার পর দুই বন্ধুতে মিলিয়া অনেকক্ষণ ধরিয়া” পরামর্শ চলিল। সুদুর ভবিষ্যতেও যাহা যাহা করিতে ১১৩ মানসী ও মন্মবাণী [ ৮ম ব্য--১ম খও্--১ম সংখা। হইবে, তাহারক্ুপ্রাগ্রাম এক প্রকার স্থির হইয়া গেল। বিবাহের পর প্রভা এখন ত্রিবেণীতেই থাকিবে । প্রাইবেট ছাত্র হইয়া রাজকুমার আগামী বৎসর হরি- পদর সঙ্গে বি-এ পরীক্ষা দিবে__পাঠাপুস্তক গুলির মধো অধিকাংশ তাহার ত পড়াই আছে। আগাদী বৎসর উভয়ে আইনের শ্রেণীতে হাজিরা দিতে থাকিবে। আইন পাস করিয়া উভয় বন্ধু মফস্বলের কোনও স্থান নির্বাচিত করিয়া সেখানে গিয়া প্রাকটিস আর্ত করিবে। দ্ুইখানি বাড়ী পাশাপাশি লইতে হইবে এবং মাঝখানের দেওয়াল ভার্গিয়া সেখানে দরজা বসাইতে হইবে যাহাতে মেয়েরা দিবসেও পরস্পরের নিকট যাতায়াত করিতে পারে। বাড়ীওয়ালা ষদি দেওয়াল ভাঙ্গিতে দিতে আপি করে, তবে কিছু টাকা তাহাকে ধরিয়া দিলেই হইবে--বলিলেই হইবে বাপুহে, তোমার দেওয়াল আমরা ভার্গিয়া পিতে ছি- যথন আমরা বাড়ী ছাড়িয়া দিব, তোমার দেয়াল তমি মেরামত করিয়া লইও -_এই লও টাকা-_রথিয়া দাও। রাজকুমার বলিল__“ভ।ড়ার বাড়ীতেই ত চিরকাঁণ আমরা থাকব না-নিজেদের বাড়ী করতে হবে ত ক্রমশঃ 1৮ হরিপদ বলিম_-হ্যা তা ত করতেই ভবে__কিন্ত প্রথম প্রথম বছর কয়েক কি আমরা তা পেরে উঠব ভাই? কি রকম দিন কাল পড়েছে দেখছ ত? নুতন উকীল হয়ে বাসা খরচের টাকাটা রোজগার করাই দায়। ভাতে তকিছু রেস্ত নেই-- তোমারও নেই আমারও নেই-দ্ুই ভাই-ই সমান।” রাজকুমার বলিল-_“হ1 হা হাঁ_ছুই ভাই-ই সমান । ঠিক বলেছ। এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ.” | দুইজনেই হাসিতে লাগিল । ধন্ত বয়স--যে বয়সে ভবিষ্যতের অতদুর পর্য্যন্ত দৃষ্টি চলে এবং নিজ নিজ অভাগ্যের কথা আলোচনাতেও হাসি আসে । ঢং টং করিয়! প্রেসিডেন্সি কলেজের ঘড়িতে নয়টা রঙ বাজিল। দূর ভবিষ্যতে বাযুহ্্য নির্্ীণকার্য্য আপাততঃ স্থগিত রাখিয়া, উপস্থিত কি :কি করা কর্তব্য তাহাই ছুইজনে পরামর্শ করিতে লাগিল। হরিপদ বলিল--"২৫শে বৈশাখ এ মাসে বিবা্কের শেষ দিন ।” সেই দিনেই বিবাভের দিনস্থির হইল । রাজকুমার জিজ্ঞাসা করিল-_“আপিস থেকে কদিনের ছুটি নেওয়া যায় ?” “এক হপ্পার নাও।” “একহপ্লা কি দরকার ?__-আর অতদিন চাইলে সাহেব হয়ত মোটেই মঞ্জুর করবে না। আমি বলি, দুদিন কি তিন দিন |” হরিপদ, একটু চিস্তানিত হইয়া বলিল-_“ডুদিন সব হওয়া ত অসম্ভব। যেদিন বিয়ে ২৫শে-তার পূর্বদিন বিকালের গাড়ীতে এখান, থেকে রওয়ানা হওয়া চাই--কারণ বিয়ের দিন ভোরে দধিমঙ্গল আছে-- মাবণ্শীক কি দব মেয়ের করে, মেসের বাসায় সেসব ত ৬বাপ যো নেই। আমাদের বাড়ীতেই সেগুলো হোনায় সারতে হবে । তারপর, ২৬শে কুস্ুমডিওে সেও সেখানেই সারতে হবে । ২৭শে ফুলশযাা--এই ত তিন দিন গেল। ফুলশধ্যার ভোরে উঠেই ভুমি পাড়ি মারবে, সেই বা কেমন দেখায় ? অন্ততঃ তিনদিন আরও সেখানে তোমার থাকা উচিত। তা হলে পাঁচ দিন। অন্ততঃ পাচদিনের ছুটি নাও হে।” রাজকুমার বলিল,_সে চেষ্টা করিয়া দেখিবে, কিন্তু সাহেব বধি না শুনে, অন্ততঃ তিন দিনের ছুটি সে পাইতে পারিবে বোধ হয়। হরিপদ বলিল-__-“টোপরের কি হবে? দেশে, মালীকে ফরমাস না দিলে ত পাএয়া যাবে না। তার চেয়ে বরং এখান থেকে তৈরি টোপর কিনে নিয়ে যাওয়া ভাল। টোপর চাই, চেলির জোড় চাই-আরও কি কি সব দরকার হয় জানিও না।” রাজকুমার বলিল-_-“তুমি বাড়ী যাও। তাদের সঙ্গে পয়ামর্শ করে কিকি এখানে থেকে কিনে নিয়ে বেতে হবে, জেনে এস।”» ফাল্গুন, ১৩২২ ] শুতি-স্মৃতি ১১১ “হ্যা, বাড়ীতে আমায় কাল যেতেই হবে ।” রাত্র দশটার সময় দুই বন্ধু পরস্পরের নিকট বিদায়গ্রহণ করিল। পরদিন হরিপদ বাড়ী গেল। তাহার পিতা-মাতা! পাত্রের কথ শুনিয়া বিবাহে মত দিলেন, ৩বে বলিলেন --"ছেলেটির মা বাপ ভাই খুড়েো! গ্যাঠা কেন্ট নেই এইটিই বড় খুঁৎ রইল ।” হৃরিপদকে তাহারা উপদেশ দিলেন, ২৪শে বৈশাখ রাত্রির গাড়ীতে শৌছ্বানই ভাল। আর, বিবাহের পুর্ব পর্যাপ্ত কথাটা খব সাবধানে গোপন রাখিতে হইবে গিরিশ মুখুযো জানিতে পারিয়া কোনও হাঙ্গাম হুজ্জৎ বাধা য়ানা বসে। হরিপদ কলিকাতীয় ফিরিয়া আসিয়া আবশ্তকীয় জিনিষপত্র ক্রয় করিল। দ্রই বন্ধুর তহবিল হইতে যাহা বাহির হইল, তাহ মিলাইয়াও কুলাইল না, উভয়কেই কিছু কিছু খণসংগ্রাহ করিতে হইল। হথাদিনে সন্ধ্যার গাড়ীতে পরম উল্লাসে ুইজনে ব্রিবেণী যাতা করিল। ক্রমশঃ স্রীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় | শ্ুতি-স্বৃতি ( পু্ধ্ব প্রকাশিতের পর ) সমস্তরাত্রি ঝড় জল বজাঘাত চলিল, আমি কাপ্টেন্‌ যেখানে দাড়াইয়। লক্ষরের প্রতি হুকুম চালাইতেছে সেই খানেই কায়র্রেশে রহিলাম। নৌকা এবং এত- গুলি মারোভ'র কি গতি ভয় তাভা দেখিবার উদ্বেগ যে মনে ছিল না এমন কথা বলি না, আরও একটি গঙ্ছল টুটিল, তরণা আরও দ্রতবেগে দুরিতে লাগিল, রাতি শেষের দিকে ঝড়বেগ একবার অতি মাভায় বুদ্ধি হইয়া তর পরেই ক্রমে হইতে আরম্ত হইল। প্রভাতে ঝড়বৃষ্টি বন্ধ হয়া গেল, আকাশ পরিক্ষার হইল, নবোদিত স্র্শের অক্ণকিরণে নদী তরঙ্গ ঝল্মল্‌ করিয়া উঠিল, আরোহী যাত্রীর দল আসম বিপদ ভইতে মুক্তিলাভ করার তাহাদের দে, মনের আনন্দ রাখিবার যেন স্তান পাইতেছিল ন! । প্রথম শেণীর ক্যাবিন ভাড়া করিয়া আর একটি ইংরাঁজ মহিলা ষ্টামারে উঠিয়াছিলেন্, এই ঝড় বৃষ্টির গোলযোগের মধো তাহাকে একবারও দেখি নাই। যে ক্যাবিনে তিলি ছিলেন তাহার দ্বার বন্ধ ছিল। সমস্ত রাত্রি তাহার কোন সন্ধান লইবার * স্থুযোগ আমি পাই নাই, প্রভাতে যখন নীচে নামিয়া আস তখন ত্ৰাহাকে তাহার কামরার দ্বারে দাঁড়াইয়া থাকিতে দেখিয়া কুশল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিলাম । তিনি সহাশ্তু মনা মুখে প্রতিপ্রশ্ন করিয়া নিজ মঙ্গল সংবাদ আমায় জ্ঞপন করিলেন। কথায় কথায়, তিনি ঝড়ের বেগ জানিতে পরিয়াছিলেন কি নিদ্রায় তাহার দুঃসময় কাটিয়া গিয়াছে এই প্রশ্ন করিলাম। উত্তরে তিনি জানাইলেন যে ঝডবেগ তিনি বিলক্ষণ টের পাইয়াছিলেন, বিপদ তিনি অন্তুমান করিতে পাৰিয়াছিলেন এবং সে জগ বিষম ভয়ে তাহার রাত্রি কাটিয়াছে কিন্তু সকলের পাক্ষাতে তিনি তাহার প্রাণভয়-বিহ্বল-মুর্তি দেখাইতে চাহেন নাই, ণ্যাা হয় হউক” বলিয়া তিনি তাভার কামরার দ্বার বন্ধ করিয়া! বিছানায় পড়িয়া িলেন। মনে ভাবিলাম, যে দেশে জোয়ান অব আক জন্ম লইয়াছিল, সে দেশের নারীর পক্ষে নিঃশব্দে জলমণ্র হইয়া! যাওয়া খোড়া কথা” । জাহাজের চিমনি দিয়া কলঘরে জল প্রবেশ করায় অগ্নি নির্বাণ হইয়া গিয়াছিল। সে সব ঠিক করিয়া জাহাজ ছাড়িতে প্রায় ছুইপ্রহর অতীত হইয়া গেল। বাযুবিধবস্ত বিশাল তরণী আোতের প্রতিকূলে মন্দ গতিতে গন্তব্য স্থানের অভিমুখে পুনরায় যাত্রা করিল। ব্রহ্মপুত্রের উভয় তীরে প্ররুতির পর্য্যাপ্ত রূপ সম্ভার যেন ধরে না, মনে হইল এই নগনদী পরি- শোভিত নির্জন প্রদেশে লোক-চক্ষুর বাহিরে বিশব- ১১২ মানসী ও মর্ম্মবাণী [৮ম বর্য-১ম ঘণ্ড-_১ম সংখ্য রাণী যেন জধর অঙ্গাবরণ উন্মোচন করিয়া নদীতরঙ্গে অনেক স্থান হইতেই ফিরিতে হইল, তথাপি আশ! প্রতিফলিত নিজের অতুলনীয় নগ্র-সৌন্দ্ধ্য নিজে দেখিয়া নিজেই মুগ্ধ হইতেছেন। জন্মাবধি বঙ্গদেশের সমতল ভূমিই দেখিয়া আসি- তেছি। নতোন্নত-গিরিমালা-সমন্থিত পর্য্যাপ্ুপুষ্পভারাকুল বৃক্ষবল্পরী-শোভিত কামরূপ-ভূমি আমার চক্ষু জুড়াইয়া দিল। পথে আর কোন বিপদ হয় নাই, জাহাজ যথা সময়ে গিয়। গৌহাটির ঘাটে লাগিল। আমার সঙ্গে কোন তীর্থপাণ্ডা ছিল না এবং যদি সে নৌকায় কেহ থাকিয়াও থাকে সে আমার ধরণ ধারণ দেখিয়া নিকটে ঘেঁষিতে সাহস পায় নাই। আমার সঙ্গে একটিমাত্র ভত্য ছিল--সে আমার বন্থ পুরাতন ভত্য, চিরকাল আমার নিকটেই সে কাজ করিতেছে, জ্ঞান হওয়া অবধি দেখিতেছি নবীন খানসামা আগার সহচর, শৈশবের খেলার সঙ্গী আমার চিরসহচর হইয়া রহিল। আজও সে আছে, আমি যেখানে যে ভাবেই থাকি সে আমার সঙ্গ ছাড়ে না, দেখিতেছি হয় তাহার সংকারের উদচ্চোগ অনুষ্ঠান আমাকে করিতে হইবে কিম্বা সেই আমার শবদেহের সঙ্গে সঙ্গে মলিন মুখ লইয়া শ্মশান পর্যান্ত কন্তধাগুলি, আজীবন যে নিষ্ঠায় আমার কাজ করিতেছে, সেই নিষ্ঠায় সেগুলিও সম্পন্ন করিয্না যাইবে । সেই নবীনের নিকট আমার বিছানাপত্র, বাক্স-ডেক্স রাখিয়া আমি বাসা খুঁজিতে বাহির হইলাম। যে ঝড় বুষ্টি হইয়া! গিয়াছে তাহাতে গৌহাটি সহরের রাস্তা ঘাট অচল হইয়াছিল, র্রাস্তার কাদায় হাটু পধ্যন্ত ডুবিয়া যায়, পায়ের পাদুকা হাতে লইয়া বিশ্রামের জন্ঠ ঘর খুঁজিতে বাহির হইলাম । তথন সন্ধ্যাকাল__যে যাহার সুখ-দুঃখের ঘরে বিশ্রাম করিতেছে--এই পথশ্রান্ত গৃহহীনকে গৃহ দিবার মত মন লইয়া কে অপেক্ষা করিতেছে বলুন? গৃহহীন শ্রান্ত পথিক কি ইহ সংসারে থাকিবার মত স্থান সহজে পায়? অধিকাংশ স্থল হইতে অতিথি ফিরিয়াই যায়--শকুগ্লার তপোবন হইতেও ছুষাস্ত ভিন্ন অন্ত সকলেই ফিরিয়া গিয়াছে । গৌহাটির গৃহস্থ আমাকে বিমুখ করিবে সে আর বড় কথা কি? ছাড়ি নাই, শ্রান্ত দেহ টানিয় দ্বারে দ্বারে আঘাত করিয়া ফিরিতে লাগিলাম । :এক স্থানে বাবুদের সখের থিয়েটারের রিহার্সেল চলিতে- ছিল; এত দুঃখেও সঙ্গীতের মোহ আমায় ছাড়ে নাই। সেই দ্বারে গিয়া আঘাত করিলাম । দ্বার খুলিল, টেড়ি কাটা বাবু ত্রিভঙ্গিম-বঙ্কিম-ঠামে দীড়াইয়া অপাঙ্গ-ভঙ্গীর সভিত জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি চাই ?* আমি বলিলাম, “সঙ্গীতের অপূর্ব মাধুর্য আমায় আকর্ষণ করিয়াছে, আমাকে বংশী-স্বরাকুষ্ট মুগই ভাবিয়া লউন।” বাবুর হাস্তে বুঝিলাম ফল হইতে পারে, সুতরাং আমন্ত্রণে অপেক্ষা না করিয়া একেবারে ঘরেই ঢ,কিয়া পড়িলাম। কিছুক্ষণ বসিয়াই বুঝিলাম বাঁদকটি তেমন পট নেন । আমি সঙ্গীতের তালে তালে তুঁড়ি বাজাইয়! জানাইলাম বাদন বিদ্যায় আমি কথঞ্চিৎ পারগ। চতুর্দিক হইতে অনুরোধ চলিতে লাগিল, “বাজান মশায়, বাজান ।” আমি বৃথা ইতস্ততঃ না করিয়া বীয়া তবল! টানিয়! নিয়া বাঁজাইতে বসিয়া গেলাম। ও বিগ্ভায় আমার অনন্ত সাধারণ পারগতা ছিল না কিন্তু যাহ! জানি তাহাতেই বাবুরা পরিতুষ্ট হইলেন; পুনরায় অনুরোধ উপরোধ চলিতে লাগিল যে আমি তাহাদের থিয়েটারটা! শেষ হওয়া পর্য্যন্ত থাকিয়া যাইতে পারি কি না__ তাহাতে আর্থিক-লাভের সম্ভাবনা আছে-_ একথাও বাবুর দল আনাকে নান! ভাবে-ভঙ্গীতে জানাইয়।! দিলেন। আমি বলিলাম, ণথাকিবার স্থান পাইলেই থাকিয়া যাই।৮_-কথার ভাবটা এমনি দীড়াইল যে “যে মোরে আপন! ভাবে তারি ঘরে যাই একটি বাবুর বাসায় একখানি অনধিক্ত আল্গা ঘর ছিল। সেইখানি পাইবার আশ্বাস পাইয়া! আমি উঠিলাম। নবীনের সন্ধানে নদীতীরে গিয়া তাহাকে, সঙ্গে নিয়া এ ঘর থানিতে আশ্রয় লইলাম। প্রবেশ করিয়া দেখি, ইহার অনতিপূর্বে সেখানি গোশালারূপে ব্যবহৃত হইয়াছে__ সে রাত্রে যথা সাধ্য পরিষ্কার করিয়! নিয়া অনাহারে প্রভুভূত্যে রাত্রি কাটাইয়। দিলাম__-পর দিন যাহা হয় ফাল্ভন, ১৩২২] আতি-স্থৃতি ১১৩ একটা ব্যবস্থা কর! যাইবে, চাকর মনিবে এই পরামর্শ রহিল। এইরূপ করিয়া বাসা খুঁজিয়া, বিশ্রামের স্থান খুঁজিয়া জীবনে বছ ঘুরিয়াছি, ভাল বাসা কখনও পাইয়াছি, পাই-ও নাই-_-আবার পাইয়াও সেখান হইতে তাড়িত হুইয়াছি। পরদিন প্রভাতে স্বানার্থ ব্রহ্গপুজ্রের দিকে চলিলাম। শুনিয়াছি ব্রহ্ষপুত্র-নদ; নদ এবং নদীতে কি পার্থক্য তাহা আমি আজও বুঝি নাই--সে কালে আরও না বুঝিবার কথা । আমি দেখি ছুই কুলে বাধাঁ-পড়া অবিরাম জলের শ্রোত চলিয়াছে,_-কেহছ বলেন গান গাহিতে গাহিতে চলিয়াছে, কেহ বলেন কীদিয়া কীদিয়া যাইতেছে,_যেটাই কেন ঠিক হউক না চলাটা সতা; এবং সকলেরই একই উদ্দেশ্ত- সেই নীল সাগরের শীতল বুকে মিলিয়া, মিশিয়া এক হইয়া যাওয়া । ছুই কূলে চাপা খাইয়া বাধা পাইয়া যাইতে বড় বিলম্ব হয় তাই সময়ে সময়ে কেহ কেহ কুল ভাঙ্গিয়৷ উদ্দাম গতিতে অভিলধিতের দিকে দ্রুত চলিতে থাকেন ;-_ এই বিলম্বের সহিষ্ণুতা এবং অসহিষ্ণুতা অন্্সারে নদ এবং নদী নামের স্ষ্টি হইয়াছে কি? ব্রহ্গপুত্র নদ হউন. বা ন্দীই হউন তাহাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমার ন্নান-পানের পরিমাণ জল তাহাতে যথেষ্টই ছিল এবং একদিন মাগেই দেখিয়া আসিয়াছি যে জাহাজ-শুদ্ধ আমাকে এবং আমার অতগুলি সহযাত্রীকে ডুবাইয়! মারিবার মত জলও ইহাতে যথেষ্টই ছিল। নির্মল জলরাশি কুলে কুলে কানায় কানায় পূর্ণ হুইয়া রহিয়াছে, শারদীয় মুনিন্ধল স্বচ্ছ আকাশ নদীবক্ষে প্রতিফলিত হইয়াছে__সান্তের মধ্যে অনন্তের সমাবেশের কিন্ছুন্দর উদ্দাহরণ-_-মানুষের অপরিসর বক্ষের মধ্যে অপার প্রেম ঝুঝি এমনি করিয়াই বাসা বাধে। অনন্ত বাসনায় মানুষের বুকের মধ্যে অনন্ত উন্মি প্রতিনিয়ত যেমন চঞ্চল হুইয়' উঠিতেছে, ্গিগ্ধ শরতের মন্দ বায়ু নদীবক্ষে তেমনি ঢেউ তুলিয়া কোন দূর দূরান্তরে বহিয়! ফাইতেছে কে জানে? তটান্ত-দিলিত বনরাজির 'হরিত- শোভা! দেখিয়া! আমার বনে হুইল যে অনস্ত-যৌবন! ১৫ স্থন্দরী প্ররতি, ধানী রঙের বেণারসী পরিয়া নদী- পুলিনের সন্কেত-স্থানে বাঞ্চিতের আগমন প্রতীক্ষা করিতেছে। প্রতীক্ষায় দুঃখ আছে এই কথাই সকলে বলে, আমি জানি এমন প্রার্থিতও আছে যাহার জন্য সারা জীবন প্রতীক্ষা করিতেও মানুষ কুষ্ঠিত ভইবে না-” কিন্তু ভায়, নান্তষের স্রীবন-কাল যে বড় অল্প! আশায় বসিয়া অপেক্ষা করা বড় কথা নঙ্কে, কিন্তু বাঞ্চিত সমাগমের পুর্বেই যে লোকাস্তরে যাত্রা করিতে হয়, সে £খ বড় ঃখ এবং সে ভঃখ বুঝিবার ঘে মানুষ মেলে না, ইভার মত দুঃখ বুঝি জগতে আর নাই। এ যে দিনের কথা লিখিতেছি সেদিনে আমি তিন সন্ধা স্নান করিভাম--ট রামিষ ভোজনও আমার অভান্ত হইল গিবাছিল। কারণ বিদ্যালয়ের শীত গ্রীত্ম এবং পুজার অবকাশে যখন বাড়ী আসিতাম তখন মায়ের পাতের প্রসাদ লইয়া ছোট দিদির সঙ্গে আমার বচসা লাগাই ছিল। আমি বিদেশবাসী বলিয়। মা ডিক্রি 'আমার অন্গকুলেই দিতেন | মেসে মাছ সব দিন" মিলিত নাট স্থুতরাং নিরামিষে অভ্যন্ত হইয়া যাওয়া আমার পক্ষে বড় কথা নহে। পরিধানের পারিপাটা বিশেষ ছিল নাট মনের ইচ্ছা গেরুয়াই ধরি, মা তাহাতে মহা গগুগোল করিবেন জানিয়া সে চেষ্টা করি নাই, গরদ তসরের উপর দিয়াই গেকুয়ার সাধ মিটাইয়! লইতাম। বাড়ী, থাকিবাঁর সময়ে সর্বক্ষণ গরদ তসর পরা চলিত না, থানধুতি পরলে মা বড় ছুঃখিত হইতেন, সুতরাং. আহার রুরিবার সময়ে যখন মার কাছে যাইতে হইত তখন পাড়ওয়ালা ধুতি পরিস্না যাইতাম। আহারাস্তে, বাহিরে আদ্িয়া আবার থানধুতি পরিতাম। মাথার কেশ. কিছু দীর্ঘই ছিল তবে জটা নহে । একথা বলিলাম তাহার কারণ পাছে কেহ আমায় সন্সযাসী ঠাহর করিয়!. লন্‌. এই ভয়ে-_আমি সন্্যানী ছিলাম মা, তবে পুরাপুরি. গৃহীও ছিলাম না--ছুইয়ের মাঝখানে এক কিভুত কিমা- কার বাপার ছিলাম । লোকে হয় ত মনে করিত জন্মা- স্তরের গ্রুব বা প্রহলাদ আসিয়া একালে . নাটোরের ঘরে" পোস্যপু্র হইয়াছে, ত্ববে এই সঙ্গে এ কথাও বলিয়া রাখি- ১১৪ মানসী ও মর্মমবাণী [৮ম বর্ষ--১ম খণ্-১ম সংখ্যা যে. মানুষেক্জ সে ভ্রম বিশ্বাস আমি বহু পূর্বেই দূর করিয়্াছি--আমি যে ধরব বা প্রহলাদ নহি তাহা প্রমাণ হইয়৷ গিয়াছে। | থে ঘাটে স্নান করিতে নামিয়াছিলাম সে স্থান হইতে নদী-মধ্যস্থ-দ্বীপ-সংস্থিত উমানন্দ ভৈরবের মন্দির দেখা যায়-চতুর্দিকে অপার জলরাশি কলনাদে বহিয়া যাই- তেছে, মধ্য জলান্তমজ্জিত কঠিন শিলাদ্বীপের উপর ভৈরব-মন্দির নীরব নিস্তব্ধ । এ মন্দির মুখরিত করিবার জন্য দেবদাসীর নৃপুরনিক্কণ নাই, বনদেবীর খাস মজ- লিসের অশিক্ষিতপটু নট শিখণ্ডী তাহার বিচিত্র বিস্তার করিয়া মহাকালের নিকট নৃতোর মোহালা দিতেছে । “উমানন্দে বিভোর” উমানন্দ সে দিকে লক্ষ্য করিতেছিলেন কিনা! জানি না, আমার সে দিক হইতে চক্ষু ফিরান কঠিন হইয়াছিল। ইন্দ্রধন্থুর রাগান্কারী বিচিত্র বর্ণানুরঞ্জিত বিভ্ৃত মযুরপুচ্ছ আমার সে দিনের মনঃস্থিত বিচিত্র বর্ণময় আশা ও আকাক্ষার মত উজ্জ্বল বর্ণে আমার নয়ন মন কেমন করিয়া অপহরণ করিয়া- ছিল, আজ তাহা ভাল করিয়া! বলিতে কি পারি? শত দুঃখের অভিঘাতে আজ কি আর মনের সে সরসতা মাছে? স্নানান্তে আদ্রবস্ত্রে নদীকুলে দীড়াইয়া গা মাথ মুছিবার উদ্মোগ করিতেছি, এমন সময়ে দেখি এক ধীবর এবং তাহার সঙ্গিনী ছুইটি বৃহৎ মতস্ত-_-একটি রোহিত এবং একটি চিত্রফল্লী ওরফে চিতল্-আনিয়া আমার সম্মুথে রাখিয়া দিল এবং তাহাদের আসামী (অস- মিয়া) ভাষায় আমাকে অনেকগুলি কথা বলিল, যাহার এক বর্ণেরও শাববৌধ আমার হইল না। আকার ইঙ্গিতে বুঝিলাম আমাকে মতস্ত ছুইটি লইবার জন্য অনুরোধ করিতেছে । কি সর্বনাশ! একে আমি নিরামিষ- ভোজী, তাহার উপরে সঙ্গী কেহ নাই, কেবল একমাত্র চাকর নবীন আমার সম্বল-_রন্ধন-কার্য আমাকেই করিতে হইবে এবং সে বিষয়ে নির্লজ্জভাবে '্বীকার করি- তেছি যে যদি কোন কারণে পাওবের স্তায় আমাকে অক্জাতবাস করিতে হইত তবে তীমের মত নুপকার. হইয়া আত্মগোপন করিতে পারিতাম না এবং এই পরিণত বয়সে আজও তাহা পারি না। আমার আনৃষ্ট- বিধাতার ইচ্ছায় অনেক সময়ে এখন নিজের আহার্ধয নিজে রন্ধন করিয়া লইতে হইয়াছে এবং হয়। কিন্তু তাহাতে নিজের খোরাক এবং ঠাকুর-ভোগ পর্যস্ত চলিতে পারে--কুকুর বিড়ালকে দিলেও তাহার! মুখ বাকাইয়া চলিয়া যায়। পথে প্রান্তরে আমার উদ্দেস্ত- বিহীন নিঃসঙ্গ ভ্রমণের সঙ্গীম্বরূপ একটি "জুয়েল কুকার” ক্রয় করিয়াছি, সেটি আমার সঙ্গেই থাকে । যেদিন ভাহারই সহায়তায় ক্ষু্লিবারণের চেষ্টা করিতে হয় সেদিন আমার প্রায় উপবাস ঘটে । আজও যদি আমার রন্ধন পটুতা এইরূপ আমার পাঠকপাঠিকা অনুমান করিয়া লইতে পারিবেন, খন আমার কুড়ি একুশ বৎসর বয়স তখন আমি রন্ধনে ভীমসেন বা তম্ত পত্বী দ্রৌপদী ছিলাম না। এমন অবস্থায় পয়সা খরচ করিয়া বৃহৎ ছুইটি মৎস্ত কেনা নিতান্তই বৃথা হইবে তাহা বুঝিয়াও ধীবরের নির্বন্ধাতিশযা এবং ধীবর-সঙ্গিনীর মতম্তের প্রতি এবং আমার মুখের দিকে মিনতির দৃষ্টিপাত দেখিয়া অকারণ সওদ| করিয়া ফেলিলাম। উহাদিগকে সঙ্গে লইয়া যখন আমার গৌহাটি বসবাসের গৃহখানির ( ভূত- পূর্ব গোশালা ) দিকে চলিলাম তখন নবীনের অগ্থিমৃত্তি কল্পনা করিয়া আমার মনে যুগপৎ ভয় এবং আনন্দ উভয় ভাবেরই আবির্ভাব হুইতেছিল। যাহা ভাবিয়া ছিলাম, বর্ণে বর্ণে মিলিয়া গেল। কোন কথা গুনিবার আগেই নবীন “মারমুখী” হইয়া উঠিল এবং কাহারও দিকে লক্ষ্য না করিয়া অনর্গল বলিয়া যাইতে লাগিল, “নাঃ, এমন লোকের সঙ্গে আর .পারা যায় ন1। নিজে মাছ খায় না, রান্না করা বংশের মধ্যে কেহ জানিত কিন সন্দে্, নিজে দেখিক্া' থাকিবার জন্ত একখানি গোয়াল ঘর পছন্দ করিয়াছে, বারবার মাথ! ভাঙ্গিলাম যে ঈশান দাদাকে সঙ্গে করিয়া নিই ঈশান দাদা আমার পিতামহের সময়ের প্রাচীন পাচক, সে আজও.জীবিত আছে, আমা-. দের কলিকাতার বাড়ীতে থাকে, কিছু কিছু করিয়া পেন-: শন পায়) সে কথা: গ্রাহ হইল. না। এখন কিনিয়া. ফাল্গুন, ১৩২২] আতি-স্মৃতি ১১৫ বসিলেন দেড়মণ মাছ, কে সে মাছ কাটিয়া কুটি! দেয়, কে রাধে আর কেই বাখায়? আর যদি কখনও তোমার সঙ্গে কোথাও আমি বাহির হই তবে আমার নাম নবীন নহে একথা 'জানিও-_হ'যা।” নবীনের কথায় রাগ কোনদিনই করি নাই, সে দিনও রাগ হইল না বরং হাসিই পাইতেছিল। কিন্তু সে সময়ে হাসিলে নবীনের রাগ পড়িতে বু বিলগ্ব হইবে ভাবিয়া! বহু কষ্টে মুখভার করিয়া দশাড়াইয়া রহিলাম। স-সঙ্গিনী ধীবর রকম দেখিয়া ভাবিল নবীনই মুনিব আমি তাহার চাকর। বিনা অনুমতিতে বেশী মূল্যে মাছ কিনিবার অপরাধে আমি বকুনি খাইতেছি এই ভাবিয়া বিষগ্রমুখে মাছ ছুইটি তুলিয়া নিয় প্রস্থান করিবার উদ্মোগে ছিল, আমি হস্ত- দ্বারা যখন নিষেধ করিলাম তখন তাহারা উভয়েই নবী- নের মুখের দিকে চাহিল। ধীবর ও ধীবরপত্বীর এই বাবহার দেখিয়৷ সমস্ত ঘটনার হাস্তরসটি নবীনের মনে সহসা জাগিয়া উঠায় তাহারও মুখে হাসির রেখা দেখা গেল। আমিও বাচিলাম স-সঙ্গিনী ধীবরও নিষ্কতির নিঃশ্বাস ফেলিয়া রক্ষা পাইল। অতঃপর সমস্তা কে মাছ কুটিয়া দেয়, কে রাধে এবং কে খায়? নবীন বলিল,”টাকা আমার কাছে যতক্ষণ আছে, তুমি বলিলেই খরচ করিব, কিন্তু রাধিবার ৰাড়িবার দায় আমার নহে, সে কথা আগেই স্পষ্ট বলিতেছি।” আমি অনন্যোপায় হইয়া ধীবর-জায়াকে ইঙ্গিতে মাছ কুটিয়া দিতে বলি- লাম। সে কিছু অধিক প্রাপ্তির আশায় আমার প্রস্তাব সহাস্যে অনুমোদন করিয়! বটির জন্য ইতস্ততঃ দৃষ্টি সঞ্চা- লন করিতে লাগিল। ধাহাদ্দের বাড়ীর এক উপাস্ত- ভাঁগে আমাদের এ ঘরখানি, সেই বাড়ীর গৃহিণীর নিকট হইতে ধীবরপত্তী বট চাহিয়া আনিল এবং আমি অপেক্ষা কৃত উচ্চক্ে, এ সওদা! তাহারই জন্ত করিয়াছি একথা কথা জানাইয়া দিলাম এবং ধীবর-পত্তীকে বলিলাম, “বাড়ীর মধ্যে গিয়া মাছ কুটিয়া গৃহিণীমাতার নিকট সব মাছ দিয়া দাও।” সে আমার কথা মতই কাজ করিল। কিছুকাল পরে একটি ৯১* বৎসরের বালিকা আসিয়া আমাকে বলিল, “মা বল্লেন, তুমি ও তোমার চাকর আমাদের ঘরেই খেও। এবেঙা আর তোমরা রান্না করিও না” কথা শুনিয়া নবীনের মুখ প্রসন্ন হাসো উজ্জল হইয়া উঠিল, আমারও এক সন্ধ্যার ব্রাহ্মণ-ভোজ- নের নিমন্ত্রণ জুটিল। বলা বাহুল্য মাছ কুটিয়া দিবার জন্ত ধীবর-পত্ধী মৎসের মুল্য অপেক্ষা কিছু বেশী টাকাই আমার নিকট হইতে পাইল এবং দ্বিপ্রহরের আহারটাও স্বামীন্ত্রীর সেইথানেই হইয়! গেল। সন্ধ্যার সময় গৃহস্থ বাবুর সঙ্গে তাহাদের সখের থিয়েটারের রিহার্সেল দিতে গেলাম । অধিক মূল্যে মাছ কেনা এবং আমার সঙ্গের বাক্স পেটারা দেখিয়া বাবুর মনে কি জানি কেন ধারণা হইয়া গিয়াছিল যে, অর্থলোভে তাহাদের থিয়েটারের বাদকরূপে চাকরি স্বীকার করিবার মত আর্থিক ছুরবস্থা আমার নহে। বাবুসম্প্রদায়ের একজন পুনরায় প্রকারান্তরে সে কথা সেদিনও উত্থাপন করিয়াছিলেন । কিন্তু গ্রস্তাব উত্থা- পিত হওয়া মাত্র আমার আশ্রয়দাতা বাবু বলিলেন, “না হে, এ ব্যক্তি ছদ্মবেশী, কে আমি জানি না, তবে ইহা নিশ্চয় যে ইনি চাকরী শ্বীকার করিয়া এ কার্য করিবেন না। এ অনুমান আমার সত্য কি মিথ্যা তাহা ই'হাকেই না হয় জিজ্ঞাসা কর। এই কথার পরে সমবেত বাবু- দের জোড়া জোড়া চক্ষু আমার সর্বাঙ্গে বিধিতে লাগিল, আমি একরাপ অভিভূত হইয়া পড়িলাম। নিতান্ত অসং- লগ্রভাবে জড়িত স্বরে বলিতে আরম্ভ করিলাম £-_ আজ্ঞা না তা নয়, চাকরি সবাই করিতে পারে,বেতনাদি কিরূপ পাওয়া যাইবে তাহা জানিলে তবে বলিতে পারি। আমার বাড়ী অনেক দূরে,মোটা বেতন না পাইলে এত- দুরে বাসা খরচ করিয়া খাইয়া পোষায় কি? আপনারাই বিবেচনা করুন” আর কেহ কথা বলিবার পূর্বেই যে বাঝুটি আমাকে ছদ্মাবেশী কষ্ক, বল্লভ বা সৈরিন্ধী মনে করিয়াছিলেন (শেষোক্তাট ভাবিয়া লওয়াই সম্ভব, কারণ তখন মাথার কেশ দীর্ঘ ছিল এবং বদনমণ্ডলে রোমরাজি তাদৃশ আধিপত্য তখনও বিস্তার করিতে পায়ে নাই। “বল্পভ? যে ভাবেন নাই, তাহা আমাপ্ন অস্তরাত্মাই * বলিয়া দিতেছিল) তিনি সর্বপ্রথমে বলিলেন,“যাই বলুন ১১৬ মানসী ও মন্মবাণী [৮ম বর্ষ--১ম থণ্ড_-১ম সংখ্য। মহাশয়, আফ্চি আপনার সঙ্গের লোকটির রকম সকম এবং আপনার বিছান! বস্ত্রের পরিপাট্য দেখিয়াই বুঝি- য়াছি থে আপনি হীনাবস্থার লোক নহেন |” আমি। হীনাবস্থার লোক না হইলেই যে চাকরী করিতে পারে না এমন কি কথা মহাশয়? বাবু। তাহা নয়, তবে আমরা কতই বেতন দিতে পারি যে আপনার মত লোককে রাখিব ? : আমি। আমি কত চাহিব তাহাওত আপনারা এখনও জানেন না_বিশেষতঃ এটি স্থায়ী চাকরী সম্ভবতঃ নহে, যে কয়দিন রিহার্পসাল চলে এবং যে করদিন অভিনয় হইবে সেই কয়দিনের চাকরী-_ তা থোকা-মোক্তা বন্দোবস্ত একটা হইলেও আমি স্বীকার করিতে পারি না এমন কথা ত আমি বলি নাই। আমার থোকা বন্দোবস্তের কথা শুনিয়া! দলের অপরাপর বাঝুদিগের মুখ হর্যোজ্জল হইয়া উঠিল। হয়ত তাহারা ভাবিলেন, বাক, কিছু দিয়া ইহাদ্বারাই কাজটা ভাল করিয়া! চালাইয়া, লওয়া যাইতে পারিবে বোধ হইতেছে । বাধুদের মধ্যে অনেক পরামর্শ চলিতে লাগিল, অবশ্ত সব কথা আমি শুনিতে পাই নাই। পুজার যে কয়দিন বাকি আছে, যে কয়দিন আর রিহার্সেল হইবে, থে কয়দিন ষ্েজ এবং ড্রেদরিহা- সেল, যে কয়দিন লোক সমক্ষে অভিনয় সব হিসাব করিয়া দেখা গেল আরও প্রায় কুড়িদিন আমাকে রাখিতে হয়। নানা বাগবিতওডা বচসা পরামর্শ করিয়া সকলের মুখপাত্রম্বূপ একটি অর্ধ প্রাচীন বাবু আমায় বলিলেন “আমরা সকলেই গরীব, দূরদেশে পেটের ধান্দা করি, বেশী অর্থবায় করিয়া আমাদের আমোদ করা কি সাজে, না শক্তি আমাদের আছে ? আমরা চাদা করিয়া এই অনুষ্ঠানটি করিয়াছি, সাহায্য করিবার মত বড়লোকও এ দেশে অধিক নাই, আপনাকে কিছু নিয়া আমাদের কাজটি চালাইয়া দিতে হইবে বিশেষ আপনি “গুণী” লোক, সঙ্গীতাদদির আনন্দের জন্তও ত ইহা আপনার করা উচিত-_কি বলেন? আমি। আমি কি বলিব? কি দিবেন তাহাত এখনও শুনিতে পাইলাম না । অনেক ইতস্ততঃ করিয়! বৃদ্ধবাবু বলিলেন, "্মহা- শয় আমরা কষ্টে সর্বসাকুল্য কুড়িদিনে একশত টাকা দিতে পারি, তাহাও অতিকষ্টে 1” আমি। মহাশয়, কলিকাতা হঈতে কোন লোক আনিতে হইলে পাচশত টাকার কমে হইত কি? বাবু। হইত না, সেই জন্য আনিও নাই। মহা- শয়, এ একশত টাকা লইয়াই স্বীকার করুন। আমি। বিশেষ ভাবিবার ভাণ করিয়া বলিলাম, দেড়শত টাকা দিবেন, তাহা হইলে স্বীকার করি। বৃদ্ধ রাজি নহে কিন্তু যুবকের দল উৎসাহে অধীর হইয়া পড়িয়াছে_ এতবড় “গুণী” লোক সহসা কি মেলে !! তাহারা বলিল, “মহাশয় দেড়শতই দিব--ন! হয় আপনাকে এই অতিরিক্ত টাকাটা! দিবার জন্য বিজনি, গৌরীপুর কোথাও গিয়া রাজধানীতে ভিক্ষা মাগিয়া এ টাকা সংগ্রহ করিবই । আপনি থাকুন মহা- শয়, এঁ দেড়শতই স্থির রহিল। আমি। আচ্ছা তাই হইবে তবে আমায় কিছু অশ্রিম দিতে হইবে-আমার বাসা খরচ চলা ত চাই। চাল ডাল কিনিব কি দিয়া? আর আজ নহে, দিন তিনেক পরে আমায় একটি দিনের ছুটি দিতে হইবে, একবার কামাথ্যা মাতাকে দর্শন করিয়া আসিব। একটি বিশেষ দিনে মার কাছে পুজা মানসিক আছে, সেটি স্বয়ং গিয়া দিতে হইবে। হিন্দুর সন্তান মানসিকের নামে ভয় পায়, সুতরাং ছুটি মঞ্জুর হইতে বিশেষ আপত্তি হইল না, কিন্তু অগ্রিম বেতনের কথায় আমার আশ্রয়দাতা বাবু বলিলেন, “সে কি মহাশয়, আপনার আবার বাসা খরচ কিসের? আপনি রণধিয়া খাইয়া আমাদের শিখাইবার সময় কখন পাইবেন? আমাদের ঘরেই আপনার এবং আপনার সঙ্গের লোকটির আহার হইতে পারিবে । আমরা গরীব বটে তবে ব্রাহ্মণকে ছুটি অন্ন দিতে কাতর হইব এমন পাষণ্ড আজও হই নাই। ফাস্তন, ১৩২২] শতি-স্মৃতি ১১৭ বাবুর অনদানের নিষ্ঠা দেখিয়া আনন্দিত হইলাম, কারণ নবীন শূদ্র- ধর্ম্ভয়ে তাহার স্পৃষ্ট অন আমায় দেয় না। সুতরাং “বিষুপুরী ভার” আমাকেই লইতে হয়। ও কার্যে পটু নহি তাহা আগেই বলিয়াছি। বাবুর নিকটে শ্বীকার করিলাম, “তাহাই হইবে ।” সে দিনের মত রিহার্সেল অন্তে সভা-ভঙ্গ হইল। দেড়শত টাকার বিনিময়ে তবলা এস্রাজ বাশা বাজাইতে, সীন টানিতে, প্রম্ট করিতে, ট্রেজ-ম্যানেজ করিতে, প্রয়োজন হইলে ছোটখাট পার্ট লইতে এব* সর্বোপরি মোশন মাষ্টারি সরিতে রাজি তহয়া সকলে বাসায় ফিরিলাম। রাত্রে শয়ন করিয়া নবীনকে সব কথা বলিলাম। সে ত অগ্নি অবতার । “কি ! বাজার ছেলে হইয়া টাকা নিয়া থিয়েটার করিবে এ দুর্বদ্ধি তোমার কেন হইল? এরূপ যর্দি কর তাহা হইলে তুমি কে এবং কি জন্ত এ দেশে আসিয়াছ সব কথা আমি বাবুকে বলিয়া দিব, তোমার কোন নিষেধ আমি শুনিব না।” আমি প্রমাণ গণিলাম_-বলিলাম, “দোহাই তোর নবীন, তুই মজাটা মাটি করে দিন্‌ না, আগি স্বাকার কারতেছি টাকা লইব না ।” নিতা এহ পরের পাতা মারা,সটা ক ভাল ৬৪০5০ে কর্তা-মা (আমার মাতা) শুনিলে কি খলবেন 7” আমি বলিলাম “নতুবা আমাকে রাধিতে হয় যেআনি যে রীধিতে জানি না তা ত তুই জানিস্‌।” নবীন। সেই জন্তই ত ঈশান দাদাকে সঙ্গে আনিতে বলিয়াছিলাম। আমি। যাহা হয় নাই সেজন্ত আর 'অগ্তুযোগ করিয়া কি হইবে? এই পরান গ্রহণের জঙ্ট না হয় বাড়ী গিয়া একটা 'প্রারশ্চন্ত করা যাইবে, কি বল নবীন? নবীন। রাজার ছেলে এমন করিয়া দেশে দেশে ফেরে এ কেবল রূপকথায় শোনা যায়, তুমি তাভা চক্ষে দেখাইলে যাহক্‌। এই বলিয়া সে রাগে গর্‌ গর. করিতে লাগিল-_ নবাঁন খলিগ, হা থেন তল, কন তাহাকে নানা কথা বলিয়া বুঝাইয়না তাহার রাগ শান্ত করিলাম এবং যথা-বিপি প্রায়শ্চিত্ত করিবই এই কথা বলিয়া তাহার সহিত সঙ্গি করিলাম_-নভুবা সে যি রাগিয়া সব কথা বলিয়া ফেলে তবে আমোদটা মাটি হয় যে। কয়েকদিন নিত্য নিঙ্া রিঠাসেলে যাই, এস্রাজে ছড়ি চালাইয়া তাঙাকে কাদাইয়া ঠচলি, বাণীর মধো দু দিয়া ৬য়রান্‌ হইয়া পড়ি, প্র্উ করি এবং আক্শান মোশন শিখাইবার ছলে 'অতগ্চণি ভদ সন্তানের উপর কন করি-আমার নিঃসঙ্গ এবং নিন্ম দিনগুলি কোন প্রকারে ভরপুর হইয়া থাকে । দিন আমার বেশ কাটিতে লাগিল কেবল মধ্যে মধো নবীনের অ প্রসন্ন মুখ এবং শাসানি আমাকে কাতর করিয়া তুলিত, আমি নান স্তোক-বাকো তাহার সঙ্গে সন্ধি করিয়া লইতাম। এক রবিবারে বশিষ্টাশ্রম দেখিবার কুজুগ তুলিয়! দিলাম, পাঁচ ছয়টি বাবু আমার সঙ্গী হইলেন__বল৷ বাহুলা যে গাড়ী ভাড়া তাহাদেরই স্কন্ধে তাহার! স্বেচ্ছায় ভুলিয়া লইলেন। সেখানের আহারাদির ভার আমি বণিপাম যে, সে দিনটি আমার প্রমাতা- মতে শাকের পিন, সেদিনে প্রাঙ্গণ ভোজন করাইলে পথা সঞ্চয় হহবে, মেই জন্ত চাকর হইয়াও তাহাদিগকে নিমন্ধণ খগরবার সাহস পাইতেছি। আমার বিনযে বাবুর পল সগ্ঘ& মনে নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিলেন পুণ্য- ভূমিতে পরা গহণ করিব না জানিয়া নবীনের মুখ নবীন প্রভাতের মতই প্রসন্ন হইয়া উঠিল। বশিঠাশম গোহাটি সহর হইতে কিয়দরে__ পূণাদুমিতে পুছিবার কিছু পূর্বেই নির্ঝরের কলবঙ্কার শোনা যায়-আজ আর সেখানে ব্রঙ্গধির তপঃকুটার না, উটজ-প্রাণে আজ আর হোমধেন্থু বিচরণ করিয়া বেড়ার না, মগ্তরাণী গায়্রীর তুষ্টি কামনায় সেখানে খষি- মু্তি আজ ধ্যানস্ত হইয়া বসিয়া নাই, অরুত্ধতীর সেবা- হস্তের পরিচরধ্যায় আশ্রম-অতিথির পথর্লেশ আজ দূর হয় না, কিন্ত খবষিশ্রেষ্ঠের তপোমাহাত্মো সে বনভূমি আজগ পরম মহিমায় মগ্ডিত হইয়া বসিয়া আছে) বৃক্ষ লইগাম । ১১৮ মানসী?ও মন্্বাণী [৮ম বর্ষ--১ম খও্--১ম সংখ্যা বল্পরীর তেমঙ্ঈী হরিতদ্যুতি, শম্পত্তীর্ণ ভূখণ্ডের তেমন কোমলতা, নির্ঝরের কলকণ্ঠের তেমন মাধুর্য আর কোথাও দেখিয়াছি বলিয়া আজ মনে পড়ে না। সমস্ত দিন সেখানে থাকা গেল, সকলে মিলিয়া রন্ধনাদি কোন মতে শেষ হইল, আহারান্তে কিছুক্ষণ বিশ্বাম করিতে করিতে এস্রাজের সহিত কসঙ্গীতের চচ্চা চলিল__বল! বাহুলা যে উহাও সেই অভিনয়ের অঙ্গীয় সঙ্গীত-__ইহাও সেই রিহা- সেঁলেরই অক্গ-_-বন-ভোজনের আনন্দের মধ্যেও প্রতুভৃতা সম্পর্কটা বজায় রহিয়াই গেল-_ও সম্বন্ধ- টাই ভাল নয়। যে নির্ধারিত দিনে আমাকে কামাখ্যা পাহাড়ে যাইতে হইবে সে দিন আসিল, আমি আমার মুনিব সঙ্ঘের নিকট একদিনের বিদায় লইয়া যাত্রার উদ্চোগে প্রবৃত্ত হইলাম। ইতিপুর্বে একজন পাণ্ডা স্থির কবিয়াছিলাম, সে কহিল পর্বতারোহণের পুর্বে উমানন্দ ভৈরবের দর্শন এবং পুজা শেষ করিতে হইবে। উমানন্দ নির্জন দ্বীপে আনন্দমগ্ন হইয়া বসিয়া আছেন, তীভার দরবারে ভাজির! দিতে পারের কড়ি দিয়া নৌকায় পার হইতে হয়-_-যদিও ইহা বৈত- রণী নহে তথাপি সেখানের নৌকার গঠন-প্রণালী এবং তরণী বাহিবার পদ্ধতি দেখিলে ইহাকে বৈতরণীর দ্বার বলিলেও অত্যুক্তি হইবে না। একটি তালবুক্ষের ডোঙা__ তাহাতে উঠিতে নামিতেই বিপর্যস্ত হইয়া! যাইবে এ আশঙ্কা প্রতিনিয়তই হয়, কোন প্রকারে মাঝি এবং পাণ্ডার গলা জড়াইয়া (তবুও একটি ভাল মানুষ মিলিল না) নৌকায় চড়িয়া বসিলাম। এ্রতিকূল শ্রোতে নৌকা বাহিয়া ছুই রশি স্থান যাইতে প্রয়ি ছুই ঘণ্টা লাগিল। মাঝি যখন প্রতিকুলের আজোতে নৌকা ঠেলিয়াশ্রান্ত হয়, তখন আমি তাহাকে সাহাধ্য করি-_এইরূপে বহুশ্রমে উমানন্দের আনন্দ ভবনের দ্বারে গিয়া উপস্থিত হইলাম । উজান আ্োতে চলিয়া বড় শ্রাস্তই হইয়াছিলাম, উমানন্দের পদতলে অনেক মিনতি করিয়া সে দিন বলিয়াছিলাম, «প্রভু, উজান বাহিয়া আর যেন চলিতে না হয় ।৮_ বিশ্ব- বশিষ্ঠাশ্রম। ভূবনের ঈশ্বরের দ্বারে আমার মিনতি পুছিবে, এমন পুণাকি আমি করিয়াছি? থাক্‌ সে কথা। সেখান তইতে পুজা দিয়া হরিশ্ন্রের নির্মিত পার্কত্য-পথে মাহামায়ার মন্দিরের দিকে ধীরে ধীরে চলিলাম। পর্বতারোহণে শ্রম আছে, কিন্তু আসাম প্রদেশের আশ্বিন মাস আমাদের সমতলক্ষেত্রের আশ্বিন অপেক্ষা ঠাণ্ডা । শ্রাস্ত হইয়া পথে অল্পক্ষণ দীড়াইলেই শীতল বাতাসে শরীর জুড়াইয়া যাঁয়। এইরূপ বিশ্রাম করিতে করিতে পার্কত্য-পথ শেষ হইয়া গেল। পরে সমতলক্ষেত্র পাইয়া হাফ ছাড়িলাম। পাণ্ডার ইচ্ছা! সে দিন তাহার বাড়ীতে বিশ্রাম .করিয়া পরদিন প্রভাতে মহামায়ার দর্শনে যাই। আমার কিন্তু বিলম্ব সহ হইতেছিল না । আমি তাহাকে পূজার আয়োজন শীপ্র করিতে বলিয়! মন্দির বারে এক বৃক্ষতলে বসিলাম। বহু দিনের অভিলাষ ছিল, ফাল্গুন, ১৩২২ ] পৃথিবীর পুরাবৃত্ত ১১৯ কামরূপ ভূমি দেখিব, সেই অভিলধিত দেব- ধানীতে,দাক্ষায়ণীয় প্রত্যঙ্ স্পর্শ জনিত পুণ্যপীঠে বসিয়া মহাকালের মহা- বিরহের ঃখ-তাগুৰ আমার মনের মধ্যে জাগিয়া উঠিল। ভাবি- লাম মহাবিবেকী মহা- কাল ধর্দি অত ব্যাকুল তইয়া থাকেন, তবে মর্তোর মানব যে প্রিয়- বিরহে পাগল হইয়! দেশছাড়া, ঘরছাড়া,লক্ষমী- ছাড়া হইবে, প্রতি কামাখ্যাদেবীর মন্দির | পাদক্ষেপে যে মরণের দিকে ছুটিয়া চলিবে সে কি হতি লাভ করিয়াছেন। মর্ত্যমানবের ছর্দশার কথা আশ্চর্যের বিষয়? মহেশ্বর ত অদ্ধনারীশ্বর হইয়া কি অন্তর্ধযামী দেবতার কখনও মনে পড়ে না? চিরদিনের জন্ত বিরহ-বিচ্ছেদের হাত হইতে অবা- ক্রমশঃ শ্রীজগদিন্দ্রনাণ রায় । পৃথিবীর পরা বুত্ত* *. প্রথম এ 9 প্রথম অধায় প্ুখিবীল উদৎ্পাস্তি মাজ আমরা আমাদের “ধনধান্ত পুম্পভরা বস্থ- স্ধরা”্র মাড়মুদ্ির সঙ্গে এত নিবিড়ভাবে পরিচিত যে, কখনও যে আমাদের এই ণজগৎ” জননীর আবার শৈশব, কৈশোর বা যৌবন্গাবস্থা ছিল, তাহ] সহজে আমাদের কল্পনাতেও আসে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে চিরদিন তাহার এ মুস্তি ছিল না। * বিমানচারী নীহারিকালোকে তাহার জন্ম, প্রবল কম্প আন্দোলন এবং শ্রীতাতপের মধ্যে তাহার বৃদ্ধি, এবং লক্ষ লক্ষ বৎসরের পরিবর্তনের ফলে, তাহার বর্তমান অবস্থায় পরিণতি ! র্‌ * চৈতন্য লাইব্রেরী হইতে ''বিশ্বস্তর সেন” পারিতোধিক- লর্ড কেলভিন। »॥ প্রাপ্ত অবন্ধ। ১২০ মানসী ও মন্দ্বাণী [৮ম বর্ষ__১ম থণ্ত--১ম সংখ্যা পৃথিবীরফ্লীবনের এই ক্রম- বিকাশের ইতিহাসই আমাদের বর্তমান গ্রগ্থের আলোচা । আজি পর্যান্ত আবিষ্কত বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তের সাাফো আমরা সরল- ভাবে এই কথার আলোচনা করিবার চেষ্টা করিব। [ নীহারিকাবাদ ] পৃথিবী যে মাদিম দৃগে অস্রীক্ষচারী নিহারিকাম গুণ হইতে জন্মলাভ করিয়াছিল, এ খিষয়ে সাক্ষা ও প্রমাণের অভাব লাই । নীহা- বিকার প্রকৃতি এবং বিশেষত্বের সঙ্গে পৃথিবীর প্রকৃতির তুণনা করিলেই একথার যাথার্থয উপলব্ধ নীহারিকা (ক্র, আকৃতি) হইবে। কারী গ্রহ ও উপগ্রহের সমষ্টি লইয়াই, এক একটি সৌরজগৎ গঠিত। অনন্ত বিস্তৃত বিশ্বজগতের দিকে লক্ষ্য করিলে দেখা যায় যে, 'এক একটি সূর্য্য এবং তাহার প্রদক্ষিণ- ঠ এই সকল সৌরজগতের অন্তর্গত গ্রহ এবং উপ- গ্রহগুলি এক একটি বিশেষ নিয়মাধীন। প্রতোক সৌর- জগতের গ্রহ এবং উপগ্রহ গুলি ধরায় একই সমতলে অবস্থিত থাকিয়া, একই মুখে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করিতেছে । একটু দীরভাবে এই বিশেষত্ব সম্বন্ধে আলোচনা করিলে স্পষ্ট বুঝা যাইবে যে, এই সকল সৌর- জগতের অন্তর্গত গ্রহ এবং উপগ্রহমগ্লী যদি কোন সময়ে একই বৃহত্বর এবং বিস্তীর্ণ তর পদার্থবিশেষের অন্ততূ্ত না থাকিত, তাহা হুইলে এই সকল গ্রহ এবং উপগ্রতেকর নীহারিকা ( অঙ্নুরীয়!কুতি ) ফাল্গুন, ১৩২২) আবর্তন প্রণালীর কখনই এ প্রকার বিশেষত্ব দেখ যাইত না। | পরীক্ষা স্বরূপে একটি সিক্তবন্ত্র গোলককে তাহার অক্ষদণ্ডের উপর ক্রুতবেগে থুরাইয়া দেখিলেই এ কথার যাথার্থ্য বুঝা বাইবে। বজ্রগোলক ঘুরিতে ' আরম্ত করিলেই দেখা যাইবে যে, বন্ত্রগোলক যেদিকে ঘুরিতেছে তাহা হইতে নিঃস্থত জলকপিকাগুলিও তাহার সহিত একই সমতলে থাকিয়া, সেই দিকেই ঘুরিবার চেষ্টা করিতেছে । সুতরাং সৌরজগতভুক্ত সুর্য এবং গ্রহ উপগ্রহাদি, যদি কোন সময়ে একই সামগ্রীর অন্তর্গত না থাকিত, তাহা হইলে তাহাদের পক্ষে এইরূপ নিয়ম রক্ষা করিয়া, একই অভিমুখে ঘুরা সম্ভবপর হইত না। সুতরাং ইহা হইতে সহজেই অনুমাণ করা যায় যে, আমাদের পৃথিবীও এক সময়ে সৌরজগততভুক্ত অন্ঠান্য গ্রহ উপগ্রহাদির সঙ্গে একই বিস্তীর্ঘতর ও সুস্্তর সামগ্রী- বিশেষের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সামগ্রী কি, সে সম্বন্ধে মনীষিবৃন্দ আলোচনার ক্রুটা করেন নাই। [ নীহারিকা ] আমরা আকাশের স্থানে স্থানে শ্বেত- বর্ণ ধুমের স্যার অথবা! শুত্র মেঘখণ্ডের ন্যায় যে জ্যোতিষ্ষ- মণ্ডলী দেখিতে পাই তাহাদের নীহারিকা কহে। বৈজ্ঞানিকমণ্ডলীর মতে এই নীহারিকাই সৌরজগত স্থষ্টির উপাদান কারণ। এই নীহারিকামণ্ডলী সংখ্যায় যেমন অনন্ত আকারেও তেমনি বিচিত্র। শক্তিশালী দুরবীক্ষণের সাহায্যে আকাশে প্রায় পাঁচ লক্ষ নীহারিকা দেখা যায়। ইহাদ্দের মধ্যে কতকগুলি অস্গুরীয়াকৃতি কতকগুলি ক্ষীণ ছটামণ্ডিত খালার ন্যায়, কতকগুলি বিষমাকৃতি এবং কতকগুলি আবার জ্কুর প্যাচের মত। ' নীহারিকার সর্বাঙ্গের ঘনতা সমান নহে। ইহার দেহের স্থানে স্থানে ঘনতর এবং উজ্জলতর অংশ ল্ক্ষিত হয়। সম্ভবতঃ উদ্তরকালে এই ঘনতর অংশগুলি গ্রহে এবং উজ্জ্লতর অংশগুলি হৃর্য্যে পরিণত হয়। _ ষে নীহারিকা হইতে আমাদের পৃথিবী উৎপন্ন ১৬ পৃথিবীর পুরাবৃত্ ১২১ হুইয়াছে-_তাহার প্রক্কৃতি ঠিক কিরূপ ছিল সে সমন্ধে বৈজ্ঞানিক মণ্ডলীর মধ্যে এখনও মতভেদ আছে। লর্ড রস্‌ (750 £:০88) তাহার দুরবীক্ষণের সাহাষ্যে প্রথমে নিণর় করেন যে নীহারিকামণ্ডলী পু্তীভৃত নক্ষত্রসমন্টি মাত্র। লর্ড রসের এই আবিষ্ষারের পর অনেকেই মনে করিয়াছিলেন যে উপযুক্ত পর্যবেক্ষণের ফলে অব- শেষে সমস্ত নীহারিকাই নক্ষত্রপুঞ্জ বলিয়া প্রতিপন্ন হইবে । কিন্তু কিছুকাল পরে সার উইলিয়াম হগিন্স (8 চ111150) [70£8108) নীহারিকার আলোক বিশ্লেষণ করিয়া দেখাইলেন যে নক্ষত্রপু্জরূপী নীহারিকা ব্যতীত সম্পূর্ণ বিভিন্ন উপাদানে গঠিত নীারিকামগুলীও বিশ্বজগতে বিদ্যমান । সকলেই; দেখিয়া থাকিবেন যে কীচের ঝাড়ের ত্রিকোণাকৃতি দোলকের মধ্য দিয়! দেখিলে নানা বর্ণের আলোক দেখা যায়। কৃর্যযালোক এই দোলকের মধ্য দিয়া যাইবার সময়ে বিশ্রিষ্ট হওয়াতেই এইরূপ নানা বর্ণের আলোক উৎপন্ন হইয়া থাকে । এইরূপ দোলকাকৃতি কাচের সাহায্যে একরূপ যন্ত্র নির্মিত হইয়া থাকে । তাহাকে আলোকবিঙ্লেষক যন্ত্র (57901508009: ) বলে; এবং এই যন্ত্রের সাহায্যে যে নানা বর্ণের আলোক দেখা যায় তাহাকে বর্ণচ্ছত্র (8060120700৭) বলে । আলোক বিশ্লেষক যন্ত্রের সাহায্যে সাধারধতঃ তিন প্রকারের বর্ণচ্ছত্র'দেখা যায়-_ ১। নিরবচ্ছিন্ন বণচ্ছিত্র (6073600008 ৪080200) যে বর্ণচ্ছত্রে নীল হইতে লোহিত পর্যাস্ত সপ্ত প্রকার বর্ণই অবিচ্ছিন্ন ভাবে পাশাপাশি বিদ্ধমান থাকে তাহাকে “নিরবচ্ছিন্ন বর্ণচ্ছত্র, কছে। প্রজ্জ্বলিত কঠিন, তরল বা ঘন বাম্পের এইরূপ বর্ণচ্ছত্র দেখা যায় । রী “২ উজ্জল-রেখাচিছিত বরকত (81185 1095 ৭8০৮700-) | যে ব্চ্ছিত্রের মধ্যে মধ্যে সারি সারি উজ্জ্বল রেখা থাকে তাহাকে উজ্জ্বল 'রেখাচিহিত বর্চ্ছাত্রত কছে। ' প্রজ্জলিত লুঙ্্ম বাপের এইন্প বর্ণজ্ঞত্র দেখা! যায়। * প্রতোক রাসায়নিক মূল পদার্থের রেখ! ভিন্ন প্রক1; ১২২ রের হইয়া থাকে সুতরাং এইরূপ বর্ণচ্ছত্রের সাহায্যে কোন পদার্থের রাসায়মিক প্রকৃতি সহজেই নির্গত হইতে পারে। ৩। কৃষ্ণরেখাচিহ্নিত বর্ণচ্ছত্র (10811 110 ৪0৫০- চা )। যে বর্ণচ্ছত্রের মধ্যে মধ্যে কৃষ্ণবর্ণের অবকাশ দেখা যায় তাহাকে কৃষ্ণরেখা চিহ্নিত বর্ণচ্ছত্র কহে। যেস্থলে কোন উজ্জ্বল পদার্থের চারিদিকে এমন কোন পরিবেষ্টন থাকে যাহা উক্ত পদার্থনিঃস্থত আলোকের কি্বদংশ শোষণ করিয়! লইতে সমর্থ সেই স্থলে এইরূপ বর্ণচ্ছত্র দেখিতে পাওয়! যায়। সুর্য্যের বর্ণচ্ছত্র এই প্রকারের ব্ণচ্ছত্র। হুর্য্যের মধ্যদেশ যেরূপ প্রজ্জলিত এবং ঘনীভূত বাম্পগঠিত, তাহাতে সুর্য্যের বর্ণচ্ছত্র .নিরবচ্ছিন্ন বর্ণচ্ছত্র হইবারই কথা । কিন্তু হুর্য্যের চারিদিকে যে আবেষ্টন আছে তাহা হুর্ধ্যালোকের কিয়দংশ শোষণ করিয়া লওয়াতেই সুর্যের বর্ণচ্ছত্র নিরবচ্ছিন্ন না হইয়া কৃষ্ণরেথা- চিহ্নিত হইয়া থাকে । নীহারিকার আলোক অত্যন্ত ক্ষীণ হইলেও সার উইলিয়ম হগিল্স ১৮৬৪ সালে সর্ধপ্রথমে আবিষ্কার করেন যে নীহারিকার বর্ণচ্ছত্র উজ্জ্রল-রেখাচিহ্নিত। ইহা! হইতে অনুমিত হয় যে নীহারিকাগুলি প্রজ্জ- লিত সু্্ম বাম্পগঠিত ৷ বহুদিন পূর্বে ( ১৭৯৬ খ্রীষ্টাব্দে ) সুপ্রসিদ্ধ ফরাসী জ্যোতির্বিৎ লাপ্লেসও (1,2018০০) ঠিক এইরূপ অনুমান করিয়াছিলেন। বর্ণচ্ছত্রস্থিত উজ্জ্বল রেখাগুলির প্রকৃতি পর্যালোচনা করিয়া হঠ্িত্স সিদ্ধান্ত করেন যে. নীহারিকাগুলি প্রধানতঃ অজ্ঞাত গ্যাস নেবুলিয়াম (3৪৪1০) ছাইডে?- জেন (1758.0897) এবং ভুশ্রাপ্য গ্যাস হেলিয়াম (৪৪170) নির্দিত। | পরবর্তীকালে সুক্মতর পরীক্ষার ফলে প্রমাণিত হয় যে নীহারিকামগুলী ছই শ্রেণীতে বিভক্ত ইহাদের এক- ' শ্রেনীর বণচছত্র পূর্বোক্ত প্রকারের উজ্দর-লরেখা চিহ্নিত - এবং অপর শ্রেণীর বণচ্ছত্র রুষ্চরেখা চিহ্নিত। মানসী ও মর্ঘবাণী [৮ম বর্-_-১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা পূর্বোজ্জ শ্রেণীর নীহারিকার সংখ্যা শতাধিক নছে অধিকাংশ ন'হারিকাই শেষোক্ত শ্রেণীর অন্তর্গত। স্থতরাং পূর্বোক্ত শ্রেণীর নীহারিকা প্রজ্জলিত নুষ্ষ- বা্পগঠিত হইলেও অধিকাংশ নীহারিকারই উপাদান সূর্য্য এবং সাধারণ নক্ষত্রের অন্ুরূপ। মুতরাং এই সকল নীহারিকার বহিরাবরণ তাহাদের মধাবর্ভী উপা- দান অপেক্ষা শীতলতর । যে অন্পসংখ্যক নীহারিকার উজ্জ্বলরেখা চিহ্নিত বর্ণচ্ছত্র দেখা যায়, সম্ভবতঃ তাহাদের চারিদিকে একটা অতুষ্চ বাম্পের আবেষ্টন থাকাতেই এরূপ ঘটিয়া থাকে । এই বাম্প শীতল হইলে ইহাদের বর্ণচ্ছত্রও সাধারণ নীহারিকার বর্ণচ্ছত্রেরে মত কৃষ্ণরেখা চিহ্নিত হওয়া! অসম্ভব নছে। [ উক্কাবাদ ] লর্ড কেলভিনের (1.0: [6112) মতে নীহারিকা'র বাম্পরাশি দাধারণ বায়ু অপেক্ষা দশলক্ষগুণ হুক্মতর | সুতরাং নীহারিকাবাদের বিরুদ্ধে প্রধান আপত্তি এই যে এত স্থক্ম বাষ্প কিরূপে এতকাল কেবল নিজের উত্তাপে প্রজ্জলিত অবস্থায় থাকিতে পারে তাহা বুঝা যায় না । এরপ সুক্ষ পদার্থের তাপ অতি শীস্রই বিকীর্ণ হইয়া যাইবার কথা । সুতরাং অল্পকালের মধ্যেই এই সকল নীহারিকার সম্পূর্ণ শীতল হইয়! যাইবার সম্ভাবন!। সার নরম্যান লক্ইয়ার (তি 0710 1,০0809 ) প্রবন্তিত উল্লাাদ এই আপত্তির খণ্ডনে সমর্থ হইয়াছে। সার নরম্যান লকৃইয়ার এবং তাহার অনুগামী শিকাগোর অধ্যাপক টি সি চেম্বাধিন সাহেবের (গা 0 01285008100 ) মতে নীহারিকামগুলী প্রজ্ছলিত বাম্পু গঠিত নহে, ইহার! অসংখ্য কঠিন উ্কাপিত্ডের সমষ্টিমাত্র। রাত্রে মেধহীন, আকাশে মাঝে মাঝে যে “তারাখসা” দেখা যায়, উত্কা বলিতে তাহাদেরই বুঝায় । উক্কাপিও সাধারণতঃ শীতল ,এবং আলোকহীন। ঘুরিড়ে ঘুরিতে যখন ইহার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে আসিয়া পড়ে তখনই. ইহার বায়ুর সহিত সংঘর্ষবশতঃ প্রদীপ্ত হইয়া! উঠে এবং চূর্ণ বিচূর্ণ হইয়া যায়। এইজন্য আমরা ক্ষণেকের জন্য ইছাদিগকে প্রজ্ৰলিত' ধুলিরূপে ফাল্গুন, ১৩২২ ] পৃথিধা'র পুরাবৃত্ত ১২৩ দেখিতে. পাই। ইহাই আমাদের সুপরিচিত “তারা খসা” বা “নক্ষত্রপাত 1৮ নীহারিকার মধ্যস্থিত উক্ধারাশিও এই কারণে পরস্পরের সহিত সংঘর্ষের ফলে অত্যুষ্ণ হইয়া উঠে এবং ক্রমাগত জলম্ত বাম্পরাশি উৎপন্ন করিতে থাকে । এই জন্যই উক্কানির্শিত নীহারিকাঁকে এমন উজ্জ্বল ও বাম্প- ময় দেখায়। ক্কিস্ত উ্কাবাদের দ্বারা নীহারিকার তাপরক্ষাসম- স্যার সমাধান হইলেও উক্কাবাদের বিরুদ্ধেও এক প্রকারের আপত্তি উত্থাপিত হইতে পারে । আলোক- বিশ্লেষক যন্ত্রের সাহায্যে নীহারিকার যে রাসায়নিক উপাদান নির্ণীত হয়, উক্কার রাসায়নিক উপাদানের সঙ্গে তাহার সমত্ব লক্ষিত হয় না। উক্কার বর্ণচ্ছঞ্র হইতে লৌহ, নিকেল, ম্যাগ্নিসিয়ম, কার্ধন এবং কার্ধনজাত নানা যৌগিক পদার্থের অস্তিত্ব, অনুমিত হয়, কিন্তু নীহারিকার বণচ্ছত্রে এ সকল পদার্থের কিছুমাত্র চিহ্ন দেখা যায় না। সুতরাং আলোকবিশ্লেষক যন্ত্রের উপর নির্ভর করিলে উল্কা ও নীহারিকাকে এক প্রকৃতির পদার্থ বলিয়া স্বীকার করা চলে না। কাজেই নীহারিকা যে উক্কারাশিরই সমষ্টিমাত্র এ মত টিকে না। কিন্তু একটু ধীর ভাবে আলোচনা করিলে দেখা যায় যে বর্ণচ্ছত্র হইতে বস্তর উপাদান নির্ণয়ের উপর তত বেশী নিভভর করা চলে না। উদাহরণ স্বরূপ দেখান যাইতে পারে যে অধিকাংশ পণ্ডিতেরই মতে ধুমকেতু এবং উদ্ধার উপাদ্দান যে একই প্রকারের এ সম্বন্ধে সন্দেহের অবসর অল্পই আছে। অথচ ইহাদের বর্ণচ্ছত্র সম্পূর্ণ বিভিন্ন প্রকারের । ধূম- কেতুর উপাদান মধ্যে যে নানা প্রকারের ধাতু বিদ্যমান আছে তাহাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু ইহার বর্ণচ্ছত্রে এই সকল ধাতুর অন্তিত্বের কিছুমাত্র আভাস পাওয়া যায় না। সুতরাং নীহারিকা উন্কারাশির সমষ্টি হইলেও আলোকের অব্পতার জন্য ইহার বণচ্ছিত্রে উল্কা অন্তিত্বের চিষ্ক না পাওয়া নিতান্ত বিচিত্র নহে। সুতরাং উন্কাবাদের বিরুদ্ধে যে আপত্তি উত্থাপিত হইয়া থাকে তাহা একেবারে অথগুনীয় নহে। [ পৃথিবীর উৎপত্তি ] কিন্তু তথাপি আমাদের পৃথিবী যে উক্কাময়ী নীহারিকা হইতেই উৎপন্ন হইয়াছে এ সম্বন্ধে আর একটি আপত্তি রহিয়া যায়। নীহারিকার মধ্যে ষে নকল উক্কারাশি থাকে তাহার! গরম্পর হইতে পৃথক ও বিচ্ছিন্ন । সুতরাং এই সকল বিচ্ছিন্ন উক্কারাশি কেমন করিয়া পরস্পরের সঙ্গে জমাট বাধিয্না যে এক একটা গ্রহে পরিণত হয় তাহা ভাল করিয়া বুঝা যায় না। সৌরজগতের উপাদান রাশি শূন্যদেশে সমানভাবে বিকার্ণ হইয়া আছে যদি একথা সত্য হয় তাহা হইলে এই উপাদানগুলি কেবল স্থানে স্থানেই কেন যে জমাট বীধিয়া উঠে এবং অন্যন্র তাহাদের কোনই চিহ্ন দেখা যায় না__ইহার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজিয়া পাওয়া যায় না । এই সমস্তার ব্যাখা! করিতে গিয়া পণ্ডিতেরা বলিয়া থাকেন যে বিমানবিহারী উক্কারাশি দুইভাগে বিভক্তঃ-_ এক দল সংঘতভাবে নিজ নিজ নির্দিষ্ট কক্ষায় থাকিয়া সূর্যাকে প্রদক্ষিণ করিয়া থাকে এবং অপর দল ক্ষিপ্তের মত উচ্ছঙ্খলভাবে ধদৃচ্ছা! আকাশমার্গে পরিভ্রমণ করিয়া থাকে । পুর্যোক্ত উক্ধাকে পণ্ডিতের “গ্রহাণু” আখা! দিয়া থাকেন। অধ্যাপক চেম্বালিনের মতে এই গ্রহাণুদের সাহাযোই এভোতপঞ্জি সম্ভব__-মপর শ্রেণীর উল্ধার দ্বারা গ্রহনিম্মীণ সম্ভব নহে। কারণ তাহাদের মধ্যে পরস্পরের সঙ্গে মিলনের সম্ভাবনা বিরল। গ্রাণুর! যে নির্দি কক্ষায় সূর্যকে প্রদক্ষিণ করিতে থাকে সে কক্ষাও সময়ে সময়ে ইতস্ততঃ সরিয় যায়। এই কারণে প্রত্যেক গ্রহাণুরই কখনও না কখন অপর গ্রাণুর কক্ষার মধ্যে আসিয়া পড়িবার সম্ভাবনা ঘটে। এইরূপ নিকটবর্তিতার ফলে তাহাদের পরস্পরের সহিত মিলনের যথেষ্ট সুযোগ ঘটে। এইকপে ক্রমশঃ কতকগুলি উক্কা মিলিয়৷ একটা বৃহৎ উদ্ধার স্থষ্টি করে। এবং অবশেষে অসংখ্য উদ্ধার মিলনের ফলে একটা গ্রহের উৎপত্তি হয়। এবং এই নবজাত গ্রহ তাহার অন্তর্গত উক্কারাশি যে সমতলে থাকিয়া যে অভিমুখে ৃ্য্যকে প্রদক্ষিণ করিতেছিল, ঠিক সেই সমতলে এবং সেই অভিমুখেই নুর্য্যকে প্রদক্ষিণ করিতে প্রবৃত্ত হয়। সুতরাং আমাদের নিবাসভৃত! বন্থুম্ধরাও যে এই উপায়েই উক্কাময়ী নীহারিক! হইতে উৎপন্ন হইয়াছে তাহাতে সন্দেহ নাই। পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস যতটুকু জানিতে পারা যায়, তাহা হইতেও এই কথাই প্রতিপন্ন হয়। আমর! পরবর্তী অধ্যায়ে সেই কথার আলোচনায় প্রবৃত্ব হইব। ক্রমশঃ শ্রীধতীন্দ্রমোহন গুণ্ড। * ১২৪ মানসী ও মর্দবাণী [৮ম বর্ষ--১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা যাছুকরী কে আমি? কুস্তলে মোর ঝলকিছে স্বর্ণ-প্রজ্াপতি ! কনককঙ্কণ বাজে ছুই ভূজে, কটিতে কিন্কিণী! অধরে ঝরিছে সুধা, ছুচরণে মুখর শিঞ্জিনী গিরিনির্ঝরিণী লম বঙ্কারিছে ! ছন্দ আর যতি লীলাফ্মিত প্রতি অঙ্গে__উচ্ছ,সিত তরঙ্গিত গতি! ছিন্ু সুপ্তা নিশুতির শাস্তগৃহে--করি রিণি রিণি, কোন্‌ গুণী জাগাইল ? জাগিলাম বিচিত্র রাগিণী রূপ ধরি! শব্দে রূপে একি মিল! মোহিনী মূরতি ! সনেটরূপসী আমি,__-অপরূপ মায়ার মুকুর, করে যাহে ঢল ঢল উপমার রক্তকমলিনী ! কি আসব, কি সৌরভ অঙ্গে সদা করে তুর্‌ তুর শুনিছ না ? চারিধারে মধুকর গাইছে সোহিনী ! কবিচিন্ত রত্বাগারে স্পর্শমণি- চতুর্দশ পলে ভরি দিনু হিয়৷ তব আনন্দের উৎপলে উৎপলে ! শ্রীদেবেন্দ্রনাথ সেন। মাসিক-সাহিত্য সমালোচনা | সবুজ পত্র, পৌষ-_ রবীন্দ্রনাথ “শিক্ষার বাহন” প্রবন্ধে একটি সাময়িক সমস্যার মীমাংসা করিতে চাহিয়াছেন। তিনি বলেন__ “আধুনিক শিক্ষা তার বাহন পায় নাই-__তার চলাফেরার পথ খোলসা হইতেছে না। এখনকার দিনে সার্ববজনীন শিক্ষা সকল সভ্য দেশেই মানিয়া লওয়া হুইয়াছে। যে কারণেই হউক আমাদের দেশে এটা চলিল না। & * * তার উপরে আবার আর এক উপসর্গ জুটিয়াছে। একদিকে আসবাব বাড়াইয়৷ অন্য দিকে স্থান কমাইয়া আমাদের সক্কীর্ণ উচ্চশিক্ষার আয়তনকে আরে! সঙ্কীণ করা হইতেছে ।" এই ত দেশের শিক্ষার অবস্থাঁ। লেখক বলেন, *বিদ্যা- বিস্তারের কথাটা যখন ঠিকমত মন দিয়া দেখি তখন তার সর্বব- ' প্রধান বাধাটা এই দেখিতে পাঁই যে তার বাহনটা ইংরেজি ।” * স্কুল কলেজ .এমন কি বাহিরেও ঘে সব লোকশিক্ষার ইহাতে দেশে শিক্ষা বিস্তার হয় ন1। ইংরেজি আমাদের শিখিতেই হইবে । “সেই সঙ্গে একথা বলাও বাছল্য অধিকাংশ বাঙ্গালী ইংরেজী শিখিবে না। সেই লক্ষ লক্ষ বাংলাভাষীদের জন্য বিদ্যার অনশন কিন্বা অদ্ধাশনই ব্যবস্থা একথা কোন মুখে বলা যায়।” “আজকাল বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একজামিন পাশের কুত্তির আখড়া নয়। এখন বিদেশ হইতে বড় বড় অধ্যাপকের! আসিয়। উপদেশ দিতেছেন।--এবং আমাদের দেশের মনীধীদেরও এখানে আসন পড়িতেছে। এই নূতন বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাটাকে যদি সমস্ত বাঙালীর জিনিস করিয়া তোল! যায় ভাতে বাধা কি সে লেখক বলেন, “এমনি করিয়া বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি এবং বাংলা ভাষার ধারা যদি গঙ্গাধমুনার মত মিলিয়। ঘায়, তবে বাঙালী শিক্ষার্থীর পক্ষে এটা একটা তীর্থস্থান হইবে । ছুই আয়োজন করা হুইয়াছে, সেখানেও বাংলা ভাষার প্রবেশ নিষেধ। , শ্রোতের সাদা এবং কালে! বিভাগ থাকিবে বটে, কিন্ত তারা ফাল্তন, ১৩২২ ] মাসিক-সাহিত্য সমালোচনা ১২৫ এক সঙ্গে বহিয়া চলিবে । ইহাতেই দেশের শিক্ষার যথার্থ বিস্তীর্ণ হইবে, গভীর হইবে, সত্য হইয়া উঠিবে।” লেখক অন্ঠত্র বলিয়াছেন, “ভালোমত ইংরেজি শিখিতে পারিল না এমন ঢের ঢের ভালো ছেলে বাংলাদেশে আছে। তাদের শিখিবার আকাক্ষা ও উদ্যঘকে একেবারে গোড়ার দিকেই আটক করিয়া দিয়া দেশের শক্তির কি প্রভূত অপব্যয় করা হইতেছে না?” লেখক বাংলা ভাষার যোগে উচ্চশিক্ষা দিবার পঙক্ষপার্তী। প্রশ্ন হইতে পারে বাংলা ভাষায় উচুদরের শিক্ষাগ্রস্থ কই? লেখক বলিবেন, “নাই সে কথ! মানি, কিন্তু শিক্ষা না চলিলে শিক্ষার্রস্থ হয় কি উপায়ে? বাংলায় উচ্চ অঙ্গের শিক্ষা ্রস্থ বাহির হইতেছে না এটা যদি আক্ষেপের বিষয় হয় তবে তার প্রতিকারের একমাত্র উপায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় উচ্চ অঙ্গের শিক্ষা প্রচলন কর1।” এই সাময়িক আলোচনাটি সাহিত্য-রসে ভরিয়া উঠিয়াছে। রসবান্‌ কথাগুলি ও যে স্থলে কবির রচনাকৌশল প্রকাশ পাইয়াছে তাহা উদ্ধৃত করিবার স্থান নাই। ভেখক দেশের সমস্যাটি বড়ই সুন্দরভাবে প্রকাশ করিয়াছেন। তাহার তর্ক- মুক্তি সুদৃঢ়, কথাগুলি পাঠকের মনে গভীর রেখাপাত করে। প্রবন্ধটি আমরা সকলকেই পড়িতে অন্থরোৌধ করি। লেখক অনেক স্থলে বাঙালীর চোখ ফুটাইতে চেষ্টা করিয়াছেন প্রসঙ্গ- ক্রমে তিনি যে সব কথাগুলি বলিয়াছেন তাহাও বিশেষরূপে আলোচন। করিবার যোগ্য । আপ্রফুল্পকুমার চক্রবর্তীর “নব্যদর্শন” সুন্দর রচনা; দুরূহ বিষয় সহজ ভাবায় প্রকাশ করিবার শক্তি লেখকের আছে। বিষয়টি বাংলায় যেমন নৃতন তেমনই ছুরূহ, সেই জন্য লেখকের বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন । তাহাকে পাঠকের চিত্ত আকর্ষণ করিতে হইবে, নচেৎ এরূপ রচনা সম্প্রতি বার্থ হইবারই সম্ভাবনা। মোটের উপর জিনিসটিতে সাহিত্য-রস আনিয়া দেওয়া আবশ্থাক | “ঘরে-বাইরে” এবারে বেশ জমিয়াছে। সন্দীপ ক্রমশঃ আত্মপ্রকাশ করিতেছেন, বিমলার দেশগ্রীতি ও অনতিম্ফুট মাতৃত্টুক কবির তুলিকায় প্রাঞ্জলভাবে ফুটিগা উঠিয়াছে।, বিমলার চুরি ও স্ন্দীপের চোরাই মাল গ্রহণের বণনায় লেখকের ষে কৃতিত্ব প্রকাশ পাইয়াছে, তাহা বঙ্গসাহিত্যে অতুলনীয় “শেকৃস্পিয়র” আনরবীল্রনাথ ঠাকুরের কবিতা; কবির মৃত্যুর তিনশো বছর পরের প্বতিবাধিক উপলক্ষে রচিত। ইংলও কবিকে আপনার ধন ভাবিয়! কিছুকাল অরণ্যশাধার বাছজালে। ঢাকিয়৷ রাধিয়াছিল-- ৃ তারপরে ধীরে ধীরে অনন্তের নিঃশব ইঙ্গিতে, দিগন্তের কোল ছাড়ি' শতাব্দীর প্রহরে প্রহরে উঠিয়াছে দীপ্তজ্যোতি মধ্যাহ্ছের গগনের পরে ; নিয়েছ আসন তব সকল দিকের কেন্জ্রদেশে বিশ্বচিত্ত উদ্তাসিয়া ; তাই হের যুগাস্তরশেষে ভারতসমুদ্রতীরে কম্পমান্‌ শাবাপুঞ্জে আজি লি নারিকেলকুগ্জবনে জয়ধ্বনি উঠিতেছে বাজি । * বর্ণনায় গার্তীধ্য আছে; শেষের তিনটি পংক্তি মানসপটে একখানি মনোরম চিত্র আকিয়া দেয়, মনে হয় যেন সুদুর বিগত মনীবীর আত্মা এ জগৎ ব্যাপিয় বিরাজ করিতেছেন। জীব্রজেন্্রনাথ শীল-_রবীন্দ্রবাবু “শিক্ষার বাহনে? ষে সব প্রস্তাব উত্থাপন করিয়াছেন, তাহা কিরূপে কাজে খাটাইতে পারা যায় তাহার উপায় স্থির করিতে চান্। তিনি যাহা বলিয়াছেন তাহা মানিয়া চলিলে আমরা লাভবান হইব সে বিষয়ে সশ্দেই নাত । তবে বিশ্ববিদ্যালয় যতদিন না বাংলা ভাষায় শিক্ষা দিবার ভার গ্রহণ করেন, ততদিন বিশেষ সফল কফলিবে বলিয়া মনে হয় না। বঙ্গবাসী যদি রবীন্দ্রবাবুর প্রস্তাবটি কার্ধ্যে পরিণত করিতে চান্‌ তাহা হইলে বঙ্গভাষায় ভাল ভাল শিক্ষা ্রস্থ তাহাদের লিখিতে হইবে; বিশ্ববিদ্যালয় কৃপাদৃষ্টি করিলে এ কাজ সহজে শীগ্রই সম্পরন হইতে পারে নচেৎ এ কাজ সম্পন্ন করিবার জন্য আমাদের খাঁটিতে হইবে, ত্যাগ স্বীকার করিতে হইনে। বাংল! ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা কতটা উপকারী যেদিন বঙ্গবাসী তাহা! যথার্থ বুঝিতে পারিবে সেদিন শ্রম বাত্যাগ স্বীকারের অভাব ঘটিবে না। আমরা আমাদের মঙ্গল কি তাহা বুঝি না, যাহা পাইয়াছি তাহা লইয়াই চোখ বুজিয়া থাকিতে চাউ। প্রবাসী, মাঘ-_ ্ বিক্রমপুর সম্মিলনীতে শীজগর্দীশচন্ত্র বস যে অভিভাষণ পাঠ করিয়ছিলেন, তাহাই প্রবাসীর প্রথম প্রবন্ধ। প্রবন্ধটিতে অনেক সারবান্‌ কথা আছে। একটু উদ্ধত করি-__“আমাদের জড়তা সম্বন্ধে যদি আমি কোন তীব্র ভাষা ব্যবহার করি তাহা হলে ক্ষমা করিবেন। আমার জীবনে যর্দি কোন সফলতা দেখিয়া থাকেন তবে জানিবেন তাহ] সর্বদা নিজেকে আখাত করিয়া জাগ্রত রাখিবার ফলে। স্বপ্নে দিন চলিয়া! গিয়াছে । যদ্দি বাচিতে চাও তবে কশাধাত করিয়া নিজকে জাগ্রত গাখ।” প্রর্তমান সময়ে বাংল! দেশে এই উপদেশঠার মূল্য বড় কম নয়। সর্বসাধারণের মধ্যে শিক্ষা! বিস্তার কেমন করিয়া হইতে ১২৬ পারে তাহার নশ্বন্ধে লেখক যে কখা বলিয়াছেন তাহাও আমর! উদ্ধৃত করিয়া দিলাম__ শআমার বিবেচনায় স্বাস্থ্যরক্ষার উপায়, গৃহ ও পল্লী পরিষ্কার, বিশুদ্ধ জল ও বায়ুর ব্যবস্থা নির্ধারণ, এ সব বিষয়ে শিক্ষাবিস্তার এবং আদর্শগঠিত পল্লী প্রদর্শন অতি সহজেই হইতে পারে। ইহার উপায় মেলা-স্থাপন। পর্ধ্যটনশীল, মেলা বিক্রমপুরের টক প্রান্ত হইতে আর করিয়া অল্পদিনেই অস্ঠ প্রান্তে পৌছিতে পারে। এই মেলার স্বাস্থ্যরক্ষা সম্বন্ধে ছায়াচিত্রঘোগে উপদেশ, স্বাস্থ্যকর ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যায়াম প্রচলন, যাত্রা, কথকতা গ্রামের শিল্পবন্তর সংগ্রহ, কৃষিপ্রদর্শন ইত্যাদি গ্রামহিতকর বছবিধ কাধ্য সহজেই সাধিত হইতে পারে । আমাদের কলেজের ছাত্রগণও এই উপলক্ষে তাহাদের দেশ পরিচর্ধ্যা-বৃত্তি কার্ধ্যে গরিণত করিতে পারেন ।” প্রতি গ্রামে একথা মানিয়া চলা উচিত। লেখক যেউপায়ের কখা বলিয়াছেন তাহা এ দেশের উপযোগী । এদেশে এউপায় কখনও ব্যর্থ হয় নাই. সেই জন্য এখনও ব্যর্থ হইবে না এ কথা নিঃসনোহেই বলা যাইতে পারে। আরে একটা কথা উদ্ধত না করিয়া থাকিতে পারিলাম না। “সম্প্রতি জাপান হইতে প্রত্যাগত জনৈক বন্ধুর নিকট শুনিলায যে জাপানে আমাদের সম্বন্ধে ছু একটি আমোদ-জনক ফথা চলিতেছে | তাহাদ্দিগের অন্ষগ্রহ ব্যতিরেকে নাকি আমাদের গৃহিণীদের প্রবস্ত্র হইতে হাতের চুড়ি পরাস্ত সংগ্রহ হয় না। এখন বাঙালী বাবুদের জন্যও তাহাদিগকে ছা'কার ফলকে পর্য্যন্ত প্রস্তুতের ভারগ্রহণ করিতে হইয়াছে।” মেয়েদের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালী জাতিটাও পরদানশীন হইয়া ছিল] এখন সে বাহিরে আসিয়া দাড়াইয়াছে। অনেকে এখন তাহার পানে কিরিয়! চায়। এমন দিনে আশপাশের ছু একটা! জাতি আমানের সন্বদ্ধে কি ধারণা করিতেছে তাহা জানিতে ইচ্ছা হয়। উপরের উদ্ধত অংশটি আমাদের সে ইচ্ছা পূর্ণ করিবে নাকি? »ইন্দুপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের “মার্কিন মেয়েদের কথা” উল্লেখযোগ্য ; লেখকের ভাষা ভাল. প্রকাশ কল্সিবার রীতিও ভাল, রচনায় লেখকের ব্যক্তিত্বটুকু যতখানি প্রকাশ পাইয়াছে তাহারও প্রশংসা না করিয়া থাকা যায় না। লেখকের অকাল- সৃত্যু বঙ্গসাহিত্যের পক্ষে ক্ষতিকর সন্দেহ নাই। মানসী ও মন্বাণী [৮ম বর্ষ-_-১ম খণ্ড--১ম সংখ্যা জীরিনয়কুমার সরকারের "আমেরিকায় বিদ্যাচর্চা” বিবিধ তথ্যে পরিপূর্ণ। প্রবন্ধগুলি শুধু বিদেশের বর্ণনা করিম়াই শেষ হয় নাই। একজন ম্বদেশভক্ত ভারতবাসীর চোখে বিদেশের ষে বিশেষত্বটুকু প্রতিফলিত হইয়াছে তাহারই বিবরণ আমরা এই প্রবন্ধে দেখিতে পাই । বিদেশের নিকট আমর কি শিখিতে পারি তাহাই প্রকাশ কর এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্ত। প্রবন্ধের ভাষা ভাল, সর্ধজ্র লেখকের সরলতার আভাস পাওয়া যায়। ীজ্ঞানেন্্রমোহন দত্ত মৌমাছি সম্বন্ধে অনেক তথ্য সংগ্রহ করিয়াছেন। বিবিধ প্রসঙ্গে” অনেক সাময়িক উচিত কথা আছে। উপাসন।, মাঘ-_ জীবিনয়কুমার সরকার জাপানের শিল্প ও ব্যবসার কথা লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। আমাদের দেশে যা কিছু আছে, সবই ভাল এ ধারণা লইয়া ধাহারা চোখ বুজিয়া আছেন, তাহারা এ প্রবন্ধ পাঠের কষ্ট স্বীকার না করিলেই ভাল হয়, কেন না বিদেশের অনেক ভাল জিনিষের কথা গ্রন্থকার লিপিবদ্ধ করিয়া ছেন, বাহার তুলনা আমাদের দেশে দেখিতে পাওয়া যায় না। প্রবন্ধ বিবিধ তথ্যে পূর্ণ, সব তথখ্যগুলিই চিত্ত আকর্ষণ করে। বাঙালীকে অন্ত জাতির পাশাপাশি রাখিলে কিরূপ দেখায়, তাহাই দিশেষরূপে বুঝাইয়া দেওয়া প্রবন্ধটির উদ্দেশ্য । সম্পাদকের “আলোচনী"তে হিন্দুর আধুনিক সমাজদেহের একট! চিত্র প্রকাশ করিবার চেষ্টা আছে। চিত্রটি খুব নৃতন না হইলেও ইহাকে সযত্বে রাখিতে হুইবে কেননা! আমরা এখন নিজের দিকে চাছিতে শিখিয়াছি ; এই শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হইয়া আমরা যাহা বলিতেছি ও যাহা লিখিতেছি তাহা একটা নৃতন সমাজের সুচনা করিতেছে । জবীঅতুলচন্ত্র দত্তের “চায়ের মামলায়” কিছু হাস্তরস আছে; আমাদের মনে হয় সামান্য লাভের জন্য এ মামলায় কান দিবার সময় আমাদের নাই। প্রবন্ধটির পাত উল্টাইতে উল্টাইতে হাসিয়াছি বটে, কিন্তু আনন পাই নাই। জীরাধারমণ যুখোখ্ধাধ্যায়ের *বঙজদেশীয় প্রজার ভূষিম্বত্ব” সকলের গাঠোপযোগী না হইলেও উল্লেখযোগ্য রচন1; বঙ্গীয় লেখকের লিখিবার বিষয় জরমশঃ বাড়িয়া যাইতেছে ইছাও বাংলা সাহিত্যের ক্রমোক্পতির লক্ষণ | ফান্তন, ১৬২১]. ১২৭ ফিরে' যাও কে এসেছে আজ আকাশ ভরির! ছড়ায়ে আলোক কে এসেছে আজ রঙিণ করিয়া পাথীর পালক : কে এসেছে আজ বনবনাস্তে বিতরি” গন্ধ-_ কে এসেছে আজ হৃদয় ভরিয়া দিতে আনন্দ ? কে এলেগো আজ মুখর করিয়া কাননতল, কে তুমি ফুটা”লে সরসীর বুকে কমলদ্বল ; কুলায়বিহীনে কে তুমি ৰাধালে নূতন নীড়, কুন্গমের বনে কে তুমি বসালে ভ্রমর-ভিড় ! চাদের কিরণে কে তুমি বহালে মদির-ধার!, ধূলার ধরণী করিলে কে তুমি ত্রিদিবপার! ! কোন্‌ দেবতার পুজার মন্ত্র পাঠের তরে কে তুমি এসেছ আমার দীর্ণ জীর্ণ ঘরে ? এখানে নাইগে! প্রতিমা নাইগো দেবতা নাই-- ব্যর্থ আশার অশ্র-আসার নয়নে তাই! ফিরে যাও ওগো তোমার হেথায় নাহিক কাজ-_ স্মর নয় যিনি ম্মরহর, তারে স্মরিব আজ। শ্রীজগদিন্দ্রনাথ রায়। গ্রন্থ সমালোচনা লী। ৮বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায় প্রণীত। কলি- কাত ভিক্টোরিয়া প্রেসে মুদ্রিত ও শ্গুরুদাস চটোধ্যায় কর্তৃক প্রকাশিত-_ ১৩২২। ডবল ক্রাউন ১৬ পেজি ২৪* পৃঠা, মূল্য ১২ এই পুস্তকখানি বিপ্রদাসবাবুর শেষ পুস্তক। পারিবারিক গুহ, একাপ্নবর্তী পরিবার, স্ৃতিকাগৃহ, স্ত্রীলোকের গর্ভাবস্থা ও তৎকালে গঞ্ডিনীর কি কি বিষয়ে সাবধানতা গ্রহণ কর! কর্তব্য ও প্রসবের পরক্ষণে কি কার্ধা করা উচিত--এ সমস্তই এই পুস্তকে সঙ্গিবিষ্ট কর! হইয়াছে। গ্রস্থকার 'একার্বর্তী পরিবারে" লিখিয়াছেন_“ ৬ *% * বাঙ্গালীর এইট একান্নবর্তী পরিবার-_ ছুঃখের সংসারে সুখের প্রত্রবণ_সম্তোষের উৎস উৎপাদন করে। যখন নিরাশায় জীবনে ততুর্দিক জন্ধকারময় বোধ হয়-- যখন বিবাদের প্রচণ্ড আঘাতে হৎগিওড চু বিচুর্ণ হইয়৷ দশ- দিক শুস্ত দেখিতে হয়--ঘখন অখিল বিশ্বের যখ্যে 'আছা' কথাটি বলিবার জন্য কাহাকেও খুজিয়৷ মিলে না তখন এই পরিবার- মণ্ডলী সেই হতাশ হ্বদয়কে উর্ধে উত্তোলন করে-_তাহার জকাল এই একারয্থ্া পরশ! আমাদিগেকস শৃহ হইতে উঠিয়া যাইভেছে-ইহা বড়ইপ্ছুখের বিষয় 1 ৮? স্থতিকাগৃহই মহুৃষ্যের জন্মাগার। তথায় ঘে সমম্ত আব- শ্যকীয় কাধ্য ও সাবধানতা অবলম্বন কর] আবশ্ঠক, গ্রন্থকার তাহা অতি সহজ ও সরল ভাষায় বিবৃত করিয়াছেন। ইংরাজী পুস্তকে আমরা গর্ভধারণকালের তালিকা দেখিয়াছি, কিন্ত বাঙ্গালা পুস্তকে এ বিষয় এই প্রথম দেখিলাম । এই পুদ্তকে উক্ত তালিক1 সংযুক্ত করিয়৷ বিপ্রদাস বাবু প্রত্যেক বঙ্গবাপীর উপকার করিয়াছেন। ইহা কাজে লাগিবে। এই রোগহ্ঃখপ্রগীড়িত ধরাধামে অবস্থান করিলে যানবকে কত সময়ে কত ছূর্খটনায় পড়িয়া! ব্যাধিগ্রস্ত হইতে হয়। সেই *সকল ব্যাধি হইতে পরিত্রাণ লাভের উপায় বিপ্রদাসবাবু এই গ্রন্থে সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। গবাদি পশু রোগাক্রাপ্ত হইলে কিরূপে তাহাদিগকে প্লোগ- মুক্ত করিতে হয়, তাছার উপায়ও গ্রন্থকার শুন্গরভাবে বর্ণন করিয়া গিয়াছেন। গরিশেষে তিনি গৃহস্থ নিত্যাবন্টর্কীয় কতকগুলি মুষ্টি- যোগ পুস্তকে লঙ্গিবি্ট করিয়াছেন। :: পৃস্তকখানি পাঠ করিয়া জামা আনন্দিত হইয়াছি। শরশ-রভসে শিহরি উঠিছে বন। কুরাশীয় জাল টুটি' উর রুপ কিরণ গগনে উঠিছে ফুটি। রিস্ক মলিন শাখী কোন্‌ বাছুকর দিয়াছে আবার সবুজ শোভান্ন ঢাকি' ! কোথা ছিল এত পঞ্জ-সুকুল-_ খ্ঞজন কলগাগ, কোথা ছিল এত পুষ্প-গন্ধ-_ এত আলো-__ এত প্রাণ? জীর্ণ পাতার ভার বহি” কোন পথে চলে গেছে শীত সন্ধান নাহি তার। স্বাগত, হে খডুদাজ দিকে দিকে এরি - বৌবমাবৈগ সঞ্চার দিলে আজ । ভিম়ের শাসনে কাননের শোভা! যেতেছিলস্ধবে ঝরি!, তুমি ছিলে রত ভাগার তৰ লইতে পুর্ণ করি” । এনেছ ভরিরা সাজি তাই এ প্রভাতে পলাশ-বকুল-_ বন চম্পক রাজি। ওগো নন্দন বাসী, ধরণীর জরা দুর কর তুমি বরষে বরষে আসি?। শিশিরের শেষে তাই বনে বনে ফুটে উঠে ফুল চয়, উচ্ছাস ভরে গেয়ে উঠে পিক বহে বাষু মধুময় । তুমি আসি বাব বার মৃত্যুর মাঝে যৌবন নব-_ কহিছ এ সমাচার । শ্রীকমণীমোহন ঘোষ সাহিতা সমাচার ,. বিগত ২৩শে মাঘ, কবিবর প্রীযুক্ত গ্রমথনাথ রান বু নিমন্ত্রিত ভত্রলোকগণকে অভ্যর্থনা করিয়া সুন্দর প্রবন্ধ পাঠ করেন। সেই প্রবন্ধের এক- নি রর 1 ঠক সষ বিড় পু সঙ্গত এজনা একটি সংকল্প আাটিয়াছে।--সে চাষ, কতকগুলি বাংলা বই জড় করিয়া গ্রন্থরক্ষক বা প্রচারক দ্বারা সেই মাতৃ- ভাষার সাধনবীজ পল্লীতে পল্লীতে ঘুরাইযা পাঠক ও জেখক তৈয়ারী করিতে | বাংলার গ্রন্থকারগণ যদি সদয় হন, বলের আচ্যগণ ঘদি দশের জন্য দানে জাড্য দোষ দুর কৰিয়! গ্রচার- কাধ্যের পৃষ্ঠপোষক হন, তবে ইহার সাফল্য অবধারিত । আশ! করি, সঙ্গতের এ ধাজ্জা। অসঙ্গত বিবেচ্য হইবে না, এবং অনিরেই উদ! সহাদয়গণের দ্বতঃপ্রবৃত্ত সাহাব্য শ্লাভে সমর্থ হইবে। সভায় সঙ্গীতার্ি ছাড়া, পুলিশ কোর্টের বিখ্যাত উকীল ও নবা-সাহিত্যিক শ্রীযুক্ত টক বন্ধ 'ধ্ণ, রি-ঞলু মহাশয় “চৃদ্ধি-ঘিন্কা" শির্ধক একটি প্রবন্ধ ফরের-স্খজি। আরাশে ৮১০ হাসির ' ুটহীিগ। পে কি ধস আমরা উজ বাগ স্মনিনী প্রকাশ করিব । শু মঙ্সহবাণী শী 1 ॥ -স্বান্ন প্রিয়-পরিত্যক্তা 14851 05৭, সর্দবাণী ৮ম বর্ষ $ ১ম খগড ১ম খণ্ড | ফুল চাই-_চাই কেয়া! ফুল! সহসা পথের পরে আমার এ ভাঙ। ঘরে কণ্ঠ কার ধ্বনিল আকুল। তখনো শ্রাবণ-সন্ধা। নিঃশেষে হয়নি বন্ধ্যা থেকে-থেকে ঝরিতেছে জল ; পবন উঠিছে জেগে, বিজলী ঝলিছে বেগে-_ মেঘে-মেঘে বাজিছে মাদল। জনহীন ক্ষুব্ধ পথ জাগিছে ছঃস্বপ্রবৎ বুকে চাপি” আর্ত অন্ধকার ; কোন মতে কাজ সারি যে যার ফিরেছে বাড়ী, ঘরে-ঘরে বন্ধ ঘত দ্বার'। সঙ্গীহীন শূন্ত ঘরে হিয়া! গুরমরিয়া মরে শ্মারি” যত জীবনের ভূল অকন্মাৎ তারি মাঝে ধ্বনি কার কাণে বাজে-_ চাই ফুল__চাই কেন ফুল ! চৈত্র ১৩২২ সাল 1 ২য় সংখ্যা কেয়া ফুল পাগল ! আজি এ রাতে, এ ছুর্যোগ-অভিঘাতে-_ বৃষ্টিপাত বিলুপ্ত মেদিনী ; তার মাঝে কেবা আছে, কেতকী-সৌরভ যাচে__ কোথায় বা হবে বিকিকিনি ? পবন উঠেছে মাতি-_ কিছুক্ষণ কাণ পাতি” *.. মনে হ'ল গিয়াছে বালাই ; সহসা আমারি দ্বারে ডাক এল একেবারে-- ফুল চাই__কেয়! ফুল চাই! ভাবিলাম মনে-মনে__- হয়ত বা এ জীবনে কোঁনে দিন কিনেছি ফুল; সেই কথ! মনে করে, আজে! বা আশার ঘোরে, কিম্বা কারে করিয়াছে ভূল! তাড়াতাড়ি আলো তুলি বাহিরিন্ত দ্বার খুলি, সবিশ্ময়ে দেখিলাম চেক্সে-_ ১৩০ মানসী ও মর্ম্মবাণী [৮ম বর্ধ-_১ম খণ্ড-_-২য় সংখ্যা মাথায় বুহৎ ডালা, উজাড় করিতে ডালা দাড়ায়ে পসারী বালা-_ কাদিয়া ফেলিল বালা-_ আবণ ঝরিছে অঙ্গ বেয়ে ! ওমা এ কি--এত কেন হবে ! কহিলাম, এ কি কাণ্ড! কহিন্থ__যা” কিনিলাম, তোমার পসরাভাগ্ এ নহে তাহারি দাম-_ আজ রাতে কে কিনিবে আর ? প্রতিদিন দিতে হবে মোরে ; এ প্রলয়ে কারো কাছে এক পণ ছুই পণ-__ কিছু কি প্রত্যাশা আছে__ যেমন হইবে মন) কেন মিছে বহিছ এ ভার ! তাহারি আগাম দিন্থু তোরে। আর্দ্র দেহে আর্ বাসে কতক বুঝে” না-বুঝে? সে কহিল মৃদ্হাসে__ হৃদয়ের ভাষা খুঁজে*__ শিরে বাধ সুগন্ধ ছড়ায়__ বহু কষ্টে জানাইয়! তাই, যে ফুলে বেসাতি করি, পৃষ্পগন্ধে মোরে ঘিরে? বাদল যে শিরে ধরি ) অন্ধকারে ধীরে ধীরে কপালে লিখিল বিধি তাই ! পসারিণী লইল বিদায়। বহিয়া ছখের খণ বে কষ্টে কাটাই দিন, ফিরিন্ু একলা ঘরে-__ এ দুর্দিন কিবা তার কাছে ? -_গুগো তুমি নেবে কিছু? নয়ন হইল নিচু সেথাও বা মেঘ নামিয়াছে ! খোল! দরজার পাশে বাষু গরজিয়া আসে, ফুলবাসে ভরি দেহমন ) ঝরঝর ঝরে জল, আখি করে ছলছল ঘনাইয়! প্রাণের শ্রাবণ! বাদলের বিহ্বলতা-_ বুঝি হায় ! লাগিল তাঃ নয়নে বচনে সর্বদেহে ! সহস! চাহিয়া আড় রমণী ফিরাল ঘাড়-_ উদন্রণ্যন কি দেখি চেয়ে! বাদর তখনো ঝরে, পুষ্পগান্ধে পূর্ণ গুহ তল; শয্যা লইলাম পাতি, নিবায়ে দিলাম বাতি; আবার আসিল বেগে জল! রুদ্ধ জানালার ফাকে বাতাস কাহারে ভাকে, বিজলী চমকি' কারে চায়! কোন্‌ অন্ধ অনুরাগে ব্রিষামা যামিনী জাগে শাবণ-ব্যাকুল-বার্থতায় ! সঙ্গীহীন শূন্ঠ ঘরে হিক্সা গুমরিয়া মরে-_ স্মরিয়া এ জীবনের ভুল ) সেই সাথে থেকে-থেকে মনে হয়-গেল ডেকে কাননের যত কেয়া! ফুল ! চৈত্র, ১৩২২] ভারতবষে প্রচলিত ওজন ও মাপ-প্রণালী ১৩১ ভারতবর্ষে প্রচলিত ওজন ও মাপ-প্রণালী খন সমগ্র ভারতবর্ষকে একদেশ বলিয়া দেশবাসীরা ভাবিতে শিখে নাই, এবং বখন রাষ্থীয় জীবন পল্লী- সমাজের বিধি ব্যবস্থাতেই নিযুক্ত হইয়া সার্থকতা লাভ করিত, তখনকার দিনে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ওজন প্রচলিত থাক খুবই স্বাভাবিক। ছোট ছোট রাজা নিজ নিজ স্থাতন্ত্র বজায় রাখিবার জন্ট যে সমস্ত অপ্রারত ব্যবধান খাড়া করিতেন, মুদ্রাপ্রচলন তাহার মধ্যে অগ্যতম । তাহা ছাড়া এক সম্রাটের শাসনা- ধীন ভিন্ন ভিন্ন জিলা, তালুক বা পরগণাতে বিভিন্ন মুদ্রা প্রচলিত ছিল। ধাহারাই* বাণিজোর উন্নতির কামনা করিয়াছেন এবং সমগ্র দেশকে একই রাষ্ট্রের অঙ্গীভূত করিতে চেষ্টা করিয়াছেন তাভারাই 'এই মুদ্রা ওজন-মাপের অসামঞ্জশ্ত দূর করিবার প্রয়োজন বোধ করিয়াছেন। আকবর 'একবার ওজন ও মাপ একী- করণের বিশেষ চেষ্টা করেন। এটুকু বেশ জানিতে পারা গিয়াছে থে তাহার সময় দৈর্ঘ্য মাপিবার জন্ গজ” ব্যবহৃত হইত । সেই গজ প্রায় এক মিটার বা প্রায় ৩৯ ইঞ্চি লম্বা ছিল। আকবরের গজ যেঠিক কতটুকু ছিল তাহা একেবারে নিঃসন্দেহ প্রমাণ এক্ষণে করা হ্ঃসাধ্য । লোকে যাহাতে আকবরের গজ বিশেষ করিয়া বুঝিতে পারে তজ্জন্ত ইহাকে ইলাহি গঞ্জ এই বিশেষ নাম দেওয়া হইয়াছিল। যে সমস্ত ছোট বড় মাপের প্রচলন রদ করিয়! ইলাহি গজ প্রবর্তন করা হইয়াছিল, মোগল ক্ষমতা মন্দীভূত হওয়ার সহিত সে সমস্তই আবার চলিতে লাগিয়াছিল, এবং কিছুকাল পরেই ছোট বড় তিন চারি রকম গজের ভিতর ইলাহি গজও অন্ততম হইয়৷ দাড়ায় । কোম্পানীর আলে মুদ্রা ও ওজন লইয়া ইংরাজ- দিগকে বিব্রত হইয়! পড়িতে হয়। তারপর ইংরাঁজেরা তাহাদের নিজেদের দেশের ওজন অনুযায়ী একটা ওজন খাড়া করেন। ইংরাজদের ট্রয় ওজনের ১ হন্দরকে তাহারা একমণ ধরিয়া লয়েন। ১মণ- ৪*সের- ১০০পাউও রয় ১সের -৮০তোলা৷ _ ২॥০পাউও্ড - ১৪৪০গ্রেণ ১তোলা _ রত গ্রেণ। পূর্ব হইতেই বাংলা অঞ্চলে ও ভারতের অন্ান্ত প্রদেশে তোলা ওজন প্রচলিত ছিল এবং সেরের ওজন তোলার উপর নির্ভর করিত। এবং সে সের ও তোলা উভয়েরই ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ওজন ছিল । ১৮৩৩ সালে ইংরাজের প্রথম মুদ্রা-বিষয়ক আইন বিধিবদ্ধ হয়। কলিকাতার “আসে মাষ্টার” টণকশাল হইতে তাহার প্রস্তাব করেন। তাহার প্রস্তাবই উল্লিখিত ১*০পাউগ্ু ট্রয়ে ১ মণ ধরা। এই হইতে অন্ত সমস্ত ওজন রদ ১হয়া ১৮০ গ্রেণে তোলার ওজনে মুদ্রা প্রস্তুত হয়। সাধারণতঃ এহ সময় বাংলা দেশে আকবরের সি! টাকা বা রূপা প্রচলিত ছিল। তাহার ওজন প্রায় ১৯২ গ্রেণ। মুদ্রার আদিকে ১৮* গ্রেণের তোল। করাতে একটা গোলমেলে ভিত্তির উপর ওজনকে দীড় করান হইল। ইংলণ্ডে সাধারণ ব্যবসায় ট্রয় ওজন ব্যব- হৃত হয় না-_এভডুর্পইজ ওজন ব্যবহৃত হয়। এই এভডুপিইজের সহিত উয়ের কোন সহজ সম্পর্ক নাই। ট্রয় ৫৭৬০ গ্রেণে পাউও, এভডুপিইজ ৭০০৯ গ্রেণে পাউগ্ড। যদি ইংলণ্ডে সাধারণতঃ ট্রয় ব্যবহ্যত হইত তাহা হইলে ১৮০শ্রেণের তোলার সার্থকতা! ছিল। ১৮০গ্রেণে তোলা হিসাবে আমাদের ১ মণ এভভডুরপিইজ ৮২২ পাউণ্ডের সমান হয়। এই ১৮* গ্রেণের তোলার ওজন ভারতের সর্বত্র সুবিধাজনক বোধ হয় নাই। কিছুদিন পরেই মাদ্রাজের একটি কমিটা ওখানকার ওজন- প্রণালী বদলাইয়া নূতন একটা বিশেষ ওজন অন্থ- মোদন করেন। তাহা তোলার উপর স্থাপিত ছিল না কিন্ত ভারত গবর্ণমেণ্ট ইহাতে আপত্তি করেন, এবং তোলা গ্রহণ করিতে বলেন। তখন কমিটী , হইতে এই ওজন গৃহীত হয় £-_ ১৩২ ৩ তোলায়_-১ পল্লম্‌ ৪০. পল্লমে--১ বিশ ৪ বিশ--১ মণ অর্থাৎ বাংলার ১২ সের। কিন্তু মাদ্রাজে কখনও এই ওজন চলে নাই। কেবল কাগজ কলমেই পরিবন্তন হ্ইয়াছিল। হংরাজ আমলে প্রত্যেক প্রদেশের শাসন কর্তীই ওজনের একীকরণের প্রয়োজন অন্বভব করিয়া আসিয়াছেন। এবিষয় লইয়া কমিটা ও রিপোর্ট যে কত হইয়াছে, কত সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়া জন সাধারণের মত সংগ্রহ করা হইয়াছে এবং কতই প্রস্তাব যে ভারত গমণমেন্টের নিকট প্রেরিত হইয়াছে তাহার অবধি নাই। ভারত গবর্ণমেন্ট এবিষয়ের গুরুত্ব যে উপলব্ধি না করিয়াছেন "তাহা নহে । কিন্তু একটা গুরু বিষয়ের দায়িত্ব লইতে মানুষমাত্রেই শ্বভাবতঃ নারাজ । যতদিন পরিবন্তন না করিয়া চলে চলুক, এইভাবে ফেলিয়া! রাখিতে পারিলে কেহ বড় একটা ছাড়েনা। ভারত গবর্ণমেন্টও এ বিষয়ের গুরুত্ব বোধে ঠিক সেই প্রকার করিয়া আসিয়াছেন। কখনও বা ভারত গবর্ণমেপ্ট “বিষয়টা বিবেচনাধীন আছে” এই বলিয়া প্রাদেশিক গবর্ণমেণ্টের তাগিদ চাপিয়। রাখিয়াছেন_-আবার কখনও ভারত গবর্ণ- মেপ্ট কাজে নামিতে সঙ্কল্প করিয়াছেন_-আর উপর হইতে সেক্রেটারী অফ. ষ্টেট “এখন থাক, পরে হইবে” এই বলিয়া নিরস্ত করিয়াছেন। এ পর্য্যস্ত এই কারণে ভারত গবর্ণমেণ্ট কোনও দায়িত্ব গ্রহণে পশ্চাৎপদ রহিয়াছেন। ইংরাজদের নিজেদের ঘর এ বিষয়ে ঢরন্ত নহে, কাজেই একটা ভাল একীরুত মান-প্রণালী গ্রহণের জন্য যে এ্কাস্তিক উদ্যম, তাহার ভিতর ফাঁক রহিয়! গিয়াছে। ইংলণ্ডে হরেক রকম ওজন চলিত আছে । সাধারণতঃ ব্যবসা বাণিজ্যে এভর্ড,পইজ ব্যবহৃত ছয়। সোনা, রূপা, প্লাটিনাম প্রড়তি মুল্যবান ধাতু ওজন করিতে ট্রঘন ওজন ব্যবহৃত হয়। ডাক্তারদের আবার আনন এক ওজনে ওধধ মিশণ মানসী ও মন্ধবাণী [৮ম বর্-_-১ম খণ্ড--২য় সংখ্যা হয়, যদিও তাহার নাম আউন্স পাউও ইত্যাদি । লম্বার মাপ ইঞ্চ, ফুট, গজ, মাইল ছাড়া লিগ, ডিগ্রি, পেস্‌, ফ্যাদম, রড, চেইন, ফারলং প্রভৃতি নানা নামের ও নানা বিবরণের মাপ আছে উল্লিখিত দৃষ্ীস্ত হইতে দেখা যাইতেছে যে ইংলগ্ডের ওজন কি প্রকার বেখাপ্া ৷ ভারতবাসীদের দোষ দেওয়া! হয় যে তাহাদের ওজন ও মাপ ছুই গুণ ও চারিগুণ করিয়া উঠিয়াছে। যেমন ৪ ছটাকে পোয়া, ৪ পোয়াতে সের ইত্যাদি। কিন্তু ইংলগ্ের ওজন প্রণালী কোনও নিয়মের ধার ধারে না। ১২ ইঞ্চে ফুট, ৩ ফুটে গজ, ১৭৬০ গজে মাইল, ইহাতে না আছে ২ 'এর না আছে ৩ এর বা দশের মাপ। যাভাদের ওজন ব্যাপার এত গোল- ও নিয়মের বাহিরে, সে বুটাশ প্রণালীকে মেলে আদর্শ ভাবিয়া ওজন প্রণালী গড়িলে দে যে শিব গড়িতে বানর হইবে তাহা স্বতঃসিদ্ধ। বস্ততঃ হইয়াছেও তাহাই | ইংলগ্ডের ১৮০ গ্রেণকে তোলা! বানা- ইয়া না হইয়াছে ইংরাজী ওজন না হইয়াছে দেশি ওজন। দেশি ওজন বলিয়া একটা কিছু ছিল একথা চট করিয়া না মানিয়া লওয়া যাইতে পারে, কিন্ত এবিষয়ে অনেক কথা ভাবিবার 'আছে। অন্ততঃ এক- জন ইংরাঁজ সিভিলিয়ানও দেখাইয়াছেন যে ভারতবর্ষে দশমিক ওজন প্রচলিত ছিল এবং যাহা প্রকৃত পক্ষে মেট্রিক প্রণালী বলিলে আমরা যাহা বুঝি তাহাই। আমরা সব বিষয়েই ইংলগ্ডের দিকে চাহিয়া আছি। ইংরাজের দেশকে স্বর্গ বা আদর্শ মনে করিয়া স্থথ পাই। ইংলগ্ডে যাহা ভাল বলে তাহা বরেণ্য, যাহা নাই তাহা দ্বষ্য। শুধু ইংরাজদের স্বদেশের প্রতি গ্রীতিবশতঃ যদি এবম্প্রকার মনোভাব হইত তবে তাহা মাজ্জনীয়, কিন্তু আমাদের দেশবাসীরাও ইংরাঁজ- দের অপেক্ষা ইংলগ্ডের কিছু কম পক্ষপাতী নহেন। যে হেতু ইংলগ্ডেই একটি ভাল ওজন প্রথা গৃহীত হয় নাই অতএব ভারতের জন্ত ওকথা ভাবাই যাইতে পারে না, এ প্রকার ইংরাজেরা যত না বলিয়াছেন দেশীয়েরা ততোধিক বলিয়াছেন । চেত, ১৩২২] ভারতবষে প্রচলিত ওজন ও মাপ-প্রণালী ১৩৩ কিছুদিন হইল আমি আমূর্কেদের মাপ প্রণালী লইয়া চর্চা করিতেছিলাম। ফলে অনেকগুলি গলদ দেখিতে পাই। যে সময় কবিরাজ মহাশয়দের ওজন প্রণালী কি করিয়া এক করা যায় ভাবিতেছিলাম সেই দময় ১৯১৩ সালের “ওয়েট কমিটি*র রিপোর্ট বাহির হইল। আরুর্কেদীয় ওজন প্রণালী সম্বন্ধে স্থানান্তরে বলিব। এতাবৎকাল ভারত গবর্ণমেন্ট ওজন একী- করণের কমিটী গঠন করিতে ও ব্যয় করিতে কুণ্ঠা করেন নাই। কিন্ত কমিটার রিপোর্টের উপর ভাল- মন্দ কোনও প্রকার কাজ করিতে নারাজ । কমিটার অনুসন্ধানের বিষয়গুলি কমিটার সাক্ষা ও প্রমাণেই অবসান লাভ করে। ইংরুঁজ শাসনকালে এপর্যন্ত প্রায় ২০টা ওয়েট মেজার কমিটা রিপোর্ট দিয়াছে। ১৯১৩ সালের কমিটার রিপোর্ট ১৫ সালের আগঞ্ট মাসে বাহির হইয়াছে । সংবাদপত্রগুলিতে ইহার যে বিবরণ বাহির হয় তাহাতে দেখি যে এই কমিটা “রেলওয়ে ওয়েট” সমস্ত ভারতে এরহভণের জন্য অন্ত- মোদন করিয়াছেন। ইহাতে আমার একটু খট্কা লাগে। আজকাল ফরাসী মেট্রিক প্রণালী পুথিবীর প্রায় সমস্ত সভ্য দেশে গৃহীত হইয়াছে । ভারতবর্ষে ইতিপূর্বে অনেকবার মে্ট্রক প্রণালী গ্রহণ করিবার প্রস্তাব হইয়াছে কিন্ত গবর্ণমেন্টের শিখিলতাবশতঃ গৃহীত হয় নাই। ৫০ বৎসর পূর্বে যে বিজ্ঞানসম্মত প্রণালী প্রায় গৃহীত হইয়াছিল, আজও তাহা অনু- মোদিত হইল না, ইহা বড় বিস্ময়কর । রিপো্টখানি খুলিয়া দেখি কাগজে যে সংবাদটা প্রচারিত হইয়াছে বাপারট। ঠিক সে প্রকার নহে । এই কমিটা ৪জন ব্যক্তি কর্তৃক গঠিত হইয়াছিল। পুরে ১ জন ভদ্রলোক পদত্যাগ করায় অবশিষ্ট ৩ জন 1 0.8 ই কমিটার সমস্ত কম্ম সম্পন্ন করেন্চ। সিলবেরাড্‌ হয়েন প্রেসিডেন্ট আর ক্যাম্পবেল ও রাস্তমজী-ফরিছুনজী এই ছুইজন-মেম্বর। রিপোর্ট যাহা প্রকাশিত হইয়াছে তাহা সিলবেরাড ও রাস্তমজীর অনুমোদিত। কমিটার তৃতীয় বাক্তি ক্যাম্পবেল মহাশয় ভিন্ন রিপোর্ট দিয়াছেন। তাহাতে উক্ত ছুইজনার সমস্ত মত খণ্ডন করিয়া মেট্রিক প্রণালী গৃহীত হউক এই মত দিয়াছেন। াড়াইতেছে এই যে দুইজন বলিতেছেন যে “রেলওয়ে ওয়েট” এবং বুটাশ ইঞ্চফুট গৃহীত হউক এবং একজন বলিতেছেন যে না, তাহা কখনও সঙ্গত নহে। যে সমস্ত সাক্ষা গৃহীত হইয়াছে তাহা প্লিচীর করিলে মেট্রিক প্রণালী গ্রহণ করাই সর্বথা উচিত। এ অনেকটা সোয়ান্তির বিষয় । যদি কোনও কালে গবর্ণমেন্ট এ রিপোটের উপর কার্ধ্য করেন, তবে সমস্থ বিষয়টা পুনরায় বিবেচিত হইবার আশা রহিয়াছে । মেটিক প্রণালী কি তাহ! জানা দরকার । পৃথি- বীর পরিধিকে চারি ভাগ করিয়া প্রত্যেক চতুর্থকে এক কোটা ভাগ করিলে যে দৈর্ঘ্য পাওয়া যায় তাহাকে এক মিটার বলে। পৃথিবীর পরিধির ৪ কোটা ভাগের ১ ভাগ মিটার। পৃথিবীর পরিধির উপর দৈর্ঘ্যের মাপ স্থাপিত করা অপেক্ষা আর কোন সহজ সার্বজনীন মাপ কল্পনা করা যায় না। ইংলগ্ডে প্রচলিত দৈখ্যের মাপ ইয়ার্ড কাহাকে বলে যদি জিজ্ঞাসা করা যায়, তবে তাহার উত্তর এই যে প্রথম হেনরী তাহার বানর দৈর্ঘ্যের মাপে যে মাপকাঠি প্রস্তুত করিয়াছিলেন তাহার মাপ, অথবা এতদপেক্ষা ভাল সংজ্ঞা এই যে পার্লামেন্ট গৃহে সুরক্ষিত প্লাটিনামের তৈয়ারী মাপকাঠির একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত যে দৈর্ঘ্য তাহাকে ইয়ার্ড বলে। সে যাহা হউক, এই মিটার দৈর্ঘের মাপ দৈনন্দিন প্রতোক ব্যবহারের উপযোগী । তবে ইহা অপেক্ষা ছোট ও বড় মাপেরও নাম চাই। মানুষ যে জিনিষ লইয়া নাড়াচাড়া করে তাহার ওজন ও মাপকাঠিও সেই প্রয়োজনানুরূপ করা দরকার। মানুষ যদি *রামায়ণের হন্গমানের মত বলশালী হইয়! পাহাড় ঘাড়ে করিয়া চলা ফের! করিতে পারিত, তাহা হইলে সের, কিলোগ্রাম, বা পাউও তাহার ওজনের একক না হইয়া এক একটা মালগাড়ীর মত মাপের লৌহ্‌ বা প্রস্তর খণ্ড অথবা চাই কি একটা পাথরের টিবিই ওজনের একক হইত এবং মানবশিশুকে মুখস্থ করিতে হইত ১৩৪ মানসী ও মর্ধবাণী | ৮ম বধ-_১ম খণ্ত-_২য় সংখ্যা ১* টিবিতে--১ পাহাড় ১০ পাহাড়ে--১ পর্বত ১০ পর্বতে--১ ভিমাচল। কিন্তু মানুষ যাহা তাহাই বলিয়া ওজন ও দৈর্ঘ্যের এককে সব দেশে একটা সুসঙ্গত সাদৃশ্ত দেখা যাঁয়। সের, কিলো, ২ পাউও সমস্ত প্রা একই 'ওজনের। ওজনের একক এ প্রকার ধরিলে সাধারণ ঘরকন্না ও ব্যবসা-বাণিজোর কাজ বেশ চলে বলিয়াই পৃথিবীময় একই ওজনের একক । ইংলও, ভারতবর্ষ ও ফ্রান্সের দৈত্যের মাপ ইয়ার্ড, গজ এবং মিটারও প্রায় একই সমান। মিটার অপেক্ষা ছোট বড় দৈথ্য বলিবার রীতি ১০ গুথ কমাইয়া বা বাড়াইয়া বলা। নীচর দিকে ডেসি, সেন্ট, মিলি) উপরের দিকে ডেকা, হেক্টো, কিলো! এই বাক্যগুলি যোগ করিতে হয়। মেটি.ক নিয়মে ওজনও দৈর্ঘ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত । এক সেন্টিমিটার লম্বা, এক সের্টিমিটার চওড়া 'ও এক সেন্টিমিটার খাড়াই একটী পাত্রে যে জল ধরে, তাহাকে প্গ্র্যাম” বলে। অর্থাৎ এক ঘন (কিউবিক ) সেন্টি- মিটার জলের ওজন ১ গ্র্যাম। তারপর উঁচুনীচু ওজন বলিতে এ মাপের শব্দগুলা বাবহৃত হয়। উপর দিকে ১০. গ্রামে- এক ডেকাগ্রাম ১০ ডেকা বা ১০* গ্র্যামে-_এক হেক্টোগ্রাম ১* হেক্টো বা ১০০০ গ্র্যামে-_-এক কিলোগ্র্যাম নীচের দ্িকে__১০ মিলিগ্র্যামে-_১ সেট্টিগ্র্যাম ১০ সেট্টিগ্রামে বা ১* মিলিগ্রামে--১ ডেসিগ্র্যাম ১* ডেসি বা ১০০ মিলিগ্রামে--১গ্র্যাম | পি কোনও জিনিষের ওজন যদ্দি ৫ গ্র্যাম বলি, তবে তাহার অর্থ ৫ ঘন সের্টিমিটার জলের 'ওজন। মিটারেরই উপর দৈঘ্যের ও গুজনের পরিমাণ প্রতিষ্ঠা করার এই মেটি.ক প্রণালী পৃথিবীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বদেশ ও লোকের উপযোগী হইয়াছে । অধুনা বৈজ্ঞানিক ্রস্থাদিতে মেটিক 'ওজন ও মাপ লেখা থাকে । দশ দশ করিয়া বাড়িয়া বা কমিয়া যাওয়ায় ইহাতে হিসাব করিবার চরম সুবিধা) আর ওজনের ভিত্তিও এমন যে, সকল লোকে বুঝিতে পারে ও নিজেদেরই বলিয়া গ্রহণ করিতে পারে। ইংলগ্ডে প্রচলিত বৃটাশ ইয়ার্ড আমি মাপ বলিয়া কেন গ্রহণ করিব, পালণ- মেণ্টের কোন্‌ গ্রহকোণে কি মাপদণ্ড রাখা হইয়াছে, সে খবরে আমার প্রয়োজন নাই, আমি যাহা সহজ বুঝি এমন কিছু বল। এ প্রকার প্রশ্নে মেটি,ক-প্রণালীতে সকলেই বলিতে পারেন যে, হা, ইহার ভিডি পৃথিবীর পরিধির ৪ কোটা ভাগের ১ ভাগ) ইভা এমন কিছু, যাহা পুথিবীর বাসিন্দা সকলেই নিজের বলিয়া গাভণ করিতে পারেন। বুটিশ ওজনের একক ১ গ্রেণ। গ্রেণ কাহাকে বলে? না এঙরডুপইজ পাউতের ৭০০০ ভাজার ভাগের ১ ভাগ । তাৰ এভডপইজ পাউণ্ড কি? তাহা জানি না, অথবা ভুলিয়া! গিয়াছি। তবে মিণ্টের ছাপমারা লোহার চাকৃতি, যাহাঁকে পাউণ্ড বল! হয়, তাহাই ১ পাউণ্ড; আর বিশ্বাস না হয় পালামেন্ট-গৃহের ৪৮০০৫ 1৩০/॥এ গিয়া দেখিয়া আইস, মেখানে এক্‌ টুকরা প্লাটিনাম রাখা আছে, মাহাকে আমরা সর্বসম্মতিক্রমে পাউওড ( এতর্ড) বলিয়া আমিতেছি। এই মেটি,ক- প্রণালীর এমন সার্বজনীন ভিত্তি বলিয়া কাজেও তাহাই হইয়াছে । ফরাসীদেশে মেটি,.ক-প্রণালী প্রবর্তিত হই- বার কিছুকাল পরেই বেল্জিয়ম উহ গ্রহণ করে, যধিও সে সময়ে বেল্জিয়মের সহিত ফ্রান্সের সখা ছিল না, অধিকস্থ তদ্িপ্ূরীত ভাবই ছিল। বেলজিয়ম . হইতে হলাওড এবং তৎপরে জন্মীনি, রুষ, অস্ট্রীয়া, ইটালি, প্রভৃতি সমস্ত ইউরোপীয় দেশই। মেটি.ককে গ্রহণ করিয়া নিজস্ব করিয়া লইয়াছে। সমগ্র ইউরোপের ভিতর কেবল ইংলণ ও তুরস্ক দেশেই মেটিক নিয়ম প্রচলিত নাই। এ ছাড়া ক্যানাডা, ইউনাইটেড, ষ্টেটুস্‌ ও মিসর দেশেও মেটি,ক-নিয়ম প্রচলিত। মজা! এই যে, চৈজ্, ১৩২২] ভারতবর্ষে গ্রচলিত ওজন ও মাপ-প্রণাল ১৩৫ যেদেশে এই প্রণালী একবার অবলম্থিত হইয়াছে, পুন- রায় তথায় অন্ত কোন প্রণালী চলিত করা উচিত, এমন কথা ভাবাও হয় নাই। যেখানেই গৃহীত হইয়াছে সেইথানেই আদরের সহিত ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছে । ইংলণ্ড যে মেটি.ক প্রণালী গৃহীত হয় নাই, তাহা যে ইংলগ্ডের পক্ষে হানিকর, তাহার অনুমাত্রও সন্দেহ নাই । ১৮৬৭ খৃষ্টাব্ধে ইলগ্ডে একেবার এই প্রণালী গুহীত হয় হয় হইয়াছিল, ছুই এক বৎসরের মধ্ো গৃহীত হইবে এ প্রকার আভাসও পাওয়া গিয়াছিল। কিন্তু এতাবৎকাল অনেক সুক্ষাদর্শী ও বিচক্ষণ ব্যক্তি চেষ্টা করিয়াও বিশেষ কিছুই করিতে পারেন নাই। তবে ইংলপগ্ডের ১৯১৪ সালের ফণর্্মাকোপিয়াতে মেটিক- 'জন এবং মাপের বাবহার বিধিবদ্ধ হইয়াছে । ইংলগ্ডের ডাক্তার মহাশয়দিগকে এক্ষণে ঘন-সোর্টিমিটার ও গ্রামে উষধের বাবস্থা করিতে হইবে এবং “এপথিকারীর ওয়েট” নামক জঞ্জাল ইংলগ্ডের দাওয়াইখানা হইতে দূরীকৃত হইয়াছে । বাবসায়ে ব্যবহৃত না হইলেও বৈজ্ঞা- নিক বাক্তিমাত্রকেই মেক গ্রণালীতে ভাবিতে এবং গজন করিতে হয় । যত ভাল নিক্তি এবং ৪জন, তাভা 'ই শক্র জন্মণদের তৈয়ারী আর যত্ত ভাল পুঁথি, তাভাও এই জন্মণদের তৈয়ারী। আমি কেমিক্যাল ব্যালান্স ও কেমিষ্ীর পুস্তকের কথা বলিতেছি ৷ জম্মানদের মেটি,ক প্রণালীতে ওজনকর! ও ভাবা ছাড়! উপায় নাই। ইংলগ্ডের ত এই অবস্থা। শত বাধা সত্বেও মেটি,ক প্রণালী ফাকে ফাকে কিয়া পড়িতেছে। ইংরাজ রাজার কয়েক শতাব্দী শাসনের পরও আজি- কার দিনে সমগ্র ভারতবর্ষের ওজনের যে অবস্থা, মোগল আমলে বাঁ হিন্দু আমলে ইহার অপেক্ষা কিছু মন্দ ছিল না। বরং বাণিজ্য বাড়িতেছে বলিয়া ক্ষতির পরিমাণ* অধিকতর হইতেছে এবং গোল বেশী করিয়া পাকাইতেছে। পূর্ব্বে যেমন ভিন্ন ভিগ্ন তালুকে হরেক রকম ওজন ও মাপ চলিতেছিল, আজিও তাহাই আছে। ইংরাজ আমলে কেবল তোলাকে নির্দিষ্ট ওজন করিয়া মুদ্রা এক হইয়াছে। কত্ত এই তোলার উপর প্রতিষ্ঠিত ওজন সর্বত্র প্রচপিত নহে এবং সর্ধত্র একার্গে বাবহৃত হয় না । আজ ভারত- বর্ষের কোথায় কি ওজন বাবহৃত হয়, তাহার তালিক' করিলে একখানা আকের খাতা হইবে । ২৪ তোলায় সের হইতে ৩০* তোলায় সের, আর ২* সেরে মণ হইতে ২০* সেরে মণ। ইহাদের প্রতোক ংখ্যা এবং তাভাদের যতরকম ঘোরফের হইতে পারে, তাহার সবগুলি দেশে কোনও না কোনও স্থানে প্রচলিত আছে। আমাদের ওজন মাপ কত রকমের আছে তাহার আভাস মাত্র দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে ও মাদ্রাজ প্রচলিত ওজন ও মাপের কয়েকটিমাত্র উল্লেখ করিব। বাংলাদেশের ওজন মাপ। ৫ তোলায় ছটাক সাধারণতঃ বাংলাদেশে ৪ ছটাকে পোয়া, ৪ পোয়াতে সের, ৪* সেরে মণ! ৮০ তোলায় সেরের সহিত প্রায় বাংলার সব জেলাতে ৬ তোলার কীাচি- সের প্রচলিত আছে। খুচরা বিক্রয়ে বাখরগঞ্জ, বীরভূম বাকুড়া, ফরিদপুর, জলপাইগুড়ি, মেদিনীপুর, ঢাকা ও তন্নিকটবন্তী স্থানে ৮৬* তোলায় সেরের বাবহার। এ ছাডা দেশের প্রায় সর্বত্রই ৫২, ৫৫, ৫৮, ৫৮)%০) ৬২, ৬৩৪) ৭০) ৭২, 9৫, ৭৮, ৮১, ৮২৮০১ ৮৫৮০, ৯০১ ৯৬ তোলায় সেরের কোনও না কোনওটি উৎপন্ন দ্রব্যাদির বাণিজ্যে বাবহৃত হয়। বিশেষ ওজন অনেকস্থলে আছে ; যেমন তুলার জন্ত-_ চট্টগ্রামে ধান ও গুড়ের জন্ত-_ঢাকায় ধান, চাল, সরিষা--দিনাজপুর, রর মেদিনীপুর বাখরগঞ্জে চিনির জন্য-_-বাখরগঞ্জ-_২২* তোলায় পাটের জন্ত-_- ঢাকায়-- ৮৪%০ ধান, চাল,পাট,সরিযার জন্য--২৪ পরগণা, পাবনায়, ৮৪॥৮* আনায় সের । আবার এ ছাড়া আরে! জটিল ব্যবস্থাও আছে। | ৮২৮৭ সের ১৩৬ মানসী ও মর্্বাণী [ ৮ম বর্-_১ম খণ্ড ২য় সংখ্যা যেমন, চট্টগ্রামে যে পাট মাণিকগঞ্জ হইতে ক্রয় করা হয়, তাহার ওজন ত্রিশ সেরে মণ। কলিকাতা অঞ্চলে কুঠির-মণ বলিয়া এক প্রকার মণ চলিত আছে, ইহা প্রায় ছত্রিশ সেরে হয়। কুঠির দেড়মণ ইংরাজী এক হন্দর এভরড,পইজ ওজনের সমান। আপনারা লক্ষা করিয়া থাকিবেন যে, ঢালাই লোহার সের ও মণ ওজন- গুলিতে লেখা থাকে । এই বাজার সের ও বাজার মণ লেখার উদ্দেশ্ত যে ইহা ৮* তোলার সেরের হিসাব__কুঠির মণ নহে। ফ্যাক্টরী মণ বা কুঠির মণ, হিসাবের মণ মাত্র? অর্থাৎ ওজনটা বাজার সের মণ দ্বারা বা হন্দর পাউও দ্বারা হয়, তার- পর হিসাব করিয়া কত কুঠির মণ হইল বাহির কর! হয়--সতা সতা কুঠির মণ বলিয়া কোন ও লৌভ- খণ্ড দ্বারা ওজন হয়না__অন্ততঃ আমার জানা নাই । কলিকাতায় সোর! ক্রয়বিক্রয়ে অনেক লক্ষ টাকার কারবার এই কুঠির মণে হইয়া থাকে । বাংল দেশে প্রচলিত আয়ুর্ধেদমতে ওজন এক প্রকার খিচুড়ি হইয়া আছে । কবিরাজ মহা- শয়দের ওজন-প্রণালী লইয়া একটু নাড়াচাড়া করাতে এই বিষয়ের সমস্ত গোলমাল আমার নজরে পড়ে। আয়ুর্বেদের শ্লোকগুলি যদি কাহার দ্বারা লিখিত তাহা নিরাককৃত হইত, তবে ওজন বিষয়ের একটা মীমাংসা চলিত । কিন্ত অতি প্রাচীন শ্লোকের মধো নিজেদের মতানুযায়ী শ্লোক প্রবেশ করান আজও কবিরাজ- মহাশয়ের গঠিত মনে করেন না। শাঙ্গধর ও ভাবপ্রকাশে মাগধ ও কলিঙ্গ মান বর্ণিত আছে এবং মাগধ-মানই প্রশস্ত উল্লিখিত আছে । আযুর্ধ্বেদের ওজনের একক, রতি বা কুঁচ বা গুজা-_শুধু বাংলা কেন আয়ুর্বেদের 'ও স্বর্ণকারদের মানের আদি কুঁচি আজও ' ভারতের সর্কত্র ব্যবহ্ৃত হয়। সমস্ত দেশেই সভাতার উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ওজন সম্বন্ধে ভ্তান পরিস্ফুট হইতে থাকে । সকল হিসাবও সভাতার আদি শশ্ত হইতেই ওজনও আরম্ভ হয়। আমাদের দেশে যেমন কুঁচ, যব, সর্ষপ, ইংলগ্ডেও তেমনি ৪গ্াত 9080, 61580 ইত্যাদি । শস্যমূলক ওজন বড় হইলে উহা হইতে এক খণ্ড ধাতুর ওজন নির্দিষ্ট করিয়া লওয়া হয়। তার- পর আর শস্তে ফিরিয়া যাইবার দরকার নাই। নির্দিষ্ট ওজনের এত অংশ কুঁচ বা 27 ধরিয়া লওয়া হয়। এক্ষণে মগধমান অনুসারে ৩যবে এক রতি বাকুঁচ; ১ রতিতে ১ মাষা, ৮ মাষায় ১ তোলা,৩৪ তোলায় সের, ৩২ সেরে দ্রোণ। এই সের বা দ্রোণ বলিয়া কত বড় ওজন বাবজত হইত, তাহা জানিবার উপায় নাই। কবিরাজ-মভাশয়েরাও জানেন না। তবে কুচ যখন এখনো ওজন বলিয়া বাবজত হয়, তবে আমরা নীচের দিক হইতে এই প্রকারে স্কির করিতে পারি--১ সের---৪ তোলা, ১:তোন্া_-৮ মাষা-_৪৮ রতি ৮৮টা কঁচের ওজন ১ 'তোলা। কবিরাজ মহাশয়ের যদি ওজন বহাল রাখিতেন, তাহা হইলে কোন গোল হইত না। কিন্ত »৮টা কুঁচের 'ওজন তোলা না করিয়া ইংরাজ-আইনে ১৮০ গ্রেণে তোলা প্রচলিত হইল তখন তাঁহারা সেই মুদ্রীকেই কবিরাজী তোলা করিয়া লই- লেন। এক্ষণে দেখা ষায় যে ১১টী কুঁচ না হইলে এক দুয়ানীর সমান ভয় না-_সেই জন্ঠ সংজ্ঞা বদলাইয়া ১২টী কুচ বা! রতিতে ১ এক মাষা বা দুয়ানী করি- লেন। ফলে দ্রীড়াইল এই যে ৮৮ ১২-৯৬ বূতিতে ১ তোলা হইল । মাগধ-মান অনুসারে ৪৮ রতিতে এক তোলা ছিল। কবিরাজ মহাশয়ের ইংরাজের তোঁলাকে কবিরাজী তোলা ধরিয়া আযুর্ধেদের তোলার দ্বিগুণ ওজন তোলা ব্যবার করিতেছেন। কিন্ত এই যে পরিবর্তন করিয়াছেন, তাহা বলিয়া কতিয়া নহে, পুরাণো সংস্কৃত শ্লোকের মাঝে লিখিয়া দিয়াছেন যে আজকাল ১২ রতিতে মাষা হয়। আয়ুর্কেদের এই প্রকার জটি- লতা ছাড়া আরও গোলমাল আছে, যাহা আবহমান- কাল হইতে প্রচলিত। যেমন কুড়ব বা অর্ধসেরের উপর যেখাঁনে জলীয় দ্রবোর পরিমাণ দেওয়া হইয়াছে, বাবচারে তা দ্বিগুণ দিতে হইবে । ৩২ সের জল বাবহার করিতে তইবে। ২ সের ঘিলিখিলে ৪ সের ঘি দিতে হইবে। যখন উৈজ্, ৯৬২২ ] বাংলায় জমির মাগে ছাত গজ, ক্ঠা, রলি, বিঘা এই পরগুলি কাবন্ধত হু। কিন্ত তাহার সং্জা স্থির নাই। ময়নসিংহে ৯৮ হইতে ২৭ ইঞ্চে এক হাতি হয়। ৭ হইতে ১৭॥ হাতে এক নল হয়। বাংলা দেশের মাপ (068015) যে কত রকম তাহা আমাদের সকলেরই কিছু কিছুজানা আছে। এক কাঠা চাউল বলিলে আমরা এক একজন এক এক রকম বুঝিব। এইবার মাদ্রাজ প্রদেশে প্রচলিত ওজন সম্বন্ধে কিছু বলিৰ। মাদ্রাজ গবর্ণমে্ট এতাবৎ এই ওজন পছন্দ করিয়া আসিয়াছেন-_ এ তোলায়--১ পলম্ঠ ৮ পলমে--১ সের-২৪ তোল! । ৫ সেরে-১ বিশ ৮ বিশে--১মণ-৪* সের, ১৪ তোলা। এই পলম ও তোলার পূর্বে অপর ওজন ছিল। ৫ তোলায় পলম বলিত। এক্ষণে নানা রকম তোলা ও পলম সের, বিশ, চলিতেছে । কর্ণাল ও কুডাপাতে ২* তোলায় সের; কর্ণালে ৬ সেরে বিশ, কুডাপাতে ৪ সেরে বিশ। অনস্ত- পুর ও বেলারী অঞ্চলে ২১ তোলায় সের ৬ সেরে বিশ, ৮ বিশে মণ। গঞ্জাম ও ভিজগাপটমে ২২ তোলায় সের। ভিজগাপটম অঞ্চলে ইংরাজী এভডু- পইজ ওজন ব্যবহৃত হয়, গ্রামেও নাকি পাউওড ওজনের পাথরের টুকরা ব্যবহৃত হয়। সমস্ত মাদ্রাজের কথা বলিলে ২* তোলা হুইতে ১০৫ তোলায় সের স্থান- বিশেষে ব্যবন্ধত হয়। পলম্‌ কোথাও ৩ তোলা, কোথাও ৬ তোলা, আবার কোথাও বা! ১০, ১২ ১৪, ১৫ তোলা । তিদিতেলীতে সের নাই, ১৪৪ গলমে এক ভুলাদ্ধ। সাধারণতঃ ২* মণে ১ কন্দি হয কিন্তু দ্িনিক্ষেলীতে ১ কান্দি তুলা--৫** পাউও, ৯ কাজি পেযাজ---৯*৭ * » কালি খইকা+.১২%৭ ॥ ভারতবর্ষে গ্রচলিত গুম ও মাপ-প্রণালী ১৩৭ মালাবারে ২৫ হইতে ৩৫ পাউণডে এক তুগাদ্‌ হয়। থক, বলিয়া এক ওজন জ্ধাছে, তাহা ১০৭ হইতে ২৫১ তোলায় হুয়। নরদারণ সরক্ষায়ে ৭ বাখোলে ১ ডেড এবং ২৮ ঝাথোলে ১ মণ, ৪* তোলায় রাখোল। দক্ষিণ আরকটে চিনাবাদাম, তৈল এবং থষ্টলেব জন্য কিলোগ্রাম ব্যবহৃত হয়। ন্বর্কারদের ৩২ গুজামণি (কুচ), ১ ভার বা প্যাগোভা। এই প্যাগোডা ওজন করিলে দেখা যায় যে, ও প্যাগোডা ১৮* গ্রেণেব তোলা হয়। কোথাও বা ১৬ নামে ১ প্যাগোডা হয়। গঞ্জাম, গোদাবরী, গন্টুর জেলায় ২ বিশমে-_-১ পক ২ পরকাক্--১ পদ্দিক! ২ পদিকে-_-১ আধিক ২ আধিকে--১ চিনাম। ইংরাজী তোলায় ওজন করিলে ৩০ চিনাম ১ তোলার সমান। লম্বাব মাপ-__বুটাশমাপ অনেক জায়গায় আবফাল চলিয়াছে। তাছাড়া দেশী গজও হাত ব্যবহৃত হয়। অনস্তপুরে ২* ইঞ্চে হাত, ভিজগাপটমে ১৯-২* ইঞ্চে হাত। দক্ষিণ আরকটে ১1০ ইঞ্চ মাপের এক ইঞ্চ ব্যবহার হু । কাণরাতে লম্বামাপের একক ১ অন্গুল এবং তাহা একটী টাকার বাসের সমান অর্থাৎ ১ ইঞ্চ। ২৪ অঙ্ুলিতে এক ময়লাকলু, ২৬॥ অঙ্কুলে এক ইন্করীকলু। কৃষ্চাতে ১৬ বিশামে এক গজ। তাই- জাগে ১৩ গিরাতে গঙ্ধ । মাছুরা, রামনদ, তিনিভেলীতে তালমুচাম্‌ নামে মাপ ব্যবহৃত হয়। ইছা ফোথাও বা ৩৩ ইঞ্চের সমান কোথাও বা ৩২ ইঞ্চেয় সমান। মান্রা্জে তরল পদার্থ সাধারণতঃ মাপে ব্যবন্ধত ছয়; ছুই একটা জিনিষ, যেমন ঘি, ওজনে বিক্রম হয়। হাস্্রাজ সহরে ঘি পাইকারীতে 'ওজনে ও খুচয়াতে মাপে বিক্রয় হয়। এই তরল যাপের;নাম ও আবতন ওজনের ভার অনির্দিষ্ট এবং এফ এক স্বাদে এক এক রফমণ দাবার একই নামে বিডির আরতদের মাপ ব্যবঘত হয়। বেমন “আদম” মলিয়া তাকে বে দাপ তাহাতে ১৩৮ মালসী ও মর্দকাশী . [৮ম বর্ষ--১ম খবর সংখ্যা . 44৪ কইতে ৭৫৪ আউন্স আল ধরে। ভ্রিচিনপলীতে ,৭ই* হইতে ৭৬৮. আরউন্দ জল ধরে এবং মাহুরাতে : ১ আদমে ১৩৭৫ আউন্দ জল ধরে। ভল্লম বলিয়া আর এক মাপ আছে, তাহাও ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণের সমান। ঘন মাপ--কিউবিক যেজার। মাদ্রাজ আজকাল অনেক স্থানে বুটিশ হুকিউবিক ফিট ব্যবহৃত হয়। আমরা যাঁহাকে “ফারা” বলি, মাদ্রাজে “পারা” বলিয়া সেই প্রকার মাপ আছে। ২০ পারাতে ১ পুটী, ৬০ পারাতে ১ গ্রেস্‌। রামনদে “তুচুমোলাম ও তিনি- ভেলীতে 'নোলাম+ বলিয়া যথাক্রমে ৩ কিউবিক ফুট, ও ১১৩৫ কিউবিক ইঞ্চের মাপ ব্যবহৃত হয়৷ মাপ ও ওজন যে কত সহ্ম প্রকার চলিত আছে, উপরোক্ত বাংলা ও মাত্রীজের কয়েকটামাত্র ৃষ্টাস্তে তাহার আভাষ পাওয়া যায়। সমস্ত ভারতবর্ষ দুরে থাকুক, এক প্রদেশে কি কি ওজন ও মাপ ব্যবহৃত হয়, তাহার আন্বপূর্ব্বিক বৃত্তান্ত দেওয়া এক প্রকার অসম্ভব। বুটাশ গবর্ণষেণ্টের চেষ্টা সত্বেও আজ এই অবস্থা । মোগল. বা হিন্দু আমলে ইহার অপেক্ষা কিছু খারাপ ছিল না, কেননা আর কি খারাপ হইতে পারে ? রেলওয়ে 'য়েট বলিয়া বাংলাদেশের ওজন অনেক স্থানে চলিতে সুবিধা পাইয়াছে, কিন্তু সমস্ত অসম্বদ্ধ ওজ- নের প্রচলনের তুলনায়, ইহা একপ্রকার না ধরিলেও চলে। কেনন! রেলের ওজন লইয়া কতজনের এবং কত দিনেরই বা দরকার? বড় বড় বেপারী, ধাহারা রেলে মাল আনা-নেওয়া করেন, তাহাদেরই রেলের খবরে দরকার-কিত্ব যে লক্ষ লক্ষ ছোট বাবসার়ী আছে, তাহার! রেলের তত খবর রাখে না। কোথাও কোথাও ভারত-গবর্ণমেপ্ট একটা ষ্ট্যাপ্তার্ড ওজন চা্াই- বার চেষ্টা করিয়াছেন) যেমন মান্রাজে পলম্‌ ও গ্লের এবং বিশ; মান্রাজে এ ওজনের শুদ্ধতা রক্ষা করিবার জন্ত ্যাম্পিং- টিপারও সরি হইয়াছিল এবং কোথাও কোথাও আছে। আকবরের সনয়ে যেমন হইয়াছিল - পূর্বতিন ওজন ও মাপ রদ করিয়া, .ইলাহি ওজন ও মাপ প্রচলনের চেষ্টার যেমন পূর্বের ওজন, ও মাপের লহিত নৃতন ওজন ও মাপ চলিতেছে-_ এক্ষণে 'ইংরাজের আমলেও তাহাই হইয়াছে__পুল্লাপৌর বদলে নূতন 'কিছু হয় নাই, তাহার উপর কিছু হইয়াছে ।. :"+: এক্ষণে ওজন ও মাপের একীকরণ মানসে ভারত গবর্ণমেণ্ট কি চেষ্টা করিয়াছেন ও করিতেছেন, সে সম্বন্ধে কিছু বলিব। ১৮৫৪ খৃষ্টাব্ধে ডিয়েক্টর-জেনারেল অফ পোষ্টঅফিস গবর্ণমেণ্টের নিকট জ্ঞাপন করেন যে, রেলওয়েতে বৃটাশ ষ্ট্যাত্ার্ড ওজন ব্যবহার হওয়ায় অন্থবিধা হইতেছে । সেই বৎসরেই রেলওয়েতে বাংলা দেশের মণ ব্যবহৃত হইবে গবর্ণমেপ্ট এ প্রকার বিধান করেন। ১৮০৩ খৃষ্টান ভারত গবর্ণমেন্ট মাদ্রাজ গবর্ণ- মেন্টের অন্থুরোধে একটা কমিটা গঠন অনুমোদন করেন। প্রত্যেক প্রদেশে একটা দ্বতঙ্র কমিটা হইবার প্রস্তাব হয়। যাহাতে লোকের বিরক্তিকর কিছু না করা হয়, সেক্রেটারী অফ ষ্টেট এ প্রকার সতর্কতা অব- লম্বন করিতে বলেন। ১৮৬৫ খুষ্টাব্বে প্রাদেশিক কমিটাগুলির রিপোর্ট সংগৃহীত হইলে গবর্ণমেণ্ট দেখি- লেন, সে নকল পরস্পর এত বিরোধী যে, তাহা হইতে কোনই কার্যকরী সিদ্ধান্তে আসা যায় না। এইজন্য অতঃপর গবর্ণর জেনারেল কলিকাতায় একটা সেন্টল কমিটী গঠিত করিতে চেষ্টা করেন। সেক্রেটারী অফ ষ্টেট এই প্রস্তাব অন্কুমোদন করেন এবং তৎসহিত “মেটিক কমিটী অফ বুটাশ এসোসিয়েসনেশর নিকট হইতে ভারতবর্ষে মেটি,ক-প্রণানী প্রবর্তন সম্বদ্থে মন্তব্য প্রেরণ করেন। তিনি জানান যে বুটাশ ওজন ভারত- বর্ষে প্রচলিত করা সমীচীন হইবে না। তিনি আরও বলেন যে, “6 স০710 16 8%801577% $0 6312018) & 88191 01 (9, 7১8৪৮ 0780৮0109] 109৫87৮ প্রকট সর্বাঙ্গ সম্পূর্ণপ্রণালী প্রবর্তন করাই উত্তম | ১৮৩৭ খৃষ্টাব্দে কর্ণেল গ্রাচী একটা পুক্তিক! প্রকাশ করেন, তাহাতে তিনি রকমারী ওজন বন্বন্ধে আলোচন! করেন। তিনি বলেন: যে, সমস্ত দেশেই "ওজন সম্বন্ধে আইন হইবার, পূর্বে এই... প্রকার 'গোলমেলে অবস্থা থাকে। এই সম বিচারণকরিলা তিনি বলেন চৈ, ১৩২২ ] যে, পুরাণে। সমস্ত ওঞ্জন ও 'নাঁপ উঠাইয়া দিয়া একটা নৃতন প্রণালী প্রতিষ্ঠিত করা সঙ্গত হইবে--এবং মেটি,ক প্রণালীই যে সে নৃতন প্রণালী হুইবে, তাহা শ্বতঃ প্রতীয়মান। ১৮৬১ সালের কমিটার অধিকাংশ সভ্যই এই মত প্রকাশ করেন, যে ইংলণ্ডে প্রচলিত ওজন ও মাপ ভারতবর্ষে গৃহীত হউক । বিলাতী ব্যবসার সুবিধা হইবে, এই কারণেই উক্ত মন্তব্য গৃহীত হয়। দুঃখের বিষয়, কমিটার অবিকাংশ সভ্য ভুলিয়া গিয়াছিলেন যে, বিলাতী ব্যবসা ছাড়াও দেশের অন্তব্ণাণিজ্যের জন্ত একটা ওজন আবপ্তক আছে। কর্ণেল স্ত্রাটী ও অপর ছুইজন সভ্য এই মন্তব্যে যোগদান করেন নাই। তাহারা অত্যন্ত দৃঢ়তার সহিত বলেন যে»মেটি,ক প্রণালী গ্রহণ করা হউক। এই প্রস্তাব ভারত-গবর্ণমেণ্টের নিকট .পন্থ'ছিলে ভারত-গবর্ণমেপ্ট অধিকাংশ সভ্যের মত প্রত্যাখ্যান করিয়া! মেটি,ক প্রণালী গ্রহণ অনুমোদন করেন। এই অর্থে এক কিলোগ্রামের ওজন অর্থাৎ ২২৭৫ পাউগুকে এক সের বলা হউক, স্থির হয়। ভারত গবর্ণমেন্টের এই প্রস্তাব সেক্রেটারী অফ. ষ্টেট অন্ধমোদন করেন। ১৮৭১ গ্রীষ্টাব্ধে এই মর্মে এক বিল পাশ হয়, কিন্তু তাহা সেক্রেটারী অফ ষ্টেটের নিকট গেলে তিনি বলেন যে [,070 [3071107০9% নুতন বড়- লাট হইয়া যাইতেছেন, তিনি গিয়া যাহা হয় করি- বেন। লর্ড নর্থক্রক বলেন যে, এই আইনের বাধ্যতা- মূলক সর্তগুলি রেলওয়ে সম্বন্ধে উঠাইয়া দেওয়া হউক-_ আর স্থির করেন যে, যদি রেলওয়ে কোম্পানীর! ইচ্ছা না করেন, তবে এ নৃতন /9181)6 &0৫ 306808:98 4১০৮ কাধ্যতঃ প্রয়োগ করা হইবে না। রেলওয়েরা পুরাণো মণ ব্যবহার করিতেছিলেন ; স্েইজন্ত এ বিষয় অতঃপর আর কিছুই হয় নাই। ১৯০১ সালে আবার এক নূতন পর্ক উপস্থিত হয়। সেক্রেটারী অফ. ষ্টেট মেটি,ক প্রণালী ভারতবর্ষে প্রবর্তন সম্বন্ধে যুক্তি সকল উল্লেখ করি গরবর্ণর, জেনারেলকে লেখেন যে ভারত- বর্ষে মেটি,ক 'পুালী গৃহীত হউক । '্ভারত গবরণমেষ্ট ভারতবর্ষে প্রচলিত ওজন ও মাপ-প্রণার্লা ১৩৯ হা, মেটিক প্রণালী ভাল বটে, কিন্তু এ দেশে মুদ্রাতে সম্ভবপর হইলেও ওজন প্রচলিত করা শক্ত। আর বলেন যে, ভাল ইংলগ্ডেই আগে মেটি,ক প্রণালী গৃহীত হউক, তারপর আমর! ভারতবর্ষের কথা দেখিব। . অতঃপর রেলওয়ে ওজন ক্রমেই চলিয়াছে এবং রেলের স্বার্থে আঘাত ন1! করিয়! ওজন পরিবর্তন বা ংস্কার করা আরও বেণী অসম্ভব হইয়াছে। ইতিমধ্যে বন্ধে গবর্ণমেপ্ট ১৮৭১ সালের আইন অনুসারে কিলো- গ্রাম ওজন গ্রহণ করিতে চাহিয়া ভারত গবর্ণমেপ্টকে লেখেন। ভারত গবর্ণমেণ্ট জবাব দেন যে, দে আইন কিছু নয়, বন্ধে গবর্ণমেপ্ট বদি কিছু গ্রহণ করিতে চাহেন, তবে রেলওয়ে ওজন লইতে হইবে। উপরন্ধ ভারত ভবর্ণমেন্ট বন্ধে গবর্ণমেন্টকে বলেন যে, ইচ্ছা করিলে তীঙ্থারা এই উদ্দেপ্তে মিউনিসিপাল আইনে এক দফা সর্ত বসাইতে পারেন যে, মিউনিসিপাল সীমার মধো ১৮৭ গ্রেণে তোলা ওজন ব্যবহৃত হুইবে। গবর্ণমেণ্টের এই চিঠিখানিতে যে পদ্ধতি বর্ণিত হুই- য়াছে, সমস্ত প্রদেশেই শাসনবর্তীগণ ওজন সম্বন্ধে কোন কথা ভারত গবর্ণমেন্টকে জিজ্ঞাসা করিয়া এই একই উত্তর পাইয়াছেন। অগ্যাবধি এই নিক্মমেই কার্ষ্য হইয়া আদিতেছে। অর্থাৎ ওজন সম্বন্ধে গবর্ণমেন্ট এই অন্ুজ্ঞা করিতেছেন যে প্রাদেশিক গবর্ণমেপ্ট ইচ্ছা করিলে মিউনিসিপাল এলেকা গুলিতে ১৮* গ্রেণে তোলা আইন দ্বারা চালাইতে পারেন। অতঃপর মাদ্রাজ, যুক্তপ্রদেশ ও বন্থে গবর্ণমেন্ট যখনই ওজন ও মাপ একীকরণ উদ্দেস্তে নিজ নিজ প্রস্তাব পাঠাইয়াছেন তখনই উল্লিখিত উত্তর পাইয়াছেন। বস্ততঃ- উল্লিখিত চিঠিখানাই আজকার দিনের চলিত ওজন সম্বন্ধে ব্যবহারিক আইন। ১৯১৩ সালে বস্বে কমিটী একটী রিপোর্ট প্রকা- শিত'' করেন, তাহাতে রেলওয়ে ওজন ব্যৰহার অন মোন করেন ইহাক় পরেই ১৯১৫ সালের “ওজন * মাপের কমিটা” গঠিত হইয়াছিল; তাহার রিপোর্ট তখন উপ্টা: বুৰিয়াছেন, জাহারা এই উত্তর দিলেন বে, * সম্প্রতি প্রকাশিত হইয্লাছে। এই গ্লিপোর্টে প্রসিডেন্ট? ১৪০ মানসী ও মণ্্বাণী [৮দ বর্--১ম খও্ড--২র সংখ্যা ও অপর একজন সভ্য যে মত দিয়াছেন, তাহার সার অন্ধ এই যে, রেলওয়ে ওজন ছাড়া অগ্ঠ কোন ওজন গ্রহণ করা যুক্তিযুক্ত নহে এবং মেটি,ক প্রণালী. এ দেশের উপযুক্ত নহে কেননা! লোকে বুঝিতে পারে না। এ ছাড়া দৈর্ঘ্যের মাপ ও জলীয় পদার্থের মাপ ইংরাজী ইঞ্চ ফুট ও গ্যালন রাখিতে বলেন । ' কমিটার এই ছুই- জন সভ্য তাহাদের গৃহীত সাক্ষ্য হইতে উপরোক্ত মত যুক্রিষুক্ত বলিয়া গ্রহণ করেন। কমিটার গঠন সম্বন্ধে পূর্বেই বলিয়াছি যে, তিনজন সত্য দ্বারা এই কমিটার কাধ্য হয়। তন্মধ্যে দুইজন--সিলবেরাড, 'ও রস্তমজী রেল-ওয়েটের পক্ষে ও তৃতীয় ব্যক্তি ক্যাম্পবেল, মেটি.ক প্রথালীর পক্ষে মত দিয়াছেন। যে সকল সাক্ষ্যের উপর সিলবেরাড ও রস্তমজীর মত প্রতিষ্ঠিত, সেই সকল সাক্ষ্যেরই উপর ক্যাম্পবেলের মত প্রতিষ্ঠিত। সাক্ষ্যের সারমর্ম রিপোর্টে গ্রকাশিত হইয়াছে। তাহাতে দেখিতে পাওয়া বাক্স যে, রকম রকম লোক রকম রকম মত দিয়াছেন এবং তাহা হইতে কোনই প্রমাণ্য উপসংহারে আস! যায় না যে দেশের সাধারণের বা ব্যব- সান্সীদের বা শিক্ষিত ব্যক্তির মত এই। কোনও উচ্চপদস্থ অভিজ্ঞ এবং শিল্প-ব্যবসায়ী সাহেব বলিয়া- ছেনবে ১৭৫ গ্রেণে তোলা, ২॥। তোলায় আউদ্দ, ১৬ আউন্দে পাউও এবং ১০* পাউণ্ডে মণ, এই প্রকার করা হউক; এই মতাবলম্বী অনেকে আছেন। আবার কেহ কেহ বলিয়াছেন ২ পাঁউণ্ডে সের, ২৫ সেরে কোক়্াটার, ১০* পাঁউণ্ডে হন্দর় হউক। অনেকে বলিরাছেন মেছিংক প্রণালী গৃহীত হউক। অনেকে বলেন বৃটীশ প্রণালী গৃহীত হউক । ছইজন এই মত উদ্ধার করিয়াছেন যে রেলওয়ে ওজন লওয়া উচিত, তৃতীয় ব্যক্তি মত দিতেছেন যে, সমস্ত. সাক্ষ্যের তত্ব ভাল করিয়া বিচার করিলে মেট্টিক প্রণালী গ্রহণ করা উচিত। এই শেঘোক্ত মত্তের সম্বন্ধে একটু বিশদ ভাষে বলিব । বিবেচনা পূর্বক সমস্ত বৈজ্ঞানিক ও লঙন্ত দেশখালী ভবিস্তৎ মঙ্গলের অন্ঠ মকর দিখেন ইছাই আশ! আছে। , বৃটাশ মাপের জটিলতা সম্বন্ধে বেশী কিছু না বলিয়া একটা হিসাব কিলেই সহজে বুঝা বাইবে বে বৃটাশ মাপ পদ্ধতি যে পরিমাণে জটিল, মেটিক পদ্ধতি সেই পরিমাণে সরল। মনে করুন ৯ ইঞ্চ চওড়া, ইঞ্চ পুরু ও ১১৭ ফুট লম্বা একথানা তক্ত! আছে তাহার কালি বাহির করিতে হইবে। ৯ ৩ ৩১৯৮১১৯৭ ৩৫১ শশা ১৫ শশিশশীশীটি ১ ১ ৭ লি শশা জজ পিপি ৯২ ৪৮১২ ৬৪ ৬৪ ১ রা ৯৭ পয়েন্ট যদি মেটি,ক প্ররণ্থালীতে এই প্রকার একখানা তক্তার কালি কষিতে হইতে হয় তাহ! হইলে ধরুণ ৯ সে্টিমিটার চওড়া ৩ সেন্টিমিটার পুরু * ১১৭ মিটার লম্বা স ৯১৩১৮ ১১৭ -৩১*৫৯ কিউবিক মিটার। আজকাল ধাহাদের কাঠের ব্যবসা করিতে হয় তাহারাই জানেন যে ফুট ইঞ্চ হইতে কালি করিয়া! কিউবিক ফুট বাহির করা কি সাংঘাতিক ব্যাপার। হয় অমনি করিয়া খাটিতে হইবে নয় ত রেডি-রেকনার কিনিয়া উদ্ধার পাইতে হইবে। ধাহারা এই তথাকথিত রেলওয়ে ওজনের পক্ষপাতী তীহারা বলেন যে ভারতবাসীরা এই ওজনের সহিত পরিচিত। একথা বলা ঠিক নহে, কেন না মান্রাজের লোক বাংলাদেশের ওজন সম্বন্ধে অজ্ঞ। তাহা- দিগকে ৪ ছটাকে সের শিখাইতে হইলে তাহাদের যে কষ্ট হইবে তাহার পরিমাণ বুঝিতে পারেন, যদি আজ আমাদিগকে শিথিতে হয় যে ৩৩ ইঞ্চে এক “তালমুচাম,” অথবা ২৪ অন্কুলে এক “মলয়াল কলু,” ২৬* অঙ্গুলে ১ *ইন্কিড়ি কলু* অথবা ২ পদিকে $অধিগ' ২ 'অধিগে? ১পচিন্নাম্৮। রেলওয়ে ওজনের পক্ষপা্তীরা আরও বলেন যে দেশের নিকট নামগুলি পরিচিত, সেইজস্ত নূতন ওজন টালান কষ্ট হইবে না। তা ছাড়া ১৮০ , পশ্রোথে তোলা ত ভারতে সর্বত্র জান! হইয়া গিক়াছে। চৈত্র, ১৩২২] কিন্তু বখন ১৮০ গ্রেণে তোলা! চলে নাই তখন এই নূতন তোল! ওজন চালান যেমন সম্ভবপর হইয়াছিল, এখন মেটিক ওজন চালান তেমনি সাধ্য হইবে। কেহ কেহ বলেন যে এই তোলা ওজনটা ভারতের দেশী জিনিষ, কিন্তু আমি পূর্বেই বলিয়াছি যে তোলা কথাটা! পুরাণে! হইলেও ওজনটা সম্পূর্ণ বিলাতী এবং তোলার উর্ধতন ওজন সের ও মণ বলিতে আমরা এক একজন এক এক রকম বুঝি। একথা পূর্বে বিশদভাবেই বলিয়াছি। এই তোলা সের মণের হিসাব অশিক্ষিত ও গ্রাম্য লোকের মনে রাখা বত কঠিন, মেটি.ক প্রণালী মনে রাখা তেমনি সহজ। যদি এই তোল! ও সের ওজন দেশের সর্বত্র চালাইবার চেষ্টা করা হয় ত্বাহা হইলে আর একটা গোল অবশ্থস্ভাবী। সাধারণে সের মণ বলিতে পুরাণো সের মণ (যখন মাদ্রা্জীদের ২৪ তোলায় সের) বুঝিবে ও ইহাতে অজ্ঞ লোকের বিড়ম্বনার অবধি থাকিবে না। যদি পরিবর্তন করিতেই হয় তবে পুরাণো নাম পরিবর্তন কর! সর্বাপেক্ষা প্রয়োজন কেন না তাহা হইলে নূতন ও পুরাণো ওজনে তুল হইবার সম্ভাবন! থাকিবে না। এটা আরও প্রয়োজন এই জন্ত যে, কমিটা প্রস্তাব করিয়াছেন, সহর গুলিতেই নৃতন ওজনের আইন কার্যকরী কর! হইবে; তাহা হইলে সহরে ও গ্রামে মাল খরিদ বিক্রয়ে ঝগড়া ও গোলের অন্ত থাকিবে না। আর এই নূতন প্রস্তাবিত তোলা, সের, মণ দ্বারা বহির্বাণিজ্যের কিছুই সুবিধা হইবে না। মেটিক প্রণালীতে সে বিষয়ে ঘরে বাহিরে কোনও তফাৎ থাকে না। মেটি,ক প্রপালীর অন্ত দশ রকম সুবিধার ভিতর একটা এই যে, মেটিকে ওজন, মাপ ও মণ পরিমাণ একই ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং একই ভাষায় ব্যক্ত করা যায়, ইহাতে সকলের বুঝিবার ও মনে রাধিবায় বড় স্ুবিধা'। মেটি'কে হিসাব করা ও রাখা কত সুবিধা তাহা ঘন মাপের উদ্লাহরণ হইতেই বুঝিয়াছেন। যি গবর্ণমেন্ট আইন করিয়া সরকারী কার্য্যের জন্ত মেটিু ভারতবষে প্রচলিত ওজম ও মাপ-প্রণালী ১৪১ প্রণালী প্রবন্তিত করেন তাহা হইলে সাধারণে দরকার মত নিজের ওজনের সহিত হিসাব করিয়া এক্ষণে যে স্থানে ষে ওজন চলিত আছে সেই ওজনেই ব্যবসা চালাইতে পারে। এই প্রকারে হিনাব কর! কষ্ট কিন্ত ১৮০ গ্রেণে তোলায় ৮* তোলার সের, ১ কিলোগ্রামের খুব 'কাছাকাছি। বড় দোকানদারের! যদি কিলোগ্রামের:সহিত পরিচিত হুইয়! পড়ে তবে আন্ত আস্তে ছোট দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের ভিতর ইহা প্রবেশ করিবে । অথচ কাহাকেও মানসিক প্রক্রিক্ধা দ্বারা সংজ্ঞা বদলাইয়া লইতে হইবে না। অর্থাৎ কাহাকেও এ প্রকার ভাবিতে কইবে না যে পুর্বে মণ বলিতে ২৪ সের বুঝিতাম, এক্ষণে ৪০ সের বুঝিব। বোম্বে ও মাদ্রাজবাসিদিগকে নিজেদের চিরকালের অভ্যস্ত ভাবিবার রকমকে বদলাইয়া ২৪ স্থানে ৪* বা ৪০ স্থানে ২৪ মনে রাখিবার প্রয়াস করিতে হইবে না। একটা পুরাণো' ভাবার রকম বদলাইঙ্জা নূতন রকমে ভাবা কত কঠিন তাহার আমবা সকলেই নিজ নিজ দৈনিক ব্যাপারেই পরিচয় পাইতে পারি। আজকাল বিহারীর জন্য বিহার, ওড়িয়ার অন্ত উড়িষ্যা, আসামীর জন্য আসাম ইহার একটা ধুন্না গুনা যাইতেছে ।, প্রতিবাদ সন্বেও এ ভাবটা গোপন নাই। “বাংলার ওজন” বা “রেলওয়ে ওজন” চাঁলাইতে চেষ্টা করিলে অবথা বাংলার উপর একটা ঈর্ষা আসিয়া কার্যে বিশ্ব ঘটাইতে পারে কিন্তু মেটি,ক প্রণালী সার্বজনীন বলিয়া ইহাতে কাহারও সে প্রকার মনোভাব হইবার হেতু নাই। মেটিক ওজনের ষ্ট্যার্ডার্ড ও মেটিংক ওজন ইত্যাদি যথেচ্ছ পাওয়া! যাইতে পারে--আর দেশে এত ঢালাইখানা আছে যে মেটিক ওজন পাইবার অনুবিধা হইবে এ প্রকার আশঙ্কা করা বায় না। দেশের হিতের জন্ত যদি এক রকমের ওজন মাপ সারা ভারতবর্ষে চলা প্রয়োজন হয়,তবে সে উদ্দেস্ত এক- মাত্র মেটিক প্রপালী গ্রহণেই সম্পন্ন হইতে পায়ে, বন্য পথ নাই। গবণমেপ্ট “ওয়েট নেজার” বিষয়ে বে অন্ধপন্থান ১৪২ মানসী ও-মর্শবানী | ৮ম বর্-_-১ম থণ্ড--২র নংখ্য। - করিয়াছেন তজ্জন্ত তাহারা অত্যন্ত ধনাবাদার্হ। কিন এই প্রকার কমিটা ও রিপোর্ট অনেকবার হইয়াও কার্ধ্যতঃ ফিছু করা হয় নাই। যুদ্ধের জন্য এদেশে এই প্রকার দরকারী বিষয়ে যে কিছু হস্তক্ষেপ করা হইবে এমন ভরসা কর! যায় না। এমন হুইতে পারে লর্ড হাঁড়িঙের বড় লাটত্বের শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারত গবর্ণমেপ্ট এ বিষয়ে তুলিয়া বাইবেন। আমরা এই' বিষয়ের পুরাণো! বৃত্তান্তে দেখিয়াছি যে বিষয়টি অত্যন্ত বাক্তিগত। কথনও ভারত গবর্ণমেণ্টের নান্নক সেক্রেটারীকে অনুরোধ করিয়াছেন যে এই প্রকার করা হউক, আবার কখনও বা সেক্রেটারী অফ. ষ্টেট ভারত গবর্ণমেন্টকে অন্রোধ করিয়াছেন যে মেটিক প্রণালী গ্রহণ কর-_কিন্ত শাসনকর্তার পরি- বর্তনের সহিত বিষয়টির সমস্ত বিচার ও ভাব বদলাইস্া গিয়াছে । কাজেই কমিটার রিপোর্টে কে কি বলিয়া- ছেন তাহা বড় একট! কিছু গুরুতর নহে কেন না গুছাইয়া দেখিলে রিপোর্টের মত এক দুই বা তিনজনের ব্যক্তিগত মত ছাড়া কিছু নহে। ভারত গবর্ণমেন্টের কর্তা ও সেক্রেটারী একমত হইয়া! ও তাহাদের কর্ম কালের মধ্যেই কিছু করিবেন এরূপ স্থির করিয়া বসেন তবেই এ বিষয়ে ভালমন্দ কোনও কার্যকরী আইন. হইবে । কিন্ত আজ হউক কাল হউক ভারত-. বর্ষকে এক ওজন ও -জাপ. প্রণালী প্রদান করিতে গবর্ণমেন্ট ধর্মুতঃ বাধা । কোনও না কোন দিন এ কার্ধ্য গবর্ণমে্টকে হাতে লইতেই হুইবে। যত বিলম্ব হইবে, পরিবর্তন জনিত সাধারণের অস্থবিধ! তত বেশী হইবে। গবর্ণমেন্ট এ বিষয়ে শীঙ্ঘ হস্তক্ষেপ করিলেই মঙ্গল। পূর্বে ১৮৬৮ খৃষ্টাব্দে 615397কারী সভাদের সহিত মত দিয়া! ভারত গবর্ণমেপ্ট যেমন দেটি.ক প্রণালী গ্রহণে কৃতসঙ্কর হইয়াছিলেন আশা! করি এবারেও গবর্ণমেন্টের সেই প্রকার মতি হইবে। কেননা এ বিষয়টা কোন দিকে কয়জন লোক মত দিয়াছে তাহা গিয়া বিচার করিবার ননহে। কাহার মতের মূল্য কত তাহাই বিচার করা উচিত। নানা লোকে নানা প্রকার মত দিয়াছেন, এক্ষণে সাধারণের ,কিসে হিত হয়, গবর্ণমেন্ট ইহা নির্বিকার চিত্তে নির্ধারিত করিবেন। স্টেট বা প্রাইভেট রেলওয়ের আপাততঃ কি ক্ষতি হইবে না হইবে, আশা করি তাহাই এ বিচারের কেন্দ্রস্থল হইবে না। তাহাতে গবর্ণমেপ্ট আপাততঃ রেলকর্তাদের _আনন্দবদ্ধন করিতে পারেন কিন্তু দেশবাসীর হিতের মূল্য তাহাদের আনন্দ অপেক্ষা অনেক অধিক। শ্রীসতীশচন্দ্র দাসগুপ্ত। চি বিদ্তা * চুরি বিদ্তা জগতের একটি প্রাচীনতম বিদ্ভা। বিশ্ব চক্রে কাটা পড়িল এবং আজ পর্যযস্ত যুগল মুত্তি ধরিয়া সৃষ্টির প্রথম অবস্থায়, পৃথিবীর অতি শৈশবকালে, ধখন ন্ুধাকরের উপর গায়ের ঝাল ঝাড়িতেছে। বাস্তবিক, মানুষ পণ্ড কীট পতঙ্গ কিছুরই সৃষ্টি হয় নাই, তখন চুরি বিদ্যা বিষয়ে পরম পুজনীয় দেবতাগণ মানুষের ঢের হইতেই এ বিস্বার চর্চা চলিয়াছে। শাস্ত্র পাঠে দেখিতে উপরে যান। আমুর্কেদাদি অন্তান্ত বিদ্যার স্তায় এ বিদ্যাও পাঁই.যে সমুদ্র মস্থনের সময়ে দেবদৈত্য উভয় দলে বিস্তর *ৎ আমরা তাহাদের নিকটই পাইয়াছি। শাস্ত্রে উদ্দাহরণের পরিশ্রম করিয়! সুধালাত করিল, কিন্ত দেবতার দল অভার নাই। দেবতাদের রাজা ইন্দ্র একজন পাক! নুধান্ঞাওটি চুযি করিয়া মোটা বুদ্ধি অসুর দলকে ফাকি চোর। ৫বচার। সগর রাঁজা কত আয়োজন সরঞ্জাম দিয়, বোর আন! নিজেরাই 'আত্মমাৎ করিলেন। এক কিয়! অশ্বমেধ ব্রের উদ্ভোগ করিল, আর ..অশ্বমেধের বেচারা দৈত্য চোরাই মাল উদ্ধার করিতে গিয়া. সথদর্শষ. ঘোড়াঁকে ধোড়াই চুরি ।: তারপর চোরাই বাল লক্কাইযা পাপ পীপাপীপিপাতী পিল পিপাসা “ক বিগত ২৩শে মা, সাহিত্য-সঙ্গতের, নবম আবিষেশনে পঠিত শসা পা ইজ, ২৩২২] রাখিলেন সেই গাতাল-পুরীতে-_নিরপদ্ধাধ কপিল মুনির কাছে। সেই ঘটনা লইয়া শেষে কত বন্ধাট ঘটল সভাহা নকলেই অবগত আছেন। | তারপর বৃন্দাবনের দেই চোরছুড়াষণি__বীকা! ঠাকুরটির কথা আর বেশী কি বলিব ?. তীর ননীচোরা, বসনচোরা ইত্যাদি নামেই ত ভক্তগণ বিভোর শুধু আমাদের দেশে নয়, সব দেশের দেবতাদের মধ্যেই এবিগ্ভার আদর দেখা যাঁয়। রোমীয় পুরাণশান্ত্ে দেখিতে পাই, দেবরাজ্যের সনোশ-বাহুক মার্কারি, জন্ম হইতেই চুরি-বিগ্তা-বিশারদ। ত্রাহার বয়স যখন কয়েক ঘণ্টা মাত্র, অর্থাৎ তাহার জন্সদিনেই, তিনি রোমীয় বিশ্বকন্মী ভলক্যান, দেবতার যন্ত্রপাতি, যুদ্ধ দেবতা মার্সে্র তরবারি ও জুপিটারের রাজদণটি চুরি করেন। জুপিটারের বন্জটিকেও চুরি করিতে গিয়া- ছিলেন, আঙ্গুল পুড়িবার ভয়ে তাহা পারিয়৷ উঠেন নাই। একবার বাল্যাবস্থাতেই তিনি প্রণয়-দেবতা কিউপিড্‌কে মন্লযুদ্ধে হারাইয়া দেন। ভীনাস্‌ দেবী তাহার বীরত্বে মুগ্ধ হইয়া তাহাকে আদর করিয়া আলিঙ্গন করেন। বালক মারারি সেই অবসরে ভীনাসের রত্বখচিত কোমরবন্ষটি ক্ষিগ্র হস্তে অপহরণ করেন। মার্কারির পুত্র অটোলিকস্ও পিতার উপযুক্ত সন্তান। তিনি একজন খ্যাতনামা গরুদচার ছিলেন। বাযুদেবতা ইওলসের পুত্র সিসিফস্‌ একবার তাহার উপর বাটপাড়ী করিয়া তার চোরাই গরুগুলি চুপি চুপি সরাইয়া লইয়া যান। অটোলিকস যখন দেখিলেন যে তার চেয়েও চুরি বিদ্যায় অধিকতর বাহাদুর আছে, তখন তিনি এত পুলকিত হইলেন যে নিজের আদরিণী কন্ঠা অটিক্লির সহিত সিমিফসের বিবাহ-দিলেন। , মানব-সমাজেও বিস্তাটার চর্চা নিতান্ত মন্দ হয় নাই। পুর্বকালে,ভারতবর্ধে অস্থান্ প্রয়োজনীয় বিদ্যার সঙ্গে সঙ্গে এ বিস্তারও বেশ বৈজ্ঞানিক ভাবে অনুশীলন হইস্বাছিল.। সংস্কত দমুচ্ছক টিক” নাটকে চারদত্তের টুরি করিষার.হমরে উ্ি পাঠে জানা বায় ষে, সেকালে এ বিছভায় একটা রীতি শান্ত ছিল। কিন্তু অতাণ্ঠা ১৪৩ আমরা পুর্ব পুর্কষগণের পরার সন্ত বিস্তায় সঙ্গে লগে এ অমূল্য বিস্তাও এক রকম হান্লাইয়। বলিয়া আছি? তবে গুনিয়াছি আমাদের পৃজনীয় আচার্য্য মহামহোপাধ্যায় 'হর প্রসাদ শাস্্ী মহাশয় তিব্বত অঞ্চল হইতে প্চৌরশাস্্র" নামক একখানি অতি দুপ্রাপা গ্রন্থ নাকি উদ্ধার করিয়! আনিয়াছেন। এ অমূলা শীস্্গ্রন্থের তিনি এ পর্য্যন্ত কোনও সদ্বাবহার কৰিয়াছেন কি না তাহা আমাদের জান! নাই। তৰে মাশ! করি মাননীয় আচার্য মহাশয় শান্ত্রটি শীগ্রই সাধারণে প্রচার করিয়া মানব-সমাঁজের প্রস্তুত হিতসাধন করিবেন। যাহা হউক, শান্্রটি লুপ্তপ্রার হইলেও কার্ধযটি এখনও নানা মৃত্তিতে বিরাজমান আছে। বর্তমান কালেও সিঁধচুরি, পকেট মারা, ঠেঙ্গাইয় কাঁড়িরা লওয়, ইত্যাদি নানাবিধ চুরির প্রচলন দেখা! যায়। চুরির বিষরও নান! প্রকার। টাকা কড়ি, তৈজস, অলঙ্কার এমন কি স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে--এসব চুরি ত নিত্যঘটনা | পুকুর চুরির কথাও শোনা গিয়াছে । একবার এক গ্রবল-প্রতাপ জমিদার তাহার বিপরীত পক্ষের সহিত দাঙ্গা হাঙগামা করাতে ছইট ঢোক খুন হয়, এবং দেহ দুষ্টটাকে এক পুষ্করিণীতে ফেলি দেওয়া হয়। বিরুদ্ধ পক্ষগণ থানায় যাইয়া খবর দিল ষে তাহাদের ছুইজন লোককে খুন করিয়া পুকুরে ফেলা হইয়াছে । থাঁন! অনেক দূর, তাহার উপর মফঃস্বল পুলিশের ধীর মন্থর চাল) তদারকে আসিতে কিছু বিলম্ব হইল। ইত্যবসরে সেই ছুর্দান্ত জমিদার পুকুরটি একদিনের মধ্যে ভয়াট করিয়া তাহার উপর ঘাসের চাপড়া বসাইয়! পার্ের মাঠের সঙ্গে এক করিরা দিলেন। ফরিয়াদীরা তির গ্রামের লোক,তাহারা দেখাইতেই পারিল না যে কোথায় পুকুরটা অবস্থিত ছিল। বারই তাহার মামলা টিকিলনা। অবশ্ত এ গল্পটার সত্যতার লে আমি, ঘিঠিক' বলিতে পারি' নাঁ। কিন্তু পুকুয় চুরি না দেখিলেও একবার একটা বাড়ী টুরির ব্যাপার দেখিয়াছিলাম বটে। সেটাও পুকুর চঙ্গির চেয়ে কম বাহাহ্‌রীর . বিষদ্ধ নয়? ১৪৪ কজিকাক্চার কোনও বিখ্যা্চ গনী হ্যক্কির ত্যাহ- বাজার অঞ্চলে একখাদি ভাড়াটিয়া বাড়ী ছিল। কয়েক মাস তাহাতে ভাড়াটির! না থাকাতে বাড়ীখানি বেমেরা- মত্ত অবস্থায় খালি পড়িয়া থাকে । ইতাবসয়ে একজন ভদ্্রবেশধারী পাকা চোর, যাহার! পুরাতন বাড়ীর মাঁলমশলার কারবার করে এই রকম কয়েকজন ম্বাবমাদারের নিকট গিয়া বলে, “আমার একটা পুরাণো বাড়ী ভাঙ্গিয়! ফেলিয়। সম্পূর্ণ নূতন বাড়ী করিৰ, আপনি পুরাপো বাড়ীটার মালমসলাগুলা কিনিবেন কি?” সন্তা দর শুনিয়া বাবসাদার তৎক্ষণাৎ রাজী ভইল, আর পরদিন হইতে লোকজন গঞ্চরগাড়ী ইত্যাদি অইয়! কার্ধারস্ত করিয়া দিল। অব লোকে একট' বাড়ী খরিদ করিতে হইলে অনেক অনুসন্ধান করে বটে, কিন্তু বাড়ীর মালমসলামাত্র খরিদ করিতে কিছু আন্ুসন্ধানের প্রয়োজন হয় না। বিক্রেতার ভদ্র- বেশই যথেষ্ট। প্রায় কুড়ি পচিশ দিন ধরিয়া নির্বি্কে ক্ষার্ধা চলিল। বাড়ীর মালিক সেখান হইতে দূরে বাঁস করিতেন, কাজেই তাহারা কোনও খবর পাইলেন না; আর কাঁজটা এমুন প্রকাশ্তভাবে হইতে লাগিল হবে পাড়ার কেও কোন সন্দেহের কারণ পাইল না। ঘাড়ীখানি যখন সম্পূর্ণ ভাঙ্গ! হইয়া মালমসলা সমন্ত স্থানাস্তরিত্‌ হইয়া গিয়াছে, সেই সময়ে একদিন বাড়ীর মালিকের পুত্র পার্থ রাস্তা দিয়া বাইসিকেল চড়িয়া যাইতে যাইতে ভঠাৎ দেখিল যে তাহাদের বাড়ীখানা ছলাদিনের রাত্রপ্রাসাদের মত ধরণীর বক্ষ হইতে একেবারে অস্তহিত হইয়া, সে হাত্রগায় শুধু একটা প্রকাণ্ড মাঠ পড়িয়া আছে। তাহার পর পুলিশের অনেক চেষ্টায় অপরাধী ধর! পড়ে । কিনব এই পুরুরছুরি বাড়ী-চুরিয় চেয়েও বড় এর রকম চুরী জআছ্ে-_ সেটা হচ্ছে ভাব চুরি_ভিস্তা চুরি। এ। টু্দিটা পাছিকা-গতেই প্রচলিত। পরের চিন্তার ফল খেগানুষ লিজের বলির! চালান, এ বিস্তাটা কাতের সমস্ত সাহিত্যেই প্রচলন আছে। গত্য- জ্যতের গদি ভাষা সংস্কৃত হইত আনত কিবা, ৮ বাননী ও. বর্রধাদী (লহ বর্ব--১ব খও--২র সংখ্যা ক্ষোন৪ ব্বেশের কোনও লাহিত্য নাই, বেখালে এ উপস্রবেতধ অভাব । পরের' দেখেয় কথ! লইন! নাড়া- চাড়া না করিয়া যদি নিজেদের দেশের সাহিত্যের দিকে দেখি, তাহা হইলেও এ চুরির বাহুল্য দেখিরা স্তস্তিত হইয়া যাইতে হয়। কি প্রাচীন, কি আধুনিক, কি ছোট, কি বড় এমন ফোন লেখক পাওয়া দুষ্ষর, ধিনি সম্পূর্ণভাবে এ দোষ বর্জিত। অবহী এমন হইতে পারে যে একই ভাব, একই চিস্তা বিতিন্ন পঙ্ডিতের মনে বিভিন্ন সময়ে উদয় হইয়াছে । ইংরাজীতে একটা কথা আছে “91986 মাত 18100” অর্থাৎ বিশাল বুদ্ধি- শালী ব্যক্তিদের চিন্তা একরকম হুইয়া মিলিয়! যায়। কিন্ত অনেক সময় সাদৃশাটা এমন হয়, সেটা যে ইচ্ছাকৃত চুরি, তাহা বুঝিতে দেরী লাগে না। ছুই একটা সর্ব জনবিদিত উদাহরণ দিয়া কথাটা বলিবার চেষ্টা করি। ধরুন জয়দেবের সেই মদনের প্রতি বিরক্কিণীর উক্তি__ “্ৃদ্দিবিলসিতা হারে! নায়ং তুজজমনায়কঃ কুবলয়দলশ্রেণী কণ্ঠে ন সা গরলছ্যতিঃ। মলয়জরজোনেদং ভন্ম প্রিয়ারহিতে ময়ি প্রহব ন হরব্রান্ত্যানঙ্গ ধা কিমুধাবসি ॥” বিগ্াপতির শ্রীরাধিকার বির বর্ণনায় সেই ভাবেরই ঠিক বাক্যে বাক্যে পুনরুক্তি__ কতিন্থ' মদন তনু দহুসি ছামারি। হাম নহে শঙ্কর, সু বরনারী ॥ নছি জট৷ ইহ বেশী বিভঙ্গ। মালতীমাল শিরে, নহ গঞ্গ ॥ মোতিমবদ্ধ মৌলি, নহু ইন্দু। ভালে নন নহ, সিশ্দূয় বিন্দু ॥ কে গরল নহ, মূগমদ সার। নহ ফণিরাজ উরে, মণিছার । নীল পটার, লহ বাধ ছাল। ফেলিক রুষল ইহ, মা! হয় কগাল ॥ বিষ্চাপতি করে এ হেন খুর। ,খ্বলে ভার নয, মলহজ পণ চৈত্র, ১৩২২] তার পর প্রসিদ্ধ কবি রাম বসু মহাশয়ের গানে দেখুন” “হর নহি হে, আমি যুবতী, কেন জ্বালাতে এলে রতিপতি ? কোরো না আমার দুর্গতি | বিচ্ছেদে লাবণ্য হয়েছে বিবর্ণ, ধরেছি শঙ্করের আকৃতি ) শ্গীণ দেখে অঙ্গ, আজ অনঙ্গ, একি রঙ্গ হে তোমার ! হর ভ্রমে শরাঘাত কেন করিতেছ বার বার? ছিন্ন ভিন্ন বেশো দ্দেখে কও মহেশো, চেন ন] পুরুষো প্রকৃতি । হাঁয়, শুন শন্তু-অরি, ভেবে ত্রিপুরারি, বৈরী হয়োনা আমার ।৮ ংস্কতে একটি উদ্ভট কৰিতাও ঠিক এইভাবে আছে, তবে সেটা জয়দেবের পৃর্ব্রে বা পরে বিরচিত, তাহা ঠিক বলিতে পারি না। আর 'একটি সংস্কৃত শ্লোকে আছে-__ লোচনে হরিণগর্বমোচনে মা বিদ্ষয়নতাঙ্গি কজ্জবলৈঃ শায়কো সপদি প্রাণহারকো কিং পুনষি গরলেন লেপিতং ॥ তাহা হইতে নিধু বাবুর “কাজল নয়নে আর দিওন! কখনো শরে কেবা নাহি মরে, বিষ-যোগ তাহে কেন ?” ইত্যাদি সুবিদিত গানটি রচিত হইয়াছে । কালি- দাসের-__ রি “প্রাতাপোহগ্রে ততঃ শব্দঃ পরাগন্তদনস্তরম্” কথাটি লইয়া মাইকেলের' “চলিছে প্রতাপ অগ্রে শব্ধ তার পরে, তদন্ুপরাগরাশি”__সকলেই অবগত আছেন । বস্ততঃ সংস্কৃত প্লোকের ভাব লইয়! বাঙ্গালায় সঙ্গীত বা কবিতা রচন! ভরি তূরি দেখা যায়। অধিক উদা- হরণ দিয়া প্রবন্ধ-কলেবর বুদ্ধির প্রয়োজন নাই। ৮. ২৯ চুরি বিদ্যা ১৪৫ আর আমাদের দেশের বন্তমান সাহিতা হইতে উদাহরণ দিয়া আর আপনাদের সময় নষ্ট করিতে চাই না। কারণ উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম যে দিকে চাহিবেন, সেই দিকেই দেখিবেন চুরির বিপুল শত দামোদরের বন্যার গ্ঠায় প্রবল বেগে প্রবাহমান । ঠক বাছিতে গেলে গাঁ উজাড় হইবার সম্ভীবনা। তা ছাঁড়া জীবিত লেখকদের সঙ্গন্ধে সত্য কথা বলিতে গিয়া! হয়ত মান- হানির দায়ে ঠেকিয়া, রোজা ভইয়া রোগী হইতে হইবে । সাহিতাক চুরি স্ধন্গে এ সামান্ত প্রবন্ধে আর বেণী কথা বলা চলে না। কাঁরণ এ বিষয় বিস্তারিত বলিতে গেলে একখানা বড় গ্রন্থ ভয়। বুতরাং অন্যান্ত চুরির কথাই বলি। যেমন অন্ঠান্ত জাতির একটা একপ্রাণতা বা সমান্ভূতি বিগ্ধমান থাকে, চোরজাতির মধ্যেও সেটা যথেষ্ট দেখা যায় । তাই আমাদের কথায় বলে_ চোরে চোরে মাস্ভৃত ভাই । : ইয়ুরোগীয় চোরেদের মধ্যে কতকগুলা ভদ্রতার নিয়ম আছে, তাহ! সন্ত্রাম্ত চোর মাত্রই মানিয়া চলে। তাই বলে-_1)679 18 1১07002 ৪৮81 £00017086 0716ড০ন, তবে অন্তান্ত জাতির মত ইহাদের মাধো9 বিশ্বাসঘাতকের অভাব নাই। নতৃৰা 5০৮ & 00161 00 08101, % 0191--এ প্রবাঁদ-বাক্য হইত না। আমাদের দেশের পুলিশও এই কৌশলে চোর ধরিবার চেষ্টা করে। সর্ধস্থানেই পুলিশের মাহিন! করা কতকগুলা পুরান পাকা চোর থাকে__ইহাদের [7109৮ বলে | প্রধানতঃ ইহাদের সহায়তাতেই পুলিশ চোরের সন্ধান করে। অন্তান্ত সমাজের হ্যায় চোর-সমাজেও জাতিভেদ বিলক্ষণ প্রবল। ক্ষত ক্ষুদ্র চোরের অর্থাৎ গাড়,চোর, ঘটিচোর, ছিশচকে চোর ইত্যাদি উঞ্ছবৃত্তি-পরায়ণ ব্ক্তি- গণ তন্কর-সমাজে নিতান্তই ঘ্বণ্য। কিন্ত বড় বড় চোরেদের সম্মান, শুধু চোর সমাজে কেন, সরকার বাহা- ছরের কাছেও কম নয়। একটা প্রবাদ আছে যে ছুই চারি টাকা চুরি করিলে জেল হয় কিন্তু যে লক্ষ ১৪৬ টাকা চুরি করিতে পারে, তাহার কোন সাজা হয় না। উদ্দাহরণ দিয়া কথাট! বুঝাইতে সাহস করি না__-তবে কথাটা যে একেবারেই ভিত্তিহীন, এমনও মনে ভয় না। তাহার পর জেলে গেলেও বড় চোরেদের বেশী সম্মান । ছুই চারি মাসের জন্ত কেহ জেলে গেলে তাহাকে খাটিতে খাটিতে প্রাণাস্ত হইতে হয়, কিন্ত বড় বড় চোরের! অর্থাৎ যাহাদের দ্বইচারি বৎসর জেল হয়, তাা- দের অবস্থা অনেক ভাল। কিছুদিন খাটিবার পরই তাহাদের 0০৮ অনাণুশ করিয়া দেওয়া হয়। তখন তাহারা নিজেরা কোন পরিশ্রম না করিয়া, শুধু ছোট ছোট চোরেদের উপর কর্তৃত্ব করে। ইহাতে বুঝ! যায় যে, আমাদের গুণগ্রান্তী সরকার বাহাদুর মহত্বের আদর ষথার্থ ই জানেন। চোর সমাজের জাঁতিভেদের আর একটা লক্ষণ এই, যে চোর যেরূপ ভাবে চুরি করিয়া আসিতেছে, সে চিরদিন সেইরূপ ভাবেই চুরি করে। কলিকাতার ডিটেকটিভ বিউরোর ভিতর পুরাতন চোরোদের 'একটা ছবির গ্যালারি আছে । তাহাতে বিভিন্ন প্রকুহ্িব চোরেদের ছবি বিভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ আছে। এক শ্রেণী 177১8%) 7০785 001৮৮৮- তাভারা আন সাহেবদের বাড়ী চুরি করে। দিঞগাগগ্ঠ (19508 শুধু, রেলপথে চুরি করে, কদাচ অন্তর যায় না। [১০ [০০৮৪1৪-_ শুধু গাঁট কাটিয়াই জীবিকানির্ববাহ করে। 7১০15০৪7৪--পথিকের সহিত ভাব করিয়া! বিষ মিশ্রিত খাবার বা পান খাওয়ায়, তারপর সে অজ্ঞান হইলে তাহার যথাসর্বস্থ চুরি করে। 0101-58 ০-0805926 )1%6৪-__ভিড়ের মধো ছেলেদের গাত্র হইতে গভন! অপহরণ করে। 70:81ঘ8-__সিধ কাটিয়া বা অন্য উপায়ে গৃহস্থের বাড়ী ঢ,কিয়া জিনিষ-পত্র চুরি করে? এইরূপ বিস্তর শ্রেণীবিভাগ আছে। কেহ কাহারও কার্যে হাত দেয় না--যে যার নিজের বৃত্তি লইয়াই থাকে। সেদিন একজন পুরাণো চোর পায়রা চার করিয়া ধরা পড়িয়াছিল। তাহার পুব্ব ইতিহাস পাঠে দেখা গেল যে সে তৎপূর্বে ছয়বার সাজ! পাইয়াছিল, মানসী ও মর্ন্মবাণী ধরুন, [৮ম বর্-_-১ম থণ্ড--২য় সংখ্যা ছয়বারই পাররা চুরির অপরাধে । একজন দেখিলাম সাতবার জেল খাটিয়াছে, সাতবারই সে গৃহস্থের বাটার ংলগ্ন লোহার নল ভাঙ্গিয়া চুরি করিয়াছিল । এক- বার এই কথা লইয়া একটা বড় কৌতুককর ঘটন! তইয়াছিল। পুলিশ একজন পুরাতন চোরকে চুরির উদ্দেস্তে ঘুরিয়া বেড়াইবার অভিযোগে চালান দিয়াছিল। পুলিশের লৌক এক গোছ।! চাবি বাহির করিয়া বলিল যে, চাবির গোছাটি আসামীর নিকট পাওয়া গিয়াছে । চাৰির গোছা! দেখিয়াই তস্কর-প্রবর মহাক্রোধে বিচারককে সম্বোধন করিয়া বলিয়া উঠিল, “হুজুর, এ সব ঝুটবাত হ্যায়। হাম পকেটকা কাম করতা ভায়, চাবিকা কাম কভি নেহি” করতা।” বাস্তবিকই দেখা গেল যে লোকটা! পুর্বে যতবারই সাজা পাইয়াছে, তাতা পকেট মারার জন্য, অন্য কোন প্রকার চুরি কখনও সে করে নাই। বিচারক না বিশ্বাস করিলেও, অপর সকলেই বিশ্বাস করিয়াছিল সে বেচারা সত্য সতাই “পকেটকা কাম” করিয়াই খায় বটে, চাবির কথাট! সম্পূর্ণ মিথা। এ সব হইতে বুঝা যায় যেজাতিভদের বাধনটা অনা সমাজর আপক্ষা তঙ্গর সমাজে কম নান। ভাবে চৌর্যাবি্থা বিষয় আমাদের দেশের লোক যুই দক্ষতা দেখাক না কেন, বিজ্ঞানবলগবিবিত ইউরোপের তুলনায় আমরা অনেক পশ্চাতে পড়িয়া আছি । বিলাতী চোরেদের বৈজ্ঞানিক যন্বপাতি দেখিলে অবাক হইতে হয়) আমাদের চোরেরা ইলেকটি.ক ড্রিল, আটোমেটিক লগ্ন হতাযাদির ত ব্যবহারই জানে না। বিলাতের স্কটল্যাগ্ড ইয়ার্ড মিটজিয়মে বিখাতি চোরদের নিকট প্রাপ্ত যন্ত্রগুলি সুরক্ষিত আছে । সে গুলির ছবি দেখিলে ইউরোপীয় বুদ্ধির প্রশংসা না করিয়া থাকা যায় না। খ্যাতনামা ফরাঁসী মানবতত্ব্্টো মসি'ও ছুবোয়া বলেন যে, মানবগণ অপেক্ষা মানবীগণই নাকি চুরি বিষ্ঠায় কিছু বেশী স্ুুণিপুণা । মনচরি গ্রাণচুরির কথা নহে, সোণাব্পাটা ঘটিটা বাটিটা চুরি সম্বদ্ধেই কথাটা বলিয়াছেন । কথাটা! সত্য কি মিথ্যা, বলিবার ক্ষমতা চেএ, ১৩২২ ] বসন্ত₹-আগমনী। ১৪৭ আমার নাই। তবে অবলাজাতির চোখে মুখে কেমন 'একটা চুরি চুরি ভাব মাখান দেখা যায়, তাহাতে মনে হয় যেতীহাদের এবিষয়ে একটা ভগবদাত্ত শক্তি আছে-_ চ্চা করিলে তাহারা এ বিদ্যার আমাদের অপেক্ষা অধিকতর পটায়সী হইতে পারেন । ধাহারা কলিকাতার চৌরঙ্গী অঞ্চলের দোকান গুলিতে সুবেশ ও সুন্দরী হউরোপীয় মহিলাদের দ্বারা গ্ধদ্রব্যের শিশি ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অলঙ্কারাদি চুরির সংবাদ রাখেন, তাহারা বোধ হয় এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত হইবেন। চুরিবিগ্ভা সম্বন্ধে আমাদের দেশে একটা প্রবাদ বাক্য আছে_টুরিবিগ্ভা বড় বিগ্া যদি না পড়ে ধরা ।” বাস্তবিক এ বিষ্ঠাটার এখানেই খুঁতি। খুষ্টায় ধম্মে ঈশ্বরের দশটি 'আদেশ আছে-_-পরস্বাপ- লেখক বলেন যে, এই সমস্ত আদেশের একটি ০01গযে হওয়া উচিত 41)০0 00৮0৪ 108810 0.৮-যাহাই কর ধরা পড়িও না। ধরা পড়িলেই যত গোল। বাস্তবিক মানুষের সমাজে পাপের শাস্তি নাই, ধরা পড়ারই শাস্তি। মান্ুষ ধত পাপ করে, সমাজের বিচারে যদি সেই সমস্ত কার্ষোর শান্তি বিধান হইত, তাহা হইলে এই বিশাল ধরণীর অদ্ধেকটা জুড়িয়া একটা বিরাট জেলখান' তৈয়ার করিতে হইত, এবং তাহার ভিতর কত সাধু সন্নাপী কত প্রাা মহারাজা রায় বাহাছবর, দেশের ও সমাজের কত নেতার স্থান নির্দিষ্ট হইত তাহা কে বলিতে পারে? জীবন-মহাসিদ্ধুর ওপারে এই রকম একটা গেলখানা তৈয়ারি আছে, তার সংবাদ আমরা এখনও হয় ত ভরণ করিও না, মিথা কথা কভিগ ন!, পাভিচার করিও গান না। না হতাদি। আজকালকার কোণ বিখাত ইংরাজ শ্লীমনে।ঙগমোহন বন । বসন্ত-আগমনী যাই-যাই করে? শীত চলে গেল সেদিন কুহেলি-গ্রাতে, আজি সন্ধ্যায় বসন্ত এল পঞ্চমী টাদ সাথে। কতদিন পরে আজিকে ফিরিল ধরণনার বরণীয়, দক্ষিণ বায়ে উড়ায়ে ছড়ায়ে পরাগ-উত্তরীয় | রাজার নকিব বসন্ত পিক ফুকারিল দিক্‌ পথে__ হয়েছে সময় খতু-অধিপের আসিবার ফুলরথে। পতঙ্গ-পাখী-মধুপপুঞ্জে ভরিয়াছে দশদিশি, মাতাল বাতাস নেশ! বিলাইছে গানে ও গন্ধে মিশি+ । সারাদিনমান গাহিয়াছে গান বসন্ত-আগমনী, অরুণ উঠেছে তরুণ বয়ান নবীন আশার খনি। পল্পব মুখে চুম্বন মম, আলোকের পিচকারী, সুরভি নেশায় মশএ$ল্কর। বাসন্তী ফুলঝারি _- আত্রমুকুলে ভরেছে ছুকুল সকল বনস্থলী, ্ট গ্রামপথে-পথে সজিনার ফুলে দিয়াছে লাঙ্জাঞ্জলি। আলিপনা একে বর্শন্তশ্রী-পঞ্চমী আবাহন হয়ে গেছে আজ-_ঘরে ঘরে পুজা মঙ্গল আয়োজন। , কাননে কাননে শুনিয়া ফিরেছি সকল পাখীর শিল্‌, ধান্রিক্ত ক্ষেত্রসীমায় আহরি যবের শীষ । স্তব্ধ গভীর নিথর সলিলে আকাশ দ্নেখিছে মুখ, গুঞ্জনভরা বাতাসের শ্বামে কভু বা কাপিছে বুক; ডাহুক ডাহুকী পক্ষ ভিজায়__-এমন সরসী তীরে, আদ্র শীতল মৃত্তিকা পরে শরবনে এন ফিরে। আতপু দিবা দ্বিপ্রহরের আলোক-সদিরা পিয়ে রসালসে দেহ এলায়েছি মোর ছায়াতরুতলে গিয়ে । শিয়রে আমার চাহিয়াছে ছুটি আখিসম নীল ফুল, তাহারি স্বপন দেখেছি জাগিয়া কেবলি করেছি ভুল। ঠাথ দিয়ে মবে ঘরে ফিরিয়াছি দিবসের পরিশেষে বালকের মত বাকস্‌ বৃত্ত চুষিয়া আপনি হেসে; ধূলার উপরে দেখিলাম ছবি অফুট রেখায় আকা পাশে পাশে মোর চলিয়াছে ছায়া ; মদনের ধনু বাক , উদদিয়াছে টাদ-_দেখিস্ু তখন আকাশের পাঁনে চাহি, রহস্যলীল মাঠ বাট ক্ষীণ জ্োতমায় অবগাহি*। * ১৪৮ মানসী ও মন্মবাণী [৮ম বধ--১ম খণ্ড২য় সংখ্যা বনবালাদের কবরীকুন্থম ঘোমটা আপারে ঢাকা, বনসৌরভ কোনমতে তবু বায় না লুকায়ে রাখা । নেবুমঞ্জরী মন্থর বাস অন্তরে গিয়ে পশে, কেদারবাহিনী দখিন বাতাসে কত কথা কহিল সে! কতদিন পরে ঘরে ঘরে আজ বাতায়ন খুলিয়াছে, সোহাগিনী ওই--কবরী গুচ্ছপাশে তার গুলিয়াছে। ঝিরঝিরঝির বহিছে সমীর বাশীর রাগিণী ভাসে- আজিকে চাদিনী চাদোয়ার তলে প্রাণ গুলে কারা হাসে । এমন সময়ে দি কেহ ডাকে “প্রিয় মোর, প্রিয়তম-_” সঙ্গীতে পারি উত্তর দিতে প্রতিধ্বনির সম। ূ্‌ মরমের কথা কহেনি যে জন-_আজিকে কহিবে যেসে গু কঠিন হৃদয় হইবে কৃতার্থ ভালবেসে । মনে হ'ল আজ জীবনের বত নিরাশার পরাভব-- রীন রজনী রডীন বাসনা, কিছু না অসম্ভব। তৃণভূমি পরে বিয়া ক্ষণেক হেরিলাম নিশানাথে,_ বুঝিন্থ আবার বসন্ত এল পঞ্চমী চাদ সাথে। জ্রীমোহিতলাল মজুমদার । 5 লাফে। ( গল্প) সে দিন বিজন্বা। দশমী । পাঁচ বংসর রেন্ুণে আছি। শুদুর প্রবাসে নিচ্জন বাসায় কয় দিন হইতে একলা পড়িয়া থাকায় মনট! বড়ই খারাপ হইয়াছিল, কিন্ত গবর্ণমেণ্ট তরফ হইতে নির্দি সময়ের কড়ারে যে ঠিকাদারী কাজগুলা লইয়াছি _ চোখ কান বুজিয়া সে গুলার ঝক্‌মারা পোহান ভিন্ন, গত্যন্তর ছিল নাঁ। সারাদিন ছোটলোক চরাইয়া ঘুরিয়! বেড়ান, এবং সন্ধ্যার পর বাসায় বসিয়া কেরো- সিন লাম্পের আলোম্ন টাকা আনা পাইয়ের হিসাব লেখার মত অত্যান্ত নীরস কাজে আবদ্ধ হইয়া 'প্রবাস- বেদনা-পীড়িত চিন্তটা বড়ই তিক্ত হইয়া! উঠিয়াছিল। তাই সেদিন বৈকালের দিকে কাঙ্জ কন্ম সমস্ত ফেলিয়া রাখিয়!, ছড়ি ও চাদর লইয়া বেড়াইতে বাহির হইয়া পড়িলাম। এদিক ওদিক ঘুরিতে ঘুরিতে সন্ধা অতীত হইয়া গেল। সহরের কোলাহল ছাড়িয়া নিজ্জন পথ ধরিয় মন্থর পদে বাশার দিকে ফিরিতেছি, এমন সময় উৎকট- গন্ধ চুরুটের ধোয়া উড়াইয়া একদল ইতর জাতীয় লক্ষী ছাঁড়া ধরণের “মগ? হান্ত পরিহাস করিতে কাঁরতে আসিয়া পড়িল। আমায় দেখিয়া তাহারা একটু সংযত হুইয়! পথ ছাড়িয়া দিল। আমি চলিয়া যাইতেছি, সহসা সকলের পশ্চাৎ হইতে নীল পাগড়ী, পাম্পজামা ও মেব- জাই আটা এক লম্বা-চওড়া আকৃতির বৃদ্ধ মগ অগ্রসর হইয়া সহাস্তে অভিবাদন কিয়া মগ ভাষায় বলিল, “বাবু সাহেব এদিকে যে?” দেখিলাম কাঠের কারখানাওয়ালা লাফো মগ। পোকে তাহাকে বলিত “পাগলা লাফো |” পাচ বৎসর বাপী আমার এই ঠিকাদারী ব্যবসায়ের খাতিরে এই শ্রেণীর লোকেদের সঙ্গে বিলক্ষণ আলাপ পরিচয় রাখিতে হইয়াছে । বিশেষ লাফো মগের অমায়িকতার জন্ত তাহাকে আমি ব্যবসায় সম্পকের অতিরিক্ত একটু ঘানতা দেখাইতাম__ক্রমে সম্পর্কটা হৃদ্যতায় পরিণত হইয়াছিল। লাফোর প্রশ্নের উত্তরে আমিও মগ ভাষায় বলিলাম, “একটু বেড়াইতে বাহির হইয়াছিলাম। তুমি কোথায় যাইতেছ ?” স্বভাব-সিদ্ধ সরল হাস্তে বুদ্ধ মগ কহিল, “আজে, আজ আমার এই শ্বশুররা কারখানাতে চড়িভাতি করিযা- ছেন কি না, এবার ঘরে যাইতেছেন। একলাটা কি করি, তাই উহ্থাদের সঙ্গে বাহির হইয়াছি।” আমি জানিতাম--তাহারই কাছে শুনিয়াছিলাম-_ লাফোর স্ত্রী পুত্রা্দি কেহ নাই। সে ছুইবার বিবাহ করিয়াছিল, কিন্তু ছুই স্ত্রী অতি অল্প দিনের মধোই চৈত্র, ১৩২২] মারা যায়। সেতার পর আর বিবাহ করে নাই। কারবার হইতে বতসরান্তে তাহার যথেষ্ট আয় হইত। টাকাগুলা মাঝে মাঝে পর্বোৎসব বা অন্ত কোন কিছু উপলক্ষ্যে রীতিমত “দিল্-দরিয়া” মেজাজে সে খরচ পত্র করিয়া উড়াইত। অবশ্য মগের মুল্ুকে লোকেদের স্বভাবটাও অনেকটা! এই রকমই বটে, সুতরাং লাফোর কার্যকলাপ কোনও দিন আমার বিস্ময় উদ্রেক করে নাই। লাফোর কথা গুনিয়া আমি হাসিয়া বলিলাম, “আমারই মত তোমারও “কি করি” অবস্থা হইয়াছে লাঁফো ? চল আমার সঙ্গে আমার বাসায়, সেখানে বসিয়া গল্প সল্প করা যাইবে 1” , আমার কথা শুনিবামাত্র লাফো তৎক্ষণাৎ কার- থানার মজুরগুলাকে বিদায় দিয়া আমার সঙ্গে অগ্রসর হইল। অল্প দূরেই লাফোর কারখানা বাড়ী, সে কথা কহিতে কহিতে আসিতেছিল, কারান! বাড়ীর কাছা- কাছি হইয়া একবার দাড়াইল। একটু ইতস্ততঃ করিয়া বলিল, “বাবু সাহেব, বাসায় নাই বা গেলেন, চলুন এ খানে নিরিবিলি বেশ ঘাট আছে, জোৎত্শ্নার আলোয় সেইখানে বসিয়া গন্ন কর! যাক্‌ ৮ বাসায় যাইবার আগ্রহ আমারও বড় ছিল না, সুতরাং লাফোর প্রস্তাব মত তখনি মোড় ভাঙ্গিয়া৷ বাম- দিকে রাস্তার ধারে বাধা ঘাটে আসিয়া বসিলাম। প্রকাণ্ড দীঘির জল চন্দ্রাোলোকে ঝক্‌ ঝক্‌ করিয়া জলিতেছে। দীঘির চতুষ্পার্থে গোটাকতক বড় গাছ। নিকটে লাফোর কারখানা বাড়ীটা ছাড়া অন্ত কোনও ঘর বাড়ী নাই, চারিদিকে মাঠ ধুধু করিতেছে । চন্ত্রা- লোকে চারিদিকের দৃশ্ত তখন ঠিক একটা চমতকার চিত্র-শিল্পের মত দেখাইতেছিল। |] আমি যেখানট]য় বসিয়াছিলাম, লাফো তাহার ছুই পৈঠা নীচে বসিল। আমি কিছু বলিবার , পূর্বেই লাফো বলিল, “বাবু সাহেব, আপনাদের বাংলা দেশের গল্প বলুন |” আমি একটী ছোট খাট দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিলাম, লাফো ১৪৭৯ “লাফো, আজ আমাদের দেশে কত ধুম-ধাম হইতেছে যেতার আরকি বলিব। ঘরে ঘরে আমোদ, আজ বিজয়া-দশমী ৮ লাফো একটু বিচলিত হইয়া বলিল, “আজ বিজয়া- দশমী ?__-ওঃ জবর দিন বটে 1” আমি বিজয়া-দশমীর উৎসব সূংক্ষেপে বর্ণনা করিলাম । লাফো কিছু বলিল না, সে দীঘির জলের দিকে চাহিয়া অত্যন্ত নিস্তব্ধ হুইয়া বসিয়া রহিল। সেষে আমার কথাগুলাই শুনিতেছিল একথা বলিতে পারি না। আমার বক্তবা শেষ হইতেই লাফে! একটা চাপা নিঃশ্বাস ফেলিয়া একটু হাসিয়া! বলিল, “চমত্কার রাত্রি ।” সহসা ঘাটের দক্ষিণ পাশে একটা প্রকাণ্ড প্রাচীন দেবদারু গাছের ডালে দোছুল্যমান একছড়া টাটক বন- ফুলের মালা দেখিয়া আমি একটু বিস্মিত হইয়া বলিলাম, “ওটা ওথানে কে রেখেছে লাফে! ?” চকিত নেতে চাহিয়া শুঞ্ধ হাসি হাসিয়া লাফো বলিল, আমি সখ করিয়া মাল! টাল! মাঝে মাঝে গাথিলে এ খানে পরাইয়া দিই ।” আমি সংশয়পুর্ণ চিত্তে বলিলাম, “তা ওখানে কেন ?” লাফো জোর করিয়া একটু হাসিবার চেষ্টা করিল, হাসিতে পারিল না। অবনত দৃষ্টিতে ঢোক গিলিয়া, কি যেন একটা কিছু সাম্লাইয় লইয়া বলিল, “জ্যোতঙ্গা রাত্রি, চারিদিকে খুব ফুল ফুটিয়াছিল-__আর কি জানেন, দেবার গাছটা আমি বড়--” লাফে! থামিয়া গেল। আমার কৌতুহল বাড়িল। বলিলাম, “ব্যাপার থুনা কি 1” সহসা লাফোর মুখ অত্যন্ত বিষ হইয়া উঠিল। সে তাড়াতাড়ি পাগড়ীটা খুলিয়া ছুই হাতের অঙ্গুলি দ্বারায় তাহার দীর্ঘ বাব-পরীগুলা উদ্নাইয়! বিশৃঙ্খল করিয়া ফেলিল। চুঁলগুলা সর্পশিশুর মত মুখের পাশে ফণা ধরিয়া ছুলিতে লাগিল। লাফে! একবার দেবদঃর ১৫০ গাছটার পানে চাহিল, তারপর দূর আকাশের পানে তাকাইয়া ফিরিয়া বসিল। বেদনা-কোমলকণ্ঠে বলিল, “সত্যই যদি জানিতে চাহেন বাবু সাহেব, আচ্ছা শুগন তবে বলি।---_বাহিরে আপনারা আমার যে চেহারাট! দেখিতে পান, বাস্তবিক আমি তাহা নহি, এটা আমার ছন্ুমৃত্তি !” আমি অবাক্‌ হহয়। তাহার পানে চাহিয়া রহিপাম। গ্রীবা উন্নত করিয়া তীব্র স্বরে লাফো৷ বলিল, “আচ্ছা বাবু সাহেব, আপনিও কি আমায় সত্যকার লাফে বলিয়া বিশ্বান করেন ?” ব্যাপারটা কি কিছুই বুঝিতে পারি নাই, তার সতা মিথ্যা কি বিশ্বাস করিব? আমি সবিম্ময়ে বলিলাম, “কি বল দেখি ?” একটু ক্ষুপ্ন হইয়া লাফো বাঁলল, “আপনি বাঙ্গালা হইয়া, এমন বুদ্ধিমান লোক হইয়াও আমায় ঠাওরাইতে পারেন নাই? আশ্রর্যা বটে ।--আপনি বিশ্বাস করেন কি, আঁম বাংলা দেশের একজন খুনী আসামা ?” আমি আতঙ্কে শিহরিয়া উঠিলাম। বলিলাম, “আ্যা, সত্য নাকি 1” লাফো দেবদারু গাছটার দিকে অঙ্গুলি নিদ্দেশ করিয়া মগ ভাষাতেই বলিল, “এ গাছটায় প্রায়ই ফুলের মালা ঝুলাইয়৷ রাখি, কেহ কেহ জিজ্ঞাসা করে “কেন ? --আমি জবাব দিই__“সথ”, কিন্তু সখ নয় ।৮__বলিয়] সে নীরব হইল । আমি এবার বাঙ্গালায় জিজ্ঞাসা করিলাম--প্তুমি বাঙ্গালী ?” আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়া লাফো বলিল -আজ পয্বত্রিশ বছর এ সব কথা কাহাকেও বলি নাই, বলিবার দরকারও হয় নাই। কিন্তু আজ আপনি স্মরণ করাইয়া দিলেন-__-আজ বিজয়া দশমী । আলিকাঁর রাত্রে এখানে বসিয়া কিছু লুকাইব না, সমস্ত সত্য বলিব। বাবু-সাহেব, পৃথিবীর মধ্য যাহাকে সর্বাপেক্ষা বৈশী ভাল বাসিতাম,তাহাকেই নিজের হাতে খুন করিয়া -তী গাছের তলায় তাহার মাথা পু'তিয়৷ রাখিয়াছি। মানসী ও মন্ধরবানী 1 ৮ম বর্ষ--১ম থণ্ড--২য় সংখ্যা এই বিজয়া দশমীর তিথিতে -সে ঠিক আজ পর়ত্রিশ বছর পূর্ণ হইল ।” আমি আড়ষ্ট হইয়া বসিয়া বহিলাম। কি ভয়ানক ! আমার নিকট হইতে পাচ হাত তফাতে একটা নড়ার মাথা প্রোথিত রহিয়াছে, আর যে তাহাকে খুন করি- য্লাছে, সে আমার সন্মুথে বসিয়া! আমি স্তস্তিত দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিলাম। আমার মুখ হইতে একটা কথাও বাহির হইল না। সম্মুথের দিকে চাহিয়া লাফো তথন পুব্বধৎ মগ- ভাষায় বগিতে আরম্ভ করিল £_- “আমাদের বাড়ী বাকুড়া জেলার সোনাগঞ্জ গ্রামে । রাগ বাধুরা সে গ্রামের জমিদার। তাহারা যখন ছুহ তরফে পৃথক হইগ্েন, ' তখন “ভাগের ভাত” খাইতে হইবে বলিয়া বাবুদের নায়েব, আমার পিতৃব্য, বন্কু পাজা বুড়া বয়সে চাকর ছাড়িয়া বাড়ীতে চণিয়া আসলেন। আমার বরস তপন বাহন বহর ছেলেবেলা হইতে আম খুড়ার যঠ়েহ মানুষ, পিতা মাঠা দেখি নাই। খুড়া লেখ! পড়া কিছু শিখাইয়া- ছিলেন। আমার তেরো ও সতের বৎসর বয়সে যথা- ক্রমে দুইট৷ ছোট ছোট বালিকার সহিত বিবাহও দিয়া- ছিলেন। কিন্তু আমার আদৃষ্টে মৃতপত্বীক যোগটা এমনহ প্রবল ছিল যে উভয্বের কোন পক্ষই ছয় মাসের বেশী পৃথিবীতে টিকিতে পারিল না। পাচ্জন গ্রাম্য যুবকের মত আমিও ঘরের খাইয়া বনের মহিষ তাড়াইয়া এতদিন ঘুরিয়া বেড়াইতাম, কিন্তু খুড়ার কন্মত্যাগের পর তাহ! আর পৌষাইল না । রায় বাবুদের ছোট তরফের আহ্বানে এবং খুড়ার ইচ্ছা- ক্রমে, আমি সেইখানেই একটা গোমস্তার চাকরী লহলাম। মামার পিতা পিতামহ সকলেই, এই সংসারে কাজ করিয়া গিয়াছেন, সুতরাং মনিব-গোষ্ঠীর উপর আমার এমনই অগাধ শ্রদ্ধা জমিয়া গিয়াছিল যে, সেই পরিবারের একটী অতি নগন্ত প্রাণীর নিকটেও আমি বিনয় ও কৃতজ্ঞতায় আ-তূমি প্রণত হইয়া থাকিতাম। কিন্তু চৈত্র, ১৩২২] সেইটা আমার অতান্ত ভূল হইয়াছিল। আমার বয়স তখন অল্প, তখন জানিতাম না, সংসারে যে যত নম্র ও ভালমানুষ, সে তত অসুবিধা ও অত্যাচার ভোগ করে। শীপ্ই আমার “নমতার” ফলভোগ করিতে আরম্ত করিলাম । চোথ কান বুজিয়া৷ দিন কাটাইতে লাগি- লাম। সময় সময় যখন অত্যান্ত অতিষ্ঠ হইয়া উঠিতাম তখন মনকে বুঝাইতাম যে এই পরিবারে আমার পিতা -পিতামহ জীবন কাটাইয়! গিয়াছেন,সুতরাং আমাকে ও তাহাই করিতে হইবে । কিন্ত সেদিন যখন কাটিয়া গিয়াছে তখন সে সব কথার স্বিস্তারে বর্ণনায় কোন লাভ নাই, স্থৃতরাং কেবল এইটুকু মাত্র বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে চারিদিক হইতে আঘাত পাইয়া! আমার মনের মধো ক্রমশঃ একটা তীর বিদ্রোহিতা জাগিয়! উঠিল, এবং আমি তখন নিজেই মাঁনিতে বাধা হইলাম যে আমার শরীরটা রক্ত মাংসে গঠিত । আমার খুড়ার একমাত্র পুত্র শঙ্কর আমার অপেক্ষা সাত বংসরের ছোট, এবং তাহার চেয়েও পাচ বৎসরের ছোট চিল খুভার কন্তা শোভা | খুড়া নিজে দেখিতে অতি স্থপূরুষ ছিলেন, ছেলে মেয়ে দ্বুটাও হেমনি স্বন্দর হইয়াছিল । খুডার পুত্র শঙ্কর ছেলেবেলা হইতে আমার অতাস্ত পক্ষপাতী ছিল; সমস্ত বিষয়েই আমি ছিলাম তাহার একমাত্র নিন্ডর। তাহার প্ররুতি ছিল, উচ্ছসিত সরল তারুণা পূণ, তাহার মুখ খানি বালিকার মত অসক্কোচ- আনন্দ-উজ্জ্বল ছিল । গ্রামে পৃজা-পার্বণে উৎসব ব্যাপারে আসর সাজাইতে, আলো! জালিতে, প্রতিমার সাজ পরাইতে-_ এবং যত কিছু বেগাঁর খাটিবার স্থলে সকলেরই আগে শঙ্কর আবিভূতি হইত ! আর যখন নিতান্ত কোন কাজ থাকিত না তখন বাশের ডগে লোহার তীক্ষধার ফলা- যুক্ত 'কিচে” হাতে পুকুরের পাড়ে পাড়ে ঘুরিয়া বেড়াত, এবং তীর হইতে 'তাক্‌' করিয়া! জলচারী মীনের উদ্দেশে" লাফো।